প্রতিটি প্রজন্মে নিরন্তর চরিত্র গঠন প্রত্যেক সমাজের ভিত্তি
যেখানেই চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে, ভারত আশা নিয়ে হাজির হয়েছে; যেখানেই সমস্যা হয়েছে, ভারত সমাধান সূত্র নিয়ে উপস্থিত হয়েছে
আজ ভারত সমগ্র বিশ্বের কাছে এক নতুন আশা
সফটওয়্যার থেকে মহাকাশ ক্ষেত্র, আমরা এক নতুন ভবিষ্যতের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত একটি দেশ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছি
আসুন আমরা নিজেদের উন্নতিসাধন করি, কিন্তু আমাদের উন্নতিও যেন অন্যদের কল্যাণের মাধ্যম হয়ে ওঠে
নাগাল্যান্ডের এক মেয়ের কাশীঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার অভিযানের কথা উল্লেখ করেছেন

জয় স্বামী নারায়ণায়!

আজকের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত পরমপূজ্য গুরুজি শ্রী জ্ঞানজীবন দাসজি স্বামী, ভারতীয় জনতা পার্টির গুজরাট প্রদেশের অধ্যক্ষ এবং সংসদে আমার সহকর্মী শ্রী সি আর পাটিলজি, গুজরাট রাজ্য সরকারের মন্ত্রী শ্রীমতী মণীষা বেন, শ্রী ভিনু ভাই, সাংসদ শ্রীমতী রঞ্জন বেন, ভদোদরার মেয়র শ্রী কেয়ুর ভাই, সকল গণমান্য অতিথিগণ, পূজনীয় সাধু-সন্ন্যাসীগণ, উপস্থিত সকল হরি ভক্ত, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, আর আমার সামনে বসে থাকা বিপুল সংখ্যায় আগত নবীন প্রজন্মের ভাই ও বোনেরা, এটাই নবীনদের উৎসাহ, এটাই নবীনদের উদ্দীপনা, এটাই নবীনদের প্রেরণা, আপনাদের সবাইকে আমার প্রণাম, জয় স্বামী নারায়ণ!

আমি অত্যন্ত আনন্দিত, আজ এই ‘সংস্কার অভ্যুদয় শিবির’-এর আয়োজনে আজ আমাকে যুক্ত করায় আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে। এই সংযোগ নিজেই একটি অত্যন্ত আনন্দের, একটি খুশির ব্যাপার। আমি নিশ্চিত যে, এই শিবিরের যে রূপরেখা, যে উদ্দেশ্য, আর যে প্রভাব - তা আপনাদের মতো সাধু-সন্ন্যাসীদের উপস্থিতিতে আরও উজ্জ্বল হবে।

আমাদের সন্ন্যাসীরা, আমাদের শাস্ত্র আমাদের শিখিয়েছে যে কোনও সমাজের রচনা সমাজের প্রত্যেক প্রজন্মে ক্রমাগত চরিত্র নির্মাণের মাধ্যমে হয়। তার সভ্যতা, তার পরম্পরা, তার আচার, বিচার, ব্যবহার – এই সবকিছু আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সমৃদ্ধি থেকেই বিকশিত হয় আর আমাদের সংস্কৃতির সৃজন স্থল হল আমাদের শিষ্টাচার। সংস্কৃতির যদি কোনও পাঠশালা থাকে, তার যদি কোনও মূল বীজ থাকে, সেটা হল শিষ্টাচার আর সেজন্য এই ‘সংস্কার অভ্যুদয় শিবিরে’টি আমাদের যুব সম্প্রদায়ের অভ্যুদয়ের প্রচেষ্টার পাশাপাশি আমাদের সমাজের অভ্যুদয়েরও একটি স্বাভাবিক পবিত্র অভিযানস্বরূপ।

