পিএমওয়াই - শহুরে ও গ্রামীণ প্রকল্পের আওতায় দুই লক্ষেরও বেশি সুবিধাভোগীর জন্য গৃহপ্রবেশ কর্মসূচি চালু করেছে
“মা ত্রিপুরা সুন্দরীর আশীর্বাদে উন্নয়নের লক্ষ্যে এই রাজ্যের অভিযান এখন এক নতুন উচ্চতায় আজ উন্নীত হয়েছে”
“দরিদ্র মানুষের জন্য বাসস্থান নির্মাণের কাজে ত্রিপুরা হল একটি অন্যতম অগ্রণী রাজ্য”
“আজ ত্রিপুরায় শুধু শোনা যায় স্বচ্ছতা এবং পরিকাঠামো উন্নয়নের কথা। লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষ যে আজ বাসস্থানের মালিক হতে পারছেন, একথা এখন আলোচিত হচ্ছে এ রাজ্যের সর্বত্র”
“ত্রিপুরার মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারত এখন হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এক প্রবেশ পথ”
“আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় উত্তর-পূর্ব ভারতে ৭ হাজারটি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাকেন্দ্র অনুমোদিত হয়েছে”
“স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী যাতে বিদেশের বাজারে রপ্তানি করা যায় সেই লক্ষ্যেও প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে”

ভারতমাতার জয়!

ভারতমাতার জয়!

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ত্রিপুরার রাজ্যপাল শ্রী সত্যদেব নারায়ণ আর্যজি, লোকপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মানিক সাহাজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী প্রতিমা ভৌমিকজি, ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ শ্রী রতন চক্রবর্তীজি, রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী জিষ্ণু দেববর্মাজি, আমার বন্ধু তথা সাংসদ শ্রী বিপ্লব দেবজি, ত্রিপুরা সরকারের শ্রদ্ধেয় মন্ত্রীবৃন্দ এবং প্রিয় ত্রিপুরাবাসী!

নমস্কার!

খুলুমাখা!

মাতা ত্রিপুরা সুন্দরীর এই ভূমিতে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি নিজেকে তাঁর আশীর্বাদধন্য মনে করছি। মাতা ত্রিপুরা সুন্দরীর এই পূণ্য ভূমিকে আমি প্রণতি জানাই।

সর্বাগ্রে, আমি আপনাদের সকলের কাছে নতমস্তকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি প্রায় দু’ঘন্টা দেরিতে এখানে উপস্থিত হওয়ার জন্য। এর আগে আমি মেঘালয়ে ছিলাম এবং সেখানে কাজ শেষ করতে নির্ধারিত সময়ের থেকেও আরও বেশিক্ষণ আমাকে থাকতে হয়েছিল। আমি জানতে পেরেছি যে এখানে বেলা ১১-১২টা থেকে বেশ কিছু মানুষ উপস্থিত রয়েছেন। এই বিলম্বের কারণে আপনাদের অসুবিধা সত্ত্বেও আমাকে আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য আপনারা এখানে অপেক্ষা করছেন, এজন্য আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই আপনাদের প্রতি। প্রথমেই আমি অভিনন্দন জানাই ত্রিপুরাবাসীকে কারণ ‘স্বচ্ছতা’ বিষয়টির ওপর তাঁরা এক বিশেষ অভিযানের এখানে সূচনা করেছেন। গত পাঁচ বছরে স্বচ্ছতাকে আপনারা এক জন-আন্দোলনের রূপ দিয়েছেন। এরই ফলশ্রুতি হিসেবে এখনও পর্যন্ত দেশের সবক’টি ছোট ছোট রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরা পরিচ্ছন্নতম একটি রাজ্য হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

বন্ধুগণ,

মা ত্রিপুরা সুন্দরীর আশীর্বাদে উন্নয়নের লক্ষ্যে এই রাজ্যের অভিযান এখন এক নতুন উচ্চতায় আজ উন্নীত হয়েছে। সংযোগ ও যোগাযোগ, দক্ষতা বিকাশ এবং দরিদ্রদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ সম্পর্কিত কর্মসূচিগুলির জন্য আপনাদের সকলকেই জানাই অনেক অনেক অভিনন্দন। আজ ত্রিপুরায় প্রথম স্থাপিত হল একটি ডেন্টাল কলেজ। এর ফলে ত্রিপুরার যুবক ও তরুণরা চিকিৎসক হিসেবে নিজেদের পেশাগত জীবনকে তৈরি করার একটি সুযোগ এখানে লাভ করবেন। ত্রিপুরার ২ লক্ষেরও বেশি দরিদ্র পরিবার বর্তমানে নতুন পাকা বাড়ির মালিকানা পাচ্ছেন। এই বাড়িগুলির অধিকাংশের মালিকানাই থাকবে আমাদের মা ও বোনেদের নামে। আপনারা সকলে নিশ্চয়ই জানেন যে এই বাড়িগুলি তৈরি করতে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এখানে এমন অনেক বোন রয়েছেন যাঁদের নামে এই প্রথম এখানে কোনও বাড়ি নথিভুক্ত হয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকায় গড়ে তোলা এই বাড়িগুলির মালিক সকল মা ও বোনকে আমি অভিনন্দন জানাই। লক্ষ সম্পদের মালিক হয়ে ওঠার জন্য ত্রিপুরার এই মা-বোনেদের আগরতলা থেকেই আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি।

