প্রধানমন্ত্রী ‘মেরে স্বপ্নো কা ভারত’ ও ‘আনসাং হিরোজ অফ ইন্ডিয়ান ফ্রিডম মুভমেন্ট’ বিষয়ের উপর নির্বাচিত রচনা প্রকাশ করেছেন
তিনি এমএসএমই প্রযুক্তি কেন্দ্র ও ওপেন এয়ার থিয়েটারের ব্যবস্থাসম্পন্ন প্রেক্ষাগৃহ পেরুনথালাইভার কামরাজার মনিমন্ডপম্‌ – এর উদ্বোধন করেছেন
“ভারতের জনসংখ্যার সিংহভাগই যুবক, ভারতের মানসিকতা যুবমনস্ক। ভারতের যুবসম্প্রদায়ের সম্ভাবনা প্রচুর ও তাঁরা স্বপ্ন দেখেন। ভাবনাচিন্তা ও চেতনার দিকে ভারত তারুণ্যে ভরপুর”
“ভারতের জনসংখ্যার সিংহভাগ তরুণ হওয়ায় উন্নয়নমূলক কাজে তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে”
“ভারতের যুবসম্প্রদায় কঠোর পরিশ্রমী এবং ভবিষ্যতের বিষয়ে তাঁদের ধারণা স্পষ্ট। আজ ভারত যা বলে, সারা বিশ্ব সেটিকে আগামী দিনে ভাবনা বলে বিবেচনা করে”
পুরনো ধ্যানধারণার কারণে যুবসম্প্রদায়ের দক্ষতা প্রভাবিত হয় না, বরং যুবসম্প্রদায় নিজেরাই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে”
“আজকের যুবসম্প্রদায় ‘করতে পারি’ ভাবনায় এগিয়ে চলে, যা প্রত্যেক প্রজন্মের অনুপ্রেরণার উৎস”
“ভারতীয় যুবসম্প্রদায় বিশ্বকে সমৃদ্ধির পথ দেখাবে”
“ভারতীয় যুবসম্প্রদায় বিশ্বকে সমৃদ্ধির পথ দেখাবে”
“নতুন ভারতের মন্ত্র হ’ল - প্রতিযোগি

পুদুচেরির লেফটেন্যান্ট গভর্নর শ্রী তামিল-সাইজি, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী এন রঙ্গাস্বামীজি, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহযোগী শ্রী নারায়ণ রাণেজি, শ্রী অনুরাগ ঠাকুরজি, শ্রী নিশীথ প্রামাণিকজি, শ্রী ভানুপ্রতাপ সিং ভার্মাজি, পুদুচেরি সরকারের বরিষ্ঠ মন্ত্রীগণ, সাংসদগণ, বিধায়কগণ, দেশের অন্যান্য রাজ্যের মন্ত্রীগণ আর আমার যুব বন্ধুরা! ভনক্কম! আপনাদের সবাইকে জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

ভারতমাতার মহান সন্তান স্বামী বিবেকানন্দজিকে তাঁর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে তাঁর জন্মজয়ন্তী আরও বেশি প্রেরণাদায়ী হয়ে উঠেছে। এই বছর যে আরও দু’টি কারণে বিশেষ হয়ে উঠেছে তা হল, আমরা এ বছরই মহর্ষি শ্রী অরবিন্দের সার্ধশত জন্মজয়ন্তী পালন করছি আর এ বছরেই মহাকবি সুব্রহ্মণ্য ভারতীজির ১০০তম প্রয়াণ দিবস পালিত হবে। এই দুই মনীষীর সঙ্গে পুদুচেরির বিশেষ সম্পর্ক ছিল। তাঁরা দু’জনেই পরস্পরের সাহিত্যিক এবং আধ্যাত্মিক যাত্রার সঙ্গী ছিলেন। সুতরাং, পুদুচেরিতে যে জাতীয় যুব উৎসব পালিত হচ্ছে, সেটিকে আমরা ভারতমাতার এই সকল মহান সন্তানদের স্মৃতির উদ্দেশে উৎসর্গ করছি। আজকে পুদুচেরিতে ‘এমএসএমই টেকনলজি সেন্টার’ বা অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ প্রযুক্তি কেন্দ্রের উদ্বোধন হয়েছে। আত্মনির্ভর ভারত নির্মাণে এই অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের অত্যন্ত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আজ যখন বিশ্ব দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে, তখন আমাদের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলিরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। সেজন্য দেশে আজ ‘টেকনলজি সেন্টার সিস্টেমস প্রোগ্রাম’-এর অনেক বড় অভিযান চালানো হচ্ছে। পুদুচেরিতে গড়ে ওঠা অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পোদ্যোগ প্রযুক্তি কেন্দ্র এই লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