এটি আমাদের পরিচয় এবং গৌরবের অভ্যুদয় ঘটানোর প্রচেষ্টা, এটি আমাদের দেশের অভ্যুদয় ঘটানোর প্রচেষ্টা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে আমাদের নবীন বন্ধুরা যখন এই শিবির থেকে বাড়ি ফিরে যাবেন, তখন তাঁরা নিজেদের মনে একটি নতুন প্রাণশক্তি অনুভব করবেন, তাঁদের মনে একটি নতুন স্পষ্টতা ও নব-চেতনার সঞ্চার অনুভব করবেন। আমি আপনাদের সবাইকে এই নব-আরম্ভের জন্য, নব-প্রস্থানের জন্য, নব-সঙ্কল্পের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

বন্ধুগণ,

এ বছর এই ‘সংস্কার অভ্যুদয় শিবির’-এর এই আয়োজন একটি এমন সময়ে হচ্ছে যখন দেশ তার স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছে। আজ আমরা নতুন ভারতের নির্মাণের জন্য সামগ্রিক সঙ্কল্প গ্রহণ করছি, সামগ্রিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই চেষ্টা করছি। একটি এমন নতুন ভারত যার পরিচয় নতুন হবে, আধুনিক হবে, ফরওয়ার্ড লুকিং বা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হবে আর পরম্পরাগুলি প্রাচীন মজবুত ভিত্তির সঙ্গে যুক্ত থাকবে। একটি এমন নতুন ভারত যা নতুন ভাবনা এবং অনেক শতাব্দীর প্রাচীন সংস্কৃতি উভয়কে একসঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাবে আর সমগ্র মানবজাতিকে নতুন দিশা দেখাবে।

আপনারা যে কোনও ক্ষেত্রের দিকে তাকান  - যেখানেই অনেক সমস্যা রয়েছে, অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে; ভারত সেখানে অনেক আশা ভরা সম্ভাবনা নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে। যেখানে সমস্যাগুলি আছে, ভারত সেখানে সমাধানের কাজ করছে। করোনা মহামারীর ভয়ানক সঙ্কটের মধ্যে বিশ্ববাসীকে টিকা এবং ওষুধ পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সরবরাহ শৃঙ্খলগুলির মধ্যে আত্মনির্ভর ভারতের আশা জাগানো পর্যন্ত, আন্তর্জাতিক অশান্তি এবং সমস্যাগুলির মধ্যে শান্তির স্বার্থে একটি সামর্থ্যবান দেশের ভূমিকা পালন পর্যন্ত ভারত আজ বিশ্বের জন্য নতুন আশার সঞ্চার করছে। বিশ্বের সামনে যখন আবহাওয়া পরিবর্তনের মতো ভয়ানক বিপদের কালো মেঘ ঘনিয়ে এসেছে, তখন ভারত তার ‘সাসটেনেবল লাইফ’ বা টেকসই জীবনধারণের জন্য তার অনেক শতাব্দী পুরনো অভিজ্ঞতা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমরা সমগ্র মানবতাকে যোগ-এর পথ দেখাচ্ছি, আয়ুর্বেদের শক্তির সঙ্গে পরিচয় করাচ্ছি। আমরা সফটওয়্যার থেকে শুরু করে স্পেস বা মহাকাশ পর্যন্ত একটি নতুন ভবিষ্যতের জন্য তৎপর দেশ রূপে উঠে আসছি।

বন্ধুগণ,

আজ ভারতের সাফল্য আমাদের যুব সম্প্রদায়ের সামর্থ্যের সবচাইতে বড় প্রমাণ। আজ দেশে সরকারের কাজকর্মের পদ্ধতি বদলেছে, কর্মসংস্কৃতির পরিবর্তন হয়েছে, সমাজের ভাবনা বদলেছে, আর সবচাইতে বড় খুশির কথা হল এই যে, গণ-অংশীদারিত্ব বেড়েছে। যে লক্ষ্য ভারতের জন্য আগে অসম্ভব বলে মনে করা হত, এখন বিশ্ববাসী বুঝতে পারছে যে ভারত এমন ক্ষেত্রগুলিতেও কত ভালো কাজ করছে। স্টার্ট-আপ বিশ্বে ভারতের ক্রমাগত বাড়তে থাকা উচ্চতাও এর উদাহরণ। আজ ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ ইকো-সিস্টেমে পরিণত হয়েছে। আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে আমাদের নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরাই।

