ভারতমাতার জয়! ভারতমাতার জয়! “সমেস্ত গোঁয়কার ভাওয়া – ভয়ণীঁক, মায়েমোগাচো য়েওয়কার!”
“মহজ্যা মোগাল গোঁয়কারাঁনো, গোঁয় মুক্তীচ্যা, হীরক মহোৎসবী ওয়র্সা নিমতান, তুমকা সগলয়াঁক, মনা কালজাসাওয়ন করমীঁ! সৈমান নটলেল্যা, মোগাল মনশাঁচ্যা, হ্যা, ভাঁগরালয়া গোঁয়াঁত, য়েওয়ন মহাকা হুপ হোস ভোগতা!” গোয়ার সমস্ত ভাই ও বোনেরা, আপনাদের সবাইকে প্রণাম। এই ঐতিহাসিক কর্মসূচিতে উপস্থিত গোয়ার রাজ্যপাল শ্রী পি এস শ্রীধরন পিল্লাইজি, গোয়ার প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ মুখ্যমন্ত্রী শ্রী প্রমোদ সাওয়ান্তজি, উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী চন্দ্রকান্ত কাওলিকরজি, শ্রী মনোহর আজগাঁওকরজি, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য শ্রী শ্রীপদ নায়েকজি, গোয়া বিধানসভার অধ্যক্ষ শ্রী রাজেশ পটনেকরজি, গোয়া রাজ্য সরকারের সকল মন্ত্রীগণ, জনপ্রতিনিধিগণ, আধিকারিকগণ এবং আমার গোয়ার ভাই ও বোনেরা!
গোয়া এমন একটি রাজ্য যেটি বাতাস, সমুদ্র, প্রকৃতির অদ্ভূত আশীর্বাদধন্য, আর আজ গোয়ার সমস্ত নাগরিক উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে গোয়ার মুক্তি উৎসব পালন করছেন। গোয়ার বাতাসে এখন মুক্তির গর্ব। আপনাদের চেহারায় গোয়ার গৌরবময় ইতিহাসের গর্ব দেখে আমি আপনাদের মতোই খুশি, আনন্দিত। আমাকে বলা হয়েছে যে এই অনুষ্ঠানস্থল অনেক ছোট হয়ে গেছে, পাশেই এরকম আরও দুটি বড় প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে এবং অনেক মানুষ সেখানে বসে আছেন।
বন্ধুগণ,
আজ গোয়া শুধু তার মুক্তির হীরক জয়ন্তী পালন করছে না, বিগত ৬০ বছরের এই যাত্রাপথের সুখস্মৃতিগুলি যেমন আমাদের সামনে রয়েছে, তেমনই অনেক সংঘর্ষ এবং আত্মবলিদানের গাথাও রয়েছে। আমাদের সামনে লক্ষ লক্ষ গোয়াবাসীর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার পরিণাম রয়েছে যার ফলে আমরা কম সময়ে এত দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করেছি। আমাদের সামনে যখন গর্ব করার মতো অনেক কিছু রয়েছে, তখন ভবিষ্যতের জন্য নতুন সঙ্কল্প নিজে থেকেই তৈরি হতে শুরু করেছে, নতুন স্বপ্নগুলি বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে, এটাও একটি সুখময় সংযোগ। গোয়ার স্বাধীনতার এই হীরক জয়ন্তী এবং ভারতের স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব আমরা একসঙ্গে পালন করছি। সেজন্য গোয়ার স্বপ্ন ও সঙ্কল্পগুলি আজ দেশকে নতুন প্রাণশক্তি যোগাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আজ এখানে আসার আগে আমার আজাদ ময়দানে শহীদ মেমোরিয়ালে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের সৌভাগ্য হয়েছে। শহীদদের প্রণাম জানানোর পর আমি মীনামোরে ‘সেল প্যারেড’ এবং ‘ফ্লাই পাস্ট’-এর সাক্ষী হয়েছি। এখানে এসেও ‘অপারেশন বিজয়’-এর বীরদের, অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের দেশের পক্ষ থেকে সম্মানিত করার সৌভাগ্য হয়েছে। অভিভূত করার মতো এত সুযোগ আজ গোয়া আমাকে একসঙ্গে দিয়েছে, এটাই তো উজ্জীবিত ‘ভাইব্র্যান্ট গোয়া’র স্বভাব। আমি এই ভালোবাসার জন্য, এই আপনত্বের জন্য গোয়ার প্রত্যেক মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
বন্ধুগণ,
আজ আমরা একদিকে গোয়া লিবারেশন ডে উদযাপন করছি আর অন্যদিকে গোয়ার উন্নয়নের জন্য নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছি। একটু আগেই এখানে গোয়া রাজ্য সরকারের ভিন্ন ভিন্ন বিভাগ ও এজেন্সিগুলিকে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এবং ‘স্বয়ংপূর্ণ গোয়া’-এর সফল বাস্তবায়নকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। অসাধারণ কাজ করার জন্য গোয়ার পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলিকেও পুরস্কৃত করা হয়েছে। পাশাপাশি, আজ পুনর্নির্মাণ করা দুর্গ – আগুয়াড়া জেল সংগ্রহালয়, মেডিকেল কলেজের সুপার স্পেশালিটি ব্লক, দক্ষিণ গোয়া জেলা হাসপাতাল এবং দাভোরলিম-এর গ্যাস ইনস্যুলেটেড সাব-স্টেশন-এর উদ্বোধনও হয়েছে। গোয়া মেডিকেল কলেজ এবং মোপা বিমানবন্দরে ‘বিমানন কৌশল বিকাশ কেন্দ্র’-এর উদ্বোধনও আজ হয়েছে। এই সাফল্যের জন্য এবং এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য আমি আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
অমৃত মহোৎসবে প্রত্যেক দেশবাসীর প্রতি আমি একটি আহ্বান রেখেছিলাম – ‘সবকা প্রয়াস’। গোয়ার মুক্তি সংগ্রাম এই মন্ত্রের একটি বড় উদাহরণ। একটু আগেই আমি আজাদ ময়দানের শহীদ মেমোরিয়ালটি দেখছিলাম। এটিকে চারটি হাতের আকৃতি দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। ভারতের চার প্রান্ত থেকে গোয়ার মুক্তি সংগ্রামের জন্য একসঙ্গে যে হাত উঠেছিল - এই আকৃতি তারই প্রতীক। আপনারা দেখুন, গোয়া একটা এমন সময়ে পর্তুগিজদের অধীনে চলে গিয়েছিল যখন দেশের অন্যান্য বড় অংশে মোঘলদের সাম্রাজ্য ছিল। তারপর কত না ক্ষমতার উত্থান-পতন এই দেশ দেখেছে, কিন্তু, অনেক শতাব্দীর ক্ষমতার উত্থান-পতনের পরও গোয়া তার ভারতীয়ত্বকে ভোলেনি আর ভারতবাসীও তাঁদের গোয়াকে কখনও ভোলেননি। এটা এমন একটা সম্পর্ক যা সময়ের সঙ্গে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। গোয়ার মুক্তি সংগ্রাম একটি এমন অমর জ্যোতি যা ইতিহাসের হাজার হাজার ঝড়-ঝাপটা সহ্য করেও প্রজ্জ্বলিত ছিল, অটল ছিল। ‘কুংকললি সংগ্রাম’ থেকে শুরু করে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ এবং সম্ভাজির নেতৃত্বে বীর মারাঠাদের সংঘর্ষ - গোয়াকে মুক্ত করার ক্রমাগত চেষ্টা সবদিক থেকে হয়েছে।
বন্ধুগণ,
দেশ তো গোয়ার আগেই স্বাধীন হয়েছিল। দেশের অধিকাংশ মানুষ তাঁদের অধিকার পেয়েছিলেন। তখন তাঁদের কাছে স্বপ্ন সফল করার সময় এবং বিকল্প ছিল। তাঁরা ক্ষমতার জন্য লড়াই করার অধিকার পেয়েছিলেন। পদ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াইয়ের অধিকার পেয়েছিলেন। কিন্তু অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী এইসব কিছু ছেড়ে গোয়ার স্বাধীনতার জন্য লড়াই ও আত্মবলিদানের পথ বেছে নিয়েছিলেন। গোয়ার জনগণও মুক্তি এবং স্বাধীনতার জন্য