ভারতরত্ন জয়প্রকাশ নারায়ণ এবং ভারতরত্ন নানাজী দেশমুখকে শ্রদ্ধা
ভারতে এর আগে সাহসী ও নির্ণায়ক পদক্ষেপ গ্রহণে কোনও সরকার ছিল না, মহাকাশ ক্ষেত্র ও মহাকাশ প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এরকম সরকারেরই দৃষ্টান্ত
হাকাশ ক্ষেত্রে চারটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে সরকারের সংস্কার চলছে
১৩০ কোটি দেশবাসীর অগ্রগতিতে মহাকাশ এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম; ভারতের কাছে মহাকাশ ক্ষেত্রের উদ্দেশ্যই হ’ল আধুনিক মানচিত্র ও নক্‌শা প্রণয়ন তথা সাধারণ মানুষের জন্য যোগাযোগ স্থাপনে সুবিধা
আত্মনির্ভর ভারত অভিযান কেবল একটি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন উদ্যোগই নয়, বরং এক সুচিন্তিত, সুপরিকল্পিত ও সুসংবদ্ধ আর্থিক কৌশল
রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের বিষয়ে সরকার এক সুস্পষ্ট নীতি নিয়ে এগিয়ে চলেছে এবং যেখানে সরকারের প্রয়োজন নেই, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে; এয়ার ইন্ডিয়ার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা আমাদের অঙ্গীকার ও আন্তরিকতার প্রতিফলন
মহাকাশ প্রযুক্তিকে গত ৭ বছরে প্রান্তিক মানুষটির কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া, অপচয়রোধ ও স্বচ্ছ প্রশাসনের কাজে লাগানো হয়েছে
রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের বিষয়ে সরকার এক সুস্পষ্ট নীতি নিয়ে এগিয়ে চলেছে এবং যেখানে সরকারের প্রয়োজন নেই, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে; এয়ার ইন্ডিয়ার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা আমাদের অঙ্গীকার ও আন্তরিকতার প্রতিফলন

আপনাদের পরিকল্পনা, আপনাদের ভাবনা ও দূরদৃষ্টির কথা শুনে, আপনাদের সকলের উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখে আমার উৎসাহ বেড়ে গিয়েছে।

বন্ধুগণ,

আজ আমাদের মহান দেশের দুই মহান সুপুত্র, ভারতরত্ন শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ণজি এবং ভারতরত্ন শ্রী নানাজি দেশমুখজির জন্মজয়ন্তীও। স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতকে সঠিক লক্ষ্যে পথ প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এই দুই মহান ব্যক্তির অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে, সকলের প্রচেষ্টাকে সম্মিলিত করে দেশে কিভাবে বড় বড় পরিবর্তন আসে, তাঁদের এই জীবনদর্শনই আমাদের আজও সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রেরণা যোগায়। আমি জয়প্রকাশজি এবং নানাজি দেশমুখজিকে প্রণাম জানাই, আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই।

বন্ধুগণ,

একবিংশ শতাব্দীর ভারত আজ যে ভাবনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে, যত ধরনের সংস্কারসাধন করছে তার ভিত্তি হল ভারতের নিজস্ব সামর্থ্যের ওপর অটুট বিশ্বাস। ভারতের সামর্থ্য বিশ্বের সকল অগ্রগামী দেশ থেকে কোনও অংশে কম নয়। এই সামর্থ্যের সামনে প্রতিবন্ধক হয়ে ওঠা সমস্ত ধরনের প্রতিকূলতাকে দূর করা আমাদের সরকারের দায়িত্ব আর এই দায়িত্ব পালন করতে সরকার কোনভাবেই পিছিয়ে থাকতে রাজি নয়। আজ ভারতে যেমন দৃঢ় সঙ্কল্প গ্রহণকারী সরকার রয়েছে, তেমনটি আগে কখনই ছিল না। মহাকাশ ক্ষেত্রে আর মহাকাশ প্রযুক্তি নিয়ে আজ ভারতে যে বড় বড় সংস্কার হচ্ছে, সেগুলি এই দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ফলেই সম্ভব হচ্ছে। আমি আজ ইন্ডিয়ান স্পেস অ্যাসোসিয়েশন – ইসপা গঠনের জন্য আপনাদের সবাইকে আরেকবার শুভেচ্ছা জানাই, সবাইকে আমার শুভকামনা জানাই।

বন্ধুগণ,

আমরা যখন মহাকাশ ক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলি, তখন আমাদের ভাবনা চারটি স্তম্ভের ভিত্তিতে বিকশিত হতে থাকে। প্রথমটি হল, বেসরকারি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনকে স্বাধীনতা; দ্বিতীয়টি হল, সরকারের ভূমিকা হবে অনুঘটকের; তৃতীয়টি হল, ভবিষ্যতের জন্য নবীন প্রজন্মকে তৈরি করা এবং চতুর্থটি হল, মহাকাশ ক্ষেত্রকে সাধারণ মানুষের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সম্পদ রূপে বিবেচনা করা। আমাদের দেশে এই চারটি স্তম্ভের সুদৃঢ় ভিত্তি নিজে থেকেই অসাধারণ সব সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে।

বন্ধুগণ,

আপনারা হয়তো একথা মানবেন যে আগে আআদের দেশে মহাকাশ ক্ষেত্রের মানে ছিল একটি সরকারি পরিচালনাধীন ব্যবস্থা। কিন্তু আমরা সরকারের দায়িত্ব নিয়ে গোড়াতেই এই মানসিকতাটিকে পাল্টেছি। তারপর মহাকাশ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের জন্য সরকার এবং স্টার্ট-আপগুলি পরস্পরের সহযোগিতায় মহাকাশ ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এই নতুন ভাবনা, নতুন মন্ত্র এজন্য প্রয়োজনীয় কারণ, ভারতের জন্য এটা লিনিয়ার ইনোভেশন অর্থাৎ পরীক্ষানিরীক্ষামূলক উদ্ভাবনের সময় নয়। এই সময়টা হল এক্সপোনেনশিয়াল ইনোভেশন অর্থাৎ যে উদ্ভাবন থেকে উপার্জন করা সম্ভব, তেমন উদ্ভাবনের পথে হাঁটা। আর এটা তখনই সম্ভব হবে যখন এতে সরকার হ্যান্ডলার কিংবা পরিচালকের ভূমিকায় না থেকে এনাব্লার কিংবা অনুঘটকের ভূমিকা পালন করবে। সেজন্য আজ প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে মহাকাশ ক্ষেত্র পর্যন্ত সরকার নিজের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে বেসরকারি ক্ষেত্রের লঞ্চপ্যাড তৈরি করার জন্যও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। আজ ইন্ডিয়ান স্যাটেলাইট রিসার্চ অর্গানাইজেশন-এর সমস্ত সুযোগ-সুবিধাগুলিকে বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। এখন এক্ষেত্রে যত প্রযুক্তি গড়ে উঠেছে, সেগুলিকে বেসরকারি ক্ষেত্রের হাতে হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে সুচারুভাবে পালন করা হবে। আমাদের যত নবীন উদ্ভাবক রয়েছেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও বিভিন্ন গবেষণা সরঞ্জাম কেনার জন্য যাতে সময় এবং প্রাণশক্তি খরচ না করতে হয়, তা সুনিশ্চিত করতে সরকার ‘স্পেস অ্যাসেট’ এবং পরিষেবার জন্য এগ্রিগেটর বা উৎসাহবর্ধকের ভূমিকাও পালন করবে।

বন্ধুগণ,

বেসরকারি ক্ষেত্রের অংশগ্রহণকে সুচারুভাবে সম্পূর্ণ করার জন্য দেশ ‘ইন-স্পেস’-এর প্রতিষ্ঠা করেছে। এই ‘ইন-স্পেস’ মহাকাশ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত বিষয়গুলিকে একটি সিঙ্গল উইন্ডো, ইন্ডিপেন্ডেন্ট এজেন্সি অর্থাৎ, স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে ‘এক জানালা’ ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে। এর ফলে, বেসরকারি ক্ষেত্রের যত অংশগ্রহণকারী থাকবেন, তাঁদের প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে আরও গতি আসবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের মহাকাশ ক্ষেত্র ১৩০ কোটি ভারতবাসীর উন্নয়নের একটি বড় মাধ্যম। আমাদের জন্য মহাকাশ ক্ষেত্রের তাৎপর্য হল সাধারণ নাগরিকদের জন্য উন্নত মানচিত্রায়ন, ইমেজিং এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসাধনের মাধ্যমে ভালো পরিষেবা। আমাদের জন্য মহাকাশ ক্ষেত্রের তাৎপর্য হল, আন্ত্রেপ্রেনার বা নবীন শিল্পোদ্যোগীদের জন্য শিপমেন্ট থেকে শুরু করে ডেলিভারি পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে গতি বৃদ্ধি। আমাদের জন্য মহাকাশ ক্ষেত্রের তাৎপর্য হল কৃষক এবং মৎস্যজীবীদের জন্য উন্নত ও অত্যাধুনিক ফোরকাস্ট বা আবহাওয়ার পূর্বাভাস। আমাদের জন্য মহাকাশ ক্ষেত্রের তাৎপর্য হল উন্নত সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং আমদানি! আমাদের জন্য মহাকাশ ক্ষেত্রের তাৎপর্য হল ইকোলজি বা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও পরিবেশ দূষণের দিকে উন্নত তদারকি। আমাদের জন্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঠিক এবং বিস্তারিত পূর্বাভাস। হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা! দেশের এই লক্ষ্যগুলি এখন ইন্ডিয়ান স্পেস অ্যাসোসিয়েশনেরও মূল লক্ষ্য হয়ে উঠতে হবে।

বন্ধুগণ,

আজ দেশ একসঙ্গে এত ব্যাপক সংস্কার পর সংস্কার দেখতে পাচ্ছে কারণ আজ দেশের চিন্তাভাবনা স্পষ্ট। এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ভাবনা আত্মনির্ভর ভারতের ভাবনা। আত্মনির্ভর ভারত অভিযান নিছকই একটি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন অভিযান নয়, সেটি একটি সুচিন্তিত, সুপরিকল্পিত, সংহত অর্থনৈতিক রণকৌশলও। একটি এমন রণকৌশল যা ভারতের শিল্পপতিদের, ভারতের যুব সম্প্রদায়ের দক্ষতার ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভারতকে গ্লোবাল ম্যানুফ্যাকচারিং পাওয়ার হাউজ অর্থাৎ, আন্তর্জাতিক শিল্পোৎপাদনের শক্তি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। এটি এমন একটি রণকৌশল যা ভারতের প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞতাকে ভিত্তি করে ভারতকে উদ্ভাবনের একটি আন্তর্জাতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। এটি এমন একটি রণকৌশল যা আন্তর্জাতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা পালন করবে, ভারতের মানবসম্পদ এবং প্রতিভার মর্যাদাকে বিশ্বস্তরে আরও গরিমাময় করে তুলবে, আর সেজন্য ভারত আজ নিজেদের দেশে যেমন রেগুলেটরি এনভায়রনমেন্ট বা নিয়ন্ত্রক পরিস্থিতি গড়ে তুলছে, সেটি গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও এই বিষয়গুলির দিকে বেশি লক্ষ্য রাখা হচ্ছে যাতে রাষ্ট্রহিত এবং সংশ্লিষ্ট সকলের মঙ্গল – উভয়কেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের মাধ্যমে ভারত প্রতিরক্ষা, কয়লা উত্তোলন এবং খনির মত বিভিন্ন ক্ষেত্র আগে থেকেই উন্মুক্ত করে দিয়েছে। পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইজ বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি নিয়ে সরকার একটি স্পষ্ট নীতি নিয়ে এগিয়ে চলেছে আর যেখানে সরকারের কোনও প্রয়োজন নেই, সেরকম অধিকাংশ ক্ষেত্রকে প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজেস বা বেসরকারি কোম্পানিগুলির জন্য উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়া নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা আমাদের দায়বদ্ধতা এবং এই নীতির প্রতি নিষ্ঠারই পরিচায়ক।

বন্ধুগণ,

বিগত বছরগুলিতে আমাদের অগ্রাধিকার নতুন প্রযুক্তি-নির্ভর গবেষণা ও উন্নয়নের পাশাপাশি সেগুলিকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়বদ্ধতাও ছিল। বিগত ৭ বছর ধরে মহাকাশ প্রযুক্তিকে আমরা সমাজের প্রান্তিক মানুষের উপকারে ‘লাস্ট মাইল ডেলিভারি’, ‘লিকেজ ফ্রি’ আর ‘ট্রান্সপারেন্ট গভর্ন্যান্স’ কিংবা দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ‘টুল’ বা উপায় করে তুলেছি। গরীব গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ, সড়ক নির্মাণ এবং অন্যান্য পরিকাঠামো প্রকল্পে জিও-ট্যাগিং-এর ব্যবহার থেকে শুরু করে স্যাটেলাইট ইমেজারি বা কৃত্রিম উপগ্রহ চিত্রায়নের মাধ্যমে উন্নয়ন পর্বে তদারকি কিংবা ফসল বিমা যোজনার মাধ্যমে দ্রুতগতিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ‘ক্লেম সেটল’ বা তাঁদের প্রাপ্য অর্থ মেটানো সুনিশ্চিত করেছি। তাছাড়া, ‘ন্যাভিক সিস্টেম’-এর মাধ্যমে কোটি কোটি মৎস্যজীবীদের সাহায্য করা, বিপর্যয় মোকাবিলার সংশ্লিষ্ট সমস্ত পরিকল্পনা করা – প্রতিটি ক্ষেত্রে মহাকাশ প্রযুক্তি প্রশাসনকে প্রোঅ্যাক্টিভ বা সক্রিয় এবং ট্রান্সপারেন্ট বা দুর্নীতিমুক্ত করতে সাহায্য করছে।

বন্ধুগণ,

প্রযুক্তি যখন সকলের আওতার মধ্যে আসে তখন কিরকম পরিবর্তন হতে পারে তার আরও একটি উদাহরণ হল ডিজিটাল প্রযুক্তি। আজ যদি ভারত বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ডিজিটাল অর্থনীতির দেশগুলির অন্যতম হয়ে থাকে, এর পেছনে বড় কারণ হল আমরা তথ্যের শক্তিকে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে দিতে পেরেছি। সেজন্য আজ যখন আমরা ‘কাটিং এজ টেকনলজি’ বা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য মহাকাশ গবেষণাকে ব্যবহার করছি, তখন আমাদের সেই নাগরিকদের কথা মনে রাখতে হবে যাঁরা সমাজের সবচাইতে নিচের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আছেন। আমাদের মনে রাখতে হবে যে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি থেকে আমাদের দূরদুরান্তের গ্রামগুলিতে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর ব্যক্তির জন্য উন্নত রিমোট হেলথ কেয়ার বা স্বাস্থ্য পরিষেবা, উন্নত প্রযুক্তিগত শিক্ষা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলি থেকে উন্নত এবং কার্যকর নিরাপত্তা – এ ধরনের অনেক সমাধান দেশের প্রত্যেক অর্থনৈতিক শ্রেণীর কাছে ও প্রত্যেক প্রান্তে পৌঁছে দিতে হবে আর আমরা সবাই জানি যে এতে মহাকাশ প্রযুক্তি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

বন্ধুগণ,

ভারত বিশ্বের সেই হাতেগোনা দেশগুলির অন্যতম যার কাছে মহাকাশ ক্ষেত্রে ‘এন্ড-টু-এন্ড ক্যাপাবিলিটি’ বা সার্বিক সামর্থ্য রয়েছে। আমরা মহাকাশ প্রযুক্তির সমস্ত ক্ষেত্রে যেমন, কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি, কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ যান ও বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন থেকে শুরু করে ইন্টার-প্ল্যানেটারি মিশনেও সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা আমাদের বিজ্ঞানীদের দক্ষতাকে আমাদের ব্র্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ অংশ করে তুলেছি। আজ যখন আমরা ‘ইনফরমেশন এজ’ বা তথ্য যুগ থেকে ‘স্পেস এজ’ বা মহাকাশ যুগের দিকে এগিয়ে চলেছি, তখন এই দক্ষতার ব্র্যান্ড ভ্যালুকে আমাদের আরও মজবুত করে তুলতে হবে। ‘স্পেশ এক্সপ্লোরেশন’ বা মহাকাশ গবেষণার প্রক্রিয়ায় কিংবা মহাকাশ প্রযুক্তির প্রয়োগে দক্ষতা ও অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে আমাদের ক্রমাগত উন্নত করতে হবে। আমাদের নিজেদের শক্তি দিয়ে যখন আমরা এগিয়ে যাব, তখন আন্তর্জাতিক মহাকাশ ক্ষেত্রে আমাদের অংশীদারিত্ব আরও যে বাড়বে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এখন আমাদের মহাকাশ গবেষণার বিভিন্ন সরঞ্জামের সরবরাহকারীর ভূমিকা থেকে এগিয়ে ‘এন্ড-টি-এন্ড স্পেস সিস্টেম’ বা সার্বিক মহাকাশ গবেষণা ও অভিযান ব্যবস্থার সরবরাহ শৃঙ্খলের অংশ হয়ে উঠতে হবে। এটা আপনাদের সকলের, সংশ্লিষ্ট সকলের অংশীদারিত্বের মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হতে পারে। এক্ষেত্রে অংশীদার হিসেবে সরকার প্রতিটি স্তরে শিল্পোদ্যোগগুলিকে, নবীন উদ্ভাবকদের ও স্টার্ট-আপগুলিকে সাহায্য করছে এবং ভবিষ্যতেও করে যাবে।

বন্ধুগণ,

স্টার্ট-আপগুলির একটি শক্তিশালী ইকো-সিস্টেম গড়ে তোলার জন্য ‘প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ্রোচ’ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই অ্যাপ্রোচ বা দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে একটি ‘ওপেন অ্যাক্সেস পাবলিক কন্ট্রোলড প্ল্যাটফর্ম’ বা সরকার নিয়ন্ত্রিত সকলের জন্য উন্মুক্ত মঞ্চ গড়ে তোলে, তেমনই সেগুলিকে শিল্পোদ্যোগ এবং বাণিজ্যের জন্যও উন্মুক্ত করে দেয়। সেই বেসিক প্ল্যাটফর্মে আন্ত্রেপ্রেনার বা নতুন শিল্পোদ্যোগীরা নতুন নতুন সমাধান উদ্ভাবন করেন। ডিজিটাল লেনদেনের জন্য সরকার সবার আগে ‘ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস’ বা ইউপিআই গড়ে তুলেছে। আজ সেই প্ল্যাটফর্মের ওপরে দাঁড়িয়েই ফিনটেক স্টার্ট-আপগুলির নেটওয়ার্ক শক্তিশালী হয়ে উঠছে। মহাকাশ ক্ষেত্রেও এই ধরনের ‘প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ্রোচ’কে উৎসাহ যোগানো হচ্ছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র বা ইসরোর সমস্ত সুযোগ-সুবিধাগুলি ব্যবহার করতে পারলে, ‘ইন-স্পেস’ হলে, ‘নিউজ স্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেড’ হলে এ ধরনের প্রতিটি প্ল্যাটফর্ম থেকে অনেক স্টার্ট-আপ এবং বেসরকারি ক্ষেত্র বড় ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছে।‘ জিও-স্পেশিয়াল ম্যাপিং ফ্যাক্টর’-এর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন নিয়মকানুনকে সরল করে তোলা হচ্ছে যাতে স্টার্ট-আপগুলি এবং প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজগুলি সহজভাবেই নতুন নতুন সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে পারে। ড্রোন প্রযুক্তি নিয়েও এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম বিকশিত করা হচ্ছে যাতে ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে ড্রোন প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা যায়।

বন্ধুগণ,

আজ ১১ অক্টোবর। ইন্টারন্যাশনাল ডে অফ গার্ল চাইল্ড বা আন্তর্জাতিক কন্যা দিবস। আমরা সেই দিনটিকে ভুলতে পারি না, ভারতের মার্স মিশন বা মঙ্গল অভিযানের সেই ছবিগুলি ভুলতে পার না, সেদিন ভারতের মহিলা বৈজ্ঞানিকরা কিভাবে অভিযানের সাফল্যকে উদযাপন করছিলেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মহাকাশ ক্ষেত্র নিয়ে সরকারের সমস্ত সংস্কার এক্ষেত্রে মহিলাদের অংশীদারিত্বকে আরও বেশি করে বাড়িয়ে তুলবে।

বন্ধুগণ,

আজ এখানে আপনাদের মধ্যে প্রায় সকলেই অন্য বেশ কিছু বিষয় নিয়েও নিজেদের পরামর্শ দিয়েছেন। আপনাদের এই ‘ইনপুটস’ এবং ‘সাজেশনস’ এই সমস্ত পরামর্শ এমন সময়ে এসেছে যখন দেশে ‘স্পেসকম পলিসি’ এবং ‘রিমোট সেন্সিং পলিসি’কে চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার কাজ অন্তিম পর্যায়ে রয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে সংশ্লিষ্ট সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশ অতি সত্ত্বর একটি উন্নত নীতি প্রণয়ন করতে চলেছে।

বন্ধুগণ,

আজ আমরা যে সিদ্ধান্তগুলি নেব, যে নীতিগত সংস্কার আনব, সেগুলির প্রভাব আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর পড়বে। আগামীদিনে এই নীতিগুলির প্রভাব আগামী ২৫ বছরের ওপর পড়বে। আমরা দেখেছি যে বিংশ শতাব্দীতে মহাকাশ এবং মহাকাশে আধিপত্য করার প্রবৃত্তি বিশ্বের দেশগুলিকে কিভাবে বিভাজিত করেছিল। এখন একবিংশ শতাব্দীতে মহাকাশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করা এবং ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে যাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা সুনিশ্চিত করাই ভারতের কাজ। যখন ভারত তার স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন করবে, তখন ভারত আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যে উচ্চতায় থাকবে, তার পেছনে আপনাদের সকলের, আমাদের সকলের অবদান গুরুত্বপূর্ণ হবে। এই অনুভব, এই দায়িত্ববোধ, এই সেন্স অফ রেসপনসিবিলিটিকে সম্বল করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সকলের প্রচেষ্টাতেই জনগণের কল্যাণ এবং দেশের কল্যাণে ‘কাটিং এজ টেকনলজি’ বা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য মহাকাশের অসীম সম্ভাবনাগুলিকে আমরা নতুন আকাশে পৌঁছে দেব। এই বিশ্বাস নিয়েই আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

ধন্যবাদ!

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Snacks, Laughter And More, PM Modi's Candid Moments With Indian Workers In Kuwait

Media Coverage

Snacks, Laughter And More, PM Modi's Candid Moments With Indian Workers In Kuwait
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister Narendra Modi to attend Christmas Celebrations hosted by the Catholic Bishops' Conference of India
December 22, 2024
PM to interact with prominent leaders from the Christian community including Cardinals and Bishops
First such instance that a Prime Minister will attend such a programme at the Headquarters of the Catholic Church in India

Prime Minister Shri Narendra Modi will attend the Christmas Celebrations hosted by the Catholic Bishops' Conference of India (CBCI) at the CBCI Centre premises, New Delhi at 6:30 PM on 23rd December.

Prime Minister will interact with key leaders from the Christian community, including Cardinals, Bishops and prominent lay leaders of the Church.

This is the first time a Prime Minister will attend such a programme at the Headquarters of the Catholic Church in India.

Catholic Bishops' Conference of India (CBCI) was established in 1944 and is the body which works closest with all the Catholics across India.