স্কুলে বহুমুখী ক্রীড়া অনুশীলন কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
সিন্ধিয়া স্কুলের ১২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেন
প্রধানমন্ত্রী স্কুলের বিশিষ্ট প্রাক্তনী এবং সফল শিক্ষার্থীদের হাতে বার্ষিক পুরস্কার তুলে দেন
“দূরদর্শী মহারাজা প্রথম মাধো রাও সিন্ধিয়া আগামী প্রজন্মের জন্য এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন”
“গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের দীর্ঘমেয়াদি অভূতপূর্ব কিছু পরিকল্পনার জন্য যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”
“দেশের বর্তমান যুগের যুব সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধির জন্য একটি ইতিবাচক পরিবেশ গড়ে তুলতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি”
“সিন্ধিয়া স্কুলের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ‘বিকশিত ভারত’ গড়ে তোলার জন্য পেশাগত ক্ষেত্রে অথবা অন্যত্র উদ্যোগী হতে হবে”
“ভারত বর্তমান সময়কালে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তার ব্যাপ্তি বিশাল”
“আপনাদের স্বপ্ন পূরণ করাই আমার সঙ্কল্প”

মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রদ্ধেয় মাঙ্গু ভাই প্যাটেল জি, এই রাজ্যের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় শিবরাজ সিং চৌহান জি, সিন্ধিয়া স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মীগণ,  শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া জি, শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমর জি, ডক্টর জিতেন্দ্র সিং জি, স্কুল ব্যবস্থাপনার সহকর্মী ও সকল কর্মচারী, শিক্ষক ও অভিভাবকগণ এবং আমার প্রিয় তরুণ বন্ধুরা!

সিন্ধিয়া স্কুলের ১২৫ বছর পূর্তিতে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক অভিনন্দন। আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবসও আজ। সেজন্য আমি সকল দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই। এখানে এই গৌরবময় ইতিহাসের সঙ্গে আমাকে যুক্ত করার জন্য আমি আপনাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই ইতিহাস সিন্ধিয়া স্কুলের ইতিহাস এবং এই ঐতিহাসিক গোয়ালিয়র শহরেরও ইতিহাস। ঋষি গোয়ালীপা, সঙ্গীত সম্রাট তানসেন, শ্রীমন্ত মহদাজী সিন্ধিয়া জি, রাজমাতা বিজয়রাজে জি, অটল বিহারী বাজপেয়ী জি এবং ওস্তাদ আমজাদ আলি খান পর্যন্ত, গোয়ালিয়রের এই মাটি এমন সব মানুষ তৈরি করে এসেছে যাঁরা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে যাবেন।

 

এই মাটি নারী শক্তি ও সাহসী বীরাঙ্গনাদের তপোভূমি। এই মাটিতেই মহারাণী গঙ্গাবাই তাঁর গহনা বিক্রি করে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত করেছিলেন। তাই গোয়ালিয়রে এলে আমি নিজের মধ্যে শিহরণ অনুভব করি, খুব আনন্দ পাই। আর গোয়ালিয়রের সঙ্গে আমারও দুটি কারণে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। প্রথমত, আমি কাশীর সাংসদ আর সিন্ধিয়া পরিবার কাশীর সেবা ও আমাদের সংস্কৃতি রক্ষায় বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। সিন্ধিয়া পরিবার গঙ্গার তীরে অনেক ঘাট তৈরি করেছে এবং বিএইচইউ প্রতিষ্ঠার জন্য আর্থিক সাহায্য করেছে। আজ যেভাবে কাশীর উন্নয়ন হচ্ছে, তা দেখে আমরা কল্পনা করতে পারি মহারাণী বৈজাবাই এবং মহারাজ মাধব রাও জির আত্মা যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, তাঁরা কত না খুশি হচ্ছেন! 

