Quoteভারত তার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কখনই ভুলবেনা : প্রধানমন্ত্রী
Quoteবিগত ৬ বছর ধরে অজানা নায়কদের ইতিহাস সংরক্ষণের সচেতন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
Quoteআমরা আমাদের সংবিধান এবং আমাদের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের জন্য গর্বিত : প্রধানমন্ত্রী

মঞ্চে উপস্থিত গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবব্রতজি, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রুপানিজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী শ্রী প্রহ্লাদ প্যাটেলজি, লোকসভায় আমার সহযোগী সাংসদ শ্রী সি আর প্যাটেলজি, আমেদাবাদের নব-নির্বাচিত মেয়র শ্রী কিরীট সিং ভাই, সাবরমতী ট্রাস্ট্রের ট্রাস্টি শ্রী কার্ত্তিকেয় সারাভাইজি, আর সাবরমতী আশ্রমের প্রতি উৎসর্গীকৃত যাঁর জীবন, মাননীয় অমৃত মোদীজি, সারা দেশ থেকে আমাদের সঙ্গে আজ যাঁরা যুক্ত হয়েছেন; সমস্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ আর আমার প্রিয় যুব বন্ধুগণ!

আজ সকালে যখন আমি দিল্লি থেকে রওনা হয়েছি, তখন একটা অদ্ভূত সংযোগ হয়, অমৃত মহোৎসবের শুভ সূচনার আগেই আজ দেশের রাজধানীতে অমৃত বর্ষা হয়, আর বরুণদেব আশীর্বাদ করেন। এটা আমাদের সকলের সৌভাগ্য যে আমরা স্বাধীন ভারতের এই ঐতিহাসিক সময়ের সাক্ষী হচ্ছি। আজ ডান্ডি যাত্রার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘বাপুজি’র এই কর্মস্থলে আমরা ইতিহাস গড়ে উঠতে দেখছি আর নিজেরা ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠছি। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের শুভ সূচনা হচ্ছে। আজ প্রথমদিন। অমৃত মহোৎসব ১৫ আগস্ট, ২০২২ থেকে ৭৫ সপ্তাহ আগে আজ শুরু হয়েছে, আর ১৫ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত চলবে। আমাদের শাস্ত্রে কথিত আছে, কখনও কখনও এমন সময় আসে যখন সমস্ত তীর্থের একসঙ্গে সঙ্গম হয়। আজ একটি দেশ রূপে ভারতের জন্যও এরকমই একটি পবিত্র সুযোগ। আজ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের যত পূণ্যতীর্থ, যত পবিত্র কেন্দ্র সব এই সাবরমতী আশ্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি বিজড়িত আন্দামানের সেলুলার জেল, অরুণাচল প্রদেশের অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান যুদ্ধের সাক্ষী কেকর মোনিঙ্গ-এর মাটি, মুম্বাইয়ের আগস্ট বিপ্লবের ময়দান, পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালা বাগ, উত্তরপ্রদেশের মীরাট, কাকোরি এবং ঝাঁসি। সারা দেশের এরকম অনেক স্থানে আজ একসঙ্গে এই অমৃত মহোৎসবের শুভ সূচনা হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন স্বাধীনতার অসংখ্য লড়াই, অসংখ্য আত্মোৎসর্গ আর অসংখ্য মানুষের তপস্যার প্রাণশক্তি ভারতে একসঙ্গে পুনর্জাগ্রত হচ্ছে। আমি এই পূণ্য অবসরে শ্রদ্ধেয় ‘বাপুজি’র চরণে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি। আমি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়া, দেশকে নেতৃত্ব প্রদানকারী সমস্ত মনীষীদের চরণে সাদর প্রণাম জানাই, তাঁদেরকে কোটি কোটি প্রণাম জানাই। আমি সেই বীর সৈনিকদের প্রণাম জানাই যাঁরা স্বাধীনতার পরও দেশ রক্ষার পরম্পরাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে সর্বোচ্চ বলিদান দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন। যে পূণ্যাত্মারা স্বাধীন ভারতের পুনর্নিমাণে উন্নয়নের প্রতিটি ইঁট গেথেছেন, ৭৫ বছরে দেশকে এখানে নিয়ে এসেছেন, আমি তাঁদের সকলের চরণে প্রণাম জানাই।

|

বন্ধুগণ,

 

