নমস্কার!
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী শ্রী নীতিন গড়করিজি, শ্রী পীযূষ গোয়েলজি, শ্রী হরদীপ সিং পুরীজি, শ্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালজি, শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াজি, শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবজি, শ্রী রাজকুমার সিং-জি, ভিন্ন ভিন্ন রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের লেফটেন্যান্ট গর্ভনরগণ, বিভিন্ন রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, শিল্প জগতের প্রতিনিধিগণ, অন্যান্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ এবং আমার প্রিয় ভাই-বোনেরা,
আজ দুর্গা অষ্টমী। গোটা দেশে আজ শক্তিস্বরূপা আদ্যাশক্তি মহামায়ার পুজো হচ্ছে। কন্যা পুজো হচ্ছে আর শক্তি উপাসনার এই পূণ্য তিথিতে দেশের উন্নতিকে গতি প্রদানকারী শক্তি বর্ধনকারী একটি শুভ কর্মের উদ্বোধনও হতে চলেছে।
এই সময়টি ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পূর্তি সময়। স্বাধীনতার অমৃতকাল। আত্মনির্ভর ভারতের সঙ্কল্প নিয়ে আমরা আগামী ২৫ বছরের ভারতের ভিত্তি রচনা করছি। পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান ভারতের এই আত্মবলকে, আত্মবিশ্বাসকে, আত্মনির্ভরতার সঙ্কল্প পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এই ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান একবিংশ শতাব্দীর ভারতকে গতি শক্তি দেবে। নেক্সট জেনারেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং মাল্টি-মডেল কানেক্টিভিটিই ন্যাশনাল প্ল্যান থেকে গতি শক্তি অর্জন করবে। পরিকাঠামো সংক্রান্ত সমস্ত সরকারি নীতিতে পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সমস্ত ধাপে এই ন্যাশনাল প্ল্যান গতি বাড়াবে। সরকারের প্রকল্পগুলি যাতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্পূর্ণ হয়, সেজন্য এই গতি শক্তি ন্যাশনাল প্ল্যান সঠিক তথ্য এবং যথাযথ আলোকবর্তিকা দেখাবে।
গতি শক্তির এই মহা অভিযানের কেন্দ্রে রয়েছে ভারতের জনগণ, ভারতের শিল্পোদ্যোগ, ভারতের বাণিজ্য জগৎ, ভারতের উৎপাদনকারী, ভারতের কৃষক ও ভারতের গ্রাম। এটা ভারতের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী ভারত গড়ে তোলার জন্য নতুন প্রাণশক্তি যোগাবে। এগিয়ে যাওয়ার পথে সমস্ত প্রতিকূলতা দূর করবে। এটা আমার সৌভাগ্য যে আজকের এই পবিত্র দিনে আমি পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যানের শুভ উদ্বোধনের সুযোগ পেয়েছি।
বন্ধুগণ,
আজই এখানে প্রগতি ময়দানে নির্মীয়মান ‘ইন্টারন্যাশনাল একজিবিশন-কাম-কনভেনশন সেন্টার’-এর চারটি প্রদর্শনী হল-কেও জাতির উদ্দেশে অর্পণ করা হল। আধুনিক পরিকাঠামোর অগ্রগতিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই একজিবিশন সেন্টারে আমাদের ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ, আমাদের হস্তশিল্প, আমাদের কুটীর উদ্যোগ, তাদের উৎপাদিত পণ্য সারা পৃথিবীর বড় বাজারগুলির জন্য প্রদর্শন করতে পারবে। আন্তর্জাতিক বাজার পর্যন্ত তাদের উপস্থিতি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই কেন্দ্র অত্যন্ত সহায়ক হবে। আমি দিল্লির জনগণকে, দেশবাসীকে অনেক শুভেচ্ছা জানাই, শুভকামনা জানাই।