আর আমি যেমনটি বলেছি দু’টি কারণে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে, এবার আমি আপনাদেরকে দ্বিতীয় কারণটিও বলি। গোয়ালিয়রের সঙ্গে আমার আরেকটি সম্পর্কও আছে। আমাদের জ্যোতিরাদিত্য জি গুজরাটের জামাই। সেজন্যে গোয়ালিয়রের সঙ্গেও আমার একটা সম্পর্ক যেমন আছে, তেমনই আরেকটা সংযোগ আছে, আমার নিজের গ্রাম ছিল গায়কোয়াড় রাজ্যের একটি গ্রাম। আর আমার গ্রামে নির্মিত প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয়টি গায়কওয়াড় পরিবার তৈরি করেছিল। আর আমি ভাগ্যবান যে গায়কওয়াড় জি যে স্কুলটি তৈরি করেছিলেন সেখানে আমি বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা পেতাম।

বন্ধুগণ, 

আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে – “মনস্যেকং বচস্যেকং কর্মণ্যেকং মহাত্মানাম” 

অর্থাৎ, একজন ভদ্রলোক মনে মনে যা ভাবেন, তাই বলেন এবং করেন। এটিই একজন কর্তব্যপরায়ণ ব্যক্তিত্বের পরিচয়। একজন বিবেকবান ব্যক্তি তাৎক্ষণিক লাভের জন্য নয়, আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করার জন্য কাজ করেন। একটি পুরানো প্রবাদও আছে, আপনি যদি এক বছরের চিন্তা করেন তবে শস্য বপন করুন, আপনি যদি এক দশকের কথা ভাবেন তাহলে ফল গাছ লাগান, আর আপনি যদি শতাব্দীর কথা চিন্তা করেন তাহলে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করুন।

মহারাজা মাধবরাও সিন্ধিয়া প্রথমজি, তাঁর চিন্তাভাবনা তাৎক্ষণিক লাভের জন্য নয় বরং আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যত উজ্জ্বল করার জন্য ছিল। সিন্ধিয়া স্কুল ছিল তাঁর সুদূরপ্রসারী চিন্তার ফল, তিনি জানতেন মানব সম্পদের শক্তি কেমন হয়। খুব কম লোকই ভাবেন যে মাধো রাও জি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় পরিবহন সংস্থাটি এখনও ডিটিসি হিসাবে দিল্লিতে চলছে। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জল সংরক্ষণে সমানভাবে মনোযোগী ছিলেন। সে আমলে তিনি পানীয় জল সরবরাহ  ও সেচের বিশাল ব্যবস্থা করেছিলেন। ১৫০ বছর পরেও এই 'হারসি বাঁধ' এশিয়ার বৃহত্তম মাটির বাঁধ। এই বাঁধ এখনও মানুষের জন্য দরকারী। মাধবরাও জির ব্যক্তিত্ব থেকে এই দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের সকলের জন্য শেখার বিষয়। শিক্ষা হোক, পেশা হোক, জীবন হোক বা রাজনীতি, শর্টকাট আপনাকে কিছু তাৎক্ষণিক সুবিধা এনে দিতে পারে, তবে আপনার শুধুমাত্র দীর্ঘমেয়াদী চিন্তাভাবনা করে কাজ করা উচিত। যে কোনও ব্যক্তি যদি সমাজ বা রাজনীতিতে তাৎক্ষণিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য কাজ করে, তাহলেই সমাজ ও জাতির ক্ষতি হয়।

 

