ভারত মাতা কি – জয়,
ভারত মাত কি – জয়,
মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই প্যাটেল, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহান, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহযোগীগণ, পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রকের নেতৃত্ব প্রদানকারী ভাই গিরিরাজজী, উপস্থিত সমস্ত সাংসদ, বিধায়ক, অন্যান্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, বিপুল সংখ্যায় আগত আমার ভাই ও বোনেরা।
রেওয়ার এই ঐতিহাসিক ভূমি থেকে আমি মা বিন্দুবাসিনীকে প্রণাম জানাই। এই ভূমি সুরবীরদের ভূমি। দেশের জন্য আত্মবলিদানকারীদের ভূমি। আমি অনেকবার রেওয়া-তে আপনাদের মধ্যে এসেছি। আর সর্বদাই আপনাদের অপার ভালোবাসা ও স্নেহ পেয়েছি। আজও আপনারা এত বিপুল সংখ্যায় আমাদের আশীর্বাদ জানাতে এসেছেন, সেজন্য আপনাদের সকলকে আমি অন্তর থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। দেসের আড়াই লক্ষেরও বেশি পঞ্চায়েতকে জাতীয় পঞ্চায়েতি রাজ দিবস উপলক্ষে অনেক অনেক শুভ কামনা জানাই। আজ আপনাদের পাশাপাশি, প্রযুক্তির মাধ্যমে ৩০ লক্ষেরও বেশি পঞ্চায়েত প্রতিনিধি এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন। এটা নিশ্চিতভাবেই ভারতের গণতন্ত্রের অত্যন্ত শক্তিশালী চিত্র। আমরা সবাই জনগণের প্রতিনিধি। আমরা সবাই এই দেশ ও এই গণতন্ত্রের জন্য সমর্পিত। আমাদের কাজের পরিধি ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু লক্ষ্য একটাই - জনসেবার মাধ্যমে দেশ সেবা। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার দেশের গ্রাম ও গরীবের জীবন সহজ করে তুলতে যত প্রকল্প চালু করেছে, আমাদের পঞ্চায়েতগুলি সেগুলিকে সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে বাস্তবায়িত করছে।
ভাই ও বোনেরা,
আজ এখানে ই-গ্রাম স্বরাজ এবং জেম পোর্টালকে একসঙ্গে মিলিয়ে যে নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, সেটি আপনাদের কাজকে আরও সহজ করে দেবে। পিএম স্বামিত্ব যোজনার মাধ্যমেও দেশের ৩৫ লক্ষ গ্রামীণ পরিবারকে প্রপার্টি কার্ড প্রদান করা হয়েছে। আজ মধ্যপ্রদেশের উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট ১৭ হাজাআর কোটি টাকারও বেশি প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধনও হয়েছে। এগুলির মধ্যে যেমন রয়েছে – বেশ কিছু রেল প্রকল্প, তেমনই রয়েছে গরীব গৃহহীনদের জন্য পাকা বাড়ির প্রকল্প এবং জল প্রকল্প। গ্রাম ও গরীবের জীবনকে সহজ করে তোলার পাশাপাশি এই প্রকল্পগুলি অনেক কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করবে। সেজন্য আমি আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
স্বাধীনতার এই অমৃতকালে আমরা সবাই যে উন্নত ভারতের স্বপ্ন দেখেছি, তা বাস্তবায়নের জন্য সমস্ত দেশবাসী দিনরাত পরিশ্রম করছেন। উন্নত ভারত গড়তে ভারতের গ্রামগুলির সামাজিক ব্যবস্থাকে উন্নত করা প্রয়োজন। গ্রামের আর্থিক ব্যবস্থাকে উন্নত করার পাশাপাশি, পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকেও উন্নত করা প্রয়োজন। এই ভাবনা নিয়েই আমাদের সরকার দেশের পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার কাজ করে চলেছে। এই পঞ্চায়েতগুলি পূর্ববর্তী সরকারের বৈষম্যের শিকার হয়েছিল। আমরা সেই জায়গায় এই পঞ্চায়েতগুলিকে আরও কতটা শক্তিশালী করে তুলছি, গ্রামবাসীদের জন্য বিভিন্ন পরিষেবা কত বেশি প্রদান করছি – তা আজ গ্রামের