৩,৮০০ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও শিলান্যাস প্রধানমন্ত্রীর
“উন্নত ভারত গড়তে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির প্রসার এবং ভারতের নির্মাণ ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ জরুরি”
“কর্ণাটক সাগরমালা প্রকল্পের অন্যতম বৃহৎ উপকৃত রাজ্য”
“নলবাহিত জলের সুবিধা প্রথমবারের মতো কর্ণাটকের ৩০ লক্ষের বেশি গ্রামীণ পরিবারে পৌঁছেছে”
“কর্ণাটকে ৩০ লক্ষের বেশি রোগী আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন”
“পর্যটনের উন্নতি হলে আমাদের কুটীর শিল্প, শিল্পী, গ্রামীণ শিল্প, হকার, অটোরিকশা ও ট্যাক্সিচালকদের উপকার হয়”
“ভীম ও ইউপিআই-এর বর্তমানে ভারতে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে”
“৬ লক্ষ কিলোমিটারের বেশি অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি যুক্ত করা হয়েছে”
“প্রধানমন্ত্রী গতি শক্তি জাতীয় মাস্টার প্ল্যান-এর মাধ্যমে ২,৫০০-রও বেশি সড়ক ও রেল প্রকল্প চালু হয়েছে”
আঞ্চলিক নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা যাই হোক না কেন, সবক্ষেত্রেই ভারত আজ বিশেষ সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে। আইএনএস বিক্রান্ত-এর উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক ভারতবাসীর জন্য এ এক গর্বের মুহূর্ত।

কর্ণাটকের রাজ্যপাল শ্রী থাওয়ারচাঁদজি গেহলট, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বাসবরাজ বোম্মাইজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মীবৃন্দ, কর্ণাটকের সাংসদ ও বিধায়কগণ এবং এখানে বিরাট সংখ্যায় সমবেত আমার ভাই ও বোনেরা!

ভারতের নৌ-শক্তির ইতিহাসে আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। দেশের সেনা সুরক্ষা বা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা যাই হোক না কেন, ভারত আজ এক বিরাট সুযোগ-সুবিধার ঘটনাবহুল দিন প্রত্যক্ষ করছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের প্রথম বিমানবাহী পোত মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেই কোচিতে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে। প্রত্যেক ভারতীয়ই এজন্য আজ গর্বিত।

এইমাত্র ম্যাঙ্গালুরুতে ৩,৭০০ কোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হল। ঐতিহাসিক ম্যাঙ্গালোর বন্দরের সম্প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কয়েকটি প্রকল্পের আজ যেমন উদ্বোধন হয়েছে, তেমনই শিলান্যাস হয়েছে এমন কিছু প্রকল্পের যা দেশের শোধনাগার ও মৎস্যজীবীদের আয় ও উপার্জন বৃদ্ধির পক্ষেও সহায়ক হবে। এই সমস্ত প্রকল্পের জন্য আমি সকল কর্ণাটকবাসীকে অভিনন্দন জানাই।

এই প্রকল্পগুলি কর্ণাটকে শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করে তোলার সঙ্গে সঙ্গে এই রাজ্যে বাণিজ্যিক উদ্যোগ প্রচেষ্টাকেও সহজতর করে তুলবে। ‘একটি জেলা এবং একটি উৎপাদন’-এর আওতায় যে প্রকল্পগুলি উদ্ভাবিত হয়েছে, তার সাহায্যে কর্ণাটকের কৃষিজীবী ও মৎস্যজীবীদের উৎপাদন আরও সহজভাবে পৌঁছে যাবে আন্তর্জাতিক বাজারগুলিতে।

এ বছর স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার প্রাকার থেকে ভাষণদানকালে আমি যে পাঁচটি ‘প্রাণ’ অর্থাৎ, সঙ্কল্পের কথা ঘোষণা করেছিলাম তার প্রথমটিই হল এক উন্নত ভারত গড়ে তোলা। এক উন্নত ভারত গঠন করতে গেলে দেশের নির্মাণ ও উৎপাদন শিল্পে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সম্প্রসারণ একান্ত জরুরি। আবার, এক উন্নত ভারত গঠনের জন্য প্রয়োজন দেশের রপ্তানি বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পণ্যের যোগান। সহজ ও ব্যয়সাশ্রয়ী পন্থাপদ্ধতি ব্যতীত এই লক্ষ্যে পৌঁছনো কখনই সম্ভব নয়।

এই বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রেখে গত আট বছরে দেশের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে নজিরবিহীন কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। বর্তমানে দেশের এমন কোনো অংশ নেই বললেই চলে, যেখানে বড় বড় পরিকাঠামো প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। ‘ভারতমালা’ প্রকল্পের আওতায় একদিকে যেমন সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্যগুলিতে সড়ক পরিকাঠামোকে আরও জোরদার করে তোলা হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনই উপকূল পরিকাঠামোকেও আরও শক্তিশালী করে তোলা হচ্ছে ‘সাগরমালা’ কর্মসূচির আওতায়।

ভাই ও বোনেরা,

বহু বছর ধরেই বন্দর-কেন্দ্রিক উন্নয়নকে বিকাশ প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রের রূপ দেওয়া হয়েছে। এই প্রচেষ্টার সুবাদে ভারতের বন্দরগুলির কাজকর্মের ক্ষমতা মাত্র আট বছরের মধ্যেই বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। অর্থাৎ, ২০১৪ পর্যন্ত বন্দরগুলির যে ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছিল তার সমান ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে গত আট বছরে।

ম্যাঙ্গালোর বন্দরে নতুন প্রযুক্তির যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারিত হয়েছে তার সাহায্যে এই বন্দরের কাজকর্মে ক্ষমতা ও দক্ষতা, উভয়েই বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্যাস এবং তরল পণ্যের মজুত সম্পর্কিত যে চারটি প্রকল্পের আজ শিলান্যাস হল তা শুধু কর্ণাটকের ক্ষেত্রেই নয়, সারা দেশের পক্ষেই মঙ্গলদায়ক হবে। শুধু তাই নয়, এই ব্যবস্থায় ভোজ্যতেল, রান্নার গ্যাস এবং বিটুমিনের আমদানিও ক্রমশ হ্রাস পাবে।

বন্ধুগণ,

অমৃতকালে সবুজ বিকাশ প্রচেষ্টার সঙ্কল্প নিয়ে দেশ এখন এগিয়ে চলেছে। সবুজ বিকাশ এবং সবুজ কাজকর্ম নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার দ্বার উন্মুক্ত করে দিতে চলেছে। এখানকার শোধনাগারে যে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধাগুলি সম্প্রসারিত হয়েছে তা আমাদের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্রগুলির কথাই মনে করিয়ে দেয়। এতদিন পর্যন্ত এই শোধনাগারটি শুধুমাত্র নদীর জলের ওপরই নির্ভরশীল ছিল কিন্তু, জলকে লবণমুক্ত করার যে প্রকল্প চালু করা হচ্ছে তা নদীর জলের ওপর নির্ভরশীলতা বিশেষভাবে কমিয়ে আনবে।

ভাই ও বোনেরা,

গত আট বছরে দেশ যেভাবে পরিকাঠামো উন্নয়নকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে তা থেকে প্রভূত উপকৃত হয়েছে কর্ণাটক রাজ্যটি। ‘সাগরমালা’ কর্মসূচির আওতায় যে রাজ্যগুলি সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে তার অন্যতম হল কর্ণাটক। গত আট বছরে এই রাজ্যে ৭০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ সম্ভাবনার জাতীয় সড়ক প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। এর বাইরেও ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ সম্ভাবনার বেশ কিছু প্রকল্প রূপায়িত হতে যাচ্ছে। বেঙ্গালুরু-চেন্নাই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও সম্প্রসারণ, বেঙ্গালুরু-মাইসোর রোডকে ছয় লেনের রাস্তায় রূপান্তর প্রচেষ্টা, বেঙ্গালুরু থেকে পুণে পর্যন্ত গ্রিনফিল্ড করিডর নির্মাণ এবং বেঙ্গালুরু স্যাটেলাইট রিং রোড নির্মাণের কাজ বর্তমানে চলছে।

