আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মী ডাঃ. জিতেন্দ্র সিংজী, প্রধান সচিব ডঃ পি কে মিশ্র, শ্রী রাজীব গৌবা, সিভিসি শ্রী সুরেশ প্যাটেল, অন্যান্য সমস্ত কমিশনার, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!
এই সতর্কতা সপ্তাহ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মজয়ন্তীর দিন থেকে শুরু হয়েছে। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের সমগ্র জীবন সততা, স্বচ্ছতা, পারদর্শিতা এবং তা থেকে প্রেরিত পাবলিক সার্ভিস গড়ে তোলার জন্য সমর্পিত ছিল। আর এই দায়বদ্ধতা নিয়েই তিনি সতর্কতা বিষয়ক সচেতনতা অভিযান চালিয়েছিলেন। এবার আপনারা সকলে ‘উন্নত ভারতের জন্য দুর্নীতি মুক্ত ভারত’ এই সংকল্প নিয়ে সতর্কতা সপ্তাহ পালন করছেন। এই সংকল্প আজকের সময়ের চাহিদা, প্রাসঙ্গিক এবং দেশবাসীর জন্য ততটাই গুরুত্বপূর্ণ।
বন্ধুগণ,
উন্নত ভারতের জন্য বিশ্বাস এবং বিশ্বস্ততা উভয়েই অত্যন্ত প্রয়োজন। সরকারের উপর জনগণের ক্রমবর্ধমান বিশ্বাস জনগণের আত্মবিশ্বাসও বাড়ায়। আমাদের দেশে এটাই সমস্যা ছিল যে, সরকারগুলি জনগণের আস্থা হারিয়েছিল। তারা নিজেরাও জনগণকে বিশ্বাস করার ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল। দাসত্বের দীর্ঘ সময়কাল থেকে আমরা দুর্নীতি, শোষণ এবং সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণের যে উত্তরাধিকার গ্রহণ করে আসছি, তা দুর্ভাগ্যবশত স্বাধীনতার পর আরও বিস্তারিত হয়েছে। আর এর ফলে, দেশের চার চারটি প্রজন্ম অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু, স্বাধীনতার এই অমৃতকালে আমাদের অনেক দশক ধরে চলে আসা এই অবিশ্বাসের আবহকে সম্পূর্ণ রূপে বদলে দিতে হবে। এ বছর ১৫ অগাস্ট তারিখে লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রদত্ত আমার ভাষণে বলেছিলাম, বিগত ৮ বছরের শ্রম, সাধনা, কিছু উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে সফল হলেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফলদায়ক লড়াইয়ের সময় এসে গেছে। এই বার্তাকে হৃদয়ঙ্গম করে এই পথ অনুসরণ করে তবেই আমরা দ্রুতগতিতে উন্নত ভারত গড়ার পথে এগিয়ে যেতে পারব।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশে দুর্নীতি রোধ এবং দেশবাসীর অগ্রগতির দুটি বড় কারণ হ’ল – প্রথমত, মৌলিক পরিষেবাগুলির অভাব এবং দ্বিতীয়ত, সরকারের অনাবশ্যক চাপ। দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের দেশে বিভিন্ন মৌলিক পরিষেবা এবং সুযোগের অভাব বজায় রাখা হয়েছে। এভাবে একটি অনাবশ্যক ফাটলকে বাড়তে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, যেখানে যে কোনও লাভ, যে কোনও পরিষেবা অন্যের আগে পাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এই প্রবণতা দুর্নীতির ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে একপ্রকার সার ও জলের কাজ করেছে। রেশন দোকানে লাইন, রান্নার গ্যাসের জন্য লাইন, যে কোনও বিল পেমেন্ট, কোথাও ভর্তি হতে গেলে বা লাইসেন্স পেতে গেলে কিংবা কোনও অনুমতি নিতে হলে – সব জায়গাতেই লাইনে দাঁড়াতে হ’ত। এই লাইন যত দীর্ঘ, দুর্নীতির জমিও ততটাই উর্বর ও সমৃদ্ধ হ’ত। এভাবে দুর্নীতি চলতে থাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষরা। যখন দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্তরা নিজেদের প্রাণশক্তি এইসব পরিষেবা পাবার পেছনেই খরচ করে দেন, তা হলে দেশ কিভাবে এগোবে, কিভাবে উন্নত হবে? সেজন্য আমরা বিগত ৮ বছর ধরে অভাব ও চাপের এই ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। চাহিদা ও সরবরাহের পার্থক্যকে মেটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। এজন্য আমরা বেশ কিছু পথ বেছে নিয়েছি। এগুলির মধ্যে তিনটি প্রধান বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। প্রথমত – আধুনিক প্রযুক্তির পথ। দ্বিতীয়ত – মৌলিক পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ‘স্যাচুরেশন – এর লক্ষ্য’। তৃতীয়ত – দেশকে আত্মনির্ভর করে তোলা। এখন যদি রেশনের কথাই ধরি, বিগত ৮ বছরে আমরা সরকারি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বা পিডিএস-কে প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করার মাধ্যমে কোটি কোটি ভুতুড়ে রেশন কার্ড বাতিল করেছি। এভাবে প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে এখন সরকারের পাঠানো টাকা সরাসরি সাধারণ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে। এই একটি পদক্ষেপের মাধ্যমেই ইতিমধ্যে ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ভুল হাতে যাওয়া থেকে বাঁচানো গেছে। নগদ-ভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থায় ঘুষ খাওয়া কালো টাকা এগুলিকে চিহ্নিত করা কতটা কঠিন – তা আমরা সকলেই জানি। এখন ডিজিটাল লেনদেন চালু হওয়ায় এই দুর্নীতি দূর করা অনেকটাই সম্ভব হয়েছে। সরকারি ই-মার্কেট প্লেস – জেম চালু হওয়ায় সরকারি কেনাকাটায় কতটা স্বচ্ছতা এসেছে, তা সংশ্লিষ্ট সকলেই জানেন। প্রত্যেকেই এর গুরুত্ব অনুভব করছেন।
বন্ধুগণ,
যে কোনও সরকারি প্রকল্পের লাভ প্রত্যেক সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে স্যাচুরেশনের লক্ষ্যপ্রাপ্তি সমাজে বৈষম্য দূর করে। আর দুর্নীতিকেও অঙ্কুরিত হতে দেয় না। যখন সরকার এবং বিভিন্ন সরকারি বিভাগ স্বতঃপ্রোণোদিত হয়ে প্রত্যেক সুবিধাভোগী ব্যক্তিকে খোঁজে, তাঁদের দরজায় কড়া নাড়ে, তখন দালালদের ভূমিকা আর থাকে না। সেজন্য আমাদের সরকার প্রত্যেক প্রকল্পে স্যাচুরেশন সুনিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘হর ঘর জল’, প্রত্যেক গরীবের মাথার উপর পাকা ছাদ, প্রত্যেক গরীবের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ, প্রত্যেক দরিদ্র মানুষের ঘরে রান্নার গ্যাসের সংযোগ – এই সকল প্রকল্পের সাফল্য সরকারের এই মনোভাবকে সুস্পষ্ট করে।
বন্ধুগণ,
স্বাধীনতার পর সাত দশক ধরে বিদেশের উপর অত্যাধিক নির্ভরতাও দুর্নীতির একটা বড় কারণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, আমাদের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রও কতটা বিদেশের উপর নির্ভরশীল ছিল, সেটাও আপনারা জানেন। সেজন্যই একের পর এক আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে। আজ আমরা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার জন্য যতটা জোর দিচ্ছি, ততটাই এ ধরনের কেলেঙ্কারির অবকাশ কমছে। রাইফেল থেকে শুরু করে ফাইটার জেট এবং ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্র্যাফট্ পর্যন্ত অনেক যুদ্ধাস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম ভারত আজ নিজেই তৈরি করার পথে এগিয়ে চলেছে। প্রতিরক্ষা ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনের ক্ষেত্রে আমাদের আমদানি-নির্ভরতা কমাতে আত্মনির্ভরতার সমস্ত প্রচেষ্টাকে উৎসাহ যোগানো হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
