বিহারের মাননীয় রাজ্যপাল শ্রী রাজেন্দ্র আরলেকরজি, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নীতীশ কুমারজি, আমার মন্ত্রিসভার সদস্য শ্রী গিরিরাজ সিংজি, শ্রী হরদীপ সিং পুরীজি, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় সিনহাজি, শ্রী সম্রাট চৌধুরীজি, মঞ্চে উপস্থিত অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আর আমার বেগুসরাইয়ের উৎসাহী ভাই ও বোনরা।
জয় মঙ্গলাগড় মন্দির আর নৌলখা মন্দিরে বিরাজমান দেবদেবীদের আমার প্রণাম জানাই। আজ উন্নত ভারতের জন্য উন্নত বিহার নির্মাণের সংকল্প নিয়ে বেগুসরাই এসেছি। এটা আমার সৌভাগ্য যে এত বিশাল সংখ্যক জনগণের দর্শনের সৌভাগ্য আমার হল।
![](https://cdn.narendramodi.in/cmsuploads/0.33672500_1709390656_684-text-of-pms-address-at-the-launch-of-various-projects-in-begusarai-bihar.jpg)
বন্ধুগণ,
বেগুসরাই প্রতিভাবান নবীনদের ভূমি। এই মাটিতে জন্ম নেওয়া দেশের অসংখ্য কৃষক ও মজুর দেশকে শক্তিশালী করেছে। আজ এই ভূমির হৃতগৌরব ফিরে আসছে। আজ এখান থেকে বিহার সহ গোটা দেশের জন্য ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ বিনিয়োগে নির্মিত বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন কিংবা শিলান্যাস হয়েছে। আগে এ ধরনের কর্মসূচি দিল্লির বিজ্ঞান ভবন থেকে হত। কিন্তু মোদী আজ এই অনুষ্ঠানকে দিল্লি থেকে বেগুসরাই নিয়ে এসেছে। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে প্রায় ৩০,০০০ কোটি টাকার প্রকল্প শুধু আমার বিহারের জন্য। একই অনুষ্ঠানে সরকারের এত বড় বিনিয়োগ থেকে বোঝা যায় যে ভারতের সামর্থ কতটা বাড়ছে। এর ফলে বিহারের নবীন প্রজন্মের কর্মসংস্থানেরও অনেক সুযোগ তৈরি হবে। আজকের এই প্রকল্পগুলি ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যম হয়ে উঠবে। আপনারা থামুন ভাই, অনেক হয়েছে, আপনাদের ভালোবাসা আমি স্বীকার করছি, আপনারা থামুন, আপনারা বসুন, আপনারা চেয়ার থেকে নিচে নেমে দাঁড়ান, প্লিজ, আপনাদের প্রতি আমার প্রার্থনা, আপনারা বসুন... হ্যাঁ আপনারা বসুন, ওই চেয়ারে বসে পড়ুন ভালোভাবে, ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। আজকের এই প্রকল্পগুলি, বিহারের পরিষেবা এবং সমৃদ্ধির পথ তৈরি করবে। আজ বিহার বেশ কয়েকটি নতুন ট্রেন পেয়েছে। এ রকমই কিছু কাজ, যার জন্য আজ দেশ সম্পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে বলছে, দেশের প্রতিটি শিশু বলছে, গ্রামও বলছে, শহরও বলছে- ‘অব কি বার, চারশো পার, অব কি বার, চারশো পার, অব কি বার, চারশো পার।’ এবার এনডিএ সরকার চারশো পার করবে !
