ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ, মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলে, সাবিত্রীবাঈ ফুলে, মহর্ষি কারভে ইয়ানচার স্মৃতিবিজড়িত এই মাটিতে অসংখ্য প্রতিভাবান সাহিত্যিক, শিল্পী, সমাজসেবক আর সব সামাজিক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আজকের এই অনুষ্ঠান পবিত্র হয়েছে, তাঁদের সবাইকে এবং আমার পুণের ভাই ও বোনেদের নমস্কার!
এই কর্মসূচিতে উপস্থিত মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী ভগৎ সিং কোশিয়ারিজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী শ্রী রামদাস আঠাওয়ালেজি, মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী অজিত পাওয়ারজি, মহারাষ্ট্র সরকারের অন্যান্য মন্ত্রীগণ, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশজি, সংসদে আমার সহযোগী শ্রী প্রকাশ জাভড়েকরজি, অন্যান্য উপস্থিত সাংসদগণ, বিধায়ক, পুণের মেয়র শ্রী মুরলীধর মহৌলজি, পিঁপরি চিঞ্চহড়-এর মেয়র শ্রীমতী মাইধরেজি, এখানে উপস্থিত অন্যান্য সকল শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ,
এই সময় দেশ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছে। ভারতের স্বাধীনতায় পুণের ঐতিহাসিক অবদান রয়েছে। লোকমান্য তিলক, চাপেকর বন্ধু, গোপাল গণেশ আগরকর, সেনাপতি বাপট, গোপালকৃষ্ণ দেশমুখ, আর.জি.ভন্ডরকর, মহাদেব গোবিন্দ রানাডেজির মতো অসংখ্য মহাপুরুষ, এই মাটির সুসন্তানদের, সমস্ত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আমি সাদর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই।
আজ মহারাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য সমর্পিত মহাপুরুষ রামভাও মহালগীজির তিরোধান তিথিও। আমি আজ বাবাসাহেব পুরেন্দরজিকেও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। কিছুক্ষণ আগেই আমার ছত্রপতি শিবাজি মহারাজজির অনিন্দ্যসুন্দর মূর্তি উদ্বোধনের সৌভাগ্য হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে সদাসর্বদা স্থায়ী বসবাসকারী ছত্রপতি শিবাজি মহারাজজির এই মূর্তি দেশের নবীন প্রজন্মের মনে, আগামী প্রজন্মের মনে দেশভক্তির প্রেরণা জাগাবে।
আজ পুণের উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য অনেক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসও হয়েছে। এটা আমার সৌভাগ্য যে পুণে মেট্রোর শিলান্যাসের জন্য আপনারা আমাকে ডেকেছেন, আর এখন আপনারা আমাকে উদ্বোধনেরও সুযোগ করে দিয়েছেন। আগে এরকম শিলান্যাস তো অনেক হত, কিন্তু এটা জানা যেত না যে কবে উদ্বোধন হবে।
বন্ধুগণ,
এই ঘটনা এই জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মধ্যে একটি বার্তাও রয়েছে যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পগুলিকে সম্পূর্ণ করা যেতে পারে। আজ মুলা-মুঠা নদীকে দূষণমুক্ত করার জন্য ১,১০০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজও শুরু হচ্ছে। আজ পুণের নাগরিকরা নিয়মিত নৈমিত্তিক ব্যবহারের জন্য ই-বাসও পেলেন। বানেড়-এ ই-বাসের ডিপোর উদ্বোধন হয়েছে, আর এগুলির পাশাপাশি পুণে শহর একটি অসাধারণ বিশেষ আর্ট গ্যালারি মিউজিয়াম পেয়েছে। আমি ঊষাজিকেও অভিনন্দন জানাতে চাই, কারণ আজ পুণের অনেক বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনে একটি অনিন্দ্যসুন্দর উপহার আর.কে.লক্ষ্মণজিকে সমর্পিত এই অসাধারণ আর্ট গ্যালারি মিউজিয়ামের উদ্বোধন হল। আমি ঊষাজির পাশাপাশি তাঁর গোটা পরিবারকে অভিনন্দন জানাতে চাই, কারণ আমি লাগাতার তাঁদের সম্পর্ক রক্ষা করে গিয়েছি। তাঁদের উৎসাহ, একাগ্রতা এবং এই কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য দিন-রাত এক করে লেগে থাকা – এইসব কারণে আমি গোটা পরিবারকে এবং ঊষাজিকে অভিনন্দন জানাই। এই সকল সেবাকার্যের জন্য আমি আজ পুণেবাসীকেও অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই আর পাশাপাশি আমাদের উভয় নগরের মেয়রকেও, তাঁদের টিমকেও, যাঁরা দ্রুতগতিতে উন্নয়নের অনেক কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের সবাইকে আমি শুভকামনা জানাই।