দরিদ্র মানুষের জন্য বাসস্থান নির্মাণের কাজে ত্রিপুরা হল একটি অন্যতম অগ্রণী রাজ্য। মানিকজি এবং তাঁর সঙ্গী-সাথীরা বেশ প্রশংসনীয় একটি কাজ সম্পূর্ণ করেছেন। যদি একরাত্রির জন্যও কেউ আমাদের আশ্রয় দিয়ে থাকেন তাহলে তা আমাদের কাছে এক সারা জীবনের আশীর্বাদ হয়ে থাকে। আজ এখানে প্রত্যেকের মাথার ওপর রয়েছে একটি পাকা আচ্ছাদন। এই কারণে আমাদের সকলের ওপরই আজ বর্ষিত হচ্ছে আশীর্বাদের বন্যা। বিমানবন্দর থেকে আসার পথে রাস্তার দু’ধারে বহু মানুষ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থেকে আমাকে আশীর্বাদ জানিয়েছেন। আজ এখানে যাঁরা উপস্থিত রয়েছেন, সম্ভবত তার থেকেও দশগুণ মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমায় আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য। তাঁদের সকলকেই আমি প্রণাম জানাই। আমি আগেই বলেছি যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের সুবর্ণ জয়ন্তী বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য আমাকে মেঘালয়ে যেতে হয়েছিল। ঐ বৈঠকে ত্রিপুরা সহ সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি রোডম্যাপ স্থির করার বিষয়টি নিয়ে আমরা এক আলোচনা-বৈঠকে মিলিত হয়েছিলাম। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্যের উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রেখে আটটি বিষয় আমি সেখানে তুলে ধরেছিলাম। ত্রিপুরায় বর্তমানে রয়েছে এক ডবল ইঞ্জিন সরকার। তাই, উন্নয়নের এই রোডম্যাপ যাতে দ্রুত এখানে বাস্তবায়িত করা যায় তা নিশ্চিত করতে আমরা সচেষ্ট থাকব।

বন্ধুগণ,

ত্রিপুরায় ডবল ইঞ্জিন সরকার গঠিত হওয়ার আগে এই রাজ্যটি সহ সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারত সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিল দুটি মাত্র কারণে। তার প্রথমটি হল, এর আগে যখন এখানে কোনও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হত তখন তা হিংসাত্মক ঘটনার এক নজির সৃষ্টি করত। কিন্তু সময় এখন পরিবর্তিত। আজ ত্রিপুরায় শুধু শোনা যায় স্বচ্ছতা এবং পরিকাঠামো উন্নয়নের কথা। লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষ যে আজ বাসস্থানের মালিক হতে পারছেন, একথা এখন আলোচিত হচ্ছে এ রাজ্যের সর্বত্র। ত্রিপুরায় সংযোগ ও যোগাযোগ সম্পর্কিত পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির রূপায়ণে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে কেন্দ্রীয় সরকার আর তা বাস্তবায়িত করে দেখাচ্ছে এখনকার রাজ্য সরকার। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এখানকার জাতীয় সড়কগুলি কিভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে তা আপনারা লক্ষ্য করেছেন। গত পাঁচ বছরে এই রাজ্যের বহু গ্রামে সড়ক সংযোগের সুযোগ পৌঁছে গেছে। ত্রিপুরার প্রতিটি গ্রামকে সড়ক পথে যুক্ত করার লক্ষ্যে দ্রুত কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ এখন চলছে। আজ এখানে যে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পগুলির শিলান্যাস হল তার মধ্য দিয়ে ত্রিপুরার সড়ক নেটওয়ার্কটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে চলেছে। আগরতলা বাইপাসটি রাজধানী শহরের যান চলাচল ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তুলবে। ফলে, এখানকার জীবনযাত্রা হয়ে উঠবে সহজতর।

বন্ধুগণ,

ত্রিপুরার মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারত এখন হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এক প্রবেশ পথ। আগরতলা-আখাউরা রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাটি ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এক নতুন পথ খুলে দেবে। একইভাবে, ভারত-থাইল্যান্ড-মায়ানমার সড়ক পথের মতো উত্তর-পূর্ব ভারতের সড়ক পরিকাঠামো অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসারের এক মাধ্যম হয়ে উঠতে চলেছে। আগরতলার মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দরে একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল প্রকল্পের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের সঙ্গে সংযোগ ও যোগাযোগ এখন সহজতর হয়ে উঠেছে। এইভাবেই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পরিবহণ ব্যবস্থার একটি বিশেষ কেন্দ্র রূপে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে এই রাজ্যটির। আমাদের কঠোর পরিশ্রমের ফলশ্রুতি হিসেবে এই রাজ্যের জনসাধারণ বিশেষত, আমার তরুণ বন্ধুরা ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাতে পারছেন। ডবল ইঞ্জিন সরকার গঠিত হওয়ার পর ত্রিপুরার অনেকগুলি পঞ্চায়েতকেই অপটিক্যাল ফাইবারের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

বন্ধুগণ,

বিজেপি-র নেতৃত্বে এখানকার ডবল ইঞ্জিন সরকার শুধুমাত্র ব্যবহারিক পরিকাঠামোর ওপরই নয়, ডিজিটাল পরিকাঠামোর ওপরও বিশেষ জোর দিয়েছে। একইসঙ্গে জোর দেওয়া হয়েছে সামাজিক পরিকাঠামোর ওপরও। বিজেপি সরকারের বর্তমানে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের একটি ক্ষেত্র হল চিকিৎসার সুযোগকে প্রত্যেকের আয়ত্তের মধ্যে নিয়ে আসা। ‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনা’টি এই কাজে বিশেষ সফল হয়েছে। এর আওতায় উত্তর-পূর্ব ভারতে ৭ হাজারটি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাকেন্দ্র অনুমোদিত হয়েছে। এর অধিকাংশই কাজ করছে দেশের গ্রামাঞ্চলগুলিতে। ত্রিপুরাতেও এই ধরনের এক হাজারটি কেন্দ্র স্থাপিত হতে চলেছে। ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসের মতো জটিল রোগগুলির চিকিৎসাও এখানে করা হবে হাজার হাজার রোগীর জন্য। ‘আয়ুষ্মান ভারত – প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা’র আওতায় হাজার হাজার ত্রিপুরাবাসী বিনামূল্যে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুযোগ লাভ করছেন।

বন্ধুগণ,

এই প্রথম শৌচাগার নির্মাণ এবং বিদ্যুতের যোগান ও গ্যাস সংযোগের প্রসারে ব্যাপক কর্মসূচি এখানে রূপায়িত হচ্ছে। এমনকি গ্যাস গ্রিডও এজন্য স্থাপন করা হয়েছে। ত্রিপুরার বাড়িতে বাড়িতে সস্তায় পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ পৌঁছে দিতে ডবল ইঞ্জিন সরকার দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে চলেছে। প্রতিটি বাড়িতে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের লক্ষ্যে রাজ্যের ডবল ইঞ্জিন সরকার এখন দ্বিগুণ গতিতে কাজ করে চলেছে। মাত্র তিন বছর সময়কালের মধ্যেই ত্রিপুরার ৪ লক্ষ নতুন পরিবারে পাইপলাইনের মাধ্যমে জলের সুযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ২০১৭-র আগে পর্যন্ত ত্রিপুরায় দরিদ্র মানুষের মধ্যে রেশন বন্টনের ক্ষেত্রেও লুঠ ও কারচুপি ছিল এক অতি সাধারণ ঘটনা। কিন্তু এখন এখানকার ডবল ইঞ্জিন সরকার প্রতিটি দরিদ্র সুফলভোগীদের কাছে রেশন ব্যবস্থা শুধু পৌঁছেই দেয়নি, গত তিন বছর ধরে এখানে তার সুযোগ উন্মুক্ত করা হয়েছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।