আন্দোলনকে কখনও থামতে দেননি। তাঁরা ভারতের ইতিহাসে দীর্ঘতম সময় ধরে স্বাধীনতার জ্যোতিকে তাঁদের মনে জ্বালিয়ে রেখেছিলেন কারণ, ভারত শুধুই রাজনৈতিক ক্ষমতার দেশ নয়, ভারত মানবতার সপক্ষে, মানবতাকে রক্ষার করার ভাবনা নিয়ে কাজ করে যাওয়া একটি পরিবার। ভারত এমন একটা মনোভাব যেখানে রাষ্ট্র ‘স্ব’-এর ওপরে হয় – সর্বোপরি হয়। যেখানে একটাই মন্ত্রক সর্বোপরি তা হল – ‘রাষ্ট্র সর্বাগ্রে’, যেখানে একটাই সঙ্কল্প – ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’। আপনারা দেখুন, ল্যুইস দি মিনেঝিস ব্রাগাঞ্ঝা, ত্রিস্তাভ ব্রাগাঞ্ঝা, দ্য কুনহা, জুলিও মিনেঝিস-এর মতো মহান ব্যক্তিরা ছিলেন, পুরুষোত্তম কাকোডকর, লক্ষ্মীকান্ত ভেঁবরে-র মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ছিলেন কিংবা বালা রায়া মাপারি-র মতো যুবকদের আত্মবলিদান, আমাদের কত না স্বাধীনতা সংগ্রামী স্বাধীনতার পরও আন্দোলন করে গেছেন, যাতনা সহ্য করেছেন, আত্মবলিদান দিয়েছেন কিন্তু এই আন্দোলনকে ভাঙতে দেননি। দেশ স্বাধীন হওয়ার কিছুদিন আগেও রাম মনোহর লোহিয়াজি থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পর জনসঙ্ঘের অনেক নেতা এই মুক্তি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। স্মরণ করুন, মোহন রানাডেজিকে, গোয়ার মুক্তি আন্দোলনের জন্য যাঁকে জেলে বন্দী করা হয়েছিল। অনেক বছর ধরে তিনি জেলে যাতনা সহ্য করেছেন। গোয়া স্বাধীন হওয়ার পরও তাঁকে অনেক বছর ধরে জেলে থাকতে হয়েছিল। তখন রানাডেজির মতো বিপ্লবীর জন্য অটলবিহারী বাজপেয়ীজি দেশের সংসদে আওয়াজ উঠিয়েছিলেন, আজাদ গোমন্তক দলের সঙ্গে যুক্ত অনেক নেতা গোয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁদের সর্বস্ব অর্পণ করেছিলেন। প্রভাকর ত্রিবিক্রম বৈদ্য, বিশ্বনাথ লভানদে, জগন্নাথ রাও যোশী, নানা কাজরেকর, সুধীর ফারকে – এরকম কত না স্বাধীনতা সংগ্রামী গোয়া, দমন, দিউ, দাদরা ও নগর হাভেলির স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন, এই আন্দোলনকে পথ দেখিয়েছেন, প্রাণশক্তি যুগিয়েছেন।
বন্ধুগণ,
গোয়া মুক্তি বিমোচন সমিতির সত্যাগ্রহে ৩১ জন সত্যাগ্রহী নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন।
আপনারা ভাবুন, এই আত্মোৎসর্গকারীদের সম্পর্কে পাঞ্জাবে বীর কর্নেইল সিং, বেনীপাল-এর মতো বীরেদের মনে উদ্দীপনা ছিল কারণ, সেই সময়ে দেশের একটা অংশ পরাধীন ছিল। কিছু দেশবাসী তখনও স্বাধীনতা পাননি। আজকের এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমি বলব, যদি সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আর কয়েক বছর বেঁচে থাকতেন তাহলে গোয়াকে তার মুক্তির জন্য এত বছর অপেক্ষা করতে হত না।
বন্ধুগণ,