বন্ধুগণ,
২০১৪ সালে যখন আপনারা এনডিএকে সেবার সুযোগ দিয়েছিলেন তখন আমি বলতাম পূর্ব ভারতের দ্রুত উন্নয়নই আমার অগ্রাধিকার। ইতিহাস সাক্ষী, যখনই বিহার তথা পূর্ব ভারত সমৃদ্ধ হয়েছে তখন ভারতও শক্তিশালী হয়েছে। যখন বিহারের পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে তখন দেশের ওপরও এর খুব খারাপ প্রভাব পড়েছে। সেজন্য আমি বেগুসরাই থেকে সমগ্র বিহারের জনগণকে বলছি, বিহার উন্নত হলে দেশও উন্নত হবে। আমার বিহারের ভাই-বোনেরা, আপনারা আমাকে খুব ভালোভাবে জানেন। আজ যখন আপনাদের মধ্যে এসেছি তখন আমি আর একবার বলতে চাই- এটা প্রতিশ্রুতি নয় এটা সংকল্প, এটা মিশন। আর যে প্রকল্পগুলি বিহার পেয়েছে, দেশবাসী পেয়েছে তা এই লক্ষ্যে অনেক বড় পদক্ষেপ। এর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্পই পেট্রোলিয়াম, ফার্টিলাইজার, রেলের সঙ্গে যুক্ত। অর্থাৎ জ্বালানী, সার এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা- এগুলিই তো উন্নয়নের ভিত্তি। কৃষি হোক কিংবা শিল্পোদ্যোগ, সবকিছু এগুলির ওপরেই নির্ভর করে। আর যখন এগুলি দ্রুত গতিতে কাজ চলে তখন স্বাভাবিকই অনেক নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ে। কর্মসংস্থানও হয়। আপনারা মনে করুন বারাউনিতে যে সার কারখানাটি বন্ধ হয়ে পড়েছিল আমি সেটিকে আর একবার চালু করার গ্যারান্টি দিয়েছিলাম। আপনাদের আশীর্বাদে মোদী সেই গ্যারান্টি বাস্তবায়িত করেছে। এই বিহার সহ গোটা দেশের কৃষকদের জন্য অনেক বড় কাজ হয়েছে। পুরনো সরকারগুলির অকর্মন্যর কারনে, বারাউনি, সিন্ধ্রি, গোরক্ষপুর, রামাগুন্ডম, এলাকাগুলিতে যত কারখানা ছিল সব বন্ধ হয়েছিল। মেশিনগুলি পড়ে পড়ে জং ধরছিল। আজ এই সমস্ত কারখানা ইউরিয়ার ক্ষেত্রে ভারতের আত্মনির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠছে। সেজন্যই তো দেশবাসী বলছে মোদী কি গ্যারান্টি। অর্থাৎ গ্যারান্টি পুরো হওয়ার গ্যারান্টি। মোদীর এই গ্যারান্টি অর্থাৎ গ্যারান্টি পুরো হবেই !
![](https://cdn.narendramodi.in/cmsuploads/0.22321400_1709390668_1-684-text-of-pms-address-at-the-launch-of-various-projects-in-begusarai-bihar.jpg)
বন্ধুগণ,
আজ বারাউনি তৈল শোধনাগারের ক্ষমতার সম্প্রসারণের কাজ শুরু হচ্ছে। এটি নির্মাণের সময়ই হাজার হাজার শ্রমিকদের কয়েক মাসের পর মাস ধরে লাগাতার কর্মসংস্থান হয়েছে। এই তৈল শোধনাগার বিহারে শিল্পোদ্যোগ উন্নয়নকে নতুন প্রাণশক্তি যোগাবে, আর ভারতকে আত্মনির্ভর করে তুলতে সাহায্য করবে। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আপনাদেরকে বলছি বিগত ১০ বছরে বিহার পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের সঙ্গে যুক্ত ৬৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি প্রকল্প পেয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলির কাজও সম্পূর্ণ হয়েছে। বিহারে কোণায় কোণায় যে গ্যাস পাইপ লাইনের নেটওয়ার্ক পৌঁছাচ্ছে এর মাধ্যমে বোনদের সুলভে রান্নার গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে। এর ফলে এখানে শিল্পোদ্যোগ চালু করাও সহজ হয়ে উঠছে।
