“২০১৪ সালে কৃষিতে বাজেট বরাদ্দ যেখানে ২৫ হাজার কোটি টাকার কম, আজ তা ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি ছাপিয়ে গেছে”
“সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রত্যেক বাজেটকে বলা হচ্ছে গ্রাম, গরীব এবং কৃষকের বাজেট”
“সরকার অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সুযোগকে কৃষকদের সামনে উন্মুক্ত করছে”
“বাজেটে ক্রমেই এমন সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে যা কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে সহায়ক হয় ও দেশকে ‘আত্মনির্ভর’ করে তোলে এবং আমদানির জন্য যে টাকা খরচ হত তা কৃষকদের হাতে পৌঁছয় ”
“সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যপূরণ সম্ভব নয় যতক্ষণ পর্যন্ত না কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলি নির্মূল করা হচ্ছে”
“ভারতে আজ ৩ হাজারেরও বেশি কৃষি স্টার্ট-আপ রয়েছে ৯ বছর আগের সঙ্গে যার কোনও তুলনাই হয় না”
“বাজরার আন্তর্জাতিক পরিচিতি ভারতীয় কৃষকদের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের দরজা খুলে দেবে”
“ ভারতের সমবায় ক্ষেত্রে এক নব-বিপ্লব সাধিত হচ্ছে”

বাজেট সম্পর্কিত এই গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবিনারে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। বিগত ৮-৯ বছরের মতো এবারও বাজেটে কৃষিকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বাজেটের পরের দিন প্রকাশিত খবরের কাগজগুলির দিকে তাকালে দেখা যাবে, প্রতিটি বাজেটকেই বলা হয়েছে 'গ্রাম, গরিব আর কৃষকের বাজেট'। আমরা সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার আগে ২০১৪ সালে কৃষি বাজেট ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকারও কম। আর আজ দেশের কৃষি বাজেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে কৃষির ক্ষেত্রটি দীর্ঘকাল অভাবের চাপে ছিল। আমরা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বিশ্বের উপর নির্ভরশীল ছিলাম। কিন্তু আমাদের কৃষকরা তাঁদের পরিশ্রমের মাধ্যমে শুধু আমাদের স্বাবলম্বী করে তোলেননি, তাঁদের কারণেই আজ আমরা কৃষি পণ্য রপ্তানিও করতে পারছি। আজ ভারত অনেক ধরনের কৃষি পণ্য রপ্তানি করছে। আমরা কৃষকদের দেশের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ‘অ্যাক্সেস’ বা প্রবেশের পথ সুগম করে দিয়েছি। তবে আমাদের এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, আত্মনির্ভরশীলতা হোক বা রপ্তানি, আমাদের লক্ষ্য যেন শুধু চাল-গমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২১-২২ সালে আমাদের ডাল আমদানির জন্য ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছিল। মূল্য সংযোজিত বিভিন্ন খাদ্যপণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। একইভাবে, ২০২১-২২ সালে, ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল দেড় লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ, প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হয়েছে শুধু এসব জিনিস আমদানিতে, মানে এত বিপুল পরিমাণ টাকা দেশের বাইরে চলে গেছে। এখন আমরা যদি এই কৃষি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারি, তাহলে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আমাদের কৃষকদের কাছে পৌঁছাতে পারে। সেজন্য, গত কয়েক বছর ধরে বাজেটে এসব কৃষি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিতে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। আমরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়িয়েছি, ডাল উৎপাদনে উৎসাহ প্রদানের জন্য প্রচার করেছি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য ‘ফুড প্রসেসিং ফুড পার্ক’- এর সংখ্যা বাড়িয়েছি। পাশাপাশি ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য মিশন মোডে কাজ চলছে।

বন্ধুগণ,

যতদিন আমরা কৃষির ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলির মোকাবিলা না করবো ততদিন, দেশে সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জিত হবে না। আজ, ভারতের অনেক ক্ষেত্র দ্রুত উন্নত হচ্ছে, আমাদের উদ্যমী যুবকরা এক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে।