যখন আমরা পরাধীনতার সেই দিনগুলির কথা ভাবি, কোটি কোটি মানুষ কয়েক শতাব্দী ধরে স্বাধীনতার একটি সকালের অপেক্ষা করেছেন, তখন এই অনুভব আরও তীব্র হয় যে স্বাধীনতার ৭৫ বছরের উদযাপন কতটা ঐতিহাসিক, কতটা গৌরবময়। স্বাধীনতার এই পার্বনে ভারতের পরম্পরার সঙ্গে মিশে আছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ছায়া। আর স্বাধীন ভারতকে গৌরবান্বিত করেছে যত উন্নয়ন। সেজন্য আপনারা যে উপস্থাপনা এখন দেখলেন, তাতে অমৃত মহোৎসবের পাঁচটি স্তম্ভে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। প্রথমটি হল, স্বাধীনতা সংগ্রাম, দ্বিতীয়টি ৭৫ বছরের ভাবনা, তৃতীয়টি ৭৫ বছরের সাফল্য, চতুর্থটি ৭৫ বছরের সক্রিয়তা এবং পঞ্চমটি ৭৫ বছরের সঙ্কল্প। এই পাঁচটি স্তম্ভ স্বাধীনতা সংগ্রামের পাশাপাশি স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন ও কর্তব্যগুলিকে দেশের সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগাবে। এই বার্তার ভিত্তিতে আজ অমৃত মহোৎসবের ওয়েবসাইটের পাশাপাশি ‘চরকা অভিযান’ এবং ‘আত্মনির্ভর ইনকিউবেটর’-এরও উদ্বোধন করা হয়েছে।

 

ভাই ও বোনেরা,

 

ইতিহাস সাক্ষী আছে, কোনও দেশের গৌরব তখনই সঞ্জীবিত থাকে যখন তা নিজের আত্মাভিমান এবং বলিদানের পরম্পরা পরবর্তী প্রজন্মকেও শেখায়। যখন শিষ্টাচার প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে সঞ্চারিত হয়। কোনও দেশের ভবিষ্যৎ তখনই উজ্জ্বল হয়, যখন নিজেদের অতীতের অভিজ্ঞতা ও ঐতিহ্যের গর্বের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে থাকে। আর ভারতের তো গর্ব করার জন্য অফুরন্ত ভাণ্ডার আছে, সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে, চেতনা সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক বৈভব আছে। সেজন্য স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপনের এই সুযোগ বর্তমান প্রজন্মের কাছে অমৃতসম হয়ে উঠবে। এ এমন অমৃত যা আমাদের প্রতি মুহূর্তে দেশের জন্য বাঁচতে, দেশের জন্য কোন কিছু করতে প্রেরণা জোগাবে।

 

আমাদের বেদ-এ একটি বাক্য রয়েছে -

 

“মৃত্যোঃ মুখ্যীয়ঃ মামরিতাৎ।”

 

অর্থাৎ, আমরা দুঃখ, কষ্ট, ক্লেশ এবং বিনাশ থেকে নির্গত হয়ে অমৃতের দিকে এগোব, অমরতার দিকে এগোব। এই সঙ্কল্প স্বাধীনতার এই অমৃত মহোৎসবের সঙ্কল্পও। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব – এর অর্থ হল, স্বাধীনতার প্রাণশক্তির অমৃত মহোৎসব। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রেরণার অমৃত। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব-এর অর্থ হল, নতুন ভাবনার অমৃত, নতুন সঙ্কল্পের অমৃত। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব-এর অর্থ হল, আত্মনির্ভরতার অমৃত। আর সেজন্য এই মহোৎসব রাষ্ট্র জাগরণের মহোৎসব। এই মহোৎসব সুশাসনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের মহোৎসব। এই মহোৎসব বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নের মহোৎসব।

|

বন্ধুগণ,

 

অমৃত মহোৎসবের এই শুভারম্ভ ডান্ডি যাত্রার দিনে হচ্ছে। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য এখন আরেকটি যাত্রা শুরু হতে চলেছে। আজ দেশ ডান্ডি যাত্রার প্রভাব এবং বার্তাকে এভাবেই এগিয়ে নিয়ে যাবে। গান্ধীজি এই যাত্রার মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামকে একটি নতুন প্রেরণা সঞ্চার করে দেশের অসংখ্য মানুষকে যুক্ত করেছিলেন। এই একটি যাত্রা দেশের স্বাধীনতার সপক্ষে ভারতের ভাবনাকে গোটা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল। এহেন ঐতিহাসিক ডান্ডি যাত্রায় স্বাধীনতার জন্য স্পৃহার পাশাপাশি ভারতের স্বভাব এবং ভারতের শিষ্টাচারের সমাবেশ ঘটেছিল।

 

আমাদের দেশে লবণকে কখনও তার মূল্য দিয়ে বিচার করা হয় না। আমাদের দেশে লবণের মানে হল সততা। আমাদের দেশে লবণের মানে হল বিশ্বাস। আমাদের দেশে লবণের মানে হল আনুগত্য। আমরা আজও বলি, আমরা দেশের লবণ খেয়েছি। সেজন্য বলি না যে লবণ খুব মূল্যবান কিছু। আমরা বলি, কারণ লবণ আমাদের দেশে শ্রম ও সাম্যের প্রতীক। আর সেই যুগে লবণ হয়ে উঠেছিল ভারতের আত্মনির্ভরতার প্রতীক। ইংরেজরা ভারতের মূল্যবোধের পাশাপাশি আত্মনির্ভরতার ওপরও আঘাত হেনেছিল। ভারতীয়দের ইংল্যান্ড থেকে আনা লবণের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়েছিল। গান্ধীজি দেশের এই পুরনো ব্যথাকে অনুভব করেন, প্রতিটি মানুষের অনুভূতির স্পন্দনকে অনুভব করেন। আর দেখতে দেখতে এই আন্দোলন প্রত্যেক ভারতবাসীর আন্দোলনে পরিণত হয়, প্রত্যেক ভারতবাসীর সঙ্কল্পে পরিণত হয়।

 

বন্ধুগণ,

 

এভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনে ভিন্ন ভিন্ন লড়াই, ভিন্ন ঘটনারও প্রেরণা রয়েছে, বার্তা রয়েছে যেগুলিকে সম্বল করে আজ ভারত এগিয়ে যেতে পারে। ১৮৫৭-র স্বাধীনতা সংগ্রাম, মহাত্মা গান্ধীর বিদেশ থেকে ফিরে আসা, দেশকে সত্যাগ্রহের শক্তি আবার মনে করিয়ে দেওয়া, লোকমান্য তিলকের ‘পূর্ণ স্বরাজ’-এর আহ্বান, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসের নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের দিল্লি অভিযান, ‘দিল্লি চলো’ - এই স্লোগান আজও ভারত ভুলতে পারে না। ১৯৪২-এর অবিস্মরণীয় আন্দোলন, ইংরেজ ভারত ছাড়োর সেই ঘোষণা - এরকম কতো না অসংখ্য পর্যায় রয়েছে, যা থেকে আমরা প্রেরণা গ্রহণ করি, প্রাণশক্তি পাই। এরকম কতো না আত্মবলিদানকারী সৈনিক রয়েছেন, যাঁদের প্রতি দেশ প্রতিদিন কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করে।

 

১৮৫৭-র বিদ্রোহে মঙ্গল পান্ডে, তাঁতিয়া তোপের মতো বীরেরা, ইংরেজ বাহিনীর সামনে নির্ভীক গর্জন করে ওঠা রানি লক্ষ্মীবাঈ, কিত্তুরের রানি চেন্নাম্মা, রানি গাইদাঁলু, চন্দ্রশেখর আজাদ, রামপ্রসাদ বিসমিল, ভগৎ সিং, সুখদেব, রাজগুরু, আসফাকুল্লাহ খান, গুরু রাম সিং, টিটুসজি, পল রামাস্বামীর মতো বীরেরা কিংবা পণ্ডিত নেহরু, সর্দার প্যাটেল, বাবাসাহেব আম্বেদকর, সুভাষ চন্দ্র বোস, মৌলানা আজাদ, খান আব্দুল গফর খান, বীর সাভারকারের মতো অসংখ্য জন-নায়ক – এইসব মহান ব্যক্তিত্ব স্বাধীনতা আন্দোলনের পথপ্রদর্শক ছিলেন। আজ তাঁদের স্বপ্নের ভারত গড়ে তুলতে আমরা মিলিত সঙ্কল্প নিচ্ছি, তাঁদের থেকে প্রেরণা নিচ্ছি।

|

আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে এরকম কতো আন্দোলন হয়েছে যেগুলির কথা দেশের ইতিহাসে সেভাবে লেখা হয়নি যেভাবে লেখা উচিৎ ছিল। এই লড়াইগুলির প্রতিটিই ভারতে অসত্যের বিরুদ্ধে সত্যের শক্তিশালী ঘোষণা। ভারতের স্বাধীন স্বভাবের প্রমাণ অন্যায়,শোষণ এবং হিংসার বিরুদ্ধে ভারতের যে চেতনা রাম রাজত্বে ছিল, মহাভারতের কুরুক্ষেত্রে ছিল, হলদিঘাটির রণভূমিতে ছিল, শিবাজির হুঙ্কারে ছিল, সেই শাশ্বত চেতনা, সেই অদম্য শৌর্য ভারতের প্রতিটি ক্ষেত্র, প্রতিটি গোষ্ঠী, প্রতিটি সমাজ স্বাধীনতার লড়াইয়ে নিজেদের মধ্যে প্রজ্জ্বলিত করে রেখেছিল। জননী জন্মভূমিশ্চ সর্গাদপী গরীয়সী - এই মন্ত্র প্রজ্জ্বলিত রেখেছিল, এই মন্ত্র আজও আমাদের সমানভাবে প্রেরণা জোগায়।

 

আপনারা দেখবেন, আমাদের এই ইতিহাসে কোল আন্দোলন, হো সংঘর্ষ, খাসি আন্দোলন, সাঁওতাল বিদ্রোহ, কাছোহা, কাছাড়, নাগা সংঘর্ষ, কুকি আন্দোলন, ভীল আন্দোলন, মুন্ডা বিদ্রোহ, সন্ন্যাসী-ফকির আন্দোলন, রমোসি সংঘর্ষ, কিত্তুর আন্দোলন, ত্রাবাঙ্কোর আন্দোলন, বরদলৈ সত্যাগ্রহ, চম্পারণ সত্যাগ্রহ, সম্বলপুর সংঘর্ষ, চুয়ার সংঘর্ষ, বুন্দেল সংঘর্ষ – এরকম কতো না আন্দোলন, সংঘর্ষ, বিদ্রোহ দেশের প্রত্যেক ভূখণ্ডে, পরাধীনতার প্রত্যেক সময়খণ্ডে স্বাধীনতার জ্যোতিকে প্রজ্জ্বলিত রেখেছে। এই সময় আমাদের শিখ গুরু পরম্পরা দেশের সংস্কৃতি রক্ষার জন্য আমাদের নতুন প্রাণশক্তি ও প্রেরণা জুগিয়েছে, ত্যাগ ও বলিদানের পথ দেখিয়েছে। আর তার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, যা আমাদের বারবার মনে রাখা উচিৎ ... বন্ধুগণ,

 

স্বাধীনতা আন্দোলনের এই জ্যোতিকে নিরন্তর জাগ্রত রাখার জন্য পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ – দেশের সর্বত্র আমাদের সাধু, সন্ন্যাসী, মহন্ত, আচার্যরা নিরন্তর সাধনা করে গেছেন। ভক্তি আন্দোলন সারা দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষিতও গড়ে তুলেছিল। পূর্বে চৈতন্য মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ পরমহংস, শ্রীমন্ত শঙ্কর দেবের মতো সন্ন্যাসীদের ভাবনা সমাজকে দিকনির্দেশ করেছে। পশ্চিমে মীরাবাঈ, একনাথ, তুকারাম, রামদাস, নরসী মেহতা, উত্তরে রামানন্দ, কবীরদাস, গোস্বামী তুলসীদাস, সুরদাস, গুরুনানক, রবিদাস, দক্ষিণে মাধবাচার্য, নিম্বার্কাচার্য, বল্লভাচার্য, রামানুজাচার্য - ভক্তিকালের এই সময়ে রসখান, সুরদাস, কেশবদাস, বিদ্যাপতির মতো মহাপুরুষেরা তাঁদের রচনার মাধ্যমে সমাজের ত্রুটিগুলি সংশোধনের জন্য প্রেরণা জুগিয়েছেন।

|

এমন অনেক ব্যক্তিত্বের প্রভাবেই আন্দোলন অঞ্চলের সীমা ছাড়িয়ে সমগ্র ভারতের অসংখ্য মানুষকে প্রভাবিত করতে পেরেছে। স্বাধীনতার এই অসংখ্য আন্দোলনগুলিতে এরকম কতো না সেনানী, সাধু, মহাপুরুষ, অসংখ্য বীর বলিদান দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের বীরগাথা ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসের এক একটি সোনালী অধ্যায়। আমাদের এই মহানায়ক, মহানায়িকাদের জীবনের ইতিহাসও দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে হবে, এঁদের জীবনগাথা, জীবনের সংঘর্ষ আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের উত্থান-পতন, কখনও সাফল্য, কখনও অসাফল্য, আমাদের আজকের প্রজন্মের জীবনে নতুন পাঠ শেখাবে। ঐক্যবদ্ধতা কাকে বলে, লক্ষ্য লাভের জেদ কাকে বলে, জীবনের প্রতিটি রং তাঁরা আরও ভালোভাবে বুঝবে।

 

ভাই ও বোনেরা,

 

আপনাদের হয়তো মনে আছে, এই মাটির বীর সুপুত্র শ্যামজি কৃষ্ণ ভার্মা ইংরেজদের মাটিতে থেকেও তাঁদের নাকের নিচে জীবনের শেষ প্রশ্বাস পর্যন্ত ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে গেছেন। কিন্তু তাঁর অস্থি সাত দশক পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে, কখন তা ভারত মায়ের কোলে আসতে পারবে। অবশেষে ২০০৩-এ আমি বিদেশ থেকে শ্যামজি কৃষ্ণ ভার্মার অস্থি নিজের কাঁধে উঠিয়ে নিয়ে এসেছি। এরকম কতো না সেনানী দেশের জন্য সর্বস্ব সমর্পণকারী রয়েছেন, দেশের কোণায় কোণায় কতো না দলিত আদিবাসী মহিলা, যুবক-যুবতী তাঁদের তপস্যা ও ত্যাগের কথা সবাই জানে না। মনে করুন, তামিলনাড়ুর ৩২ বছর বয়সী যুবক কোডি কাথ কুমরন যাঁকে ইংরেজরা মাথায় গুলি করে মেরেছিল, কিন্তু তিনি মরার সময় তাঁর হাতে ধরা জাতীয় পতাকাকে মাটিতে পড়তে দেননি। তামিল অভিধানে তাঁর নাম থেকেই ‘কোডি কাথ’ শব্দটি যুক্ত হয়েছে যার অর্থ ‘জাতীয় পতাকা রক্ষাকারী’। তামিলনাড়ুর ভেলুনাচিয়ারিই দেশের প্রথম মহারানি ছিলেন যিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।

 

এভাবে আমাদের দেশে আদিবাসী সমাজ নিজেদের বীরত্ব এবং পরাক্রমের মাধ্যমে লাগাতার বিদেশি শাসককে পরাস্ত করেছে। ঝাড়খণ্ডের ভগবান বিরসা মুন্ডা ইংরেজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ওড়িশার চক্রবিশোইও ইংরেজের বিরুদ্ধে লড়াই লড়েছেন। তেমনই লক্ষ্মণ নায়ক গান্ধীবাদী পথের চেতনা জনমানসে সঞ্চারিত করেছেন। অন্ধ্রপ্রদেশের মণ্যম ভিরূদু, অর্থাৎ জঙ্গলের বীর, আল্লুড়ি সিরারাম রাজু রম্পা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। পাসোলথা খুল্গচেরা মিজোরামে ইংরেজের বিরুদ্ধে আদিবাসী সংঘর্ষের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তেমনই গোমধর কুঁয়র, লসিত বরফুকন এবং সিরত সিং-এর মতো আসাম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন যাঁরা দেশের স্বাধীনতায় অবদান রেখেছেন। এখানে গুজরাটে বরোদার পাশে জাম্বুঘোড়া যাওয়ার পথে আমাদের নায়ক গোষ্ঠীর আদিবাসীদের বলিদানকে কিভাবে ভুলতে পারি, মানগড়ে গোবিন্দ গুরুর নেতৃত্বে শত শত আদিবাসীর গণহত্যা হয়েছে কিন্তু তবুও তাঁরা লড়াই চালিয়ে গেছেন। দেশ তাঁদের বলিদানকে সর্বদা মনে রাখবে।

|

বন্ধুগণ,

 

ভারতমাতার এহেন বীর সুপুত্রদের ইতিহাস দেশের কোণায় কোণায়, গ্রামে গ্রামে রয়েছে। দেশের ইতিহাসের এই গৌরবগুলিকে সংরক্ষণের জন্য বিগত ছয় বছরে আমরা সক্রিয় প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। প্রতিটি রাজ্যে এই চেষ্টা জারি রেখেছি। ডান্ডি যাত্রার সঙ্গে যুক্ত এই পবিত্র স্থানের পুনরুদ্ধার দেশে দু’বছর আগেই সম্পূর্ণ করা হয়েছিল। আমার নিজের এই সুযোগে ডান্ডি আসার সৌভাগ্য হয়েছে। আন্দামানে যেখানে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস দেশের প্রথম স্বাধীন সরকার গঠন করে ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করেছিলেন, দেশের সেই বিস্মৃত ইতিহাসকেও আমরা তুলে ধরেছি। আন্দামান-নিকোবরের দ্বীপগুলিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের নামে নামকরণ করেছি। আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে লালকেল্লায় বিশাল সমারোহ আয়োজিত হয়েছিল। ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলিত হয়েছিল আর নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়েছিল। গুজরাটে সর্দার প্যাটেলের বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি তাঁর অমর গৌরবগাথাকে গোটা বিশ্বে পৌঁছে দিচ্ছে। জালিয়ানওয়ালা বাগের স্মারক হোক কিংবা পাইকা আন্দোলনের স্মৃতিস্মারক - এগুলি নির্মাণের কাজ আমাদের উদ্যোগে সুসম্পন্ন হয়েছে। বাবাসাহেবের স্মৃতি বিজড়িত যে স্থানগুলি অনেক দশক ধরে বিস্মৃত ছিল, সেগুলিকেও পুনর্নিমিত করে দেশের পঞ্চতীর্থ রূপে স্থাপন করা হয়েছে। এসবের পাশাপাশি, আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাসকে দেশের সর্বত্র পৌঁছে দিতে আগামী প্রজন্মের কাছে তাঁদের লড়াইয়ের ইতিহাসকে পৌঁছে দিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মিউজিয়াম গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।

 

বন্ধুগণ,

 

স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসের মতোই স্বাধীনতার পরবর্তী ৭৫ বছরের যাত্রাপথ, সাধারণ ভারতবাসীর পরিশ্রম, উদ্ভাবন, শিল্পোদ্যোগের প্রতিবিম্ব। আমরা ভারতীয়রা দেশে থাকি কিংবা বিদেশে, নিজেদের পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদেরকে প্রমাণিত করেছি। আমাদের সংবিধানকে নিয়ে আমরা গর্বিত। আমাদের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য নিয়ে আমরা গর্বিত। গণতন্ত্রের জননী ভারত। আজও গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার পথে এগিয়ে চলেছি। জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ ভারত আজ মঙ্গলগ্রহ থেকে শুরু করে চাঁদ পর্যন্ত নিজেদের ছাপ রেখে আসছে। আজ ভারতের সেনাবাহিনীর সামর্থ্য অসীম, তেমনই আর্থিকভাবেও আমরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছি। আজ ভারতের স্টার্ট-আপ ব্যবস্থা বিশ্বে আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। আজ বিশ্বের প্রত্যেক মঞ্চে ভারতের ক্ষমতা এবং প্রতিভার গুঞ্জরন শোনা যায়। আজ ভারত অভাবের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে ১৩০ কোটিরও বেশি মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য এগিয়ে চলেছে।

 

|

বন্ধুগণ,

 

আমাদের সকলের সৌভাগ্য যে স্বাধীন ভারতের ৭৫ বছর আর নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীর ১২৫তম বছর আমরা একসাথে পালন করছি। এই সঙ্গম শুধু সময়ের নয়, অতীত এবং ভবিষ্যতের ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিরও অদ্ভূত সম্মিলন। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস বলেছিলেন, “ভারতের স্বাধীনতার যুদ্ধ শুধুই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে নয়, বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধেও।” নেতাজী বলেছিলেন, ভারতের স্বাধীনতাকে সমগ্র মানবতার জন্যও প্রয়োজনীয়। সময়ের সঙ্গে নেতাজীর এই বক্তব্য সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। ভারত স্বাধীন প্রায়। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও স্বাধীনতার কন্ঠস্বর শক্তিশালী হয় এবং অত্যন্ত কম সময়ে সাম্রাজ্যবাদের পরিধি সঙ্কুচিত হয়। আর বন্ধুগণ, আজও ভারতের সাফল্যগুলি শুধুই আমাদের নিজস্ব নয়, গোটা বিশ্বকে আলোকবর্তিকা প্রদর্শনের জন্য, সমগ্র মানবতাকে আশা জাগানোর জন্য। ভারতের আত্মনির্ভরতার সঙ্গে ওতোপ্রতো আমাদের উন্নয়ন যাত্রা সমগ্র বিশ্বের উন্নয়ন যাত্রাকে গতি প্রদান করবে।

 

করোনার সঙ্কটকালে এটা আমাদের সামনে প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এই মহামারীর সঙ্কট থেকে মানবতাকে বের করে আনতে টিকা উৎপাদনে ভারতের আত্মনির্ভরতা আজ গোটা বিশ্বকে লাভবান করে তুলছে। আজ ভারতের টিকা উৎপাদনের সামর্থ্য আছে। তাই, ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর উদার ভাবনা নিয়ে আমরা সকলের দুঃখ দূর করার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। আমরা কখনও কাউকে কষ্ট দিইনি, কিন্তু অপরের কষ্ট লাঘব করার জন্য নিজেদের নিয়োজিত করে চলেছি। এটাই ভারতের আদর্শ। এটাই ভারতের শাশ্বত দর্শন, এটাই আত্মনির্ভর ভারতের মূল তত্ত্বজ্ঞান। আজ সারা পৃথিবী ভারতকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে, ভারতকে ভরসা করছে। এই নতুন ভারতের সূর্যোদয়ের প্রথম কিরণ আমাদের ভবিষ্যতের প্রথম আভা।

 

বন্ধুগণ,

 

গীতায় ভগবান শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন -

 

“সম-দুঃখ-সুখম ধীয়ম সঃ অমৃতত্বায়ো কল্পতে”

 

অর্থাৎ, যিনি সুখ-দুঃখ-আরাম-সমস্যার মধ্যেও ধৈর্য্যের সঙ্গে অটল থাকেন, তিনিই অমৃত পান, অমরত্ব অর্জন করেন। অমৃত মহোৎসব থেকে ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের অমৃত অর্জনের এই পথে এই মন্ত্রই আমাদের প্রেরণা। আসুন, আমরা সবাই দৃঢ়সঙ্কল্প হয়ে এই রাষ্ট্রযজ্ঞে নিজেদের ভূমিকা পালন করি।

 

বন্ধুগণ,

 

স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব চলাকালে দেশবাসীর পরামর্শ মেনে তাঁদের মৌলিক ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসা অসংখ্য পরামর্শ আমরা গ্রহণ করব। ইতিমধ্যেই যেগুলি পেয়েছি, সেগুলি আমার মনেও নাড়া দিয়েছে। গণ-অংশীদারিত্ব, জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই এই উৎসব এগিয়ে যাবে। দেশের এমন কোনও ব্যক্তি থাকবেন না, যিনি এই অমৃত মহোৎসবে অংশগ্রহণ করবেন না। একটা ছোট্ট উদাহরণ দিই। সমস্ত স্কুল-কলেজে আপনারা স্বাধীনতার সঙ্গে যুক্ত ৭৫টি ঘটনা নিয়ে সংকলন প্রকাশ করতে পারেন। প্রত্যেক স্কুল ঠিক করুক যে আমাদের স্কুল স্বাধীনতার ৭৫টি ঘটনা নিয়ে সংকলন প্রকাশ করবে। ৭৫টি গ্রুপ তৈরি করবে। প্রতিটি গ্রুপে ৭৫ জন ছাত্রছাত্রী সব মিলিয়ে এক একটি স্কুলে ৮০০, ১,০০০ কিংবা ২,০০০ ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করতে পারে। একেবারে ছোট শিশুদের বলা যেতে পারে ৭৫ জন মহাপুরুষের তালিকা তৈরি করো। তাঁরা যেরকম পোশাক পড়তেন, সেরকম পোশাক পড়, তাঁদের বলা এক একটি বাক্য উচ্চারণ করো। স্কুলে ভারতের মানচিত্রে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ৭৫টি স্থান চিহ্নিত করো। মাস্টারমশাই জিজ্ঞাসা করতে পারেন, “বলতো বাবা বরদলৈ কোথায়? চম্পারন কোথায়?” আবার, আইন কলেজের ছাত্রছাত্রীদের এ ধরনের ৭৫টি ঘটনা নিয়ে গবেষণা করতে বলা যেতে পারে যাতে স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন সময়ে কিভাবে আইনি লড়াই চলেছে তা জানা যায়। কারা সেই আইনি লড়াইগুলি লড়েছেন? স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বাঁচানোর জন্য কী কী ধরনের প্রচেষ্টা হয়েছে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিচার ব্যবস্থার মনোভাব কেমন ছিল। এই সমস্ত ব্যাপারে অধ্যয়ন ও গবেষণাপত্র তৈরি করতে পারেন। যাঁদের নাটকে রুচি রয়েছে, তাঁরা নাটক লিখতে পারেন। যাঁরা ছবি আঁকতে ভালোবাসেন, তাঁরা ছবি আঁকতে পারেন, যাঁরা গান লিখতে ভালোবাসেন তাঁরা গান লিখুন, কবিতা লিখুন। এগুলি শুরুতে হাতে লিখে চলতে পারে, কিন্তু পরবর্তী সময়ে এগুলির ডিজিটাল রূপ দিতে হবে, আর আমি চাইব দেশের প্রত্যেক স্কুল-কলেজে এ ধরনের চেষ্টা হোক। এই প্রচেষ্টাগুলি প্রতিটি স্কুল-কলেজের ঐতিহ্য হয়ে উঠুক। আর চাইব যে পুরো অভিযান এ বছর ১৫ আগস্টের আগেই সম্পূর্ণ হোক। আপনারা দেখুন, সম্পূর্ণ রূপে ভাবনার সংকলন হয়ে উঠবে। পরবর্তী সময়ে এই বিষয়ে জেলাস্তরে, রাজ্যস্তরে এবং জাতীয় স্তরে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে।

|

আমাদের নবীনরা, আমাদের ছাত্রছাত্রীরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাস লেখার কাজে দেশের চেষ্টাকে সম্পূর্ণ করবে। স্বাধীনতা আন্দোলন ও তার পরবর্তী আমাদের সমাজের বিভিন্ন সাফল্যকে তারা বিশ্বের সামনে আরও প্রবলভাবে তুলে ধরবে। আমি কলা, সাহিত্য, নাট্য জগৎ, সিনেমা জগৎ এবং ডিজিটাল বিনোদনের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অনুরোধ জানাই, কতো না অদ্বিতীয় কাহিনী আমাদের অতীতে ছড়িয়ে আছে! সেগুলি খুঁজুন, সেগুলিকে জীবন্ত করুন, আগামী প্রজন্মের জন্য সেগুলিকে প্রস্তুত করুন। অতীত থেকে শিখে ভবিষ্যৎ নির্মাণের দায়িত্ব আমাদের যুব সম্প্রদায়কেই নিতে হবে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, চিকিৎসাশাস্ত্র, রাজনীতি, শিল্প-সংস্কৃতি - আপনারা যে ক্ষেত্রেই বিশেষজ্ঞ হোন না কেন, আগামীকালকে কিভাবে উন্নত করবেন সেই চেষ্টা করুন।

 

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ১৩০ কোটি ভারতবাসী স্বাধীনতার এই অমৃত মহোৎসবে যখন যুক্ত হবেন, লক্ষ লক্ষ স্বাধীনতা সংগ্রামীর থেকে প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যাবেন, তখন ভারত বড় বড় উদ্দেশ্যসাধনে সক্ষম হবে। যদি আমরা দেশের জন্য, সমাজের জন্য প্রত্যেকে এক পা এগোই, তাহলেই দেশ ১৩০ কোটি পা এগিয়ে যাবে। ভারত আরেকবার আত্মনির্ভর হবে, বিশ্বকে নতুন পথ দেখাবে - এই শুভকামনা নিয়ে আজ যে ডান্ডি যাত্রার শুভ সূচনা হচ্ছে, কোনরকম আড়ম্বরহীন এই যাত্রা শুরু হচ্ছে; কিন্তু ভবিষ্যতে যতদিন পেরিয়ে যাবে, আমরা যত ১৫ আগস্টের দিকে এগোতে থাকব, এই যাত্রাও প্রায় গোটা ভারতকে এর সঙ্গে জড়িয়ে নেবে। এত বড় মহোৎসব পরিণত হবে এটা আমার বিশ্বাস। প্রত্যেক নাগরিকের সঙ্কল্প, প্রত্যেক সংস্থার সঙ্কল্প, প্রত্যেক সংগঠনের সঙ্কল্প দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এটাই হবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধার্ঘ্য।

|

এই কামনা নিয়ে আপনাদের সবাইকে শুভকামনা জানিয়ে আরেকবার অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আমার সঙ্গে বলুন -

 

ভারতমাতার ...জয়,

ভারতমাতার ...জয়,

ভারতমাতার... জয়!

বন্দে .. মাতরম,

বন্দে .. মাতরম,

বন্দে .. মাতরম!

জয় হিন্দ .. জয় হিন্দ!

জয় হিন্দ .. জয় হিন্দ!

জয় হিন্দ .. জয় হিন্দ!

Explore More
প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী

জনপ্রিয় ভাষণ

প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
Output of farm sector rises to Rs 29.49 lakh crore in FY24: Govt data

Media Coverage

Output of farm sector rises to Rs 29.49 lakh crore in FY24: Govt data
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Visit of Prime Minister to Ghana, Trinidad & Tobago, Argentina, Brazil, and Namibia (July 02 - 09)
June 27, 2025

Prime Minister Shri Narendra Modi will undertake a visit to Ghana from July 02-03, 2025. This will be Prime Minister’s first ever bilateral visit to Ghana. This Prime Ministerial visit from India to Ghana is taking place after three decades. During the visit, Prime Minister will hold talks with the President of Ghana to review the strong bilateral partnership and discuss further avenues to enhance it through economic, energy, and defence collaboration, and development cooperation partnership. This visit will reaffirm the shared commitment of the two countries to deepen bilateral ties and strengthen India’s engagement with the ECOWAS [Economic Community of West African States] and the African Union.

In the second leg of his visit, at the invitation of the Prime Minister of the Republic of Trinidad & Tobago, H.E. Kamla Persad-Bissessar, Prime Minister will pay an Official Visit to Trinidad & Tobago (T&T) from July 03 - 04, 2025. This will be his first visit to the country as Prime Minister and the first bilateral visit at the Prime Ministerial level to T&T since 1999. During the visit, Prime Minister will hold talks with the President of Trinidad & Tobago, H.E. Christine Carla Kangaloo, and Prime Minister H.E. Kamla Persad-Bissessar and discuss further strengthening of the India-Trinidad & Tobago relationship. Prime Minister is also expected to address a Joint Session of the Parliament of T&T. The visit of Prime Minister to T&T will impart fresh impetus to the deep-rooted and historical ties between the two countries.

In the third leg of his visit, at the invitation of the President of Republic of Argentina, H.E. Mr. Javier Milei, Prime Minister will travel to Argentina on an Official Visit from July 04-05, 2025. Prime Minister is scheduled to hold bilateral talks with President Milei to review ongoing cooperation and discuss ways to further enhance India-Argentina partnership in key areas including defence, agriculture, mining, oil and gas, renewable energy, trade and investment, and people-to-people ties. The bilateral visit of Prime Minister will further deepen the multifaceted Strategic Partnership between India and Argentina.

In the fourth leg of his visit, at the invitation of President of the Federative Republic of Brazil, H.E. Luiz Inacio Lula da Silva, Prime Minister will travel to Brazil from July 5-8, 2025 to attend the 17th BRICS Summit 2025 followed by a State Visit. This will be Prime Minister’s fourth visit to Brazil. The 17th BRICS Leaders’ Summit will be held in Rio de Janeiro. During the Summit, Prime Minister will exchange views on key global issues including reform of global governance, peace and security, strengthening multilateralism, responsible use of artificial intelligence, climate action, global health, economic and financial matters. Prime Minister is also likely to hold several bilateral meetings on the sidelines of the Summit. For the State Visit to Brazil, Prime Minister will travel to Brasilia where he will hold bilateral discussions with President Lula on the broadening of the Strategic Partnership between the two countries in areas of mutual interest, including trade, defence, energy, space, technology, agriculture, health and people to people linkages.

In the final leg of his visit, at the invitation of the President of the Republic of Namibia, H.E. Dr. Netumbo Nandi-Ndaitwah, Prime Minister will embark on a State Visit to Namibia on July 09, 2025. This will be the first visit of Prime Minister to Namibia, and the third ever Prime Ministerial visit from India to Namibia. During his visit, Prime Minister will hold bilateral talks with President Nandi-Ndaitwah. Prime Minister will also pay homage to the Founding Father and first President of Namibia, Late Dr. Sam Nujoma. He is also expected to deliver an address at the Parliament of Namibia. The visit of Prime Minister is a reiteration of India’s multi-faceted and deep-rooted historical ties with Namibia.