Quote“This family of 130 crore Indians is all I have, you people are everything in my life and this life too is for you”
Quote“I repeat the resolve that I will do whatever I can, for the welfare of everyone, for the honour of every Indian, for the security of every Indian and for the prosperity of every Indian and a life of happiness and peace for everyone”
Quote“Seva, Sushasan aur Gareeb Kalyan have changed the meaning of government for the people”
Quote“Government is trying to give a permanent solution to the problems which were earlier assumed to be permanent”
Quote“Our government started empowering the poor from day one”
Quote“we are working to build a new India not a vote bank”
Quote“100% empowerment means ending discrimination and appeasement. 100% empowerment means that every poor gets full benefits of government schemes”
Quote“No goal is impossible for capability of New India”

ভারতমাতার জয়!

ভারতমাতার জয়!

হিমাচল প্রদেশের রাজ্যপাল মাননীয় শ্রী রাজেন্দ্রজি, এই রাজ্যের জনপ্রিয় এবং কর্মঠ মুখ্যমন্ত্রী, আমার বন্ধু শ্রী জয়রাম ঠাকুরজি, ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ অধ্যক্ষ, আমার অনেক পুরনো বন্ধু শ্রী সুরেশজি, এখানে উপস্থিত আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সকল মাননীয় সদস্য, সম্মানিত সাংসদগণ, মাননীয় বিধায়কগণ আর হিমাচল প্রদেশের সকল জনপ্রতিনিধিগণ। আজ আমার জীবনে একটি বিশেষ দিনও আর এই বিশেষ দিনেই আমার এই দেবভূমিকে প্রণাম করার সৌভাগ্য হয়েছে। জীবনে এর থেকে বড় সৌভাগ্য আর কী হতে পারে! আপনারা এত বিপুল সংখ্যায় আমাদেরকে আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য এখানে এসেছেন, আমি হৃদয় থেকে আপনাদের সকলের প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই।

একটু আগেই দেশের কোটি কোটি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘পিএম কিষাণ সম্মান নিধি’র কিস্তির টাকা প্রত্যক্ষ ভাবে হস্তান্তরিত হয়ে গেছে। তাঁরা ইতিমধ্যেই টাকা পেয়ে গেছেন, আর আজ আমার এই সিমলার পবিত্র মাটি থেকে সরাসরি দেশের ১০ কোটিরও বেশি কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রত্যক্ষ  নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সৌভাগ্য হয়েছে। যাঁরা আজ টাকা পেয়েছেন, আমি নিশ্চিত, সেই সমস্ত কৃষকরাও আজ সিমলার কথা ভাববেন, হিমাচল প্রদেশের কথা ভাববেন, এই দেবভূমির কথা ভাববেন। আমি এই সমস্ত কৃষক ভাই ও বোনেদের হৃদয় থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই, অনেক শুভকামনা জানাই।

বন্ধুগণ,

এই কর্মসূচি সিমলায় আয়োজিত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু একদিক থেকে দেখতে গেলে এই অনুষ্ঠান গোটা ভারতের অনুষ্ঠান। আমাদের এখানে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল যে সরকারের আট বছর পূর্তি উপলক্ষে কেমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে, কোন ধরনের কর্মসূচির আয়োজন হবে। তখন আমাদের সভাপতি নাড্ডাজি, যিনি হিমাচল প্রদেশের সুসন্তান, আর আমাদের এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জয়রামজি, তাঁদের পক্ষ থেকে উদ্ভাবক পরামর্শ এসেছে, আর উভয়ের পরামর্শই আমার খুব ভালো লেগেছে। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের এই আট বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল আমার করোনার কঠিন সময়ে যে শিশু-কিশোররা তাদের বাবা ও মা দু’জনকেই হারিয়েছে, তেমন শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের দায়িত্ব গ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছে। দেশের সেই হাজার হাজার অনাথ শিশু-কিশোর কিশোরীর দায়িত্ব সামলানোর সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছে, আর গতকাল আমি ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সামান্য অর্থও প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে পাঠিয়েছি। সরকারের আট বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এমন পবিত্র কর্মসূচির আয়োজন আমার মনকে অনেক শান্তি দিয়েছে, অনেক আনন্দ দিয়েছে, আর তারপর আমার সামনে পরামর্শ এসেছে যে আমরা একটি কর্মসূচির আয়োজন হিমাচল প্রদেশেও করব। তখন আমি চোখ বন্ধ করে হ্যাঁ বলে দিয়েছি কারণ, আমার জীবনে হিমাচল প্রদেশের স্থান এত বড়, এত বড় যে জীবনের যে কোনও খুশির মুহূর্ত যদি আমি হিমাচল প্রদেশে এসে কাটানোর সুযোগ পাই তাহলে আনন্দের আর সীমা থাকে না। আজ এজন্য আমি বলেছি যে আট বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি আজ সিমলার মাটিতে আয়োজিত হচ্ছে যা কখনও আমার কর্মভূমি ছিল। আমার জন্য এই হিমাচল প্রদেশ দেবভূমি, আমার জন্য এই হিমাচল প্রদেশ পূণ্য ভূমি। এখানে এসে আজ আমার প্রিয় দেশবাসীর সঙ্গে এই দেবভূমি থেকে কথা বলার সৌভাগ্য হয়েছে। এটা আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। এটা আমার খুশিকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা।

বন্ধুগণ,

১৩০ কোটি ভারতবাসীর জন্য একজন সেবক হিসেবে কাজ করার যে সুযোগ আপনারা দিয়েছেন, যে সৌভাগ্য আপনারা আমাকে দিয়েছেন, সকল ভারতবাসীর যে বিশ্বাস আমি পেয়েছি, যদি আজ আমি কিছু করতে পারি, দিন-রাত ছুটতে পারি, তাহলে এটা ভাববেন না যে এই কাজগুলি মোদী করছে! এটা ভাববেন না যে মোদী ছুটছে! এটা তো ১৩০ কোটি দেশবাসীর কৃপায় হচ্ছে, তাঁদের আশীর্বাদে হচ্ছে, তাঁদের স্বার্থে হচ্ছে, তাঁদের শক্তি দিয়ে হচ্ছে। পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমি কখনও নিজেকে সেই পদে দেখিনি, কল্পনাও করিনি, আর আজও করছি না। একদমই ভাবছি না যে আমি কোনও প্রধানমন্ত্রী। যখন ফাইলে স্বাক্ষর করি তখন একটা দায়িত্ব থাকে। তখন তো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাকে কাজ করতে হয়। তারপর ফাইলগুলি যখনই আমার সামনে থেকে চলে যায় তখন আমি আর প্রধানমন্ত্রী থাকি না। আর শুধু ১৩০ কোটি দেশবাসীর পরিবারের সদস্য হয়ে পড়ি। আপনাদেরই পরিবারের সদস্য রূপে আপনাদের একজন প্রধান সেবক রূপে যেখানেই থাকি, সেখানেই কাজ করতে থাকি, আর ভবিষ্যতেও একজন পরিবারের সদস্য হিসেবে, প্রত্যেক পরিবারের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকব। ১৩০ কোটি দেশবাসীর এই পরিবার - এটাই আমার জীবনের সবকিছু। আপনারাই আমার জীবনের সবকিছু, আর আমার জীবনও আপনাদের জন্যই। যখন আমাদের সরকার তার আট বছর সম্পূর্ণ করছে তখন, আজ আমি আরও একবার এই দেবভূমি থেকে আমি আমার সঙ্কল্প পুনরুচ্চারণ করব কারণ, আমি মনে করি,  সঙ্কল্পকে বারবার স্মরণ করে যেতে হয়। সঙ্কল্পকে কখনও বিস্মৃত হওয়া উচিৎ নয়, আর আমার সঙ্কল্প ছিল, আজও আছে, আর ভবিষ্যতেও থাকবে। যে সঙ্কল্পের জন্য আমি বাঁচব, যে সঙ্কল্পের জন্য আমি যুঝতে থাকব, যে সঙ্কল্পের জন্য আমি আপনাদের সকলের সঙ্গে পা মিলিয়ে চলতে থাকব, আর সেজন্য আমার এটাই সঙ্কল্প যে ভারতবাসীর সম্মানের জন্য, প্রত্যেক ভারতবাসীর নিরাপত্তা, প্রত্যেক ভারতবাসীর সমৃদ্ধি কিভাবে বৃদ্ধি পায়, ভারতবাসীকে কিভাবে আমি সুখ ও শান্তির জীবন এনে দিতে পারব, এই  মনোভাব নিয়েই দরিদ্র দরিদ্রতম মানুষের, দলিত, পীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত ও দূরদুরান্তের অরণ্য প্রদেশগুলিতে বসবাসকারী মানুষের, পাহাড়ের কোলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাসকারী দু-একটি পরিবার যেখানে রয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের কল্যাণসাধনের জন্য যত বেশি কাজ করতে পারি, তা যেন করে যেতে থাকি। এই মনোভাব নিয়ে আমি আরও একবার এই দেবভূমি থেকে আবার নিজের সঙ্কল্প পুনরুচ্চারণ করছি।

বন্ধুগণ,

আমার সঙ্কল্প পুনরুচ্চারণ করব, আমরা সবাই মিলে ভারতকে সেই উচ্চতায় পৌঁছে দেব, যেখানে পৌঁছনোর স্বপ্ন দেখেছিলেন আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। সেই মানুষেরা স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গ করতে তৈরি ছিলেন, তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আজ তাঁদের পুণ্যস্মৃতিতে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উদযাপিত অমৃত মহোৎসবে ভারতের অনেক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের বিশ্বাস নিয়ে ভারতের যুবশক্তি, ভারতের নারীশক্তির ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রেখে আজ আপনাদের মধ্যে এসেছি।

বন্ধুগণ,

জীবনে যখন আমরা বড় বড় লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকি, তখন মাঝেমধ্যে এটা দেখাও জরুরি হয় যে আমরা কোথা থেকে চলতে শুরু করেছিলাম, কোথা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম, আর যখন তার কথা ভাবি, তখন তো হিসাব-নিকাশ থেকে জানা যায় যে, আমাদের যাত্রাপথ কোথা থেকে বেরিয়ে এসেছে, আর কোথায় পৌঁছেছে। যাত্রাপথে আমাদের গতি কেমন ছিল, আর উদ্দেশ্যপূরণে আমাদের প্রগতি কেমন ছিল। উদ্দেশ্যপূরণে ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতাগুলি কেমন ছিল। আমরা যদি ২০১৪ সালের আগের দিনগুলির কথা স্মরণ করি, তাহলে সেই দিনগুলিকে কখনও ভুলবেন না বন্ধুগণ! তখনই গিয়ে আজকের দিবসের মূল্য আমরা সঠিকভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে পারব। আজকের পরিস্থিতিগুলির দিকে যদি আমরা তাকাই তাহলে বুঝতে পারব বন্ধুগণ যে দেশ এই আট বছরে অনেক দীর্ঘ সফর অতিক্রম করে এসেছে।

২০১৪ সালের আগে দেশের খবরের কাগজের শিরোনামগুলিতে কী ধরনের বিষয় স্থান পেত -  তা স্মরণ করুন। শুধু শিরোনাম কেন, টিভির পর্দায় কী নিয়ে আলোচনা হত? অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে কী নিয়ে আলোচনা হত? আলোচনা হত নানারকম লুট-মার নিয়ে, আলোচনা হত দুর্নীতি নিয়ে, আলোচনা হত নানা কেলেঙ্কারি নিয়ে, আলোচনা হত স্বজনপোষণ নিয়ে, আলোচনা হত আমলাতন্ত্রের বাড়াবাড়ি নিয়ে, আলোচনা হত আটকে থাকা, ঝুলিয়ে রাখা, বিভ্রান্তকারী নানা প্রকল্প নিয়ে। কিন্তু এই আট বছরে সময় ও পরিস্থিতি বদলে গেছে। আপনারাই বদলেছেন। আজ দেশের খবরের কাগজে ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে আলোচনা হয়, সরকারি প্রকল্পগুলি সমাজের কতটা উপকারসাধন করছে তা নিয়ে। সিরমৌর জেলা থেকে আমাদের একজন শুভাকাঙ্ক্ষী সোমা দেবী বলছিলেন যে তিনি অনেক লাভবান হয়েছেন। আমরা যেহেতু সমাজের প্রান্তিকতম ব্যক্তি পর্যন্ত, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শেষ বাড়িটি পর্যন্ত সমস্ত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি, গরীবদের অধিকারের টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি, সেজন্য আজ আলোচনা হয় যে বিশ্বে ভারতের স্টার্ট-আপগুলির জয়জয়কার নিয়ে। আজ আলোচনা হয়; সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিশ্বব্যাঙ্কও আলোচনা করে ভারতের ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’-এর ক্ষেত্রে সরকারের অবদান নিয়ে। আজ ভারতের নির্দোষ নাগরিকরা আলোচনা করেন, অপরাধীদের লাগাম পড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের সরকারের ক্রমবর্ধমান শক্তি নিয়ে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নিয়ে  আমরা যেভাবে এগিয়ে চলেছি তা নিয়ে আলোচনা হয়।

২০১৪-র আগের সরকার দুর্নীতিকে ব্যবস্থার জরুরি অঙ্গ হিসেবে মেনে নিয়েছিল। তখনকার সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার পরিবর্তে তার সামনে নতজানু হয়েছিল। তখন দেশবাসী দেখছিল যে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছনোর আগেই লুট হয়ে যায়। কিন্তু আজ এই বিষয় নিয়ে আলোচনা জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাওয়া সুবিধা নিয়ে হচ্ছে। জন ধন, আধার এবং মোবাইল দিয়ে তৈরি ত্রিশক্তি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আগে রান্নাঘরের কালো ধোঁয়া সহ্য করা একটা অসহায়তা ছিল। আজ ‘উজ্জ্বলা যোজনা’র মাধ্যমে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার পাওয়ার পর অনেক সুবিধা হয়েছে। আগে উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম করার অসহায়তা ছিল। আজ বাড়িতে শৌচালয় তৈরি হওয়ায় প্রত্যেকে এখন সম্মানের সঙ্গে বাঁচার স্বাধীনতা পেয়েছেন। আগে চিকিৎসার জন্য অর্থ জোগাড় করার অসহায়তা ছিল, আজ প্রত্যেক গরীব আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের দ্বারা তাঁদের চিকিৎসা করাতে পারছেন। আগে মুসলিম বোনেদের মনে তিন তালাকের ভয় ছিল, এখন তাঁদের মনে নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করার সাহস রয়েছে।

বন্ধুগণ,

২০১৪ সালের আগে নাগরিকদের মনে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল, আজ সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, এয়ার স্ট্রাইকের গর্ব রয়েছে। আমাদের সীমান্তগুলি আগের থেকে অনেক বেশি সুরক্ষিত। আগে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল তার ভারসাম্যহীন অনুন্নয়ন এবং বৈষম্যের কারণে দুঃখিত, যন্ত্রণাহত ছিল, আজ আমাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চল দেশের মূলস্রোতের সঙ্গে হৃদয় থেকেও যুক্ত, আবার আধুনিক পরিকাঠামোর মাধ্যমেও যুক্ত হচ্ছে। সেবা, সুশাসন এবং গরীবদের কল্যাণের জন্য রচিত আমাদের প্রকল্পগুলি সরকার কাকে বলে তার অর্থ মানুষের কাছে বদলে দিয়েছে। এখন সরকার আগের মতো গরীব মানুষের প্রভূ বা মা-বাপ নয়। সেই সময় চলে গেছে। এখন সরকার হল সেবক। আপামর জনগণের সেবক। এখন সরকার কারোর জীবন জবরদখল করার জন্য নয়, বরং জীবনকে সহজ করে তোলার কাজ করছে। বিগত বছরগুলিতে আমরা উন্নয়নের রাজনীতিকে দেশের মূল ধারার সঙ্গে যুক্ত করেছি। উন্নয়নের এই আকাঙ্ক্ষায় মানুষ স্থায়ী সরকার নির্বাচন করছে, ডবল ইঞ্জিনের সরকার নির্বাচন করছে।

বন্ধুগণ,

আমরা প্রায়ই শুনি, সরকার আসে যায়, কিন্তু ব্যবস্থা তেমনই থেকে যায়। আমাদের সরকার এই ব্যবস্থাকেই গরীবদের জন্য বেশি সংবেদনশীল করে তুলেছে, এতে ক্রমাগত সংস্কার এনেছে। ‘পিএম আবাস যোজনা’ থেকে শুরু করে ছাত্রবৃত্তি প্রদান করা কিংবা পেনশন যোজনা  -  সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা দুর্নীতির সুযোগ ন্যূনতম করে দিয়েছি। যে সমস্যাগুলিকে আগে স্থায়ী বলে মনে করা হত, আমরা সেই সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধান বের করার চেষ্টা করছি। যখন সেবা, সুশাসন এবং গরীব কল্যাণের লক্ষ্য সরকারের মাথায় থাকে, তখন কিভাবে কাজ হয়, তার একটি উদাহরণ হল আমাদের এই প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তর ব্যবস্থা। এখন আমি যেসব কথা বলছিলাম, প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে, দেশের ১০ কোটিরও বেশি কৃষক পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ২১ হাজার কোটি টাকা প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরিত করা হয়েছে। এটা আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকদের সেবার জন্য, তাঁদের সম্মানে পাঠানো নিধির টাকা। বিগত আট বছরে এমনই প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে আমরা ২২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সরাসরি দরিদ্র দেশবাসীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে হস্তান্তর করেছি, আর আগে যেমন কেন্দ্রীয় সরকার থেকে ১০০ পয়সা পাঠালে ৮৫ পয়সা মাঝপথেই লুঠ হয়ে যেত, প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের ফলে এমনটি কখনও হয়নি। আমরা যখন যত টাকা পাঠিয়েছি, তার ১০০ শতাংশ টাকা প্রকৃত সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টে, সঠিক ঠিকানায়, সঠিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে গেছে।

বন্ধুগণ,

আজ এই প্রকল্পের ফলে বছরে ২ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার লিকেজ বন্ধ করা গেছে। আগে এই ২ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের হাতে চলে যেত, দালালদের হাতে চলে যেত। এই প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের ফলে দেশের সরকারি প্রকল্পগুলি থেকে যাঁরা অবৈধভাবে উপকৃত হতেন, সেরকম ৯ কোটিরও বেশি ভুয়ো নাম আমরা তালিকা থেকে সরিয়েছি। আপনারা ভাবুন! এই ৯ কোটিরও বেশি ভুয়ো নামের কাগজ দিয়ে রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি, শিশুদের পড়াশোনার জন্য পাঠানো ছাত্রবৃত্তির টাকা, অপুষ্টি থেকে মুক্তিদানের জন্য সরকার থেকে পাঠানো টাকা – সবকিছু লুঠপাটের উন্মুক্ত খেলা চলছিল দেশের সর্বত্র। এটা কি দেশের গরীবদের প্রতি অন্যায় ছিল না? যে শিশুরা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা করে, সেই শিশুদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছিল না? এই লুঠপাট কি পাপ নয়? যদি করোনার কঠিন সময়ে এই ৯ কোটিরও বেশি ভুয়ো নামের কাগজ থাকত, তাহলে কি দেশের প্রকৃত গরীবরা সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে সুবিধা পেতেন?