মানুষ নিজের চোখে দেখছেন। ২০১৪ সালের আগে দেশের পঞ্চায়েতগুলির জন্য অর্থ কমিশনের অনুদান ছিল ৭০ হাজার কোটি টাকারও কম। এই পরিসংখ্যানটা মাথায় রাখবেন। ২০১৪’য় ক্ষমতায় আসার পর আমরা এই অনুদান বাড়িয়ে ইতিমধ্যেই ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি করে দিয়েছি। আমি আপনাদের আরও দুটি উদাহরণ দিচ্ছি। ২০১৪ সালের আগে ১০ বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে ৬ হাজারের কাছাকাছি পঞ্চায়েত ভবন নির্মিত হয়েছিল। মনে রাখবেন, সারা দেশে প্রায় ৬ হাজার পঞ্চায়েত ভবন তৈরি হয়েছিল। আর আমাদের সরকার গত ৮ বছরে ৩০ হাজারেরও বেশি নতুন পঞ্চায়েত ভবন নির্মাণ করিয়েছে। এই পরিসংখ্যানই বলে দেবে যে, আমরা গ্রামের প্রতি কতটা সমর্পিত। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে অপ্টিকাল ফাইবারের মাধ্যমে যুক্ত করার কাজ আগের সরকারই শুরু করেছিল। কিন্তু, তারা মাত্র ৭০টির কাছাকাছি গ্রামকে যুক্ত করতে পেরেছিল। শহরের কাছাকাছি কিছু পঞ্চায়েতকে যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু, আমাদের সরকার ইতিমধ্যেই দেশের ২ লক্ষেরও বেশি পঞ্চায়েতে অপ্টিকাল ফাইবার পৌঁছে দিয়েছে। পার্থক্য আপনাদের সামনে স্পষ্ট। স্বাধীনতার পর থেকে একের পর এক সরকার কিভাবে ভারতের পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, সেই বিষয়ে আমি বিস্তারিত বলতে চাই না। যে ব্যবস্থা স্বাধীনতার কয়েক হাজার বছর আগে থেকে গড়ে উঠেছিল, সেই পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার উপর স্বাধীনতার পর ক্ষমতায় আসা সরকারগুলির ভরসাই ছিল না। পূজনীয় বাপুজী বলতেন, ভারতের আত্মা গ্রামে বসবাস করে। কিন্তু, কংগ্রেস গান্ধীজীর সমস্ত ভাবনাকে উপেক্ষা করে। নব্বই –এর দশকে পঞ্চায়েতি রাজ নামে কিছু শূন্যস্থান পূরণ অবশ্যই হয়েছিল। কিন্তু, তবুও প্রয়োজন অনুসারে পঞ্চায়েতগুলির উন্নতির দিকে কেউ নজর দেননি।
বন্ধুগণ,
২০১৪’র পর থেকে দেশ তার পঞ্চায়েতগুলির ক্ষমতায়নের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। এর পরিণাম আজ পরিলক্ষিত হচ্ছে। আজ ভারতের পঞ্চায়েতগুলি গ্রামোন্নয়নের প্রাণভোমরা হয়ে উঠেছে। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি এখন গ্রামের প্রয়োজন অনুসারে উন্নয়নের স্বার্থে গ্রাম পঞ্চায়েত বিকাশ যোজনা রচনা করে কাজ করছে।
বন্ধুগণ,
আমরা পঞ্চায়েতের সাহায্যে গ্রাম ও শহরের মধ্যে বিরাট পার্থক্যকে ক্রমে হ্রাস করছি। ডিজিটাল বিপ্লবের এই সময়ে এখন পঞ্চায়েতগুলিকেও ‘স্মার্ট’ করে তোলা হচ্ছে। আজ পঞ্চায়েত স্তরে প্রকল্প রচনা থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সমস্ত স্তরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। যেমন – আপনারা অমৃত সরোবর নিয়ে এত কাজ করছেন। এই অমৃত সরোবরগুলির জন্য স্থান নির্বাচন থেকে শুরু করে খনন ও সৌন্দর্যায়ন – সমস্ত স্তরে প্রযুক্তির সাহায্য নিতে পারছেন। আজ এখানে ই-গ্রাম স্বরাজ – জেম ইন্টিগ্রেটেড পোর্টাল – এর শুভ সূচনা হয়েছে। এর মাধ্যমে পঞ্চায়েতগুলির জন্য কেনাকাটা আরও সরল ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হবে। এর ফলে, এখন পঞ্চায়েতগুলি অনেক কম দামে জিনিস কিনতে পারবে। আর স্থানীয় ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগগুলিও তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির একটি শক্তিশালী মাধ্যম পাবে। দিব্যাঙ্গদের জন্য ট্রাই সাইকেল থেকে শুরু করে শিশুদের পাঠ সামগ্রী পঞ্চায়েতের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সরঞ্জাম এই পোর্টালের মাধ্যমেই সহজে কেনা যাবে।
ভাই ও বোনেরা,
আধুনিক প্রযুক্তির আরেকটি সুবিধা, আমরা প্রধানমন্ত্রী স্বামিত্ব যোজনায়ও দেখতে পাচ্ছি। গ্রামের বাড়ির সম্পত্তির কাগজপত্র নিয়ে আমাদের অনেক বিভ্রান্তি ছিল। এ কারণে নানা ধরনের বিরোধ, অবৈধ দখলের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এখন এই সমস্ত অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী স্বামী যোজনার মাধ্যমে বদলাচ্ছে। আজ প্রতিটি গ্রামে ড্রোন প্রযুক্তি দিয়ে জরিপ করা হচ্ছে, জমির মানচিত্র তৈরি করা হচ্ছে। এর ভিত্তিতে কোনো রকম বৈষম্য ছাড়াই মানুষের হাতে আইনি কাগজপত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত সারাদেশে ৭৫ হাজার গ্রামে প্রপার্টি কার্ড দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। আর আমি খুশি যে এক্ষেত্রেও মধ্যপ্রদেশ সরকার এতে খুব ভালো কাজ করছে।
বন্ধুগণ,
অনেক সময় ভাবি, যাদেরকে ছিন্দোয়ারার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাস করেছিলেন, তাঁরা আপনাদের উন্নয়নের প্রতি, এই এলাকার উন্নয়নের প্রতি এত উদাসীন কেন ছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তর নিহিত রয়েছে কিছু রাজনৈতিক দলের চিন্তাভাবনার মধ্যে। স্বাধীনতার পর যে দলটি দীর্ঘকাল সরকার পরিচালনা করেছে, তারা আমাদের গ্রামের আস্থা ভঙ্গ করেছে। কংগ্রেসের শাসনকালে গ্রামের মানুষ, গ্রামের স্কুল, গ্রামের রাস্তা, গ্রামের বিদ্যুৎ, গ্রামের ফসল সংরক্ষণের জায়গা, গ্রামের অর্থনীতি, সবকিছুকেই সরকারি অগ্রাধিকারের সর্বনিম্ন স্তরে রাখা হয়েছিল।
ভাই ও বোনেরা,
দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি গ্রামে বাস করে, সেই গ্রামগুলির উন্নয়নে বৈমাত্রেয়সূল্ভ মনোভাব রাখলে দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। তাই ২০১৪ সালের পর আপনারা যখন আমাদেরকে সেবা করার সুযোগ দিলেন, তখন আমরা গ্রামের অর্থনীতি, গ্রামের সুযোগ-সুবিধা, গ্রামের মানুষের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি। উজ্জ্বলা প্রকল্পের অধীনে যে ১০ কোটি গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছিল তা শুধু গ্রামগুলিতেই দেওয়া হয়েছিল। আমাদের সরকারের উদ্যোগে সারাদেশে গরিবদের জন্য চার কোটির বেশি বাড়ি তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে তিন কোটির বেশি বাড়ি তৈরি হয়েছে গ্রামে। আর এর মধ্যে বড় কথা হলো আমাদের বোন, মেয়ে ও মায়েদেরও এসব বাড়িতে মালিকানার অধিকার রয়েছে। আমাদের দেশে এমন একটা প্রথা ছিল যে বাড়ি ছিল পুরুষের নামে, দোকান ছিল পুরুষের নামে, গাড়ি ছিল পুরুষের নামে, খেত-খামার ছিল পুরুষের নামে, মহিলাদের নামে কিছুই থাকতো না। আমরা এই প্রথা পরিবর্তন করেছি এবং আমাদের মা, বোন এবং মেয়েদের মালিক করেছি।
বন্ধুগণ,
বিজেপি সরকার দেশের কোটি কোটি মহিলাকে বাড়ির মালিক বানিয়েছে। আর জানেন কি বর্তমান সময়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার প্রতিটি বাড়ির মূল্য এক লক্ষ টাকার বেশি। তার মানে বিজেপি দেশে কোটি কোটি লাখপতি দিদি তৈরি করেছে। আমি এই সমস্ত লাখপতি দিদিদের প্রণাম জানাই, দয়া করে আমাদের আশীর্বাদ করুন যাতে আরও লক্ষ লক্ষ বোন দেশে লাখপতি হয়, যাতে আমরা এইভাবে কাজ করে যেতে থাকি। আজ এখানে আরও চার লক্ষ গৃহহীন মানুষ তাঁদের পাকা বাড়ির মালিকাণা পেয়ে গৃহপ্রবেশ করেছেন। এখানকার আরও বিপুল সংখ্যক মহিলা লাখপতি দিদি হয়েছেন। আমি সবাইকে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
প্রধানমন্ত্রী সৌভাগ্য যোজনার আওতায় যে আড়াই কোটি পরিবার বিদ্যুৎ পেয়েছে, তাঁদের বেশিরভাগই গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামের বাসিন্দারা আমার ভাই-বোন। আমাদের সরকার গ্রামবাসীদের জন্য ‘হর ঘর জল যোজনা’ও শুরু করেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে মাত্র তিন-চার বছরে দেশের ৯ কোটিরও বেশি গ্রামীণ পরিবার ঘরে বসে নলবাহিত পরিশ্রুত কলের জল পেতে শুরু করেছে। আমাদের মধ্যপ্রদেশে আগে মাত্র ১৩ লক্ষ গ্রামীণ পরিবার নলবাহিত কলের জল পেত। আর আজ এরাজ্যের প্রায় ৬০ লক্ষ গ্রামীণ বাড়িতে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছাতে শুরু করেছে। আর আপনাদের এই জেলাইয় তো একশো শতাংশ বাড়িতে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছাতে শুরু করেছে।
বন্ধুগণ,
আগে দেশের ব্যাংকগুলির ওপর আমাদের গ্রামের মানুষদের কোনো অধিকার রয়েছে বলে মনে করা হতো না। বেশির ভাগ গ্রামের মানুষের কোনও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকায় তারা ব্যাংক থেকে কোনো সুযোগ-সুবিধা পায়নি। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকায় গরীবদের জন্য সরকার যে টাকা পাঠাত তাও মাঝপথে লুট হয়ে যেত। আমাদের সরকার এই চিত্রটিকেও পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। আমরা জন ধন যোজনা শুরু করে চল্লিশ কোটিরও বেশি গ্রামীণ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছি। আমরা দেশের ডাকঘরগুলিতে ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্ট ব্যাঙ্ক খুলে গ্রামে গ্রামে ব্যাঙ্কের পৌছানো বাড়িয়েছি। আমরা লক্ষ লক্ষ ব্যাঙ্ক মিত্র তৈরি করেছি, ব্যাঙ্ক সখীদের প্রশিক্ষিত করেছি। আজ দেশের প্রতিটি গ্রামে এই উদ্যোগের সুফল দেখা যাচ্ছে। দেশের গ্রামগুলি যখন ব্যাংকের ক্ষমতায় শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, তখন কৃষিকাজ থেকে শুরু করে ব্যবসা - সব কাজে গ্রামের মানুষদের সাহায্য করা হচ্ছে।,
বন্ধুগণ,
পূর্ববর্তী সরকারগুলি ভারতের গ্রামগুলির উপর আরেকটি বড় অবিচার করেছিল। আগের সরকারগুলো গ্রামের জন্য টাকা খরচ করা এড়িয়ে চলত। গ্রাম আলাদাভাবে কোনও ভোটব্যাঙ্ক ছিল না, তাই তারা উপেক্ষিত থাকতো। অনেক রাজনৈতিক দল গ্রামের মানুষকে বিভক্ত করে নিজেদের দোকান চালাচ্ছিল। ভারতীয় জনতা পার্টি দেশের গ্রামের সঙ্গে হওয়া এই অবিচারের অবসান ঘটিয়েছে। আমাদের সরকার গ্রামোন্নয়নের দরজাও খুলে দিয়েছে। শুধু ‘হর ঘর জল যোজনা’য় সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকারও বেশি খরচ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায়ও লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। কয়েক দশক ধরে অসম্পূর্ণ পড়ে থাকা সেচ প্রকল্পগুলো শেষ করতে খরচ হচ্ছে এক লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায়ও হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির অধীনে, সরকার ইতিমধ্যেই প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকা সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের প্রায় ৯০ লক্ষ কৃষকও এই প্রকল্পের অধীনে মোট ১৮.৫ হাজার কোটি টাকা পেয়েছেন। রেওয়ার কৃষকরাও এই তহবিল থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা পেয়েছেন। আমাদের সরকারের এমএসপি বৃদ্ধির পাশাপাশি হাজার হাজার কোটি টাকা গ্রামে পৌঁছেছে। করোনার এই সময়ে, গত তিন বছর ধরে আমাদের সরকার গ্রামে বসবাসকারী দরিদ্রদের বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছে। দরিদ্রদের কল্যাণে এই প্রকল্পে ৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় করা হচ্ছে।