স্বচ্ছতা সুনিশ্চিত করতে সিভিসি-র মতো সংগঠন সকলকে উৎসাহিত করছে। গতবার আমি আপনাদের সকলকে প্রতিরোধমূলক সতর্কতার উপর জোর দেওয়ার কথা অনুরোধ করেছিলাম। আমাকে বলা হয়েছে যে, আপনারা ইতিমধ্যেই সেই লক্ষ্যে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আপনারা যে তিন মাসের অভিযান চালিয়েছেন, তাও অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সেজন্য আমি আপনাদের পুরো টিমকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। সেজন্য আপনারা অডিট ও ইন্সপেকশনের একটি পারম্পরিক পদ্ধতি মেনে চলছেন। এই পদ্ধতিকে আপনারা কিভাবে আরও আধুনিক এবং প্রযুক্তির সঞ্চালিত করে তুলতে পারেন, তা নিয়েও আপনারা ভাবনাচিন্তা করছেন। আর এরকম তো ভাবতেই হবে।
বন্ধুগণ,
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার যে ইচ্ছেশক্তি দেখাচ্ছে, সেই ইচ্ছাশক্তি আমাদের সমস্ত বিভাগেও যেন পরিলক্ষিত হয়। উন্নত ভারতের জন্য আমাদের একটি এমন প্রশাসনিক বাস্ত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা দুর্নীতির ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করে চলবে। আজ আমাদ্দের সরকারের নীতি, ইচ্ছাশক্তি, সমস্ত সিদ্ধান্ত – প্রতিটি ক্ষেত্রেই হয়তো আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু, এই মনোভাব আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থার ডিএনএ-তেও প্রবেশ করাতে হবে এবং শক্তিশালী করে তুলতে হবে। আমরা জানি, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত আধিকারিক, তাদের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে বিভাগীয় কিংবা আইনি প্রক্রিয়া চলতে থাকে। আমরা কি এই দুর্নীতি সম্পর্কিত ‘ডিসিপ্লিনারি প্রসিডিংস’গুলিকে যতটা সম্ভব মিশন মোডে বাস্তবায়িত করতে পারি? কারণ, তিনি যদি প্রকৃত দোষী না হন, তা হলে মাথার উপর ঝুলে থাকা তলোয়ার তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে যে সমস্যার মধ্যে ফেলে দেয়, যিনি একবার এই চক্রে ফেঁসেছেন, তিনিই জানেন। সাআরা জীবন দুঃখ থেকে যায় যে, আমি সততার সঙ্গে সব কাজ করে গেছি কিন্তু আমাকে এভাবে ফাঁসানো হয়েছে কিন্তু কোনও সিদ্ধান্তই নেওয়া হচ্ছে না। যে সত্যিই অন্যায় করেছে তার সমস্যা নিয়ে আমার এত ভাবনা নেই। কিন্তু, যিনি নির্দোষ তাঁর ও তাঁর পরিবারের জীবনে এটা কত বড় বোঝা! আমাদেরই সহকর্মীদের এত দীর্ঘ সময় ধরে কী লাভ!
বন্ধুগণ,
এ ধরনের অভিযোগের নিষ্পত্তি যত দ্রুত হবে, আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় তত দ্রুত স্বচ্ছতা আসবে। তত দ্রুত এর শক্তি বাড়বে। যত ফৌজদারি মামলা রয়েছে, সেগুলিকেও দ্রুত নিষ্পত্তি করার প্রয়োজন রয়েছে। সেগুলি যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, তার নিয়মিত তদারকির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আরেকটি কাজ করা যেতে পারে, তা হল – যত ঝুলে থাকা দুর্নীতির মামলা রয়েছে, সেই অনুযায়ী বিভাগগুলির র্যা ঙ্কিং চালু করা। এখন এক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা আনার জন্য আমাদের প্রতিযোগিতা চালু করতে হবে। কোন বিভাগ এক্ষেত্রে বেশি উদাসীন, সেটা বুঝতে পারলে তার কারণ খুঁ%জে বের করা যাবে। আর যে বিভাগ দ্রুতগতিতে দুর্নীতির মামলাগুলি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে, তাদের পুরস্কৃত করতে হবে। দুর্নীতি মামলা নিষ্পত্তির মাসিক কিংবা ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন যদি পেশ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
আমাদের প্রযুক্তির মাধ্যমে আরেকটি কাজ করতে হবে। প্রায়শই দেখা গেছে যে, ‘ভিজিল্যান্স ক্লিয়ারেন্স’ পেতে অনেক সময় লেগে যায়। এই প্রক্রিয়াকেও প্রযুক্তির সাহায্যে ত্বরান্বিত করা যেতে পারে। আরেকটি বিষয় আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই, তা হ’ল ‘পাবলিক গ্রিভান্স’ – এর তথ্য। সরকারের বিভিন্ন বিভাগে সাধারণ মানুষ যে অভিযোগ পাঠান, সেগুলির নিষ্পত্তিরও একটি ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু, যদি আমরা এই পাবলিক গ্রিভান্সের তথ্যগুলিকে নিয়মিত অডিট করতে পারি, তা হলে জানতে পারব যে, কোনও বিশেষ বিভাগের বিরুদ্ধে বেশি অভিযোগ আসছে কিনা। কোনও বিশেষ আধিকারিক বা কর্মীর কাছে গিয়ে কোনও মামলা আটকে থাকে কিনা। কোনও প্রক্রিয়াকরণজাত সমস্যা রয়েছে কিনা। আমার মনে হয়, এরকম করলে আপনারা সেই বিভাগের দুর্নীতির গভীরে সহজেই পৌঁছতে পারবেন। আমাদের এই অভিযোগগুলিকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা উচিৎ নয়। এগুলিকে সম্পূর্ণ ব্যবস্থা ও পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করতে হবে। আর তা হলে সরকার ও প্রশাসনিক বিভাগগুলির প্রতি জনগণের বিশ্বাস আরও বাড়বে।
বন্ধুগণ,
দুর্নীতির উপর নজর রাখার জন্য আমাদের সমাজ ও সাধারণ মানুষবের অংশীদারিত্ব সুনিশ্চিত করতে উৎসাহিত করা যায় – সে বিষয়ে ভাবতে হবে। সেজন্য দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি যতই শক্তিশালী হোক না কেন, সে যেন কোনোভাবে বাঁচতে না পারে, তা সুনিশ্চিত করা আপনাদের মতো সংস্থাগুলির দায়িত্ব। কোনও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি যেন রাজনৈতিক ও সামাজিক আশ্রয় না পায়, তাদেরকে যেন কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়, তেমন আবহ গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা দেখেছি যে, জেলে সাজা হওয়া সত্ত্বেও, দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও অনেকবার দুর্নীতিকারীদের গৌরব গান গাওয়া হয়। আমি তো দেখছি, যারা এ ধরনের সততার সওদাগর তারাও এই দুর্নীতি বাজদের হাত ধরে ফটো তুলতে লজ্জিত হন না। ভারতীয় সমাজের জন্য এই পরিস্থিতি ঠিক নয়। আজও কিছু মানুষ প্রমাণিত দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে পক্ষে নানারকম যুক্তি দেখায়। অনেকে তো দুর্নীতিকারীদের বড় বড় সম্মান প্রদানের জন্যও ওকালতি করেন। আমাদের দেশে আগে কখনও এরকম শুনিনি। এ ধরনের মানুষের মনেও যেন কর্তব্যবোধ জাগিয়ে তোলা যায়, তার উপায় বের করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাদের বিভাগকে কঠোর ও কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
বন্ধুগণ,
আজ যখন আমি আপনাদের মধ্যে এসেছি, তখন আরও কিছু বলতে ইচ্ছে করছে। দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনারা নানা পদক্ষেপ নেন। আপনেদের কোনোভাবেই নমনীয় হওয়ার প্রয়োজন নেই। দেশের মঙ্গলের জন্য যে কাজ করছেন, তার জন্য কোনও অপরাধবোধে ভোগা প্রয়োজন নেই। আমাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হলে চলবে না। দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে যত সমস্যা আসছে, তা থেকে তাদের মুক্তি দেওয়ার কাজই আমাদের করতে হবে। আর যারা নিহিত স্বার্থে তারা চেঁচাবে, আপনাদের মতো সংস্থা কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করবে, আপনাদের বদনাম করার চেষ্টা করবে, তাদের প্রতি নমনীয় হলে চলবে না। দীর্ঘকাল ধরে এই ব্যবস্থায় এ ধরনের প্রবণতা গড়ে উঠেছে। দীর্ঘকাল ধরে সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমি অনেক গালি, অভিযোগ শুনেছি। কিন্তু, ভয় পাইনি। আমি জানি যে, জনগণেশ ঈশ্বরের রূপ হন। তাঁরা সত্যকে পরীক্ষা করেন। আর সময় এলে সত্যের পক্ষেই দাঁড়ান। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি বন্ধুগণ। আসুন, আমরা সকলে সততার পথে চলি। আমরা যে যেরকম কাজের দায়িত্ব পেয়েছি, তা যেন সততার সঙ্গে পালন করি। আপনারা দেখবেন, তা হলে ঈশ্বরও আপনাদের সঙ্গে থাকবেন। জনগণও আপনাদের সঙ্গে থাকবেন। কিছু, লোক হয়তো চেঁচামেচি করবে। কারণ, তাদের নিজেদের স্বার্থ লঙ্ঘিত হবে। কারণ, তারা যে নিজেরাই নোংরার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। সেজন্য আমি বারবার বলি, দেশের জন্য সততার জন্য কাজ করার সময় এ ধরনের বিবাদকে পরোয়া করবেন না। আমরা যদি সততার পথে থাকি, নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করি, তা হলে আত্মরক্ষার চিন্তা করতে হবে না, নমনীয় হতে হবে না। আপনারা সবাই সাক্ষী যে, যখন আপনারা দায়বদ্ধতার সঙ্গে কোনও পদক্ষেপ নেন, আপনাদের সকলের জীবনেই হয়তো এরকম সময় বারবার এসেছে। সমাজ আপনার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতিমুক্ত দেশ ও সমাজ গড়ে তুলতে এই কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের মতো সংস্থাগুলিকে নিরন্তর সচেতন থাকতে হবে। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যবস্থাকেও সচেতন রাখার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, একা একা আপনারা সবকিছু করতে পারবেন না। সম্পূর্ণ ব্যবস্থাকে যখন আপনারা নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নেবেন, তখন দেখবেন আপনাদের কাজ করার উদ্যম ও শক্তি অনেকটাই বেড়ে যাবে।
বন্ধুগণ,
আজ যখন আমি আপনাদের মধ্যে এসেছি, তখন আরও কিছু বলতে ইচ্ছে করছে। দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনারা নানা পদক্ষেপ নেন। আপনেদের কোনোভাবেই নমনীয় হওয়ার প্রয়োজন নেই। দেশের মঙ্গলের জন্য যে কাজ করছেন, তার জন্য কোনও অপরাধবোধে ভোগা প্রয়োজন নেই। আমাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হলে চলবে না। দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে যত সমস্যা আসছে, তা থেকে তাদের মুক্তি দেওয়ার কাজই আমাদের করতে হবে। আর যারা নিহিত স্বার্থে তারা চেঁচাবে, আপনাদের মতো সংস্থা কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করবে, আপনাদের বদনাম করার চেষ্টা করবে, তাদের প্রতি নমনীয় হলে চলবে না। দীর্ঘকাল ধরে এই ব্যবস্থায় এ ধরনের প্রবণতা গড়ে উঠেছে। দীর্ঘকাল ধরে সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমি অনেক গালি, অভিযোগ শুনেছি। কিন্তু, ভয় পাইনি। আমি জানি যে, জনগণেশ ঈশ্বরের রূপ হন। তাঁরা সত্যকে পরীক্ষা করেন। আর সময় এলে সত্যের পক্ষেই দাঁড়ান। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি বন্ধুগণ। আসুন, আমরা সকলে সততার পথে চলি। আমরা যে যেরকম কাজের দায়িত্ব পেয়েছি, তা যেন সততার সঙ্গে পালন করি। আপনারা দেখবেন, তা হলে ঈশ্বরও আপনাদের সঙ্গে থাকবেন। জনগণও আপনাদের সঙ্গে থাকবেন। কিছু, লোক হয়তো চেঁচামেচি করবে। কারণ, তাদের নিজেদের স্বার্থ লঙ্ঘিত হবে। কারণ, তারা যে নিজেরাই নোংরার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। সেজন্য আমি বারবার বলি, দেশের জন্য সততার জন্য কাজ করার সময় এ ধরনের বিবাদকে পরোয়া করবেন না। আমরা যদি সততার পথে থাকি, নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করি, তা হলে আত্মরক্ষার চিন্তা করতে হবে না, নমনীয় হতে হবে না। আপনারা সবাই সাক্ষী যে, যখন আপনারা দায়বদ্ধতার সঙ্গে কোনও পদক্ষেপ নেন, আপনাদের সকলের জীবনেই হয়তো এরকম সময় বারবার এসেছে। সমাজ আপনার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতিমুক্ত দেশ ও সমাজ গড়ে তুলতে এই কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের মতো সংস্থাগুলিকে নিরন্তর সচেতন থাকতে হবে। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যবস্থাকেও সচেতন রাখার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, একা একা আপনারা সবকিছু করতে পারবেন না। সম্পূর্ণ ব্যবস্থাকে যখন আপনারা নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নেবেন, তখন দেখবেন আপনাদের কাজ করার উদ্যম ও শক্তি অনেকটাই বেড়ে যাবে।
বন্ধুগণ,
আপনাদের দায়িত্ব অনেক বড়। আপনাদের সামনে সমস্যাগুলিও ক্রমপরিবর্তিত হতে থাকে। সেজন্য আপনাদের কর্মপদ্ধতিতেও ক্রমাগত পরিবর্তন আনতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আপনারা অমৃতকালে একটি স্বচ্ছ ও প্রতিস্পর্ধী প্রশাসনিক বাস্তু ব্যবস্থা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে থাকবেন। আজ এই অনুষ্ঠানে আপনারা কিছু স্কুলের ছাত্রছাত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাই, আমি খুব খুশি হয়েছি। এরা সতর্কতা নিয়ে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। এদেরকে নিয়ে ভবিষ্যতে একটি নিয়মিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরম্পরা গড়ে তোলা যেতে পারে। কিন্তু, আজ একটি দিকে আমার মন পড়ে আছে। আপনারাও হয়তো দেখেছেন ও তা নিয়ে ভেবেছেন। মাত্র ২০ শতাংশ পুরুষ এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুরস্কার পেয়েছেন। বাকি, ৮০ শতাংশ পুরস্কার জিতে নিয়েছে আমাদের কন্যারা। ৫ জন পুরস্কার বিজেতার মধ্যে ৪ জনই মেয়ে। ছেলেদের মধ্যেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি কিভাবে বাড়ানো যেতে পারে, তা নিয়ে ভাবতে হবে। মেয়েরা যেরকম দুর্নীতির বিরুদ্ধে সতর্ক, একই রকমভাবে ছেলেদেরকেও সতর্ক করে তুলতে পারলে, তা হলেই আমাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। কিন্তু, আপনাদের এই প্রতিরোধমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে চালু অভিযান খুবই ভালো। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দুর্নীতির প্রতি ঘৃণা সৃষ্টির ক্ষেত্রে এই অভিযান অনেক কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আবর্জনার প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব বোঝা যায় না। আর দুর্নীতিকে কখনও ছোট করে দেখবেন না। তা হলে দুর্নীতি গোটা ব্যবস্থাকেই গ্রাস করে নেবে। আমি জানি যে, এ বিষয়ে বারবার বলতে হবে, শুনতে হবে, সতর্ক করতে হবে, এমনকি সতর্ক থাকতেও হবে। কিছু মানুষ আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পদ্ধতি খুঁজতে থাকে। তারা সেজন্য নিজেদের জ্ঞানকেও ব্যবহার করে। এমনকি, অন্যদেরকেও পরামর্শ দেয়। এদেরকে আগে উপেক্ষা করলে তেমন সমস্যা হ’ত না। কিন্তু, এখন দুর্নীতির পরিধি অনেক বেড়ে গেছে। আজ নয়তো কাল কখনও এই সমস্যা এমন বিরাট আকার ধারণ করবে যে, তা থেকে ব্যবস্থাকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়বে। এক্ষেত্রে আমরা যত বেশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করব, তত এদের মোকাবিলা করা সম্ভব হবে, আমরা ব্যবস্থাকেও বদলাতে পারব। আসুন আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করি। আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভ কামনা জানাই।
ধন্যবাদ।