নমস্কার!
এ বছরের বাজেট একবিংশ শতাব্দীর ভারতের বিকাশের জন্য ‘গতিশক্তি’ নির্ধারণ করে দিয়েছে। ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার বেসড ডেভেলপমেন্ট’ বা পরিকাঠামো-নির্ভর উন্নয়নের এই দিশা আমাদের অর্থনীতির সামর্থ্যকে অসাধারণভাবে বাড়িয়ে তুলবে। এর ফলে দেশে কর্মসংস্থানেরও অনেক নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।
বন্ধুগণ,
সাধারণতঃ, আমাদের দেশের পুরনো যে অভিজ্ঞতা রয়েছে, আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একটি পরম্পরাও রয়েছে যে, যখন যেরকম প্রয়োজন, সেরকমই পরিকাঠামো তৈরি করে নেওয়া হয়। অর্থাৎ, বিচ্ছিন্নভাবে প্রয়োজন অনুসারে পরিকাঠামো নির্মাণ করা হত, আর সেখানেও কেন্দ্র, রাজ্য, স্থানীয় প্রশাসন এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের মধ্যে মেলবন্ধনের অভাব থাকায় দেশের অনেক লোকসান হয়েছে। যেমন রেলপথ নির্মাণের কাজ, বা সড়কপথ নির্মাণের কাজ - এই দুটি ক্ষেত্রেই পরস্পরের মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাবে আমরা অনেক জায়গায় বিরোধিতা হতে দেখেছি, দ্বন্দ্ব হতে দেখেছি। আমরা প্রায়ই এরকম হতে দেখেছি যে, কোথাও একটি রাস্তা তৈরি হয়েছে, দ্বিতীয় দিন জলের পাইপ পাতার জন্য সেই রাস্তাটিকে খুঁড়ে দেওয়া হল। তারপর রাস্তাটা আবার তৈরি হল। কিন্তু এর পরদিনই আবার পয়ঃপ্রণালীর নিকাশি লাইন পাতার লোকেরা এসে আবার খুঁড়ে দিলেন। তারপর আবার সেই রাস্তা তৈরি হল। এরকম হওয়ার কারণ হল, বিভিন্ন বিভাগের কাছে অন্য বিভাগের কাজ সম্পর্কে কোনও তথ্য থাকে না। ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’এর কারণে এখন সমস্ত তথ্য নিয়ে পরস্পরের যোগসাজসে কেন্দ্র, রাজ্য, স্থানীয় প্রশাসন – প্রতিটি বিভাগ নিজেদের প্রকল্প রচনা এবং তার বাস্তবায়ন করতে পারবে। এর ফলে দেশের রিসোর্সেস বা সমস্ত সম্পদেরই ‘অপটিমাম ইউটিলাইজেশন’ বা সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহার সম্ভব হবে।
বন্ধুগণ,
আজ যতটা বড় পরিমাণে আমাদের সরকার ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট বা পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করছে, এক্ষেত্রে ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’এর মতো প্রকল্প আমাদের অনেক বড় প্রয়োজনীয়তা পূরণ করবে। ২০১৩-১৪ সালে ভারত সরকারের ‘ডায়রেক্ট ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিচার’ বা প্রত্যক্ষ মূলধনী ব্যয় প্রায় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা ছিল, যা ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বেড়ে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকায় পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ, প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি। জাতীয় মহাসড়ক থেকে শুরু করে রেলপথ, আকাশপথ, জলপথ, অপটিক্যাল ফাইবার কানেক্টিভিটি, গ্যাস গ্রিড, রিনিউয়েবল এনার্জি বা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি – প্রত্যেক ক্ষেত্রে সরকার বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এই ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের সরকার অনেক বড় লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে। ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’থেকে পরিকাঠামো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং তদারকির একটি অত্যন্ত সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যেতে পারব, একটি নতুন লক্ষ্যে কাজ করতে পারব। এর ফলে, এই পরিকল্পনাগুলির সময় এবং পরিচালনার খরচও অনেক কমানো যাবে।
বন্ধুগণ,
আপনারা সবাই জানেন যে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের অনেক বড় ‘মাল্টিপ্লায়ার এফেক্ট’ বা গুণিতক প্রভাব থাকে। এটি ‘ইজ অফ লিভিং’-এর পাশাপাশি ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’-এর ক্ষেত্রেও সংস্কারসাধন করে। এর ফলে সমস্ত ক্ষেত্রেই ‘ইকনমিক প্রোডাক্টিভিটি’ বা অর্থনৈতিক উৎপাদন ক্ষমতারও শক্তি বাড়ে। আজ যখন দেশ পরিকাঠামো উন্নয়নকে অভূতপূর্ব গতি প্রদান করছে, তখন তা থেকে অর্থনৈতিক গতিবিধিও বৃদ্ধি পাবে, আর একইসঙ্গে কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের সরকার ‘কো-অপারেটিভ ফেডারেলিজম’বা সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সিদ্ধান্তকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে এ বছরের বাজেটে রাজ্যগুলির সহায়তার জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। রাজ্য সরকারগুলি এই টাকা ‘মাল্টি-মডেল ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ বা বহুমুখী পরিকাঠামো নির্মাণ এবং অন্যান্য ‘প্রোডাক্টিভ অ্যাসেট’ বা উৎপাদক সম্পত্তি খাতে ব্যয় করতে পারবে। দেশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলিতে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য ‘ন্যাশনাল রোপওয়ে ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ চালু করা হচ্ছে। আমাদের সরকার উত্তর-পূর্ব ভারতের ভারসাম্যযুক্ত উন্নয়নের জন্যও দায়বদ্ধ। এই রাজ্যগুলির প্রয়োজনীয়তার দিকে তাকিয়ে ১,৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে ‘পিএম ডিভাইন’ প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সরকার যত বিনিয়োগ করছে ,তার পাশাপাশি, ‘প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেন্টিভ স্কিম’ (পিএলআই) বা উৎপাদন-ভিত্তিক উৎসাহ ভাতা প্রকল্প চালু করেছে যা আগামী বছরগুলিতে দেশের উন্নয়নকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এই সকল প্রচেষ্টা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ক্রিয়েশন বা পরিকাঠামো নির্মাণের এই নতুন যুগে আপনাদের জন্য নতুন নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দরজা খুলে দেবে। আমি কর্পোরেট জগতের কাছে, দেশের বেসরকারি ক্ষেত্রের প্রতি অনুরোধ রাখছি যে সরকারের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে বিনিয়োগ করুন, আর দেশের উন্নয়নে নিজেদের গৌরবময় অবদান রাখুন।
বন্ধুগণ,
আপনারা এটাও জানেন যে ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’-এ এখন ৪০০-রও বেশি ডেটা লেয়ার বা তথ্যের পরত রয়েছে। এগুলির মাধ্যমে শুধু যে বর্তমান এবং পরিকল্পিত পরিকাঠামোর তথ্য পাওয়া যাবে তাই নয়, এমনকি এতে ‘ফরেস্ট ল্যান্ড’, ‘অ্যাভেইলেবল ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট’-এর মতো তথ্যাদিও রয়েছে। আমার পরামর্শ হল, বেসরকারি ক্ষেত্র তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বেশি করে এই ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’কে কাজে লাগান। ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ সম্পর্কিত সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য একটি ‘সিঙ্গল প্ল্যাটফর্ম’-এ পাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর ফলে ‘প্রোজেক্ট অ্যালাইনমেন্ট’ আর বিভিন্ন ধরনের ‘ক্লিয়ারেন্স’ বা ছাড়পত্র এই ‘ডিপিআর স্টেজ’-এই পাওয়া সম্ভব হবে। এটা আপনাদের ‘কমপ্লায়েন্স বার্ডেন’ কম করার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। আমি রাজ্য সরকারগুলির কাছে অনুরোধ রাখব যাতে তাঁরা প্রকল্প এবং অর্থনৈতিক জোনগুলি স্থাপন করে ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ -এরও ভিত্তি মজবুত করেন।
বন্ধুগণ,
আজও ভারতে লজিস্টিক্স কস্ট বা পরিবহণের খরচ জিডিপি-র ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এটি অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার এফিশিয়েন্সি’ বা পরিকাঠামো দক্ষতায় সংস্কার আনতে ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’-এর অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। দেশে পরিবহণের খরচ কম করার জন্য এবারের বাজেটে ‘ইউনিফায়েড লজিস্টিক ইন্টারফেস প্ল্যাটফর্ম’ বা ইউএলআইপি নির্মাণ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আপনারা এটাও জানেন যে, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রকের ডিজিটাল সিস্টেম নিজের নিজের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে কাজ করছে। ইউএলআইপি-র মাধ্যমে ছয়টি মন্ত্রকের ২৪টি ডিজিটাল সিস্টেমকে সংহত করা হচ্ছে। এর ফলে একটি জাতীয় ‘সিঙ্গল উইন্ডো লজিস্টিক পোর্টাল’ তৈরি হবে, যা পরিবহণের খরচ কমানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’-এর মাধ্যমে আমাদের রপ্তানি ক্ষেত্রেও অনেক সাহায্য হবে। আমাদের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। আমাদের সরকার ‘লজিস্টিক এফিশিয়েন্সি’ বা পরিবহণ ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনে সংস্কার আনতে ‘লজিস্টিক ডিভিশন’ এবং সরকারের সমস্ত বিভাগের মধ্যে উন্নত সমন্বয়সাধনের জন্য ‘এমপাওয়ার্ড গ্রুপ অফ সেক্রেটারিজ’-এরও ব্যবস্থা করেছে। ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’-এ আপনারা প্রযুক্তির বড় ভূমিকা তো দেখতেই পাচ্ছেন। আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, সরকার যেমন নিজের স্বভাবে এই বিষয়টি তুলে ধরবে, বেসরকারি ক্ষেত্রও যেন তেমনভাবেই এর প্রয়োগ শুরু করে। আমরা আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে আমাদের পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির জন্য কিভাবে প্রয়োগ করব? উৎকর্ষও থাকবে, আবার ‘কস্ট এফেক্টিভ অ্যান্ড টাইম’ বা খরচ কম করাও সময়ের দৃষ্টিতে অনেক উপযোগী হবে। আর এখন তো আমরা এটাও দেখছি যে, ভারত একটি ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে, সেটি হল বিপর্যয় মোকাবিলা। আমরা যত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হই, তা সে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হোক কিংবা মনুষ্যসৃষ্ট, এতে মানব সভ্যতার ওপর দীর্ঘকালীন প্রভাব সৃষ্টিকারী কার্যকর পরিকাঠামো বিনষ্ট হয়ে যায়। অনেক সেতু ধ্বংস হয়ে যায়। সেগুলি পুনর্নিমাণে আরও প্রায় ২০-২০ বছর লেগে যায়। সেজন্য ‘ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ বা বিপর্যয়রোধী পরিকাঠামো নির্মাণ আজ অনেক প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। সেজন্য যতদিন পর্যন্ত প্রযুক্তির ব্যবহার হবে না, ততদিন আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করতে পারব না। সেজন্যই আমরা এটিকেও তুলে ধরেছি। পণ্য পরিবহণ ক্ষেত্রে কর্মরত কোম্পানিগুলির কাছে বিশ্বমানের জ্ঞান এবং টুলস রয়েছে। এগুলি প্রয়োগ করে দেশেই পাওয়া যায় এরকম তথ্যগুলির উন্নত ব্যবহার আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে।
বন্ধুগণ,
‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ পরিকাঠামো নির্মাণে প্রকৃত অর্থে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব সুনিশ্চিত করবে, যা পরিকাঠামো পরিকল্পনা নীতি নিয়ে উন্নয়ন করবে আর ‘ইউটিলাইজেশন স্টেজ’ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। এই ওয়েবিনারে এ বিষয় নিয়েও ভাবনা, চিন্তা, আলোচনা হওয়া উচিৎ যে কিভাবে বেসরকারি ক্ষেত্র সরকারি ব্যবস্থার সঙ্গে মিলেমিশে উন্নত ‘আউটকামস’ হাসিল করতে পারে, ভাল ফলদায়ক হয়। আপনারা সবাই ওয়েবিনারের সময় এই সকল বিষয় নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করবেন - এটাই আমার বিশ্বাস। পরিকাঠামো ছাড়াও কোন নিয়ম এবং নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে কিনা - তা তুলে ধরার প্রয়োজন রয়েছে। এ বিষয়েও আপনাদের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। দেশে আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণ ভারতের ভিতকে শক্তিশালী করে তুলবে, আর ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। আমি এই ওয়েবিনারের সাফল্য কামনা করি, আর আশা করি যে আমরা আপনাদের সকলের অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হব।
আমি আপনাদের এক্ষেত্রেও আকর্ষণ করতে চাইব, আমাদের আজকের ওয়েবিনারে আমাদের সরকারের তরফ থেকে ভাষণ দেওয়ার দিন নয়। আমাদেরও আপনাদের কথা শুনতে হবে। এখন আপনারা এই বাজেট নিয়ে যত কথা শুনলেন, তার আলোকে আপনারাও হয়তো বলবেন যে ভালো হবে। সেই সময় আপনারা আমাকে অবশ্যই লিখে পাঠাবেন। এখন তো সংসদ যে বাজেটের জন্য আমাদের অনুমতি দিয়েছে, আমাদের তার ওপরেই জোর দিতে হবে। কিন্তু এই জোর দেওয়ার কাজটা আমরা কিভাবে ভালোভাবে করব! এখন আমাদের হাতে এই মার্চ মাসটা রয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে নতুন বাজেট কার্যকর হবে। আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে,এ বছর মার্চ মাসে অধিকাংশ প্রস্তুতি নিয়ে আমরা এপ্রিলের ১ তারিখ থেকেই যাতে সমস্ত বিষয়ে কাজে নেমে পড়তে পারি! আমরা কি এমনটা করতে পারব?
দ্বিতীয়ত, পরিকাঠামো তৈরি করা তো একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সারা বিশ্বের সমস্ত সভ্যতা নদী তীরেই গড়ে উঠেছে, আর সেই নদী যেখানে গিয়ে সমুদ্রের সঙ্গে মিশত, সেই সমুদ্রের কাছাকাছি বন্দর ও বড় শহর গড়ে উঠত। সেখানেই সমস্ত আধুনিক ব্যবস্থা বিকশিত হত। ধীরে ধীরে সেখান থেকে বড় বড় সড়ক ও মহাসড়কের দু’পাশে শিফট হয়ে সভ্যতা বিকশিত হতে শুরু করে। এখন মনে হচ্ছে যেখানে যেখানে অপটিক্যাল ফাইবার থাকবে, সেখানে সেখানে মানব সভ্যতার উন্নয়নও হবে। সময় বদলে যাচ্ছে। এর মানে হল পরিকাঠামো শুধুই স্বতন্ত্র পরিকাঠামো হয়ে থাকছে না। পরিকাঠামো থাকলেই তার আশেপাশে সম্পূর্ণ নতুন ইকো-সিস্টেমও গড়ে উঠছে। এদিকে লক্ষ্য রেখে আমার বিশ্বাস, এই ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ আমাদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হয়ে উঠবে, আর সেজন্যই আমি চাইব আপনারা বাজেটে যা কিছু আছে, তাকে খুব ভালোভাবে কিভাবে বাস্তবায়িত করতে পারেন সেদিকে লক্ষ্য দিন। সরকারেও ‘ফুলস্টপ, কমার’ এদিক-ওদিক ভুল হতে থাকে। সেজন্যই এক টেবিল থেকে আর এক টেবিলে ফাইলগুলির ছয়-ছয় মাস লেগে যায়। ততদিনে আরও একটি বাজেট চলে আসে। আপনাদের সঙ্গে আগে থেকে কথা বলার ফলে এই লাভ হবে যে, আপনারা জানেন, কি কি কারণে আপনাদের অসুবিধা হবে, আর তা নিয়ে এখন থেকেই যদি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করি, তাহলে এখন থেকেই ‘পজিটিভ রেসপন্স’ বা ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে। সেজন্যই আপনারা সবাই অত্যন্ত দৃঢ়তা নিয়ে এই ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’-এর কর্মযজ্ঞে যোগ দিন, নিজেদের অবদান রাখুন – এটাই আমার প্রত্যাশা। আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা! অনেক অনেক ধন্যবাদ।