বন্ধুগণ ,
গ্রামে যখন এত উন্নয়নের কাজ হয়, যখন এত টাকা খরচ হয়, তখন গ্রামে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ তৈরি হয়। গ্রামে কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভরতার গতি বাড়াতে, গ্রামের মানুষকে গ্রামেই কাজ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার মুদ্রা যোজনাও শুরু করেছে। মুদ্রা যোজনার অধীনে, বিগত বছরগুলিতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কারিগরদের ২৪ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে গ্রামেও কোটি কোটি মানুষের কর্মসংস্থান শুরু হয়েছে। আমাদের বোন, কন্যা, এমনকি মায়েরাও মুদ্রা যোজনার সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী হয়েছেন। আমাদের সরকারের প্রকল্পগুলি কীভাবে গ্রামে মহিলাদের ক্ষমতায়ন করছে, মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত করছে, তা আজ সর্বত্র আলোচনা করা হচ্ছে। গত ৯ বছরে, প্রায় ৯ কোটি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে যোগ দিয়েছেন। এখানে মধ্যপ্রদেশেও ৫০ লাখেরও বেশি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। আমাদের সরকার, প্রতিটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে কোনওরকম ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি ছাড়াই ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হচ্ছে। দেশের মহিলারা এখন অনেক ক্ষুদ্র শিল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এরাজ্যের প্রতিটি জেলায় রাজ্য সরকার দিদি ক্যাফে তৈরি করেছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত প্রায় ১৭,০০০ বোন পঞ্চায়েত প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এটি অত্যন্ত গর্বের বিষয়। সেজন্য আমি আরেকবার মধ্যপ্রদেশের নারীশক্তিকে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
আজ স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব উপলক্ষ্যে এখানেও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অভিযান শুরু হল। এই অভিযান আমাদের সকলের উন্নত ভারত গড়ার প্রচেষ্টাকে, এই চেতনাকে শক্তিশালী করতে চলেছে। প্রতিটি পঞ্চায়েত, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, দেশের প্রত্যেক নাগরিককে এই উন্নত ভারতের জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এটি তখনই সম্ভব যখন প্রতিটি মৌলিক পরিষেবা ১০০ শতাংশ সুবিধাভোগীদের কাছে দ্রুত পৌঁছোবে কোনওরকম বৈষম্য ছাড়াই। এতে আপনাদের মতো সমস্ত পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভাই ও বোনেরা,