বন্ধুগণ,

২০১৪ সালে দেশ যখন আমাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিল, তখন আমাদের সরকারের সামনে দুটি বিকল্প ছিল। হয় শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক লাভের জন্য কাজ করবো, অথবা দীর্ঘমেয়াদী পন্থা অবলম্বন করবো। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা ২ বছর, ৫ বছর, ৮ বছর, ১০ বছর, ১৫ বছর, ২০ বছর বিভিন্ন ‘টাইম ব্যান্ড’ বজায় রেখে তাদের জন্য কাজ করব। আজকে বলতে পারেন যে আমাদের সরকারের ১০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই ১০ বছরে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে দেশ যত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেগুলি নজিরবিহীন। আমরা  এমন সব অমীমাংসিত  সিদ্ধান্তের বোঝা থেকে দেশকে মুক্ত করেছি। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার দাবি ছিল ৬০ বছর ধরে। আমাদের সরকার এই কাজটি করেছে। চল্লিশ বছর ধরে দাবি ছিল প্রাক্তন সেনাদের ‘এক পদ এক পেনশন’ দেওয়া হোক। আমাদের সরকার এই কাজটি করেছে। জিএসটি কার্যকর করার জন্য চল্লিশ বছরের দাবি ছিল, আমাদের সরকারও এই কাজ করেছে।
কয়েক দশক ধরে মুসলিম মহিলারা তিন তালাকের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছেন। আমাদের সরকারের আমলেই তিন তালাকের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন যে মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে লোকসভা এবং বিধানসভায় মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের একটি আইন করা হয়েছে। এই কাজটিও যুগ যুগ ধরে ঝুলে ছিল। আমাদের সরকার নারী-শক্তি বন্দন আইনও প্রণয়ন করেছে।

আমার কাছে বর্তমান কাজের এত দীর্ঘ তালিকা রয়েছে যে বলতে পুরো রাত লাগবে। আমি আপনাদেরকে বলছিলাম যে এই বড় সিদ্ধান্তগুলি আমাদের সরকার যদি না নিত তাহলে এই দায়িত্ব কারা নিত? আমরা যদি এটা না করতাম, তাহলে সেই দায়িত্ব আপনাদের প্রজন্মের ওপর বর্তাতো? তাই একদিক থেকে আমরা আপনাদের প্রজন্মেরও কিছুটা বোঝা হালকা করেছি। আর আমাদের প্রচেষ্টা ছিল আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য দেশে একটি অত্যন্ত ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করা। এমন পরিবেশ যেখানে আপনাদের প্রজন্মের সুযোগের অভাব নেই। এমন একটি পরিবেশ যেখানে ভারতের যুবকরা বড় স্বপ্ন দেখতে পারে এবং তা অর্জন করতে পারে। স্বপ্ন বড়, সাফল্যও বড়. আর আমি আপনাকে এসব বলছি কারণ যখন সিন্ধিয়া স্কুল তার ১৫০ বছর পূর্ণ করবে... তখন দেশও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবে। সেই মাইলফলক হল – ভারতের স্বাধীনতার ১০০ বছর।

আজ আমাদের সরকার আগামী ২৫ বছরে দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার সংকল্প নিয়েছে। আর এটা আপনাদেরকেই করতে হবে, ভারতের তরুণ প্রজন্মকে করতে হবে। আপনাদের যৌবনের শক্তিতে আমার বিশ্বাস আছে, আপনাদের যৌবনে আমার বিশ্বাস আছে, আপনাদের যৌবনের সম্ভাবনায় আমার বিশ্বাস আছে। আর আমি আশা করি যে আপনারা এই স্বপ্নগুলি লালন করে কাজ করবেন, স্বপ্নকে সংকল্পে পরিণত করবেন এবং আপনাদের সংকল্প বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত থামবেন না। 

আগামী ২৫ বছর আপনাদের জীবনের জন্য যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ভারতের জন্য ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। সিন্ধিয়া স্কুলের প্রত্যক ছাত্রের এই সঙ্কল্প নেওয়া উচিত যে “আমি তৈরি করব উন্নত ভারত!” বন্ধুগণ, আপনারা এই শপথ নেবেন তো? আপনারা এই শপথ নেবেন যে ‘দেশ সবার আগে’ – এই ভাবনা নিয়ে প্রতিটি কাজ করব, আমি উদ্ভাবন করব, আমি অনুসন্ধান করব, আমি পেশাদারিত্বের দিক থেকে হোক কিংবা অন্য যে কোনো দিক থেকে, ভারতকে উন্নত ভারতে পরিণত করেই থামব। 

 

আর বন্ধুগণ,

আপনারা জানেন সিন্ধিয়া স্কুলের ওপর আমার এত বিশ্বাস কেন? কারণ, আপনাদের স্কুলের অনেক প্রাক্তনীকেও আমি খুব ঘনিষ্ঠভাবে জানি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ভাই জিতেন্দ্র সিং-জি এখন মঞ্চে বসে আছেন। তিনিও আপনাদের স্কুলেরই প্রাক্তনী। রেডিও-তে যাঁর আওয়াজ শুনে আমরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যেতাম, সেই আমিন সয়ানিজি, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোতি ডরজি, একটু আগেই যাঁরা আমাদের সামনে অসাধারণ অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছেন। তাছাড়াও, মিতু ব্রাদার্স আর ‘হড় হড় দাবাঙ্’ সালমন খান আর আমার বন্ধু নীতিন মুকেশজি এখানে বসে আছেন। এঁরা সবাই সিন্ধিয়া স্কুলের প্রাক্তনী। সিন্ধিয়া স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ক্যানভাস এত বড় যে সেখানে আমরা সব ধরনের রং দেখতে পাই। 

আমার নবীন বন্ধুরা,

আমাদের বিষ্ণ পুরাণে লিখিত রয়েছে –

“গায়ন্তী দেবাঃ কিল গীততানি, ধন্যস্তু তে ভারতভূমিভাগে”

অর্থাৎ, দেবতারাও এই গীত পরিবেশন করেন – যিনি এই ভারতভূমিতে জন্ম নিয়েছেন, সেই মানুষ দেবতাদের থেকেও বেশি সৌভাগ্যবান। আজ ভারত সাফল্যের যে উচ্চতায় পৌঁছেছে তা অভূতপূর্ব। গোটা বিশ্বে এখন ভারতের শৌর্যের পরিচয় পাচ্ছে। গত ২৩ আগস্ট ভারতের ‘চন্দ্রযান’ চাঁদের বুকে এমন জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে এখনও পর্যন্ত কোনো দেশ তাদের যান পাঠাতে পারেনি। কিছুদিন আগেই জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আপনারা দেখেছেন, কিভাবে ভারতের গুরুত্ব বেড়েছে। আজ ভারত বিশ্বের বৃহত্তম ও দ্রুততম উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। আজ ভারত গ্লোবাল ফিনটেক অ্যাডপশন রেট-এ এক নম্বরে পৌঁছে গেছে। আজ ভারত রিয়েল টাইম ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষ স্থানে রয়েছে। আজ ভারত স্মার্টফোন ডেটা গ্রাহক হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। 

 

আজ ভারত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যার ক্ষেত্রে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। আজ ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন নির্মাণকারী দেশে পরিণত হয়েছে। আজ ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ ইকো সিস্টেমে পরিণত হয়েছে। আজ ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এনার্জি কনজিউমারে পরিণত হয়েছে। আজ ভারত মহাকাশে নিজস্ব স্পেস স্টেশন স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আজ সকালেই আপনারা দেখেছেন যে ‘গগনযান’-এর টেস্ট ফ্লাইট আর ‘ক্রু এসকেপ সিস্টেম’-এর পরীক্ষা কিভাবে সফল হয়েছে। গোয়ালিয়রে ভারতীয় বিমানবাহিনীর এতবড় বেস রয়েছে। আপনারা প্রায়ই আকাশে তেজস বিমানের পরাক্রম দেখতে পান। আপনারা সমুদ্রে ‘আইএনএস বিক্রান্ত’-এর হুঙ্কার শুনেছেন। আজ ভারতের জন্য কোনকিছুই অসম্ভব নয়। ভারতের এই ক্রমবর্ধমান সামর্থ্য প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনাদের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনা গড়ে তুলছে। 

