Centre has worked extensively in developing all energy related projects in Bihar: PM Modi
New India and new Bihar believes in fast-paced development, says PM Modi
Bihar's contribution to India in every sector is clearly visible. Bihar has assisted India in its growth: PM Modi

অনুষ্ঠানের শুরুতে আপনাদেরকে একটি দুঃখের খবর জানাচ্ছি। বিহারের শ্রদ্ধেয় নেতা রঘুবংশ প্রসাদ সিং আর আমাদের মধ্যে নেই। আমি তাঁকে প্রণাম জানাই। রঘুবংশ বাবুর প্রয়াণে বিহার ও দেশের রাজনীতিতে শূন্যতা সৃষ্টি হ’ল। মাটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষ, জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব, দারিদ্র্যকে যিনি খুব ভালোভাবে বুঝতেন, অনুভব করতেন, সারা জীবন ধরে এই দরিদ্র মানুষের জন্য, বিহারের জন্য লড়াই করে কাটিয়েছেন, তিনি যে বিচারধারায় বিশ্বাস করতেন, সারা জীবন সেই আদর্শকেই অনুসরণ করে গেছেন।

 

আমি যখন ভারতীয় জনতা পার্টির সংগঠনের কর্মকর্তা রূপে কাজ করতাম, সেই সময় তাঁর সঙ্গে আমার অনেক ঘনিষ্ঠ পরিচয় ছিল, অনেক টিভি বক্তৃতায়ও আমরা পরস্পরের বিরুদ্ধে অনেক তর্ক-বিতর্ক এবং মতবিনিময় করেছি। পরবর্তী সময়ে তিনি যখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন, তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর সঙ্গে আমার নিয়মিত সম্পর্ক ছিল। উন্নয়নের নানা বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে কথাবার্তা হ’ত। গত ৩-৪ দিন ধরে তাঁকে নিয়ে সারা দেশে দুশ্চিন্তার আবহ গড়ে উঠেছিল। আমিও দুশ্চিন্তায় ছিলাম। নিয়মিত তাঁর স্বাস্থ্যের খবর নিয়েছি। আমার মনে হচ্ছিল, তিনি হয়তো দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে আবার বিহারের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়বেন। কিন্তু, তার মধ্যে একটা অন্যরকম ভাবনাচিন্তার মন্থন চলছিল।

 

যে আদর্শ নিয়ে তিনি সারা জীবন লড়াই করেছেন, যাঁদের সঙ্গে নিয়ে লড়াই করেছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর আর এগিয়ে চলা সম্ভব ছিল না। তাঁর মনের মধ্যে ভীষণভাবে যুদ্ধ চলছিল। আর ৩-৪ দিন আগে তিনি নিজের ভাবনা চিঠিতে লিখে জানিয়েও দিয়েছিলেন। পাশাপাশি, তাঁর মনে নিজের এলাকা উন্নয়নের জন্যও ততটাই চিন্তা ছিল, সেজন্য তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রীজীকে নিজের এলাকার উন্নয়নের জন্য একটি কাজের তালিকা পাঠিয়েছিলেন। বিহারের মানুষের জন্য চিন্তা, বিহারের উন্নয়নের জন্য চিন্তা, সেই চিঠিতে ফুটে উঠেছিল।

 

আমি নীতিশজীকে অনুরোধ করবো, রঘুবংশ প্রসাদজী তাঁর শেষ চিঠিতে যেসব ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, সেগুলি বাস্তবায়িত করতে আপনি এবং আমি দু’জনে মিলে প্রাণপনে চেষ্টা করবো। তিনি যে ধরনের উন্নয়নের কথা লিখে গেছেন, তা আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো – অবশ্যই করতে হবে। আমি আরেকবার আজকের কর্মসূচির গোড়াতেই শ্রদ্ধেয় রঘুবংশ সিং প্রসাদজীকে সাদর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই, তাঁকে প্রণাম জানাই।

 

বিহারের রাজ্যপাল শ্রী ফাগু চৌহানজী, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নীতিশ কুমারজী, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহযোগী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানজী, শ্রী রবিশঙ্কর প্রসাদজী, শ্রী গিরিরাজ সিংজী, শ্রী আর কে সিংজী, শ্রী অশ্বিনী কুমার চৌবেজী, শ্রী নিত্যানন্দ রাইজী, বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সুশীল কুমার মোদীজী, অন্যান্য সাংসদ ও বিধায়কগণ আর প্রযুক্তির মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত হয়েছেন, যাঁরা দেখছেন – আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা!

 

আপনাদের সবাইকে প্রণাম জানাই। আজকের এই আয়োজন শহীদ অরু সূরবীরের মাটি বাঁকাতে আয়োজিত হচ্ছে। যে যে প্রকল্প আজ এখানে উদ্বোধন হচ্ছে, সেগুলি দ্বারা বিহারের পাশাপাশি, পূর্ব ভারতের বড় অংশের মানুষ উপকৃত হবেন। আজ ৯০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মিত যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন ও শিলান্যাস করা হ’ল তার মধ্যে রয়েছে –  ১টি এলপিজি পাইপলাইন এবং ২টো বড় বটলিং প্ল্যান্ট। এই সমস্ত পরিষেবার জন্য উন্নয়নের এই সমস্ত প্রকল্পের জন্য বিহারবাসীকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

 

বন্ধুগণ,

 

কয়েক বছর আগে যখন বিহারের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন সেখানে রাজ্যের পরিকাঠামো গঠনের ক্ষেত্রটিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, সেই প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হ’ল এই গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পের দুর্গাপুর বাঁকা সেকশন, যেটি আমি নিজে শিলান্যাস করেছিলাম। আজ আমার সেটি উদ্বোধন করার সৌভাগ্য হ’ল। দেড় বছর আগে শিলান্যাস করেছিলাম। আর আজ উদ্বোধন। এই সেকশনের দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ কিলোমিটার। আমাকে বলা হয়েছে, এই পথে পাইপলাইন পাতার কাজ সম্পূর্ণ করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল। এ পথে ১০টিরও বেশি নদী এবং অনেক কিলোমিটার ঘন জঙ্গল এবং পাথুরে জমিতে কাজ করা সহজ ছিল না। নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি, রাজ্য সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা আমাদের ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিক বন্ধুদের কঠিন পরিশ্রমের ফলেই এই প্রকল্প যথাসময়ে সম্পূর্ণ করা গেছে। সেজন্য এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত বন্ধুদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

বন্ধুগণ,

 

বিহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে যে যে প্যাকেজ দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে পেট্রোলিয়াম এবং গ্যাস সংক্রান্ত ১০টি বড় প্রকল্প ছিল। এই প্রকল্পগুলিতে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা খরচ করার কথা ছিল। এটি হ’ল সপ্তম প্রকল্প, যা আজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আর একে আজ আমরা বিহারের জনগণের প্রতি সমর্পণ করেছি। এর আগে পাটনায় এলপিজি প্ল্যান্টের বিস্তার এবং গুদামীকরণ ক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ থেকে শুরু করে পূর্ণিয়ায় এলপিজি প্ল্যান্টের বিস্তার, মুজফফরপুরে নতুন এলপিজি প্ল্যান্ট – এই সমস্ত প্রকল্প এর আগে সম্পূর্ণ হয়েছে।

 

জগদীশপুর-হলদিয়া পাইপলাইন প্রকল্পের যে অংশ বিহারের মধ্য দিয়ে গেছে, সেই অংশের কাজ গত বছর মার্চ মাসেই সমাপ্ত করা হয়েছে। মতিহারি-অমলেখগঞ্জ পাইপলাইন সংশ্লিষ্ট কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।

