মেঘালয়ের রাজ্যপাল ব্রিগেডিয়ার বি ডি মিশ্রজি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সাংমাজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী অমিত ভাই শাহ, সর্বানন্দ সোনোয়ালজি, কিরেন রিজিজুজি, জি কিষাণ রেড্ডিজি, বি এল ভার্মাজি, মণিপুর, মিজোরাম, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা এবং সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীগণ এবং মেঘালয়ের আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা!
খুবলেই শিবন! (খাসি এবং জয়ন্তিয়ায় শুভেচ্ছা), নামেং আমা! (গারোয় শুভেচ্ছা) মেঘালয় হল প্রাকৃতিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ রাজ্য। আপনাদের আতিথেয়তার মধ্যেও এই সমৃদ্ধভাব প্রকাশ পায়। আজ আমি আরও একবার সুযোগ পেয়েছি মেঘালয়ের উন্নয়ন যাত্রা উদযাপনে অংশ নেওয়ার। সংযোগ, শিক্ষা, দক্ষতা এবং কর্মসংস্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য মেঘালয়ের ভাই ও বোনেদের অভিনন্দন!
ভাই ও বোনেরা,
ঘটনাচক্রে আজ বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হচ্চে। ফুটবল প্রেমীদের মধ্যে, ফুটবল মাঠেই আজ আমি উপস্থিত। ফুটবল ম্যাচ যখন হচ্ছে ঠিক সেই সময় ফুটবল মাঠে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রতিযোগিতায় আমরা যোগ দিয়েছি। কাতারে যদিও এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এখানেও তাকে ঘিরে আনন্দ ও উৎসাহ কিছু কম নয়। বন্ধুরা, আমি এখন ফুটবল মাঠে এবং চারিদিক ফুটবল জ্বরে আক্রান্ত। তাহলে ফুটবলের ভাষাতেই কেন আমরা কথা বলব না? ফুটবলের অনুষঙ্গ নিয়েই আমরা কথা বলব। আমরা প্রত্যেকে ফুটবলের নিয়ম জানি। ক্রীড়াসুলভ মানসিকতাকে অবমাননা করলে তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। ঠিক তেমনই গত আট বছরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের পথে যে কোনও বাধাকেই আমরা লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছি। দুর্নীতি, বৈষম্য, স্বজনপোষণ, হিংসা, বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রকল্প এবং ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির অবসানের জন্য আমরা সার্বিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু সারা দেশ জানে যে এই সমস্ত রোগের শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। ফলে, এই শিকড়কে সম্পূর্ণ উৎপাটিত করার জন্য আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। উন্নয়নমূলক কাজকে ত্বরান্বিত করা এবং তাকে কার্যকরি করার ক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টা যে সদর্থক ফল পাচ্ছে তা আমরা প্রত্যক্ষ করছি। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকার এখন ক্রীড়াক্ষেত্রেও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে চলেছে। গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চল, সেখানে মোতায়েন আমার সেনাকর্মী এবং আমাদের এখানকার ছেলে-মেয়েরা এর ফলে উপকৃত। দেশের প্রথম ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্থাপন করা হয়েছে। আজ ৯০টি প্রকল্প যেমন বহু উদ্দেশ্যসাধক হল, ফুটবল মাঠ, অ্যাথলেটিক ট্র্যাক উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তৈরির কাজ চলছে। শিলং থেকে আজ আপনাদেরকে আমি একটা কথা বলতে চাই। কাতারের খেলার দিকে আজ যদিও আমাদের সকলের দৃষ্টি নিবদ্ধ যেখানে বিদেশি দলেরা খেলছে, দেশের যুবশক্তির ওপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এই কারণবশত গভীর আস্থার সঙ্গে আমি বলছি যে সেদিন আর বেশি দূরে নয়, ভারত এই জাতীয় অনুষ্ঠান উদযাপন করবে এবং ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকাকে ঘিরে উচ্ছ্বাস দেখাবে।
ভাই ও বোনেরা,