বন্ধুগণ,

আমাদের শাস্ত্রে বলা হয় যে শুদ্ধ বুদ্ধি আর মানবিক সংস্কার তার সঙ্গে অন্যদেরও কল্যাণসাধন করে। যদি বুদ্ধি শুদ্ধ থাকে তাহলে কোনকিছুই অসম্ভব নয়, কোনকিছু পাওয়াও অসম্ভব নয়। সেজন্য স্বামী নারায়ণ সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীরা এই ‘সংস্কার অভ্যুদয় শিবির’-এর মাধ্যমে স্বনির্মাণ, চরিত্র নির্মাণ – এ ধরনের বিমূর্ত শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে এত বড় অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করছেন। আমাদের জন্য শিষ্টাচারের অর্থ হল শিক্ষা, সেবা এবং সংবেদনশীলতা। আমাদের জন্য শিষ্টাচারের মানে হল সমর্পণ, সঙ্কল্প এবং সামর্থ্য। আমরা নিজেদের উত্থান নিজেরাই সুনিশ্চিত করব, কিন্তু আমাদের উত্থান যেন অন্যদের কল্যাণেরও মাধ্যম হয়ে ওঠে, আমরা যেন সাফল্যের শিখরগুলি স্পর্শ করি, কিন্তু আমাদের সাফল্য যেন সকলের সেবার কারণ হয়ে ওঠে। এটাই ভগবান স্বামী নারায়ণজির শিক্ষার সার কথা আর এটাই ভারতের সহজ স্বভাবও।

