Congratulates BRO and Indian Engineers for achieving the marvel feat of building the tunnel in the most difficult terrain of Pir Panjal ranges in Himachal
Tunnel would empower Himachal Pradesh, J&K Leh and Ladakh :PM
Farmers, Horticulturists, Youth, Tourists, Security Forces to benefit from the project: PM
Political Will needed to develop border area connectivity and implement infrastructure projects: PM
Speedier Economic Progress is directly dependent on fast track execution of various infrastructure works: PM

দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রদ্ধেয় রাজনাথ সিংজি, হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী জয়রাম ঠাকুরজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী, হিমাচলের সুপুত্র অনুরাগ ঠাকুর, হিমাচল সরকারের মন্ত্রীগণ, অন্যান্য জনপ্রতিনিধিগণ, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপীন রাওয়াতজি, চিফ অফ আর্মি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন-এর সঙ্গে যুক্ত সমস্ত বন্ধুগণ এবং আমার প্রিয় হিমাচল প্রদেশের ভাই ও বোনেরা।

 

আজ একটি অত্যন্ত ঐতিহাসিক দিন। আজ শুধু শ্রদ্ধেয় অটলজির স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি, আজ হিমাচল প্রদেশের কোটি কোটি মানুষের কয়েক দশক পুরনো প্রতীক্ষারও অবসান হয়েছে।

 

আমার বড় সৌভাগ্য যে আজ আমি এই অটল সুড়ঙ্গপথের উদ্বোধন করার সুযোগ পেয়েছি, আর একটু আগেই রাজনাথজি যেমন বলেছেন, আমি এখানে দীর্ঘকাল সংগঠনের কাজ দেখতাম। এখানকার পাহাড়, এখানকার উপত্যকাগুলিতে আমি জীবনের অনেক উৎকৃষ্ট সময় কাটিয়েছি। আর যখন অটলজি মানালী এসে থাকতেন, তখন প্রায়ই আমি তাঁর কাছে গিয়ে বসতাম, তাঁর সঙ্গে আড্ডা মারতাম। আমি এবং ধুমলজি একদিন অটলজির সঙ্গে চা-পানের সময় অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে এই সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের অনুরোধ রেখেছিলাম। আর, অটলজির যেমন বৈশিষ্ট্য ছিল, তিনি চোখ বড় বড় করে আমাদের দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করছিলেন যে আমরা কী বলতে চাই। তিনি মাথা নেড়ে বলে দিয়েছিলেন, হ্যাঁ ভাই! কিন্তু অবশেষে যে বিষয়টি নিয়ে আমি আর ধুমলজি তাঁকে বারবার মনে করাচ্ছিলাম, সেই পরামর্শ অটলজির স্বপ্নে পরিণত হয়। সেই স্বপ্ন থেকে তাঁর সঙ্কল্প গড়ে ওঠে। আর আজ আমরা সেই সঙ্কল্পকে আমাদের চোখের সেই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ নিতে দেখছি। এই ঘটনাটি আমার জীবনে কত বড় আনন্দ এনে দিয়েছে, তা আপনারা কল্পনা করতে পারেন।

এখন এখানে কয়েক মিনিট আগে আমরা সবাই একটি চলচ্চিত্রও দেখলাম। আমি এটি আগে একটি টিচার গ্যালারিতেও দেখেছিলাম – 'দ্য মেকিং অফ অটল টানেল'। প্রায়ই দেখা গেছে যে উদ্বোধনের আলোর রোশনাইয়ে অনেক লোক পেছনে থেকে যান যাঁদের পরিশ্রমে এ সমস্ত কিছু সম্ভব হয়েছে। অভেদ্যপ্রায় পীর পাঞ্জালের কঠিন পাথর ভেদ করে একটি অত্যন্ত কঠিন সঙ্কল্পকে আজ বাস্তবায়িত করা হয়েছে। এই মহাযজ্ঞে যাঁরা নিজেদের ঘাম ঝরিয়েছেন, নিজেদের জীবন বিপন্ন করে পরিশ্রমের সঙ্গে যে জওয়ানরা, ইঞ্জিনিয়াররা এবং মজুর ভাই-বোনেরা এটিকে সম্পূর্ণ করেছেন, আজ আমি তাঁদের সবাইকে সমাদরে প্রণাম জানাই।

 

বন্ধুগণ,

 

অটল সুড়ঙ্গপথ হিমালয়ের একটি বড় অংশের সঙ্গে নব-গঠিত কেন্দ্রশাসিত প্রদেশ লেহ-লাদাখেরও লাইফলাইনে পরিণত হতে চলেছে। এখন প্রকৃত অর্থে হিমাচল প্রদেশের একটি বড় অঞ্চলের সঙ্গে লেহ-লাদাখও দেশের বাকি অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হবে। উন্নয়নের পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে।

 

এই সুড়ঙ্গপথ দিয়ে মানালী এবং কেলোঙ্গ-এর মধ্যবর্তী দূরত্ব ৩ থেকে ৪ ঘন্টা কমে যাবে। আমার পাহাড়ি ভাই-বোনেরা জানেন যে পাহাড়ে ৩-৪ ঘন্টা দূরত্ব কম হওয়ার মানে কী!

বন্ধুগণ,

 

লেহ-লাদাখের কৃষক, বাগিচা শ্রমিক এবং যুব সম্প্রদায়ের জন্য এখন রাজধানী দিল্লি এবং অন্যান্য বাজারে পৌঁছনো আরও সহজ হয়ে যাবে। তাঁদের অনেক কম ঝুঁকি নিতে হবে। শুধু তাই নয়, এই সুড়ঙ্গপথ দেবভূমি হিমাচল এবং বুদ্ধ পরম্পরার সেই আকর্ষণ শক্তি যা ভারতের বাইরে গোটা বিশ্বকে নতুন পথ, নতুন আলো দেখাচ্ছে। সেজন্য হিমালয় ও লেহ-লাদাখের সমস্ত বন্ধুদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

 

বন্ধুগণ,

 

অটল সুড়ঙ্গপথ ভারতের সীমান্ত পরিকাঠামোকেও নতুন শক্তি প্রদান করবে। এটি আন্তর্জাতিক মানের সীমান্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার জলজ্যান্ত প্রমাণ। হিমালয়ের এই অংশটি থেকে শুরু করে পশ্চিম ভারতের মরু অঞ্চল কিংবা দক্ষিণ ও পূর্ব ভারতের তটীয় এলাকায় দেশের প্রতিরক্ষা এবং সমৃদ্ধি উভয়ের জন্য এই যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক বড় সম্পদ। সর্বদাই এই অঞ্চলগুলির ভারসাম্য রক্ষা এবং সম্পূর্ণ বিকাশের জন্য এই অঞ্চলগুলির পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করার দাবি ওঠে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের দেশে সীমান্ত সংশ্লিষ্ট পরিকাঠামো প্রকল্প হয় পরিকল্পনা স্তর থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি, অথবা বেরিয়ে এলেও থেকে থেকেছে, ঝুলে থেকেছে, বিভ্রান্ত হয়েছে। অটল সুড়ঙ্গপথও অনেক সময় এরকম ঢিলেমির শিকার হয়েছে।

বন্ধুগণ,

 

২০০২ সালে অটলজি এই সুড়ঙ্গপথের জন্য অ্যাপ্রোচ রোডের শিলান্যাস করেছিলেন। অটলজি-র সরকার যাওয়ার পর এই কাজটিকে এক রকম ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরিস্থিতি এমন ছিল যে ২০১৩-১৪ সাল পর্যন্ত এই সুড়ঙ্গপথের মাত্র ১,৩০০ মিটার অর্থাৎ, দেড় কিলোমিটারেরও কম কাজ সম্পন্ন হতে পেরেছিল।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, যে গতিতে অটল সুড়ঙ্গপথের কাজ সেই সময় হচ্ছিল, সেই গতিতেই যদি কাজ চলত তাহলে এই সুড়ঙ্গপথ হয়তো ২০৪০ সালে গিয়ে শেষ হত। আপনারা কল্পনা করুন, আপনাদের আজ যে বয়স তাতে ২০ বছর আরও জুড়ে নিন। তখন গিয়ে মানুষের জীবনে এই দিনটি আসত। তবে গিয়ে তাঁদের স্বপ্ন পূরণ হত।