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশে অনেক দশক ধরে সরকারি ব্যবস্থা যে ধরনের কাজ করেছে তার ফলে ‘সরকারি’ শব্দ শুনলেই মানুষের মনে হত নিম্নমানের জিনিস। সরকারি যে কোনও কাজ সমাপ্ত হতে বছরের পর বছর লেগে যেত, অকারণ বাধা পেত, জনগণের অর্থের অপমান হত। আমি অপচয় না বলে অপমান এজন্য বলছি কারণ, দেশের জনগণ সরকারকে যে কর দেন সেই টাকা খরচ করার সময় সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মনে এই ভাবনা থাকা উচিৎ যে কষ্টোপার্জিত করের ১ টাকাও যেন নষ্ট না হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এমনটাই চলছিল। দেশবাসীও এতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা ভাবতেন যে এমনভাবেই চলবে। তাঁরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হতেন। অন্যান্য দেশের উন্নতি দেখে উদাস হতেন, আর এই ভাবনা নিয়ে হতাশ হতেন যে এই দেশে কিছুই পরিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়। একটু আগেই একটি ভিডিওতে দেখছিলাম, সব জায়গায় লেখা রয়েছে ‘ওয়ার্ক ইন প্রগ্রেস’। কিন্তু দীর্ঘকাল পেরিয়ে গেলেও সেই কাজ কখনও সম্পূর্ণ হয়নি। কোনও কাজ শুরু হলে সেটা নির্ধারিত সময়ে সম্পূর্ণ হবে কিনা তা নিয়ে জনগণের মনে কোনও ভরসা ছিল না। ‘ওয়ার্ক ইন প্রগ্রেস’-এর বোর্ড এক ধরনের অবিশ্বাসের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। এমন পরিস্থিতিতে দেশ কিভাবে উন্নতি করত? উন্নতি তখনই সম্ভব যখন তাতে কোনও গতি থাকে, গতির জন্য আকুলতা থাকে, গতির জন্য সামগ্রিক প্রচেষ্টা থাকে।
আজ একবিংশ শতাব্দীর ভারত সরকারি ব্যবস্থার সেই পুরনো ভাবনাকে পেছনে ছেড়ে এগিয়ে চলেছে। আজকের মন্ত্র হল – ‘উন্নয়নের সদিচ্ছা, উন্নয়নের জন্য কাজ, উন্নয়নের জন্য সম্পদ, উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা, উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার’। আমরা শুধুই যে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প সম্পাদনের কর্মসংস্কৃতি বিকশিত করেছি তা নয়, আজ দেশে নির্ধারিত সময়ের আগে প্রকল্প সম্পূর্ণ করার প্রচেষ্টা চলছে। যদি আজ ভারত আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য সর্বাধিক বিনিয়োগে দায়বদ্ধ হয়, তাহলে সেই আজকের ভারত প্রয়োজনীয় প্রতিটি পদক্ষেপ নিচ্ছে যাতে প্রকল্পগুলি সম্পাদনে দেরি না হয়, কোনও প্রতিকূলতার সম্মুখীন না হতে হয়, আর সম্ভব হলে সময়ের আগেই সম্পূর্ণ হয়।
বন্ধুগণ,
দেশের সাধারণ মানুষ একটি ছোট্ট বাড়ি তৈরি করতে হলেও নানারকম চিন্তা-ভাবনা করে পরিকল্পনা রচনা করেন। কোনও বড় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হলে কিংবা একটি কলেজ তৈরি করতে হলে সম্পূর্ণ পরিকল্পনা ছকে তৈরি করতে হয়। সময়ের সঙ্গে আমাদের বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের কিরকম সম্প্রসারণ প্রয়োজন হতে পারে, সেটিও আগে থেকে ভেবে রাখা হয়। আমাদের প্রত্যেকেরই এ ধরনের অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ভারতের পরিকাঠামো সংক্রান্ত প্রকল্পগুলিতে এই সংহত পরিকল্পনার ক্ষেত্রে প্রতিদিন অনেক ত্রুটি অনুভব করি। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে যেখানে যত কাজ হয়েছে আমরা দেখেছি, রেলওয়ে নিজের মতো পরিকল্পনা করে, সড়ক পরিবহণ দপ্তর নিজেদের মতো পরিকল্পনা করে, টেলি-যোগাযোগ দপ্তর তাদের মতো পরিকল্পনা করে, গ্যাস সাপ্লাই নেটওয়ার্ক তাদের মতো করে পরিকল্পনা করে। এরকমই বিভিন্ন বিভাগ আলাদা আলাদা পরিকল্পনা করে।