বন্ধুগণ,
আজ আমরা এখানে আত্মনির্ভর ভারতের সঙ্গে যুক্ত আর একটি ঐতিহাসিক মুহুর্তের সাক্ষী হয়েছেন। কর্ণাটকে কেজি বেসিনে তেল কুপগুলি থেকে তেল উৎপাদন শুরু হয়ে গেছে। এর ফলে আমাদের বিদেশ থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানির ক্ষেত্রে নির্ভরতা হ্রাস পাবে।
বন্ধুগণ,
রাষ্ট্রহিত এবং জনহিতের জন্য সমর্পিত মজবুত সরকার এ রকমই সব সিদ্ধান্ত নেয়। যখন নিছকই পরিবারহীন এবং ভোট ব্যাঙ্কের বাধ্যবাধকতায় বাধা সরকারগুলির থাকে তখন তারা কী করে এর ফল বিহার অনেক ভুগেছে। ২০০৫ সালের আগের পরিস্থিতি হলে বিহারে এতো হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণা করার আগে ১০০ বার ভাবতে হত। এ রাজ্যের সড়ক, বিদ্যুৎ, জল সরবরাহ ও রেলের কী পরিস্থিতি ছিল তা আপনারা আমার থেকে বেশি ভালো করে জানেন। ২০১৪ সালের পূর্ববর্তী ১০ বছরে রেলের নামে কীভাবে রেলের সম্পদ লুন্ঠন হয়েছে এটা সমগ্র বিহার জানে। কিন্তু আজ দেখুন গোটা বিশ্বে ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণ নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে। ভারতীয় রেলের দ্রুত গতিতে বৈদ্যুতিকীকরণ হচ্ছে। আমাদের রেল স্টেশনগুলিও এখন এয়ারপোর্টের মতোই সমস্ত আধুনিক পরিষেবা সম্পন্ন হয়ে উঠছে।
![](https://cdn.narendramodi.in/cmsuploads/0.64614800_1709390683_3-684-text-of-pms-address-at-the-launch-of-various-projects-in-begusarai-bihar.jpg)
বন্ধুগণ,
বিহার অনেক দশক ধরে পরিবারবাদের লোকসান দেখেছে, পরিবারবাদের দংশন সহ্য করেছে। পরিবারবাদ এবং সামাজিক ন্যায় এগুলি পরস্পরের ঘোর বিরোধী। পরিবারবাদ বিশেষ রুপে নবীন প্রজন্মের, প্রতিভার, সবচেয়ে বড় শত্রু। এটাই বিহার, যার কাছে ভারতরত্ন কর্পূরী ঠাকুরের একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। নীতীশজির নেতৃত্বে এনডিএ সরকার এখানে সেই ঐতিহ্যকেই এগিয়ে নিয়ে চলেছে। আর আন্য দিকে আরজেডি-কংগ্রেসের ঘোর পরিবারবাদী অপশক্তি রয়েছে। আরজেডি-কংগ্রেসের নেতারা নিজেদের পরিবারবাদ এবং দূর্নীতিকে ন্যায়সঙ্গত করে তুলতে দলিত, বঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া মানুষদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। এটা সামাজিক ন্যায় নয়, বরং সমাজের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। নাহলে শুধু একটি পরিবারেরই ক্ষমতায়ন কেন হয়েছে? আর সমাজের বাকি পরিবারগুলি কেন পিছনে থেকে গেছে? কীভাবে এখানে একটি পরিবারের স্বার্থে, যুব সম্প্রদায়ের চাকরির নামে তাঁদের জমি জবরদখল করা হয়েছে এটাও দেশবাসী দেখেছে।
বন্ধুগণ,
