ভারতমাতা কি জয়,
ভারতমাতা কি জয়,
ভারতমাতা কি জয়,
আমার প্রিয় ঊনাবাসী, আপনারা সকলে কেমন আছেন? সবাই সুস্থ আছেন তো? মা চিন্তপূর্ণি এবং গুরু নানক দেবজীর অনুগামীদের বাসস্থান, এই ভূমিকে আমার প্রণাম।
বন্ধুগণ,
গুরু নানকজী ও অন্যান্য গুরুদের স্মরণ করে আর আজ মা চিন্তপূর্ণির চরণে প্রণাম জানিয়ে ধনতেরস এবং দীপাবলির আগে হিমাচল প্রদেশের জনগণকে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে নির্মিত ও নির্মীয়মান এই প্রকল্পগুলি উপহার দিতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আজ ঊনা তথা হিমাচলে দীপাবলি যেন সময়ের অনেক আগেই চলে এসেছে। এখানে এত বিপুল সংখ্যায় আমার দেবী-স্বরূপা মা ও বোনেরা আমাদের আশীর্বাদ দিতে চলে এসেছেন। এই আশীর্বাদ আমাদের জন্য অনেক বড় সম্পদ, অনেক বড় শক্তি।
ভাই ও বোনেরা,
আমি আগে এখানে এত দীর্ঘ সময় কাটিয়েছি যে, যখনই ঊনায় আসি, বিগত দিনের স্মৃতিগুলি চোখের সামনে ভেসে উঠতে থাকে। এটা আমার সৌভাগ্য যে, অনেকবার দেবী মা চিন্তপূর্ণি দেবীর চরণে মাথা ঠেকানো আর আশীর্বাদ পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। এখানকার আখ এবং গন্ডওয়ালির স্বাদ কে ভুলতে পারেন।
বন্ধুগণ,
যখন হিমাচলে থাকতাম, তখন প্রায়ই ভাবতাম যে, এই দেবভূমিকে প্রকৃতি এত সুন্দর বরদান দিয়েছে, এত নদী, ঝর্ণা, উর্বর জমি, ক্ষেত, পর্যটনের সম্ভাবনা। কিন্তু, কিছু সমস্যা দেখে সেই সময় আমি দমে যেতাম। আমি ভাবতাম, যেদিন এই হিমাচল প্রদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে, শিল্পোন্নয়ন হবে, যেদিন হিমাচল প্রদেশের ছেলেমেয়েদের উচ্চ শিক্ষার জন্য বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন ও গ্রাম ছেড়ে বাইরে যেতে হবে না, সেদিনই হিমাচল প্রদেশে আসল পরিবর্তন আসবে।
আর আজ দেখুন, আজ আমি এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার বেশ কিছু উন্নয়ন ওষধি শিক্ষা এবং শিল্পায়নের কিছু প্রকল্প উপহার নিয়ে এসেছি। আজ এখানে ঊনায় দেশের দ্বিতীয় ‘বাল্ক ড্রাগ পার্ক’ – এর উদ্বোধন হ’ল। এখন হিমাচল প্রদেশের মানুষ ভাবুন, দীর্ঘকাল ধরে নানা সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করা হিমাচল প্রদেশে যখন ভারতের তিনটি ‘বাল্ক ড্রাগ পার্ক’ গড়ে উঠবে, প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর হিমাচল প্রদেশের জন্য এরচেয়ে বড় উপহার আর কি হতে পারে! এর থেকে বড় পদক্ষেপ আর কিছু হতে পারে না। এটা আমাদের হিমাচল প্রদেশের প্রতি ভালোবাসা এবং সমর্পণভাবের পরিণাম।