কৃষি সম্পর্কিত নতুন ব্যবস্থা সম্পর্কে পঞ্চায়েতগুলিতে একটি সচেতনতা অভিযান চালানোরও প্রয়োজন রয়েছে। বর্তমানে দেশে প্রাকৃতিক চাষ নিয়ে ব্যাপক পরিসরে কাজ চলছে। এখানেও রাসায়নিক চাষের অপকারিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা দেখেছি কিভাবে আমাদের মেয়েরা আমাদের সবাইকে পৃথিবী মাতার কষ্টের কথা বলেছেন। নাটকের মাধ্যমে পৃথিবী মাতার বেদনা আমাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রাসায়নিক চাষের ফলে মাতৃভূমির যে ক্ষতি হচ্ছে তা আমাদের এই কন্যারা খুব সহজে সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। পৃথিবীর এই আহ্বান আমাদের সকলকে বুঝতে হবে। আমাদের মাকে হত্যা করার অধিকার আমাদের নেই। এই পৃথিবী আমাদের মা। সেই মাকে হত্যা করার কোনো অধিকার আমাদের নেই। আমি অনুরোধ করছি যে আমাদের পঞ্চায়েতগুলি যেন প্রাকৃতিক চাষ সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক প্রচার চালায়। ছোট কৃষক, গবাদি পশুপালক, জেলে ভাইবোনদের সাহায্যের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে অভিযান শুরু করেছে এতে পঞ্চায়েতগুলির বড় অংশীদারিত্ব রয়েছে। উন্নয়ন-সংক্রান্ত প্রতিটি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হলে তবেই জাতির সম্মিলিত প্রচেষ্টা জোরদার হবে। এটাই অমৃতকালে উন্নত ভারত গড়ার শক্তি হয়ে উঠবে।
বন্ধুগণ,
আজ, পঞ্চায়েতি রাজ দিবসে, মধ্যপ্রদেশের উন্নয়নে নতুন গতি প্রদানকারী আরও অনেক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর ও উদ্বোধন হয়েছে। ছিন্দওয়াড়া-নৈনপুর-মন্ডলা ফোর্ট রেললাইনের বিদ্যুতায়ন এই অঞ্চলের মানুষদের দিল্লি-চেন্নাই এবং হাওড়া-মুম্বাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগকে আরও সহজ করবে। এটা আমাদের আদিবাসী ভাই-বোনদেরও অনেক উপকারে আসবে। আজ ছিন্দওয়াড়া-নৈনপুরের জন্য নতুন ট্রেনও চালু হয়েছে। এই নতুন ট্রেনগুলি চালানোর সঙ্গে সঙ্গে অনেক শহর ও গ্রাম সরাসরি তাদের জেলা সদর দপ্তর ছিন্দওয়াড়া, সিওনির সঙ্গে যুক্ত হবে। এই ট্রেনগুলির সাহায্যে, নাগপুর এবং জবলপুর যাওয়াও সহজ হবে। আজ শুরু হওয়া নতুন রেওয়া-ইটওয়ারি-ছিন্দওয়ারা ট্রেনটিও সিওনি এবং ছিন্দওয়াড়াকে সরাসরি নাগপুরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এই পুরো এলাকাটি তার বন্যপ্রাণী সম্পদের জন্য খুবই বিখ্যাত। এখানকার ক্রমবর্ধমান যোগাযোগ ব্যবস্থা এলাকার পর্যটন শিল্পকেও সমৃদ্ধ করবে এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এতে কৃষক, শিক্ষার্থী, রেলের নিত্য যাত্রী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। অর্থাৎ ডাবল ইঞ্জিন সরকার আজ আপনাদের আনন্দকে দ্বিগুণ করে দিয়েছে।
বন্ধুগণ,
আজ আমি আরও একটি জিনিসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। একটু আগেই শিবরাজজি বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন যে এই রবিবার, ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের ১০০ তম পর্ব পূর্ণ হচ্ছে। আপনাদের আশীর্বাদ, আপনাদের স্নেহ এবং আপনাদের অবদানের মাধ্যমেই ‘মন কি বাত’ আজ এই পর্যায়ে পৌঁছেছে। আমি আমার ‘মন কি বাত’-এ মধ্যপ্রদেশের অনেক মানুষের অর্জনের কথা বলেছি। আমি এখানকার মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ চিঠি ও বার্তা পেয়েছি। এইবার রবিবার, ‘মন কি বাত’ -এও আমি আপনাদের সঙ্গে আবার সাক্ষাতের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। কারণ এটি একটি শতাব্দী, তাই না? আর এখানে সেঞ্চুরির গুরুত্ব একটু বেশি। আপনারা অবশ্যই প্রতিবারের মত আগামি রবিবার আমার সঙ্গে যোগ দেবেন। এই অনুরোধের মাধ্যমে আমার বক্তব্য শেষ করছি। আবারও, আমি আপনাদের সকলকে পঞ্চায়েতি রাজ দিবসের শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ!
ভারত মাতা দীর্ঘজীবী হোক,
ভারত মাতা দীর্ঘজীবী হোক,
ভারত মাতা দীর্ঘজীবী হোক।