আমরা সবাই এটা দেখেছি যে আগে কোথাও রাস্তা তৈরি হয়, সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে যায়। তারপর জল বিভাগের লোকেরা আসেন এবং জলের পাইপ বসানোর জন্য আবার খুঁড়ে দিয়ে চলে যান। যাঁরা সড়ক তৈরি করেন তাঁরা নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী রোড ডিভাইডার বানিয়ে চলে যান। ট্র্যাফিক পুলিশ এসে বলেন, এভাবে এই ডিভাইডার থাকলে যানজট হবে, ডিভাইডার হঠাও। কোথাও চৌরাস্তায় সার্কেল বানিয়ে দেওয়া হয়, তখন যানবাহনে চলাচলে নানারকম অব্যবস্থার শিকার হতে হয়। সারা দেশে আমরা এই ধরনের কাজ যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি। এহেন পরিস্থিতিতে সমস্ত প্রকল্পগুলিকে এক ছাতার তলায় আনার প্রয়োজন পড়লে অনেক বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিগড়ে যাওয়া বিষয়গুলিকে ঠিক করতে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়।
বন্ধুগণ,
এই যত সমস্যার কথা বললাম, সেগুলির মূল কারণ হল ম্যাক্রো-প্ল্যানিং এবং মাইক্রো-ইমপ্লিমেন্টেশনের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। বিভিন্ন বিভাগের কর্তারা এটা জানেন না যে অন্য কোন বিভাগ কোন প্রকল্প কোথায় শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজ্যগুলির কাছেও এ ধরনের অগ্রিম তথ্য থাকে না। এ ধরনের ঢিলেমি ও অব্যবস্থার কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াও প্রভাবিত হয় এবং বাজেটের টাকাও অপচয় হয়। সব থেকে বড় লোকসান এটা হয় যে শক্তি বৃদ্ধির বদলে, গুণিতক হারে শক্তি বাড়ানোর বদলে শক্তি বিভাজিত হয়ে যায়। আমরা যে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে কাজ দিই, তারাও ঠিক মতো জানে না যে ভবিষ্যতে এখান দিয়ে একটি মহাসড়ক যাবে কিংবা একটি সেচের খাল খনন করা হবে অথবা এখানে কোনও পাওয়ার স্টেশন চালু হতে চলেছে। সেজন্য তারা কোনও অঞ্চল নিয়ে কিংবা ক্ষেত্র নিয়ে বৃহত্তর পরিকল্পনা করতে পারে না। এই সমস্ত সমস্যার সমাধান করতেই এই ‘পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ রচিত হয়েছে। যখন আমরা এই মাস্টার প্ল্যানকে ভিত্তি বানিয়ে চলব, তখন আমাদের সম্পদেরও অপটিমাম ইউটিলাইজেশন বা যথাযথ ব্যবহার হবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশে পরিকাঠামো উন্নয়ন বিষয়টি অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের অগ্রাধিকারের আওতায় ছিল না। এমনকি তাদের ঘোষণাপত্রতেও এর উল্লেখ দেখা যায় না। এখন তো এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে কিছু রাজনৈতিক দল দেশের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নির্মাণকেও সমালোচনা করতে শুরু করেছে। যেখানে সারা বিশ্ব এটা মানে যে দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের জন্য উৎকৃষ্ট পরিকাঠামো নির্মাণই এমন একটি পথ যা অনেক আর্থিক গতিবিধির সূচনা করে, অনেক বড় মাত্রায় কর্মসংস্থান করে। যেভাবে দক্ষ মানবসম্পদ ছাড়া আমরা কোনও ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিণাম পেতে পারি না, তেমনই উন্নত এবং আধুনিক পরিকাঠামো ছাড়া আমরা চতুর্মুখী উন্নয়ন করতে পারি না।
বন্ধুগণ,
রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির অভাবের পাশাপাশি দেশের পরিকাঠামো উন্নয়নকে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে সরকারি বিভাগগুলির মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগের অভাব ও পারস্পরিক বিবাদ। রাজ্যগুলিতেও আমরা রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনাধীন সংস্থাগুলির মধ্যে এই বিষয়ে দ্বন্দ্বের সম্পর্ক দেখেছি। এর ফলে, যে প্রকল্পগুলি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক হওয়া উচিৎ ছিল, সেই প্রকল্পগুলি দেশের