আজ যখন আপনারা এখানে গুজরাটের নানা  প্রান্ত থেকে এসেছেন, তখন এবং যখন এত বড় সংখ্যায় যুবক-যুবতীদের দেখতে পাচ্ছি, তখন আমারও মনে হচ্ছে যে ভদোদরা গিয়ে মুখোমুখি সাক্ষাৎ হলে ভালো হত। আপনাদের সবার সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ হলে আরও আনন্দ পেতাম। কিন্তু আমার অনেক সমস্যা থাকে, সময়ের বন্ধন থাকে। এর ফলে চাইলেও সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। আমাদের জিতু ভাইকে শুরু থেকেই মুচকি মুচকি হাসতে দেখছি। এটাই স্বাভাবিক।  কারণ,  অতীতে ভদোদরায় জিতু ভাইয়ের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটানোর সৌভাগ্য হয়েছে, আর আমার জন্য তো এটা অত্যন্ত গর্বের কথা যে ভদোদরা এবং কাশী উভয় লোকসভা কেন্দ্রই একসঙ্গে আমাকে সাংসদ নির্বাচন করেছে। ভারতীয় জনতা পার্টি আমাকে সাংসদ হওয়ার জন্য টিকিট দিয়েছে। কিন্তু ভদোদরা এবং কাশীর জনগণ আমাকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আপনারা কল্পনা করতে পারেন যে ভদোদরার সঙ্গে আমার সম্পর্ক কেমন ছিল, আর ভদোদরার প্রসঙ্গ যখন উঠেছে তখন অনেক বিদ্বান ব্যক্তির হয়তো মনে পড়বে যে আমার কেশুভাই ঠক্কর, আমার জমনাদাস, আমার কৃষ্ণকান্ত ভাইসা, আমার বন্ধু নলীন ভাই ভট্ট, বাবু ভাই ওঝা, রমেশ ভাই গুপ্তা – এরকম অনেকের চেহারা আমি আমার স্ক্রিনে দেখতে পাচ্ছি, আর এর পাশাপাশি তখনকার যুবক-যুবতীদের সেই টিমকে দেখতে পাচ্ছি যাদের সঙ্গে আমার অনেক বছর ধরে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। তাঁরাও আজ অত্যন্ত উচ্চপদে রয়েছেন, গুজরাটের সেবা করছেন। সর্বদাই শিষ্টাচারের নগরী হিসেবে ভদোদরার স্থান সুবিদিত। ভদোদরার আসল পরিচয়ই হল শিষ্টাচার। আর এই শিষ্টাচারের নগরীতে যখন শিষ্টাচারের উৎসব হয়, ‘সংস্কার অভ্যুদয় শিবির’ হয়, তখন এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক আর আপনাদের সবারই হয়তো মনে আছে যে অনেক বছর আগে আমি ভদোদরায় একটি ভাষণ দিয়েছিলাম। সেটাও কোনও জনসমাগমই ছিল, আর সেখানে আমি স্ট্যাচু অফ ইউনিটির বর্ণনা করেছিলাম। তখন তো স্ট্যাচু অফ ইউনিটি কেমন হবে তা নিয়ে কল্পনা জগতেই কাজ চলছিল, আর সেই সময়েই আমি বলে দিয়েছিলাম, যখন এই স্ট্যাচু অফ ইউনিটি তৈরি হবে, তখন বিশ্ববাসীর জন্য একটি আকর্ষণের প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠবে, তখন ভদোদরা তার মূল ভূমিতে পরিণত হবে, ভদোদরা স্ট্যাচু অফ ইউনিটির মূল ভিত্তি হয়ে উঠবে। এমন কথা আমি অনেক বছর আগেই বলেছিলাম। আজ সমগ্র মধ্য গুজরাট পর্যটনের সম্পূর্ণ ইকো-সিস্টেমের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে ভদোদরা শহর। যেভাবে পাওয়াগড়ের পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে, আর মহাকালীর আশীর্বাদ আমরা পাচ্ছি, আমারও খুব ইচ্ছা যে আগামীদিনে মহাকালীর চরণে মাথা ঝুঁকিয়ে অবশ্যই আসব। কিন্তু পাওয়াগড় কিংবা স্ট্যাচু অফ ইউনিটি – এইসব কথা এই ভদোদরা শিষ্টাচার নগরীর নবীন বিস্তারে পরিণত হচ্ছে। শিল্প জগতের পদ্ধতি অনুসারে, আর ভদোদরার খ্যাতি অনুসারে ভদোদরাতে নির্মীয়মান মেট্রোর কোচ সারা পৃথিবীর রেল পথগুলিতে এখন ছুটছে। এটাই ভদোদরার শক্তি, এটাই ভারতের শক্তি। এইসব এই দশকেই তৈরি হয়েছে। তীব্র গতিতে আমরা নতুন নতুন ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আজ আমি যখন দেশের নব যুবক-যুবতীদের সঙ্গে কথা বলছি, তখন আজ আমার পূজনীয় স্বামীজি যে কথা বলেছেন তা মনে রাখতে হবে। তিনি বলেছেন যে কখনও কখনও দেখা-সাক্ষাৎ না হলে না হবে, কিন্তু দেশের কাজকে কখনও একদিকে রেখে দিও না। একজন সন্ন্যাসীর মুখ থেকে এটি কোনও ছোট কথা নয় বন্ধুগণ! আপনারা একথা কখনও ভুলবেন না বন্ধুগণ!