বন্ধুগণ,

এই সমস্ত কর্মসূচির সর্বাপেক্ষা বেশি সুফলভোগী হলেন আমাদের মা ও বোনেরা। ‘প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা’র আওতায় ত্রিপুরার ১ লক্ষেরও বেশি অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা সুফল ভোগ করছেন। হাজার হাজার কোটি টাকার সুফল হস্তান্তর হয়েছে প্রতিটি মায়ের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। পুষ্টিকর খাদ্যের যোগান দেওয়ার লক্ষ্যেই এই বিশেষ ব্যবস্থা। মা ও শিশুর জীবনকে বিপন্মুক্ত করে তুলতে রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে প্রসবের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ত্রিপুরায় মা ও বোনেদের স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার যেভাবে কাজ করে চলেছে তা খুবই প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ বলে আমি মনে করি। মহিলাদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে হাজার হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থাও করেছে রাজ্য সরকার। এখানে ডবল ইঞ্জিন সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকে ত্রিপুরায় মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে নয়গুণ।

ভাই ও বোনেরা,

বহু দশক ধরে ত্রিপুরায় রাজত্ব করেছে এমন কয়েকটি দল যাদের মতাদর্শের গুরুত্ব আজকের দিনে অচল। তারা শুধু সুবিধাবাদের রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিত। ত্রিপুরাকে তারা উন্নয়নের সুযোগ থেকে বঞ্চিত রেখে দিয়েছিল। ত্রিপুরার নিজস্ব সম্পদকে তারা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির কাজে লাগাত। এর ফলে, দরিদ্র সাধারণ মানুষ, বিশেষত যুব সমাজ, কৃষক বন্ধুরা এবং আমাদের মা-বোনেদের অশেষ দুর্ভোগের শিকার হতে হত। শাসক গোষ্ঠীর ঐ ধরনের মানসিকতা ও মতাদর্শ কখনই সাধারণের উপকার করতে পারে না। কিন্তু, কর্মসূচিকে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার লক্ষ্যে বর্তমানে এখানকার ডবল ইঞ্জিন সরকারের রয়েছে একটি স্থির সঙ্কল্প তথা ইতিবাচক পদক্ষেপ। নৈরাশ্যের কোনও স্থান এখন ত্রিপুরায় নেই, কারণ এখানে এখন প্রয়োজন দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে যাওয়া।

বন্ধুগণ,

ক্ষমতার রাজনীতি দেশের আদিবাসী সমাজের প্রভূত ক্ষতিসাধন করেছে। আদিবাসী সমাজ এবং আদিবাসী অঞ্চলগুলি ছিল উন্নয়নের সুযোগ ও সুফল থেকে বঞ্চিত। কিন্তু এই রাজনীতিকে এখন সম্পূর্ণভাবে বদলে দিয়েছে বিজেপি। এই কারণেই বর্তমানে আদিবাসী সমাজের প্রথম পছন্দই হল বিজেপি দলটিকে। নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্প্রতি সম্পূর্ণ হয়েছে গুজরাটে। ২৭ বছর ক্ষমতাসীন থাকা সত্ত্বেও গুজরাটে বিজেপি-র এই ব্যাপক জয়ের অন্যতম কারণ হল আদিবাসী সমাজের এক বিরাট সমর্থন। আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত ২৭টি আসনের মধ্যে ২৪টিতেই বিজেপি জয়ী হয়েছে।

বন্ধুগণ,

অটল (বিহারী বাজপেয়ী)জি-র সরকার আদিবাসী সম্প্রদায়গুলির জন্য সর্বপ্রথম একটি পৃথক মন্ত্রক এবং পৃথক বাজেট সংস্থানের সূচনা করে। সেই সময়কাল থেকেই আপনারা আমাদের দিল্লিতে সরকার গঠনের সুযোগ দিয়ে এসেছেন। আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিটি বিষয়কেই আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি। আদিবাসী উন্নয়নে বাজেট সংস্থানের মাত্রা ২১ হাজার কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার কোটি টাকায়। একইভাবে, আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তির জন্য বাজেট সংস্থানের মাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। ফলে, এথেকে উপকৃত হয়েছে ত্রিপুরার আদিবাসী সমাজও। ২০১৪ সালের আগে দেশে একলব্য মডেল স্কুলের সংখ্যা ছিল ১০০-রও কম, কিন্তু আজ তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫০০-রও বেশি। এই ধরনের ২০টি স্কুল গড়ে তোলার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরাতেও। আগের সরকারগুলি ৮-১০টি মাত্র বনজ পণ্যের ওপর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য খাতে সহায়তা দিত। কিন্তু বর্তমানে বিজেপি সরকার ৯০ শতাংশ বনজ উৎপাদনের ক্ষেত্রেই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। দেশে বর্তমানে আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে ‘বন ধন কেন্দ্র’-এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজারেরও বেশি। এই কর্মসূচির আওতায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে ৯ লক্ষ আদিবাসী কর্মপ্রার্থীদের জন্য। তাঁদের অধিকাংশই হলেন আমাদের বোনেরা। বিজেপি সরকারই আদিবাসী সমাজের বাঁশ ও বাঁশ থেকে নির্মিত সামগ্রী উৎপাদনের জন্য যাবতীয় সুযোগ-সুবিধার প্রসার ঘটিয়েছে।

