ভারতমাতা কী জয়! ভারতমাতা কী জয়!
সবার আগে আমি দাহোদবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি কারণ শুরুতে কিছুটা হিন্দিতে বলতে হবে। এখানে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের অনুরোধ ছিল যাতে আমি হিন্দিতে বলি, তাহলে তাঁদের সুবিধা হয়। তো আমিও ভাবলাম পুরোটা না হলেও কিছুটা হলেও তাঁদের আব্দার মেনে নিই।
গুজরাটের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী, মৃদুভাষী এবং কর্মঠ শ্রী ভূপেন্দ্র ভাই প্যাটেলজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী, এ দেশের রেলমন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবজি, মন্ত্রিসভার সদস্য শ্রীমতী দর্শনা বেন জরদোষজি, সংসদে আমার বরিষ্ঠ সাথী ও গুজরাট প্রদেশ ভারতীয় জনতা পার্টির অধ্যক্ষ শ্রী সি আর পাটিলজি, গুজরাট রাজ্য সরকারের মন্ত্রীগণ, সাংসদ এবং বিধায়কগণ, আর এই অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যায় আগত আমার প্রিয় আদিবাসী ভাই ও বোনেরা!
আজ এখানে বিভিন্ন আদিবাসী অঞ্চল থেকে লক্ষ লক্ষ ভাই ও বোনেরা আমাদের সবাইকে আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য এসেছেন। আমাদের এখানে আগেকার দিনে মনে করা হত যে আমরা যে স্থানে থাকি, যে পরিবেশে থাকি, তার অনেক বড় প্রভাব আমাদের জীবনে পড়ে। আমি নিজে সার্বজনিক জীবনের শুরুর দিকে যখন সংগঠনের কাজ করতাম, তখন আমি উমর গাঁও থেকে অম্বাজি, ভারতের এই প্রান্তে, গুজরাটের এই পূর্ব প্রান্তে, সেই উমর গাঁও থেকে অম্বাজি – এই সমগ্র জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল, আমার জনজাতি ভাই ও বোনেদের এলাকাই ছিল আমার কর্মক্ষেত্র। জনজাতির মানুষদের মধ্যে থাকা, তাঁদের মধ্যে জীবন কাটানো, তাঁদেরকে বোঝা, তাঁদেরকে সঙ্গে নিয়ে বেঁচে থাকা, এটা আমার সারা জীবনের সম্পদ। সেই শুরুর দিনগুলিতে আমার এই জনজাতি মা, বোন ও ভাইয়েরা আমাকে যে পথ দেখিয়েছেন, আমাকে যা কিছু শিখিয়েছেন, তা থেকেই আজ আমি আপনাদের জন্য কিছু না কিছু করার প্রেরণা সংগ্রহ করতে থাকি।
জনজাতি মানুষদের জীবন আমি অনেক কাছ থেকে দেখেছি আর আমি মাথা নত করে বলতে পারি, তা সে গুজরাট হোক, মধ্যপ্রদেশ হোক, ছত্তিশগড় হোক, ঝাড়খণ্ড হোক, ভারতের যে কোনও জনজাতি ক্ষেত্র হোক, আমি বলতে পারি যে আমার জনজাতি ভাই ও বোনেদের জীবন জলের মতো পবিত্র আর নতুন কুঁড়ির মতো সৌম্য হয়। এখানে দাহোদের অনেক পরিবারের সঙ্গে আর এই গোটা অঞ্চলেই আমি আমার জীবনের অনেক দীর্ঘ সময় কাটিয়েছি। আজ এখানে আবার আমার আপনাদের সবার সঙ্গে দেখা করার, আপনাদের দর্শন পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
এটাই কারণ যে আগে গুজরাটে, আর এখন গোটা দেশে আমি দেশের জনজাতি সমাজের কল্যাণে নানা প্রকল্প বাস্তবায়ণে নেতৃত্ব দিচ্ছি। বিশেষ করে, আমাদের জনজাতি বোন ও মায়েদের ছোট ছোট সমস্যাগুলি দূর করার মাধ্যমে আজ কেন্দ্রীয় সরকার, গুজরাট রাজ্য সরকার, এই ডবল ইঞ্জিনের সরকার একটি সেবাভাব নিয়ে কাজ করছে।
ভাই ও বোনেরা,
এই প্রক্রিয়ায় আজ দাহোদ এবং পঞ্চমার্গের উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত ২২ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করা হয়েছে। যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন আজ হয়েছে, সেগুলির মধ্যে একটি হল পানীয় জল সংক্রান্ত প্রকল্প, আর দ্বিতীয়টি দাহোদকে স্মার্ট সিটি করে তোলা নিয়ে একটি প্রকল্প। পানীয় জলের এই প্রকল্পটির মাধ্যমে দাহোদের চারপাশে কয়েকশ’ গ্রামের মা ও বোনেদের জীবন অনেক সহজ হয়ে উঠতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