 

যখন উন্নয়নের পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে হয়, যখন দেশের জনগণের উন্নয়নের প্রবল ইচ্ছা থাকে, তখন গতি বাড়াতেই হয়। অটল সুড়ঙ্গপথের কাজও ২০১৪ সালের পর অভূতপূর্ব দ্রুতগতিতে এগিয়ে গেছে। বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনের সামনে আসা প্রতিটি সমস্যাই সমাধান করে দেওয়া হয়েছে।

 

ফলস্বরূপ, যেখানে আগে প্রতি বছর মাত্র ৩০০ মিটার করে সুড়ঙ্গপথ তৈরি হচ্ছিল, সেটির গতি বাড়ে, আর তারপর বছরে ১,৪০০ মিটার গতিতে এগিয়ে যায়। ফলে মাত্র ছয় বছরের মধ্যেই আমরা ২৬ বছরের কাজ সম্পূর্ণ করতে পেরেছি।

 

বন্ধুগণ,

 

পরিকাঠামোর এতগুলি গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় প্রকল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে বিলম্ব থেকে দেশ সমস্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। সেজন্য জনগণের নানা পরিষেবা পেতেও দেরি হচ্ছিল। এর জন্য দেশের সার্বিক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছিল।

 

২০০৫ সালে এই অনুমান করা হয়েছিল যে, এই সুড়ঙ্গপথ ৯৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়ে যাবে। কিন্তু লাগাতার বিলম্বের ফলে আজ এর নির্মাণ ব্যয় তিনগুণ থেকেও বেশি, অর্থাৎ প্রায় ৩,২০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করার পর সম্পূর্ণ হতে পেরেছে। কল্পনা করুন, যদি ২০ বছর আরও লাগত, তাহলে কী পরিস্থিতি হত, কত টাকা খরচ হত।

বন্ধুগণ,

 

যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে দেশের উন্নয়নের সরাসরি সম্পর্ক থাকে। যত দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে, তত দ্রুত উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন করা যাবে। বিশেষ করে, সীমান্ত এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সরাসরি দেশের নিরাপত্তার প্রয়োজনগুলির সঙ্গে যুক্ত থাকে। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ ছিল, যেভাবে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ছিল, যেভাবে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন ছিল, দুর্ভাগ্যবশত তেমনটা দেখা যায়নি।

 

অটল সুড়ঙ্গপথের মতোই অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের সঙ্গে এমনটাই আচরণ করা হয়েছে। লাদাখে দৌলত বেগ ওল্ডি নামক সামরিক দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এয়ারস্ট্রিপটি ৪০-৫০ বছর ধরে বন্ধ ছিল। কী সমস্যা ছিল, কী চাপ ছিল, আমি সেগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে চাই না। এ সম্পর্কে অনেক কিছু বলা হয়েছে, অনেক কিছু লেখা হয়েছে। কিন্তু সত্য এটাই যে, দৌলত বেগ ওল্ডির এয়ারস্ট্রিপটি ভারতীয় বায়ুসেনার প্রবল ইচ্ছাশক্তির ফলেই আবার চালু হতে পেরেছে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি কোথাও পরিলক্ষিত হয়নি।

 

বন্ধুগণ,

 

আমি এরকম কয়েক ডজন প্রকল্পের নাম বলতে পারি যেগুলি সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে এবং পরিষেবার দৃষ্টিকোণ থেকে যত গুরুত্বপূর্ণই হোক না কেন, অনেক অনেক বছর ধরে সেগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

