প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় নৌ-বাহিনীর জন্য দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব সম্বলিত উদ্যোগ ‘স্প্রিন্ট চ্যালেঞ্জেস’-এর সূচনা করেছেন
“প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আত্মনির্ভর করে তোলার লক্ষ্য পূরণ করা একবিংশ শতাব্দীতে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ”
“উদ্ভাবন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সেটি দেশীয় উদ্যোগে হওয়া প্রয়োজন; আমদানি করা পণ্য কখনই উদ্ভাবনের উৎস হয়ে উঠতে পারে না”
“দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত বিমানবাহী জাহাজের নৌ-বাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির অপেক্ষার নিরসন শীঘ্রই হতে চলেছে”
“জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে হুমকির ব্যাপ্তি ক্রমশ বাড়ছে আর যুদ্ধ কৌশলও পরিবর্তিত হচ্ছে”
“ভারত আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, ভুল তথ্য, বিকৃত তথ্য এবং ভ্রান্ত প্রচারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আক্রমণ চালানো হচ্ছে”
“দেশে বা বিদেশে ভারতের স্বার্থের পরিপন্থী শক্তিকে নির্মূল করতে হবে”
“ ‘সম্পূর্ণ সরকারি উদ্যোগ’-এর মাধ্যমে আত্মনির্ভর ভারত হয়ে ওঠার জন্য এই মুহূর্তে দেশের প্রতিরক্ষার জন্য ‘সম্পূর্ণ জাতির উদ্যোগ’-এর প্রয়োজন”

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী রাজনাথ সিংজি, শ্রী অজয় ভাটজি, নৌবাহিনীর প্রধান, উপনৌসেনা প্রধান, প্রতিরক্ষা সচিব, এসআইডিএম-এর সভাপতি এবং শিল্প, গবেষণা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সতীর্থ, বিশিষ্টজন, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!

একবিংশ শতাব্দীর ভারতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর স্বনির্ভরতা অর্জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বনির্ভর নৌবাহিনীর লক্ষ্যে প্রথম ‘স্বাবলম্বন’ আলোচনাচক্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার বিশ্বাস। এ জন্য আমি আপনাদের সকলকে সাধুবাদ জানাচ্ছি এবং আপনাদের সকলের জন্য আমার শুভ কামনা রইলো।

বন্ধুগণ,

সামরিক প্রস্তুতিতে বিশেষত নৌবাহিনীতে যৌথ প্রশিক্ষণ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই আলোচনাও সেই প্রশিক্ষণেরই অঙ্গ বলা চলে। আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে এই যৌথ প্রশিক্ষণে নৌ, শিল্প, এমএসএমই, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সহ প্রত্যেক অংশীদারীই যুক্ত যা হল সমস্ত ক্ষেত্রের মানুষ, সরকারের প্রতিনিধিরা এই লক্ষ্য সমন্বিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। এই যৌথ প্রশিক্ষণের লক্ষ্যই হল পরস্পরকে ভালোভাবে বোঝা এবং সবথেকে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অংশগ্রহণকারীদের যতটা সম্ভব বেশি করে তুলে ধরা যায় সেদিকে নজর রাখা। ফলে এই যৌথ প্রশিক্ষণ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। পরের বছর ১৫ আগস্টের মধ্যে নৌবাহিনীতে ৭৫টি দেশীয় প্রযুক্তির উদ্ভাবনের যে সংকল্প এটা একটা বিরাট পদক্ষেপ। এবং আপনাদের প্রচেষ্টা, অভিজ্ঞতা, জ্ঞান সেই লক্ষ্যপূরণে নিঃসন্দেহে সাহায্য করবে। আজ ভারতবর্ষ যখন স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করছে অমৃত মহোৎসবের মধ্যে তখন এই সব লক্ষ্যে সাফল্য আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে আরও বেশি উৎসাহ যোগাবে। যাই হোক আমি তো বলবো ৭৫টি দেশীয় প্রযুক্তির উদ্ভাবন সেদিক থেকে প্রথম পদক্ষেপ। এই সংখ্যা ক্রমে আমাদের বাড়িয়ে যেতে হবে। আপনাদের লক্ষ্য হবে ভারত যখন তার স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপন করবে তখন নৌবাহিনী এক অভূতপূর্ব উচ্চতায় পৌঁছতে পারে।

বন্ধুগণ,

আমাদের সমুদ্র এবং উপকূল সীমান্ত আমাদের আর্থিক স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে এবং তাতে উৎসাহ যোগাতে ধারকের ভূমিকা পালন করছে। ফলে ভারতীয় নৌবাহিনীর ভূমকা ক্রমাগতই বেড়ে চলেছে। ফলত নৌবাহিনীকে নিজেদের জন্যই কেবল আত্মনির্ভরতা অর্জন করলে চলবে না, দেশের সমৃদ্ধিতেও তার গুরুত্ব অপরিসীম। আমি নিশ্চিত এই আলোচনাচক্র আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আত্মনির্ভর করার ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা পালন করবে।

বন্ধুগণ,

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমরা স্বনির্ভর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা যখন আলোচনা করছি তখন অতীতের দশকগুলিতে যা ঘটেছে তার থেকেও আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। এতে করেই আমরা ভবিষ্যতের পথ তৈরি করতে পারবো। আমরা যখন পিছন ফিরে তাকাই আমরা দেখি গৌরবময় সামুদ্রিক ঐতিহ্য। ভারতের সমৃদ্ধ বাণিজ্য পথ এরই অঙ্গ স্বরূপ। আমাদের পূর্বপুরুষরা সমুদ্রে আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছিলেন কারণ হাওয়ার গতিপথ এবং মহাকাশ বিজ্ঞান সম্বন্ধে তাঁদের খুবই ভালো জ্ঞান ছিল। বিভিন্ন ঋতুতে হাওয়ার যে গতিপথ এবং সেই হাওয়ার গতিপথকে কাজে লাগিয়ে সুনির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানো সে সম্বন্ধে প্রজ্ঞা এক বড় শক্তিই বলা যেতে পারে। আমাদের দেশের বহু মানুষই জানেন না যে ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র একটা সময় খুবই শক্তিশালী ছিল। এমনকি স্বাধীনতার আগেও। স্বাধীনতার সময় দেশে ১৮টি অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি ছিল যেখানে বিভিন্ন রকমের সামরিক সরঞ্জাম, এমনকি কামানও তৈরি হতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমরা সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহকারী হিসেবে অত্যন্ত ভূমিকা পালন করেছে। ইছাপুর রাইফেল কারখানায় তৈরি আমাদের মেশিনগান এবং হাউৎজার সেইসময় সব থেকে উৎকৃষ্ট বলে বিবেচিত হতো। আমরা অনেক রপ্তানীও করতাম। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অবশেষে আমাদের বিশ্বের সর্ববৃহৎ আমদানিকারী হতে হল কেন? আমরা যদি পিছন ফিরে তাকাই তাহলে দেখবো প্রথম এবং বিশ্বযুদ্ধ সমূহ বিপর্যয় ঘটিয়েছে। বিশ্বের বৃহৎ দেশগুলি বহুবিধ সংকটের আবর্তে পড়েছে। কিন্তু কালক্রমে তার এইসব সংকটকে সম্ভাবনায় রূপান্তরিত করেছে। যুদ্ধের ক্ষেত্রে যেসমস্ত সরঞ্জামের প্রয়োজন হয় বিশ্ব বাজার দখল করতে তারা সেই সব সরঞ্জাম নির্মাতা হয়েছে। বিশ্বের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে তারা বড় নির্মাতা হয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। যুদ্ধে তাদের ক্ষতি হয়েছে বটে কিন্তু তা থেকে তারা নতুন পথ খুঁজে নিয়েছে। করোনা সময়কালে আমরাও এক বৃহৎ সংকটের মুখোমুখি হয়েছি। প্রস্তুতি বলতে যা বোঝায় সেক্ষেত্রে আমরা ছিলাম বস্তুতপক্ষে তলানিতে। আমাদের পিপিই কিট ছিলনা। টিকা তো এক দূরের স্বপ্ন। তবে প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সেই দেশগুলির মতোই যারা সম্ভাবনার ইতিবৃত্ত নির্ণয় করেছিল বৃহৎ প্রতিরক্ষা শক্তিতে। ভারতও তাই করেছিল যা অতীতে কখনও হয়নি। যেমন টিকা সহ অন্য সরঞ্জাম তৈরি করেছে। আমি আপনাদের এই উদাহরণ দিচ্ছি তার কারণ আমাদের কোনো মেধা বা যোগ্যতার অভাব নেই। বিশ্বের অন্য ১০টি দেশের সৈনিকরা যে অস্ত্র ব্যবহার করে সেই অস্ত্রেই কেবল আমাদের সৈন্যবাহিনীকে সুসজ্জিত করাটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। হতেই তো পারে তাদের আরও যোগ্য মেধা রয়েছে, আরও যোগ্য প্রশিক্ষণ রয়েছে। তারা আরও ভালো অস্ত্র তৈরি করতে পারে। কিন্তু কত দিন আমরা কেবল ঝুঁকি নিয়েই যাব? আমাদের তরুণ সেনারা কেন একই অস্ত্র ব্যবহার করে যাবে? তাদের এমন অস্ত্র থাকতে হবে যা তারা কল্পনাও করতে পারেনি। কেবলমাত্র সৈন্য তৈরি করায় নয়, উপযুক্ততা নির্ভর করছে কি রকম অস্ত্র আপনি তাদের দিচ্ছেন তার ওপরে। এবং সেজন্যই আত্মনির্ভর ভারত কেবলমাত্র একটি আর্থিক কর্মসূচিই নয়, আমাদের পুরোপুরি পরিবর্তন আনতে হবে।

