জয় জোহর!
ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিষ্ণ দেও সাইজি, ছত্তিশগড়ের মন্ত্রীগণ, অন্যান্য প্রতিনিধিগণ এবং ছত্তিশগড়ের প্রতিটি অংশের বাসিন্দারা! আমি জানতে পেরেছি, ৯০টিরও বেশি জায়গা থেকে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়েছেন। সবার প্রথমে ছত্তিশগড়ের প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের লক্ষ লক্ষ পরিবারকে অভিনন্দন জানাই। বিধানসভা নির্বাচনে আপনারা আমাদের অকাতরে আশীর্বাদ করেছেন। সেই আশীর্বাদের ফলশ্রুতি হিসেবে ‘বিকশিত ছত্তিশগড়’-এর অঙ্গীকার নিয়ে আমরা আপনাদের মাঝে এসেছি।
বন্ধুগণ,
‘বিকশিত ছত্তিশগড়’-এর উন্নয়ন আসবে গরীব, কৃষক, তরুণ এবং মহিলাদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে। ‘বিকশিত ছত্তিশগড়’-এর ভিত্তি আধুনিক পরিকাঠামোর মাধ্যমে মজবুত করা হবে। আজ ছত্তিশগড়ের উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করা হয়েছে। কয়লা, সৌরবিদ্যুৎ, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ক্ষেত্রের সঙ্গে এই প্রকল্পগুলি যুক্ত। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সেইসঙ্গে, ছত্তিশগড়ের তরুণদের সামনে নতুন পথ খুলে যাবে।
বন্ধুগণ,
প্রথম পর্বের এনটিপিসি-র ১,৬০০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আজ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে, দ্বিতীয় পর্বের ১,৬০০ মেগাওয়াটের আধুনিক প্রকল্পেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলি কম খরচে মানুষকে বিদ্যুৎ দেবে। আমরা ছত্তিশগড়কে প্রধান সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েছি। আজ রাজনন্দগাঁও এবং ভিলাইয়ে বৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আশপাশের এলাকাগুলিতে রাতে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। শুধুমাত্র মানুষের জন্য সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করা নয়, সেইসঙ্গে ভারত সরকারের লক্ষ্য হল, তাঁদের বিদ্যুতের বিল শূন্যে নামিয়ে আনা। মোদী প্রতিটি বাড়িকে ‘সৌর গৃহ’ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। পাশাপাশি, বিদ্যুতের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িকে আয়ের সুযোগ করে দিতে চায় মোদী। এই লক্ষ্যে আমরা ‘পিএম সূর্য ঘর মুফত বিজলী যোজনা’ চালু করেছি। এই প্রকল্পে বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর কাজে সহায়তা করবে সরকার এবং সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকারি টাকা পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রতিটি পরিবার ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিনামূল্যে পাবে এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরকার কিনে নেবে। এর ফলে, পরিবারগুলি হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারবে। সরকার সোলার পাম্প বসানোর ক্ষেত্রেও সহায়তা দিচ্ছে, যার লক্ষ্য হল, কৃষকদেরও বিদ্যুৎ উৎপাদক হিসেবে গড়ে তোলা।
ভাই ও বোনেরা,
ছত্তিশগড়ে ডবল ইঞ্জিন সরকার যেভাবে প্রতিশ্রুতি পালন করে চলেছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। লক্ষ লক্ষ কৃষককে দু’বছরের জন্য প্রাপ্য বোনাস প্রদান করা হয়েছে। আগের কংগ্রেস সরকার গরীবদের জন্য গৃহ নির্মাণে বাধা দিয়েছিল। এখন বিজেপি সরকার দরিদ্রদের জন্য দ্রুত গৃহ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। সরকার ‘হর ঘর জল’ প্রকল্পকেও দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
ছত্তিশগড়ে পরিশ্রমী কৃষক, প্রতিভাবান তরুণ এবং প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। উন্নয়নের জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তার সবকিছুই ছত্তিশগড়ে রয়েছে এবং আগেও ছিল। কিন্তু, স্বাধীনতার পর দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেসের সেই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানসিকতা ছিল না। তারা শুধুমাত্র তাদের রাজনৈতিক স্বার্থেই কাজ করে গেছে। কংগ্রেস বারবার সরকার গড়লেও ভবিষ্যৎ ভারত নির্মাণের কথা ভুলে গিয়েছিল। কারণ, তাদের লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকা। এমনকি, আজও কংগ্রেসের সেই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটেনি। যারা শুধুমাত্র নিজেদের পরিবারের জন্য কাজ করে, তারা কখনই আপনার পরিবারের কথা ভাববে না। কিন্তু, মোদীর কাছে আপনারা সবাই মোদী পরিবারের সদস্য। আপনাদের স্বপ্ন পূরণই মোদীর অঙ্গীকার। সেই কারণে, আমি আজ ‘বিকশিত ভারত বিকশিত ছত্তিশগড়’-এর কথা বলছি।