উন্নয়নের সামনে একটি দেওয়াল হয়ে ওঠে। সময়ের পাশাপাশি অনেক বছর ধরে ঝুলে থাকা এই প্রকল্পগুলি, সেগুলির প্রাসঙ্গিকতা, সেগুলির প্রয়োজনও হারাতে থাকে। আমি যখন ২০১৪ সালে দিল্লিতে একটি নতুন দায়িত্ব নিয়ে এসেছি, তখনও এরকম কয়েকশ’ প্রকল্প ছিল যেগুলি অনেক দশক ধরে আটকে ছিল। লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার এরকম কয়েকশ’ প্রকল্পকে আমি নিজে সমীক্ষা করেছি। সরকারের বিভিন্ন বিভাগ, বিভিন্ন মন্ত্রককে এক মঞ্চে এনে দাঁড় করিয়েছি। সমস্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করার প্রচেষ্টা চালিয়েছি। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এখন সকলের লক্ষ্য এদিকে গেছে, সবাই একথা ভাবতে শুরু করেছেন যাতে পারস্পরিক যোগাযোগের অভাবে প্রকল্পের কাজে দেরি না হয় । এখন এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে সম্পূর্ণ সরকারি দৃষ্টিকোণ থেকে সরকারের সামগ্রিক শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে। এর ফলে অনেক দশক ধরে অসম্পূর্ণ থাকা বেশ কিছু প্রকল্প এখন সম্পূর্ণ হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
‘পিএম গতিশক্তি’ এখন এটা সুনিশ্চিত করবে যে একবিংশ শতাব্দীর ভারত পরিকাঠামো প্রকল্পের ক্ষেত্রে যথাযথ কো-অর্ডিনেশনের অভাবে যাতে বিলম্বে শেষ না হয়, সরকারের কোনও অর্থ অপচয় না হয়, ‘পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ -এর মাধ্যমে সড়কপথ থেকে শুরু করে রেলপথ, বিমান যাতায়াত থেকে শুরু করে কৃষি পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রককে, বিভিন্ন বিভাগকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। প্রত্যেক বড় প্রকল্পকে, প্রত্যেক বিভাগকে সঠিক তথ্য, বিস্তারিত তথ্য যথাসময়ে যোগান দেওয়ার জন্য টেকনলজি প্ল্যাটফর্মও তৈরি করা হয়েছে। আজ এখানে অনেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং সেসব রাজ্যের অন্যান্য প্রতিনিধিরাও যুক্ত হয়েছেন। সকলের প্রতি আমার অনুরোধ যে যত দ্রুত সম্ভব আপনাদের রাজ্যের উন্নয়ন কর্মগুলিকেও পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যানের সঙ্গে যুক্ত করে আপনাদের রাজ্যের প্রকল্পগুলির অগ্রগতিকে আরও গতিশীল করে তুলুন। এতে রাজ্যের জনগণও অনেক লাভবান হবেন।
বন্ধুগণ,
এই ‘পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ সরকারি প্রক্রিয়া এবং তার সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে যেমন একসঙ্গে এনেছে, তেমনই পণ্য পরিবহণের বিভিন্ন উপায়কে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করার ক্ষেত্রেও সহায়ক হয়ে উঠেছে। এটি সার্বিক প্রশাসনের হলিস্টিক গভর্ন্যান্সের একটি বিস্তার। এখন যেমন গরীবদের জন্য তৈরি হওয়া বাড়ির প্রকল্পে শুধুই চারটি দেওয়ালে ঘেরা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয় না, সেখানে শৌচালয়, বিদ্যুৎ সংযোগ, জল সরবরাহ, রান্নার গ্যাসের সংযোগও একসঙ্গে যুক্ত করা হয়, ঠিক তেমনভাবেই আমাদের পরিকাঠামো সংক্রান্ত দৃষ্টিকোণ রয়েছে। অতীতে আমরা দেখেছি যে শিল্পোদ্যোগগুলির জন্য স্পেশাল জোন অবশ্যই রচনা করা হত কিন্তু সেখান পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন কিংবা বিদ্যুৎ সরবরাহ, জল সরবরাহ ও টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ তেমনভাবে দেখা যেত না।
বন্ধুগণ,