২০১৪ সালের আগের তুলনায় কর্ণাটকে রেল বাজেট খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে চারগুণেরও বেশি। গত আট বছরে রাজ্যের রেললাইনগুলিকে চওড়া করে তোলা হয়েছে চারগুণেরও বেশি দ্রুততার সঙ্গে। আবার, কর্ণাটকে রেল বৈদ্যুতিকরণের কাজের একটা বড় অংশ সম্পূর্ণ হয়েছে গত আট বছরে।

বন্ধুগণ,

বর্তমান ভারত আধুনিক পরিকাঠামো উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে কারণ এক উন্নত ভারত গড়ে তোলার পক্ষে তা একান্তই জরুরি। প্রাথমিক সুযোগ-সুবিধার খোঁজ-খবর করতেই সাধারণ মানুষের এক সময় হয়রানির সীমা থাকত না। ফলে, উন্নয়নের গতিও তাতে ব্যাহত হত। পাকা বাড়ি, শৌচাগার, নির্মল জল, বিদ্যুৎ এবং ধোঁয়ামুক্ত রান্নাঘর আজকের দিনে ভালোভাবে বাঁচতে গেলে একান্ত প্রয়োজন।

এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে এই ধরনের সুযোগ-সুবিধার সম্প্রসারণে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করেছে। গত আট বছরে দেশের দরিদ্র সাধারণ মানুষের জন্য বাসস্থান নির্মাণ করা হয়েছে ৩ কোটিরও বেশি। কর্ণাটক রাজ্যটিতেও দরিদ্র সাধারণের জন্য ৮ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার মধ্যবিত্ত পরিবারকে কোটি কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে নিজস্ব বাড়ি তৈরির জন্য।

পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে দেশের ৬ কোটিরও বেশি গৃহস্থ বাড়িতে। ‘জল জীবন মিশন’-এর আওতায় মাত্র ৩ বছরের মধ্যেই এই কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। কর্ণাটকে এই প্রথম পাইপলাইনের মাধ্যমে জলের সুযোগ পৌঁছে গেছে ৩০ লক্ষেরও বেশি গ্রামীণ পরিবারে। আমাদের প্রিয় ভাই-বোনেরাই এর সুফলভোগী। এজন্য আমি আনন্দিত।

বন্ধুগণ,

দরিদ্র মানুষের দুটি বড় প্রয়োজন হল সুলভ চিকিৎসার সুযোগ ও সামাজিক নিরাপত্তা। দুর্ভাগ্য ও দুর্ঘটনার কারণে দরিদ্র পরিবারের সকল সদস্যকেই, এমনকি তাঁদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হয়। এই দুঃখ-দুর্দশা থেকে মুক্তি দিতে সূচনা হয়েছে ‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনা’র। এর আওতায় দেশের প্রায় ৪ কোটি মানুষ হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ লাভ করছেন। এর ফলে দেশের দরিদ্র সাধারণ মানুষের ব্যয়সাশ্রয় ঘটেছে ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো। কর্ণাটকের ৩০ লক্ষেরও বেশি দরিদ্র মানুষ ‘আয়ষ্মান ভারত যোজনা’র আওতায় এই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা লাভ করছেন। এজন্য তাঁদের সাশ্রয় হয়েছে ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

প্রিয় ভাই-বোনেরা,

স্বাধীনতার পরেও বহু দশক ধরে দেশের পরিস্থিতি এমনই ছিল যে শুধুমাত্র বিত্ত ও সম্পদশালী নাগরিকরাই উন্নয়নের সুফল ভোগ করতেন। কিন্তু এই প্রথম অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল মানুষকে নিয়ে আসা হয়েছে উন্নয়নের সুফলগুলির আওতায়। আর্থিক দুরবস্থার কারণে যাঁরা সমাজে পিছিয়ে পড়েছিলেন, তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের সরকার। ক্ষুদ্র কৃষক ও ব্যবসায়ী, মৎস্যজীবী ও ফুটপাতের হকার – সকলেই দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টার সুবাদে উপকৃত হচ্ছেন এই প্রথম। তাঁরা মিলিত হচ্ছেন সমাজের মূলস্রোতের সঙ্গে।

‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’র আওতায় দেশের ১১ কোটিরও বেশি কৃষিজীবী মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে হস্তান্তরিত হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা। কর্ণাটকের ৫০ লক্ষেরও বেশি ক্ষুদ্র কৃষক এই কর্মসূচির আওতায় পেয়েছেন প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। দেশের ৩৫ লক্ষ ফুটপাতের বিক্রেতারাও সরকারি আর্থিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হননি। এই সুযোগ লাভ করেছেন কর্ণাটকের প্রায় ২ লক্ষ ফুটপাত ব্যবসায়ী।

‘মুদ্রা যোজনা’র আওতায় দেশের ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে ২০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। কর্ণাটকের লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগী ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ সহায়তা পেয়েছেন প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার মতো।

বন্ধুগণ,

কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মিলিতভাবে দেশের উপকূল এলাকায় বসবাসকারী ভাই-বোনেদের জীবনযাত্রাকে আরও সহজ ও উন্নত করে তুলতে বিশেষ প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। বন্দরের নিকটবর্তী গ্রাম এবং সেখানকার মৎস্যজীবীদের জীবনযাত্রাকেও উন্নত করে তোলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিছুক্ষণ আগেই আমাদের মৎস্যচাষী বন্ধুদের দেওয়া হয়েছে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপযোগী আধুনিক নৌকা তাঁদের দেওয়া হয়েছে।

‘প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনা’ কিংবা কিষাণ ক্রেডিট কার্ড যাই হোক না কেন, এর মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের জীবনধারণের মান উন্নত করে তোলার কাজ শুরু হয়েছে এই প্রথম।

আজ কুলাই-তে মৎস্য বন্দর প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের মৎস্যজীবী ভাই-বোনেরা এর দাবি জানিয়ে আসছিলেন বহু বছর ধরেই। প্রকল্পটি রূপায়িত হলে মৎস্যজীবীদের অনেক সমস্যারই সুরাহা হয়ে যাবে। শত শত মৎস্যজীবী পরিবার এই প্রকল্পের আওতায় যেমন লাভবান হবেন, অন্যদিকে তেমনই অনেকেই আবার কর্মসংস্থানের সুযোগও লাভ করবেন।

বন্ধুগণ,

দেশের জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নে কেন্দ্র ও রাজ্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কারণ আমরা মনে করি, তাঁদের আশা-আকাঙ্ক্ষা হল সরকারের কাছে শিরোধার্য এক  আদেশবিশেষ। সাধারণ মানুষ বিশ্বমানের পরিকাঠামোর স্বপ্ন দেখতেন। তাই, দেশের প্রতিটি প্রান্তে আধুনিক পরিকাঠামো ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে।

মানুষ স্বপ্ন দেখতেন যে দেশের আরও বেশি সংখ্যক শহরে মেট্রো রেল সম্প্রসারিত হোক। সরকারি প্রচেষ্টার সুবাদে গত আট বছরে মেট্রো রেলের সংযোগ ব্যবস্থা পৌঁছে গেছে আরও অনেক বেশি সংখ্যক শহরে।

সাধারণ মানুষের আরও একটি আশা ছিল যে সুলভ বিমান ভাড়ায় যাতায়াতের সুযোগ লাভের। ‘উড়ান’ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ১ কোটিরও বেশি যাত্রী আকাশপথে ভ্রমণের সুযোগ লাভ করেছেন।

