গোয়ার প্রাণশক্তিতে ভরপুর জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী প্রমোদ সাওয়ান্তজি, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সঙ্গী ও গোয়ার সুপুত্র শ্রীপাদ নায়েকজি, ডঃ ভারতীজি, পাওয়ারজি, গোয়া রাজ্যের মন্ত্রীগণ, উপস্থিত সাংসদ ও বিধায়কগণ, অন্যান্য জনপ্রতিনিধি, সমস্ত করোনা যোদ্ধা এবং ভাই ও বোনেরা!
আমার গোয়ার সমস্ত ভাই ও বোনেরা, আপনাদের অভিনন্দন।
আপনাদের সবাইকে শ্রীগণেশ পরবের অনেক অনেক শুভকামনা। আগামীকাল অনন্ত চতুর্দশীর পবিত্র উৎসবে আমরা সবাই গণপতি বাপ্পাকে বিদায় জানাব, হাতে অনন্ত সূত্র বাঁধব। অনন্ত সূত্রের তাৎপর্য হল, এটি জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি আনে, দীর্ঘায়ুর আশীর্বাদ বহন করে।
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এই পবিত্র দিবসের আগে গোয়ার জনগণ নিজেদের হাতে জীবনের রক্ষাসূত্র অর্থাৎ, টিকা নেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ করেছেন, গোয়া রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিক টিকার একটি ডোজ নিয়ে নিয়েছেন। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটা অনেক বড় কথা। সেজন্য সমস্ত গোয়াবাসীকে আমি অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
গোয়া একটি এমন রাজ্য যেখানে ভারতের বিবিধতার শক্তি দেখা যায়। পূর্ব এবং পশ্চিমের সংস্কৃতি, আচার-ব্যবহার, খাদ্যাভ্যাস – সব এই রাজ্যে একত্রে দেখা যায়। এই রাজ্যে মহাসমারোহে গণেশ উৎসব যেমন পালিত হয়, দীপাবলিও তেমনই পালিত হয় আর ক্রিস্টমাসের সময় গোয়ার জাঁকজমক আরও বেড়ে যায়। এভাবেই গোয়া তার পরম্পরাকে পালন করে। ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর ভাবনাকে ক্রমাগত শক্তিশালী করে তোলা গোয়ার প্রতিটি সাফল্য শুধু আমাকে নয়, গোটা দেশকে আনন্দ দেয়, গর্বে ভরে তোলে।
ভাই ও বোনেরা,
এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে আমার নিজের বন্ধু, প্রকৃত কর্মযোগী স্বর্গীয় মনোহর পররিকরজির কথা মনে পড়া অত্যন্ত স্বাভাবিক। গত ১০০ বছরে মানবতার সবচাইতে বড় বিপর্যয়ের প্রতিরোধে গোয়া যেভাবে লড়াই করেছে, পররিকরজি যদি আজ আমাদের মধ্যে থাকতেন, তাহলে আপনাদের এই সাফল্যের জন্য নিশ্চিতভাবেই তিনি অনেক গর্বিত হতেন।
গোয়া আজ দেশে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও দ্রুততম টিকাকরণ অভিযান ‘সবাইকে টিকা, বিনামূল্যে টিকা’-র সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিগত কয়েক মাসে গোয়া ভারী বৃষ্টিপাত, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধেও অত্যন্ত বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেছে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও প্রমোদ সাওয়ন্তজির নেতৃত্বে আপনারা অত্যন্ত বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেছেন। এই প্রাকৃতিক সমস্যাগুলির মধ্যে করোনা টিকাকরণের গতি বজায় রাখার জন্য সমস্ত করোনা যোদ্ধাদের, স্বাস্থ্যকর্মীদের, টিম গোয়ার প্রত্যেক সদস্যকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। এখানে অনেক বন্ধু তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। তা থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে এই অভিযান কত কঠিন ছিল। প্রবল খরস্রোতা নদী পেরিয়ে টিকার বাক্স সুরক্ষিত রেখে দূরাদুরান্তে পৌঁছনোর জন্য কর্তব্য-ভাবনা যেমন চাই, সমাজের প্রতি ভক্তিও চাই, আর চাই অপ্রতীম সাহস। আপনাদের সবাই কখনও না থেমে অক্লান্ত পরিশ্রমের সঙ্গে মানবতার সেবা করছেন। আপনাদের এই সেবার কথা সব সময় মনে রাখা হবে।