গোয়ার ইতিহাস শুধু স্বাধীনতার জন্য ভারতের সঙ্কল্পেরই প্রতীক নয়, এটি ভারতের একতা এবং ঐক্যবদ্ধতার জলজ্যান্ত দস্তাবেজ। গোয়া শান্তিপূর্ণভাবে প্রত্যেক ভাবনাকে বিকশিত হওয়ার পরিসর দিয়েছে। কিভাবে একসঙ্গে সব মত, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর জন্য মিলেমিশে লড়াই করতে পারেন, এটা গোয়া করে দেখিয়েছে। গোয়া সেই স্থান, যেখানকার মানুষ জর্জিয়ার সেইন্ট ক্যুইন কেটেওয়ান-এর হোলি রেলিক অনেক শতাব্দী ধরে সংরক্ষিত করে রেখেছেন। সম্প্রতি কয়েক মাস আগেই ভারত সেইন্ট ক্যুইন কেটেওয়ান-এর সেই হোলি রেলিকটি জর্জিয়া সরকারকে সমর্পণ করেছে। সেইন্ট ক্যুইন কেটেওয়ান-এর এই পবিত্র দেহাবশেষ ২০০৫ সালে এখানকারই সেইন্ট অগাস্টিন চার্চ থেকে পাওয়া গিয়েছিল।
বন্ধুগণ,
যখন গোয়ার স্বাধীনতার জন্য সংঘর্ষ হয়েছে, তখন সবাই মিলে একসাথে লড়েছে, একসঙ্গে সংঘর্ষ করেছে। বিদেশি সরকারের বিরুদ্ধে ‘কিন্টোস বিপ্লব’-এ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এখানকার নেটিভ ক্রিশ্চিয়ানরাই। এটাই ভারতের আসল পরিচয়। এদেশে মত ও মতান্তর থাকলেও, সকল রাজনৈতিক দলের একটাই উদ্দেশ্য – মানবতার সেবা, সমস্ত মানুষের সেবা। ভারতের এই একতা, এই মিশ্র সংস্কৃতির পরিচয়ের প্রশংসা সারা পৃথিবী করে। সম্প্রতি আমি ইতালি এবং ভ্যাটিকান সিটিতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার পোপ ফ্রান্সিসজির সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে। ভারতের প্রতি তাঁর মনোভাব আমাকে অভিভূত করেছে। আমি তাঁকে ভারতে আসার জন্য আমন্ত্রণও জানিয়েছি, আর আমি আপনাদের অবশ্যই বলতে চাইব যে তিনি আমার আমন্ত্রণ স্বীকার করে বলেছিলেন, “দিস ইজ দ্য গ্রেটেস্ট গিফট ইউ হ্যাভ গিভেন মি।” এটাই ভারতের বিবিধতা, আমাদের স্পন্দিত গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর এই শ্রদ্ধা আমাকে আপ্লুত করেছে।
বন্ধুগণ,
গোয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সর্বদাই গোয়াকে অতুলনীয় করে রেখেছে। কিন্তু এখন এখানে যে সরকার রয়েছে তা গোয়ার আরেকটি পরিচয়কে শক্তিশালী করে তুলছে। এই নতুন পরিচয় হল – প্রত্যেক কাজে প্রথম হওয়া, টপ করা। বাকি জায়গায় যখন কোনও কাজ শুরু হয় কিংবা এগোতে থাকে, গোয়া ততদিনে সেই কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলে। পর্যটক গন্তব্য হিসেবে সারা পৃথিবীর মানুষ গোয়াকে পছন্দ করেন। কিন্তু এখন সুশাসনের ক্ষেত্রেও গোয়া সবার ওপরে রয়েছে। পার-ক্যাপিটা ইনকামের ক্ষেত্রেও গোয়া সবার ওপরে। ওপেন ডিফেকেশন-ফ্রি রাজ্য হিসেবে গোয়া ১০০ শতাংশ সফল। মেয়েদের স্কুলে স্বতন্ত্র শৌচালয়ের সুবিধার ক্ষেত্রে গোয়া ১০০ শতাংশ সফল। দরজায় দরজায় ময়লা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও গোয়া ১০০ শতাংশ সফল। প্রত্যেক বাড়িতে নলের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রেও গোয়া ১০০ শতাংশ সফল। আধার এনরোলমেন্টের ক্ষেত্রে গোয়াতে ১০০ শতাংশ কাজ হয়েছে। খাদ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে গোয়া সবার আগে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মাধ্যমে অল ওয়েদার রোড কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে গোয়া ১০০ শতাংশ কাজ করেছে। জন্ম নথিভুক্তিকরণের ক্ষেত্রেও গোয়া ১০০ শতাংশ সফল। এই তালিকা এত দীর্ঘ যে গুনে শেষ করা যাবে না। প্রমোদজি আপনাকে এবং আপনার গোটা টিমকে শুভেচ্ছা জানাই। গোয়া যতকিছু অর্জন করেছে তা অভূতপূর্ব। গোয়ার জনগণের এই সাফল্য সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। এখন আপনাদের আরেকটি নতুন সাফল্যের জন্য গোয়া সরকার এবং গোয়াবাসীকে আমি বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাতে চাই। এটি হল – ১০০ শতাংশ করোনা টিকাকরণ। গোয়ার সকল যোগ্য ব্যক্তিরা ইতিমধ্যেই টিকা নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজের জন্য অভিযানও এখানে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এক্ষেত্রেও আপনারা দেশের সকল রাজ্যের থেকে এগিয়ে। সেজন্য আমি গোয়ার জনগণকে শুভেচ্ছা জানাই।
ভাই ও বোনেরা,
গোয়ার এই সাফল্যগুলিকে, এই নতুন পরিচয়কে যখন আমি শক্তিশালী হতে দেখি, তখন আমার অভিন্ন বন্ধু মনোহর পাররিকরজির কথা মনে পড়ে। তিনি গোয়ার উন্নয়নকে একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। গোয়ার মানুষ যে কত সৎ, প্রতিভাবান এবং পরিশ্রমী হতে পারেন তা দেশবাসী মনোহর পাররিকরজির মধ্যে দেখেছে। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তিনি কিভাবে নিজের রাজ্য ও দেশবাসীর জন্য কাজ করে গেছেন সেটা আমরা দেখেছি। আজকের এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমি আমার পরম মিত্র এবং গোয়ার মহান সুপুত্র মনোহরজিকে প্রণাম জানাই।
বন্ধুগণ,
গোয়ার উন্নয়নের জন্য, গোয়াতে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা বৃদ্ধির জন্য যে অভিযান পাররিকরজি শুরু করেছিলেন, তা আজও ততটাই উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। করোনার মতো এত ভয়ঙ্কর বিশ্বব্যাপী মহামারী থেকে গোয়া যত দ্রুত উঠে আসছে, সেখানে সেই উদ্দীপনাই পরিলক্ষিত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারও পর্যটন উপযোগী একটি নতুন উচ্চতা প্রদানের জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে। ভিসা নিয়মগুলিকে সরল করা থেকে শুরু করে ই-ভিসা সম্পন্ন দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি করা ইত্যাদি পদক্ষেপের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পকে সাহায্য করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি যে ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল হয়েছে তার সাফল্য থেকেই বোঝা যায় গোয়াতে পর্যটন কিভাবে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে, কিভাবে বাড়ছে।
বন্ধুগণ,
যেভাবে গোয়া সরকার এখানে ভালো সড়কপথ নির্মাণ করেছে, পরিকাঠামো এবং পরিষেবাকে শক্তিশালী করেছে, তা থেকে এই রাজ্যে পর্যটকদের সুবিধা যেমন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনই আজ সারা দেশে হাইওয়ে, এক্সপ্রেসওয়ে এবং হাইটেক ইনফ্রাস্ট্রাকচারকে আধুনিক করে তোলা হচ্ছে। রেলওয়ের আমূল সংস্কার হচ্ছে। দেশের অনেক শহরে নতুন নতুন বিমানবন্দর গড়ে উঠছে। এর ফলে জনগণের যাতায়াত সহজ হচ্ছে। এখন যদি কেউ গোয়া আসার কথা ভাবেন, তখন রাস্তার কথা ভেবে, গুরুত্বের কথা ভেবে পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে না। এই মিশনকে এখন আরও গতি প্রদান করার জন্য, শক্তি প্রদান করার জন্য পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান-এর কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছরগুলিতে এই মিশন গতি শক্তি দেশে পরিকাঠামো এবং পর্যটনের একটি নতুন যুগের সূত্রপাত করবে।