আমার মনে পড়ে, প্রায় দু'বছর আগে অটলজির জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে আমি আসামে ছিলাম। সেখানে ভারতের দীর্ঘতম রেল-রোড ব্রিজ 'বোগীবিল পুল' দেশকে সমর্পণ করার সুযোগ আমি পেয়েছিলাম। এই সেতু আজ উত্তর-পূর্ব ভারত এবং অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে যোগাযোগের অনেক বড় মাধ্যম। বোগীবিল সেতুর কাজও অটলজি-র সরকারের সময়েই শুরু হয়েছিল, কিন্তু তাঁর সরকার যাওয়ার পর এই সেতুর কাজও শ্লথ হয়ে যায়। ২০১৪ সালের পর এই কাজের গতি আবার বাড়ে এবং চার বছরের মধ্যে এই সেতুর কাজ সম্পূর্ণ করে দেওয়া হয়।

 

অটলজির সঙ্গে আরেকটি সেতুর নাম যুক্ত রয়েছে – সেটি হল কোশী মহাসেতু। বিহারের মিথিলা অঞ্চলের দুই অংশকে সংযোগকারী কোশী মহাসেতুর শিলান্যাসও অটলজি-ই করেছিলেন, কিন্তু এটার কাজও সমস্যাকীর্ণ ছিল, থেমে ছিল।

 

২০১৪ সালে আমরা সরকারে আসার পর কোশী মহাসেতুর কাজকে ত্বরান্বিত করি। আজ থেকে কয়েকদিন আগেই এই কোশী মহাসেতুরও উদ্বোধন করা হয়েছে।

 

বন্ধুগণ,

 

দেশের প্রায় প্রত্যেক অংশে যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত বড় বড় প্রকল্পের এরকমই অবস্থা ছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিত বদলেছে। আর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আরও বদলাচ্ছে। বিগত ছয় বছরে এই লক্ষ্যে অভূতপূর্ব প্রচেষ্টা করা হয়েছে। বিশেষ রূপে সীমান্ত পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সম্পূর্ণ শক্তিতে, সম্পূর্ণ উদ্যম নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

 

হিমাচল এলাকায়, জম্মু-কাশ্মীর এলাকায়, কার্গিল, লেহ, লাদাখ, উত্তরাখণ্ড, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ ইত্যাদি অঞ্চলে কয়েক ডজন প্রকল্প আমরা বাস্তবায়িত করেছি অথবা এই প্রকল্পগুলির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। সড়ক নির্মাণের কাজ থেকে শুরু করে সেতু নির্মাণ, সুড়ঙ্গপথ নির্মাণ, এই ধরনের প্রকল্পের কাজ এত দ্রুতগতিতে দেশে আগে কখনও হয়নি।

 

এর দ্বারা লাভবান সাধারণ মানুষের পাশাপাশি, আমাদের ফৌজি ভাই-বোনেরাও উপকৃত হয়েছেন। শীতের সময় তাঁদের কাছে রসদ এবং বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া সহজ হয়েছে। আর তাঁরা যাতে সীমান্ত এলাকায় যথাযথভাবে প্যাট্রলিং করতে পারেন সেজন্য সীমান্ত এলাকায় অসংখ্য সড়কপথের জাল বিছানো হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ,

 

দেশের প্রতিরক্ষার প্রয়োজনগুলি, দেশকে নিরাপদ রাখার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রাখা, দেশের হিতকে আমাদের সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

 

আমার হিমাচল প্রদেশের ভাই-বোনেদের আজও মনে আছে যে 'এক পদ এক পেনশন' নিয়ে পূর্ববর্তী সরকার কী ব্যবহার করেছিল। চার দশক ধরে আমাদের ভূতপূর্ব সৈনিক ভাই-বোনেদের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি বাস্তবায়িত হয়নি। কাগজে-কলমে মাত্র ৫০০ কোটি টাকা দেখিয়ে ওঁরা বলেছিলেন, যে 'এক পদ এক পেনশন' চালু করবেন। কিন্তু তারপরও করেননি। আজ 'এক পদ এক পেনশন' দ্বারা দেশের লক্ষ লক্ষ ভূতপূর্ব সৈনিক উপকৃত হয়েছেন। কেবল এরিয়ার রূপে কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ভূতপূর্ব সৈনিকদের দিয়েছে।