 

এখন দেশ ও বিহার সেই পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আসছে, যেখানে একটি প্রকল্পের এক  প্রজন্ম শুরু হতে দেখতো আর আরেক প্রজন্ম সম্পূর্ণ হতে দেখতো। নতুন ভারত নতুন বিহারের এই পরিচয় এই কর্মসংস্কৃতিকে আমাদের আরও শক্তিশালী করে তুলতে হবে। নিশ্চিতভাবেই এই কর্মসংস্কৃতি পরিবর্তনের কান্ডারী নীতিশজীকে ভবিষ্যতেও বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এভাবে নিরন্তর কাজের মাধ্যমে আমরা বিহার এবং পূর্ব ভারতকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে – ‘সামর্থ্য মূলং স্বাতন্ত্রম, শ্রম মূলং বৈভব’ অর্থাৎ ‘সামর্থ্য স্বতন্ত্রতার উৎস এবং শ্রম শক্তি যে কোনও দেশের উন্নয়নের ভিত্তি’। বিহার সহ পূর্ব ভারতের কোথাও সামর্থ্যের অভাব নেই। আর কখনও প্রাকৃতিক সম্পদেরও অভাব ছিল না। এ সত্ত্বেও বিহার এবং পূর্ব ভারত উন্নয়নের ক্ষেত্রে দশকের পর দশক ধরে পিছিয়ে ছিল। এর অনেক কারণ আছে। সেগুলি হ’ল – রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সরকারের অগ্রাধিকার।

 

এই সব পরিস্থিতির কারণেই বিহার তথা পূর্ব ভারতে পরিকাঠামো প্রকল্পগুলি সর্বদাই অন্তহীন শ্লথতার শিকার হয়েছে। একটা সময় ছিল, যখন সড়ক যোগাযোগ, রেল যোগাযোগ, বিমান যোগাযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ – এসব কিছু কারও অগ্রাধিকারের মধ্যেই ছিল না। শুধু তাই নয়, সড়কপথ নির্মাণের কথা বলা হলে জিজ্ঞেস করা হ’ত যে, এটা কি গাড়ি চলার যোগ্য হবে নাকি পায়ে চলার যোগ্য? অর্থাৎ ভাবনাচিন্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধতা ছিল। এহেন পরিপ্রেক্ষিতে গ্যাস-ভিত্তিক শিল্পোদ্যোগ এবং পেট্রো কানেক্টিভিটি সম্পর্কে তো বিহারের পুরনো মানুষেরা কল্পনাই করতে পারতেন না। ভূমি-বেষ্টিত রাজ্য হওয়ার ফলে বিহারে পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস-ভিত্তিক কারখানা ও সম্পদ গড়ে তোলা যাচ্ছিল না – যেমন সমুদ্রতটবর্তী রাজ্যগুলিতে হয়। সেজন্য বিহারে গ্যাস-ভিত্তিক শিল্পোদ্যোগ উন্নয়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।

 

বন্ধুগণ,

 

গ্যাস-ভিত্তিক শিল্পোদ্যোগ এবং পেট্রোল কানেক্টিভিটি, এগুলি শুনতে বড় টেকনিক্যাল শব্দ বলে মনে হয়। কিন্তু এগুলির সরাসরি প্রভাব মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নকে প্রভাবিত করে। গ্যাস-ভিত্তিক শিল্পোদ্যোগ এবং পেট্রো-কানেক্টিভিটি লক্ষ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও গড়ে তোলে।

 

আজ যখন দেশের অনেক শহরে সিএনজি এবং পিএনজি গ্যাস পৌঁছে যাচ্ছে, তখন বিহার তথা পূর্ব ভারতের জনগণও যাতে সহজেই এই সুযোগ-সুবিধাগুলি পেতে পারেন। একথা মাথায় রেখে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি।

 