বন্ধুগণ,
‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস অউর সবকা প্রয়াস’ – এই মন্ত্রগুলি কত অসাধারণ পরিণাম আনতে পারে তা গোয়া, গোয়ার সরকার, গোয়ার জনগণ, গোয়ার করোনা যোদ্ধারা এবং সামনে থেকে যাঁরা লড়াই করে যাচ্ছেন সেই অগ্রণী কর্মীরা বাস্তবায়িত করে দেখিয়েছেন। সামাজিক এবং ভৌগোলিক সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য যে ধরনের সমন্বয় গোয়া দেখিয়েছে, এটা সত্যিই প্রশংসনীয়। সেজন্য প্রমোদজি আপনাকে এবং আপনার টিমকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। রাজধানী থেকে অনেক দূরে থাকা কেনাকোনা মহকুমাতেও রাজ্যের অন্যান্য মহকুমার মতোই দ্রুতগতিতে টিকাকরণ সম্পন্ন হওয়া এই সমন্বয়ের অনেক বড় উদাহরণ।
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে গোয়া তার গতিকে শ্লথ হতে দেয়নি। এই সময় যখন আমরা কথা বলছি, তখন রাজ্যের অনেক জায়গায় দ্বিতীয় ডোজ প্রদানের জন্য টিকা উৎসব চলছে। এরকম সৎ, একনিষ্ঠ প্রচেষ্টার ফলেই সম্পূর্ণ টিকাকরণ অভিযানে গোয়া দেশের অগ্রণী রাজ্যগুলির মধ্যে এগিয়ে রয়েছে। আর এটাও খুব ভালো কথা যে গোয়া শুধু রাজ্যবাসী নয়, গোয়ায় বেড়াতে আসা পর্যটক এবং পরিযায়ী শ্রমিকদেরও টিকা দিচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আজ এই সুযোগে আমি দেশের সমস্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, স্বাস্থ্য প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের প্রশংসা করতে চাই। আপনাদের সকলের প্রচেষ্টাতেই গতকাল ভারতে একদিনে ২.৫ কোটিরও বেশি মানুষের টিকাকরণের রেকর্ড তৈরি হয়েছে। বিশ্বের বড় বড় এবং সমৃদ্ধ ও সামর্থ্যবান দেশগুলিও এরকম করতে পারেনি। গতকাল আমরা দেখছিলাম কিভাবে দেশবাসী কোভিড ড্যাশবোর্ড দেখছিল আর ক্রমবর্ধমান পরিসংখ্যান দেখে উৎসাহে টগবগ করছিল।
গতকাল প্রত্যেক ঘন্টায় গড়ে ১৫ লক্ষেরও বেশি টিকাকরণ হয়েছে। প্রত্যেক মিনিটে ২৬ হাজারেরও বেশি আর প্রত্যেক সেকেন্ডে ৪২৫-এরও বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১ লক্ষেরও বেশি টিকাকরণ কেন্দ্রে এই টিকা দেওয়া হয়েছে। ভারতের নিজস্ব টিকা, টিকাকরণের জন্য এতবড় নেটওয়ার্ক, দক্ষ মানবসম্পদ – এইসব কিছুই ভারতের সামর্থ্যকে তুলে ধরে।
বন্ধুগণ,
গতকাল আপনাদের যে সাফল্য সেটা সমগ্র বিশ্বে শুধু টিকাকরণের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে নয়, ভারতের কতটা সামর্থ্য আছে তার পরিচয়ও তুলে ধরেছে। সেজন্য প্রত্যেক ভারতবাসীর কর্তব্য এই সাফল্যের জন্য গর্ব করা।
বন্ধুগণ,
আমি আজ একটি মনের কথা বলতে চাই। আমার জীবনে জন্মদিন তো অনেক এসেছে, কিন্তু এইসব বিষয় নিয়ে আমি সবসময়ই নিষ্পৃহ, এসব আড়ম্বর থেকে সবসময় দূরে থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু গতকাল এত বছর বয়সে এসে দিনটি আমার জন্য অত্যন্ত আবেগপূর্ণ ছিল। জন্মদিন পালনের অনেক পদ্ধতি থাকে। মানুষ নানাভাবে জন্মদিন পালন করে আর যেভাবেই পালন করুক, জন্মদিন পালন করে কেউ কোনও অন্যায় করে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু আপনাদের সকলের প্রচেষ্টায় গতকালকের দিনটি আমার জন্য অনেক বিশেষ হয়ে উঠেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের সকল মানুষ, যাঁরা বিগত ১.৫-২ বছর ধরে দিন-রাত পরিশ্রম করছেন, নিজের জীবনের পরোয়া না করে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশবাসীকে সাহায্য করছেন, তাঁরা গতকাল যেভাবে টিকাকরণের রেকর্ড তৈরি করে দেখিয়েছেন, এটা আমার জন্য অনেক বড় কথা। প্রত্যেকেই এতে অনেক সহযোগিতা করেছে। আপনারা এটাকে সেবার সঙ্গে জুড়েছেন। আপনাদের মনের এই করুণাভাব, এই কর্তব্য পরায়ণতার ফলেই একদিনে ২.৫ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
আর আমি মনে করি টিকার প্রত্যেক ডোজ এক একটি জীবন রক্ষায় সাহায্য করে। ২.৫ কোটিরও বেশি মানুষ এত কম সময়ে এত বড় সুরক্ষা কবচ পেয়েছেন যে, এটা আমাকে খুব আনন্দ দিয়েছে। আরও জন্মদিন আসবে, যাবে; কিন্তু গতকালকের এই দিনটা আমার মনকে ছুঁয়ে গেছে, অবিস্মরণীয় করে তুলেছে। আমি সেজন্য দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের যতই ধন্যবাদ জানাই না কেন তা কম হবে। আমি অন্তর থেকে প্রত্যেক দেশবাসীকে প্রণাম জানাই। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
ভাই ও বোনেরা,
ভারতের টিকাকরণ অভিযান নিছকই স্বাস্থ্যের সুরক্ষা কবচ নয়, একভাবে এটা পেশার সুরক্ষা কবচও। ইতিমধ্যেই হিমাচলে প্রথম ডোজের ১০০ শতাংশ হয়ে গেছে। গোয়াতেও ১০০ শতাংশ হয়ে গেছে। চণ্ডীগড় ও লাক্ষাদ্বীপেও প্রত্যেক নাগরিকের প্রথম ডোজ সম্পন্ন হয়েছে। সিকিমেও শীঘ্রই ১০০ শতাংশ হতে চলেছে। আন্দামান-নিকোবর, কেরল, লাদাখ, উত্তরাখণ্ড, দাদরা ও নগর হাভেলিতেও ১০০ শতাংশ হতে বেশিদিন লাগবে না।
বন্ধুগণ,
এটা আমরা অনেকেই শুনেছি যে দেশে পর্যটন উন্নয়ন বাস্তবায়নের জন্য বিখ্যাত রাজ্যগুলি টিকাকরণ অভিযানকে অনেক বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে। আগে আমরা এটা ঘোষণা করিনি, কারণ তাহলে এক্ষেত্রেও অনেকে রাজনীতির গন্ধ পেতেন। কিন্তু এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল যে আমাদের পর্যটন গন্তব্যগুলি যত দ্রুত সম্ভব শঙ্কামুক্ত হবে। এখন উত্তরাখণ্ডেও চারধাম যাত্রা সম্পন্ন করা সম্ভব হবে আর এ সকল প্রচেষ্টার মধ্যে গোয়াতে ১০০ শতাংশ টিকাকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য।
পর্যটন ক্ষেত্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে গোয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা ভাবুন, হোটেল ইন্ডাস্ট্রি থেকে শুরু করে ট্যাক্সি ড্রাইভার, ফেরিওয়ালা, দোকানদার – সবাই যখন টিকা নিয়েছেন, তখন পর্যটকরা নিজেদের মনে একটা নিরাপত্তার ভাবনা নিয়ে এখানে আসবেন। এভাবে আজ গোয়া আবার বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি আন্তর্জাতিক পর্যটন গন্তব্যের মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে। সেজন্য জনগণ টিকার সুরক্ষা কবচ পেয়েছে।
বন্ধুগণ,