কিছুক্ষণ আগেই আমার অম্ব – আন্ডৌরা থেকে দিল্লি পর্যন্ত ভারতের চতুর্থ বন্দে ভারত ট্রেনকে সবুত পতাকা দেখানোর সৌভাগ্য হয়েছে। এটাও ভাবুন, এত বড় ভারত, এত বড় বড় শহর, কিন্তু চতুর্থ বন্দে ভারত ট্রেন পেয়েছেন আমার হিমাচল প্রদেশের ভাই ও বোনেরা। আমি জানি বন্ধুগণ, আজ আপনাদের সঙ্গে যত পরিবারের মানুষের দেখা হবে, ভারতের যে কোনও প্রান্তে যত আত্মীয়-স্বজন রয়েছেন, তাঁদের আপনারা ফোন করে জানাবেন যে, আমাদের বিমানবন্দরে এসে এরোপ্লেন দেখে যান। বিমানে বসার কথা পরে ভাবা যাবে। এমনিতেই হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসকারী অনেকেই গত দুই – তিন - চার প্রজন্ম ধরে রেলগাড়িও চোখে দেখেননি। রেলগাড়ি চড়া তো দূরের কথা। দেশ হওয়ার ৭৫ বছর পরেও এই রাজ্যের অনেক প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ এরকম যোগাযোগহীনতার শিকার। আজ হিমাচলে শুধু রেলগাড়ি নয়, ভারতের সবচেয়ে আধুনিক রেলগাড়ি এসে দাঁড়িয়ে পড়েছে আর এখান থেকে দিল্লি পর্যন্ত চলতেও শুরু করেছে।
আজ হিমাচল প্রদেশে এটি আইআইআইটি-র স্থায়ী ভবনেরও উদ্বোধন হয়েছে। আমাদের ডবল ইঞ্জিন সরকার হিমাচল প্রদেশকে উন্নয়নের পথে কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় - এই প্রকল্পগুলি তার উদাহরণ মাত্র। এগুলি বিশেষ করে, হিমাচল প্রদেশের নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের স্বপ্নকে নতুন ডানা মেলার সুযোগ করে দেবে। এই সকল প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের জন্য ঊনা তথা হিমাচল প্রদেশের সমস্ত নাগরিককে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
আমরা সকলে জানি, প্রয়োজন আর আশা-আকাঙ্খার মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকে। হিমাচল প্রদেশে আগে যত সরকার ক্ষমতায় ছিল, আর দিল্লিতে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা প্রত্যেকেই আপনাদের প্রয়োজন মেটানোর ক্ষেত্রে উদাসীন ছিল, আর আপনাদের আশা-আকাঙ্খাগুলিকে তারা কখনও বুঝতেই পারেনি। এর ফলে, আমার হিমাচল প্রদেশের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এখানকার নবীন প্রজন্ম ও এখানকার মা ও বোনেদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
কিন্তু, এখন সময় বদলেছে। আমাদের সরকার শুধু জনগণের প্রয়োজন মিটিয়েই থামছে না, তাঁদের আশা-আকাঙ্খা পূরণের জন্যও সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে কাজে লেগে পড়েছে। আপনারা সকলে জানেন যে, হিমাচল প্রদেশের পরিস্থিতি কেমন ছিল। আমার মনে আছে, আমি যখন এখানে থাকতাম, তখন চারপাশে উন্নয়নের কোনও চিহ্ন মাত্র নজরে পড়তো না। চারিদিকে অবিশ্বাসের খাদ, নিরাশার পাহাড়, সামনে এগোতে পারবো কি পারবো না – তা নিয়ে অনিশ্চয়তা, উন্নয়নের সঙ্গে প্রত্যাশার অনেক বড় ফারাক। আগে যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা কখনও এই উন্নয়নের প্রয়োজন ও প্রত্যাশার মধ্যে তৈরি হওয়া গভীর খাদকে ভরাট করার চেষ্টা করেননি। আমরা ক্ষমতায় এসে ডবল ইঞ্জিনের শক্তি দিয়ে সেই খাদ ভরাট করেছি। আর এখন হিমাচল প্রদেশে নতুন প্রত্যাশা পূরণের ইমারত গড়ে তুলছি।
বন্ধুগণ,
বিশ্বের অনেক দেশ আছে, যারা বিংশ শতাব্দীতেই তাদের জনগণের জন্য গ্রামীণ সড়ক, পরিশ্রুত পানীয় জল, শৌচালয়, আধুনিক হাসপাতাল ইত্যাদি পরিষেবা চালু করেছে। ভারতের মধ্যেও গুজরাটের মতো বেশ কিছু রাজ্য আছে, যেখানে সরকারি উদ্যোগে জনগণের জন্য গ্রামীণ সড়ক, পরিশ্রুত পানীয় জল, শৌচালয়, আধুনিক হাসপাতাল ইত্যাদি পরিষেবা চালু হয়েছে। কিন্তু, এদেশের কিছু রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের জন্য এই পরিষেবাগুলি পাওয়া কঠিন করে তুলেছে। আমাদের হিমাচল প্রদেশের পার্বত্য অঞ্চলগুলিও এই বঞ্চনার শিকার। আমি এখানে থাকার সময় অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে দেখেছি, কিভাবে সড়কের অভাবে আমাদের বয়স্ক রোগী ও গর্ভবতী মা-বোনেদের যথাসময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগতে হয়েছে। অনেকের হাসপাতালে যাওয়ার পথেই অকালে মৃত্যু হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
পাহাড়ে বসবাসকারী জনগণ জানেন যে, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকলে মানুষ কিভাবে বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। যে এলাকায় অনেক ঝর্ণা রয়েছে, এতগুলি নদী প্রবাহিত হয়েছে, সেখানকার জনগণকে যদি পানীয় জলের জন্য ছটফট করতে হয়, তারচেয়ে দুঃখের আর কি আছে। এই এলাকাগুলিতে বাড়ি বাড়ি নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়া কত কঠিন কাজ ছিল, তা কখনও বাইরের মানুষ বুঝতে পারবেন না।
যাঁরা বছরের পর বছর ধরে এখানকার সরকার চালিয়েছেন, হিমাচল প্রদেশের জনগণের দুঃখ-দুর্দশাকে তাঁরা পরোয়াই করেননি। কিন্তু, আজকের নতুন ভারত সেই সমস্ত পুরনো প্রতিবন্ধকতাকে দূর করে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। যে পরিষেবাগুলি জনগণের কাছে বিগত শতাব্দীতেই পৌঁছে যাওয়া উচিৎ ছিল, সেগুলি আজ পৌঁছচ্ছে।
কিন্তু আমরা কি এখানেই থেমে যাব। আপনারা বলুন বন্ধুগণ, যতটা করেছি, খুব ভালো কাজ হয়েছে। কিন্তু, এখানেই কি থেমে যাব? আমাদের এগোতে হবে কি হবে না? আরও দ্রুতগতিতে এগোতে হবে। আর এই কাজ কে করবে? আমরা ও আপনারা মিলেমিশে করবো ভাই ও বোনেরা। আমরা যেভাবে বিংশ শতাব্দীর সমস্ত পরিষেবা দেরীতে হলেও আপনাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি, একই রকমভাবে হিমাচল প্রদেশকে একবিংশ শতাব্দীর আধুনিকতার সঙ্গেও জুড়বো।
সেজন্য আজ হিমাচল প্রদেশের উন্নয়নে অভূতপূর্ব কাজ হচ্ছে। আজ যেখানে হিমাচল প্রদেশে একদিকে দ্বিগুণ গতিতে গ্রামীণ সড়ক নির্মিত হচ্ছে, তেমনই দ্রুতগতিতে প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্রডব্যান্ড যোগাযোগ ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আজ এখানে হিমাচল প্রদেশের সর্বত্র হাজার হাজার শৌচালয় নির্মিত হচ্ছে, অন্যদিকে প্রত্যেক গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাকে উন্নত করা হচ্ছে। আজ হিমাচল প্রদেশে একদিকে ড্রোনের মাধ্যমে দুর্গম অঞ্চলে