প্রধানমন্ত্রী ঊর্জা গঙ্গা যোজনার মাধ্যমে পূর্ব ভারতকে পূর্ব সমুদ্রতটের পারাদ্বীপ ও পশ্চিমী সমুদ্রতটের কান্ডলা বন্দরের সঙ্গে যুক্ত করার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ৭টি রাজ্যকে যুক্ত করা হচ্ছে। এর মধ্যে বিহার অন্যতম। পারাদ্বীপ, হলদিয়া হয়ে পাইপলাইন এখন বাঁকা পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে। এই পাইপলাইনকে এরপর পাটনা হয়ে মুজফফরপুর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কান্ডলা থেকে যে পাইপলাইনটি আসছে, সেটির কাজ ইতিমধ্যেই গোরক্ষপুর পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে। সেটিকেও পারাদ্বীপ থেকে আসা পাইপলাইনের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। যখন এই সম্পূর্ণ প্রকল্প তৈরি হয়ে যাবে, তখন এটি বিশ্বের দীর্ঘতম পাইপলাইন প্রকল্পের অন্যতম হয়ে উঠবে।

 

বন্ধুগণ,

 

এই গ্যাস পাইপলাইনের ফলে এখন বিহারেই গ্যাস সিলিন্ডার ভরার জন্য বড় বড় বটলিং প্ল্যান্টস্‌ গড়ে উঠছে। বাঁকা এবং চম্পারণে এমনি দুটো বটলিং প্ল্যান্ট আজ উদ্বোধন করা হয়েছে। এই দুটো প্ল্যান্টে প্রতি বছর ১.২৫ কোটিরও বেশি সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার ক্ষমতা রয়েছে। এই প্ল্যান্টগুলির মাধ্যমে আপনাদের বিহারের বাঁকা, ভাগলপুর, জামুরি, আরারিয়া, কিষাণগঞ্জ, কাটিহার, পূর্ব ও পশ্চিম চম্পারণ, মুজফফরপুর, সিওয়ান, গোপালগঞ্জ, সীতামঢ়ী জেলার মানুষেরা উপকৃত হবেন। তেমনই ঝাড়খন্ডের গোড্ডা, দেওঘর, দুমকা, সাহিবগঞ্জ, পাকুড় জেলাগুলিতে এবং উত্তর প্রদেশের কিছু এলাকার এলপিজি-র প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হবে। এই গ্যাস পাইপলাইন পাতা থেকে শুরু করে এর মাধ্যমে যে নতুন শিল্পোদ্যোগগুলি প্রাণশক্তি পেয়েছে, তার মাধ্যমে বিহারে হাজার হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও অনেক কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ,

 

বারাউনিতে যে সার কারাখাটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেটি এখন এই গ্যাস পাইপলাইন চলে আসায় অতিশীঘ্রই কাজ করতে শুরু করবে। গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে এখানে একদিকে সার, পাওয়ার এবং ইস্পাত শিল্পে জ্বালানির প্রয়োজন মিটবে। তেমনই অন্যদিকে সিএনজি-ভিত্তিক পরিবেশ-বান্ধব যাতায়াত এবং  পাইপের মাধ্যমে সস্তায় গ্যাস আরও সহজে সাধারণ মানুষের রান্নাঘর পর্যন্ত পৌঁছবে।

 

এই পর্যায়ে আজ বিহার এবং ঝাড়খন্ডের অনেক জেলায় পাইপের মাধ্যমে সুলভে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। দেশের প্রতিটি পরিবার যদি এরকম পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানী এবং ধোঁয়াহীন রান্নাঘর পায়, তা হলে দেশে স্বচ্ছতা আন্দোলন আরও গতি পাবে।

 

বন্ধুগণ,

 

উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে আজ দেশের ৮টি গরিব পরিবারের রান্নাঘরে গ্যাস সংযোগ পৌঁছে গেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিবদের জীবনযাপনে কেমন পরিবর্তন এসেছে, তা আমরা সবাই এই করোনা সঙ্কটকালে খুব ভালোভাবে অনুভব করেছি। আপনারা কল্পনা করুন, যখন আমাদের বাড়িতে থাকা প্রয়োজন ছিল, তখন যদি এই ৮ কোটি পরিবারের বন্ধুরা, আমার বোনেরা শুকনো গাছের ডাল, কাঠের টুকরো কিংবা অন্য কোনও জ্বালানীর সন্ধানে বাইরে বেরোতে হ’ত, তা হলে কেমন অবস্থা হ’ত?