এই গোটা এলাকার আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে যুক্ত আরও একটি বড় কাজ আজ শুরু হয়েছে। দাহোদ এখন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’রও একটি বড় কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে। দাসত্বের কালখণ্ডে এখানে স্টিম লোকোমোটিভের জন্য যে ওয়ার্কশপ গড়ে উঠেছিল, সেটিই এখন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’কে গতি প্রদান করবে। এখন দাহোদের পরেলে ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে একটি কারখানা চালু হতে চলেছে।
আগে আমি যখনই দাহোদে আসতাম, তখন সন্ধ্যায় পরেলের সেই সার্ভেন্টস কোয়ার্টারগুলিতে যাওয়ার সৌভাগ্য হত, আর আমার এই ছোট ছোট পাহাড়ের মাঝে পরেল এলাকা খুব ভালো লাগত। সেখানে গেলে আমি প্রকৃতির সঙ্গে বাঁচার সুযোগ পেতাম। কিন্তু মনে একটা ব্যথা থাকত। আমি নিজের চোখের সামনে দেখতাম যে ধীরে ধীরে আমাদের রেলওয়ের যত এলাকা, আমাদের এই পরেল অঞ্চলটি ক্রমে নিষ্প্রাণ হয়ে উঠছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হয়ে ওঠার পর আমার স্বপ্ন ছিল যে আমি আরও একবার এই নিষ্প্রাণপ্রায় এলাকাকে জীবিত করে তুলব, এখানে প্রাণ সঞ্চার করব, এই এলাকাটিকে অনেক সুন্দর করে তুলব, আর আজ আমার এই স্বপ্ন পূর্ণ হতে চলেছে। আমার দাহোদে আজ ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে। এই গোটা জনজাতি ক্ষেত্রের জন্য এত বড় বিনিয়োগ এই এলাকায় হাজার হাজার নবীন প্রজন্মের মানুষের কর্মসংস্থানকে সুনিশ্চিত করবে।
আজ ভারতীয় রেল আধুনিক হয়ে উঠছে। রেলে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। মালগাড়িগুলির জন্য এখন স্বতন্ত্র রেলপথ তৈরি করা হচ্ছে। ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর গড়ে তোলা হচ্ছে। এই রেলপথ দিয়ে যাতে দ্রুতগতিতে মালগাড়িগুলি যেতে পারে, সারা দেশে যাতে পণ্য পরিবহণের গতি বাড়ে, সুলভ হয়, সেজন্য গোটা দেশে, দেশে তৈরি লোকোমোটিভ উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই ইলেক্ট্রিক লোকোমোটিভের চাহিদা বিদেশেও বাড়ছে। এই চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রেও দাহোদ অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস। আজ আমার দাহোদের নবীন প্রজন্ম, আপনারা যখনই এই এলাকার বাইরে বা রাজ্যের বাইরে অথবা বিশ্বের অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ পাবেন, তখন কোথাও না কোথাও দেখতে পাবেন যে আপনাদের দাহোদে নির্মিত লোকোমোটিভ বিশ্বের কোন কোন দেশে ছুটছে। যখন সেগুলি দেখতে পাবেন, তখন আপনাদের মনে কতো যে আনন্দ হবে – তা ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়।
ভারত এখন বিশ্বের সেই হাতেগোণা দেশগুলির অন্যতম, যে দেশগুলি ৯ হাজার হর্স পাওয়ারের শক্তিশালী লোকো নির্মাণে সক্ষম ও যে দেশগুলিতে এই ধরনের লোকো উৎপাদিত হয়। এই নতুন নির্মীয়মান কারখানায় হাজার হাজার নবীন প্রজন্মের মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তাছাড়া এর চারপাশে নতুন ব্যবসা বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়বে। আপনারা কল্পনা করতে পারেন, এখানে একটি নতুন দাহোদ গড়ে উঠবে। কখনও কখনও তো মনে হয় এখন আমাদের দাহোদ বরোদার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য পরিশ্রম করে নিজেদের উন্নয়নের স্বার্থে কাজকরে চলেছে।