আপনারা ভাবুন, ২০১৪ সালের আগে আমাদের দেশে কয়েকশ’ মাত্র স্টার্ট-আপ ছিল। আজ ভারতে স্টার্ট-আপ-এর সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ। বিগত কয়েক বছরে ভারতে ১০০টিরও বেশি ইউনিকর্ন তৈরি হয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে একটি ইউনিকর্ন-এর মানে হল ন্যূনতম ৮ হাজার কোটি টাকা মূলধনের কোম্পানি। আমি নিশ্চিত যে সিন্ধিয়া স্কুলের অনেক শিক্ষার্থীও ভবিষ্যতে ইউনিকর্ন তৈরি করবে। আপনারা এই বিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করবেন, দেশের নাম উজ্জ্বল করবেন। 

ইংরেজিতে একটা কথা আছে – ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ ইয়র অয়েস্টার’ – অর্থাৎ বিশ্ব আপনাদের জন্য একটি ঝিনুক। একটি ইতিবাচক সরকার হিসেবে আমরাও আপনাদের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্রের ঝিনুক খুলে দিয়েছি। আগে আমাদের দেশে শুধু সরকারই কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি করত অথবা বিদেশ থেকে আমদানি করত। আমরা এই মহাকাশ ক্ষেত্রটিকেই আপনাদের মতো নবীন প্রজন্মের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। আগে প্রতিরক্ষার যত সাজসরঞ্জাম তাও সরকার তৈরি করত বা বিদেশ থেকে আমদানি করত। আমরা এই প্রতিরক্ষা সাজসরঞ্জাম নির্মাণের ক্ষেত্রটিও আপনাদের মতো নবীন প্রজন্মের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। এইভাবে বর্তমান সরকার আপনাদের জন্য অসংখ্য ক্ষেত্র উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে আপনাদের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র শপথ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আপনাদের আত্মনির্ভর ভারতের সঙ্কল্প নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমার আরও একটি মন্ত্রের কথা মনে রাখবেন। সব সময় স্বতন্ত্রভাবে ভাববেন। যেমন, জ্যোতিরাদিত্য সিং সিন্ধিয়াজির বাবা, আমাদের মাননীয় মাধবরাও সিন্ধিয়াজি যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি স্বতন্ত্র ভাবনা থেকেই দেশে উন্নত পরিষেবা সম্পন্ন শতাব্দী ট্রেন চালু করেছিলেন। তাঁর তিন দশক পরে ভারতে আবার এরকম আধুনিক রেল পরিষেবা চালু করা সম্ভব হয়েছে। এখন দেশে বন্দে ভারত ট্রেনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। গতকাল চালু হওয়া ‘নমো ভারত’-এর গতিও আপনারা দেখেছেন।

 

