ভারত মাতার জয়,
ভারত মাতার জয়,
ভারত মাতার জয়,
মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সি.পি. রাধাকৃষ্ণন জি, আমাদের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডে জি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী রাজীব রঞ্জন সিং জি, সর্বানন্দ সোনোয়াল জি, মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস জি, অজিত দাদা পাওয়ার জি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার অন্যান্য সহকর্মীরা, মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রীগণ, অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এবং আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা!
আজ সন্ত সেনাজি মহারাজের মৃত্যুবার্ষিকী। আমি তাঁকে প্রণাম জানাই। আমার সমস্ত প্রিয় বোনদের এবং আমার প্রিয় ভাইদেরকে এই সেবকের নমস্কার।
বন্ধুগণ,
আজ এই অনুষ্ঠানের আলোচনার আগে আমি আমার মনের অনুভূতি প্রকাশ করতে চাই। ২০১৩ সালে যখন ভারতীয় জনতা পার্টি আমাকে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসাবে নিশ্চিত করেছিল, আমি প্রথম যে কাজটি করেছিলাম, তা হল রায়গড় দুর্গে গিয়ে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের সমাধির সামনে বসে প্রার্থনা। একজন ভক্ত যেমন ভক্তিভরে তার প্রিয় দেবতার কাছে প্রার্থনা করে সেই আশীর্বাদ নিয়ে আমি জাতীয় সেবার নতুন যাত্রা শুরু করেছিলাম। সম্প্রতি সিন্ধুদুর্গে যা কিছু ঘটেছে,…… আমার জন্যে, এবং আমার সমস্ত সহকর্মীর কাছে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ শুধু একটি নাম নয়। আমাদের কাছে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ শুধু একজন রাজা, মহারাজা, রাজপুরুষ মাত্র নন, আমাদের কাছে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ একজন আরাধ্য দেবতা। আর আজ আমি আমার মাথা নত করে আমার প্রিয় ভগবান ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের পায়ে মাথা রেখে তাঁর কাছে ক্ষমা চাইছি। আমাদের মূল্যবোধ আলাদা, আমরা সেই ধরনের মানুষ নই, যাঁরা ভারত মাতার মহান সন্তান বীর সাভারকারকে গালিগালাজ ও অপমান করে চলে, যাঁরা দেশপ্রেমিকদের আবেগকে চূর্ণ করে। তা সত্ত্বেও, তাঁরা বীর সাভারকরকে গালি দেওয়ার পরেও ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত নন, তাঁরা আদালতে গিয়ে লড়াই করতে প্রস্তুত। এত বড় মহান পুত্রকে অপমান করে যাঁরা অনুতপ্ত হন না, মহারাষ্ট্রের জনগণের এখন তাঁদের মূল্যবোধ সম্পর্কে জানা উচিত। আর এমনই আমাদের মূল্যবোধ যে আজ আমি এই মাটিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই প্রথম যে কাজটি করেছি তা হল, আমার প্রিয় ভগবান ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের চরণে মাথা নত করে ক্ষমা প্রার্থনা। আর শুধু তাই নয়, যাঁরা ছত্রপতি শিবাজি মহারাজকে তাঁদের আরাধ্য মনে করেন তাঁদের হৃদয়ে যে গভীর আঘাতের সৃষ্টি হয়েছে, আমি আমার মাথা নত করে তাঁদের কাছেও ক্ষমা চাইছি। আমার মূল্যবোধ ভিন্ন। আমার কাছে আমাদের আরাধ্য দেবতার থেকে বড় আর কিছুই নেই।
বন্ধুগণ,
মহারাষ্ট্রের উন্নয়ন যাত্রায় আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। ভারতের উন্নয়ন যাত্রার জন্য এটি একটি বড় দিন। উন্নত ভারতের সঙ্কল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল উন্নত মহারাষ্ট্র। এই কারণেই, গত দশ বছর হোক বা এখন আমার সরকারের তৃতীয় মেয়াদে, মহারাষ্ট্রের জন্য ক্রমাগত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রের কাছেও উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সামর্থ্য ও সম্পদ রয়েছে। এখানে সমুদ্র উপকূলও রয়েছে, এই উপকূলগুলি থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাসও রয়েছে। আর এখানে ভবিষ্যতের জন্য অপার সম্ভাবনাও রয়েছে। মহারাষ্ট্র তথা ভারত যাতে এই সুযোগগুলির সম্পূর্ণ সুবিধা পায় তা সুনিশ্চিত করতে, আজ ওয়াঢওয়ন সমুদ্র বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এ বন্দর নির্মাণে ব্যয় হবে ৭৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এটি হবে দেশের সবচাইতে বড় কন্টেইনার বন্দর। এটি শুধু দেশেরই নয়, বিশ্বের গভীরতম বন্দরগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র বন্দর হয়ে উঠবে। আজকে দেশের সব কটি কন্টেইনার বন্দর থেকে মোট যত কন্টেইনার আসা-যাওয়া করে, এর থেকে বেশি কনটেইনার শুধু ওয়াধওয়ন সমুদ্র বন্দরে আসাযাওয়া করবে। আপনি কল্পনা করতে পারেন যে, এই সমুদ্র বন্দরটি মহারাষ্ট্র তথা দেশের জন্য বাণিজ্য ও শিল্পের অগ্রগতির কত বড় কেন্দ্র হয়ে উঠবে। এতদিন এই এলাকার পরিচয় ছিল শুধু তার প্রাচীন দুর্গ দিয়ে চিহ্নিত করা হতো, এখন আধুনিক বন্দর দিয়েও এই এলাকা চিহ্নিত করা হবে। আমি পালঘরের মানুষ, মহারাষ্ট্রের মানুষ এবং দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
২-৩ দিন আগে, আমাদের সরকারও দীঘি বন্দর শিল্প এলাকার উন্নয়নের অনুমোদন দিয়েছে । তার মানে মহারাষ্ট্রের মানুষের জন্য এটি দ্বিগুণ সুখবর। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের রাজধানী রায়গড়ে এই শিল্প এলাকা গড়ে উঠতে চলেছে। অতএব, এটি মহারাষ্ট্রের পরিচয় এবং ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের স্বপ্নের প্রতীক হয়ে উঠবে। দিঘী বন্দর শিল্প এলাকাও পর্যটন ও ইকো-রিসোর্টকে উৎসাহিত করবে।
বন্ধুগণ,
আজ এখানে জেলে ভাই- বোনদের জন্য ৭০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪০০ কোটি টাকারও বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই সমস্ত প্রকল্পের জন্য আমি আমার জেলে ভাই- বোনদের এবং আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। ওয়াঢওয়ন সমুদ্র বন্দর হোক, দীঘি সমুদ্র বন্দর শিল্প এলাকার উন্নয়ন হোক, মৎস্য প্রকল্প হোক, এত বড় বড় কাজ মাতা মহালক্ষ্মী দেবী, মাতা জীওদানী এবং ভগবান তুঙ্গারেশ্বরের আশীর্বাদেই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। আমি মা মহালক্ষ্মী দেবী, মাতা জীওদানী এবং ভগবান তুঙ্গারেশ্বরকে শত শত প্রণাম জানাই।
বন্ধুগণ,
একটা সময় ছিল যখন ভারতকে বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী ও শক্তিশালী দেশগুলির মধ্যে গণ্য করা হত। ভারতের এই সমৃদ্ধির একটি প্রধান ভিত্তি ছিল - ভারতের সামুদ্রিক সামর্থ্য, আমাদের এই শক্তি সম্পর্কে মহারাষ্ট্রের থেকে ভাল আর কে জানবে? ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ, তিনি সমুদ্র বাণিজ্য ও সমুদ্র শক্তিকে এক নতুন উচ্চতা দিয়েছিলেন। দেশের অগ্রগতির জন্য তিনি নতুন নতুন নীতি প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একটা সময়ে আমাদের শক্তি এতটাই ছিল যে দরিয়া সারং কানহোজি আংরে সমগ্র ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে প্রবল টক্কর দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার পর সেই ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। শিল্পোন্নয়ন থেকে শুরু করে বাণিজ্য পর্যন্ত - সবক্ষেত্রে ভারত পিছিয়ে যেতে থাকে।
কিন্তু বন্ধুগণ,
এখন এই ভারত, একটি নতুন ভারত। নতুন ভারত ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়, নতুন ভারত নিজের সামর্থ্যকে চেনে, নতুন ভারত নিজের গৌরবকে চেনে, দাসত্বের শৃঙ্খলের প্রতিটি চিহ্নকে পেছনে ফেলে রেখে, নতুন ভারত সামুদ্রিক পরিকাঠামো গড়ার ক্ষেত্রে নতুন নতুন মাইলফলক স্থাপন করছে।
বন্ধুগণ,
গত এক দশকে, ভারতের উপকূলরেখায় উন্নয়ন অভূতপূর্ব গতি পেয়েছে। আমরা সমুদ্র বন্দরগুলোকে আধুনিক করে তুলেছি। আমরা নৌপথগুলির উন্নয়ন করেছি। জাহাজ তৈরির কাজ যেন ভারতে হয় এবং ভারতের মানুষের কর্মসংস্থান হয় সেদিকে সরকার জোর দিয়েছে। এ দিকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। আজ আমরা তার ফলাফলও দেখতে পাচ্ছি। অধিকাংশ সমুদ্র বন্দরের ক্ষমতা আগের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে, বেসরকারি বিনিয়োগও বেড়েছে এবং জাহাজগুলির ট্রানজিট বা আসাযাওয়ার সময়ও কমেছে। এতে লাভবান হচ্ছে কারা? আমাদের শিল্পপতি, আমাদের ব্যবসায়ীদের খরচ কমেছে। এতে আমাদের তরুণরা উপকৃত হচ্ছে, তাঁরা নতুন নতুন সুযোগ পাচ্ছে। এতে অনেক নাবিকও নতুন নতুন পরিষেবা পাচ্ছেন।
বন্ধুরা,
আজ সারা বিশ্বের নজর ওয়াঢওয়ন সমুদ্র বন্দরের দিকে। বিশ্বের খুব কম বন্দর আছে যেগুলি ২০ মিটার জলের গভীরতা সম্পন্ন ওয়াঢওয়ন সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে মেলে। ফলে হাজার হাজার জাহাজ ও কনটেইনার এ বন্দরে আসবে, পাল্টে যাবে এই সমগ্র অঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র। সরকার ওয়াঢওয়ন সমুদ্র বন্দরকে রেলপথ ও হাইওয়ের মাধ্যমে দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে যুক্ত করবে। এই ওয়াঢওয়ন সমুদ্র বন্দরের কারণে এখানে অনেক নতুন ব্যবসা শুরু হবে। এখানে গুদামজাতকরণের কাজে অনেক অগ্রগতি হবে এবং সোনায় সুহাগার মতো এর অবস্থান হল রেলের ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডোর আর দিল্লি মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়ের খুব কাছাকাছি, শুধু যুক্ত করতে হবে। তখন সারা বছর এখান থেকে কার্গো আসবে এবং যাবে, ফলে স্থানীয় মানুষ এর থেকে সর্বাধিক সুবিধা পাবেন, আমার মহারাষ্ট্রের ভাই-বোনেরা লাভবান হবে, আমাদের নতুন প্রজন্ম লাভবান হবে।
বন্ধুগণ,
মহারাষ্ট্রের উন্নয়ন আমার সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। আজ মহারাষ্ট্র 'মেক ইন ইন্ডিয়া' থেকে উপকৃত হচ্ছে। আজ মহারাষ্ট্র স্বনির্ভর ভারত অভিযান থেকে উপকৃত হচ্ছে। আজ আমাদের মহারাষ্ট্র ভারতের অগ্রগতিতে একটি বিশাল ভূমিকা পালন করছে, কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে মহারাষ্ট্রে আমাদের বিরোধী দলগুলি সর্বদা আপনার উন্নয়ন এবং আপনার মঙ্গলকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। আজকে এর আরেকটি উদাহরণ দিই।
ভাই ও বোনেরা,
আমাদের দেশের অনেক বছর ধরেই বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য একটি বড় এবং আধুনিক বন্দরের প্রয়োজন ছিল। মহারাষ্ট্রের পালঘর এর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা। এই বন্দর সব আবহাওয়ায় কাজ করতে পারে। কিন্তু, এই প্রকল্পটি ৬০ বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছিল। কিছু লোক মহারাষ্ট্র ও দেশের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু হতে দিচ্ছিল না। ২০১৪ সালে, আপনারা সবাই আমাদের দিল্লিতে সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে যখন আমাদের বন্ধু দেবেন্দ্র জির সরকার ক্ষমতায় আসে, তিনি এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ শুরু করেছিলেন। ২০২০ সালে এখানে বন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এরপর সরকার পরিবর্তন হওয়ায় আড়াই বছর এখানে কোনও কাজ হয়নি। আপনারা আমাকে বলুন, এই প্রকল্প থেকে এখানে কয়েক লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমান করা হয়েছে। এখানে প্রায় ১২ লক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। মহারাষ্ট্রের এই উন্নয়নে কার আপত্তি থাকতে পারে? কারা মহারাষ্ট্রের উন্নয়নে বাধা দিয়েছিল? মহারাষ্ট্রের যুবকদের কর্মসংস্থানে যাঁদের আপত্তি ছিল এই মহান ব্যক্তিরা কারা? পুর্ববর্তী সরকারগুলো কেন এ কাজ করতে দেয়নি? মহারাষ্ট্রের মানুষ কখনওই এটা ভুলে যাবেন না। সত্য হল এটাই যে, কিছু মানুষ মহারাষ্ট্রকে পিছনে রাখতে চায়, যেখানে আমাদের এনডিএ সরকার, আমাদের মহায়ুতির (মহাজোটের) সরকার, মহারাষ্ট্রকে দেশের মধ্যে সবার থেকে বেশি এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
বন্ধুগণ,
যখন সমুদ্র- সংশ্লিস্ট নানা সুযোগের কথা আসে, তখন এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার আমাদের জেলে ভাই ও বোনদের কথা বলতে হয়। জেলে ভাই ও বোনেরা! আমরা জানি, এখানকার ৫২৬টি মাছ ধরার গ্রামকে একত্রে বলা হয় কলিওয়াড়ে এবং এখানে ১৫ লক্ষ জেলেদের জনসংখ্যা নিয়ে, মহারাষ্ট্রের মৎস্য ক্ষেত্রটি বিশাল। একটু আগেই আমি প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনার সুবিধাভোগীদের সঙ্গেও কথা বলছিলাম। আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে গত ১০ বছরে এই মৎস্য ক্ষেত্রটির চিত্র কীভাবে বদলেছে, তাঁদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে, কীভাবে দেশের প্রকল্পগুলি এবং সরকারের সেবার মনোভাবের ফলে কোটি কোটি জেলেদের জীবন বদলে যাচ্ছে। আপনাদের কঠোর পরিশ্রম কতটা আশ্চর্যজনক সুফলদায়ী হয়েছে তা জেনে আপনারাও খুশি হবেন! আজ ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। ২০১৪ সালে দেশে মাত্র ৮০ লক্ষ টন মাছ উৎপন্ন হয়েছিল। বর্তমানে ভারত প্রায় ১৭০ লক্ষ টন মাছ উৎপাদন করছে। তার মানে আপনারা মাত্র ১০ বছরে আপনাদের মাছের উৎপাদন দ্বিগুণ করেছেন। বর্তমানে ভারতের সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিও দ্রুত বাড়ছে। ১০ বছর আগে দেশ থেকে চিংড়ি রপ্তানি হতো ২০ হাজার কোটি টাকারও কম। আজ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের চিংড়ি রপ্তানি হচ্ছে। অর্থাৎ চিংড়ি রপ্তানিও আজ দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। আমরা যে নীল বিপ্লব পরিকল্পনা শুরু করেছি তার সাফল্য সর্বত্র দৃশ্যমান। এই প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষাধিক নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমাদের সরকারের ক্রমাগত প্রচেষ্টার ফলে কোটি কোটি জেলের রোজগার বেড়েছে এবং তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে।
বন্ধুগণ,
মৎস্য উৎপাদনে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়াতেও আমাদের সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনার আওতায় হাজার হাজার মহিলাকে সাহায্য করা হয়েছে। আপনারা এটাও জানেন যে মাছ ধরতে যাওয়া ব্যক্তিদের কতটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রে যেতে হতো! বাড়ির মহিলারা, পুরো পরিবার দুশ্চিন্তায় দিন কাটাতেন। আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ও কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যভারের মাধ্যমে এই বিপদও কমিয়ে আনছি। আজ থেকে যে ভেসেল কমিউনিকেশন বা নৌযান যোগাযোগ ব্যবস্থা শুরু হলো, আমি নিশ্চিত যে, এটি আমাদের জেলে ভাই-বোনদের জন্য একটি বড় আশীর্বাদে পরিণত হবে। সরকার এক লক্ষ মাছ ধরার জাহাজে ট্রান্সপন্ডার বসাতে যাচ্ছে। এর সাহায্যে, আমাদের সমস্ত জেলেরা সবসময় তাঁদের পরিবার, নৌকার মালিক, সরকারের মৎস্য বিভাগ এবং যারা সমুদ্রে জেলেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে, সেই উপকূলরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। ঘূর্ণিঝড় বা সাগরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সময় আমাদের জেলে বন্ধুরা যখন খুশি উপগ্রহের সাহায্যে উপরোক্ত সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে তাঁদের বার্তা পৌঁছে দিতে পারবে। সংকটের সময়ে, আপনাদের জীবন বাঁচানো এবং সবার আগে আপনাদের কাছে পৌঁছানো আমাদের সরকারের জন্য একটি বিশাল অগ্রাধিকার।
বন্ধুগণ,
আমাদের জেলে ভাই-বোনদের জাহাজ যাতে নিরাপদে ফিরতে পারে সেজন্য ১১০টিরও বেশি মৎস্য বন্দর ও ল্যান্ডিং সেন্টার বা অবতরণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। কোল্ড চেইনব্যবস্থা থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা, নৌকার জন্য ঋণ প্রকল্প বা প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনা, এই সমস্ত প্রকল্প জেলে ভাই-বোনদের সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়েছে। আমরা উপকূলীয় গ্রামের উন্নয়নে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি। আপনাদের সক্ষমতা বাড়াতে মৎস্য আহরণের সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলোকেও শক্তিশালী করা হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
সমাজে যুগ যুগ ধরে পিছিয়ে পড়াদের জন্য কাজ করা থেকে শুরু করে সুবিধাবঞ্চিতদের সুযোগ দেওয়া – প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজেপি এবং এনডিএ সরকার পূর্ণ নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করেছে। দেখুন, এত দশক ধরে দেশে জেলে ভাই-বোন ও আদিবাসীদের কী অবস্থা ছিল? পুরনো সরকারগুলির নীতিতে এসব সমাজ সবসময়ই প্রান্তিক ছিল। দেশে এত বড় বড় জনজাতি অধ্যুষিত এলাকা রয়েছে। অথচ আদিবাসীদের কল্যাণে একটি বিভাগও তৈরি করা হয়নি। বিজেপি এনডিএ সরকারই প্রথম দেশে একটি পৃথক জনজাতি উন্নয়ন মন্ত্রক প্রতিষ্ঠা করেছে। আমাদের সরকার জেলেদের কল্যাণেও আলাদা মন্ত্রক প্রতিষ্ঠা করেছে। যে জনজাতি অঞ্চলগুলি সবসময় উপেক্ষিত ছিল, সেগুলি এখন প্রধানমন্ত্রী জনমন যোজনার সুবিধা পাচ্ছে। আমাদের নানা জনজাতি সমাজ, আমাদের মৎস্যজীবী সমাজ আজ ভারতের অগ্রগতিতে একটি বড় অবদান রাখছে।
বন্ধুগণ,
আজ আমি মহাযুতি (মহাজোট) সরকারের আরও একটি বিষয়ে বিশেষভাবে প্রশংসা করব। মহারাষ্ট্র নারীর ক্ষমতায়ন এবং মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নে আজ দেশকে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। আজ মহারাষ্ট্রে অনেক উচ্চ পদে মহিলারা চমৎকার কাজ করছেন। রাজ্যের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মুখ্য সচিব হিসেবে রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশনা দিচ্ছেন সুজাতা সৈনিক জি। প্রথমবারের মতো, ডিজিপি রশ্মি শুক্লা জি রাজ্য পুলিশ বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রথমবারের মতো রাজ্যের বনবাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন শমিতা বিশ্বাস জি। প্রথমবারের মতো, রাজ্যের আইন বিভাগের প্রধান হিসাবে শ্রীমতি সুবর্ণ কেওয়ালে জি একটি বিশাল দায়িত্ব সামলাচ্ছেন৷ একইভাবে, জয়া ভগত জি রাজ্যের প্রিন্সিপাল একাউন্টেন্ট জেনারেল হিসেবে তাঁর গুরুদায়িত্ব পালন করছেন। আর মুম্বাইয়ের কাস্টমস বিভাগের নেতৃত্ব আজ প্রাচী স্বরূপ জির হাতে। মুম্বাই মেট্রোর এমডি অশ্বিনী ভিদে জি মুম্বাইয়ের বিশাল এবং সমস্যাসংকুল আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো-৩ -এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মহারাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও মহিলারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মহারাষ্ট্র স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ড. মাধুরী কানিটকার। মহারাষ্ট্রের স্কিলস ইউনিভার্সিটির প্রথম উপাচার্য হিসেবে ডঃ অপূর্ব পালকার জি অনেক নতুন নতুন উদ্যোগ নিচ্ছেন। এমন অনেক বড় এবং অত্যন্ত দায়িত্বশীল পদ রয়েছে, যেখানে মহারাষ্ট্রে নারী শক্তি তার শ্রেষ্ঠ প্রদর্শন তুলে ধরছে। একবিংশ শতাব্দীর নারী শক্তি যে সমাজকে নতুন দিশা দেখাতে প্রস্তুত তার প্রমাণ তাঁদের এই অনুপম সাফল্য। এই নারী শক্তি উন্নত ভারতের একটি প্রধান ভিত্তি।
বন্ধুগণ,
আজ আমি মহাযুতি (মহাজোট) সরকারের আরও একটি বিষয়ে বিশেষভাবে প্রশংসা করব। মহারাষ্ট্র নারীর ক্ষমতায়ন এবং মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নে আজ দেশকে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। আজ মহারাষ্ট্রে অনেক উচ্চ পদে মহিলারা চমৎকার কাজ করছেন। রাজ্যের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মুখ্য সচিব হিসেবে রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশনা দিচ্ছেন সুজাতা সৈনিক জি। প্রথমবারের মতো, ডিজিপি রশ্মি শুক্লা জি রাজ্য পুলিশ বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রথমবারের মতো রাজ্যের বনবাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন শমিতা বিশ্বাস জি। প্রথমবারের মতো, রাজ্যের আইন বিভাগের প্রধান হিসাবে শ্রীমতি সুবর্ণ কেওয়ালে জি একটি বিশাল দায়িত্ব সামলাচ্ছেন৷ একইভাবে, জয়া ভগত জি রাজ্যের প্রিন্সিপাল একাউন্টেন্ট জেনারেল হিসেবে তাঁর গুরুদায়িত্ব পালন করছেন। আর মুম্বাইয়ের কাস্টমস বিভাগের নেতৃত্ব আজ প্রাচী স্বরূপ জির হাতে। মুম্বাই মেট্রোর এমডি অশ্বিনী ভিদে জি মুম্বাইয়ের বিশাল এবং সমস্যাসংকুল আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো-৩ -এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মহারাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও মহিলারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মহারাষ্ট্র স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ড. মাধুরী কানিটকার। মহারাষ্ট্রের স্কিলস ইউনিভার্সিটির প্রথম উপাচার্য হিসেবে ডঃ অপূর্ব পালকার জি অনেক নতুন নতুন উদ্যোগ নিচ্ছেন। এমন অনেক বড় এবং অত্যন্ত দায়িত্বশীল পদ রয়েছে, যেখানে মহারাষ্ট্রে নারী শক্তি তার শ্রেষ্ঠ প্রদর্শন তুলে ধরছে। একবিংশ শতাব্দীর নারী শক্তি যে সমাজকে নতুন দিশা দেখাতে প্রস্তুত তার প্রমাণ তাঁদের এই অনুপম সাফল্য। এই নারী শক্তি উন্নত ভারতের একটি প্রধান ভিত্তি।
বন্ধুগণ,
‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াস’ এনডিএ সরকারের মন্ত্র। আমি আত্মবিশ্বাসী যে আপনাদের সকলের সহযোগিতায় আমরা মহারাষ্ট্রকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাব। আপনারা আমাদের মহাযুতি সরকারের উপর আপনাদের আশীর্বাদ ও ভরসা রাখুন। আবারও, দেশের সর্ববৃহৎ বন্দর এবং অনেক জেলে ভাইদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য আমি আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাই।
আমার সঙ্গে বলুন-
ভারত মাতার জয়,
দুই হাত তুলে পূর্ণ শক্তি দিয়ে বলুন-
ভারত মাতার জয়,
আজ সমুদ্রের প্রতিটি ঢেউও মিশছে আপনাদের সঙ্গে এই ভারত মাতার জয় -জয়কারের স্বরে-
ভারত মাতার জয়,
ভারত মাতার জয়,
ভারত মাতার জয়,
অনেক অনেক ধন্যবাদ।