জীবনদায়ী ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, বন্দে ভারত – এর মতো ট্রেন চালু করে দ্রুত দিল্লি যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আজ একদিকে হিমাচল প্রদেশের গ্রামে গ্রামে প্রত্যেক বাড়িতে নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। আর অন্যদিকে, কমন সার্ভিস সেন্টারগুলির মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে সরকারের সমস্ত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আমরা যেভাবে বিংশ শতাব্দীর সমস্ত পরিষেবা আপনাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি, একই রকমভাবে হিমাচল প্রদেশকে একবিংশ শতাব্দীর আধুনিকতার সঙ্গেও জুড়ছি।
বন্ধুগণ,
আজ এখানে হরোলি’তে একটি অনেক বড় বাল্ক ড্রাগ পার্ক – এর শিলান্যাস হয়েছে। একটু আগে জয়রামজী তাঁর বক্তব্যে যেমন বলছিলেন, কিছুদিন আগেই নালাগড় - বদ্দিতে মেডিকেল ডিভাইস পার্ক গড়ে তোলার কাজও শুরু হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, এই দুটি প্রকল্প দেশের পাশাপাশি, সারা পৃথিবীতে হিমাচল প্রদেশের নাম উজ্জ্বল করবে। এখন আমাদের ডবল ইঞ্জিন সরকার এই বাল্ক ড্রাগ পার্ক গড়ে তুলতে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। হিমাচল প্রদেশের মতো ছোট রাজ্যে একটি মাত্র প্রকল্পের জন্য ২ হাজার কোটি টাকা অনেক বড় বিনিয়োগ। আগামী বছরগুলিতে এখানে এই প্রকল্পেই ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ হতে চলেছে। কয়েক হাজার কোটি টাকার এই বিনিয়োগ ঊনা তথা হিমাচল প্রদেশের চেহারাই বদলে দেবে। এই রাজ্যে হাজার হাজার কর্মসংস্থান ও কয়েক হাজার আত্মনির্ভর প্রকল্প গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
বন্ধুগণ,
করোনা সঙ্কটকালে সারা বিশ্ব হিমাচল প্রদেশে নির্মিত ওষুধের শক্তি দেখেছে। ওষুধ উৎপাদনে ভারতকে বিশ্বের প্রথম স্থানে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে হিমাচল প্রদেশের ভূমিকা আরও বাড়তে চলেছে। এতদিন পর্যন্ত আমাদের ওষুধ প্রস্তুতের জন্য অধিকাংশ কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানী করতে হ’ত। কিন্তু, এখন হিমাচল প্রদেশেই এই কাঁচামাল তৈরি হবে। এই কাঁচামাল দিয়ে ওষুধও এই রাজ্যেই প্রস্তুত হবে। ফলে, ওষুধ শিল্প এই রাজ্যে অনেক পল্লবিত ও প্রস্ফুটিত হবে। ওষুধও অনেক সস্তা হবে।
আজ জন ঔষধি কেন্দ্র ও আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা বিনামূল্যে প্রদানের মাধ্যমে আমাদের সরকার গরীবের দুশ্চিন্তা কমানোর কাজ করছে। এই বাল্ক ড্রাগ পার্ক নিঃসন্দেহে গরীব ও মধ্যবিত্ত জনগণকে সুলভে আধুনিক চিকিৎসা প্রদান অভিযানকে আরও শক্তিশালী করবে।
বন্ধুগণ,
হিমাচল প্রদেশের জনগণ সাক্ষী রয়েছেন যে, কৃষি হোক কিংবা শিল্প – যতদিন পর্যন্ত ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা না গড়ে উঠবে, ততদিন পর্যন্ত উন্নয়নের গতি বাড়বে না। পূর্ববর্তী সরকারগুলি কিভাবে কাজ করতো, তার উদাহরণ হিসাবে আমাদের নাঙ্গাল বাঁধ – তলওয়াড়ি রেললাইনের কথা উল্লেখ করা যায়। আজ থেকে ৪০ বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকার এই রেল লাইন প্রকল্পটি মঞ্জুর করেছিল, ফাইল তৈরি হয়েছিল, নির্বাচনের আগে জনগণকে ভাওতা দেওয়ার জন্যই যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার প্রমাণ হ’ল – ৪০ বছরেও এই রেল লাইন বাস্তবায়িত হয়নি। এক ইঞ্চিও কাজ হয়নি। আমরা কেন্দ্রে সরকার গড়ার পর এই রেল লাইনের কাজ শুরু করেছি আর এখন দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আপনারা ভাবুন, এই কাজ আগে হলে ঊনার জনগণের কত না সুবিধা হ’ত।
বন্ধুগণ,
হিমাচল প্রদেশে রেল পরিষেবা বিস্তারের কাজকে আরও আধুনিক করে তুলতে আমাদের ডবল ইঞ্জিন সরকার ক্রমাগত কাজ করে চলেছে। আজ হিমাচল প্রদেশে তিনটি নতুন রেল প্রকল্পের কাজ চলছে। আজ যখন হিমাচল প্রদেশে মেড ইন ইন্ডিয়া, বন্দে ভারত ট্রেন পরিষেবা চালু হ’ল, তখন এই রাজ্য এক্ষেত্রে দেশের অগ্রণী রাজ্যগুলির অন্যতম হয়ে উঠল। এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মাধ্যমে এখন দেশ-বিদেশের ভক্ত ও পর্যটকরা নয়না দেবী, চিন্তপূর্ণি, জোয়ালা দেবী, কাঙড়া দেবীর মতো আমাদের পবিত্র শক্তিপীঠগুলির পাশাপাশি, আমাদের আনন্দপুর সাহিবে সহজেই অনেক কম সময়ে আসতে পারবেন। ঊনার মতো পবিত্র শহরে যেখানে গুরু নানক দেবজীর উত্তর পুরুষরা থাকেন, সেখানকার জন্য এই প্রকল্প দ্বিগুণ উপহার নিয়ে এসেছে।
করতারপুর করিডর চালু করার মাধ্যমে আমাদের সরকার যে পুণ্য অর্জন করেছে, বন্দে ভারত ট্রেন সেই পুণ্যকে আরও বাড়িয়ে দেবে। আপনারা জানেন, আগেই মা বৈষ্ণদেবী দর্শনের জন্য বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর আজ এখানকার শক্তিপীঠও এই আধুনিক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ভক্ত ও পর্যটকরা ছাড়াও, দেশের অন্যান্য শহরে কর্মরত হিমাচলের জনগণও অনেক উপকৃত হবেন।
দীর্ঘকাল ধরে হিমাচল প্রদেশের যুবক-যুবতীরা নিজের রাজ্যের মধ্যেই উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল। আপনাদের এই আকাঙ্খার কথা আমরা ক্ষমতায় আসার গোড়া থেকেই ভেবেছি। আর কোনও কাজকে থামিয়ে রাখা, ঝুলিয়ে রাখা, বিভ্রান্ত রাখা, ভুলে যাওয়া – এটা আমাদের পথ নয়। আমরা যে সিদ্ধান্ত নিই, তা বাস্তবায়নে সংকল্প করি আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের আগেই পরিণাম এনে দেখাই। আপনারা কি বলতে পারেন, হিমাচল প্রদেশের যুবক-যুবতীদের নিজের রাজ্যের মধ্যেই উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাওয়ার স্বপ্ন কেন সফল হয়নি? তাঁরা কেন বঞ্চিত ছিলেন? মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এমনকি ফার্মেসি নিয়ে পড়াশুনার জন্যও তাঁদের কেন প্রতিবেশী রাজ্যে যেতে হ’ত?
বন্ধুগণ,
পূর্ববর্তী সরকারগুলি হিমাচল প্রদেশের সামর্থ ছিল না বলে গুরুত্ব দিত না, তা নয়, সংসদে হিমাচল প্রদেশ থেকে হাতে গোণা কয়েকজন মাত্র প্রতিনিধি যেতেন বলে তাঁরা এখানকার উন্নয়নকে উপেক্ষা করতেন। হিমাচল প্রদেশের জনগণকে তাই রাজ্যের মধ্যেই আইআইটি, আইআইআইটি, আইআইএম পড়ার জন্য, এইমস্ হাসপাতালের জন্য ডবল ইঞ্জিন সরকারের দরকার ছিল। আজ ঊনাতে আইআইআইটি-র স্থায়ী ভবন নির্মিত হওয়ায় এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের আরও বেশি সুবিধা হবে। এখান থেকে পাশ করে বেরিয়ে হিমাচল প্রদেশের সন্তান-সন্ততিরা এই রাজ্যের ডিজিটাল বিপ্লবকে আরও শক্তিশালী করে তুলবেন।
আমার মনে আছে, আপনারা আমাকেই এই আইআইআইটি ভবন শিলান্যাসের সুযোগ দিয়েছিলেন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আমাদের অভ্যাস অনুযায়ী, নিজের শিলান্যাস করা ভবনটি নিজেই উদ্বোধন করতে পারছি। এটাই তো প্রকৃত পরিবর্তন। আমাদের জমানায় শিলান্যাস আমরা করি – উদ্বোধনও আমরাই করি। এটাই ডবল ইঞ্জিন সরকারের কাজ করার পদ্ধতি। আমাদের সরকার যে সংকল্প নেয় – তা বাস্তবায়িত করে ছাড়ে। আমি এই আইআইআইটি-র স্থায়ী ভবন গড়ে তোলার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ, তাঁরা কোভিড সঙ্কটকালেও এই কাজ দ্রুতগতিতে সম্পূর্ণ করেছেন।
বন্ধুগণ,
নবীন প্রজন্মের দক্ষতা ও তাঁদের সামর্থকে তুলে ধরা আমাদের অনেক বড় অগ্রাধিকার। সেজন্য গোটা দেশে উদ্ভাবন এবং দক্ষতা উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলির কর্মতৎপরতাকে বিস্তৃত করা হচ্ছে। হিমাচল প্রদেশের জন্য এটা সূত্রপাত মাত্র। এখন নানাধরনের দক্ষতা তাঁদেরকে সেনাবাহিনীতেও আরও উঁচু পদে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে। উন্নত হিমাচল প্রদেশ গড়ে তোলার জন্য আমাদের ডবল ইঞ্জিন সরকার ক্রমাগত আপনাদের পাশে থাকবে।
বন্ধুগণ,
যখন স্বপ্নগুলি বড় হয়, সংকল্পগুলি বিরাট হয়, তখন সেরকম বড় মাপের প্রচেষ্টাও করতে হয়। আজ আমাদের ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপে এই প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হচ্ছে। সেজন্য আমি জানি, হিমাচল প্রদেশের জনগণও পুরনো প্রথাগুলি বদলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি ঠিক বলছি কিনা? আপনারা দৃঢ় সংকল্প, তাই এখন আমাদের ডবল ইঞ্জিন সরকার নতুন ইতিহাস রচনা করবে। আর হিমাচল প্রদেশের জনগণ নতুন প্রথা গড়ে তুলবে।
আমি মনে করি, স্বাধীনতার অমৃতকালে এখন হিমাচল প্রদেশে উন্নয়নের স্বর্ণ যুগ শুরু হতে চলেছে। এই স্বর্ণ যুগ হিমাচল প্রদেশকে উন্নয়নের সেই উচ্চতায় নিয়ে যাবে, যার জন্য আপনাদের সকলকে দশকের পর দশক অপেক্ষা করতে হয়েছে। আমি আরেকবার এই সকল প্রকল্পের জন্য আপনাদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের সকলের জন্য মঙ্গল কামনা করি। আগামী দিনগুলিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যেসব উৎসব আপনারা উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করবেন, সেগুলির জন্য হৃদয় থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
ভারতমাতা কি জয়,
ভারতমাতা কি জয়,
ভারতমাতা কি জয়,