কিন্তু কৃষিতে তাঁদের অংশগ্রহণ অনেক কম, অন্যদিকে তাঁরা এর গুরুত্ব সম্পর্কে এবং এক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কেও জানে। বেসরকারি উদ্ভাবন ও বিনিয়োগ এই ক্ষেত্রটি থেকে দূরত্ব বজায় রাখছে। এই শূন্যতা পূরণে এবারের বাজেটে বেশ কিছু ঘোষণা করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কৃষি খাতে ওপেন সোর্স ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের প্রচার। আমরা একটি ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ডিজিটাল পাবলিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ এগিয়ে নিয়েছি। এটি ইউপিআই - এর ওপেন প্ল্যাটফর্মের মতোই, যার মাধ্যমে আজ ডিজিটাল লেনদেন হচ্ছে। আজ ডিজিটাল লেনদেনে যেমন বিপ্লব এসেছে, তেমনি কৃষি-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনের অপার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। পণ্য পরিবহন  উন্নত করার সম্ভাবনা আছে, বড় বাজারে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া  সহজ করার সুযোগ আছে, প্রযুক্তির মাধ্যমে ড্রিপ ইরিগেশনকে উতসাহ প্রদানের সুযোগ আছে, সেই সঙ্গে আমাদের যুবসমাজের জন্য যথাসময়ে সঠিক উপদেশ সঠিক ব্যক্তির কাছে পৌঁছানোর সুযোগ রয়েছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বেসরকারী  ল্যাবরেটরিগুলি যেভাবে কাজ করে সেভাবে মাটি পরীক্ষার কাজ করার জন্য বেসরকারী ল্যাবরেটরি স্থাপন করা যেতে পারে। আমাদের তরুণরা তাঁদের উদ্ভাবনের মাধ্যমে সরকার ও কৃষকদের মধ্যে তথ্যের সেতু হয়ে উঠতে পারেন। তাঁরা বলতে পারবে্ন যে কখন কোন ফসলের চাষ করলে তা বেশি লাভজনক হতে পারে। তাঁরা ফসলের অনুমান করতে ড্রোন ব্যবহার করতে পারেন। তারা নীতি নির্ধারণে সাহায্য করতে পারেন। তাঁরা যে কোনও জায়গায় আবহাওয়ার পরিবর্তন সম্পর্কে রিয়েল টাইম তথ্য সরবরাহ করতে পারেন। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আমাদের তরুণদের অনেক কিছু করার আছে। এতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে তাঁরা কৃষকদের যেমন সহায়তা করবেন, তেমনি তাঁরা নিজেরা জীবনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগও পাবেন।

বন্ধুগণ,

এবারের বাজেটে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। কৃষি-প্রযুক্তি স্টার্ট আপ-গুলির জন্য এক্সেলেরেটর ফান্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেজন্য, আমরা শুধুই ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়ে তুলছি না, আমরা আপনাদের জন্য অর্থ জোগানের নানা উপায়ও তৈরি করছে। তাহলে এখন আমাদের নবীন শিল্পোদ্যোগীদের সুযোগ, তাঁরা উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে আসুন আর লক্ষ্য অর্জন করে দেখান। আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে ৯ বছর আগে দেশে এগ্রি স্টার্টআপ প্রায় ছিলই না, কিন্তু আজ তিন হাজারেরও বেশি। তবুও আমাদের আরও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে হবে।      

বন্ধুগণ,

আপনারা সবাই জানেন যে ভারতের উদ্যোগে এই বছরটিকে ‘ইন্টারন্যাশানাল ইয়ার অফ মিলেটস’ বা আন্তর্জাতিক মোটাদানার শস্যের বছর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। মোটাদানার শস্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার অর্থ হল আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য একটি বৈশ্বিক বাজার প্রস্তুত হচ্ছে। এই বাজেটেই দেশ এখন মোটাদানার শস্যকে 'শ্রী অন্ন' নাম দিয়েছে। আজ যেভাবে 'শ্রী অন্ন' -এর প্রচার করা হচ্ছে, তাতে আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। এই এলাকায় এই ধরনের স্টার্টআপের বৃদ্ধির সম্ভাবনাও বেড়েছে, যা কৃষকদের জন্য মোটাদানার শস্যের ক্ষেত্রে বিশ্ব বাজারে প্রবেশ করা সহজ করে তুলবে।

