কোভিড সত্ত্বেও কাশীতে উন্নয়নের গতি অব্যাহত হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
এই সম্মেলন কেন্দ্রটি ভারত এবং জাপানের মধ্যে দৃঢ় সংযোগ স্থাপনের প্রতিচ্ছবি: প্রধানমন্ত্রী
এই সম্মেলন কেন্দ্রটি আগামী দিনে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বিভিন্ন মানুষকে একত্রিত করার মাধ্যম হয়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
কাশীতে গত ৭ বছরে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ হয়েছে। তাই রুদ্রাক্ষকে ছাড়া কখনই কি এই কাজ শোভা পায়: প্রধানমন্ত্রী

হর হর মহাদেব! হর হর মহাদেব!

এই অনুষ্ঠানে আমার সাথে উপস্থিত উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রীমতী আনন্দিবেন প্যাটেলজি, প্রাণশক্তিতে ভরপুর জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথজি, ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত সুজুকি সাতোশীজি, সংসদে আমার সহযোগী রাধামোহন সিং-জি, কাশীর সমস্ত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও উপস্থিত শ্রদ্ধেয় বন্ধুগণ!

একটু আগেই আমার আগের অনুষ্ঠানে আমি কাশীবাসীকে বলেছি যে এবার দীর্ঘ সময়ের অন্তরালে আপনাদের কাছে আসার সৌভাগ্য হয়েছে। কিন্তু বেনারসের মেজাজ এমনই যে অন্তরাল যতই দীর্ঘ হোক না কেন, এই শহর যখন মিলিত হয় তখন একসঙ্গে ভরপুর রসে টইটম্বুর করে ভরে দেয়। এখন আপনারা দেখুন অনেকদিন হয়ে গেছে তবুও যখন কাশী ডেকেছে তখন বেনারসবাসীরা একসঙ্গে এতগুলি উন্নয়ন কর্মের ঝাঁপি নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। একভাবে বলতে গেলে আজ মহাদেবের আশীর্বাদে কাশীবাসীরা উন্নয়নের গঙ্গা বইয়ে দিয়েছেন। আজই হাজার হাজার কোটি টাকার অনেক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস হয়েছে। আর এখন এই ‘রুদ্রাক্ষ’ কনভেনশন সেন্টার। কাশীর প্রাচীন বৈভব, তার আধুনিক স্বরূপ অর্থাৎ এক প্রকার আধুনিক আধুনিক স্বরূপের অস্ততিত্ব জেগে উঠেছে। কাশী সম্পর্কে বলা হয়, বাবা ভোলানাথের এই নগরী কখনও থামে না, কখনও ক্লান্ত হয় না। উন্নয়নের এই নতুন উচ্চতা কাশীর এই স্বভাবকে আরেকবার সিদ্ধ করে দিয়েছে। করোনার সঙ্কটকালে যখন বিশ্ব একরকম থেমে গিয়েছিল, তখন কাশী সংযম রক্ষা করে হলেও, অনুশাসন মেনে হলেও, সৃষ্টিশীলতা ও উন্নয়নের ধারায় অবিরল প্রবাহমান ছিল। কাশীর উন্নয়নের এই বার্তা, এই ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টার ‘রুদ্রাক্ষ’ আজ এই সৃষ্টিশীলতার, এই গতিশীলতারই পরিণামস্বরূপ। আমি আপনাদের সবাইকে কাশীর প্রত্যেক ব্যক্তিকে এই সাফল্যের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। বিশেষভাবে আমি ভারতের পরম মিত্র জাপানকে, জাপানের জনগণকে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শ্রী শুগা ইয়োশিহিদেকে আর রাষ্ট্রদূত শ্রী সুজুকি সাতোশীজিকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আর এখন আমরা কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বার্তাও দেখেছি। তাঁর আত্মিক প্রচেষ্টায় কাশী এই উপহার পেয়েছে। প্রাইম মিনিস্টার শ্রী শুগা ইয়োশিহিদেজি সেই সময় চিফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ছিলেন। তখন থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ পর্যন্ত লাগাতার তিনি এই প্রকল্পে ব্যক্তিগতভাবে যুক্ত থেকেছেন। ভারতের প্রতি তাঁর এই আপনত্বের জন্য প্রত্যেক দেশবাসী তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।