দেশের অর্থনীতি দুর্নীতিমুক্ত হয়ে উঠুক – এই আশা পোষণ করেন দেশের নাগরিকরা। বর্তমানে ডিজিটাল ব্যবস্থায় লেনদেন এক ঐতিহাসিক মাত্রায় পৌঁছে গেছে। আমাদের ভীম ইউপিআই-এর মতো একটি উদ্ভাবন প্রচেষ্টা সারা বিশ্বেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

বর্তমানে দেশের প্রতিটি প্রান্তে সস্তায় দ্রুত ইন্টারনেট পরিষেবা পেতে আগ্রহী সাধারণ মানুষ। তাই, দেশের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে যুক্ত করা হচ্ছে ৬ লক্ষ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে।

এক নতুন বিপ্লবের সূচনা ঘটতে চলেছে ফাইভ-জি পরিষেবার মাধ্যমে। আমি খুবই আনন্দিত যে কর্ণাটকের ডবল ইঞ্জিন সরকার সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে দ্রুততার সঙ্গে।

বন্ধুগণ,

ভারতের উপকূল রেখা বিস্তৃত ৭,৫০০ কিলোমিটার বরাবর। দেশের এই বিশেষ সম্ভাবনার পূর্ণ সদ্ব্যবহারই আমাদের এখন লক্ষ্য। কারাভালি উপকূল এবং পশ্চিমঘাট পর্যটনের জন্য বিখ্যাত। আমি জানতে পেরেছি যে নিউ ম্যাঙ্গালোর বন্দর থেকে পর্যটন মরশুমে ২৫ হাজার পর্যটক আসা-যাওয়া করেন। এর মধ্যে বহু সংখ্যক বিদেশি পর্যটকও রয়েছেন। সংক্ষেপে বলতে গেলে, দেশের সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলি এখন বিরাট ও বিশাল। মধ্যবিত্ত মানুষের ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে সমুদ্রপথে পর্যটনের সম্ভাবনাও ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে।

পর্যটনের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে লাভবান হয় দেশের কুটীর ও গ্রামীণ শিল্পগুলি। সেইসঙ্গে উপকৃত হন শিল্পী, ফুটপাতের ব্যবসায়ী, অটোরিক্সাচালক, ট্যাক্সিচালক এবং সমাজের অন্যান্যরা। পর্যটনের প্রসারে নিউ ম্যাঙ্গালোর বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার সম্প্রসারণ ঘটাচ্ছে জেনে আমি খুশি।

বন্ধুগণ,

করোনা পরিস্থিতিকালে বিপর্যয়কে সুযোগে রূপান্তরের কথা আমি ঘোষণা করেছিলাম। আজ প্রকৃত অর্থেই দেশ তাই করে দেখিয়েছে। জিডিপি-র যে পরিসংখ্যান কয়েকদিন আগে আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে, তা থেকে এটা সুস্পষ্ট যে করোনা পরিস্থিতিকালে ভারত যে সমস্ত নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল তা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত বছর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নানা বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও ৬৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৫০ লক্ষ কোটি টাকার রপ্তানি বাণিজ্য সম্ভব হয়েছে আমাদের দেশ থেকে। প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে জয় করে পণ্যসামগ্রী রপ্তানি হয়েছে ৪১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ, ৩১ লক্ষ কোটি টাকার।

বর্তমানে অগ্রগতির প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেশ এগিয়ে চলেছে জোরকদমে। এমনকি সেবা ও পরিষেবা ক্ষেত্রটিও কাজ করে চলেছে দ্রুততার সঙ্গে। নির্মাণ ও উৎপাদন শিল্পে পিএলআই কর্মসূচির প্রভাবও এখন সুস্পষ্ট। মোবাইল ফোন সহ বৈদ্যুতিন উৎপাদনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সমৃদ্ধি ঘটেছে বহুগুণে।