এটা অত্যন্ত সাধারণ ব্যাপার ছিল, যেখানে সবচাইতে বেশি খনির কাজ হত সেখানে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকত না। আমরা সবাই এটা দেখেছি, সমুদ্রবন্দরগুলি নিজের মতো ছিল। সমুদ্রবন্দরগুলির সঙ্গে শহরের রেল বা সড়কপথে যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না। এরকম অনেক কারণেই ভারতে উৎপাদনের খরচ অনেক বেড়ে যেত, আমাদের রপ্তানির খরচও অনেক বৃদ্ধি পেত। আমাদের পণ্য পরিবহণের খরচ অনেক বেশি হত। নিশ্চিতভাবেই এটা আত্মনির্ভর ভারত নির্মাণের ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা।
একটি গবেষণা অনুসারে, ভারতে পণ্য পরিবহণের খরচ দেশের মোট জিডিপি-র প্রায় ১৩ শতাংশ। বিশ্বের বড় বড় দেশে এরকম পরিস্থিতি নেই। পণ্য পরিবহণ ক্ষেত্রে অধিক ব্যয়ের কারণে ভারতীয় পণ্যের রপ্তানি মূল্যে প্রতিযোগিতার সুযোগ কমে যেত। যেখানে পণ্য উৎপাদন হচ্ছে সেখান থেকে সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত পৌঁছতে যে খরচ তাতেই ভারতের রপ্তানি ক্ষেত্রে লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় হয়ে যেত। এর ফলে তাদের পণ্যের দামও অনেক বেশি বেড়ে যেত। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের পণ্যের দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি হত। কৃষিক্ষেত্রেও একই কারণে আমাদের কৃষকদের অনেক বেশি লোকসান হত। সেজন্য আজ সময়ের চাহিদা হল, ভারতে অবাধ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যাতে দেশের সমস্ত প্রান্তে যোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। সেজন্য এই ‘পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ অনেক বড় এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হলে সমস্ত ধরনের পরিকাঠামোকে অন্যান্য পরিকাঠামোও যাতে সাহায্য করে এবং এর পরিপূরক হয়ে ওঠে সেটা দেখতে হবে। আমি মনে করি এর প্রতিটি বিষয় সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে আরও উৎসাহের সঙ্গে এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রেরণা যোগাবে।
বন্ধুগণ,
এই ‘পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ দেশের নীতি প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে, বিনিয়োগকারীদের একটি বিশ্লেষণমূলক এবং নীতি নির্ধারণে সহায়ক মাধ্যম হয়ে উঠবে। এর ফলে, দেশের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির কার্যকর পরিকল্পনা ও নীতি রচনায় সুবিধা হবে। সরকারের অনাবশ্যক খরচ বাঁচবে এবং শিল্পোদ্যোগীরাও কোনও প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে ও পরে সে সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য পাবে। এর ফলে, রাজ্য সরকারগুলিও তাদের অগ্রাধিকার ঠিক করার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পাবে। যখন এরকম তথ্য-ভিত্তিক মেকানিজম দেশের কাছে থাকবে, তখন প্রত্যেক রাজ্য সরকার বিনিয়োগকারীদের জন্য সময় নির্ধারিত দায়বদ্ধতা স্থির করতে পারবে। এর ফলে, বিনিয়োগ গন্তব্য রূপে ভারতের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব আরও নতুন নতুন উচ্চতা স্পর্শ করবে, নতুন মাত্রা পাবে। এর ফলে, দেশবাসী কম দামে উন্নতমানের সামগ্রী পাবেন। নবীন প্রজন্মের সামনে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ খুলে যাবে।
বন্ধুগণ,
দেশের উন্নয়নের জন্য এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে সরকারের পরিকাঠামো নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত বিভাগ পরস্পরের সঙ্গে বসে একে অপরের সংগৃহীত সম্মিলিত শক্তি ব্যবহার করতে পারবে। বিগত বছরগুলিতে এই দৃষ্টিকোণ নিয়ে ভারত অভূতপূর্ব গতিতে এগিয়ে চলেছে। পূর্ববর্তী ৭০ বছরের তুলনায় গত ৭ বছরে ভারত অনেক বেশি গতি এবং মাত্রায় কাজ করে চলেছে।
বন্ধুগণ,
ভারতে প্রথম প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন ১৯৮৭ সালে কমিশন হয়েছিল। তারপর থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ২৭ বছরে দেশে ১৫ হাজার কিলোমিটার প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন পাতা হয়েছে। আজ সারা দেশে ১৬ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি নতুন গ্যাস পাইপলাইন পাতার কাজ চলছে। এই কাজ আগামী ৫-৬ বছরে সম্পূর্ণ করার লক্ষ্য রয়েছে। অর্থাৎ যত কাজ ২৭ বছরে হয়েছে, আমরা তার থেকে বেশি কাজ এর অর্ধেক সময়ে করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছি। কাজ করার এই গতি আজ ভারতের পরিচিতি হয়ে উঠছে। ২০১৪ সালের আগে পাঁচ বছরে মাত্র ১,৯০০ কিলোমিটার রেললাইন ডবলিং করা হয়েছিল। বিগত সাত বছরে আমরা ৯ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি রেললাইন ডবলিং করেছি। কোথায় পাঁচ বছরে ১,৯০০, আর কোথায় সাত বছরে ৯ হাজার কিলোমিটার। ২০১৪ সালের আগে পাঁচ বছরে মাত্র ৩ হাজার কিলোমিটার রেলপথের বৈদ্যুতিকীকরণ হয়েছিল। বিগত সাত বছরে আমরা ২৪ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি রেলপথ বৈদ্যুতিকীকরণ করেছি। কোথায় ৩ হাজার আর কোথায় ২৪ হাজার। ২০১৪-র আগে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার ট্র্যাকে মেট্রো রেল চলত, আজ ৭০০ কিলোমিটার ট্র্যাকে মেট্রোর বিস্তার হয়েছে এবং আরও ১ হাজার কিলোমিটার নতুন মেট্রো রুটের কাজ চলছে। ২০১৪-র আগে পাঁচ বছরে মাত্র ৬০টি পঞ্চায়েতকেই অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হয়েছিল, কিন্তু বিগত সাত বছরে আমরা ১.৫ লক্ষেরও বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতকে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে যুক্ত করেছি। যোগাযোগের পারম্পরিক মাধ্যমগুলি বিস্তারের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ জলপথ এবং সি-প্লেনের নতুন পরিকাঠামো দেশ পাচ্ছে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশে মাত্র পাঁচটি জলপথ ছিল, আজ দেশে ১৩টি জলপথ গড়ে তোলার কাজ চলছে। ২০১৪ সালের আগে আমাদের বন্দরগুলিতে ভেসেল টার্ন-অ্যারাউন্ড টাইম ৪১ ঘন্টারও বেশি ছিল, সেই সময় এখন কমে ২৭ ঘন্টা হয়েছে। এই সময়কে আরও কম করার চেষ্টা চলছে।
বন্ধুগণ,
যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া প্রয়োজনীয় অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রেও নতুন গতি এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে ট্রান্সমিশনের সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ককে ট্রান্সফর্ম করা হচ্ছে। ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান পাওয়ার গ্রিড’-এর সঙ্কল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০১৪ পর্যন্ত দেশে যেখানে ৩ লক্ষ সার্কিট কিলোমিটার পাওয়ার ট্রান্সমিশন লাইন ছিল, সেখানে আজ তা বৃদ্ধি পেয়ে ৪ লক্ষ ২৫ হাজার সার্কিট কিলোমিটারেরও বেশি হয়েছে। নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে আমরা অত্যন্ত মার্জিনাল প্লেয়ার ছিলাম, সেখানে আজ আমরা বিশ্বের ‘টপ ফাইভ’ দেশগুলির অন্যতম হয়ে উঠেছি। ২০১৪ সালে যে ইনস্টল ক্যাপাসিটি ছিল, তা থেকে প্রায় তিনগুণ ক্যাপাসিটি অর্থাৎ, ভারত ইতিমধ্যেই ১০০ গিগাওয়াট...।রও বেশি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করেছে।
বন্ধুগণ,
আজ দেশে বিমান পরিবহণের আধুনিক বাস্তু-ব্যবস্থা বিকশিত করার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। বিমান যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য দেশে নতুন নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের পাশাপাশি আমরা এয়ার স্পেসকেও অনেক বেশি উন্মুক্ত করে দিয়েছি। বিগত দু-এক বছরের মধ্যেই ১০০টিরও বেশি এয়ার রুটের সমীক্ষা করে সেগুলির দূরত্ব কম করা হয়েছে। যে অঞ্চলগুলির ওপর দিয়ে যাত্রী বিমান যাওয়ার বাধা-নিষেধ ছিল, সেই বাঁধা নিষেধ দূর করা হয়েছে। এই একটি সিদ্ধান্তের ফলে অনেক শহরের মধ্যে বিমান যাতায়াতের সময় হ্রাস পেয়েছে। বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করতে নতুন এমআরও নীতি প্রণয়ন, জিএসটি-র কাজ সম্পূর্ণ করা, পাইলটদের উন্নত প্রশিক্ষণে জোর দেওয়া – এই সকল কাজ নির্ধারিত সময়ে সম্পূর্ণ করা হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
এ ধরনের প্রচেষ্টার ফলে দেশবাসী এখন বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন যে আমরা দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারি। বড় বড় লক্ষ্য, বড় বড় স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে পারে। এখন দেশের প্রত্যাশা এবং আকাঙ্ক্ষা দুটোই বেড়ে গেছে। তাই আগামী ৩-৪ বছরের জন্য আমাদের সঙ্কল্পও অনেক বড় হয়ে গেছে। এখন দেশের লক্ষ্য পণ্য পরিবহণ খরচ ন্যূনতম করা। রেলওয়ের পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি, সমুদ্রবন্দরগুলির কার্গো ক্যাপাসিটি বাড়ানো, টার্ন অ্যারাউন্ড টাইম আরও কম করা। আগামী ৪-৫ বছরে দেশে সব মিলিয়ে ২০০-টিরও বেশি বিমানবন্দর, হেলিপ্যাড এবং ওয়াটার এরোড্রোম তৈরি হয়ে যাবে। এখন যে প্রায় ১৯ হাজার কিলোমিটার গ্যাস পাইপলাইন আমাদের রয়েছে, তাকেও বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ করে তোলা হবে।
বন্ধুগণ,
দেশের কৃষক এবং মৎস্যজীবীদের আয় বৃদ্ধির জন্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত পরিকাঠামোকেও দ্রুতগতিতে বিস্তৃত ও উন্নত করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে দেশে মাত্র দুটি মেগা ফুড পার্ক ছিল। আজ দেশে ১৯টি মেগা ফুড পার্ক কাজ করছে। এখন এর সংখ্যা ৪০-এরও বেশি করার লক্ষ্য রয়েছে। বিগত সাত বছরে ফিশিং ক্লাস্টার, ফিশিং হারবার এবং ল্যান্ডিং সেন্টারের সংখ্যা ৪০ থেকে বাড়িয়ে ১০০-রও বেশি করা হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি।
বন্ধুগণ,
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও প্রথমবার ব্যাপক বিস্তারের প্রচেষ্টা হচ্ছে। সম্প্রতি তামিলনাড়ু এবং উত্তরপ্রদেশে দুটি ডিফেন্স করিডর নির্মাণের কাজ চলছে। ইলেক্ট্রনিক্স এবং আইটি ম্যানুফ্যাকচারিং-এ আজ আমরা দ্রুতগতিতে অগ্রণী দেশগুলির তালিকায় যুক্ত হচ্ছি। একটা সময় আমাদের দেশে মাত্র পাঁচটি ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার ছিল। আজ আমরা দেশে ১৫টি ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার তৈরি করতে পেরেছি আর এর দ্বিগুণ ম্যানুফ্যাকচারিং ক্লাস্টার গড়ে তোলার লক্ষ্য রয়েছে। বিগত বছরগুলিতে চারটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর শুরু হয়েছে, আর এখন এরকম করিডরের সংখ্যা এক ডজন বাড়ানো হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আজ সরকার যে দৃষ্টিকোণ নিয়ে কাজ করছে, তার একটি উদাহরণ ‘প্লাগ অ্যান্ড প্লে’ পরিকাঠামো নির্মাণও রয়েছে। এখন দেশের শিল্পোদ্যোগগুলিকে এমন পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে যা ‘প্লাগ অ্যান্ড প্লে’ পরিকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত থাকবে অর্থাৎ, দেশ ও বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা এই পরিকাঠামোতে নিজেদের সিস্টেমকে জুড়লেই কাজ শুরু করতে পারবেন। যেমন, গ্রেটার নয়ডার দাদরি-তে এ ধরনের ইন্টিগ্রেটেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ গড়ে তোলা হচ্ছে। একে পূর্ব ও পশ্চিম ভারতের সমুদ্রবন্দরগুলির সঙ্গে ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের মাধ্যমে যুক্ত করা হচ্ছে। এর জন্য এখানে ‘মাল্টি-মডেল লজিস্টিক্স হাব’ গড়ে তোলা হবে। এর কাছেই একটি ‘মাল্টি-মডেল ট্রান্সপোর্ট হাব’ও তৈরি হবে। এতে ‘স্টেট অফ দ্য আর্ট রেলওয়ে টার্মিনাল’ থাকবে। পাশাপাশি, ‘ইন্টারস্টেট’ এবং ‘ইন্ট্রাস্টেট বাস টার্মিনাল’ থাকবে। ‘মাস ট্রানজিট সিস্টেম’ এবং অন্যান্য উন্নত পরিষেবার সুযোগ থাকবে। দেশের ভিন্ন ভিন্ন অংশে এ ধরনের পরিষেবা নির্মাণের মাধ্যমে ভারত বিশ্বের বাণিজ্যিক রাজধানী হয়ে ওঠার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে পারবে।
বন্ধুগণ,
এই যত লক্ষ্য নির্ধারণের কথা আমি বললাম, এর কোনটাই সাধারণ লক্ষ্য নয়। এগুলি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টাও অভূতপূর্ব হবে, বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াও অভূতপূর্ব হবে। এই প্রচেষ্টা ও প্রক্রিয়া সবচাইতে বেশি শক্তি অর্জন করবে ‘পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ থেকে। যেভাবে আমাদের জেএএম ট্রিনিটি অর্থাৎ, জন ধন-আধার-মোবাইলের শক্তি দিয়ে দেশে আমরা প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে সমস্ত সরকারি পরিষেবা দ্রুতগতিতে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সফল হয়েছি, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে পিএম গতি শক্তি এ ধরনেরই কাজ করতে চলেছে। এটা সম্পূর্ণ দেশের পরিকাঠামো পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত একই সামগ্রিক ও সংহত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসছে। আরেকবার আমি সমস্ত রাজ্য সরকারকে এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ জানাই, অনুরোধও জানাই। এই সময় পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সময়। এই সময় স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পূর্তির সময়। দেশের জন্য কোন কিছু করে দেখানোর সময়। আজকের এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির প্রতিই আমার এই অনুরোধ, প্রত্যেকের কাছে এটাই আমার প্রত্যাশা।
আপনাদের সবাইকে এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে পদধূলি দেওয়ার জন্য আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই ‘পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ প্রত্যেক বেসরকারি উদ্যোগীকে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে সাহায্য করবে। তাঁরাও এর সঙ্গে হয়ে তাঁদের ভবিষ্যৎ রণনীতি স্থির করতে পারবেন। উন্নয়নের নতুন মাত্রাকে স্পর্শ করতে পারবেন। আপনাদের সবাইকে আমি আন্তরিক শুভকামনা জানাই। দেশবাসীকে আজ নবরাত্রির পবিত্র উৎসবে শক্তির আরাধনার সময়ে দেশের শক্তি বৃদ্ধির এই ভগীরথসম কাজের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানিয়ে আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ!
অনেক অনেক শুভকামনা!