বন্ধুগণ,
গোয়ার একদিকে যেমন অনন্ত সমুদ্র রয়েছে, অন্যদিকে এখানকার যুব সম্প্রদায়ের সমুদ্রের মতো ব্যাপক স্বপ্ন রয়েছে। এই স্বপ্নগুলি বাস্তবায়নের জন্য তেমনই ব্যাপক দূরদৃষ্টি থাকতে হবে। আমি এটা বলতে পারি যে, প্রমোহ সাওয়ান্তজি এমনই একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ। তিনি ও তাঁর টিম এমনই দূরদৃষ্টি নিয়ে লাগাতার কাজ করছে। আজ গোয়ার স্কুলগুলিতে শিশুদের ফিউচার-রেডি এডুকেশন-এর জন্য কোডিং এবং রোবোটিক্সকে প্রমোট করা হচ্ছে। প্রযুক্তিগত শিক্ষাকে ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার জন্য সরকার ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে। আজ এখানে যে এভিয়েশন স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের উদ্বোধন হল, সেটিও এখন যুব সম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এভাবে আজ দেশ যেভাবে আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের সঙ্কল্প নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তার পাশাপাশি গোয়া রাজ্য সরকারের চালু করা ‘স্বয়ংপূর্ণ গোয়া মিশন’ দেশকে শক্তিশালী করে তুলছে। এই মিশনে অংশগ্রহণকারী ‘স্বয়ংপূর্ণ মিত্র’দের সঙ্গে প্রযুক্তির মাধ্যমে কথা বলার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আপনারা সবাই মিলে যেভাবে গোয়াকে আত্মনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে এগিয়ে এসেছেন, যেভাবে বর্তমান সরকার ডোর-টু-ডোর পরিষেবা দিচ্ছে, সমস্ত সরকারি পরিষেবাকে যেভাবে অনলাইনের মাধ্যমে যুক্ত করা হচ্ছে, যত দ্রুতগতিতে দুর্নীতি দূর হচ্ছে, এটাই প্রকৃত অর্থে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াস’-এর সঙ্কল্প যা গোয়া আজ বাস্তবায়িত হতে দেখছে।
বন্ধুগণ,
আজ যেভাবে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে দেশ স্বাধীনতার শতবর্ষ পালনের জন্য নতুন সঙ্কল্প গ্রহণ করছে, তেমনই আমি গোয়াবাসীকে আহ্বান জানাই, আপনারা গোয়ার মুক্তির ৭৫ বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আপনাদের গোয়াকে কোথায় পৌঁছে দিতে চান, তা ঠিক করে একটি নতুন সঙ্কল্প নিন, নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। সেজন্য যে নিরন্তর কাজ করে যাওয়ার শক্তি গোয়া এতদিন দেখেছে, সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের থামলে চলবে না। আমাদের গতি কম করলে চলবে না। “গোঁয় আনী গোঁয়কারাঁচী, তোখণায় করীত, তিতকী ধোডীচ! তুমকাঁ সগলয়াঁক, পরত এক ফাওয়ট, গোঁয় মুক্তীদিসাচীঁ, পরবীঁ দিওয়ন, সগলয়াঁখাতীর, বরী ভলায়কী আনী য়শ মাগতাঁ।”
অনেক অনেক ধন্যবাদ!
ভারতমাতার জয়! ভারতমাতার জয়! ভারতমাতার জয়!
ধন্যবাদ!