বিদেশ থেকে খেলনা আমদানির পরিমাণ গত তিন বছরে যতটা হ্রাস পেয়েছে, এ দেশ থেকে তার রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিক ততটাই। দেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলির জন্য মূলত তা সম্ভব হয়েছে একথা বলা চলে কারণ, আমাদের দেশে রয়েছে ম্যাঙ্গালোরের মতো বেশ কিছু বড় বন্দর যার মাধ্যমে ভারতীয় পণ্যের রপ্তানি ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বন্ধুগণ,

সরকারি প্রচেষ্টার সুবাদে উপকূলবর্তী এলাকায় গত কয়েক বছরে পণ্য চলাচল উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে কারণ, এই বন্দরগুলিতে রয়েছে পর্যাপ্ত সহায়সম্পদ ও উন্নততর সুযোগ-সুবিধা। ফলে, পণ্য চলাচল ব্যবস্থাও এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। বর্তমানে সরকারের লক্ষ্যই হল বন্দরগুলির মাধ্যমে সংযোগ ও যোগাযোগের আরও প্রসার ঘটানো। এই কারণে ২৫০টিরও বেশি রেল ও সড়ক পরিকাঠামোকে বন্দরগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী সেতু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘প্রধানমন্ত্রী গতি শক্তি জাতীয় মাস্টার প্ল্যান’-এর আওতায়।

ভাই ও বোনেরা,

বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধার কারণে দেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে এখন মেধাশক্তির কোনো অভাব নেই। ভারতের বহু শিল্পোদ্যোগীই উঠে এসেছেন এই অঞ্চলগুলি থেকে। কর্ণাটকেই রয়েছে ভারতের বহু সুন্দর সুন্দর দ্বীপ ও পার্বত্য অঞ্চল। এমনকি, দেশের বিখ্যাত মন্দির ও তীর্থস্থানগুলির অনেকগুলিই অবস্থিত এই রাজ্যটিতে। ‘স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব’ উদযাপনকালে আমি বিশেষভাবে স্মরণ করি রানি আব্বাক্কা এবং রানি চেন্নাভাইরাদেবীকে। যেভাবে তাঁরা ভারতের মাটি ও বাণিজ্যকে দাসত্ব শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার জন্য সংগ্রাম চালিয়েছিলেন, তার কোনো তুলনা খুঁজে পাওয়া ভার। তাই, এই বীর মহীয়সীরা ভারতের কাছে এক বিশেষ প্রেরণাস্বরূপ। তাঁরাই আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের অনুপ্রেরণার এক বিশেষ উৎস।

কর্ণাটকবাসী এবং আমাদের তরুণ বন্ধুরা যেভাবে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানকে সফল করে তুলেছেন তা এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারই বহন করে। এই ধরনের দেশসেবার শক্তি আমাকে সর্বদাই উজ্জীবিত করে। কর্ণাটকের কারাভালি অঞ্চলে যখনই আমি উপস্থিত হই, তখনই এক জাতীয় সঙ্কল্প আমাকে অনুপ্রাণিত করে। ম্যাঙ্গালুরুতে যে উদ্যম ও প্রাণশক্তি আমি লক্ষ্য করেছি তা যেন আমাদের উন্নয়নের পথকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। এই আশা নিয়ে এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলির সাফল্য কামনা করে আমি আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা ও অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।

আসুন, আমার সাথে আপনারা জোর গলায় বলে উঠুন –

ভারতমাতা কি – জয়!

ভারতমাতা কি – জয়!

ভারতমাতা কি – জয়!

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Cabinet approves minimum support price for Copra for the 2025 season

Media Coverage

Cabinet approves minimum support price for Copra for the 2025 season
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 ডিসেম্বর 2024
December 21, 2024

Inclusive Progress: Bridging Development, Infrastructure, and Opportunity under the leadership of PM Modi