বন্ধুগণ,

এখানে আসার আগে আমি সিন্ধিয়া স্কুলের ভিন্ন ভিন্ন হাউজের নামগুলি দেখছিলাম। জ্যোতিরাদিত্যজি আমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। স্বাধীনতার সঙ্কল্পের সঙ্গে জড়িত এই নামগুলি আপনাদের জন্য অত্যন্ত প্রেরণাদায়ক। শিবাজি হাউজ, মহাদজি হাউজ, রানোজি হাউজ, দত্তাজি হাউজ, কনরখেড়জি হাউজ, নিমাজি হাউজ এবং মাধবজি হাউজ। একভাবে বলতে গেলে, আপনাদের কাছে সপ্তঋষির শক্তির মতো অনুপ্রেরণার উৎস রয়েছে। আমি ভাবছিলাম যে নবরাত্রির এই পবিত্র উৎসবের দিনগুলিতে আপনাদের সবাইকে নয়টি করে টাস্ক দেব। কারণ, স্কুলের অনুষ্ঠান আর সেখানে যদি আপনাদের হোমওয়ার্ক না দেওয়া হয়, তাহলে সেই অনুষ্ঠান কেমন করে সম্পূর্ণতা পাবে। আমি আপনাদের আজ নয়টি টাস্ক দিতে চাই। আপনারা মনে রাখবেন, কী হল ভাই,  সবার আওয়াজ কমে গেল কেন? মনে রাখবেন? এগুলি শপথ হিসেবে গ্রহণ করবেন? সারা জীবন ধরে এগুলি বাস্তবায়নের কাজ করবেন?
তাহলে বলি, প্রথমত, আপনাদের সবাইকে এখানে জল সংরক্ষণের জন্য কাজ করতে হবে। এই জল সুরক্ষা একবিংশ শতাব্দীর অনেক বড় সমস্যা। এর জন্য আপনাদের জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে, অভিযান চালাতে হবে।
দ্বিতীয়ত, সিন্ধিয়া স্কুলে গ্রাম দত্তক নেওয়ার পরম্পরা রয়েছে। আপনারাও আশপাশের গ্রামগুলিতে যান আর সেখানকার জনগণকে ডিজিটাল লেনদেন সম্পর্কে সচেতন করুন। 
তৃতীয়ত, পরিচ্ছন্নতা অভিযান। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহর দেশের মধ্যে পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। তাহলে আমাদের গোয়ালিয়র কেন পিছিয়ে থাকবে? আপনারা নিজেদের শহরের পরিচ্ছন্নতাকে তুঙ্গে তুলে নিয়ে যান আর এক নম্বর স্থানে পৌঁছে দিন।
চতুর্থত, ‘ভোকাল ফর লোকাল’। যতটা সম্ভব আপনারা স্থানীয় পণ্য ব্যবহার করুন আর স্থানীয় পণ্যের জন্য উচ্চকিত হোন। নিজেরা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ পণ্যগুলিকে ব্যবহার করুন।
পঞ্চমত, ‘ট্র্যাভেল ইন ইন্ডিয়া ফার্স্ট’। যতটা সম্ভব নিজের দেশকে আরও ভালোভাবে দেখুন, তারপর বিদেশে বেড়াতে যাবেন।
ষষ্ঠত, প্রাকৃতিক কৃষির প্রতি কৃষকদের সচেতন করে তুলুন। এই পৃথিবী মা-কে বাঁচানোর জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি একটি অভিযান।
সপ্তমত, মিলেট - যাকে আমরা ‘শ্রীঅন্ন’ নাম দিয়েছি, একে আপনাদের খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন। ‘শ্রীঅন্ন’-এর গুণাগুন সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করুন। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে এই ‘শ্রীঅন্ন’ হল সুপার ফুড।
অষ্টমত, ফিটনেস। যোগাভ্যাস কিংবা খেলাধূলাকে আপনাদের জীবনের অভিন্ন অঙ্গ করে তুলুন। আজই এখানে একটি মাল্টি-পারপাস স্পোর্টর্স কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। আপনারা এর থেকে নিজেদের লাভবান করে তুলুন।

নবমত, যত বেশি সম্ভব গরীবদের পাশে দাঁড়ান, ন্যূনতম একটি গরীব পরিবারের দায়িত্ব নিন। যতক্ষণ পর্যন্ত দেশে একটিও এমন গরীব পরিবার থাকবে যাঁদের রান্নাঘরে রান্নার গ্যাসের সংযোগ নেই, যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, পাকা বাড়ি নেই, আয়ুষ্মান কার্ড নেই, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা শান্তিতে বসবেন না।
ভারত থেকে দারিদ্র্য দূর করতে এই সঙ্কল্পগুলির বাস্তবায়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই পথে চলেই আমরা গত পাঁচ বছরে সাড়ে তেরো কোটি জনগণকে দারিদ্র্যসীমার বাইরে বের করে এনেছি। এই রাস্তায় চলেই ভারত দারিদ্র্যকে সম্পূর্ণভাবে দূর করবে এবং ১৯৪৭ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে।

বন্ধুগণ,

আজকের ভারত যাই-ই করছে তা মেগা স্কেলে করছে। সেজন্য আপনাদেরও নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছোট করে ভাবলে চলবে না। আপনাদের সমস্ত স্বপ্ন এবং সঙ্কল্প বড় মাপের হওয়া উচিত। আমি আপনাদেরকে এটাও বলতে চাই যে আপনাদের মনে স্বপ্ন জাগানোই আমার সঙ্কল্প। আপনাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা, নতুন নতুন চিন্তা, আমার সঙ্গে ‘নমো অ্যাপ’-এ শেয়ার করতে পারেন। আর এখন আমি হোয়াটসঅ্যাপ-এও রয়েছি। সেখানেও আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ হতে পারে। আপনারা চাইলে আপনাদের গোপন কথাও আমার সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে এগুলি কাউকে বলব না।