এর মানে তিনি আপনাদের দেখাসাক্ষাৎ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেননি, কিন্তু মহাত্মা জ্ঞানজীবনজি স্বামী বলেছেন যে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। অনেক সময় এমন হয়, যেমন এই সময়ে যখন স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব চলছে, তখন আমরা জানি যে আমাদের ভাগ্যে দেশের জন্য মরার সৌভাগ্য হয়নি, কিন্তু দেশের জন্য বাঁচার সৌভাগ্য তো পেয়েছি ভাই ও বোনেরা! তাই দেশের জন্য বাঁচতে হবে, দেশের জন্য কিছু না কিছু করতে হবে, দেশের জন্য কিছু করার মানে ছোট ছোট জিনিস দিয়েও, ছোট ছোট পদক্ষেপের মাধ্যমেও এই কাজ করা সম্ভব হতে পারে। মনে করুন যে আমি আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি, আগামী একবছর সমস্ত রকম নগদে লেনদেন বন্ধ রাখুন। আপনারা, সমস্ত সন্ন্যাসীগণ আমার এই অনুরোধ রক্ষার জন্য এক সপ্তাহ ধরে ক্রমাগত নানা প্রশ্ন করবেন, আর আপনাদেরকে স্মরণ করাবেন,  আর আমাদের এখানে যত হরি ভক্ত রয়েছেন তাঁরা গুজরাটের মানুষ হোন কিংবা দেশের যে কোনও প্রান্তের মানুষ, তাঁরা কমপক্ষে গুজরাটের স্বার্থে আর দেশের স্বার্থে এই একটি কাজ করতে পারবেন? এই স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের সময় ১৫ আগস্ট, ২০২৩ পর্যন্ত খুব বেশি সময় নয়। ১৫ আগস্ট, ২০২৩ পর্যন্ত আপনারা আর যাঁরা এই ‘সংস্কার অভ্যুদয় শিবির’ বা অন্য কোনও কারণে এসেছেন, তাঁরা ও তাঁদের বন্ধু এবং পরিবারের মানুষেরা একসঙ্গে মিলে ঠিক করুন যে এই এক বছর নগদ লেনদেন করবই না। শুধু ডিজিটাল পেমেন্ট করব। ডিজিটাল কারেন্সিই ব্যবহার করব। মোবাইল ফোন থেকেই পেমেন্ট করব এবং টাকা নেব। আপনারা ভাবুন তো আপনারা কত বড় বিপ্লব আনতে পারেন! যখন আপনারা সব্জিওয়ালার কাছে গিয়ে বলবেন যে আমি তো ডিজিটাল পেমেন্টই করব, তাহলে সব্জিওয়ালা শিখবেন যে ডিজিটাল পেমেন্ট কিভাবে করা যায়। তাঁরাও ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলাবেন, তাঁদের অর্থও ভালো কাজের জন্য খরচ করা শুরু হবে। একটি ছোট প্রচেষ্টা কিভাবে কত মানুষের জীবনে মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারে তা আপনারা অনুভব করবেন। করবেন বন্ধুগণ! একটু হাত ওপরে তুলে বলুন যাতে আমি এখান থেকে দেখতে পাই। এমনি করে নয়, সামান্য শক্তি দিয়ে জোরে বলবেন। এটা তো জয় স্বামী নারায়ণজির নাম উচ্চারণ করার পর কিছুদিনের মধ্যে এরকমই হয়ে উঠবে, চলবে তো? হ্যাঁ!

এখন দ্বিতীয় কাজ। আমরা এই স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে কম করে ৭৫ ঘন্টা ধরে এক বছরে প্লাস্টিক জঞ্জাল মুক্ত করার অভিযান চালাতে হবে। প্লাস্টিকের আবর্জনা থেকে মুক্তি, মানুষ যাতে প্লাস্টিকের ব্যবহার না করেন, মানুষ প্লাস্টিকের ‘সিঙ্গল ইউজ’ না করেন, এমন অভিযান চালাতে হবে। কেউ যদি এমন কাজ করেন, আর এ বছরটি দেশের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ। এর জন্য কি আপনারা মাত্র ৭৫ ঘন্টা সময় দিতে পারেন? আর যখন আমি পরিচ্ছন্নতার কথা বলছি আর ভদোদরার মানুষের কাছে বলছি, … ভদোদরা এবং কাশীর সঙ্গে আমার সমান সম্পর্ক রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ভদোদরার সঙ্গে কথা বললে কাশীর কথাও মনে আসবে।

আমি দেখেছি, যখন আমি পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাচ্ছিলাম, তখন কাশীতে কিংসুতুলা ঈনসং নামে নাগাল্যান্ডের এক কন্যা এসেছিলেন, আমাদের এখানকার চিত্রালেখা তাঁকে নিয়ে একটি সুন্দর লেখা লিখেছিলেন। এই মেয়েটি কিছুদিন আগে কাশীতে পড়াশোনা করার জন্য এসেছিলেন আর কাশীতে থেকে ক্রমে তাঁর খুব ভালো লেগে যায়। তারপর অনেকদিন সে কাশীতে থেকে যায়। নাগাল্যান্ডের ক্রিশ্চিয়ান সম্প্রদায়ের পূজাপাঠে বিশ্বাস রাখা একটি মেয়ে এই কিংসুতুলা ঈনসং স্বচ্ছ ভারত অভিযানের সময় পরিচ্ছন্নতার ইচ্ছা তাঁর মনে এতটাই প্রভাব ফেলে যে সে একাই কাশীর ঘাটগুলি সাফ করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে তাঁর সঙ্গে অনেক নতুন যুবক-যুবতী যুক্ত হতে শুরু করেন। আর তাঁদের এই কাজ দেখতে মানুষ ভিড় করে দাঁড়াত যে লেখাপড়া জানা, জিন্স আর প্যান্ট পড়া যুবক-যুবতীরা এত পরিশ্রম করছে। ক্রমে কাশীর জনগণও তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করে। আপনারা ভাবুন! যখন আমাদের কাশীতে এসে নাগাল্যান্ডের একটি মেয়ে কাশীর ঘাট পরিষ্কার করে, তখন কল্পনা করুন যে তাঁর অন্তর্মনে কতটা প্রভাব পড়েছে।

পূজনীয়  জ্ঞানজীবনজি স্বামী একটু আগেই বলেছেন যে পরিচ্ছন্নতার জন্য আমাদের প্রত্যেককে নেতৃত্ব দিতে হবে। আমাদের প্রত্যেককে এই দায়িত্ব হাতে নিতে হবে। দেশের জন্য এই ধরনের সব কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি জল সংরক্ষণ করতে পারি তার মধ্যে দেশভক্তি রয়েছে, আমরা যদি জলকে পরিচ্ছন্ন করে রাখতে পারি সেখানেও দেশভক্তি রয়েছে, আমরা যদি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করি সেখানেও দেশভক্তি রয়েছে। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে আমাদের হরি ভক্তদেরও এমন কোনও বাড়ি নেই যে বাড়িতে এলইডি বাল্বের ব্যবহার করা হয়নি। আপনারা সবাই এলইডি বাল্ব ব্যবহার করেন। এতে আলোও ভালো পাওয়া যায়, খরচও কম লাগে আর বিদ্যুৎও সাশ্রয় হয়।

আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে আমরা গুজরাটের অনেক জায়গায় জন ঔষধি কেন্দ্র চালু করেছি। যে কোনও দরিদ্র, নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবারে যদি একজন ডায়াবেটিস বা মধুমেহ রোগী থাকে, আর সেই রোগীর জন্য পরিবারকে প্রত্যেক মাসে ১ হাজার, ১ হাজার ২০০, ১ হাজার ৫০০ টাকার ওষুধ কিনতে হয়, সেক্ষেত্রে প্রত্যেক মাসে এত টাকা কিভাবে তারা খরচ করবে? এখন জন ঔষধি কেন্দ্রগুলিতে সেই ওষুধগুলি মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সেজন্যই বলছি আমার নব যুবক-যুবতী বন্ধুগণ, মোদী তো এই কাজটা দিয়েছে, সরকার তো এই কাজটা করেছে, কিন্তু মধ্যবিত্ত ও গরীব শ্রেণীর অনেক মানুষ জানেনই না যে এই জন ঔষধি কেন্দ্রগুলি খুলেছে। তাঁদেরকে ওই কেন্দ্রগুলিতে নিয়ে যান, সুলভে সস্তা ওষুধের ব্যবস্থা করুন, তাঁরা আপনাদেরকে আশীর্বাদ দেবেন, আর এর থেকে বড় শিষ্টাচার আর কী হতে পারে! এটা একটা এমন কাজ যা আমরা অতি সহজেই করতে পারি। এতে ভরপুর দেশভক্তি রয়েছে আমার ভাই ও বোনেরা! মানুষকে কিছু ভিন্ন পরিষেবা দিলেই যে শুধু দেশভক্তির প্রকাশ ঘটে, এমন নয়, এমন হয় না। আমাদের সহজ জীবনে সমাজের যাতে ভালো হয়, দেশের যাতে ভালো হয়, পাড়া-প্রতিবেশীর যাতে ভালো হয় কায়োমনোবাক্যে তা কামনা করারও অত্যন্ত গুরুত্ব রয়েছে।

এখন আপনারা ভাবুন যে, আমাদের দেশের গরীব শিশুদেরকে যদি আমরা অপুষ্টি থেকে মুক্ত করতে পারি, তাহলে কী হবে? আমাদের শিশুরা সুস্থ থাকলে তবেই আমাদের রাজ্য, আমাদের দেশ সুস্থ হবে। এরকমটি আমাদের ভাবা উচিৎ। আমার জন্য খুশির কথা হল এই যে এখন গুজরাটে প্রাকৃতিক চাষের অভিযান চলছে। ধরিত্রী মায়ের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এই প্রাকৃতিক চাষ হচ্ছে। আমরা সমস্বরে বলি না - ভারতমাতা কী জয়! এই ভারতমাতাই আমাদের ধরিত্রী মাতা। আপনারা কি তার জন্য চিন্তা করেন? দীর্ঘকাল ধরে নানা রাসায়নিক সার, ইউরিয়া, এটা, ওটা মাটিতে মিশিয়ে এই ধরিত্রী মাতার অনেক লোকসান করা হয়েছে। এই ধরিত্রী মাতাকে আমরা কতো না ওষুধ খাইয়েছি আর ক্রমে মৃতপ্রায় করে তুলেছি। এখন এই ধরিত্রী মাতাকে বাঁচানোর অন্যতম প্রধান উপায় হল প্রাকৃতিক চাষ। গুজরাটে প্রাকৃতিক চাষের অভিযান চলছে। আপনারা সবাই নবীন প্রজন্মের মানুষ যাঁদের জীবন কৃষির সঙ্গে যুক্ত, যাঁদের জীবন গ্রামের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা সবাই একজোট হয়ে সঙ্কল্প নিন যে আমরা হরি ভক্ত, আমাদের গুরু স্বামী নারায়ণজি ভগবানের সেবা করছেন। তাহলে আমরা কমপক্ষে নিজের পরিবার, নিজের ফসলের ক্ষেতে এমন কোনও রাসায়নিক মেশাব না যাতে এই ধরিত্রী মাতার ক্ষতি হয়। প্রাকৃতিক কৃষিই করব। এটাই ধরিত্রী মায়ের সেবা। এটাই তো ভারত মায়েরও সেবা।

বন্ধুগণ,

আমি প্রত্যাশা করি যে এই শিষ্টাচার আমাদের জীবন ব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত হবে। নিছকই বাণী এবং বচনের শিষ্টাচার পর্যাপ্ত নয়। শিষ্টাচারকে সঙ্কল্পে পরিণত করতে হবে। শিষ্টাচারকে সিদ্ধির জন্য মাধ্যম হয়ে উঠতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে আজকের এই‘সংস্কার অভ্যুদয় শিবির’ থেকে এমন অনেক উত্তম ভাবনা-চিন্তার পাশাপাশি যখন আপনারা বাড়ি ফিরে যাবেন, তখন স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে এই ভারতমাতার কোটি কোটি দেশবাসীর শুভকামনা নিয়ে ফিরবেন।

আপনাদের সবার সঙ্গে কথা বলার সৌভাগ্য হল। আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা।

পূজনীয় সাধু-সন্ন্যাসীদের সকলকে আমার প্রণাম, জয় স্বামী নারায়ণয়!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Snacks, Laughter And More, PM Modi's Candid Moments With Indian Workers In Kuwait

Media Coverage

Snacks, Laughter And More, PM Modi's Candid Moments With Indian Workers In Kuwait
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister Narendra Modi to attend Christmas Celebrations hosted by the Catholic Bishops' Conference of India
December 22, 2024
PM to interact with prominent leaders from the Christian community including Cardinals and Bishops
First such instance that a Prime Minister will attend such a programme at the Headquarters of the Catholic Church in India

Prime Minister Shri Narendra Modi will attend the Christmas Celebrations hosted by the Catholic Bishops' Conference of India (CBCI) at the CBCI Centre premises, New Delhi at 6:30 PM on 23rd December.

Prime Minister will interact with key leaders from the Christian community, including Cardinals, Bishops and prominent lay leaders of the Church.

This is the first time a Prime Minister will attend such a programme at the Headquarters of the Catholic Church in India.

Catholic Bishops' Conference of India (CBCI) was established in 1944 and is the body which works closest with all the Catholics across India.