আপনাদের এই উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখে আমার মনে হচ্ছে, বন্ধুগণ, আমি আমার জীবনের অনেক দশক দাহোদে কাটিয়েছি। একটা সময় ছিল যখন আমি স্কুটারে আসতাম, কিংবা বাসে আসতাম। তখন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এখানে অনেক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছি, অনেক কর্মসূচির আয়োজন করেছি, অনেক কর্মসূচিতে অতিথি হয়ে এসেছি। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও এখানে অনেক কর্মসূচির পৌরোহিত্য করেছি। কিন্তু আজ আমার গর্ব হচ্ছে যে আমি যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখনও আমি এত বড় কোনও কর্মসূচি করতে পারিনি। আজ গুজরাটের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র ভাই প্যাটেল এই অসাধারণ কাজটি করে দেখিয়েছেন যা অতীতে কেউ দেখেনি। এত বড় জনসমুদ্র আজ আমার সামনে কল্লোলিত। আমি ভূপেন্দ্র ভাই প্যাটেলজিকে, সি আর পাটিলজিকে আর তাঁদের গোটা টিমকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
ভাই ও বোনেরা,
প্রগতির পথে একটি বিষয় সুনিশ্চিতভাবেই ঠিক। আমরা যতটা উন্নয়ন করতে চাই, ততটা করতে পারি। কিন্তু আমাদের প্রগতির পথে আমাদের মা ও বোনেরা যেন পিছিয়ে না থেকে যান। মা ও বোনেরাও যাতে আমাদের উন্নয়নে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমানভাবে এগিয়ে যেতে পারেন তা দেখতে হবে। সেজন্য আমার প্রতিটি প্রকল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন আমার মা ও বোনেরা। তাঁদের শুভেচ্ছা, তাঁদের শক্তিকে এই উন্নয়নের প্রাণশক্তি করে তুলতে চাই, তাঁদেরকেই কেন্দ্রে রাখতে চাই। আমাদের এখানে যখন পানীয় জলের সমস্যা ছিল, তখন সবচাইতে বেশি কষ্ট মা ও বোনেদেরই ছিল। সেজন্য আমি শপথ গ্রহণ করেছি যে গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দিতে হবে। প্রত্যেক পরিবারে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দিতে হবে, আর দেখবেন, অল্প সময়ের মধ্যেই মা ও বোনেদের আশীর্বাদে সারা দেশের সমস্ত গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ আমরা সম্পূর্ণ করতে চলেছি। আপনাদের বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছবে, তবেই তো আপনাদের মতো ‘পানীদার’ বা জল সমৃদ্ধ মানুষদের জল প্রদানের মাধ্যমে সেবা করার সৌভাগ্য আমার হবে। আমরা বিগত আড়াই বছরে ৬ কোটিরও বেশি পরিবারকে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দিতে পেরেছি। গুজরাটেও আমাদের জনজাতি পরিবারগুলির মধ্যে ৫ লক্ষ পরিবারের রান্নাঘরে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দিয়েছি। আগামীদিনে এখানে এই কাজ আরও দ্রুতগতিতে এগোতে চলেছে।
ভাই ও বোনেরা,
করোনার সঙ্কটকাল এসেছে। প্রায় দুই বছর ধরে একের পের এক করোনার ঢেঊ এসেছে। আমরা লড়াই করে একে বারবার প্রতিহত করেছি। এখনও কিন্তু করোনা পুরোপুরি যায়নি। এর মধ্যে বিশ্বে এখন যুদ্ধের খবর, যুদ্ধের নানা ঘটনা। করোনা সমস্যাই আমাদের জীবনকে ব্যতিব্যস্ত করার জন্যে কম ছিল না, তার ওপর এই নতুন সমস্যা, নতুন বিপদ। এই সমস্ত কিছু সত্ত্বেও বিশ্বের সামনে আমাদের দেশ ভারত ধৈর্য্য সহকারে সমস্ত বিপদের মাঝে, সমস্ত অনিশ্চয়তার মাঝেও সতর্কভাবে এগিয়ে চলেছে, আর কঠিন দিনগুলিতেও সরকার গরীবদের ভুলে যাওয়ার