প্রকৃত সামাজিক ন্যায় স্যাচুরেশন বা সম্পূর্ণতার মাধ্যমে আসে। প্রকৃত সামাজিক ন্যায় তুষ্টিকরণের মাধ্যমে নয়, সন্তুষ্টিকরণের মাধ্যমে আসে। মোদী এমনই সামাজিক ন্যায়, এমনই সেকুলারিজমকে মানে যখন বিনামূল্যে প্রত্যেক সুবিধাভোগীর কাছে রেশন পৌঁছায়, যখন প্রত্যেক গরিব গৃহহীন সুবিধাভোগী পাকা বাড়ি পান, যখন প্রত্যেক বোন রান্নার গ্যাস, নলবাহিত পানীয় জল ও বাড়ির মধ্যেই শৌচাগার পান, যখন দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম ব্যক্তিও বিনামূল্যে সুচিকিৎসা পান, যখন প্রত্যেক কৃষক সুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘সম্মাননিধি’র টাকা প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে চলে আসে তখনই স্যাচুরেশন আসে। একেই সম্পূর্ণতা বলে। আর এটাই প্রকৃত সামাজিক ন্যায়। বিগত ১০ বছরে মোদীর এই গ্যারান্টি যে যে পরিবারে পৌঁছেছে তাদের মধ্যে অধিকাংশই দলিত, পিছিয়ে পড়া ও আমার অতি পিছিয়ে পড়া পরিবারের মানুষরা রয়েছেন।
![](https://cdn.narendramodi.in/cmsuploads/0.32456900_1709390696_5-684-text-of-pms-address-at-the-launch-of-various-projects-in-begusarai-bihar.jpg)
বন্ধুগণ,
আমাদের জন্য সামাজিক ন্যায় নারী শক্তিকে শক্তি যোগানো। বিগত ১০ বছরে ১ কোটি বোনদের লাখপতি দিদিতে পরিণত করেছি। আমার মা ও বোনেরা যে আজ এত বড় মাত্রায় আমাকে আশীর্বাদ দিতে এসেছেন তার কারনও এটাই আমরা ইতিমধ্যেই ১ কোটি বোনদের লাখপতি দিদি বানিয়ে দিয়েছি। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এর মধ্যে বিহারের লক্ষ লক্ষ বোনরাও রয়েছেন যাঁরা এখন লাখপতি দিদি হয়ে উঠেছেন। আর এখন মোদী ৩ কোটি বোনদের লাখপতি দিদি তৈরি করার গ্যারান্টি দিয়েছে। এই পরিসংখ্যানটি মনে রাখবেন। সম্প্রতি আমরা বিদ্যুতের বিল জিরো করতে এবং বিদ্যুৎ থেকে রোজগারেরও প্রকল্প শুরু করেছি। পিএম সূর্যঘর- বিনামূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প। এর ফলে বিহারেরও অনেক পরিবারের উপকার হবে। বিহারে এনডিএ সরকারও বিহারের যুব, কৃষক, শ্রমিক, মহিলা সবার জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছে। ডবল ইঞ্জিনের ডবল প্রচেষ্টায় বিহার, উন্নত হবেই হবে। আজ এত বড় উন্নয়নের উৎসব আমরা পালন করছি, আর আপনারা এত বিপুল সংখ্যায় উপস্থিত হয়ে এ রাজ্যের উন্নয়নের পথগুলিকে শক্তিশালী করে তুলছেন। সেজন্য আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আর একবার আপনাদের সবাইকে উন্নয়নের জন্য, হাজার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পগুলির জন্য আমি অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। এতো বিপুল সংখ্যায় যে মা ও বোনরা এখানে এসেছেন তাঁদেরকে আমি বিশেষভাবে প্রণাম জানাই। আপনরা সবাই আমার সঙ্গে বলুন-
ভারত মাতা কি জয় !
দুহাত ওপরে তুলে সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে বলুন
ভারত মাতা কি জয় !
ভারত মাতা কি জয় !
ভারত মাতা কি জয় !
অনেক অনেক ধন্যবাদ।