বন্ধুগণ,

ভারতে স্বাধীনতার প্রথম এক এবং পরের অর্দ্ধ দশক আমরা নতুন কোনো অর্ডন্যান্স কারখানা তৈরি করিনি। পুরনো কারখানাগুলি তাদের সক্ষমতা হারিয়েছিল। ১৯৬২র যুদ্ধের পর নীতিগত কিছু পরিবর্তন আসে বাধ্যবাধকতা থেকে এবং অর্ডন্যান্স কারখানাগুলি সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু গবেষণা, উদ্ভাবন এবং ক্রমোন্নয়ন এইসব কারখানাগুলি তৈরির পিছনে সমধিক গুরুত্ব পাইনি। নতুন প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বিশ্ব সেইসময় বেসরকারী ক্ষেত্রের ওপরই নির্ভর ছিল। কিন্তু আমাদের দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র ছিল সরকারী কবজায়। আমি গুজরাট থেকে এসেছি, আমেদাবাদে দীর্ঘ সময় কেটেছে আমার। আপনাদের অনেকেই হয়তো কোনো একটা সময় গুজরাটের উপকূলে কাজ করেছেন। আমেদাবাদে সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে উঁচু উঁচু চিমনি এবং মিল। বস্ত্র ক্ষেত্রে আমেদাবাদকে ভারতের ম্যাঞ্চেস্টারের তকমা জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কি হল? কোথাও নতুন কোনো উদ্ভাবন নেই, প্রযুক্তিগত কোনো উন্নয়ন হলোনা, প্রযুক্তি হস্তান্তরও হলোনা। ফলস্বরূপ চিমনিগুলো ধ্বসে পড়লো। আমরা এই সমস্ত কিছু আমাদের চোখের সামনে দেখেছি। এটা যে কেবল একটি জায়গাতেই ঘটে তা নয়, অন্যত্রও তা ঘটবে। ফলে বলতে বাধা নেই উদ্ভাবন অত্যাবশ্যক এবং তা দেশীয় উদ্ভাবন। আমদানিকৃত দ্রব্য থেকে কোনো উদ্ভাবন হয়না। বিদেশে থাকা আমাদের যুবকদের সামনে অনেক সম্ভাবনা। কিন্তু সেইসময় আমাদের দেশে তাদের কাছে সেই সম্ভাবনা ছিল খুবই সীমিত। ফলস্বরূপ ভারতীয় সেনা একসময় যা বিশ্বের অন্যতম সামরিক শক্তি ছিল সমস্ত কিছুর জন্য এমনকি একটা রাইফেলের জন্য তাদেরকে বিশ্বের দেশগুলির ওপর নির্ভর করতে হত এবং কালক্রমে এটা একটা স্বভাবে পর্যবসিত হয়। কেউ যদি বিদেশে তৈরি একটা মোবাইল ফোনে অভ্যস্ত হয়ে থাকে তাহলে তার থেকে ভালো কোনো মোবাইল ফোন পেতে কোন দেশে সেটা তৈরি সেটা তার কাছে বিবেচিত হবে না। ফলে এটা একটা স্বভাব হয়ে দাঁড়াবে। এই জাতীয় মানসিকতা থেকে বেড়িয়ে আসতে একটা মনস্তাত্ত্বিক আলোচনাচক্রের প্রয়োজন রয়েছে। এই সমস্যার শিকড় হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিক। মনস্তাত্ত্বিকদের নিয়ে একটা সম্মেলনের আয়োজন করুন যাতে তারে শেখাতে পারে ভারতীয়রা কি করে বিদেশী পণ্যের মোহ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। ড্রাগ আসক্তদের যেমন ড্রাগের নেশা থেকে বের করে আনতে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়, সমস্ত ক্ষেত্রেই আমাদের সেই জাতীয় প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের যদি নিজেদের ওপর বিশ্বাস থাকে আমরা তাহলে আমাদের অস্ত্রকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে পারবো।

বন্ধুগণ,

আরও একটা সমস্যা যা হলো যে কোন রকম প্রতিরক্ষা চুক্তি প্রশ্নের মুখে দাঁড়ায়। এই ক্ষেত্রে অনেক লবি রয়েছে। কোনো একটা লবিকে যদি পছন্দ করা হয় সঙ্গে সঙ্গে অপর লবি উঠেপড়ে লাগে সেই চুক্তির বিরুদ্ধে। এবং গালমন্দ করা রাজনীতিকদের আমাদের দেশে অভাব নেই। ফলস্বরূপ চুক্তিগুলি ২-৪ বছর আঁকটে পরে এবং আমাদের সামরিক ক্ষেত্রকে আধুনিক অস্ত্র এবং সরঞ্জামের জন্য দশকের পর দশক অপেক্ষায় থাকতে হয়।

বন্ধুগণ,

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে যৎসামান্য জিনিসের জন্য বিদেশের ওপরে নির্ভর করে থাকাটা আমাদের দেশের আত্মমর্যাদার ক্ষেত্রকে বিপন্ন করে তা নয় আর্থিক ক্ষতিরও একটা বড় কারন হয়ে দাঁড়ায়। ২০১৪ পর আমাদের সর্বতো চেষ্টা ছিল এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে বের করে আনা। অতীতের দশকগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আজ আমরা সকলের প্রচেষ্টায় নতুন প্রতিরক্ষা ইকো সিস্টেম তৈরি করছি। আজ প্রতিরক্ষা সম্পদ এবং উন্নয়নকে বেসরকারী ক্ষেত্র, শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্র, এমএসএমই এবং স্টার্টআপের ক্ষেত্রে উন্মুক্ত করা হয়েছে। আমরা আমাদের সরকারী ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা কোম্পানীগুলিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলেছি। প্রতিরক্ষা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে আইআইটি-র মতো প্রথিতযশা সংস্থাকে আমরা যুক্ত করতে পেরেছি। আমাদের দেশে সমস্য হল যে আমাদের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অথবা প্রযুক্তি বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কোনো পাঠক্রম নেই। যখনই প্রয়োজন পরে তখন তা বাইরে থেকে সরবরাহ করা হয়। এখানে সে পাঠক্রমের প্রয়োজনীয়তা কোথায়? সম্ভাবনার ক্ষেত্রই ছিল সঙ্কুচিত। এক্ষেত্রে আমরা বিরাট পরিবর্তন নিয়ে এসেছি। আমাদের স্টার্টআপ এবং আমাদের যুব সম্প্রদায়কে আমরা এখন ডিআরডিও বা ইসরোর মতো সর্বাধুনিক সুযোগ সম্প্রসারণের জন্য সর্বোতভাবে প্রচেষ্টা করছি। মিশাইল ব্যবস্থাপনা, সাবমেরিন, তেজস যুদ্ধ বিমান যেগুলো তাদের লক্ষ্য থেকে অনেক খানি পিছিয়ে ছিল সেগুলি আধুনিকীকরণের সর্বোত প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ারের সূচনাও খুব শীঘ্রই হবে। এই আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে নৌক্ষেত্রে উদ্ভাবন, দেশীয় সংস্থা, আইডিইএক্স বা টিডিএসই এরা প্রত্যেকেই সহায়তা যোগাচ্ছে।

বন্ধুগণ,

গত ৮ বছরে আমরা কেবলমাত্র প্রতিরক্ষা বাজেটই বাড়াইনি, আমরা এটাও নিশ্চিত করেছি যে এই বাজেট বরাদ্দ যেন প্রতিরক্ষা নির্মাণ ইকো সিস্টেম উন্নয়নে কাজে লাগে। এখন এই বাজেটের একটা বৃহৎ অংশ দেশীয় কোম্পানীতে তৈরি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে খরচ করা হয়। আপনারা যেহেতু পরিবার বান্ধব, ফলে পরিবারের গুরুত্ব কি তা আপনারা সহজেই বুঝবেন। বাড়ির সন্তানকে যদি আপনি নিজেই ভালোবাসা ও সম্মান না দেন তাহলে আপনি কি করে আশা করেন যে প্রতিবেশীরা তাদের ভালোবাসবে? প্রতিদিন আপনি যদি অপদার্থ বলেন, তাহলে আর কি করে আশা করেন আপনার প্রতিবেশী তাদের ভালো বলবে? আপনি নিজের দেশীয় প্রযুক্তিকে শ্রদ্ধা না করতে শেখেন তাহলে আপনি আশা করেন কি করে যে বিশ্ব তাকে সম্মান জানাবে? এটা সম্ভব নয়। আমাদের নিজেদেরকে দিয়েই শুরু করতে হবে। দেশীয় প্রযুক্তির একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ হল ব্রহ্মস। ভারত ব্রহ্মস তৈরি করেছে এবং বন্ধুগণ, এখন ব্রহ্মস নিতে সারা বিশ্ব লাইন দিয়েছে। আমরা নিজেরা যাই তৈরি করি তাতে আমাদের গর্বিত হতে হবে। এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে সাধুবাদ জানাবো তারা ৩০০রও বেশি অস্ত্র এবং সরঞ্জামের তালিকা তৈরি করেছে যা আমাদের দেশে তৈরি হবে, বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবেনা। তিন বাহিনীর সকলকেই আমি এজন্য আমার সাধুবাদ জানাই।

বন্ধুগণ,

এই নিরলস প্রচেষ্টার ফল এখন চাক্ষুষ করা যাচ্ছে। গত ৪-৫ বছরে আমাদের প্রতিরক্ষা আমদানি প্রায় ২১ শতাংশ কমে গেছে। এই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা কেবলমাত্র অর্থ সঞ্চয় করতে পেরেছি তা নয়, একটা বিকল্পও তৈরি করতে পেরেছি। বৃহৎ প্রতিরক্ষা আমদানিকারক থেকে আমরা এখন বৃহৎ প্রতিরক্ষা রপ্তানীকারকে রূপান্তরিত হতে চলেছি। যদিও আপেল এবং অন্য ফলের মধ্যে তুলনা করা যায়না। আমার দেশের মানুষের সক্ষমতাকে আমি তুলে ধরতে চাই। করোনা সময়কালে একটা ছোট বিষয়ের ওপর আমি আলোকপাত করেছিলাম। সেইসময় আমি এমন কিছু বলতে চাইছিলাম না যা দেশের পক্ষে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম যে খেলনা পুতুল আমদানির প্রয়োজনীয়তা কোথায়? এটা খুবই সাধারণ বিষয়। আমরা আমাদের নিজেদের তৈরি খেলনা পুতুল কিনবো না কেন? আমরা বিদেশে আমাদের খেলনা পুতুল বিক্রি করতে পারবো না কেন? আমাদের খেলনা প্রস্তুতকারকদের একটা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। এটা সাধারণ বিষয়। এ নিয়ে কতগুলি আলাচনাচক্র এবং ভার্চুয়াল কতগুলি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল তাদের উৎসাহ দিতে। এই অল্প সময়ের মধ্যে যা ফল পাওয়া গেছে আপনি তা দেখে রীতিমত চমকিত হবেন। দেখুন আমার দেশের মানুষের আত্মমর্যাদা এবং সাধারণ মানুষের আকাঙ্খা কতখানি প্রবল। শিশুরা তাদের বন্ধুদের জিজ্ঞেস করতো তাদের বাড়িতে কোনো বিদেশী খেলনা আছে কি না। করোনা সঙ্কটাদীর্ণ সময়কালে তাদের মধ্যে এ প্রবণতা তৈরি হয়েছিল। এক শিশু আর একজনের কাছে জানতে চাইতো সে বিদেশী খেলনা রাখে না কি। ফলে দেখা গেলো ২ বছরের মধ্যে খেলনা আমদানি ৭০ শতাংশ কমে গেলো। আমাদের দেশে খেলনা প্রস্তুতকারকদের মধ্যে সেটা একটা প্রবল সম্ভাবনার জায়গা তৈরি করলো। ৭০ শতাংশ বেড়ে গেল তাদের রপ্তানী। এই ব্যবধানটা প্রায় ১১৪ শতাংশ। কি অপরিসীম একবার ভেবে দেখুন। আমি যা বলতে চাই তা হল খেলনা দিয়ে তুলনা হয়না। যার জন্য আমি আগেও বলেছি আপেলের সঙ্গে অন্য ফলের তুলনা চলেনা। আমি তুলনা করতে চাইছি যে আমার দেশের সাধারণ মানুষের যে সক্ষমতা তা আমাদের খেলনা প্রস্তুতকারকদের কাজে লাগতেই পারে। এই একই রকম সক্ষমতায় আমার দেশের সামরিক শক্তি ক্ষেত্রেও কার্যকরী হতে পারে। আমার দেশের মানুষের প্রতি সেই বিশ্বাসের জায়গা থাকতে হবে। গত ৮ বছরে প্রতিরক্ষা রপ্তানী ৭ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। খুব বেশি সময় আগে নয়, প্রত্যেক দেশবাসী গর্বিত যে গত বছর আমরা ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানী করেছি। এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ এক্ষেত্রে বেসরকারী ক্ষেত্রে অংশীদারি ৭০ শতাংশ।

বন্ধুগণ,

এই একবিংশ শতাব্দীতে প্রতিরক্ষা বাহিনীর আধুনিকীকরণ এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জনের সঙ্গে আর একটা দিকেও আমাদের মনোনিবেশ করতে হবে। আপনারা ওয়াকিবহাল যে জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে হুমকি সর্বব্যাপি হয়ে পরেছে এবং যুদ্ধের পদ্ধতিও ক্রমাগত বদলাচ্ছে। অতীতে প্রতিরক্ষা বলতে স্থল, নৌ এবং আকাশকে বোঝাতো। এখন তা পরিব্যাপ্ত হচ্ছে মহাকাশ, সাইবার ক্ষেত্র, আর্থিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে। আজ প্রতি পদ্ধতি অস্ত্রে রূপান্তরিত হচ্ছে। তা সে অশোধিত তেল হোক বা বিরল মৃত্তিকায় হোক। সমস্ত কিছুই অস্ত্র নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গী বদলে যাচ্ছে। একের সঙ্গে একের যুদ্ধের বাইরে এখন অদৃশ্য যুদ্ধ হচ্ছে এবং যা অনেক বেশি ভয়ংকর। অতীতের যুদ্ধ কৌশলকে মাথায় রেখে আমরা এখন আমাদের প্রতিরক্ষার নীতি নির্ণয় করতে পারিনা। ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ কি হতে পারে তা অনুমান করে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হয়। সারা বিশ্বজুড়ে ঘটনার আবর্তে নতুন পরিবর্তন এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে সামনে রেখে আমাদের নিজেদেরকে পরিবর্তন করতে হবে। এবং আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ আমাদের দেশের সার্বিক কল্যাণকর হবে।

বন্ধুগণ,

দেশের সুরক্ষায় আর একটি ক্ষেত্রে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ নজর দিতে হবে। আমাদের আত্মনির্ভরতা এবং আত্মবিশ্বাসের বাধাদায়ক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদের বলীয়ান হতে হবে। ভারত যখন বিশ্বমঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে, ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর খবর পরিবেশন করে তখন ক্রমাগত আঘাত হানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তথ্যকে আমাদের হাতিয়ার করতে হবে। নিজেদের ওপর বিশ্বাস রেখে ভারতের স্বার্থকে বিঘ্নিত করছে এমন শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। তা দেশের মধ্যেই হোক বা বিদেশেই হোক। জাতীয় সুরক্ষা কেবলমাত্র সীমান্তের সীমিত নয়, এর পরিসর আরও বৃহৎ। ফলে প্রত্যেক নাগরিককে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। বয়ং রাষ্ট্রে জাগৃয়াম (দেশের স্বার্থ রক্ষায় আমাদের সচেতন হতে হবে)। এই সচেতনতা বোধ জনব্যাপি হতে হবে। এটাও জরুরি। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এই লক্ষ্যে সামগ্রিক সরকারি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা যখন এগিয়ে চলেছি তেমনি এ মুহুর্তে সবথেকে দরকারি হল জাতির প্রতিরক্ষা সুনিশ্চিত করা। সামগ্রিক সুরক্ষা এবং সমৃদ্ধির ভিত্তিই হল ভারতের মানুষের সামগ্রিক জাতীয় সচেতনতা। পুনরায় আমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র তাদের নেতৃত্বকে এই উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি। কয়েকটা স্টল যখন আমি ঘুরে দেখছিলাম, দেখে ভালো লাগলো যে নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্তরা এখানে তাঁদের সময়, অভিজ্ঞতা এবং ব্যবহারিক শক্তিকে কাজে লাগিয়েছেন যাতে এইসব উদ্ভাবনের মধ্যে দিয়ে নৌবাহিনী এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র শক্তিশালী হয়। আমি মনে করি এটা খুবই সাধু প্রচেষ্টা। অবসরের পরেও তারা যে এই লক্ষ্যে কাজ করছেন সেইজন্য আমি তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। আপনাদের এই প্রচেষ্টাতেই আপনারা সম্মানিত। অশেষ ধন্যবাদ! অনেক সাধুবাদ!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Ayushman driving big gains in cancer treatment: Lancet

Media Coverage

Ayushman driving big gains in cancer treatment: Lancet
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Text of PM’s address at Christmas Celebrations hosted by the Catholic Bishops' Conference of India
December 23, 2024
It is a moment of pride that His Holiness Pope Francis has made His Eminence George Koovakad a Cardinal of the Holy Roman Catholic Church: PM
No matter where they are or what crisis they face, today's India sees it as its duty to bring its citizens to safety: PM
India prioritizes both national interest and human interest in its foreign policy: PM
Our youth have given us the confidence that the dream of a Viksit Bharat will surely be fulfilled: PM
Each one of us has an important role to play in the nation's future: PM

Respected Dignitaries…!

आप सभी को, सभी देशवासियों को और विशेषकर दुनिया भर में उपस्थित ईसाई समुदाय को क्रिसमस की बहुत-बहुत शुभकामनाएं, ‘Merry Christmas’ !!!

अभी तीन-चार दिन पहले मैं अपने साथी भारत सरकार में मंत्री जॉर्ज कुरियन जी के यहां क्रिसमस सेलीब्रेशन में गया था। अब आज आपके बीच उपस्थित होने का आनंद मिल रहा है। Catholic Bishops Conference of India- CBCI का ये आयोजन क्रिसमस की खुशियों में आप सबके साथ जुड़ने का ये अवसर, ये दिन हम सबके लिए यादगार रहने वाला है। ये अवसर इसलिए भी खास है, क्योंकि इसी वर्ष CBCI की स्थापना के 80 वर्ष पूरे हो रहे हैं। मैं इस अवसर पर CBCI और उससे जुड़े सभी लोगों को बहुत-बहुत बधाई देता हूँ।

साथियों,

पिछली बार आप सभी के साथ मुझे प्रधानमंत्री निवास पर क्रिसमस मनाने का अवसर मिला था। अब आज हम सभी CBCI के परिसर में इकट्ठा हुए हैं। मैं पहले भी ईस्टर के दौरान यहाँ Sacred Heart Cathedral Church आ चुका हूं। ये मेरा सौभाग्य है कि मुझे आप सबसे इतना अपनापन मिला है। इतना ही स्नेह मुझे His Holiness Pope Francis से भी मिलता है। इसी साल इटली में G7 समिट के दौरान मुझे His Holiness Pope Francis से मिलने का अवसर मिला था। पिछले 3 वर्षों में ये हमारी दूसरी मुलाकात थी। मैंने उन्हें भारत आने का निमंत्रण भी दिया है। इसी तरह, सितंबर में न्यूयॉर्क दौरे पर कार्डिनल पीट्रो पैरोलिन से भी मेरी मुलाकात हुई थी। ये आध्यात्मिक मुलाक़ात, ये spiritual talks, इनसे जो ऊर्जा मिलती है, वो सेवा के हमारे संकल्प को और मजबूत बनाती है।

साथियों,

अभी मुझे His Eminence Cardinal जॉर्ज कुवाकाड से मिलने का और उन्हें सम्मानित करने का अवसर मिला है। कुछ ही हफ्ते पहले, His Eminence Cardinal जॉर्ज कुवाकाड को His Holiness Pope Francis ने कार्डिनल की उपाधि से सम्मानित किया है। इस आयोजन में भारत सरकार ने केंद्रीय मंत्री जॉर्ज कुरियन के नेतृत्व में आधिकारिक रूप से एक हाई लेवल डेलिगेशन भी वहां भेजा था। जब भारत का कोई बेटा सफलता की इस ऊंचाई पर पहुंचता है, तो पूरे देश को गर्व होना स्वभाविक है। मैं Cardinal जॉर्ज कुवाकाड को फिर एक बार बधाई देता हूं, शुभकामनाएं देता हूं।

साथियों,

आज आपके बीच आया हूं तो कितना कुछ याद आ रहा है। मेरे लिए वो बहुत संतोष के क्षण थे, जब हम एक दशक पहले फादर एलेक्सिस प्रेम कुमार को युद्ध-ग्रस्त अफगानिस्तान से सुरक्षित बचाकर वापस लाए थे। वो 8 महीने तक वहां बड़ी विपत्ति में फंसे हुए थे, बंधक बने हुए थे। हमारी सरकार ने उन्हें वहां से निकालने के लिए हर संभव प्रयास किया। अफ़ग़ानिस्तान के उन हालातों में ये कितना मुश्किल रहा होगा, आप अंदाजा लगा सकते हैं। लेकिन, हमें इसमें सफलता मिली। उस समय मैंने उनसे और उनके परिवार के सदस्यों से बात भी की थी। उनकी बातचीत को, उनकी उस खुशी को मैं कभी भूल नहीं सकता। इसी तरह, हमारे फादर टॉम यमन में बंधक बना दिए गए थे। हमारी सरकार ने वहाँ भी पूरी ताकत लगाई, और हम उन्हें वापस घर लेकर आए। मैंने उन्हें भी अपने घर पर आमंत्रित किया था। जब गल्फ देशों में हमारी नर्स बहनें संकट से घिर गई थीं, तो भी पूरा देश उनकी चिंता कर रहा था। उन्हें भी घर वापस लाने का हमारा अथक प्रयास रंग लाया। हमारे लिए ये प्रयास केवल diplomatic missions नहीं थे। ये हमारे लिए एक इमोशनल कमिटमेंट था, ये अपने परिवार के किसी सदस्य को बचाकर लाने का मिशन था। भारत की संतान, दुनिया में कहीं भी हो, किसी भी विपत्ति में हो, आज का भारत, उन्हें हर संकट से बचाकर लाता है, इसे अपना कर्तव्य समझता है।

साथियों,

भारत अपनी विदेश नीति में भी National-interest के साथ-साथ Human-interest को प्राथमिकता देता है। कोरोना के समय पूरी दुनिया ने इसे देखा भी, और महसूस भी किया। कोरोना जैसी इतनी बड़ी pandemic आई, दुनिया के कई देश, जो human rights और मानवता की बड़ी-बड़ी बातें करते हैं, जो इन बातों को diplomatic weapon के रूप में इस्तेमाल करते हैं, जरूरत पड़ने पर वो गरीब और छोटे देशों की मदद से पीछे हट गए। उस समय उन्होंने केवल अपने हितों की चिंता की। लेकिन, भारत ने परमार्थ भाव से अपने सामर्थ्य से भी आगे जाकर कितने ही देशों की मदद की। हमने दुनिया के 150 से ज्यादा देशों में दवाइयाँ पहुंचाईं, कई देशों को वैक्सीन भेजी। इसका पूरी दुनिया पर एक बहुत सकारात्मक असर भी पड़ा। अभी हाल ही में, मैं गयाना दौरे पर गया था, कल मैं कुवैत में था। वहां ज्यादातर लोग भारत की बहुत प्रशंसा कर रहे थे। भारत ने वैक्सीन देकर उनकी मदद की थी, और वो इसका बहुत आभार जता रहे थे। भारत के लिए ऐसी भावना रखने वाला गयाना अकेला देश नहीं है। कई island nations, Pacific nations, Caribbean nations भारत की प्रशंसा करते हैं। भारत की ये भावना, मानवता के लिए हमारा ये समर्पण, ये ह्यूमन सेंट्रिक अप्रोच ही 21वीं सदी की दुनिया को नई ऊंचाई पर ले जाएगी।

Friends,

The teachings of Lord Christ celebrate love, harmony and brotherhood. It is important that we all work to make this spirit stronger. But, it pains my heart when there are attempts to spread violence and cause disruption in society. Just a few days ago, we saw what happened at a Christmas Market in Germany. During Easter in 2019, Churches in Sri Lanka were attacked. I went to Colombo to pay homage to those we lost in the Bombings. It is important to come together and fight such challenges.

Friends,

This Christmas is even more special as you begin the Jubilee Year, which you all know holds special significance. I wish all of you the very best for the various initiatives for the Jubilee Year. This time, for the Jubilee Year, you have picked a theme which revolves around hope. The Holy Bible sees hope as a source of strength and peace. It says: "There is surely a future hope for you, and your hope will not be cut off." We are also guided by hope and positivity. Hope for humanity, Hope for a better world and Hope for peace, progress and prosperity.

साथियों,

बीते 10 साल में हमारे देश में 25 करोड़ लोगों ने गरीबी को परास्त किया है। ये इसलिए हुआ क्योंकि गरीबों में एक उम्मीद जगी, की हां, गरीबी से जंग जीती जा सकती है। बीते 10 साल में भारत 10वें नंबर की इकोनॉमी से 5वें नंबर की इकोनॉमी बन गया। ये इसलिए हुआ क्योंकि हमने खुद पर भरोसा किया, हमने उम्मीद नहीं हारी और इस लक्ष्य को प्राप्त करके दिखाया। भारत की 10 साल की विकास यात्रा ने हमें आने वाले साल और हमारे भविष्य के लिए नई Hope दी है, ढेर सारी नई उम्मीदें दी हैं। 10 साल में हमारे यूथ को वो opportunities मिली हैं, जिनके कारण उनके लिए सफलता का नया रास्ता खुला है। Start-ups से लेकर science तक, sports से entrepreneurship तक आत्मविश्वास से भरे हमारे नौजवान देश को प्रगति के नए रास्ते पर ले जा रहे हैं। हमारे नौजवानों ने हमें ये Confidence दिया है, य़े Hope दी है कि विकसित भारत का सपना पूरा होकर रहेगा। बीते दस सालों में, देश की महिलाओं ने Empowerment की नई गाथाएं लिखी हैं। Entrepreneurship से drones तक, एरो-प्लेन उड़ाने से लेकर Armed Forces की जिम्मेदारियों तक, ऐसा कोई क्षेत्र नहीं, जहां महिलाओं ने अपना परचम ना लहराया हो। दुनिया का कोई भी देश, महिलाओं की तरक्की के बिना आगे नहीं बढ़ सकता। और इसलिए, आज जब हमारी श्रमशक्ति में, Labour Force में, वर्किंग प्रोफेशनल्स में Women Participation बढ़ रहा है, तो इससे भी हमें हमारे भविष्य को लेकर बहुत उम्मीदें मिलती हैं, नई Hope जगती है।

बीते 10 सालों में देश बहुत सारे unexplored या under-explored sectors में आगे बढ़ा है। Mobile Manufacturing हो या semiconductor manufacturing हो, भारत तेजी से पूरे Manufacturing Landscape में अपनी जगह बना रहा है। चाहे टेक्लोलॉजी हो, या फिनटेक हो भारत ना सिर्फ इनसे गरीब को नई शक्ति दे रहा है, बल्कि खुद को दुनिया के Tech Hub के रूप में स्थापित भी कर रहा है। हमारा Infrastructure Building Pace भी अभूतपूर्व है। हम ना सिर्फ हजारों किलोमीटर एक्सप्रेसवे बना रहे हैं, बल्कि अपने गांवों को भी ग्रामीण सड़कों से जोड़ रहे हैं। अच्छे ट्रांसपोर्टेशन के लिए सैकड़ों किलोमीटर के मेट्रो रूट्स बन रहे हैं। भारत की ये सारी उपलब्धियां हमें ये Hope और Optimism देती हैं कि भारत अपने लक्ष्यों को बहुत तेजी से पूरा कर सकता है। और सिर्फ हम ही अपनी उपलब्धियों में इस आशा और विश्वास को नहीं देख रहे हैं, पूरा विश्व भी भारत को इसी Hope और Optimism के साथ देख रहा है।

साथियों,

बाइबल कहती है- Carry each other’s burdens. यानी, हम एक दूसरे की चिंता करें, एक दूसरे के कल्याण की भावना रखें। इसी सोच के साथ हमारे संस्थान और संगठन, समाज सेवा में एक बहुत बड़ी भूमिका निभाते हैं। शिक्षा के क्षेत्र में नए स्कूलों की स्थापना हो, हर वर्ग, हर समाज को शिक्षा के जरिए आगे बढ़ाने के प्रयास हों, स्वास्थ्य के क्षेत्र में सामान्य मानवी की सेवा के संकल्प हों, हम सब इन्हें अपनी ज़िम्मेदारी मानते हैं।

साथियों,

Jesus Christ ने दुनिया को करुणा और निस्वार्थ सेवा का रास्ता दिखाया है। हम क्रिसमस को सेलिब्रेट करते हैं और जीसस को याद करते हैं, ताकि हम इन मूल्यों को अपने जीवन में उतार सकें, अपने कर्तव्यों को हमेशा प्राथमिकता दें। मैं मानता हूँ, ये हमारी व्यक्तिगत ज़िम्मेदारी भी है, सामाजिक दायित्व भी है, और as a nation भी हमारी duty है। आज देश इसी भावना को, ‘सबका साथ, सबका विकास और सबका प्रयास’ के संकल्प के रूप में आगे बढ़ा रहा है। ऐसे कितने ही विषय थे, जिनके बारे में पहले कभी नहीं सोचा गया, लेकिन वो मानवीय दृष्टिकोण से सबसे ज्यादा जरूरी थे। हमने उन्हें हमारी प्राथमिकता बनाया। हमने सरकार को नियमों और औपचारिकताओं से बाहर निकाला। हमने संवेदनशीलता को एक पैरामीटर के रूप में सेट किया। हर गरीब को पक्का घर मिले, हर गाँव में बिजली पहुंचे, लोगों के जीवन से अंधेरा दूर हो, लोगों को पीने के लिए साफ पानी मिले, पैसे के अभाव में कोई इलाज से वंचित न रहे, हमने एक ऐसी संवेदनशील व्यवस्था बनाई जो इस तरह की सर्विस की, इस तरह की गवर्नेंस की गारंटी दे सके।

आप कल्पना कर सकते हैं, जब एक गरीब परिवार को ये गारंटी मिलती हैं तो उसके ऊपर से कितनी बड़ी चिंता का बोझ उतरता है। पीएम आवास योजना का घर जब परिवार की महिला के नाम पर बनाया जाता है, तो उससे महिलाओं को कितनी ताकत मिलती है। हमने तो महिलाओं के सशक्तिकरण के लिए नारीशक्ति वंदन अधिनियम लाकर संसद में भी उनकी ज्यादा भागीदारी सुनिश्चित की है। इसी तरह, आपने देखा होगा, पहले हमारे यहाँ दिव्यांग समाज को कैसी कठिनाइयों का सामना करना पड़ता था। उन्हें ऐसे नाम से बुलाया जाता था, जो हर तरह से मानवीय गरिमा के खिलाफ था। ये एक समाज के रूप में हमारे लिए अफसोस की बात थी। हमारी सरकार ने उस गलती को सुधारा। हमने उन्हें दिव्यांग, ये पहचान देकर के सम्मान का भाव प्रकट किया। आज देश पब्लिक इंफ्रास्ट्रक्चर से लेकर रोजगार तक हर क्षेत्र में दिव्यांगों को प्राथमिकता दे रहा है।

साथियों,

सरकार में संवेदनशीलता देश के आर्थिक विकास के लिए भी उतनी ही जरूरी होती है। जैसे कि, हमारे देश में करीब 3 करोड़ fishermen हैं और fish farmers हैं। लेकिन, इन करोड़ों लोगों के बारे में पहले कभी उस तरह से नहीं सोचा गया। हमने fisheries के लिए अलग से ministry बनाई। मछलीपालकों को किसान क्रेडिट कार्ड जैसी सुविधाएं देना शुरू किया। हमने मत्स्य सम्पदा योजना शुरू की। समंदर में मछलीपालकों की सुरक्षा के लिए कई आधुनिक प्रयास किए गए। इन प्रयासों से करोड़ों लोगों का जीवन भी बदला, और देश की अर्थव्यवस्था को भी बल मिला।

Friends,

From the ramparts of the Red Fort, I had spoken of Sabka Prayas. It means collective effort. Each one of us has an important role to play in the nation’s future. When people come together, we can do wonders. Today, socially conscious Indians are powering many mass movements. Swachh Bharat helped build a cleaner India. It also impacted health outcomes of women and children. Millets or Shree Anna grown by our farmers are being welcomed across our country and the world. People are becoming Vocal for Local, encouraging artisans and industries. एक पेड़ माँ के नाम, meaning ‘A Tree for Mother’ has also become popular among the people. This celebrates Mother Nature as well as our Mother. Many people from the Christian community are also active in these initiatives. I congratulate our youth, including those from the Christian community, for taking the lead in such initiatives. Such collective efforts are important to fulfil the goal of building a Developed India.

साथियों,

मुझे विश्वास है, हम सबके सामूहिक प्रयास हमारे देश को आगे बढ़ाएँगे। विकसित भारत, हम सभी का लक्ष्य है और हमें इसे मिलकर पाना है। ये आने वाली पीढ़ियों के प्रति हमारा दायित्व है कि हम उन्हें एक उज्ज्वल भारत देकर जाएं। मैं एक बार फिर आप सभी को क्रिसमस और जुबली ईयर की बहुत-बहुत बधाई देता हूं, शुभकामनाएं देता हूं।

बहुत-बहुत धन्यवाद।