উন্নয়ন প্রথামাফিক বাজেট, টেন্ডার, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান এবং উদ্বোধনেই সীমাবদ্ধ নয়। ২০১৪-র আগেও এই সমস্ত ঘটনা ঘটত। মানুষ ফিতে কাটতেন, নেতাদের গলায় মালা দেওয়া হত, জিন্দাবাদ স্লোগান তোলা হত। তাহলে আজ কি পরিবর্তন হল? পরিবর্তন হয়েছে আমাদের মানসিকতায়। পরিবর্তন হয়েছে আমাদের সঙ্কল্পে, আমাদের অগ্রাধিকারে, আমাদের কর্মসংস্কৃতিতে, পদ্ধতিগত দিকে এবং ফলাফলে। সঙ্কল্প হল আধুনিক পরিকাঠামো এবং আধুনিক সংযোগ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে উন্নত ভারত গড়ে তোলা। মনোভাব হল, প্রত্যেকটি এলাকাকে, ভারতের প্রত্যেকটি অংশকে দ্রুত উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করা এবং ভারতের উন্নয়নে প্রত্যেকের প্রচেষ্টাকে যুক্ত করা। অগ্রাধিকার হল বঞ্চনা দূর করা, দূরত্বকে কমিয়ে আনা, দক্ষতার বৃদ্ধিকে উৎসাহ দেওয়া এবং যুব সম্প্রদায়ের সামনে অনেক সুযোগ যোগানো। কর্মসংস্কৃতিতে পরিবর্তনের অর্থ প্রত্যেকটি প্রকল্প এবং প্রত্যেকটি কার্যক্রম বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে শেষ করা।
বন্ধুগণ,
কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে এই যে পরিবর্তন, দেশজুড়ে তার সদর্থক প্রভাব স্পষ্টতই প্রতীয়মান হচ্ছে। এ বছর দেশে কেন্দ্রীয় সরকার কেবলমাত্র পরিকাঠামোর জন্য ৭ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করছে! মেঘালয়ের ভাই ও বোনেরা এবং সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষ দয়া করে একবার মনে করার চেষ্টা করুন এই সংখ্যাটা। ৭ লক্ষ কোটি! আট বছর আগে এই ব্যয় ২ লক্ষ কোটিরও কম ছিল। ফলে, স্বাধীনতার সাত দশক অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও তা কেবল ২ লক্ষ কোটিতে এসে ঠেকেছিল। কিন্তু কেবলমাত্র আট বছরের মধ্যে আমরা এই সংখ্যাকে চারগুণ বাড়িয়েছি। আজ প্রত্যেকটি রাজ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রতিযোগিতায় মেতেছে। উন্নয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা হচ্ছে এবং দেশজুড়ে এই যে পরিবর্তনের মানসিকতা দেখা যাচ্ছে তাতে সবথেকে বেশি লাভবান হচ্ছে আমার উত্তর-পূর্বাঞ্চল। শিলং-কে রেল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সমস্ত রাজধানী শহরগুলিকে যুক্ত করার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। ২০১৪-র আগে প্রতিদিন ৯০০টি বিমান চলাচল করত। আজ এই সংখ্যা পৌঁছেছে ১,৯০০-তে। আগে যেখানে ছিল ৯০০, এখন তা ১,৯০০। আজ ‘উড়ান’ প্রকল্পে মেঘালয়ের ১৬টি রুটে বিমান পরিষেবা চালু হয়েছে। এর ফলে মেঘালয়ের মানুষেরা কম খরচে বিমান পরিষেবা পাচ্ছেন। মেঘালয় এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কৃষকরা এই উন্নত বিমান সংযোগের ফলে উপকৃত হচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘কৃষি উড়ান’ প্রকল্পে এখানকার ফল এবং সব্জি খুব সহজেই দেশের বাজার এবং বিদেশের বাজারেও পৌঁছতে পারছে।
বন্ধুগণ,
মেঘালয়ে সংযোগ আরও বেশি শক্তিশালী করা হচ্ছে সেইসব প্রকল্পগুলির মধ্য দিয়ে যার আমরা ইতিমধ্যেই উদ্বোধন করেছি অথবা আজ যেগুলির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হল। গত আট বছরে মেঘালয়ে জাতীয় সড়ক নির্মাণে ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। গত আট বছরে ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’য় মেঘালয়ের গ্রামীণ এলাকায় যে রাস্তা তৈরি হয়েছে তা বিগত ২০ বছরের থেকে সাতগুণ বেশি।
ভাই ও বোনেরা,
ডিজিটাল সংযোগ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যুবশক্তির জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে। যোগাযোগ ক্ষেত্রই যে ডিজিটাল সংযোগের ফলে উপকৃত হচ্ছে তাই নয়, এর ফলে পর্যটন, প্রযুক্তি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা – এই সমস্ত ক্ষেত্রেও সুযোগ এবং সুবিধা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে উদ্ভূত ডিজিটাল অর্থনীতির সক্ষমতাও দ্রুত প্রসার লাভ করছে। ২০১৪-র তুলনায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মেঘালয়ে এই সময়কালের মধ্যে তা বৃদ্ধি পেয়েছে পাঁচগুণেরও বেশি। উন্নত সংযোগের জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্তে ৬ হাজার মোবাইল টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে। ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি এক্ষেত্রে খরচ করা হয়েছে। মেঘালয়ে বেশ কিছু ৪জি মোবাইল টাওয়ারের আজ উদ্বোধনের ফলে এই প্রচেষ্টা নতুন করে আরও বেশি শক্তি পাবে। এখানকার যুবশক্তির জন্য পরিকাঠামো নতুন সম্ভাবনার ক্ষেত্র খুলে দিচ্ছে। আইআইএম-এর উদ্বোধন এবং মেঘালয়ে প্রযুক্তি পার্কের শিলান্যাস শিক্ষার ক্ষেত্রে এবং অর্থ উপার্জনের নতুন সুযোগ প্রসারিত করবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আদিবাসী এলাকায় ১৫০টিরও বেশি একলব্য মডেল স্কুল তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৯টি মেঘালয়ে স্থাপিত হচ্ছে। এর পাশাপাশি, আইআইএম জাতীয় পেশাগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যুব সম্প্রদায় পেশাগত শিক্ষার সুযোগও পেতে চলেছেন।
ভাই ও বোনেরা,
বিজেপি-এনডিএ সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বছরেই তিনটি নতুন প্রকল্প চালু করা হয়েছে যেগুলি হয় প্রত্যক্ষভাবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত অথবা উত্তর-পূর্বাঞ্চলই তার থেকে সবচাইতে বেশি উপকৃত হবে। ‘পর্বতমালা’ প্রকল্পে রোপওয়ে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলির সুযোগ সম্প্রসারিত হবে এবং পর্যটনের উন্নয়নের ক্ষেত্রও তাতে প্রসারিত হবে। ‘পিএম ডিভাইন’ প্রকল্প উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে নতুন শক্তি যোগাচ্ছে। এই প্রকল্পের ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি সহজেই অনুমোদন পাবে। এখানে মহিলা এবং যুবদের জীবিকা অর্জনের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। ‘পিএম ডিভাইন’-এর অধীন আগামী ৩-৪ বছরে জন্য ৬ হাজার কোটি টাকার বাজেট সংস্থান রাখা হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
যে সমস্ত দলগুলি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘদিন ক্ষমতা ভোগ করেছে, এই অঞ্চলকে ‘ভাগ’ করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু আমরা ‘ডিভাইন’-এর ধারনা নিয়ে এসেছি। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রেই হোক, বিভিন্ন এলাকার ক্ষেত্রেই হোক, আমরা সমস্ত রকম বিভাজনকে মুছে দিতে চাই। আজ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আমরা বিবাদের সীমানা তৈরি করছি না, বরং উন্নয়নের করিডর তৈরি করছি এবং এর ওপরই আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। গত আট বছরে অনেক গোষ্ঠী হিংসার পথ ছেড়েছে এবং চিরস্থায়ী শান্তির পথ অবলম্বন করেছে। এটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য এফএসপিএ-এর কোনও প্রয়োজন নেই। রাজ্য সরকারের সহায়তায় এখানকার পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে যে সীমান্ত বিবাদ যা দশকের পর দশক ধরে চলে এসেছে, তারও নিরসন করা হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং আমাদের সীমান্ত এলাকাগুলি কেবলমাত্র সীমান্ত নয়, তা আমাদের নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির প্রবেশ পথ। এখান থেকে আমাদের দেশের নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করা হয় এবং এখান থেকেই অন্য দেশগুলির সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য হয়ে থাকে। ফলে, আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প যার ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি প্রভূত উপকৃত হবে তা হল – উজ্জীবিত সীমান্ত গ্রাম গড়ে তোলার পরিকল্পনা। এই প্রকল্পের অধীন সীমান্ত গ্রামগুলিতে উন্নত সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারিত হবে। বহুদিন ধরে দেশজুড়ে একটা ভুল ধারণা ছিল যে সীমান্ত এলাকার যদি