QuoteWhen the world is immersed in worry, India is spreading hope: PM
QuoteToday India is working in every sector, in every area with unprecedented speed : PM
QuoteIndia today is both a developing country and an emerging power: PM
QuoteIndia is one of the youngest countries in the world with the potential of achieving great heights: PM
QuoteIndia is now moving ahead with a forward looking thinking: PM
Quote140 crore people of India have joined the resolution of Viksit Bharat , they themselves are driving it: PM
QuoteIndia has the advantage of double AI power, First AI, Artificial Intelligence, Second AI, Aspirational India: PM
QuoteIndia does not believe in taken for granted relationships, the foundation of our relations is trust and reliability: PM
QuoteIndia has shown the world a new path to digital public infrastructure by democratizing technology: PM
QuoteIndia has shown that digital innovation and democratic values ​​can coexist: PM

এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড সামিটে উপস্থিত সম্মাননীয় অতিথিদের স্বাগত জানাই। এই শীর্ষ সম্মেলনে আপনারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশ্ব নেতারাও তাঁদের মতামত সবার সঙ্গে ভাগ করে নেবেন। 

বন্ধুরা, 
আমরা যদি গত চার-পাঁচ বছরের দিকে তাকাই, তাহলে দেখবো বেশিরভাগ আলোচনারই বিষয়বস্তু ছিল উদ্বেগ - ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ। করোনার সময়ে বিশ্বজনীন এই অতিমারির মোকাবিলা কিভাবে করা যায়, তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ছিল। কোভিড যত ছড়িয়ে পড়তে লাগলো, বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগও ততোই বেড়ে চললো। এই অতিমারির জেরে মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়লো। এরপর এলো যুদ্ধ। এই নিয়ে অনেক আলোচনা হল, উদ্বেগ তীব্রতর হল। বিশ্বজনীন সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়া এবং নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানি নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিল। এই উত্তেজনা, দ্বন্দ্ব এবং চাপ, বিশ্বজনীন বিভিন্ন সম্মেলন ও আলোচনা সভার বিষয়বস্তু হয়ে উঠলো। আজ উদ্বেগই যখন মোটের ওপর বিভিন্ন আলোচনার মূল বিষয় হয়ে উঠেছে, তখন ভারতে কী নিয়ে চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে? সেক্ষেত্রে এক চরম বৈপরীত্য  দেখা যাবে। এখানে আমরা “দ্য ইন্ডিয়ান সেঞ্চুরি” নিয়ে কথা বলছি। বিশ্বজোড়া ওলোট-পালটের মধ্যে ভারত আশার এক কিরণ হয়ে উঠেছে। বিশ্ব যখন উদ্বেগের গ্রাসে, ভারত তখন আশার সঞ্চার করছে। এমনটা নয় যে বিশ্বের পরিস্থিতি আমাদের ওপর প্রভাব ফেলেনা – অবশ্যই ফেলে। ভারতকেও বহু চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়, কিন্তু এখানে ইতিবাচকতার একটা পরিমণ্ডল রয়েছে, যা আমরা সকলে অনুভব করতে পারি। আর সেইজন্যই “দ্য ইন্ডিয়ান সেঞ্চুরি” নিয়ে কথা হয়। 

 

|

বন্ধুরা, 
ভারত আজ প্রতিটি ক্ষেত্রে যে গতি ও মাত্রায় এগিয়ে চলেছে, তা অভূতপূর্ব। ভারতের গতি ও মাত্রার কোনও তুলনা হয়না। আমাদের সরকার তৃতীয় মেয়াদে প্রায় ১২৫ দিন পূর্ণ করেছে। আমি আপনাদের সঙ্গে এই ১২৫ দিনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবো। ১২৫ দিনে গরিব মানুষের জন্য ৩ কোটি নতুন পাকা বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১২৫ দিনে আমরা ৯ লক্ষ কোটি টাকার পরিকাঠামোগত প্রকল্প চালু করেছি। ১২৫ দিনে ১৫টি নতুন বন্দে ভারত ট্রেন যাতায়াত শুরু করেছে, ৮টি নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এই ১২৫ দিনেই আমরা দেশের যুব সম্প্রদায়ের জন্য ২ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ এনেছি, কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ২১,০০০ কোটি টাকা পাঠিয়েছি এবং সত্তরোর্ধ্ব প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিচর্যার ব্যবস্থা করেছি। ভারতে যে কাজ চলছে, তার পরিধির কথা একবার ভেবে দেখুন – ১২৫ দিনের মধ্যে ৫ লক্ষ বাড়ির ছাদে সোলার প্ল্যান্ট বসানো হয়েছে। “এক পেড় মাকে নাম” প্রচারাভিযানের আওতায় ৯০ কোটির বেশি গাছ লাগানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, ১২৫ দিনে আমরা ১২টি নতুন শিল্পাঞ্চল স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছি। এই ১২৫ দিনে আমাদের সেনসেক্স ও নিফটি ৬ থেকে ৭ শতাংশ বেড়েছে, আমাদের বিদেশী মুদ্রার সঞ্চয় ৬৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৭০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ভারতের সাফল্যের তালিকা অতি দীর্ঘ, আমি আপনাদেরকে কেবলমাত্র গত ১২৫ দিনের কথা বলছি। এই ১২৫ দিনে ভারতে বিশ্বস্তরের যে আলোচনাগুলি হয়েছে তা নিয়েও আপনাদের জানাই। ১২৫ দিনে ভারতে আন্তর্জাতিক কী কী অনুষ্ঠান হয়েছে ?  টেলিকম এবং ডিজিটাল ভবিষ্যত নিয়ে আন্তর্জাতিক সমাবেশ হয়েছে, আর্থিক প্রযুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক উৎসব হয়েছে। এছাড়াও সেমি কন্ডাক্টর পরিমণ্ডল, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি এবং অসামরিক পরিবহণের ভবিষ্যত নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনও ভারতে হয়েছে।

বন্ধুরা, 
আমি আপনাদের যা বললাম, তা শুধু অনুষ্ঠানের একটা তালিকা নয়, এটা ভারতের আশা-আকাঙ্খারও এক রূপরেখা। এতে ভারতের দিকনির্দেশনা এবং বিশ্বের আশা – দুই-ই রয়েছে। এই বিষয়গুলিই পৃথিবীর ভবিষ্যতকে রূপ দেবে। এগুলি নিয়ে আলোচনার জন্য সারা বিশ্ব আজ ভারতের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। 

বন্ধুরা, 
ভারতে আজ এত কিছু ঘটছে এবং আমাদের তৃতীয় মেয়াদে আমরা যে গতিতে এগোচ্ছি তার সুবাদে বিভিন্ন রেটিং এজেন্সি তাদের পূর্বাভাসে ভারতের বৃদ্ধির হার বাড়িয়েছে। মার্ক মোবিয়াসের মতো বিশেষজ্ঞরা ভারতের বিকাশে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করছেন। তারা ভারতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে অত্যন্ত উৎসাহী। এর গভীর তাৎপর্য রয়েছে। মার্ক মোবিয়াস যখন আন্তর্জাতিক তহবিলগুলিকে তাদের মূলধনের অন্তত ৫০ শতাংশ ভারতের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন, তখন তা অত্যন্ত শক্তিশালী এক বার্তা পাঠায়। 

বন্ধুরা, 
ভারত আজ এক উন্নয়নশীল দেশ এবং এক উদীয়মান শক্তি। আমরা দারিদ্র্যের চ্যালেঞ্জকে কাছ থেকে দেখেছি, আমরা জানি কীভাবে এরমধ্য থেকে অগ্রগতির পথ তৈরি করে নিতে হয়। আমাদের সরকার দ্রুততার সঙ্গে নীতি প্রণয়ন করছে, সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং নতুন নতুন সংস্কার চালু করছে। আমার সঙ্গে বহু মানুষের কথা হয়। অনেকে বলেন, “মোদীজি আপনি টানা তিনবার জিতেছেন, এত কিছু অর্জন করেছেন, এর পরেও এমন অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন কেন? এর কী প্রয়োজন আছে? আপনি তো ভারতকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি করে তুলেছেন, এত মাইলফলক অতিক্রম করেছেন, এত বকেয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এত সংস্কার চালু করেছেন। এরপরেও এত পরিশ্রম কেন? ” অনেকে এমন বলেন বটে, কিন্তু যে স্বপ্ন আমরা দেখেছি, যে সংকল্প নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি, সেখানে বিশ্রামের কোনও অবকাশ নেই। 

 

|

গত ১০ বছরে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যের করাল গ্রাস থেকে বের করে আনা হয়েছে। এটাই কি যথেষ্ট ?  না। গত ১০ বছরে প্রায় ১২ কোটি শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে, ১৬ কোটি মানুষকে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এটাও যথেষ্ট নয়?  গত ১০ বছরে ৩৫০টিরও বেশি মেডিকেল কলেজ নির্মাণ করা হয়েছে, ১৫টিরও বেশি এইমস গড়ে তোলা হয়েছে। এটা কি যথেষ্ট। গত ১০ বছরে দেড় লক্ষেরও বেশি স্টার্টআপ ভারতে গড়ে উঠেছে। ৮ কোটি যুবক যুবতী তাঁদের ব্যবসা শুরুর জন্য মুদ্রা ঋণ পেয়েছেন। উন্নয়নের খিদে মেটার পক্ষে এটা কি যথেষ্ট ?  আমার উত্তর হল, না। এটা যথেষ্ট নয়। আজ ভারত বিশ্বের তরুণতম দেশগুলির মধ্যে একটি। তারুণ্যের এই সম্ভাবনা আমাদের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। সেজন্যই আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে এবং তা দ্রুত করতে হবে। 

বন্ধুরা, 
আপনারা নিশ্চয় ভারতের চিন্তা-ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন। স্বাভাবিক এবং প্রথাগত ভাবেই যেকোনও সরকার তাদের কাজের সঙ্গে পূর্ববর্তী সরকারের কাজের তুলনা করে থাকে। এর মধ্যে কোনও ভুল নেই। সরকার তার কাজের অগ্রগতি পরিমাপ করার জন্য প্রশ্ন করে, “আগে কি ছিল আর এখন কি আছে? ” এতে একটা সন্তুষ্টি আসে, সরকার মনে করে তারা আগের সরকারের থেকে ভালো কাজ করছে। অনেক সরকার নিজেদের গত ১০-১৫ বছরের কাজের তুলনা করে এবং সেটাকে সাফল্যের মাপকাঠি হিসেবে ধরে। আমরাও এই পথে চলেছি। এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু এখন এই পথ আর আমাদের সন্তুষ্টি দিচ্ছে না। এখন আর আমরা গতকালের সঙ্গে আজকের তুলনা করে ক্ষান্ত হতে পারছি না। আমরা কী অর্জন করেছি, সেটা আর আমাদের সাফল্যের মাপকাঠি নয়। আমরা এখন ভাবছি আমরা কোথায় যেতে চাই, সেই লক্ষ্য অর্জনে কতটা যেতে পেরেছি, আরও কতটা যেতে হবে, কতটা পথ বাকি আছে, আমরা কখন আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছোতে পারবো – এইসব নিয়ে। নতুন এই দৃষ্টিভঙ্গি আমার এবং সরকারের কাজকে পরিচালনা করছে। 

আজ ভারত ভবিষ্যতমুখী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে চলেছে। ২০৪৭ সালের মধ্যে ‘বিকশিত ভারত’ – এর সংকল্প এই মানসিকতারই প্রতিফলন। আমাদের এখন দেখতে হচ্ছে ‘বিকশিত ভারত’ – এর লক্ষ্য অর্জনে আমরা কতদূর এগোতে পেরেছি, আরও কতটা পথ যেতে হবে এবং সেজন্য কোন গতি ও মাত্রায় আমাদের কাজ করতে হবে। এটা কিন্তু শুধু সরকারের সিদ্ধান্ত নয়, আজ ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ ‘বিকশিত ভারত’ – এর সংকল্প গ্রহণ করেছেন। তাঁরা নিজেরাই নিজেদের এই লক্ষ্যে চালনা করছেন। এটা শুধু জনসাধারণের অংশগ্রহণের লক্ষ্যে কোনও প্রচারাভিযান নয়, এটা ভারতের আত্মবিশ্বাস অর্জনের আন্দোলন। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে সরকার যখন ‘বিকশিত ভারত’ – এর ভিশন ডকুমেন্ট তৈরির কাজ করছিল তখন লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁদের মতামত পাঠিয়েছিলেন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কের আয়োজন করা হয়েছিল। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শের ভিত্তিতেই ভারত আগামী ২৫ বছরের লক্ষ্য স্থির করেছে। ‘বিকশিত ভারত’ নিয়ে আলোচনা এখন আমাদের চেতনার অঙ্গ হয়ে উঠেছে। এটাই ‘জনশক্তি’-র মাধ্যমে ‘রাষ্ট্রশক্তি’ গঠনের উজ্জ্বলতম নিদর্শন বলে আমার বিশ্বাস। 

 

|

বন্ধুরা, 
আজকের ভারত এমন অনেক সুবিধা ভোগ করছে যার জন্য এই শতককে ভারতের শতকে পরিণত করা যায়। আপনারা সকলেই জানেন যে, এই যুগটা হল, এআই বা কৃত্রিম মেধার যুগ। পৃথিবীর বর্তমান ও ভবিষ্যত এআই-এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। ভারতের কিন্তু দ্বিগুণ এআই শক্তির সুবিধা রয়েছে। আপনারা সবাই অবাক হচ্ছেন তো, সারা বিশ্বের যেখানে একটা এআই, সেখানে মোদী হঠাৎ করে দুটো এআই পেলো কোথা থেকে? সারা বিশ্ব জানে,  এআই হল, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম মেধা। আমাদের কিন্তু আর একটা এআই আছে। অ্যাসপিরেশনাল ইন্ডিয়া বা আশা-আকাঙ্খা সম্পন্ন ভারত। এই দুটো শক্তি যখন একত্রিত হয় তখন স্বাভাবিকভাবেই উন্নয়নের গতি অনেক বেড়ে যায়। 

বন্ধুরা, 
আমাদের কাছে এআই শুধু একটা প্রযুক্তি নয়, এটা ভারতের যুব সমাজের কাছে নতুন সম্ভাবনার সিংহদুয়ার। এই বছরেই ভারত এআই মিশন চালু করেছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা, স্টার্টআপ – সব ক্ষেত্রেই ভারত এআই-এর ব্যবহার বাড়াচ্ছে। সারা বিশ্বকে আরও উন্নত এআই সমাধান দিতে আমরা কাজ করছি। কোয়াড স্তরে ভারত বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। অন্য এআই অর্থাৎ আশা-আকাঙ্খা সম্পন্ন ভারতকেও আমরা সমান গুরুত্ব দিচ্ছি। মধ্যবিত্ত শ্রেণী, সাধারণ মানুষ, তাঁদের জীবনযাত্রায় সহজতা আনা, তাঁদের জীবন-যাপনের মানোন্নয়ন, ছোট ব্যবসাদার, এমএসএমই, যুব সমাজ, মহিলা – এদের সবার আশা-আকাঙ্খার কথা মাথায় রেখে আমরা নীতি প্রণয়ন করছি এবং সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। 

বন্ধুরা,
আশা-আকাঙ্খা সম্পন্ন ভারতের যে কথা আমি বলছি তার এক চমৎকার নিদর্শন পাওয়া যাবে সংযোগ সাধনের কাজের দিকে তাকালে। আমরা সংযোগ স্থাপন ও অন্তর্ভুক্তিকরণের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছি। যে সমাজ উন্নয়নের পথে এগোতে চায় তার ক্ষেত্রে এটা একান্ত আবশ্যক। ভারতের ক্ষেত্রেও এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতবড় একটা দেশ, তার এমন বৈচিত্র্যপূর্ণ ভূপ্রকৃতি – এদেশের সম্ভাবনার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে গেলে একে দ্রুত সংযুক্ত করতে হবে। সেজন্যই আমরা বিমান সংযোগের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আমার মনে আছে, আমি যখন প্রথম বলেছিলাম যে, যারা চটি পরে ঘুরে বেড়ান, বিমান যাত্রাকে আমি তাদের নাগালের মধ্যে এনে দিতে চাই, তখন অনেকেই বলেছিলেন – “এটা ভারতে কী করে সম্ভব?” কিন্তু আমরা তাতে কান না গিয়ে উড়ান প্রকল্প চালু করেছিলাম। আজ উড়ান প্রকল্পের ৮ বছর হয়ে গেছে। এই প্রকল্পে আমাদের কাজের ভিত্তি ছিল দুটো। প্রথমত আমরা টিআর টু এবং টিআর থ্রি শহরগুলিতে নতুন বিমানবন্দরের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলাম। দ্বিতীয়ত, আমরা বিমান ভ্রমণকে সুলভ করে সকলের নাগালের মধ্যে এনে দিয়েছিলাম। এপর্যন্ত উড়ান প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩ লক্ষ বিমান যাত্রা হয়েছে, যাতায়াত করেছেন দেড় কোটি সাধারণ মানুষ। উড়ানের আওতায় ৬০০-রও বেশি রুট রয়েছে। এর বেশিরভাগই ছোট শহরগুলিকে সংযুক্ত করে। ২০১৪ সালে ভারতে ৭০টির মতো বিমানবন্দর ছিল। আজ বিমানবন্দরের সংখ্যা দেড়শো পেরিয়ে গেছে। উড়ান প্রকল্প দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে সামাজিক আশা-আকাঙ্খা উন্নয়নে গতি জোগায়।
বন্ধুরা,
আমাদের দেশের যুবশক্তির বিষয়ে কয়েকটি উদাহরণ আপনাদের দিই। আমরা ভারতের যুব সম্প্রদায়কে এমন এক শক্তিতে পরিণত করতে চাইছি যাতে তা বিশ্বের বিকাশের চালিকাশক্তিতে পরিণত হতে পারে। সেইজন্যই আমরা শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, গবেষণা এবং কর্মসংস্থানের ওপর এতটা জোর দিচ্ছি। গত ১০ বছর ধরে আমরা এইসব ক্ষেত্রে যে কাজ করেছি, তার ফল এখন দেখা যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে টাইমস হায়ার এডুকেশন ব়্যাঙ্কিং প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ভারত গবেষণার মানে সবথেকে বেশি উন্নতি করেছে। গত ৮-৯ বছর ধরে এক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩০ থেকে বেড়ে ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। গত ১০ বছরে কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ব়্যাঙ্কিংয়ে ভারতের উপস্থিতির হার ৩০০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। আজ ভারত পেটেন্ট ও ট্রেড মার্কের সংখ্যার ক্ষেত্রে সর্বকালীন রেকর্ড গড়েছে। ভারত সারা বিশ্বের গবেষণা ও উন্নয়ন হাবে পরিণত হয়েছে। আড়াই হাজারের কাছাকাছি কোম্পানির গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে ভারতে। ভারতের স্টার্টআপ পরিমণ্ডলেও অভূতপূর্ব বৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে।

 

|

বন্ধুরা, 
ভারতের এই ব্যাপক পরিবর্তন বিশ্বের আস্থা অর্জন করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বকে ভবিষ্যতের পথ দেখাচ্ছে। এই সঙ্কটের সময়ে সারাবিশ্ব ভারতকে এক নির্ভরযোগ্য অংশীদার বলে মনে করছে। কোভিডের দিনগুলোর কথা মনে করুন – অত্যাবশ্যক ওষুধ ও টিকা তৈরিতে আমাদের যে দক্ষতা, তা কাজে লাগিয়ে আমরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার উপার্জন করতে পারতাম, কিন্তু তাতে মানবতা হেরে যেতো। এটা আমাদের নীতি নয়। সেইজন্যই আমরা প্রয়োজনের সময়ে শয়ে শয়ে দেশকে ওষুধ এবং জীবনদায়ী টিকা যুগিয়েছি। ভারত যে সঙ্কটের সময় বিশ্বের পাশে দাঁড়াতে পেরেছে, তাতে আমি আনন্দিত। 

বন্ধুরা, 
সম্পর্কের মূল্য না থাকলে ভারত তাতে বিশ্বাসী নয়। আমাদের সম্পর্ক যে আস্থা ও নির্ভরতার ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে থাকে, সারা বিশ্ব তা বোঝে। ভারতের উন্নতি হলে গোটা পৃথিবী আনন্দিত হয়। ভারত সাফল্য পেলে বিশ্বের তাতে ভালো লাগবে। এই যেমন, সাম্প্রতিক চন্দ্রায়ন মিশনের কথাই ধরুন। গোটা পৃথিবী উৎসবের মতো এই সাফল্য উদযাপন করেছে। ভারতের অগ্রগতিতে কেউ হিংসুটে বা শত্রু হয়ে যায় না। কারণ, সারাবিশ্ব জানে, ভারতের অগ্রগতি হলে তাতে পৃথিবীরই লাভ হবে। অতীতেও ভারত কীভাবে এক ইতিবাচক শক্তি হয়ে বিশ্বের বিকাশে গতি দিয়েছে, তা আমরা সকলেই জানি। ভারতের চিন্তা-ভাবনা, উদ্ভাবন ও সামগ্রী শতকের পর শতক ধরে বিশ্বের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলেছে। তবে, তারপর সময় পাল্টেছে, দীর্ঘ ঔপনিবেশিকতার জেরে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। শিল্প বিপ্লবের সময়ে ভারত উপনিবেশ হয়ে থাকায় তার সুফল ভোগ করতে পারেনি। কিন্তু এবার ভারতের সময় এসেছে। শিল্প ৪.০-র এই যুগে ভারত আর দাসত্বের শৃঙ্খলের আবদ্ধ নয়। ৭৫ বছর আগে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আমরা এখন সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। 

বন্ধুরা, 
শিল্প ৪.০-র জন্য যে ধরনের দক্ষতা ও পরিকাঠামো প্রয়োজন, তা ভারতে দ্রুত গড়ে তোলা হচ্ছে। গত এক দশকে বহু বিশ্ব মঞ্চে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আমি জি-২০ এবং জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছি। মাত্র ১০ দিন আগে আমি আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের জন্য লাওস গিয়েছিলাম। আপনাদের জেনে ভালো লাগবে যে, প্রায় প্রতিটি শীর্ষ সম্মেলনেই ভারতের ডিজিটাল জন পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সারা বিশ্ব আজ ভারতের ডিজিটাল জন পরিকাঠামোর দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আমাদের বন্ধু, ভারত অনুরাগী শ্রী পল রোমার এখানে রয়েছেন। আমেরিকায় এবং অন্যত্র তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সেই আলোচনায় পল ভারতের ডিজিটাল জন পরিকাঠামো এবং আধার ও ডিজি লকারের মতো উদ্ভাবনের প্রভূত প্রশংসা করেছেন। ভারত কীভাবে এমন অসাধারণ ডিজিটাল জন পরিকাঠামো গড়ে তুললো – তাই নিয়ে বড় বড় সম্মেলনে মানুষজন প্রায়ই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। 

বন্ধুরা, 
ইন্টারনেটের যুগে ভারত প্রথমে এগিয়ে যেতে পারেনি। যেসব দেশ সেই সুবিধা পেয়েছিল, তারা বেসরকারী প্ল্যাটফর্ম ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে ডিজিটাল পরিসর সৃষ্টি করে বিপ্লব ঘটায়। কিন্তু সেই বিপ্লবের সুবিধা সবার কাছে পৌঁছয়নি। উল্টোদিকে ভারত বিশ্বের সামনে এক নতুন মডেল রেখেছিল। ভারত প্রযুক্তির গণতান্ত্রিকীকরণ করে ডিজিটাল জন পরিকাঠামোর মাধ্যমে এক পথের সৃষ্টি করলো। আজ ভারতে সরকারের তৈরি প্ল্যাটফর্মে লক্ষ লক্ষ নতুন উদ্ভাবনের জন্ম হয়। আমাদের জ্যাম সংযোগ – জনধন, আধার ও মোবাইল দ্রুততর ও অপচয়হীন পরিষেবা প্রদানের এক চমৎকার মাধ্যম হয়ে উঠেছে। আমাদের ইউপিঐআই-এর কথা ভাবুন। এর সুবাদে ভারতে আর্থিক প্রযুক্তির অকল্পনীয় বিকাশ দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন ৫০ কোটিরও বেশি ডিজিটাল লেনদেন হচ্ছে। এর পেছনে কিন্তু বড় বড় কর্পোরেশন নেই। এগুলো করছেন আমাদের ছোট দোকানদার ও পথ বিক্রেতারা। আর একটা উদাহরণ হল, আমাদের পিএম গতিশক্তি প্ল্যাটফর্ম। পরিকাঠামো সংক্রান্ত প্রকল্পগুলির শ্লথতা দূর করতে এই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। আজ এর মাধ্যমে আমাদের লজিস্টিক পরিমণ্ডল পাল্টে যাচ্ছে। একইভাবে আমাদের ওএনডিসি প্ল্যাটফর্ম অনলাইন খুরচো ব্যবসার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এনে দিয়েছে। ভারত বুঝিয়েছে যে ডিজিটাল উদ্ভাবন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। প্রযুক্তি যে নিয়ন্ত্রণ ও বিভাজনের জন্য নয়, বরং এটি অন্তর্ভুক্তিকরণ, স্বচ্ছতা ও ক্ষমতায়নের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে, ভারত তা দেখিয়ে দিয়েছে। 

 

|

বন্ধুরা,
একবিংশ শতক মানুষের ইতিহাসে সবথেকে সঙ্কটজনক সময়কালগুলির মধ্যে একটি। এই সময়কার সবথেকে বড় প্রয়োজন হল, স্থিরতা, সুস্থিতি এবং সমাধান – মানবতার উন্নততর ভবিষ্যতের জন্য এগুলি অপরিহার্য। ভারত আজ দেশের মানুষের অকুন্ঠ সমর্থনকে সাথী করে এইসব ক্ষেত্রে উদ্যোগ নিচ্ছে। ছয় দশকের মধ্যে এই প্রথমবার দেশের মানুষ কোনও সরকারকে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় এনেছেন। এর থেকে সুস্থিতির একটা বার্তা পাওয়া যায়। সম্প্রতি হরিয়ানায় নির্বাচন হয়েছে, সেখানেও দেশের মানুষ সুস্থিতির পক্ষে রায় দিয়েছেন। 

বন্ধুরা, 
জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট আজ সমগ্র মানবতার সামনে এক বড় সংকট হয়ে দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রেও ভারত নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমাদের দায় অতিসামান্য হলেও আমরা নিজেদের বিকাশের জন্য দূষণমুক্ত জ্বালানির পথ বেছে নিয়েছি। আমাদের উন্নয়নমূলক পরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে সুস্থিতি। আমাদের পিএম সূর্যঘর মুফত বিজলি যোজনা, মাঠে সৌরচালিত পাম্প বসানোর প্রকল্প, আমাদের বৈদ্যুতিন গাড়ি বিপ্লব, আমাদের ইথানল মিশ্রণ কর্মসূচি, লেড লাইট আন্দোলন, সৌরচালিত বিমানবন্দর, জৈব গ্যাস প্ল্যান্ট – এইসব কিছুর মধ্য দিয়ে দূষণমুক্ত ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিচ্ছবি আপনারা দেখতে পাবেন। 

বন্ধুরা, 
সুস্থিতি ও ধারাবাহিকতার পাশাপাশি ভারত এখন সমাধানের দিকেও মনোনিবেশ করেছে। বিভিন্ন বিশ্বজনীন চ্যালেঞ্জের সমাধান কীভাবে করা যায় তা নিয়ে গত এক দশক ধরে ভারত কাজ করছে। আন্তর্জাতিক সৌরজোট, বিপর্যয় উপযোগী পরিকাঠামো নির্মাণের জোট, ভারত-মধ্যপ্রাচ্য অর্থনৈতিক করিডর, বিশ্বজনীন জৈব জ্বালানী জোট, যোগ, আয়ুর্বেদ, মিশন লাইভ, মিশন মিলেট – বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় ভারত সমাধান প্রদানের চেষ্টা করে চলেছে। 

 

|

বন্ধুরা,
ভারতের ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা যে বিশ্বের উন্নয়নকে সুনিশ্চিত করছে, তা দেখে আমার ভালো লাগে। ভারত যত অগ্রগতি করবে, বিশ্বেরও তত বেশি করে উপকার হবে। এই শতককে ভারতের শতক করে তোলার যে লক্ষ্য আমরা নিয়েছি তাতে শুধু ভারতেরই জয় হবে না, সমগ্র মানবতার জয় হবে। এমন এক শতক যা প্রত্যেকের প্রতিভাকে বিকশিত হওয়ায় সুযোগ দেবে, এমন এক শতক যা সবার উদ্ভাবনে সমৃদ্ধ হবে, এমন এক শতক যা দারিদ্রমুক্ত হবে, এমন এক শতক যেখানে প্রত্যেকে এগিয়ে যাওয়ার সমান সুযোগ পাবেন, এমন এক শতক যেখানে ভারতের উদ্যোগে সারা বিশ্বে শান্তি ও সুস্থিতি আসবে। আমাকে এখানে আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের সামনে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়ার জন্য এনডিটিভিকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি এই সামিটের সর্বতো সাফল্য কামনা করি। 

আপনাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।  

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
It's a quantum leap in computing with India joining the global race

Media Coverage

It's a quantum leap in computing with India joining the global race
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to participate in three Post- Budget webinars on 4th March
March 03, 2025
QuoteWebinars on: MSME as an Engine of Growth; Manufacturing, Exports and Nuclear Energy Missions; Regulatory, Investment and Ease of doing business Reforms
QuoteWebinars to act as a collaborative platform to develop action plans for operationalising transformative Budget announcements

Prime Minister Shri Narendra Modi will participate in three Post- Budget webinars at around 12:30 PM via video conferencing. These webinars are being held on MSME as an Engine of Growth; Manufacturing, Exports and Nuclear Energy Missions; Regulatory, Investment and Ease of doing business Reforms. He will also address the gathering on the occasion.

The webinars will provide a collaborative platform for government officials, industry leaders, and trade experts to deliberate on India’s industrial, trade, and energy strategies. The discussions will focus on policy execution, investment facilitation, and technology adoption, ensuring seamless implementation of the Budget’s transformative measures. The webinars will engage private sector experts, industry representatives, and subject matter specialists to align efforts and drive impactful implementation of Budget announcements.