 

বন্ধুগণ,

 

এই করোনা সঙ্কটকালে উজ্জ্বলা যোজনা দ্বারা উপকৃত বোনেদের কোটি কোটি সিলিন্ডার বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। এর দ্বারা বিহারের লক্ষ লক্ষ বোনেরাও উপকৃত হয়েছেন। লক্ষ লক্ষ গরিব পরিবারের রান্নাঘরে বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ পৌঁছেছে। আমি পেট্রোলিয়াম ও গ্যাসের সঙ্গে যুক্ত বইভাগ ও কোম্পানিগুলির পাশাপাশি, সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত সেই লক্ষ লক্ষ বন্ধুদের, তাঁদের করোনার বিরুদ্ধে লড়াইকে প্রশংসা জানাই। তাঁরা আমাদের সেই বন্ধুরা, যাঁরা এই সঙ্কট সময়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি কখনও গ্যাসের অভাব অনুভূত হতে দেননি। আজও সংক্রমণের বিপদ থাকা সত্ত্বেও সিলিন্ডার সরবরাহের কাজ চলছে।

 

বন্ধুগণ,

 

একটা সময় ছিল, যখন সারা দেশে এবং বিহারে এলপিজি গ্যাস সংযোগ থাকলে তাঁদেরকে বড়লোক বলে মনে করা হত। প্রতিটি গ্যাস সংযোগের জন্য জনগণকে সুপারিশ যোগাড় করতে হ’ত। …… সাংসদ সাহেবদের বাড়িতে প্রায় প্রতিদিন কাতারে কাতারে লোক দাঁড়িয়ে থাকতেন। যাঁদের বাড়িতে গ্যাস সংযোগ থাকতো, তাঁদেরকে অনেক অভিজাত বড়লোক বলে মনে করা হ’ত। যাঁরা সমাজের প্রান্তিক মানুষ ছিলেন, বঞ্চিত, শোষিত, পিছিয়ে পড়া মানুষ ছিলেন, তাঁদেরকে কেউ পাত্তাই দিতেন না। তাঁদের দুঃখ-কষ্ট দেখেও অবহেলা করা হ’ত।

 

কিন্তু এখন বিহারে সমস্ত ধারণা বদলে গেছে। উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে বিহারে প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ গরিব পরিবার বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ পেয়েছেন। এখন তাঁরা নিজেদের রান্নার জন্য জ্বালানী কাঠ যোগাড় করার জায়গায় সেই সময় নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন।

বন্ধুগণ,

 

আমি যখন বলি, বিহার দেশের প্রতিভার পাওয়ার হাউস বা শক্তিকেন্দ্র – এটি কোনও অতিশয় উক্তি নয়। বিহারের যুবসম্প্রদায়ের এখনকার প্রতিভার প্রভাব সর্বত্র দেখা যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পদে বিহারের অসংখ্য সুসন্তান-সন্ততিরা রয়েছেন। যাঁরা দেশের সেবা করছেন, অন্যদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছেন।

 

আপনারা যে কোনও আইআইটি-তে চলে যান, সেখানেও বিহারের চমক দেখতে পাবেন। যে কোনও প্রতিষ্ঠানে চলে যান, চোখে বড় বড় স্বপ্ন নিয়ে, দেশের জন্য কিছু করার প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভরপুর বিহারের ছেলেমেয়েরা সবজায়গায় অন্যরকম কিছু না কিছু করছেন।

 

বিহারের কলা-সংস্কৃতি, এখানকার সঙ্গীত, এখনকার সুস্বাদু খাবার সারা দেশে এসবের অত্যন্ত চাহিদা রয়েছে, সারা দেশে এগুলি জনপ্রিয়। আপনারা অন্য যে কোনও রাজ্যে চলে যান, সর্বত্র বিহারের শক্তি, বিহারের শ্রমের ছাপ দেশের প্রত্যেক রাজ্যের উন্নয়নে আপনারা দেখতে পাবেন। বিহারের মানুষ সর্বদাই অন্যদের সাহায্য করার অনুভব রাখেন।

 

এটাই বিহার! এটাই বিহারের অদ্ভূত ক্ষমতা! সেজন্য এটা আমাদেরও কর্তব্য এবং আমি চাই, বিহারের এই ঋণ আমরা প্রত্যেকেই যেন বিহারকে সেবার করে শোধ করি। আমরা বিহারে এমন সুশাসন কায়েম করতে চাই, যা বিহারের অধিকার।

 

বন্ধুগণ,

 

বিগত ১৫ বছরে বিহার এটা করে দেখিয়েছে, যদি সঠিক সরকার থাকে, সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সুস্পষ্ট নীতি থাকে – তা হলে উন্নয়ন অবশ্যই হয়। আর এই উন্নয়নের সুফল দ্বারা প্রত্যেকেই উপকৃত হন। আমরা বিহারের প্রতিটি ক্ষেত্রের উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেক ক্ষেত্রের সমস্যাগুলির সমাধান করার চেষ্টা করছি, যাতে বিহার উন্নয়নের নতুন ডানা মেলে। ডানা মেলে এত উঁচুতে ওঠে, যতটা উচ্চ বিহারের সামর্থ্য।

 

বন্ধুগণ,

 

বিহারে অনেকেই বলেন, এই রাজ্যের যুবসম্প্রদায় লেখাপড়া শিখে কী করবে? তাঁদের তো ক্ষেতেই কাজ করতে হবে – এই ভাবনা প্রতিভাবান যুবসম্প্রদায়ের সঙ্গে অনেক অন্যায় করেছে। এই ভাবনার ফলে বিহারের বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। এই ভাবনার ফলেই বিহারের বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য তেমন চেষ্টাই করা হয়নি। ফলস্বরূপ, বিহারের নবীন প্রজন্ম বাইরে গিয়ে পড়াশুনা করতে, চাকরি করতে বাধ্য হন।

 

বন্ধুগণ,

 

চাষের ক্ষেত্রে কাজ করা, চাষবাস কৃষকদের অত্যন্ত পরিশ্রম এবং গৌরবের কাজ। কিন্তু যুবসম্প্রদায়কে দ্বিতীয় সুযোগ না দেওয়া, এ ধরনের অন্য কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া মোটেই ঠিক ছিল না। আজ বিহারে অনেক বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হচ্ছে। এখন এগ্রিকালচার কলেজ, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সংখ্যা বাড়ছে। এখন রাজ্যে আইআইটি, আইআইএম, আইআইআইটি গড়ে ওঠায় বিহারের নবীনদের স্বপ্নকে বাস্তবে ডানা মেলতে সাহায্য করছে।

 

নীতিশজীর শাসনকালে বিহারে ২টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ১টি আইআইটি ও ১টি আইআইএম, ১টি নিট, ১টি ন্যাশনাল ল ইন্সটিটিউট – এর মতো অনেক প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে। পলিটেকনিক কলেজের সংখ্যা আগের তুলনায় ৩ গুণেরও বেশি হয়েছে।

 

স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, মুদ্রা যোজনার মতো প্রকল্পের মাধ্যমে এই রাজ্যে নবীনদের স্বরোজগারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ যোগানো হয়েছে। সরকার প্রত্যেক জেলায় দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বিহারের নবীন প্রজন্মের দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দিতে চায়।

 

বন্ধুগণ,

 

বিহারে বিদ্যুতের অবস্থা কেমন ছিল, তা সারা দুনিয়া জানে। গ্রামে দিনে ২-৩ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকলে সবাই খুব খুশি হয়ে যেতেন। এমনকি, শহরের মানুষও দিনে ৮-১০ ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ পেতেন না। আজ বিহারের গ্রামে গ্রামে-শহরে শহরে বিদ্যুৎ আগের তুলনায় অনেক বেশিক্ষণ থাকে।

 

বন্ধুগণ,

 

পেট্রোলিয়াম, পাওয়ার ও গ্যাসের সঙ্গে যুক্ত ক্ষেত্রগুলিকে যে আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে, এই সংস্কার জনগণের জীবন সহজ করে তোলার পাশাপাশি, শিল্পোদ্যোগ ও অর্থনীতিকেও গতি পেতে সাহায্য করছে। করোনার এই সঙ্কটকালে আরেকবার পেট্রোলিয়াম সংশ্লিষ্ট পরিকাঠামোর কাজ ত্বরান্বিত হতে শুরু করেছে।

 

তৈল শোধনাগার থেকে শুরু করে উদ্ভাবন ও উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত প্রকল্পগুলি, পাইপলাইন, সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন প্রোজেক্ট – এরকম অনেক প্রকল্প নতুন করে চালু করা হচ্ছে। এরকম ৮ হাজারেরও বেশি প্রকল্প নির্মাণে আগামী দিনে ৬ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হবে। আপনারা চিন্তা করতে পারেন, বিহার তথা সারা দেশে গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে কত বড় মাত্রায় কাজ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পগুলিতে আগে যাঁরা কাজ করতেন, তাঁরাও ফিরে এসেছেন। ফলে, কর্মংস্থানের নতুন সুযোগ গড়ে তোলার সম্ভাবনা বাড়ছে।

 

বন্ধুগণ,

 

এত বড় বিশ্বব্যাপী মহামারী দেশের প্রত্যেক মানুষের জীবনে সঙ্কট নিয়ে এসেছে। কিন্তু এত সমস্যা সত্ত্বেও দেশ থেমে নেই, বিহার থেমে নেই। ১০০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মীয়মান ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার পাইপলাইন প্রোজেক্ট – এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক গতিবিধি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে। বিহার তথা পূর্ব ভারতে এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। বিশেষ করে মা ও বোনেদের জীবন অনেক সহজ হতে চলেছে। সেজন্য তাঁদেরকে বেশি করে শুভেচ্ছা জানাই।

 

মনে রাখবেন,  করোনা সংক্রমণ এখন আমাদের মধ্যে রয়েছে। সেজন্য বারবার বলি, যতদিন পর্যন্ত প্রতিষেধক বা ওষুধ না আসে, ততদিন পর্যন্ত সতর্ক থাকুন। সেজন্য দু গজের দূরত্ব, সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত পরিষ্কার করা, যেখানে-সেখানে থুথু না ফেলা, নাক-মুখ ঢেকে ফেসমাস্ক পরা – এই সমস্ত জরুরি নিয়ম আমাদের নিজেদেরকেও পালন করতে হবে। অন্যদেরকেও পালন করার কথা মনে করিয়ে দিতে হবে।

 

আপনারা সতর্ক থাকলে বিহার সুস্থ থাকবে, দেশও সুস্থ থাকবে। আমি আরেকবার আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক উপহার সহ বিহারের উন্নয়ন যাত্রায় নতুন জ্বালানীর এই সরবরাহ বৃদ্ধি উপলক্ষে আপনাদেরকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

 

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 নভেম্বর 2024
November 21, 2024

PM Modi's International Accolades: A Reflection of India's Growing Influence on the World Stage