 

হিমাচল প্রদেশেরও প্রায় ১ লক্ষ ভূতপূর্ব সৈনিক বন্ধু এর দ্বারা লাভবান হয়েছেন। আমাদের সরকারের সিদ্ধান্তগুলি সাক্ষী যে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিই, সেগুলি বাস্তবায়িত করে দেখাই। দেশের স্বার্থ থেকে বড়, দেশের নিরাপত্তা থেকে বড় আমাদের জন্য আর কিছু নেই। কিন্তু দেশবাসী দীর্ঘকাল ধরে সেই আমল দেখেছেন, যখন দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপোস করা হয়েছে। দেশের বায়ুসেনা বারবার আধুনিক যুদ্ধবিমান চেয়েছে, কিন্তু তা নিয়ে ফাইল খুলে তাঁরা ফাইলের ওপর ফাইল চাপিয়ে গেছেন। ফাইলের ওপর ফাইল, কখনও ফাইল খুলতেন, কখনও ফাইল নিয়ে খেলতেন।

 

গোলা-বারুদ থেকে শুরু করে আধুনিক রাইফেল, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, ভয়ানক শীতে ব্যবহারের উপযোগী বিভিন্ন সরঞ্জাম – এমন সমস্ত কিছুর জোগান তাঁরা মুলতুবি রেখেছিলেন। একটা সময় ছিল যখন আমাদের অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলির শক্তি বিশ্বের অনেকের ঘুম কেড়ে নিত। কিন্তু পরে দেশের অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলি চূড়ান্ত অবহেলার শিকার হয়।

 

দেশে স্বদেশী যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টারের জন্য এইচএএল-এর মতো বিশ্বমানের সংস্থা গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সেগুলিকেও শক্তিশালী করার দিকে ততটা লক্ষ্য দেওয়া হয়নি। অনেক বছর ধরে ক্ষমতায় থেকে এই মানুষদের স্বার্থ আমাদের সৈন্য ক্ষমতাকে শক্তিশালী হতে দেয়নি। তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

 

যে তেজস যুদ্ধবিমান নিয়ে আজ দেশবাসী গর্ব করেন, সেগুলিও এই মানুষেরা বাক্সবন্দী করে তৈরি করার কথা ভেবেছিল। এটাই এদের সত্যি। এটাই এদের সত্যি।

 

বন্ধুগণ,

 

কিন্তু আজ দেশে এই পরিস্থিতি পরিবর্তিত হচ্ছে। দেশের মধ্যেই যাতে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নির্মিত হয়, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া' অস্ত্রশস্ত্র তৈরি হয়, সেজন্য বড় মাত্রায় সংস্কার করা হয়েছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের পদ এখন আমাদের ব্যবস্থার অঙ্গ হয়ে উঠেছে।

 

এর ফলে, দেশের সেনাবাহিনীগুলির প্রয়োজনীয়তা অনুসারে সরঞ্জাম কেনা এবং উৎপাদন – উভয় ক্ষেত্রে উন্নত সমন্বয় স্থাপিত হয়েছে। এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ সরঞ্জাম বিদেশ থেকে আমদানি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সরঞ্জামগুলি এখন শুধু ভারতীয় শিল্পপতিদের থেকে কেনা আবশ্যক করে দেওয়া হয়েছে।

 

বন্ধুগণ,

 

ভারতে প্রতিরক্ষা শিল্পোদ্যোগে বিদেশি বিনিয়োগ এবং বিদেশি প্রযুক্তি যাতে ঢুকতে পারে, সেজন্য এখন ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে অনেক ধরনের উৎসাহ জোগানো হচ্ছে। যেমনভাবে ভারতের আন্তর্জাতিক ভূমিকা পরিবর্তিত হচ্ছে, আমরা ততটাই দ্রুতগতিতে সেই নিজেদের পরিকাঠামোকে, নিজেদের আর্থিক এবং সামরিক সামর্থ্যকে বাড়িয়ে নিয়ে চলেছি।