কোনও চেষ্টাকে সফল হতে দেয়নি। আমার জন্য গরীব মানুষ, আমার জনজাতির মানুষেরা, আমার দলিত মানুষেরা, আমার ওবিসি সমাজের জনগণ আর সমাজের অন্তিম প্রান্তে থাকা মানুষদের সুখ ও তাঁদের অন্যান্য সুবিধার গুরুত্ব অপরিসীম, তাঁদের কথা সব সময় মাথায় রেখে সব কাজ করতে হচ্ছে। সেজন্য যখন শহরগুলিতে তাঁরা আটকে পড়েছিলেন, দেশের বিভিন্ন শহরে কর্মরত আমাদের দাহোদের জনগণ সড়ক নির্মাণের অনেক করতেন, সবার আগে এই কাজই বন্ধ হয়েছিল। এই কাজ ছেড়ে তাঁরা যখন বাড়ি ফিরতে বাধ্য হলেন, তখন গরীবের ঘরে উনুন কিভাবে জ্বলবে সেসব ভেবে ঘুম আসত না। কিন্তু আজ প্রায় দু’বছর হতে চলেছে। দেশের প্রত্যেক গরীবের বাড়িতে কেন্দ্রীয় সরকার বিনামূল্যে শস্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে। ৮০ কোটিরও বেশি মানুষকে দু’বছর ধরে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পৌঁছে দিয়ে বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশের পরাক্রমকে আমরা হার মানিয়েছি।
আমরা স্বপ্ন দেখেছি যে আমাদের গরীব জনজাতির মানুষেরা যাতে নিজেদের জন্য পাকা বাড়ি পান, তাঁরা যাতে শৌচালয় পান, তাঁরা যাতে বিদ্যুৎ পান, তাঁরা যাতে পানীয় জল পান, তাঁরা যেন বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ পান, তাঁদের গ্রামের পাশেই যেন ভালো ওয়েলনেস সেন্টার থাকে, হাসপাতাল থাকে, তাঁরা যেন ১০৮টি পরিষেবা পান, তাঁদের ছেলেমেয়েরা যেন পড়াশোনার জন্য ভালো স্কুল পায়, গ্রামে যাওয়ার জন্য যেন ভালো সড়কপথ থাকে – এই সকল চিন্তা একসঙ্গে আজ গুজরাটের গ্রাম পর্যন্ত যেন পৌঁছয়, তা সুনিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। সেজন্য এখন একেকটি অভিনব পদক্ষেপকে এগিয়ে নিয়ে চলেছি আমরা।
অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক থেকে শুরু করে আরও অনেক পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। এখন যখন আপনাদের মধ্যে প্রায়ই কেন্দ্রীয় সরকারের এবং গুজরাট সরকারের ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগী ভাই ও বোনেরা আসেন, তাঁদের সঙ্গে বসি, তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা শুনি। আমার জন্য এসব অত্যন্ত আনন্দের অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে। এত বেশি আনন্দ পাই যে আমি শব্দে বর্ণনা করতে পারব না। আমার খুব আনন্দ হয় যখন পঞ্চম, সপ্তম শ্রেণীতে পড়া আমার বোনেরা, স্কুলে পা না রাখা আমার মা ও বোনেরা যখন এমনটি বলেন যে আমরা আজ রাসায়নিক সার থেকে মুক্ত হতে চাই, আমাদের ধরিত্রী মা-কে রাসায়নিক মুক্ত করতে পারি, এই সঙ্কল্প নিয়েছি। আমরা জৈব চাষ করছি, আর আমাদের সব্জি আমেদাবাদের বাজারে বিক্রি হচ্ছে, আর দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। আমার সঙ্গে আমার জনজাতি গ্রামগুলির মা ও বোনেরা যখন কথা বলছিলেন, তখন তাঁদের চোখে আমি একটি ভিন্ন ধরনের চমক দেখতে পাচ্ছিলাম। একটা সময় ছিল যখন আমার মনে আছে, আমাদের দাহোদের ফুলওয়ারি বা ফুলের চাষ খুব জনপ্রিয় হয়েছিল, আর আমার মনে আছে সেই সময় এখানকার ফুল মুম্বাই পর্যন্ত যেত। সেখানকার মা ও বোনেদের শরীরে, ঈশ্বরের চরণে আমাদের দাহোদের ফুল অর্পিত হত। এই সব ফুলওয়ারি কৃষকরা এখন জৈব চাষের দিকে ঝুঁকছেন, আর যখন জনজাতি ভাই ও বোনেদের মধ্যে এত বড় পরিবর্তন আসে, তখন আপনাদের বুঝে নিতে হবে অন্যান্যদেরও এই পথে টেনে আনতে হবে। জনজাতি ভাই ও বোনেরা যা শুরু করেন, তা একদিন সবাইকেই করতে হয়, আর আমাদের দাহোদ এটা করে দেখিয়েছে।
আজ আমার এক দিব্যাঙ্গ দম্পতির সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে, আর আমার খুব অবাক লেগেছে যে সরকার হাজার হাজার টাকা সাহায্য করেছে, তাঁরা কমন সার্ভিস সেন্টার চালু করেছেন, কিন্তু তাঁরা সেখানেই আটকে থাকেননি। তাঁরা আমাকে বলেছেন যে সাহেব, আমরা দিব্যাঙ্গ, আপনারা আমাদের এত সাহায্য করেছেন যে আমরা কৃতজ্ঞ! কিন্তু আমরা ঠিক করেছি, আমাদের গ্রামের অন্য দিব্যাঙ্গদের আমরা পরিষেবা দেব আর সেজন্য আমরা তাঁদের কাছ থেকে এক টাকাও নেব না। তাঁদের এই সিদ্ধান্তের জন্য আমি এই দম্পতিকে সেলাম জানাই। ভাই ও বোনেরা, আমার জনজাতি পরিবারের মানুষদের শিষ্টাচার দেখুন। তাঁদের এই শিষ্টাচার থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। আমাদের ‘বনবন্ধু কল্যাণ যোজনা’ জনজাতীয় পরিবারগুলির জন্য আপনারা যেভাবে চিন্তাভাবনা করেন, আপনাদের দক্ষিণ গুজরাটে বিশেষ করে, সিকলসেল নামক রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। রাজ্যে এত সরকার এসেছে, গেছে; সবাই সিকলসেলের জন্য চিন্তা করেছে, কিন্তু এর জন্য যে মৌলিক পরিশ্রম প্রয়োজন - সেই কাজ প্রথমবার আমরাই করেছি। ফলে আজ রাজ্যে সিকলসেল প্রতিরোধে বড় মাত্রায় কাজ চলছে। আমি আজ এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমার প্রিয় জনজাতি পরিবারগুলিকে আশ্বস্ত করতে চাই যে বিজ্ঞান অবশ্যই আমাদের সাহায্য করবে। বৈজ্ঞানিকরা নিয়মিত গবেষণা করছেন, আর অনেক বছর ধরে এই ধরনের সিকলসেল রোগের কারণে আমাদের জনজাতি ছেলে-মেয়েদের যে কষ্ট সহ্য করতে হয়, সেই কষ্ট থেকে তাদেরকে বের করে আনার জন্য আমরা যথাসাধ্য পরিশ্রম করছি।
ভাই ও বোনেরা,
এখন সারা দেশে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালিত হচ্ছে। স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পূর্তি উৎসব পালিত হচ্ছে। কিন্তু এ দেশের দুর্ভাগ্য যে সাতটি দশক পেরিয়ে গেছে তবুও স্বাধীনতার জন্য যে আসল সংগ্রামী মানুষেরা ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে ইতিহাস লুকোচুরি খেলেছে। তাঁদের যে অধিকার পাওয়া উচিৎ ছিল সেটা তাঁরা পাননি। আমি যখন গুজরাটের দায়িত্বে ছিলাম তখন এর জন্য বারবার আওয়াজ তুলেছিলাম। আপনারা তো ২০-২২ বছর বয়সে শহিদ হওয়া ভগবান বিরসা মুন্ডার কথা জানেন। আমার প্রিয় জনজাতির ভাই ও বোনেরা, ভগবান বিরসা মুন্ডা ১৮৫৭-র স্বাধীনতার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে ইংরেজদের বুকে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন। আর তাঁকেই সবাই ভুলে গেছিল। আমরা শাসন ক্ষমতায় এসে ঝাড়খণ্ডে ভগবান বিরসা মুন্ডার নামে একটি অনিন্দ্যসুন্দর মিউজিয়াম তৈরি করেছি।
ভাই ও বোনেরা,
দাহোদের ভাই ও বোনেদের কাছে আমার অনুরোধ, বিশেষ করে শিক্ষা ও শিক্ষণ জগতের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা হয়তো জানেন, আপনারা ১৫ই আগস্ট, ২৬শে জানুয়ারি, পয়লা মে তারিখে ভিন্ন ভিন্ন জেলায় উৎসব পালন করেন। একবার যখন দাহোদে উৎসব ছিল তখন দাহোদের মধ্যে দাহোদের জনজাতি ভাই ও বোনেদের নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন? কে তাঁদের সকলকে পরিচালনা করেছিলেন? আমাদের দেবগড় বারিয়ায় ২২ দিন ধরে জনজাতি মানুষেরা যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন, আমাদের মানগড় পর্বত শৃঙ্খলায় আমাদের জনজাতি ভাই ও বোনেরা ইংরেজ সৈন্যদের অনেক সমস্যায় ফেলেছিলেন। এজন্যই আমরা গোবিন্দ গুরুকে ভুলতে পারি না। আমরা সরকারে এসে মানগড়ে গোবিন্দ গুরুর স্মারক নির্মাণ করেছি। গোবিন্দগুরু ও তাঁর অনুগামী আদিবাসী ভাইবোনেদের আত্মবলিদানকে স্মরণ করার কাজ আমাদের সরকার করেছে। আজ আমি দেশবাসীকে একটি কথা বলতে চাই, আর সেজন্য দাহোদের স্কুলগুলিকে, দাহোদের শিক্ষকদেরকে অনুরোধ জানাচ্ছি যে ১৮৫৭-র স্বাধীনতা সংগ্রামে দেবগড় বারিয়া, লিমখেড়া, লিমডি, দাহোদ, সন্তরামপুর, ঝালোদ – এরকম অনেক জায়গায় জনজাতি মানুষেরা তীর-ধনুক হাতে নিয়ে ইংরেজদের সামনে যুদ্ধ অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ইতিহাসে এটা লেখা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকের ফাঁসি হয়েছে। দুঃখের বিষয়, ইংরেজরা যে ধরণের হত্যাকান্ড পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালা বাগ-এ করেছিল, একই ধরনের হত্যাকান্ড আমাদের এই জনজাতি এলাকাগুলিতেও হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস সবকিছু ভুলিয়ে দিয়েছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সমস্ত বিষয়গুলি তুলে ধরতে পারলে আমাদের জনজাতি ভাই ও বোনেরা অনেক প্রেরণা পাবেন। শহরে বসবাসকারী নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা প্রেরণা পাবে। সেজন্য আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, এই সমস্ত বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করে নাটক লিখুন, এগুলি নিয়ে গান লিখুন, সুর দিন, ছাত্রছাত্রীদের শেখান। এই নাটকগুলি স্কুলে কলেজে মঞ্চস্থ করা হোক। তবেই সেই সময়কার ঘটনাগুলি আজকের ছেলে-মেয়েদের মনে তাজা হয়ে উঠবে। তবেই গোবিন্দ গুরুজির আত্মবলিদানের কথা সবাই স্মরণ করবে। গোবিন্দ গুরুজির যে শক্তি ছিল, আমাদের জনজাতি সমাজের মানুষ তাঁকে সেজন্যই তো পুজো করে। কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানুষেরাও যাতে তাঁর সম্পর্কে জানতে পারে, সেজন্য আমাদের চেষ্টা করা উচিৎ।
ভাই ও বোনেরা,
আমাদের জনজাতীয় সমাজে আগে কোনও বিজ্ঞানের স্কুল ছিল না। আমার মনে স্বপ্ন ছিল যে, আমাদের জনজাতির ছেলে-মেয়েরা একদিন ডাক্তার হবে, নার্স হবে। যখন আমি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিই, তখন ওমরগাঁও-এ অম্বাজির সন্নিকটস্থ জনজাতি এলাকাগুলিতে স্কুল থাকলেও সেগুলিতে বিজ্ঞান পড়ানো হত না। স্কুলে যদি বিজ্ঞান না থাকে, তাহলে আমাদের জনজাতির ছেলে-মেয়েরা কিভাবে ইঞ্জিনিয়ার হবে? কিভাবে ডাক্তার হবে? সেজন্য আমি এই এলাকার স্কুলগুলিতে বিজ্ঞান পঠনপাঠনের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিই। এই এলাকার স্কুলগুলিতে বিজ্ঞান পড়ানো শুরু হয়। আমি ঠিক করি, যে যে জনজাতি এলাকায় কমপক্ষে প্রত্যেক তহশিলে একটি করে স্কুলে বিজ্ঞান পড়ানোর ব্যবস্থা রাখব। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এখন এই জনজাতি জেলাগুলিতে মেডিকেল কলেজ গড়ে উঠেছে, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হয়েছে, নার্সিং কলেজ হয়েছে, আর আমার জনজাতি পরিবারের ছেলে-মেয়েরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য পরিশ্রম করছেন। এখান থেকে পাশ করে অনেক ছেলে-মেয়ে বিদেশে প্র্যাক্টিস করতে গেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ প্রকল্পে ছাত্রবৃত্তি নিয়ে বিদেশে পড়তে গেছেন। ভাই ও বোনেরা, উন্নয়নের দিশা কেমন হওয়া উচিৎ সেই দিশা আমরা দেখিয়েছি, আর সেই পথে আমরা নিজেরাও এগিয়ে চলেছি। আজ সারা দেশে ৭৫০টির মতো একলব্য মডেল স্কুল রয়েছে। অর্থাৎ, প্রায় প্রত্যেক জেলায় একটি করে একলব্য মডেল স্কুল রয়েছে। আর এগুলির মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজ করে চলেছে। আমাদের জনজাতি সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েদের জন্য একলব্য স্কুলগুলির মধ্যে অত্যাধুনিক শিক্ষণ ব্যবস্থা কিভাবে চালু করা যায় তা নিয়েও আমরা চিন্তাভাবনা করছি।
স্বাধীনতার পর এত বছরে সারা দেশে মাত্র ১৮টি ট্রাইবাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট গড়ে উঠেছে। সাত দশকে মাত্র ১৮টি। আমার আদিবাসী ভাই ও বোনেরা, আমাকে আশীর্বাদ দিন। আমি সাত বছরে আরও নয়টি ট্রাইবাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট গড়ে তুলেছি। কিভাবে উন্নয়ন হয় আর কত বড় মাত্রায় উন্নয়ন হয়, এটা তার উদাহরণ। প্রগতি কিভাবে হবে, আমরা তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছি, আর সেজন্য আমি আরও একটি কাজ কাঁধে নিয়েছি। সেই সময়েও আমি মনে রেখেছি যে আমি জীবনের একটি বড় সময় গরীব জনগণের মধ্যে বাঁচতাম, সাধারণ মানুষের মধ্যে বাঁচতাম। সেজন্য আমার ছোট ছোট বিষয়গুলি মনে ছিল। এখানে ১০৮ এলাকায় পরিষেবা প্রদানের জন্য আমি দাহোদে এসেছিলাম। তখন আমার সঙ্গে কয়েকজন বোনের দেখা হয়েছিল। তাঁদেরকে আমি চিনতাম। এখানে এলে তাঁদের বাড়িতে খাবার খেয়ে যেতাম। তখন সেই বোনেরা আমাকে বলেছিলেন যে সাহেব, এই ১০৮-এ আপনি একটি কাজ করুন। আমি জিজ্ঞাসা করি, কী করব! তখন তাঁরা বলেন যে আমাদের এখানে সাপের কামড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। সাপে কামড়ালে আমরা যতক্ষণে তাঁদের ১০৮-এ নিয়ে যাই, ততক্ষণে বিষ মাথায় চড়ে যায়, আর আমাদের পরিবারের মানুষের সর্প দংশনে মৃত্যু হয়ে যায়। দক্ষিণ গুজরাটেও এই সমস্যা রয়েছে। মধ্য গুজরাট, উত্তর গুজরাটেও এই সমস্যা রয়েছে। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই যে ১০৮-এ সাপে কামড়ালে যাতে দ্রুত ইঞ্জেকশন দেওয়া যায়, আর সর্প দংশনে আক্রান্ত সাধারণ মানুষকে যাতে বাঁচানো যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে। সেই চেষ্টায় অনেকটাই সফল হই। আজও ১০৮-এ এই পরিষেবা চালু রয়েছে।
এখন আমি পশুপালন কিছু কথা বলব। আজ আমাদের পঞ্চমহালে ডেয়ারি ফার্মের গুঞ্জরন শোনা যায়। আজএর অনেক নাম হয়েছে। কিন্তু আগে কেউ চিনত না। উন্নয়নের ফলে গুজরাট সমস্ত ক্ষেত্রে এখন এগিয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি যে গুজরাটের প্রায় প্রত্যেক গ্রামে এখন ‘সখী মহল’ চলছে। ‘সখী মহল’-এ বোনেরা নিজেরাই তাঁদের কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দেন, আর তাঁদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আমার শত শত, হাজার হাজার জনজাতির কুটুম্বরা উপকৃত হচ্ছেন। একদিকে আর্থিক প্রগতি, অন্যদিকে আধুনিক কৃষি, তৃতীয় দিকে নিজস্ব বাড়ি, জীবনের নানা সুখ-সুবিধা, যেমন নলের মাধ্যমে পানীয় জল, মাথার ওপর ছাদ, বাড়িতে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ, প্রত্যেক বাড়িতে শৌচালয় – এরকম ছোট ছোট অনেক কিছু, আর প্রত্যেক বাড়ির ছেলে-মেয়েরা যাতে পড়াশোনা করতে পারে, যতটা চায় ততটা পড়তে পারে, সেরকম ব্যবস্থা। এ ধরনের চতুর্মুখী উন্নয়নের কাজ আমরা যখন করছি, এই প্রেক্ষিতে আজ যখন দাহোদ জেলাকে আমি সম্বোধন করছি তখন, আর যখন ওমরগাঁও থেকে অম্বাজি পর্যন্ত আমার সমস্ত জনজাতির নেতারা মঞ্চে বসে রয়েছেন, সমস্ত ‘আগেওয়ান’রা এখানে হাজির রয়েছেন, তখন আমার একটি ইচ্ছার কথা আমি উচ্চারণ করব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমারএই ইচ্ছা আপনারা সবাই মিলে পূরণ করবেন। করবেন তো? একটু হাত ওপরে তুলে আমাকে আশ্বস্ত করুন। ঠিক করবেন তো! সত্যি করবেন তো! এই ক্যামেরায় সবকিছু রেকর্ড হচ্ছে। আমি আবার খোঁজখবর নেব। সবাই করবেন তো! আমি জানি আপনারা করবেন। আপনারা কখনও আমাকে নিরাশ করেননি। আর আমার জনজাতির ভাই ও বোনেরা একবার যদি বলে দেন যে, আমরা করব, তাহলে আমি জানি যে তাঁরা করেই ছাড়েন। আমরা এখন স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পূর্তি পালন করছি। তখন আমাদের প্রত্যেক জেলায় জনজাতি বিস্তার যেখানে যেখানে রয়েছে, সেখানে কী আমরা ৭৫টি বড় পুকুর খনন করে পারি? এখন থেকে যদি কাজ শুরু করি, আর প্রত্যেক জেলায় ৭৫টি করে পুকুর যদি খনন করি, তাহলে এবার যখন বর্ষা আসবে তার জল সেই পুকুরগুলিতে ভরবে। এমন সঙ্কল্প নিয়ে যদি কাজ করি, তাহলে আমাদের অম্বাজি থেকে ওমরগাঁও পর্যন্ত গোটা এলাকার মাটি ‘পানীদার’ বা জলসিক্ত হয়ে উঠবে। তার সঙ্গে এখানকার জীবনও ‘পানীদার’বা জলসমৃদ্ধ হবে। সেজন্য স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে নিজেদেরকে ‘পানীদার’ করে তোলার জন্য আপনাদের ‘জল উৎসব’ পালন করতে হবে। আর সেই জলের জন্য পুকুর খনন করে আপনাদের জেলাকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। আমাদের এই যে অমৃতকাল, স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পূর্তি, স্বাধীনতার শতবর্ষের মধ্যে যে ২৫ বছর সময়, সেটাকেই আমি অমৃতকাল বলছি। আজ যাঁরা ১৮-২০ বছর বয়সী যুবক-যুবতী, তাঁরা সেই সময় সমাজে নেতৃত্ব দেবেন। তাঁরা যে যেখানেই থাকুন না কেন, সেখানেই তাঁরা নেতৃত্ব দেবেন। তখন আমাদের দেশকে তেমন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য এখন থেকেই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, এটাই সেই সময়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আমার জনজাতি ভাই ও বোনেরা সেই কাজে কোনভাবেই পিছিয়ে থাকবেন না। আমার গুজরাট কখনও পিছিয়ে পড়বে না। এটা আমার পূর্ণ বিশ্বাস।
আজ এখানে আপনারা এত বিপুল সংখ্যায় এসেছেন, আমাদেরকে আশীর্বাদ দিয়েছেন, মান-সম্মান করেছেন, আমি তো আপনাদের বাড়ির মানুষ, ঘরের মানুষ, আপনাদের মধ্যেইএকদিন বড় হয়ে উঠেছি। অনেক কিছু আপনাদের কাছে শিখেছি, জীবনে এগিয়েছি। আপনাদের কাছে আমি নানাভাবে ঋণী। আর সেজন্য যখনই আপনাদের ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাই, তখন তা কখনই হাতছাড়া হতে দিই না। আমার যতটা ক্ষমতা তা দিয়ে ঋণ পরিশোধের আপ্রাণ চেষ্টা করি। আরও একবার আমাদের জনজাতি সমাজ থেকে উঠে আসা সমস্ত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সাদর শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি, তাঁদেরকে প্রণাম জানাচ্ছি । ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমার অনুরোধ, তাঁরা যেন ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে আসে, এই অনুরোধ রেখে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
আমার সঙ্গে সমস্বরে বলুন, দু’হাত উপরে তুলে বলুন –
ভারতমাতা কী জয়!
ভারতমাতা কী জয়!
ভারতমাতা কী জয়!
অনেক অনেক ধন্যবাদ!