ভাই ও বোনেরা,
পুণে তার নিজস্ব সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক এবং দেশভক্তির চেতনার জন্য বিখ্যাত। পাশাপাশি, পুণে শিক্ষা, গবেষণা এবং উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি এবং অটোমোবাইল ক্ষেত্রেও নিজের পরিচয় ক্রমাগত শক্তিশালী করে তুলেছে। এক্ষেত্রে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পুণের জনগণের একটি প্রয়োজন আর আমাদের পুণেবাসীর এই প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে একসঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে কাজ করছে। এই তো কিছুক্ষণ আগেই আমি গড়ওয়াড়ে থেকে আনন্দনগর পর্যন্ত পুণে মেট্রোতে সফর করেছি। এই মেট্রো পরিষেবা পুণের যাতায়াত ব্যবস্থাকে আরও সহজ করে তুলবে, দূষণ এবং যানজট থেকে মুক্তি দেবে, পুণের জনগণের ‘ইজ অফ লিভিং’ বাড়াবে। ৫-৬ বছর আগে আমাদের দেবেন্দ্র ফড়নবিশজি যখন এখানকার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি এই প্রকল্পের জন্য লাগাতার দিল্লি আসতেন। অনেক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে তিনি এই প্রকল্পের পেছনে লেগে থাকতেন। আমি তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টাকেও অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
করোনা বিশ্বব্যাপী মহামারীর মধ্যেই পুণে মেট্রোর এই সেকশনের পরিষেবা আজ প্রস্তুত হয়েছে। পুণে মেট্রো সঞ্চালনের জন্য ব্যাপকভাবে সৌরশক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে এই শহরে প্রত্যেক বছর প্রায় ২৫ হাজার টন কার্বন ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ হ্রাস পাবে। আমি এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে, বিশেষ করে সকল শ্রমিককে হৃদয় থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনাদের এই অবদান পুণের সমস্ত পেশার মানুষজন, এখানকার ছাত্রছাত্রী, এখানকার সাধারণ মানুষকে অনেক সাহায্য করবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশে কত দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে, সে সম্পর্কে আপনারা সবাই খুব ভালোভাবে পরিচিত। এটা মনে করা হয় যে, ২০৩০ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশের শহরের জনসংখ্যা ৬০ কোটি অতিক্রম করে যাবে। শহরগুলির এই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, তার সঙ্গে অনেক সুযোগও যেমন সৃষ্টি করছে, তেমনই অনেক প্রতিকূলতাও ডেকে আনছে। শহরগুলিতে একটি নিশ্চিত সীমার মধ্যেই উড়ালপুল তৈরি করা যেতে পারে। জনসংখ্যা যদি আরও বাড়ে, আমরা কত উড়ালপুল তৈরি করব, কোথায় কোথায় তৈরি করব, সড়কপথগুলিকে আরও কত প্রশস্ত করব, কোথায় কোথায় করব? এক্ষেত্রে আমাদের বিকল্প একটাই, সেটা হল – মাস ট্রান্সপোর্টেশন বা গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা। এই গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা যত বেশি গড়ে তোলা যাবে, যত বেশি জনপ্রিয় হবে, ততই আমরা এই ধরনের প্রতিকূলতার সমাধান করতে পারব। সেজন্য আজ আমাদের সরকার আজ গণ-পরিবহণের বিভিন্ন মাধ্যম আর বিশেষ করে, মেট্রো যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছে।
২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশে শুধু দিল্লি এনসিআর-এই একটি ব্যাপক বিস্তার হয়েছিল। বাকি হাতেগোনা কয়েকটি শহরে মেট্রো পৌঁছতে শুরু করেছিল। আজ দেশের দুই ডজনেরও বেশি শহরে মেট্রো চালু হয়ে গেছে, কিংবা দ্রুত চালু হতে চলেছে। এক্ষেত্রেও মহারাষ্ট্রের বড় অংশীদারিত্ব আছে। মুম্বাই থেকে শুরু করে পুণে, পিঁপরি, চিঞ্চহড়, থানে, নাগপুর – আজ মহারাষ্ট্রের এই সমস্ত শহরে মেট্রো নেটওয়ার্ক অত্যন্ত দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে।
আজকের এই অনুষ্ঠানে আমি পুণে এবং মহারাষ্ট্রের অন্যান্য যে শহরে মেট্রো চালু হয়েছে সেখানকার জনগণকে একটা অনুরোধ জানাতে চাইব। আমি, বিশেষ করে, শহরের প্রভাবশালী নাগরিকদের বিশেষ অনুরোধ করতে চাইব, যাঁদের শহরের বড়লোক বলা হয়, তাঁদেরকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাতে চাইব যে, আমরা যত বড়ই হই না কেন, সমাজের প্রত্যেক শ্রেণীর মানুষের মেট্রো সফরের অভ্যাস করতে হবে। আপনারা যত বেশি মেট্রোতে চলাফেরা করবেন, ততই আপনারা নিজেদের শহরের উন্নয়নে সাহায্য করবেন।
ভাই ও বোনেরা,
একবিংশ শতাব্দীর ভারতে আমাদের নিজেদের শহরগুলিকে আরও আধুনিক করে তুলতে হবে, এবং সেগুলিতে নতুন নতুন পরিষেবাও যুক্ত করতে হবে। ভবিষ্যতে ভারতের শহরগুলির কথা মাথায় রেখে আমাদের সরকার অনেক প্রকল্প রচনা করেছে এবং সেগুলি নিয়ে একসঙ্গে কাজ করছে। আমাদের সরকার চেষ্টা করছে যাতে প্রত্যেক শহরে বেশি করে পরিবেশ-বান্ধব যানবাহন চলাফেরা করে। যেমন ইলেক্ট্রিক বাস, ইলেক্ট্রিক কার, ইলেক্ট্রিক দ্বি-চক্রযান। প্রত্যেক শহরে যেন স্মার্ট মোবিলিটি হয়, জনগণ সব ধরনের যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য যেন একটাই কার্ড ব্যবহার করেন, প্রত্যেক শহরের পরিষেবাকে স্মার্ট করে তোলার জন্য ইন্টিগ্রেটেড কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার যেন থাকে। এর মাধ্যমে প্রত্যেক শহরে সার্কুলার ইকনমিকে শক্তিশালী করে তোলা, আধুনিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থাকবে। প্রত্যেক শহরকে ‘ওয়াটার প্লাস’ করে তুলতে পর্যাপ্ত আধুনিক সিউয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট যেন নির্মিত হয়, জলের উৎসগুলিকে সংরক্ষণের উন্নত ব্যবস্থা যেন থাকে, প্রত্যেক শহরে ‘ওয়েস্ট টু ওয়েলথ’ বা বর্জ্য থেকে সম্পদ সৃষ্টিকারী গোবর্ধন প্ল্যান্ট যেন থাকে, বায়ো-গ্যাস প্ল্যান্ট যেন থাকে, প্রত্যেক শহর যেন এনার্জি এফিশিয়েন্সি বা শক্তিক্ষেত্রে দক্ষতার ওপর জোর দেয়, প্রত্যেক শহরের সমস্ত স্ট্রিট লাইট যেন স্মার্ট এলইডি বাল্বের আলোতে চকচক করে – এই দূরদৃষ্টি নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি।
শহরের পানীয় জল এবং পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য আমরা ‘অমৃত মিশন’ চালু করেছি, আর এর মাধ্যমে বহুবিধ উন্নয়নের উদ্যোগ নিচ্ছি। আমরা ‘রেরা’-র মতো আইন প্রণয়ন করেছি যাতে দেশের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির সুবিধা হয়। আগে এই আইনের অভাবে তাঁরা বিপদে পড়তেন, টাকা দিতেন, বছরের পর বছর পেরিয়ে যেত, বাড়ি পেতেন না। সেই সকল সমস্যার সমাধানের কথা যে কাগজে বলা হত, সেই কাগজে বাড়ি পাওয়া যেত না। এরকম অনেক অব্যবস্থা ছিল। আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি সারা জীবনের পুঁজি দিয়ে তাঁরা একটি বাড়ি বানাতে চাইতেন, আর এক শ্রেণীর মানুষ সেই বাড়ি তৈরি হওয়ার আগেই তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করত। এই মধ্যবিত্ত মানুষদের, এই গৃহ নির্মাণের ইচ্ছা নিয়ে এগিয়ে আসা মানুষদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এই রেরা আইন অনেক বড় কাজ করছে। আমরা শহরগুলিতে উন্নয়নের সুস্থ প্রতিযোগিতাও বিকশিত করছি যাতে স্থানীয় প্রশাসনগুলি পরিচ্ছন্নতার ওপর সম্পূর্ণ জোর দেয়। ‘আরবান প্ল্যানিং’ নগরোন্নয়নের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত এই সকল বিষয়ের ওপর এবারের বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
পুণের পরিচয় ‘গ্রিন ফুয়েল’ বা পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানি কেন্দ্র হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। পরিবেশ দূষণের সমস্যা থেকে মুক্তি, কাঁচা তেলের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরতা হ্রাস করা আর কৃষকদের আয় বৃদ্ধির জন্য আমরা ইথানল উৎপাদনে জোর দিয়েছি, বায়ো-ফুয়েল উৎপাদনের ওপর জোর দিয়েছি। পুণেতে বড় মাত্রায় ইথানল ব্লেন্ডিং সংক্রান্ত পরিষেবা চালু করা হয়েছে। এর ফলে এখানকার পার্শ্ববর্তী এলাকার আখ চাষীরাও অনেক বড় সুবিধা পেতে চলেছেন। পুণেকে পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর করে তোলার ক্ষেত্রেও আজ এখানকার মহা-নগরপালিকা অনেক কাজ শুরু করেছে। বারবার আসা বন্যা এবং দূষণ থেকে পুণেকে মুক্তি প্রদানের জন্য এখানে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে যে প্রকল্প গড়ে উঠছে, তা অনেক কার্যকর প্রমাণিত হবে বলে আমার বিশ্বাস। মুলা-মুঠা নদীকে পরিচ্ছন্ন করে তোলা, নাব্যতা বৃদ্ধি এবং সৌন্দর্যায়নের জন্য পুণে মহা-নগরপালিকাকে কেন্দ্রীয় সরকার সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে। নদীগুলি আবার জীবন্ত হয়ে উঠবে, ফলে শহরের নাগরিকরা অনেক স্বস্তি পাবেন, তাঁরা দৈনন্দিন জীবনে অনেক নতুন প্রাণশক্তি পাবেন।
আমি এ মহানগরে বসবাসকারী সকল নাগরিকদের অনুরোধ জানাব যে বছরে একবার একটি নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে এখানে ‘নদী উৎসব’ পালন করা শুরু করুন। নদীর প্রতি শ্রদ্ধা, নদীর মাহাত্ম্য, পরিবেশের দৃষ্টিতে নদীর পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার প্রশিক্ষণ ইত্যাদির মাধ্যমে গোটা শহরে ‘নদী উৎসব’ পালন করুন, একটি অসাধারণ নদী সচেতন আবহ গড়ে তুলুন। তবেই গিয়ে আমাদের নদীগুলির গুরুত্ব আমরা বুঝব, জলের প্রত্যেক বিন্দুর গুরুত্ব আমরা বুঝব।
বন্ধুগণ,
যে কোনও দেশে আধুনিক পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য যে জিনিসটা সবচাইতে বেশি প্রয়োজন তা হল, ‘স্পিড অ্যান্ড স্কেল’ বা গতি এবং মাত্রা। কিন্তু অনেক দশক ধরে আমাদের দেশে এমন ব্যবস্থা চালু ছিল যে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণ হতেই অনেক সময় লেগে যেত, অনেক দেরি হয়ে যেত। এই অসুস্থ কর্মসংস্কৃতি দেশের উন্নয়নকেও প্রভাবিত করত। আজকের দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়া ভারতে আমাদের গতির দিকেও নজর দিতে হবে, আর মাত্রা বা কাজের পরিমাপের দিকেও। সেজন্য আমাদের সরকার ‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ রচনা করেছে। আমরা দেখেছি যে প্রায়ই প্রকল্প শেষ হতে যে বিলম্ব হয়, তার পেছনে প্রধান কারণ থাকে সরকারের ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে, ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রকের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। এসব কারণে যখন অনেক বছর পর কোনও প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হত, ততদিনে সেটি অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ত। এর প্রাসঙ্গিকতাও আর থাকত না।
‘পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান’ এই সমস্ত পরস্পর বিরোধী দ্বন্দ্ব দূর করার কাজ করবে। যখন একটি ‘ইন্টিগ্রেটেড ফোকাস’ বা সমন্বয়মূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ হবে, তখন সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য থাকবে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রকল্পগুলিও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে, আমাদের দেশের জনগণের সমস্যাও দূর হবে, দেশবাসীর অর্থও সাশ্রয় হবে আর জনগণ অনেক দ্রুত পরিষেবা পাবেন।
ভাই ও বোনেরা,
আমি আজ অত্যন্ত সন্তুষ্ট, কারণ, এখানকার আরবান প্ল্যানিং-এ আধুনিকতার পাশাপাশি পুণের পৌরাণিক ঐতিহ্যকেও, মহারাষ্ট্রের গৌরবকেও ততটাই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই মাটি সন্ত জ্ঞানেশ্বর এবং সন্ত তুকারামের মতো প্রেরণাদায়ী সন্ন্যাসীদের মাটি। অনেক মাস আগেই শ্রীসন্ত জ্ঞানেশ্বর মহারাজ পালখি মার্গ এবং সন্ত তুকারাম মহারাজ পালখি মার্গ-এর শিলান্যাস করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। আমাদের ইতিহাস নিয়ে গর্ব করার পাশাপাশি আধুনিকতার এই উন্নয়ন যাত্রা যেন এমনভাবেই সব সময়ে নিরন্তর চলতে থাকে, এই কামনা নিয়ে পুণের সমস্ত নাগরিককে আরও একবার অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ!