নমস্কার,
মধ্যপ্রদেশে নবীন প্রজন্মের মানুষদের সরকারি চাকরি প্রদান অভিযান দ্রুতগতিতে চলছে। ভিন্ন ভিন্ন জেলায় ‘রোজগার মেলা’ আয়োজন করে বিভিন্ন পদে হাজার হাজার যুবক-যুবতীকে নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২২ হাজার ৪০০-রও বেশি যুবক-যুবতীকে শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হয়েছে। আজ অনেক যুবক-যুবতী তাঁদের নিয়োগপত্রও হাতে পেয়েছেন। আমি সমস্ত যুবক-যুবতীকে প্রশিক্ষণের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানাই।
বন্ধুগণ,
কেন্দ্রীয় সরকার আধুনিক ও উন্নত ভারতের প্রয়োজনীয়তাগুলির দিকে তাকিয়ে নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু করেছে। এই নীতিতে শিশুদের সর্বাঙ্গীন বিকাশ, সম্পূর্ণ বিকাশ, জ্ঞান, দক্ষতা, শিষ্টাচার এবং ভারতীয় মূল্যবোধে সম্পৃক্ত করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই নীতিকে কার্যকরভাবে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মধ্যপ্রদেশে ব্যাপকভাবে শিক্ষক নিযুক্তি অভিযান এই লক্ষ্যে একটি বড় পদক্ষেপ। আমাকে বলা হয়েছে যে, যতজন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছে, তার মধ্যে অর্ধেকই আমাদের জনজাতি এলাকার বিদ্যালয়গুলিতে নিযুক্ত হবেন। ফলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে এই রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার শিশুরা। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, মধ্যপ্রদেশ সরকার এই বছর ১ লক্ষেরও বেশি সরকারি পদে কর্মী নিয়োগের লক্ষ্য রেখেছে। এই বছরের শেষ পর্যন্ত ৬০ হাজারেরও বেশি শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্য রয়েছে। এই প্রচেষ্টাগুলির পরিণাম-স্বরূপ ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট সার্ভে-তে মধ্যপ্রদেশ শিক্ষায় উৎকর্ষের ক্ষেত্রে অনেক বড় উল্লম্ফন দিয়েছে। ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট সার্ভে র্যাঙ্কিং – এ মধ্যপ্রদেশের স্থান ১৭ থেকে পৌঁছে গেছে ১২ নম্বরে। কোনও রকম চিৎকার-চেঁচামেচি না করে, বিজ্ঞাপনে খরচ না করে চুপচাপ এহেন সাফল্যের জন্য সমর্পণ চাই, সাধনা চাই, শিক্ষার প্রতি ভক্তিভাব চাই। আমি মধ্যপ্রদেশের সমস্ত ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও মধ্যপ্রদেশ রাজ্য সরকারকে শিক্ষার ক্ষেত্রে এই গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যের জন্য আর এই মৌন সাধনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
স্বাধীনতার অমৃতকালে দেশ অনেক বড় বড় লক্ষ্য আর নতুন নতুন সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এই লক্ষ্যগুলি বাস্তবায়নের জন্য যত উন্নয়নযজ্ঞ হচ্ছে, তা আজ প্রতিটি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে। ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে আজ যে গতিতে পরিকাঠামো নির্মাণের গতি ও মাত্রা বেড়েছে, তা থেকেও কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। যেমন কয়েকদিন আগেই ভোপাল থেকে দিল্লি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হয়েছে। এই ট্রেন চালু হওয়ার ফলে রাজ্যের বিভিন্ন পেশার মানুষ ও ব্যবসায়ীরা যেমন সুবিধা হবে, তেমনই পর্যটনও উৎসাহিত হবে। ‘এক স্টেশন, এক পণ্য’ এবং ‘এক জেলা, এক পণ্য’ এরকম অনেক প্রকল্পের মাধ্যমে আজ স্থানীয় পণ্য দেশের অনেক দূরদূরান্ত এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে। এই সকল প্রকল্প সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। পাশাপাশি, মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে সমাজের আর্থিকভাবে দুর্বল মানুষরা লাভবান হচ্ছেন, স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। সরকার নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে ভারতের স্টার্টআপ বাস্তু ব্যবস্থাতেও কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ তৈরি করেছে।
বন্ধুগণ,
কর্মসংস্থান এবং স্বনির্ভরতাকে উৎসাহ যোগাতে সরকার দক্ষতা উন্নয়নের উপর বিশেষ জোর দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার মাধ্যমে যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণের জন্য সারা দেশে ‘কৌশল বিকাশ কেন্দ্র’ চালু করে তাঁদের দক্ষতা উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করা হয়েছে। এ বছরের বাজেটে ৩০টি স্কিল ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার চালু করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলিতে যুবসম্প্রদায়কে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই বছরের বাজেটে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার মাধ্যমে ক্ষুদ্র কারিগরদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি, তাঁদের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলির সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
বন্ধুগণ,
মধ্যপ্রদেশে যে হাজার হাজার শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের আমি একটি কথা বলতে চাই। আপনারা নিজেদের জীবনের গত ১০-১৫ বছরের দিকে তাকান। আপনারা দেখবেন, যাঁরা আপনাদের জীবনকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছেন, তাঁদের মধ্যে আপনাদের মা ও শিক্ষক অবশ্যই রয়েছেন। আপনাদের হৃদয়ে তাঁদের যে আসন, আপনার প্রিয় শিক্ষক আপনার হৃদয়ের যে স্থানে রয়েছেন, আপনাদেরকেও নিজেদের ছাত্রছাত্রীদের হৃদয়ে তেমন স্থান করে নিতে হবে। একথা সর্বদা মাথায় রাখতে হবে যে, আপনাদের শিক্ষা শুধু দেশের বর্তমান নয়, ভবিষ্যৎ-কেও গড়ে তুলবে। আপনাদের প্রদত্ত শিক্ষা শুধু একজন শিক্ষার্থীর মনে নয়, গোটা সমাজের পরিবর্তন আনতে সক্ষম। আপনারা যে মূল্যবোধকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, তা শুধু আজকের প্রজন্মের জন্য নয়, বরং আগামী কয়েক প্রজন্মের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, শিশুদের শিক্ষা এবং তাঁদের সম্পূর্ণ উন্নয়নের জন্য আপনারা সর্বদাই সমর্পিত প্রাণ হয়ে থাকবেন। আরেকটি কথা আমি সর্বদাই নিজের জন্য বলি। আমি প্রায়শই বলি যে, আমি আমার অন্তরের শিক্ষার্থীকে কখনও মরে যেতে দেবো না। আপনারাও নিজেদের অন্তরের শিক্ষার্থীকে সবসময় জাগ্রত রাখবেন, সর্বদা সচেতন রাখবেন। আপনাদের অন্তরের শিক্ষার্থীই আপনার জীবনকে অনেক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। আরেকবার আপনাদের সকলকে আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা, অনেক অনেক শুভকামনা।
ধন্যবাদ।