আগামী পর্যটন ঋতুতে এখানে আগের মতোই পর্যটকদের ভিড় হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটকরা এখানে আনন্দ নিতে আসবেন। এটাই আমাদের সকলের কামনা। এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন আমরা করোনা সংক্রান্ত সাবধানতার দিকে ততটাই নজর দেব, যতটা টিকাকরণের দিকে দিয়েছি। সংক্রমণ কমেছে, কিন্তু এখনও আমাদের এই ভাইরাসকে সহজভাবে নেওয়া উচিৎ নয়। নিরাপত্তা এবং পরিচ্ছন্নতাকে যতটা অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, তত বেশি সংখ্যক পর্যটক এখানে আসবেন।
বন্ধুগণ,
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার বিদেশি পর্যটকদের উৎসাহ যোগানোর জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। ৫ লক্ষ পর্যটককে বিনামূল্যে ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভ্রমণ ও পর্যটন-সংশ্লিষ্ট সকলকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ ১০০ শতাংশ সরকারি গ্যারান্টির মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। রেজিস্টার্ড ট্যুরিস্ট গাইডরাও ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। কেন্দ্রীয় সরকার ভবিষ্যতেও সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দায়বদ্ধ যা দেশের পর্যটন ক্ষেত্রকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক হবে।
বন্ধুগণ,
গোয়ার পর্যটন ক্ষেত্রকে আকর্ষক করে তোলার জন্য, এখানকার কৃষক, মৎস্যজীবী এবং অন্যান্য সকলের সুবিধার জন্য এই রাজ্যের ডবল ইঞ্জিনের সরকার দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে পরিকাঠামো উন্নয়ন করছে। বিশেষ করে, গোয়াতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির স্বার্থে সব ধরনের সম্ভাব্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। ‘মোতা’য় নির্মীয়মান গ্রিনফিল্ড এয়ারপোর্ট আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে। এই এয়ারপোর্টকে জাতীয় মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে ছয় লেনবিশিষ্ট একটি আধুনিক সংযোগ রক্ষাকারী মহাসড়ক গড়ে তোলা হচ্ছে। কেবল জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণ খাতেই বিগত বছরগুলিতে গোয়ায় কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।
এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে নর্থ গোয়াকে সাউথ গোয়ার সঙ্গে যুক্ত করার জন্য ‘ঝুড়ি ব্রিজ’-এর উদ্বোধনও আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই হতে চলেছে। আর আপনারা জানেন যে এই সেতু পানাজিকে মার্গো-র সঙ্গে যুক্ত করবে। আমাকে বলা হয়েছে যে, গোয়া মুক্তি সংগ্রামের অসাধারণ কাহিনীর সাক্ষী আগৌড়া দুর্গও দ্রুত জনগণের জন্য আবার খুলে দেওয়া হবে।
ভাই ও বোনেরা,
গোয়ার উন্নয়নের যে ঐতিহ্য মনোহর পররিকরজি রেখে গেছেন তাকে আমার বন্ধু ডঃ প্রমোদজি এবং তাঁর টিম পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার অমৃতকালে যখন দেশ আত্মনির্ভরতার নতুন সঙ্কল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছে, তখন গোয়াও স্বয়ংসম্পূর্ণ গোয়া হয়ে ওঠার সঙ্কল্প নিয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে যে, আত্মনির্ভর ভারত, স্বয়ংসম্পূর্ণ গোয়ার এই সঙ্কল্পের মাধ্যমে গোয়ায় ৫০টিরও বেশি ক্ষেত্রে নির্মাণকার্য শুরু হয়েছে। এ থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে গোয়া জাতীয় লক্ষ্য প্রাপ্তির জন্য, যুব সম্প্রদায়ের কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ গড়ে তোলার জন্য কতটা ঐকান্তিকতা নিয়ে কাজ করে চলেছে।