উন্নয়ন ঘটানো হয় তাহলে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং এর ফলে শত্রুরা উপকৃত হবে। আমি ভাবতেও পারি না, এরকমের একটা পশ্চাদমুখী মানসিকতা কোনও একটা সময় ছিল। অতীতের সরকারগুলি এই জাতীয় মানসিকতার ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চল সহ দেশের সীমান্ত এলাকাগুলিতে কোনরকম যোগাযোগের উন্নতিসাধন ঘটায়নি। কিন্তু আজ অত্যন্ত আস্থার সঙ্গে বলতে হয় যে নতুন রাস্তা তৈরি হচ্ছে, নতুন টানেল, নতুন ব্রিজ, নতুন রেলপথ, নতুন বিমানবন্দর – যা যা প্রয়োজনীয় তা সমস্ত কিছু তৈরি হচ্ছে এবং তা একের পর এক অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। সীমান্তে যে সমস্ত গ্রামগুলি এক সময় প্রায় বর্জিত ছিল, তাকে উজ্জীবিত গ্রামে রূপান্তরের পথ নিয়েছি আমরা। নগর-কেন্দ্রিক আমাদের যে উন্নয়নের গতি, সীমান্তেও তার প্রসার হওয়া জরুরি। এর পাশাপাশি, এখানে পর্যটন প্রসার লাভ করবে এবং যাঁরা গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তাঁরা আবার গ্রামে ফিরে আসবেন।
বন্ধুগণ,
গত বছর ভ্যাটিকান সিটিতে যাওয়ার আমার সুযোগ হয়েছিল যেখানে আমি মহামান্য পোপের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁকে আমি ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। পোপের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ আমার মনের ওপর এক গভীর রেখাপাত করেছে। গোটা মানব সভ্যতা যে আজ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তা নিয়ে আমরা দু’জনে আলোচনা করেছি। ঐক্য ও সহাবস্থানের মানসিকতার মধ্য দিয়ে সকলে কিভাবে উপকৃত হতে পারেন তা নিয়ে সার্বিক প্রয়াস গ্রহণের ব্যাপারে আমরা সহমত হয়েছে। এই মানসিকতাকে আমাদের শক্তিশালী করতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের আদিবাসী সমাজ শান্তি ও উন্নয়নের রাজনীতি থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত। আদিবাসী এলাকাগুলির উন্নতির ক্ষেত্রে তাদের প্রথা, ভাষা এবং সংস্কৃতি যাতে তাঁরা রক্ষা করতে পারেন, সেটাই আমার সরকারের অগ্রাধিকার। ফলে বাঁশ কাটার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা আমরা তুলে নিয়েছি। এর ফলে, বাঁশের সঙ্গে সংযুক্ত আদিবাসীদের উৎপাদিত পণ্যের নির্মাণ অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। বন থেকে যে সমস্ত দ্রব্য উৎপাদিত তাতে মূল্য সংযোজন করতে ৮৫০টি ‘বন ধন কেন্দ্র’ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গড়ে তোলা হয়েছে। অনেক স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে যুক্ত করা হয়েছে এবং এই কাজের সঙ্গে অনেক মা ও বোনেরাও যুক্ত হয়েছেন। এছাড়াও, সামাজিক পরিকাঠামো যেমন গৃহ, জল, বিদ্যুৎ ও গ্যাস উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে সবথেকে বেশি উপকৃত করেছে। এই প্রথম গত কয়েক বছরে মেঘালয়ে ২ লক্ষ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছেছে। দরিদ্রদের জন্য ৭০ হাজার বাড়ি মঞ্জুর করা হয়েছে। এই প্রথম ৩ লক্ষ পরিবার পাইপবাহিত বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংযোগ পেয়েছে। এইসব সুযোগ-সুবিধার দ্বারা সবথেকে বেশি উপকৃত হয়েছেন আমাদের আদিবাসী ভাই ও বোনেরা।
বন্ধুগণ,
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই দ্রুত উন্নয়নের ধারা এগিয়ে চলবে আপনাদের শুভেচ্ছা এবং আমাদের শক্তির ওপর ভর করে। বড়দিনের উৎসব আসন্ন। আমি আজ যখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এসেছি, আমি আমার সমস্ত দেশবাসী এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভাই-বোনেদের বড়দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আরও একবার আপনাদের সকলকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। খুবলেই শিবন! (খাসি এবং জয়ন্তিয়ায় শুভেচ্ছা), নামেং আমা! (গারোয় শুভেচ্ছা)
প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে