নমস্কার!
জাতীয় বিজ্ঞান দিবসে আয়োজিত আজকের বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একুশ শতকের পরিবর্তিত ভারত প্রযুক্তির শক্তি দিয়ে ক্রমাগত তার নাগরিকদের ক্ষমতায়ন করছে। বিগত বছরগুলোতে আমাদের সরকারের প্রতিটি বাজেটেই প্রযুক্তির সাহায্যে দেশবাসীর জীবনযাত্রার স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এবারের বাজেটেও প্রযুক্তির পাশাপাশি ‘হিউম্যান টাচ’বা মানবিক স্পর্শকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
বন্ধুরা, একটা সময় ছিল যখন আমাদের দেশে সরকারের অগ্রাধিকারগুলির মধ্যে অনেক বৈপরীত্য লক্ষ্য করা যেত। সমাজের এমন একটি অংশ ছিল, যারা চেয়েছিলেন যে তাঁদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সরকারের কিছু হস্তক্ষেপ থাকুক, সরকারের প্রভাব থাকুক, অর্থাৎ সরকার তাঁদের জন্য কিছু না কিছু করুক। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে এই শ্রেণী সবসময়ই অভাব- অনটন অনুভব করেছে। অভাব- অনটনের সঙ্গে লড়াইয়েই তাঁদের জীবন কেটে যেত । সমাজে এমন এক শ্রেণির মানুষও ছিলেন, যাঁরা ছিলেন একটু অন্য ধরনের; তাঁরা নিজেদের শক্তিতে এগিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বিগত সরকারের আমলেও এই শ্রেণীর মানুষও সর্বদাই প্রতি পদে পদে সরকারি হস্তক্ষেপের চাপ ও নানা প্রতিবন্ধকতা অনুভব করেছেন। গত কয়েক বছরে আমাদের সরকারের প্রচেষ্টার কারণে এই অবস্থার পরিবর্তন শুরু হয়েছে। আজ সরকারের নীতি ও সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব সেই সব ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায় যেখানে এর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
আমাদের ক্রমাগত প্রচেষ্টা আজ প্রত্যেক দরিদ্র এবং বঞ্চিত মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলছে, তাঁদের জীবনযাত্রার স্বাচ্ছন্দ্য বাড়িয়ে তুলছে। মানুষের জীবনে সরকারের হস্তক্ষেপ এবং চাপও কমেছে। আজ কোনও উদ্যোগী মানুষ আর সরকারকে পথের বাধা বলে মনে করে না। বরং মানুষ আমাদের সরকারকে নতুন নতুন সুযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে দেখে। এবং অবশ্যই প্রযুক্তি এক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করছে।
আপনারা দেখুন, আজ প্রযুক্তি ‘এক দেশ-এক রেশন কার্ড’-এর ভিত্তি হয়ে উঠেছে এবং এর কারণে কোটি কোটি দরিদ্র মানুষ যাতে দেশের যে কোনও জায়গা থেকে স্বচ্ছভাবে রেশন পান তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এর ফলে এটি দেশের নানা প্রান্তে কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটি অনেক বড় আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। জন ধন অ্যাকাউন্ট, আধার এবং মোবাইল এই তিনটির সহযোগে ইতিমধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে কোটি কোটি দরিদ্রের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রযুক্তির মাধ্যমে সরাসরি টাকা পাঠানো সম্ভব হয়েছে।
একইভাবে প্রযুক্তি, আরোগ্য সেতু এবং কোউইন অ্যাপ -এর সার্থক প্রয়োগের মাধ্যেমে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এবং তা বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারী প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ট্রেসিং এবং টিকাকরণে অনেক সাহায্য করেছে। আমরা আজ দেখতে পাচ্ছি যে প্রযুক্তি রেলওয়ে সংরক্ষণকে আরও আধুনিক করেছে এবং এতে সাধারণ মানুষের অনেক সমস্যা দূর হয়েছে। কমন সার্ভিস সেন্টারের নেটওয়ার্কও অতি সহজেই প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী দরিদ্রতম মানুষকেও সরকারি পরিষেবা পেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের সরকার দেশবাসীর জীবনযাপণে স্বাচ্ছন্দ্য বাড়িয়েছে।
বন্ধুগণ, আজ ভারতের প্রত্যেক নাগরিক এই পরিবর্তনটি স্পষ্টভাবে অনুভব করছেন যে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা কত সহজ হয়ে গেছে। অর্থাৎ, দেশবাসী সহজে তাঁদের বার্তা, সমস্যার কথা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে পারছেন, এবং দ্রুত তার সমাধানও পাচ্ছেন। যেমন, কর-সংক্রান্ত অভিযোগ আগে অনেক বেশি ছিল এবং সে কারণে করদাতারা নানাভাবে হয়রানির শিকার হতেন। সেজন্য আমরা প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পূর্ণ কর প্রক্রিয়াটিকে ‘ফেসলেস’ বা কোনও কর্মচারির সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্কবিহীন করে দিয়েছি। এখন আপনার অভিযোগ এবং সেগুলির নিষ্পত্তির মধ্যে প্রত্যক্ষভাবে কোনও ব্যক্তি থাকেন না, শুধুই প্রযুক্তি থাকে। এটা আমি আপনাদের একটি উদাহরণ দিলাম। তবে অন্যান্য বিভাগেও প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা আরও ভালো উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে পারি। বিভিন্ন বিভাগ তাদের পরিষেবাকে আন্তর্জাতিক মানের করে তুলতে সম্মিলিতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে। এর থেকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে আমরা এমন ক্ষেত্রগুলিও চিহ্নিত করতে পারি যেখানে সরকারের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ আরও সহজ করে তোলা যেতে পারে।
বন্ধুগণ, আপনারা জানেন যে আমরা ‘মিশন কর্মযোগী’ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এই প্রশিক্ষণের পিছনে আমাদের লক্ষ্য কর্মচারীদের ‘সিটিজেন সেন্ট্রিক’ বা নাগরিক পরিষেবা কেন্দ্রিক করে তোলা। এই প্রশিক্ষণের পাঠক্রমকে নিয়মিত ‘আপডেট’ বা বাস্তবিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে পরিবর্তন করে যেতে হবে, আর তা জনগণের মতামতের ভিত্তিতে পরিবর্তন করা হলে এই প্রশিক্ষণ আরও সুফলদায়ক হবে। আমরা এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করতে পারি যেখানে এই প্রশিক্ষণ পাঠক্রমের উন্নতির জন্য নিয়মিত সাধারণ মানুষের পরামর্শ পাওয়া যাবে।
বন্ধুগণ, প্রযুক্তি সবাইকে সঠিক ও নির্ভুল তথ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সমান সুযোগ করে দিচ্ছে। আমাদের সরকার প্রযুক্তির ব্যবহারকে উৎসাহ জোগাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে। আমরা ভারতে আধুনিক ডিজিটাল পরিকাঠামো তৈরি করছি। এর পাশাপাশি এটাও সুনিশ্চিত করছি যাতে এই ডিজিটাল বিপ্লবের সুফল সমাজের প্রতিটি স্তরের কাছে পৌঁছয়। আজ, জি ই এম পোর্টালটি এমনকি ছোট দোকানদার বা রাস্তার দুপাশে পসরা সাজিয়ে বসা বিক্রেতাদেরকেও দূর-দূরান্ত এলাকা থেকে তাঁদের পণ্য সরাসরি সরকারের কাছে বিক্রি করার সুযোগ এনে দিয়েছে। ‘ই-ন্যাম’ পোর্টালটি দেশের কৃষকদের বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের সুযোগ এনে দিয়েছে। এখন কৃষকরা এক জায়গায় বসে তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের সেরা দাম পেতে পারেন।
বন্ধুগণ, আজকাল অনেকদিন ধরেই ফাইভ –জি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এটাও বলা হচ্ছে যে, শিল্প, চিকিৎসা, শিক্ষা, কৃষিসহ সমস্ত ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে চলেছে। কিন্তু এখন আমাদের নিজেদের জন্য কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। এই প্রযুক্তিগুলিকে সাধারণ মানুষের উন্নতির জন্য ব্যবহার করার উপায় কি কি? কোন কোন ক্ষেত্রে আমাদের আরও মনোযোগ দিতে হবে? আমরা কি সমাজের এমন ১০টি সমস্যা চিহ্নিত করতে পারি, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে? দেশের তরুণরা যখন সরকার আয়োজিত হ্যাকাথন-এ অংশগ্রহণ করে, তখন তাঁদের সামনে দেশের যে সমস্যাগুলি তুলে ধরা হয়, তরুণরা প্রযুক্তির মাধ্যমে সেগুলির সমাধানের পথ দেখায়। প্রতি বছর সারা দেশের লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী এতে অংশগ্রহণ করে এবং খুব ভালো সমাধানের পথ দেখায়।
বন্ধুগণ, প্রযুক্তির সাহায্যে, সম্প্রতি আমরা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ডিজি-লকারের পরিষেবা চালু করেছি, এখন ‘ডিজি-লকার ফর এন্টিটিস’বা সংস্থাগুলির জন্য ডিজি-লকারের সুবিধা রয়েছে। এর মাধ্যমে যে কোনও কোম্পানি, অতিক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ গুলি তাদের ফাইল সংরক্ষণ করতে পারে এবং বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক এবং সরকারি বিভাগের সঙ্গে শেয়ার করতে পারে। ডিজিলকারের ধারণাকে আমাদের আরও প্রসারিত করতে হবে, আমাদের দেখতে হবে আর কী কী উপায়ে সাধারণ মানুষ এর মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে!
বন্ধুগণ, বিগত কয়েক বছরে আমরা অতিক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ গুলিকে সমর্থন করার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি। আজ এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা দরকার যে ভারতের অতিক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ গুলির ক্রমে একেকটি বড় কোম্পানি হয়ে উঠতে কোন কোন বাধার সম্মুখীন হতে হয়? আমরা ছোট ব্যবসা এবং ছোট শিল্পোদ্যোগের জন্য ‘কমপ্লায়েন্স কস্ট’ বা সরকারের সম্মতি পাওয়ার খরচ কমাতে চাই। আপনারা জানেন যে বানিজ্যের ক্ষেত্রে বলা হয় – ‘টাইম ইজ মানি’ বা সময় হল অর্থ। সেজন্য সম্মতি পাওয়ার সময় বাঁচানো মানে সম্মতি পাওয়ার খরচ বাঁচানো। আপনি যদি অপ্রয়োজনীয় সম্মতি পাওয়ার খরচের তালিকা তৈরি করতে চান, তাহলে এটাই সঠিক সময়, কারণ আমরা ইতিমধ্যেই চল্লিশ হাজার কমপ্লায়েন্স বাতিল করেছি।
বন্ধুগণ, সরকার এবং জনগণের মধ্যে আস্থার অভাব সমাজে দীর্ঘকাল ধরে জাঁকিয়ে বসে থাকা ঔপনিবেশিক দাসত্বের মানসিকতার পরিণাম। কিন্তু আজ ছোটখাটো ভুলগুলোকে ‘ডি- ক্রিমিন্যালাইজ’বা অপরাধের তালিকা থেকে মুক্ত করা হয়েছে আর অতিক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলিকে প্রদেয় ঋণের গ্যারান্টার বা জামিনদার হিসেবে সরকার জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। তবে এখানেই থেমে থাকলে চলবে না, সমাজের সঙ্গে আস্থা মজবুত করতে বিশ্বের অন্যান্য দেশে কী করা হয়েছে তাও দেখতে হবে। তাঁদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আমাদের দেশেও একই ধরনের চেষ্টা করে দেখতে পারি।
বন্ধুগণ, বাজেট বা যেকোনো সরকারি নীতির সাফল্য কিছুটা হলেও নির্ভর করে, সেটি কতটা ভালোভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে তার ওপর। তবে এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল সেগুলিকে বাস্তবায়নের উপায়; এক্ষেত্রে জনগণের সহযোগিতা খুবই জরুরি। আমি নিশ্চিত যে সংশ্লিষ্ট সবার থেকে ইনপুট নিয়ে, জীবনযাত্রা সহজ করে তোলার ক্ষেত্রে বড় উত্সাহ জোগানো সম্ভব হবে। আর আমি অবশ্যই বলতে চাই যে, আমরা যখন বলি যে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ তৈরি করতে হবে, তখন সেখানে ‘জিরো ডিফেক্ট, জিরো ইফেক্ট’ সুনিশ্চিত করাকেও আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমাদের মানের ক্ষেত্রে কোনোরকম আপস করা উচিত নয়। এক্ষেত্রেও প্রযুক্তি অনেক সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রযুক্তির সাহায্যে, আমরা পণ্য উৎপাদনের সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম ক্ষেত্র পর্যন্ত পরীক্ষা ও যাচাইয়ের মাধ্যমে পণ্যটিকে নিখুঁত করে তুলতে পারি। আর শুধুমাত্র তখনই আমাদের পক্ষে সেই পণ্যের বিশ্ব বাজার দখল করা সম্ভব হতে পারে।
আমাদের মেনে নিতে হবে যে একবিংশ শতাব্দী প্রযুক্তি চালিত শতাব্দী। আমাদের জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব ক্রমে আরও অনেকটাই বাড়তে চলেছে। আসুন, আমরা যেন নিজেদেরকে শুধুমাত্র ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল প্রযুক্তিতেই সীমাবদ্ধ না রাখি! আজ একইভাবে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক পৌঁছে যাচ্ছে প্রতিটি গ্রামে। এই অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক পঞ্চায়েত ভবনে পৌঁছবে, প্রতিটি সুস্থতা কেন্দ্রে পৌঁছবে, টেলি মেডিসিন চলবে, এমনকি আমাদের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রও ক্রমে পুরোপুরি প্রযুক্তিচালিত হয়ে উঠছে। বর্তমানে আমাদের দেশ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের মতো কিছু ক্ষেত্রে অনেক সরঞ্জাম বিপুল পরিমাণে আমদানি করতে বাধ্য হয়। আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রেও অনেক সরঞ্জাম আমদানি করি। আমাদের দেশের শিল্পপতিরা কি প্রযুক্তির মানোন্নয়ন করে সেসব সরঞ্জাম উৎপাদনের দিকে যেতে পারে না? আর সে জন্যই এখন আমরা প্রতিটি গ্রামে অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছে দিচ্ছি।
যতক্ষণ পর্যন্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিষেবা প্রদান করতে এগিয়ে না আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত নতুন নতুন সফট্ওয়্যার-ও আসে না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিষেবা প্রদান করতে এলেই সাধারণ নাগরিক সেই অপ্টিক্যাল ফাইবার থেকে কী পরিষেবা নিতে পারেন, কিভাবে উপকৃত হতে পারেন – তার মডেল আমরা তৈরি করতে পারি। আর আমরা সমস্ত ক্ষেত্রেই গণঅংশীদারিত্ব চাই। সরকারি সবকিছু জানে – এরকম ভাবনা নিয়ে আমরা চলি না। সেজন্য আপনাদের মতো সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ যে, আপনারা একবিংশ শতাব্দী উপযোগী প্রযুক্তি-বান্ধব ভাবনাচিন্তা করুন। এই শতাব্দী প্রযুক্তি সঞ্চালিত শতাব্দী। প্রযুক্তিকে আমরা যতবেশি জনপ্রিয় করে তুলব, যত বেশি দ্রুত সরল করে তুলব, যত দ্রুত জনগণের ক্ষমতায়নের অনুকূল করে তুলব – ততটাই দেশ ও জনসাধারণ উপকৃত হবে। ২০৪৭ সালে আমাদের ভারতকে উন্নত ভারতে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রযুক্তি আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি জোগায়। আমরা ভাগ্যবান যে, ভারতের কাছে প্রযুক্তির এই প্রাকৃতিক উপহার রয়েছে।
আমাদের রয়েছে প্রতিভাবান যুবসম্প্রদায়। এছাড়াও রয়েছে দক্ষ মানবসম্পদ। ভারতের গ্রামের মানুষেরও অসাধারণ প্রযুক্তি গ্রহণ ক্ষমতা রয়েছে। আমরা কিভাবে এই প্রাকৃতিক মেধা ও গ্রহণ ক্ষমতাকে কাজে লাগাবো, তা নিয়ে আপনারা ভাবুন। আমি চাই যে, আপনারা এ বিষয়ে বিস্তারিত ও পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করি - কিভাবে এবারের বাজেটকে সবচেয়ে ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়। কিভাবে এর দ্বারা দেশের মানুষকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত করা যায়। এ বিষয়ে আপনারা যত নিবিড় আলাপ-আলোচনা করবেন, আমাদের বাজেট ততটাই সার্থক হয়ে উঠবে।
আমি আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।