বন্ধুগণ,

বিজেপি সরকারই সর্বপ্রথম ‘জনজাতীয় গৌরব দিবস’ উদযাপনের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছে। ১৫ নভেম্বর দিনটিকে সারা দেশে ‘জনজাতীয় গৌরব দিবস’ রূপে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সরকারই। ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকীকে এইভাবেই স্মরণীয় করে রাখা হচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে আদিবাসী সম্প্রদায়গুলির অবদানকে স্মরণ করতে শুধু দেশে নয়, বিদেশেও নানা অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি আয়োজিত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে গড়ে তোলা হচ্ছে আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণে ১০টি সংগ্রহশালা। রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মুজি সম্প্রতি এখানে এক অনুষ্ঠানে মহারাজা বীরেন্দ্র কিশোর মানিক্য সংগ্রহশালা ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের শিলান্যাস করে গেছেন। আদিবাসী সমাজের অবদান ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান ত্রিপুরা সরকার। ত্রিপুরার যে সমস্ত আদিবাসী শিল্পী তাঁদের শিল্প ও সংস্কৃতিকে বিশিষ্টতা দান করেছেন তাঁদের পদ্ম সম্মানে সম্মানিত করার লক্ষ্যেও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বিজেপি সরকার। এই ধরনের বহু উদ্যোগ ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আদিবাসী সমাজগুলির মধ্যে বিজেপি-র ওপর সর্বোচ্চ আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে।

ভাই ও বোনেরা,

ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রচেষ্টাই হল ত্রিপুরার ক্ষুদ্র কৃষক এবং ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের কাছে সেরা সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী যাতে বিদেশের বাজারে রপ্তানি করা যায় সেই লক্ষ্যেও প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ত্রিপুরার আনারস এখন পৌঁছে গেছে বিশ্ব বাজারেও। এখান থেকে বাংলাদেশ, জার্মানি এবং দুবাইতে রপ্তানি করা হচ্ছে হাজার হাজার মেট্রিক টন অন্যান্য ফল ও শাকসবজি। ফলে, কৃষকরা এখন তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের জন্য আরও ভালো দাম পেতে শুরু করেছেন। ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’র আওতায় ত্রিপুরার লক্ষ লক্ষ কৃষককে এ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি আর্থিক সহায়তা। বিজেপি সরকার যেভাবে ত্রিপুরার সুগন্ধী কাঠ শিল্পের ব্যাপক প্রসারে উদ্যোগী হয়েছে তার অর্থবহ সুফল আমরা লক্ষ্য করব আগামী বছরগুলিতে। এর মধ্য দিয়ে ত্রিপুরার যুব সমাজ একদিকে যেমন নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন, অন্যদিকে তেমনই অর্থ উপার্জনের এক নতুন দিশাও তাঁদের সামনে খুলে যাবে।

বন্ধুগণ,

ত্রিপুরা বর্তমানে শান্তি ও উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করেছে। এখানকার ডবল ইঞ্জিন সরকার তার কাজের সুফল প্রমাণ করছে। ত্রিপুরার জনসাধারণের ক্ষমতা ও দক্ষতার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। তাকে পাথেয় করে আমরা আমাদের উন্নয়নের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করে তুলব। এই বিশ্বাস নিয়ে আমি আরও একবার ত্রিপুরাবাসীকে আমার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। ত্রিপুরায় আজ যে সমস্ত কর্মসূচির সূচনা হল অথবা যেগুলির শিলান্যাস ঘটল তার মধ্য দিয়ে গড়ে উঠবে ত্রিপুরার এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। অদূর ভবিষ্যতে এই রাজ্যটি যে এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হতে চলেছে এই প্রত্যাশা নিয়ে এবং আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমার বক্তব্য আমি শেষ করলাম।

ভারতমাতার জয়!

ভারতমাতার জয়!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...

Prime Minister Shri Narendra Modi paid homage today to Mahatma Gandhi at his statue in the historic Promenade Gardens in Georgetown, Guyana. He recalled Bapu’s eternal values of peace and non-violence which continue to guide humanity. The statue was installed in commemoration of Gandhiji’s 100th birth anniversary in 1969.

Prime Minister also paid floral tribute at the Arya Samaj monument located close by. This monument was unveiled in 2011 in commemoration of 100 years of the Arya Samaj movement in Guyana.