 

আত্মনির্ভার ভারতের আত্মবিশ্বাস আজ জনমানসের ভাবনার অংশ হয়ে উঠেছে। অটল সুড়ঙ্গপথ এই আত্মবিশ্বাসেরই প্রতীক।

 

আরেকবার আপনাদের সবাইকে, হিমাচল প্রদেশকে এবং লেহ-লাদাখের লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

 

হিমাচলের ওপর আমার কতটা অধিকার আছে, এটা তো আমি বলতে পারব না, কিন্তু আমার ওপর হিমাচলের অনেক অধিকার আছে। আজকের এই কর্মসূচির সময় অনেক কম হওয়া সত্ত্বেও আমাদের হিমাচলের ভালোবাসা আমার ওপর এতটাই চাপ সৃষ্টি করেছে, তিনটি আলাদা কর্মসূচিতে বিভাজিত হয়ে গেছে। এরপর আমাকে আরও দুটো কর্মসূচিতে অত্যন্ত কম সময়ের জন্য বলতে হবে। আর সেজন্য এখানে বিস্তারিতভাবে কিছু না বলে কিছু কথা অন্য দুটি অনুষ্ঠানেও বলব।

 

কিন্তু আমি এখানে কিছু পরামর্শ অবশ্যই দিতে চাইব। আমার এই পরামর্শ ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের জন্যে, ভারত সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের জন্যেও এবং বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনের জন্যেও। বিশেষভাবে – এই সুড়ঙ্গপথের কাজ ইঞ্জিনিয়ারিং দৃষ্টি থেকে, কর্মসংস্কৃতির দিক থেকে একটি অনন্য উদাহরণ। বিগত বছরগুলিতে যখন থেকে এর ডিজাইনিং-এর কাজ শুরু হয়েছে, কাগজে লেখা শুরু হয়েছে, তখন থেকে এখন পর্যন্ত যে ১,০০০-১,৫০০ জন কর্মী; তা তিনি একজন মজুরই হোন, কিংবা উচ্চপদে আসীন কোন ব্যক্তি হোন, তাঁরা এই প্রকল্পে যে কাজ করেছেন, সেই কাজের অভিজ্ঞতা যেন তাঁরা নিজেদের ভাষায় লেখেন। এই ১,৫০০ জন মানুষ যদি চেষ্টা করে লেখেন, কখন কী হয়েছিল, কিভাবে হয়েছিল, তাহলে এর একটি সুন্দর নথিকরণ হবে যাতে মানুষের মনের স্পর্শ থাকবে। যখন তৈরি হচ্ছিল, তখন তাঁরা কী ভাবছিলেন, কী কী সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, কেমন লেগেছে! একটি ভালো নথিকরণ, আমি বিদ্যায়তনিক নথিকরণের কথা বলছি না, আমি সেই নথিকরণের কথা বলছি যেখানে মানবমনের স্পর্শ থাকবে যাতে কর্মরত শ্রমিকদের কথা থাকবে। কোনদিন তাঁরা সময়মতো খাবার পাননি, তবুও কিভাবে কাজ করেছেন সেকথারও অত্যন্ত গুরুত্ব রয়েছে। কখনও কোন সরঞ্জাম পৌঁছনোর কথা ছিল, কিন্তু প্রবল তুষারপাতের ফলে পৌঁছতে পারেনি, সেক্ষেত্রে তাঁরা কিভাবে কাজ এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

 

কখনও কোন ইঞ্জিনিয়ার চ্যালেঞ্জ রেখে দিয়েছেন। তাঁরা কিভাবে সেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। আমি চাই, নিদেনপক্ষে ১,৫০০ জন মানুষ, প্রত্যেক স্তরে কাজ করা মানুষ, পাঁচ পৃষ্ঠা, ছয় পৃষ্ঠা, দশ পৃষ্ঠা তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা লিখুন। কোনও এক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিন যিনি ঠিকঠাক সম্পাদনা করে ভাষা ঠিক করে দেবেন এবং নথিকরণ সম্পন্ন করবেন। তারপর সেটিকে ছাপানোর প্রয়োজন নেই। ডিজিটাল করে দেবেন। তাহলেও চলবে।

 

আমার দ্বিতীয় অনুরোধ শিক্ষা মন্ত্রককে। আমাদের দেশে যত প্রযুক্তিগত এবং কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ছেলে-মেয়েদের এই ধরনের চ্যালেঞ্জিং কাজকে কেস স্টাডি হিসেবে দিন, আর প্রতি বছর এক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮-১০ জন ছেলে-মেয়ের ব্যাচকে এখানে পাঠান। তাঁরা সরেজমিনে দেখে কেস স্টাডি করবে, কিভাবে কল্পনা করা হয়েছে, কিভাবে গড়ে উঠেছে, কিভাবে নতুন নতুন সমস্যা এসেছে, কিভাবে সমাধানের পথ বেড়িয়েছে! এভাবে বিশ্বের সর্বোচ্চ এবং অন্যতম দীর্ঘতম কারিগরি নিদর্শন হয়ে ওঠা এই সুড়ঙ্গপথের কারিগরি-বিদ্যা আমাদের দেশের ছাত্রছাত্রীরা জানতে পারবে।

 

শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও চাইব বিদেশ মন্ত্রক কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে আমন্ত্রণ জানাক যাতে সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রছাত্রী এখানে এই প্রকল্পগুলি নিয়ে কেস স্টাডি করতে আসে। তাঁরা ফিরে গিয়ে আমাদের শক্তি সম্পর্কে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবে। বিশ্ববাসী আমাদের শক্তি সম্পর্কে পরিচিত হবে। সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও কিভাবে এই অদ্ভূত কাজ আমাদের বর্তমান প্রজন্মের সৈনিক এবং শ্রমিকরা করতে পারেন, সে বিষয়ে সারা বিশ্বের জানা উচিৎ।

 

আর সেজন্য আমি চাইব যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, শিক্ষা মন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক, বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন – সবাই মিলে একভাবে লাগাতার এটিকে, এই সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের কাজটিকে শিক্ষার বিষয় করে তুলুন। আমাদের একটি সম্পূর্ণ নতুন প্রজন্ম তৈরি হয়ে গেলে এই সুড়ঙ্গ পরিকাঠামো নতুন নতুন মানুষ গড়ে তোলার পথেও একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। আমাদের উন্নতমানের কারিগরি-বিদ্যার নিদর্শন এই সুড়ঙ্গপথ। আমরা অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রেও এরকম সঙ্কল্প নিয়ে এগিয়ে যাব।

 

আমি আরেকবার আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আর আমি সেই জওয়ানদের অভিনন্দন জানাই যাঁরা এই কাজ দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছেন, অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এবং দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন।

 

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
India’s Biz Activity Surges To 3-month High In Nov: Report

Media Coverage

India’s Biz Activity Surges To 3-month High In Nov: Report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to participate in ‘Odisha Parba 2024’ on 24 November
November 24, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will participate in the ‘Odisha Parba 2024’ programme on 24 November at around 5:30 PM at Jawaharlal Nehru Stadium, New Delhi. He will also address the gathering on the occasion.

Odisha Parba is a flagship event conducted by Odia Samaj, a trust in New Delhi. Through it, they have been engaged in providing valuable support towards preservation and promotion of Odia heritage. Continuing with the tradition, this year Odisha Parba is being organised from 22nd to 24th November. It will showcase the rich heritage of Odisha displaying colourful cultural forms and will exhibit the vibrant social, cultural and political ethos of the State. A National Seminar or Conclave led by prominent experts and distinguished professionals across various domains will also be conducted.