বন্ধুগণ,
আজ গোয়া শুধুই কোভিড টিকাকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে না, উন্নয়নের ক্ষেত্রেও দেশের অগ্রণী রাজ্যগুলির অন্যতম হয়ে উঠেছে। গোয়ার গ্রামীণ এবং শহুরে অঞ্চল খোলা জায়গায় শৌচ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ এবং জলের মতো প্রাথমিক সুবিধাগুলি সুনিশ্চিত করতে গোয়ায় খুব ভালো কাজ হচ্ছে। গোয়া দেশের মধ্যে এমন একটি রাজ্যে যেখানে ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণ হয়েছে। প্রত্যেক বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও গোয়ায় অসাধারণ সাফল্য এসেছে। বিশেষ করে গ্রামীণ ক্ষেত্রে এই সাফল্য অত্যন্ত প্রশংসনীয়। জল জীবন মিশনের মাধ্যমে বিগত দু’বছরে দেশে প্রায় ৫ কোটি পরিবারকে নলের মাধ্যমে জলের সুবিধাসম্পন্ন করে তুলেছে। এই অভিযানকে গোয়া যেভাবে এগিয়ে নিয়ে চলেছে, ‘গুড গভর্ন্যান্স’ এবং ‘ইজ অফ লিভিং’ নিয়ে গোয়া সরকারের অগ্রাধিকারকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
ভাই ও বোনেরা,
করোনাকালের মধ্যেও গোয়া সরকার সুশাসন নিয়ে এই দায়বদ্ধতা দেখিয়েছে। সব ধরনের প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার গোয়াকে যত ধরনের সহায়তা পাঠিয়েছে তা দ্রুতগতিতে কোনরকম বৈষম্য না করে প্রত্যেক সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ গোয়ার টিম সাফল্যের সঙ্গে করেছে। প্রত্যেক গরীব, কৃষক, মৎস্যজীবী বন্ধুর কাছে সাহায্য পৌঁছে দিতে কোনও চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি। মাসের পর মাস ধরে গোয়ার গরীব পরিবারগুলিতে সততার সঙ্গে বিনামূল্যে রেশন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। গোয়ার অনেক বোনেদের এই কঠিন সময়ে বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
গোয়ার কৃষক পরিবারগুলি পিএম কিষাণ সম্মান নিধির কয়েক কোটি টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পেয়েছেন। করোনাকালেই এখানে ছোট ছোট কৃষকদের মিশন মোডে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গোয়ার পশুপালক ও মৎস্যজীবীরা প্রথমবার বিপুল সংখ্যায় কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পেয়েছেন। পিএম স্বনিধি যোজনার মাধ্যমেও গোয়াতে ঠেলাওয়ালা এবং রেললাইনের দু’ধারে পসরা সাজানো হকারদের দ্রুতগতিতে ঋণ দেওয়ার কাজ চলছে। এই সকল প্রচেষ্টার ফলে গোয়ার জনগণ বন্যার সময়েও অনেক সাহায্য পেয়েছেন।
বন্ধুগণ,
গোয়া অসীম সম্ভাবনার রাজ্য। শুধু রাজ্য নয়, ব্র্যান্ড ইন্ডিয়ার একটি উজ্জ্বল পরিচয় তুলে ধরে। এটা আমাদের সকলের দায়িত্ব যে গোয়ার এই ভূমিকাকে আমরা আরও সম্প্রসারিত করব। গোয়াতে আজ যত ভালো কাজ হচ্ছে, সেগুলি যেন নিরন্তর জারি থাকে তা সুনিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। দীর্ঘকাল পর গোয়া রাজনৈতিক স্থিরতা এবং সুশাসনের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে।
উন্নয়নের এই ধারা গোয়ার জনগণ যাতে এভাবেই বজায় রাখেন, সেই কামনা নিয়ে আপনাদের সবাইকে আরেকবার অনেক অনেক শুভেচ্ছা, প্রমোদজি এবং তাঁর গোটা টিমকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
ঈশ্বর আপনাদের সকলের মঙ্গল করুন।
ধন্যবাদ!