বন্ধুগণ,

জীবনকে এমনই হাসি ও আনন্দ নিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। আপনারা আনন্দে থাকুন, সুস্থ থাকুন। আপনাদের সবার ওপর আমার অনেক ভরসা। আপনাদের মনে রাখতে হবে, সিন্ধিয়া স্কুল নিছকই একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি ঐতিহ্য। মহারাজ মাধবরাও সিন্ধিয়াজির সঙ্কল্পগুলিকে এই বিদ্যালয় স্বাধীনতার আগে এবং স্বাধীনতার পরেও ক্রমাগত এগিয়ে নিয়ে গেছে। আজ এই বিদ্যালয়ের পতাকা আপনাদের হাতে রয়েছে। কিছুক্ষণ আগে যে নবীন বন্ধুদের তাঁদের সাফল্যের জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছে, আমি তাঁদেরকে আরও একবার শুভেচ্ছা জানাই। আরও একবার সিন্ধিয়া স্কুলের সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। নমস্কার।

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Annual malaria cases at 2 mn in 2023, down 97% since 1947: Health ministry

Media Coverage

Annual malaria cases at 2 mn in 2023, down 97% since 1947: Health ministry
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM chairs 45th PRAGATI Interaction
December 26, 2024
PM reviews nine key projects worth more than Rs. 1 lakh crore
Delay in projects not only leads to cost escalation but also deprives public of the intended benefits of the project: PM
PM stresses on the importance of timely Rehabilitation and Resettlement of families affected during implementation of projects
PM reviews PM Surya Ghar Muft Bijli Yojana and directs states to adopt a saturation approach for villages, towns and cities in a phased manner
PM advises conducting workshops for experience sharing for cities where metro projects are under implementation or in the pipeline to to understand the best practices and key learnings
PM reviews public grievances related to the Banking and Insurance Sector and emphasizes on quality of disposal of the grievances

Prime Minister Shri Narendra Modi earlier today chaired the meeting of the 45th edition of PRAGATI, the ICT-based multi-modal platform for Pro-Active Governance and Timely Implementation, involving Centre and State governments.

In the meeting, eight significant projects were reviewed, which included six Metro Projects of Urban Transport and one project each relating to Road connectivity and Thermal power. The combined cost of these projects, spread across different States/UTs, is more than Rs. 1 lakh crore.

Prime Minister stressed that all government officials, both at the Central and State levels, must recognize that project delays not only escalate costs but also hinder the public from receiving the intended benefits.

During the interaction, Prime Minister also reviewed Public Grievances related to the Banking & Insurance Sector. While Prime Minister noted the reduction in the time taken for disposal, he also emphasized on the quality of disposal of the grievances.

Considering more and more cities are coming up with Metro Projects as one of the preferred public transport systems, Prime Minister advised conducting workshops for experience sharing for cities where projects are under implementation or in the pipeline, to capture the best practices and learnings from experiences.

During the review, Prime Minister stressed on the importance of timely Rehabilitation and Resettlement of Project Affected Families during implementation of projects. He further asked to ensure ease of living for such families by providing quality amenities at the new place.

PM also reviewed PM Surya Ghar Muft Bijli Yojana. He directed to enhance the capacity of installations of Rooftops in the States/UTs by developing a quality vendor ecosystem. He further directed to reduce the time required in the process, starting from demand generation to operationalization of rooftop solar. He further directed states to adopt a saturation approach for villages, towns and cities in a phased manner.

Up to the 45th edition of PRAGATI meetings, 363 projects having a total cost of around Rs. 19.12 lakh crore have been reviewed.