বন্ধুগণ,

আজ পুদুচেরির যুব সমাজের জন্য শ্রদ্ধেয় কামরাজজির নামে ‘মণিমণ্ডপ্পম’ বা প্রাচীন শৈলীতে নির্মিত এক ধরনের বহু উদ্দেশ্যসাধক সভাগৃহের উদ্বোধন হয়েছে। এই উপহার কামরাজজির অবদানকে যেমন স্মরণ করাবে, তেমনই আমাদের নবীন প্রজন্মের প্রতিভাধর যুবক-যুবতীদের নিজস্ব শিল্প-কলায় উৎকর্ষ প্রদর্শনের উপযোগী একটা ঐতিহ্যমণ্ডিত মঞ্চ প্রদান করবে।

বন্ধুগণ,

আজ গোটা বিশ্ব ভারতের দিকে একটি আশার দৃষ্টি নিয়ে, একটি বিশ্বাসের দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে কারণ, ভারতের অধিকাংশ মানুষ যেমন নবীন, তেমনই ভারতের মনও নবীন। ভারত তার সামর্থ্যের ক্ষেত্রেও যেমন নবীন, তেমনই স্বপ্নের ক্ষেত্রেও নবীন। ভারত তার চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে যেমন নবীন, তেমনই বিশ্ব চেতনার ক্ষেত্রেও নবীন। ভারত নবীন কারণ ভারতের দৃষ্টি সর্বদাই আধুনিকতাকে স্বীকার করেছে, ভারতের দর্শন সর্বদাই পরিবর্তনকে আপন করে নিয়েছে। ভারত তো সেই দেশ যেখানে প্রাচীনতার মধ্যেও নবীনতা রয়েছে। আমাদের হাজার হাজার বছর পুরনো বেদ-এ বলা হয়েছে –

“অপি য়থা, য়ুবানো মৎসথা, নো বিশ্বং জগত, অভিপিত্বে মনীষা।।”

অর্থাৎ, এই যুবশক্তিই বিশ্বে সুখ থেকে শুরু করে সুরক্ষা পর্যন্ত সুনিশ্চিত করে। এই যুবরাই আমাদের ভারতের জন্য, আমাদের রাষ্ট্রের জন্য অবশ্যই সুখ এবং সুরক্ষার পথ খুঁজে বের করবে। সেজন্য ভারতের প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে জগতের প্রত্যেক মানুষের যোগসাধনের যে যাত্রা, তা সে রেভোলিউশন বা বিপ্লব হোক অথবা ইভোলিউশন বা বিবর্তন হোক – প্রতিটি পথ, তা সে সেবার পথ হোক কিংবা সমর্পণের, পরিবর্তনের হোক কিংবা পরাক্রমের, সহযোগিতার হোক কিংবা সংস্কারের, শেকড়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়া হোক কিংবা জগতে বিস্তারিত হওয়া – এমন কোনও পথ নেই যেখানে আমার দেশের যুব সম্প্রদায় প্রবলভাবে অংশগ্রহণ করেনি। যদি কোথাও ভারতের চেতনা বিভাজিত হয়, তখন শঙ্করের মতো কোনও যুবক তপস্যার মাধ্যমে আদি শঙ্করাচার্য হয়ে উঠে দেশকে একতার সূত্রে গ্রথিত করে। যখন ভারতে অন্যায় এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজন হয়েছে, তখন গুরু গোবিন্দ সিংহ-জির পুত্রদের মতো যুবকদের সিংহ বিক্রম এবং আত্মবলিদান আজও আমাদের পথ দেখায়। যখন ভারতের স্বাধীনতার জন্য বিপ্লবের প্রয়োজন হয়েছিল, তখন সর্দার ভগৎ সিং থেকে শুরু করে চন্দ্রশেখর আজাদ এবং নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু পর্যন্ত কতো না যুবক দেশের জন্য তাঁদের সবকিছু সমর্পণ করে গিয়েছিলেন। যখন ভারতের আধ্যাত্মের, সৃজনের শক্তির প্রয়োজন হয়েছে, তখন শ্রী অরবিন্দ থেকে শুরু করে সুব্রহ্মণ্য ভারতীয় পর্যন্ত মনীষীরা এগিয়ে এসেছেন। আর যখন ভারতকে তার আত্মাভিমান, হৃত গৌরব ফিরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছে, বিশ্বে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার প্রয়োজন হয়েছে, তখন স্বামী বিবেকানন্দের মতো এক যুবক ভারতের জ্ঞানকে সনাতন আবাহনের মাধ্যমে বিশ্বমানসকে জাগ্রত করে তুলেছেন।

বন্ধুগণ,

বিশ্ব এই বিষয়টি মেনে নিয়েছে যে আজ ভারতের কাছে দুটি অসীম শক্তি রয়েছে। একটি হল ডেমোগ্রাফি বা জনসংখ্যার শক্তি আর দ্বিতীয়টি হল ডেমোক্র্যাসি বা গণতন্ত্র। যে দেশের জনসংখ্যায় নবীনদের অনুপাত যত বেশি, তাদের সামর্থ্যও তত বেশি বলে মনে করা হয়। সেই দেশের সম্ভাবনাও ততটাই ব্যাপক হয়। কিন্তু ভারতের নবীনদের কাছে এই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধও রয়েছে। সেই মূল্যবোধের ডেমোক্র্যাটিক ডিভিডেন্ডও অতুলনীয়। ভারত তার যুব সম্প্রদায়কে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের পাশাপাশি ডেভেলপমেন্ট ড্রাইভার বা উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি বলেও মনে করে। আজ ভারতের যুব সম্প্রদায় আমাদের উন্নয়নের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আপনারা দেখুন, আজ ভারতের যুব সম্প্রদায়ের যেমন প্রযুক্তিগত দক্ষতা রয়েছে, জ্ঞান রয়েছে, তেমনই গণতান্ত্রিক চেতনাও রয়েছে। আজ ভারতের যুব সম্প্রদায়ের যেমন শ্রমের সামর্থ্য রয়েছে, তেমনই ভবিষ্যতের স্পষ্টতাও রয়েছে। সেজন্য ভারত আজ যা বলে বিশ্ব তাকে আগামীদিনের বার্তা বলে মনে করে। আজ ভারত যে স্বপ্ন দেখে, যে সঙ্কল্প নেয়, তাতে ভারতের পাশাপাশি বিশ্বের ভবিষ্যতও পরিলক্ষিত হয় আর ভারতের এই ভবিষ্যৎ বিশ্বের ভবিষ্যৎ নির্মাণে প্রাণশক্তি সঞ্চার করে। এই দায়িত্ব, এই সৌভাগ্য আপনাদের মতো দেশের কোটি কোটি তরুণদের হয়েছে। ২০২২ সাল আপনাদের জন্য, ভারতের যুব প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমরা ২৫তম জাতীয় যুব উৎসব পালন করছি। এটি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তীর বছর। আর ২৫ বছর পর দেশ স্বাধীনতার শতবর্ষও পালন করবে। অর্থাৎ, ২৫ বছরের এই সংযোগ নিশ্চিতভাবেই ভারতের ভবিষ্যতের উজ্জ্বল চিত্র গড়ে তোলার সংযোগ। দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় যে যুব প্রজন্ম ছিল তাঁরা দেশের তাঁদের সবকিছু উৎসর্গ করতে পিছপা হননি। কিন্তু আজকের যুব সম্প্রদায়কে দেশের জন্য বাঁচতে হবে এবং আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়িত করতে হবে। মহর্ষি শ্রী অরবিন্দ বলেছিলেন, “একজন সাহসী, উদারচিত্ত, মুক্তমনা, উদ্যমী এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী যুবকই হল একমাত্র ভিত্তি যার ওপর ভবিষ্যতের জাতিকে গড়ে তোলা যায়।” তাঁর এই বাণী আজ একবিংশ শতাব্দীর ভারতের নবীনদের জীবনের মন্ত্রস্বরূপ। আজ আমরা একটি রাষ্ট্র রূপে, বিশ্বের সর্ববৃহৎ নবীন দেশ রূপে এমন একটি পর্যায়ে রয়েছি যা ভারতের জন্য নতুন নতুন স্বপ্ন, নতুন নতুন সঙ্কল্পের পর্যায়। এমন ভারতের নবীন প্রজন্মের সামর্থ্য ভারতকে অবশ্যই দ্রুত নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

বন্ধুগণ,

ঋষি শ্রীঅরবিন্দ যুবকদের জন্য বলতেন, “যুবকদেরকেই নতুন বিশ্ব গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে।” রেগুলেশন আর ইভোলিউশন ঘিরেই তিনি নিজের যে দর্শনকে তুলে ধরেছিলেন, সেটাই যুব সম্প্রদায়েরও আসল পরিচিতি। এই দুটি গুণই একটি ভাইব্র্যান্ট নেশন বা স্পন্দিত জাতির বড় শক্তি। যুবকদের মধ্যে এমন ক্ষমতা থাকে, এমন সামর্থ্য থাকে যে তারা পুরনো কুসংস্কারের বোঝা নিয়ে চলতে চায় না, তারা সেগুলিকে ঝেড়ে ফেলে দিতে জানে। এই যুবকরাই নিজেদেরকে, সমাজকে নতুন নতুন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে, নতুন নতুন চাহিদার হিসেবে বিবর্তিত করতে পারে, নতুন নতুন সৃষ্টি করতে পারে আর আজ আমরা আমাদের দেশে এটাই হতে দেখছি। আজ ভারতের যুব সম্প্রদায় ইভোলিউশনকেই সবচাইতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আজও নানারকম ডিসরাপশন বা বিপত্তি আসছে, কিন্তু এই ডিসরাপশনগুলি ডেভেলপমেন্ট বা উন্নয়নের জন্য হচ্ছে। আজ ভারতের যুব সম্প্রদায় ইনোভেশন বা উদ্ভাবনের পথে হাঁটছে; সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য তাঁরা ঐক্যবদ্ধ। বন্ধুগণ, আজকের নবীন প্রজন্ম ‘ক্যান ডু’ বা ‘করতে পারব!’ – এই দৃঢ় মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে চলেছে যা যে কোনও প্রজন্মের প্রেরণার মূল উৎস হয়। এটাই ভারতের নবীন প্রজন্মের শক্তি যে আজ ভারত ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে বিশ্বে অনেক এগিয়ে গেছে। আজ ভারতের তরুণরা গ্লোবাল প্রসপারিটি বা আন্তর্জাতিক সমৃদ্ধির ‘কোড’ লিখছে। গোটা বিশ্বের ইউনিকর্ন ইকো-সিস্টেমে ভারতের তরুণদের কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়েছে। ভারতের কাছে আজ ৫০ হাজারেরও বেশি স্টার্ট-আপ-এর শক্তিশালী ইকো-সিস্টেম রয়েছে। এগুলির মধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি স্টার্ট-আপ এই বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর প্রতিকূলতার মধ্যে বিগত ৬-৭ মাসে গড়ে উঠেছে। এটাই ভারতের নবীন প্রজন্মের শক্তি যার ভিত্তিতে আমাদের দেশ স্টার্ট-আপ-এর স্বর্ণ যুগে প্রবেশ করছে।

বন্ধুগণ,

নতুন ভারতের এটাই মন্ত্র – ‘কমপিট অ্যান্ড কংকার’। অর্থাৎ, প্রতিযোগিতায় অংশ নাও এবং জেতো, লড়াই করো এবং যুদ্ধ জেতো। প্যারালিম্পিক্সে এবার ভারত যত পদক জিতেছে তা এযাবৎকাল পর্যন্ত জেতা পদকের মোট সংখ্যার থেকেও বেশি। অলিম্পিকের ক্ষেত্রেও আমাদের এবারের প্রদর্শন ছিল সর্বশ্রেষ্ঠ, কারণ আমাদের যুব সম্প্রদায়ের মনে এখন জয়ের বিশ্বাস জেগে উঠেছে। আমাদের কোভিড টিকাকরণ অভিযানের সাফল্যের ক্ষেত্রেও যুব সম্প্রদায়ের ভূমিকা একটি ভিন্ন স্তরে পরিলক্ষিত হয়েছে। আমরা দেখছি যে কিভাবে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী নবীনরা দ্রুত নিজেদের টিকাকরণ করাচ্ছে। এত কম সময়ে ২ কোটিরও বেশি কিশোর-কিশোরীর টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে। আমি আজকের কিশোর-কিশোরীদের কর্তব্যনিষ্ঠাকে যখন দেখি, তখন দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমার প্রত্যয় আরও দৃঢ় হয়। এটা আমাদের ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরী বন্ধুদের দায়িত্ববোধ, আর এটা সমগ্র করোনার সঙ্কটকালে ভারতের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়েছে।

বন্ধুগণ,

সরকার চায় যে ভারতের নবীন প্রজন্মের এই শক্তি প্রস্ফুটনের যথাযোগ্য পরিসর পাক। সেখানে যেন সরকারের ন্যূনতম হস্তক্ষেপ থাকে। সরকার চেষ্টা করছে তাদেরকে যথাযথ পরিবেশ দেওয়ার, সম্পদ যোগান দেওয়ার, যাতে তাদের সামর্থ্য বাড়ে, সেই ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা ও আবহ গড়ে তোলার। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার মাধ্যমে সরকারি প্রক্রিয়াগুলিকে সরল করে তোলা, হাজার হাজার কমপ্লায়েন্সের বোঝা থেকে মুক্তি এই ভাবনাগুলিকে আরও জোরদার করে। ‘মুদ্রা’ যোজনা, ‘স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া’, ‘স্ট্যান্ড-আপ ইন্ডিয়া’ – এরকম সমস্ত অভিযানের মাধ্যমে দেশের যুব সম্প্রদায় অনেক উপকৃত হচ্ছে। ‘স্কিল ইন্ডিয়া’, ‘অটল ইনোভেশন মিশন’ এবং নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি দেশের যুব সম্প্রদায়ের সামর্থ্য বৃদ্ধিরই প্রচেষ্টা মাত্র।

বন্ধুগণ,

আমরা জানি যে ছেলে এবং মেয়ে এক সমান। এই ভাবনা নিয়েই সরকার মেয়েদের উন্নতির জন্য বিয়ের বয়স ২১ বছর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মেয়েরাও যেন তাদের পেশার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার যথেষ্ট সময় পায়, এই লক্ষ্যে এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার এই অমৃতকালে আমাদের জাতীয় সঙ্কল্পগুলির সিদ্ধি আমাদের আজকের কাজের মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে। এই কাজ প্রত্যেক স্তরে, প্রত্যেক ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কি ‘লোকালের জন্য ভোকাল’ আন্দোলনকে একটি অভিযান হিসেবে গড়ে তুলতে পারি? জিনিসপত্র কেনার সময় আপনাদের পছন্দ যেন কোনও ভারতবাসীর শ্রমে উৎপাদিত পণ্যের দিকে যায়, আপনার কেনা পণ্যে যেন ভারতের মাটির গন্ধ থাকে – একথা কখনও ভুলবেন না। প্রত্যেকবার সমস্ত পণ্যকে এই দাড়িপাল্লায় মাপবেন আর যে কোনও কিছু কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই দাড়িপাল্লায় মেপে দেখবেন যে, এতে আমাদের দেশের শ্রমিকদের ঘামের গন্ধ রয়েছে কিনা ! ঋষি অরবিন্দ এবং স্বামী বিবেকানন্দের মতো মহাপুরুষেরা যে মাটিকে মাতৃসম মনে করতেন, সেই ভারতমাতার মাটির গন্ধ আপনার কেনা পণ্যের মধ্যে রয়েছে কিনা ! আত্মনির্ভরতা, ‘ভোকাল ফর লোকাল’-এর মধ্যে আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান নিহিত রয়েছে। আমাদের দেশে নির্মিত জিনিস কেনার মধ্যে নিহিত রয়েছে। তাহলেই দেশের মানুষের যথাযথ কর্মসংস্থান হবে, অর্থনীতিও তাহলে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে। দেশের দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষের সম্মানও এর মাধ্যমে বৃদ্ধি পাবে। আর সেজন্যই ‘ভোকাল ফর লোকাল’কে আমাদের দেশের নবীন প্রজন্ম যেন জীবনের মন্ত্র করে নেয়। আপনারা কল্পনা করতে পারেন যে স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্তির সময় দেশ কতটা সমৃদ্ধ হবে? কতটা সামর্থ্যসম্পন্ন হবে? সঙ্কল্পগুলি বাস্তবায়নের পথে ভারত কতটা সফল হবে?

বন্ধুগণ,

প্রত্যেকবারই আপনাদের সঙ্গে কথা বলার সময় আমি একটি কথা অবশ্যই বলি, আবারও বলতে চাইব, আর আপনাদের সামনে তো বলবোই কারণ আপনারাই এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, আর সেটি হল পরিচ্ছন্নতার অভিযান। পরিচ্ছন্নতাকে জীবনশৈলী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আপনাদের মতো দেশের সমস্ত নব যুবক-যুবতীদের অনেক বড় অবদান রয়েছে। স্বাধীনতার যুদ্ধে আমাদের এমন অনেক সংগ্রামী ছিলেন যাঁদের অবদান সেরকম স্বীকৃতি পায়নি যতটা পাওয়া উচিৎ ছিল। তাঁদের ত্যাগ, তপস্যা, আত্মবলিদানে কোনও খামতি ছিল না, কিন্তু তাঁরা নিজেদের অধিকার, নিজেদের যোগ্য মর্যাদা পাননি। এহেন ব্যক্তিদের সম্পর্কে আমাদের যুব সম্প্রদায় যত বেশি করে লিখবেন, গবেষণা করবেন, ইতিহাসের সেই পাতাগুলিকে খুঁজে বের করবেন, ততটাই দেশের পরবর্তী প্রজন্মের মনে সচেতনতা বাড়বে। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তত বেশি যথাযথ হবে, শক্তিশালী হবে, প্রেরণাদায়ী হবে।

বন্ধুগণ,

পুদুচেরি ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর অনিন্দ্যসুন্দর উদাহরণ। ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রের আলাদা আলাদা ধারা এসে এই স্থানটির একটি ঐক্যবদ্ধ পরিচয় গড়ে তুলেছে। এখানে যে বার্তালাপ হবে তা ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর ভাবনাকে আরও সুদৃঢ় করবে। আপনাদের ভাবনা-চিন্তা থেকে কিছু নতুন ভাবনা বেরিয়ে আসবে আর এখান থেকে আপনারা নতুন যা কিছু শিখে যাবেন তা অনেক বছর ধরে রাষ্ট্রসেবার প্রেরণা হয়ে উঠবে। জাতীয় যুব উৎসবের সাফল্যের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমি জানি, এই উৎসব আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলি পূরণের ক্ষেত্রে নতুন নতুন পথ দেখাবে।

বন্ধুগণ,

এটা তো অনেক উৎসবের সময়, অসংখ্য উৎসব! ভারতের প্রত্যেক প্রান্তে নানা নামে উৎসব। কোথাও মকর সংক্রান্তি, কোথাও লোহরি, কোথাও পোঙ্গল, কোথাও উত্তরায়ণ, কোথাও বা বিহু – এরকম নানা নামের উৎসবের জন্য আপনাদের সবাইকে অগ্রিম শুভকামনা জানাই। করোনার প্রতিরোধে সম্পূর্ণ সাবধানতা এবং সতর্কতা বজায় রেখে আমাদের উৎসব-অনুষ্ঠান পালন করতে হবে। আপনারা সবাই আনন্দে থাকুন, সুস্থ থাকুন। অনেক অনেক শুভকামনা। ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi visits the Indian Arrival Monument
November 21, 2024

Prime Minister visited the Indian Arrival monument at Monument Gardens in Georgetown today. He was accompanied by PM of Guyana Brig (Retd) Mark Phillips. An ensemble of Tassa Drums welcomed Prime Minister as he paid floral tribute at the Arrival Monument. Paying homage at the monument, Prime Minister recalled the struggle and sacrifices of Indian diaspora and their pivotal contribution to preserving and promoting Indian culture and tradition in Guyana. He planted a Bel Patra sapling at the monument.

The monument is a replica of the first ship which arrived in Guyana in 1838 bringing indentured migrants from India. It was gifted by India to the people of Guyana in 1991.