এই ‘সেবক’ আজ দেশের ১৪০ কোটি নাগরিককে তাঁর কঠোর কাজ এবং নিষ্ঠার গ্যারান্টি দিচ্ছে। ২০১৪ সালে মোদী গ্যারান্টি দিয়েছিল যে, এমন এক সরকার তৈরি হবে যা প্রতিটি ভারতবাসীকে গোটা বিশ্বে গর্বের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শেখাবে। এই গ্যারান্টি পূরণের জন্য আমি নিজেকে উৎসর্গ করেছি। ২০১৪ সালে মোদী গ্যারান্টি দিয়েছিল যে, গরীবদের জন্য সরকার কোনরকম আপোস করবে না। যারা গরীবদের লুঠ করেছে, তাদের সেই টাকা গরীবদের ফিরিয়ে দিতে হবে। যারা গরীবদের টাকা লুঠ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আজ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিনামূল্যে রেশন, নিখরচায় চিকিৎসা, সাধ্যের মধ্যে ওষুধ, গরীবদের জন্য বাসগৃহ নির্মাণ, প্রতিটি বাড়িতে নলবাহিত জলের ব্যবস্থা, প্রতিটি বাড়িতে গ্যাস সংযোগ, প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার – সরকার এই কাজগুলি সম্পন্ন করছে। এই সুবিধাগুলি সেইসব গরীবের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, যা তাঁরা কখনও কল্পনা করতে পারেননি। ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’র সময় ‘মোদীর গ্যারান্টি যান’ প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিল।
বন্ধুগণ,
দশ বছর আগে আমি আরও একটা গ্যারান্টি দিয়েছিলাম। সেই সময় আমি বলেছিলাম, আমরা এমন এক ভারত তৈরি করব, যেখানে আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম যে স্বপ্নকে লালন-পালন করেছিল, তা বাস্তবায়িত করা হবে। আমাদের পূর্বসূরীরা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, নতুন ভারত নির্মাণের মধ্য দিয়ে তা পূরণ করা হচ্ছে। ১০ বছর আগে কেউ কি ভেবেছিলেন যে ডিজিটাল লেনদেন গ্রামেও সম্ভব? কিংবা ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত কাজকর্ম যেমন, বিল প্রদান, আবেদনপত্র দাখিল, প্রভৃতি বাড়ি থেকে করা যেতে পারে? কেউ কি কখনও ভেবেছিলেন, বাইরে কর্মরত বাড়ির সন্তান নিমেষেই তাঁর পরিবারের জন্য টাকা পাঠাতে পারেন? আজ সবই সম্ভব হয়েছে। গত ১০ বছরে বিজেপি সরকার দিল্লি থেকে প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে ৩৪ লক্ষ কোটি টাকার বেশি অর্থ সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছে।
তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান এবং ‘মুদ্রা’ যোজনায় স্বনিযুক্তির লক্ষ্যে বিজেপি সরকার ২৮ লক্ষ কোটি টাকার বেশি আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। ‘পিএম কিষাণ সম্মান নিধি’ যোজনায় বিজেপি সরকার প্রায় ২.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছে। আজ বিজেপি সরকার গরীবদের অধিকার সুনিশ্চিত করেছে। যেখানে দুর্নীতি শেষ হয়, সেখান থেকেই উন্নয়নের পরিকল্পনা শুরু হয় এবং বহু কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি, আশপাশের এলাকাগুলিরও উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে। আজ প্রশস্ত রাস্তা তৈরি হচ্ছে, নতুন রেললাইন বসানো হচ্ছে। এগুলি সবই বিজেপি সরকারের সুশাসনের ফল।
ভাই ও বোনেরা,
একুশ শতকের আধুনিক চাহিদার সঙ্গে তাল রেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের মাধ্যমে ‘বিকশিত ছত্তিশগড়’-এর স্বপ্ন পূরণ করা হবে। ছত্তিশগড়ের উন্নয়ন হলে, কেউ ভারতের অগ্রগতি রুখতে পারবে না। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভারত যখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে, তখন ছত্তিশগড় উন্নয়নের নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। প্রথমবার যাঁরা ভোট দিচ্ছেন, তাঁদের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। ‘বিকশিত ছত্তিশগড়’ তাঁদের স্বপ্ন পূরণ করবে। আমি আপনাদের সবাইকে আবার অভিনন্দন জানাচ্ছি।
ধন্যবাদ!
প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি দিয়েছেন হিন্দিতে