বন্ধুগণ,

ভারতের সমবায় ক্ষেত্রে একটি নতুন বিপ্লব চলছে। এখন পর্যন্ত এই বিপ্লব কিছু রাজ্য এবং দেশের কিছু অংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু, এখন তা সারা দেশেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। এবারের বাজেটে সমবায় খাতে কর সংক্রান্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। উৎপাদনে নিয়োজিত নতুন সমবায় সমিতিগুলির কর প্রদানের হার কমছে। এখন সমবায় সমিতিগুলি দ্বারা ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত নগদ তোলার ক্ষেত্রে টিডিএস ধার্য করা হবে না। সমবায় ক্ষেত্রে সর্বদাই একটি প্রচলিত ধারণা ছিল যে, তারা সবসময়ই অন্যান্য কোম্পানিগুলির তুলনায় বৈষম্যের শিকার হয়। এবারের বাজেটে সেই অবিচারও দূর করা হয়েছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে চিনিকে সমবায়ের মাধ্যমে ২০১৬-১৭’র আগে করা সমস্ত অর্থ প্রদানের উপর কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে চিনি সমবায়গুলি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা লাভ হবে।

বন্ধুগণ,

যেসব ক্ষেত্রগুলিতে আগে থেকে কোনও সমবায় ছিল না, সেখানে ডেয়ারি ও মৎস্যচাষের সঙ্গে যুক্ত সমবায় সংস্থাগুলির মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকরা অত্যন্ত লাভবান হবেন। বিশেষ করে, মৎস্যচাষের ক্ষেত্রে আমাদের কৃষকদের জন্য বেশ কিছু বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিগত ৮-৯ বছরে দেশে মৎস্য উৎপাদন প্রায় ৭০ লক্ষ মেট্রিক টন বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৪ সালের আগে এতটা বাড়তে প্রায় ৩০ বছর লেগে গিয়েছিল। এবারের বাজেটে ‘পিএম মৎস্য সম্পদা যোজনা’ – এর মাধ্যমে ৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে একটি নতুন সাব-কম্পোন্যান্ট বা সহ-উপাদান ঘোষণা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মৎস্যচাষের মূল্য-শৃঙ্খলের পাশাপাশি, বাজারও চাঙ্গা হয়ে উঠবে। এর মাধ্যমে মৎস্যচাষী এবং ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের জন্যও নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বন্ধুগণ,

আমরা প্রাকৃতিক কৃষিকে উৎসাহ যোগাতে এবং রাসায়নিক সার ভিত্তিক চাষাবাদ কমানোর লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে কাজ করে চলেছি। পিএম প্রণাম যোজনা এবং গোবর্ধন যোজনা এই লক্ষ্যে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমি আশা করি, আমরা একটি টিম হিসাবে এই সমস্ত বিষয়কে এগিয়ে নিয়ে যাব। আমি আরেকবার আজকের এই ওয়েবিনারে অংশগ্রহণের জন্য আপনাদের সকলকে শুভকামনা জানাই। আমি আশা করি, আপনারা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের মানুষেরা এই বাজেট থেকে অধিকতম লাভবান হবেন। আর অধিকতম মানুষ কিভাবে দ্রুত লাভবান হন, তা সুনিশ্চিত করতে বাজেটে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলির সঙ্গে আপনাদের প্রাণশক্তি এবং আপনাদের শপথকে যুক্ত করবেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আমরা সবাই কৃষিকে যে উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই, দেশের মৎস্য ব্যবসাকে যে উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই – আমাদের সকলের মিলিত উদ্যোগে আমরা সেখানে নিয়ে যেতে পারবো। সেজন্য আপনারা সকলে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করুন। নিজেদের মৌলিক ভাবনাচিন্তার মাধ্যমে এক্ষেত্রে অবদান রাখুন। নিজেদের মতো করে পথচিত্র তৈরি করুন। আমার বিশ্বাস যে, আজকের ওয়েবিনার আপনাদের আগামী এক বছরের জন্য পথচিত্র তৈরি করতে সহায়ক প্রতিপন্ন হবে। অনেক অনেক শুভকামনা, অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi visits the Indian Arrival Monument
November 21, 2024

Prime Minister visited the Indian Arrival monument at Monument Gardens in Georgetown today. He was accompanied by PM of Guyana Brig (Retd) Mark Phillips. An ensemble of Tassa Drums welcomed Prime Minister as he paid floral tribute at the Arrival Monument. Paying homage at the monument, Prime Minister recalled the struggle and sacrifices of Indian diaspora and their pivotal contribution to preserving and promoting Indian culture and tradition in Guyana. He planted a Bel Patra sapling at the monument.

The monument is a replica of the first ship which arrived in Guyana in 1838 bringing indentured migrants from India. It was gifted by India to the people of Guyana in 1991.