বন্ধুগণ,

আজকের এই আয়োজনে আরেকজন ব্যক্তি রয়েছেন যাঁর নাম আমাদের উচ্চারণ না করলেই চলবে না। আমার আর এক জাপানি বন্ধু শিনজো আবেজির কথা। আমার মনে আছে শিনজো আবেজি যখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাশী এসেছিলেন, তখন এই ‘রুদ্রাক্ষ’-এর ভাবনা নিয়ে তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। তিনি তৎক্ষণাৎ নিজের আধিকারিকদের এই ভাবনা নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপর জাপানের সংস্কৃতি যেমন, সকলেই চেনেন, এর বৈশিষ্ট্য হল নিখুঁত কাজ করা। আর তার আগে সুন্দর পরিকল্পনা রচনা করা। এই প্রকল্পের ক্ষেত্রেও এভাবেই কাজ শুরু হয় আর আজ এই অনিন্দ্য সুন্দর ভবনটি কাশীর শোভা বর্ধন করছে। এই ভবনে আধুনিকতার চমকও আছে আবার সাংস্কৃতিক আভাও আছে। এতে ভারত-জাপান পারস্পরিক সম্পর্কের সেতু বন্ধন যেমন আছে, তেমনই ভবিষ্যতের জন্য অনেক সম্ভাবনার সুযোগও আছে। আমার জাপান যাত্রার সময় আমি উভয় দেশের সম্পর্ক নিয়ে, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক নিয়ে, আপনত্ব নিয়ে কথা বলেছি। আমরা জাপানে বসে এ ধরনেরই সাংস্কৃতিক সম্পর্কের রূপরেখা এঁকেছি। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ উভয় দেশের প্রচেষ্টায় উন্নয়নের পাশাপাশি পারস্পরিক সম্পর্কের মিষ্টতার একটি নতুন অধ্যায় লেখা হচ্ছে। কাশীর ‘রুদ্রাক্ষ’-এর মতোই সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহ আগে গুজরাটেও জাপানি জেন গার্ডেন আর কাইজেন অ্যাকাডেমিরও শুভ উদ্বোধন হয়েছে। যেমনটি এই ‘রুদ্রাক্ষ’ জাপানের পক্ষ থেকে ভারতকে দেওয়া ভালোবাসার নিদর্শন একটি মালার মতো, তেমনই জেন গার্ডেনও উভয় দেশের পারস্পরিক প্রেমের সুরভি ছড়িয়ে দিচ্ছে। এভাবে কৌশলগত অঞ্চলগুলি থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলি পর্যন্ত জাপান আজ ভারতের সবথেকে বিশ্বস্ত বন্ধুদের মধ্যে অন্যতম। আমাদের বন্ধুত্বের এই গোটা ক্ষেত্রটির সবচাইতে প্রাকৃতিক অংশীদারিত্বের মধ্যে একটি হিসেবে মনে করা হয়। আধুনিক পরিকাঠামো এবং উন্নয়ন নিয়েও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং বৃহত্তম প্রকল্পে জাপান আমাদের অংশীদার হয়েছে। মুম্বাই- আমেদাবাদ হাইস্পিড রেল থেকে শুরু করে দিল্লি-মুম্বাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর কিংবা ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরগুলি জাপানের সহযোগিতায় নির্মিত হচ্ছে। এই প্রকল্পগুলি নিউ ইন্ডিয়ার শক্তি বাড়াতে চলেছে।

বন্ধুগণ,

ভারত এবং জাপানের ভাবনা হল আমাদের উন্নয়নকে আমাদের উল্লাশের সঙ্গে যুক্ত রাখতে হবে। এই উন্নয়ন সর্বমুখী হতে হবে। সবার জন্য হতে হবে আর সবাইকে যুক্ত করার মতো হতে হবে। আমাদের পুরাণগুলিতে বলা হয়েছে –

‘তত্র অশ্রু বিন্দুত যাতা, মহা রুদ্রাক্ষ বৃক্ষাকাঃ।

নমঃ আজয়া মহাসেন, সর্বেষাম হিত কাম্যয়াঃ।।’

অর্থাৎ সকলের হিতে, সকলের কল্যাণের জন্য ভগবান শিবের চোখ থেকে নির্গত অশ্রুবিন্দু রূপে রুদ্রাক্ষ প্রকট হয়েছে। শিব তো সবারই। তাঁর অশ্রুবিন্দু মানবজাতির জন্য স্নেহের ও প্রেমের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এভাবেই এই ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার ‘রুদ্রাক্ষ’ও গোটা বিশ্বকে পারস্পরিক ভালোবাসা, কলা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে যুক্ত করার একটি মাধ্যম হয়ে উঠবে। আর কাশীর কথা কী বলব, কাশী তো এমনিতেই বিশ্বের সর্বপ্রাচীন জীবন্ত শহর। শিব থেকে শুরু করে সারনাথের ভগবান বুদ্ধ পর্যন্ত কাশী আধ্যাত্মের পাশাপাশি ভারতীয় কলা এবং সংস্কৃতিকে কয়েক শতাব্দী ধরে রক্ষা করে চলেছে। আজকের সময়েও তবলায় ‘বেনারসবাজ’-এর শৈলীই হোক, ঠুমরি, দাদরা, খেয়াল, টপ্পা আর ধ্রূপদ, ধমার, কাজরি, চৈতি, হরির মতো বেনারসের বহু চর্চিত এবং বিখ্যাত গায়ন শৈলী রয়েছে যা সারল্য এবং পাখোয়াজ হোক কিংবা সানাই হোক, আমার বেনারসের প্রতিটি রোমকূপে গীত-সঙ্গীত এবং কলা বর্ষণ হয়। এখানে গঙ্গা উপত্যকায় না জানি কত কলা বিকশিত হয়েছে। জ্ঞানের শিখর পর্যন্ত পৌঁছেছে আর মানবতার সঙ্গে যুক্ত কত না গভীর চিহ্ন এই মাটিতে রয়েছে। আর সেজন্য বেনারস গীত-সঙ্গীতের, ধর্ম-আধ্যাত্মের এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের একটি অনেক বড় আন্তর্জাতিক কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।

বন্ধুগণ,

বৌদ্ধিক আলাপ-আলোচনার জন্য বড় বড় সেমিনার এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বেনারস প্রাকৃতিকভাবেই একটি আদর্শ স্থান। দেশ-বিদেশের মানুষ এখানে আসতে চান, এখানে থাকতে চান। তেমনই যদি এখানে কোনও ধরনের অনুষ্ঠানের সুবিধা পাওয়া যায়, পরিকাঠামোও থাকে, তাহলে এখানে অনেক বড় সংখ্যায় কলা জগতের মানুষ বেনারসকে যে অগ্রাধিকার দেবেন – এটাই স্বাভাবিক। ‘রুদ্রাক্ষ’ এমন ধরনের সম্ভাবনাগুলিকে আগামীদিনে মূর্ত করে তুলবে। দেশ-বিদেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের একটি কেন্দ্র হয়ে উঠবে। উদাহরণস্বরূপ, বেনারসে যে কবি সম্মেলন হয়, তার গুণগ্রাহী গোটা দেশ এবং বিশ্ব। আগামীদিনে এই কবি সম্মেলনকে আন্তর্জাতিক স্বরূপে তুলে ধরতে এই কেন্দ্রে আয়োজন করা যেতে পারে। এখানে ১,২০০ মানুষের বসার ব্যবস্থার পাশাপাশি ৬ হাজার এমন সম্মেলন কেন্দ্র রয়েছে। পার্কিং সুবিধাও রয়েছে আর দিব্যাঙ্গজনদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। এভাবে বিগত ৬-৭ বছরে বেনারসের হস্তশিল্প ও বস্ত্রশিল্পকে প্রোমোট করতে, শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অনেক কাজ হয়েছে। এর ফলে বেনারসী সিল্ক এবং বেনারসী হস্তশিল্পের আরেকবার নতুন পরিচয় গড়ে উঠছে। এখানকার বাণিজ্যিক গতিবিধিও বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘রুদ্রাক্ষ’ এই গতিবিধি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। এই পরিকাঠামো অনেক ধরনের ব্যবসায়িক গতিবিধির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।

বন্ধুগণ,

ভগবান বিশ্বনাথ নিজে বলেছেন –

“সর্ব ক্ষেত্রেষু ভূপৃষ্ঠে কাশী ক্ষেত্রম চ মে বপুঃ।”

অর্থাৎ, কাশীর গোটা অঞ্চলটাই আমার স্বরূপ। কাশী তো সাক্ষাৎ শিব। এখন যখনই বিগত সাত বছরে এতসব উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে কাশীর শৃঙ্গার সম্পন্ন হচ্ছিল, তখন এই শৃঙ্গার কোনও রুদ্রাক্ষ ছাড়াই কিভাবে বাস্তবায়িত হতে পারে। এখন যখন এই রুদ্রাক্ষ কাশী ধারণ করে নিয়েছে, তখন কাশীর উন্নয়ন আরও বেশি চমকাবে আর অনেক বেশি করে কাশীর শোভা বৃদ্ধি পাবে। এখন এই অনুষ্ঠানের দায়িত্ব যখন এসেই গেছে, আমি আপনাদের সকলকে বিশেষ অনুরোধ জানাব যে ‘রুদ্রাক্ষ’-এর শক্তি সম্পূর্ণভাবে আপনাকেই উপভোগ করতে হবে। 

 

কাশীর সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যকে, কাশীর প্রতিভাগুলিকে এই কেন্দ্রের সঙ্গে জুড়তে হবে। আপনারা যখন এই লক্ষ্যে কাজ করবেন তখন আপনারা কাশীর পাশাপাশি গোটা দেশ এবং বিশ্বকেও জানবেন।

 

যেভাবে যেভাবে এই সেন্টার সক্রিয় হবে, এর মাধ্যমে ভারত-জাপানের পারস্পরিক সম্পর্কে বিশ্বের একটি নতুন পরিচয় গড়ে তুলবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মহাদেবের আশীর্বাদে আগামী দিনগুলিতে এই সেন্টার কাশীর একটি নতুন পরিচয় গড়ে তুলবে। কাশীর উন্নয়নকে নতুন গতি দেবে। এইসব শুভকামনার সঙ্গেই আমি আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি। আমি আরেকবার জাপান সরকারের সঙ্গে, জাপানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীজির প্রতি বিশেষরূপে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আর বাবার কাছে এই প্রার্থনা করছি আপনাদের সবাইকে যেন তিনি সুস্থ রাখেন, আনন্দে রাখেন, সজাগ রাখেন, আর করোনার এই সমস্ত নিয়মাবলী পালনের অভ্যাস গড়ে তুলুন। আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
হর হর মহাদেব!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PM Modi govt created 17.19 crore jobs in 10 years compared to UPA's 2.9 crore

Media Coverage

PM Modi govt created 17.19 crore jobs in 10 years compared to UPA's 2.9 crore
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister greets on the occasion of Urs of Khwaja Moinuddin Chishti
January 02, 2025

The Prime Minister, Shri Narendra Modi today greeted on the occasion of Urs of Khwaja Moinuddin Chishti.

Responding to a post by Shri Kiren Rijiju on X, Shri Modi wrote:

“Greetings on the Urs of Khwaja Moinuddin Chishti. May this occasion bring happiness and peace into everyone’s lives.