বন্ধুগণ,

গরীবের জীবনে যখন দৈনন্দিন সংঘর্ষ হ্রাস পায় তখন নিশ্চিতভাবেই তাঁদের ক্ষমতায়ন হয়। তখন তাঁরা নিজেদের দারিদ্র্য দূর করার জন্য নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এই ভাবনা নিয়েই আমাদের সরকার প্রথম দিন থেকে গরীবদের ক্ষমতায়িত করার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা তাঁদের জীবনের এক একটি দুশ্চিন্তাকে কম করার চেষ্টা করেছি। আজ দেশের ৩ কোটিরও বেশি দরিদ্র মানুষের নিজস্ব নতুন পাকা বাড়ি রয়েছে যেখানে এখন তাঁরা বসবাস করছেন। আজ দেশের ৫০ কোটিরও বেশি গরীব মানুষের কাছে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা রয়েছে। আজ দেশের ২৫ কোটিরও বেশি গরীব মানুষের কাছে ২ লক্ষ টাকার অ্যাক্সিডেন্ট ইনস্যুরেন্স এবং ২ লক্ষ টাকার টার্ম ইনস্যুরেন্স রয়েছে, বিমার সুবিধা রয়েছে। আজ দেশের প্রায় ৪৫ কোটি গরীব মানুষের জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আমি আজ অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, এখন দেশে সম্ভবত এমন কোনও দরিদ্র পরিবার বাকি নেই, যাঁরা কোনও না কোনও সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত নন, কোনও না কোনও প্রকল্প থেকে লাভবান হননি। আমরা দূরদুরান্তের গ্রামে, পাহাড়ে পৌঁছে এক একজন মানুষকে টিকাকরণ করিয়েছি। দেশের প্রায় ২০০ কোটি ভ্যাক্সিন ডোজের টিকাকরণের সাফল্য আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আর আমি মুখ্যমন্ত্রী জয়রামজিকেও শুভেচ্ছা জানাব। করোনাকালে যেভাবে তাঁর সরকার, হিমাচল প্রদেশ রাজ্য সরকার কাজ করেছে, আর তারা এই রাজ্যটি পর্যটন গন্তব্য হওয়ার কারণে, পর্যটকরা এসে যাতে কোনও সমস্যায় না পড়েন তা সুনিশ্চিত করার জন্য টিকাকরণ অভিযান এত দ্রুত সঞ্চালনা করেছেন যে ভারতে সবার আগে টিকাকরণ অভিযান সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে জয়রামজির সরকার সামনের সারিতে ছিল। বন্ধুগণ, আমরা গ্রামে বসবাসকারী ৬ কোটি পরিবারকে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগের মাধ্যমে যুক্ত করেছি, ‘নলের মাধ্যমে জল’! বন্ধুগণ, আমাদের সরকার ৩৫ কোটি গরীব মানুষকে ‘মুদ্রা’ যোজনার আওতায় ঋণ দিয়ে গ্রাম ও শহরের কোটি কোটি যুবক-যুবতীকে নিজেদের স্বনির্ভর করে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। আজ ‘মুদ্রা যোজনা’র আওতায় ঋণ নিয়ে কেউ ট্যাক্সি চালাচ্ছেন, কেউ দরজির দোকান খুলছেন, কোনও কন্যা তাঁর নিজস্ব ব্যবসা শুরু করেছেন, ফুটপাতের ধারে ঠেলায় কিংবা রেল লাইনের দু’পাশে পসরা সাজিয়ে বসা প্রায় ৩৫ লক্ষ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বন্ধুরাও প্রথমবার ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেয়েছেন। নিজের ব্যবসাকে বাড়ানোর পথ খুঁজে পেয়েছেন। আর এই যে ‘প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা’ আমরা শুরু করেছি, এটি আমার জন্য অত্যন্ত খুশির বিষয়। এতে ৭০ শতাংশ, ব্যাঙ্ক থেকে যাঁরা ঋণ পেয়েছেন তাঁদের ৭০ শতাংশ হলেন আমার মা ও বোনেরা। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই আজ ছোট আন্ত্রেপ্রেনার হয়ে অন্যদের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করছেন।

বন্ধুগণ,

এখানে, হিমাচল প্রদেশে তো প্রত্যেক বাড়ি থেকে কেউ না কেউ সেনাবাহিনীতে রয়েছেন। হয়তো এমন কোনও পরিবার নেই যে পরিবার থেকে কেউ না কেউ সৈনিক হয়েছেন। এই হিমাচল প্রদেশ তো বীরদের ভূমি। সেজন্য আমি বলতে পারি, এই হিমাচল প্রদেশ বীর মায়েদেরও ভূমি যাঁরা বীরদের জন্ম দিয়েছেন এবং নিজেদের কোলে বীরদের লালন-পালন করেছেন। সেই বীরেরা মাতৃভূমির রক্ষার জন্য ২৪ ঘন্টা নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেন।

বন্ধুগণ,

এই হিমাচল প্রদেশ সৈনিকদের ভূমি, এই হিমাচল প্রদেশ সৈন্য পরিবারদের ভূমি। এখানকার মানুষ কখনও ভুলতে পারে না যে পূর্ববর্তী সরকারগুলি তাঁদের সঙ্গে কিরকম ব্যবহার করেছে। ‘ওয়ান র‍্যাঙ্ক ওয়ান পেনশন’- এর নামে কিভাবে তাঁদেরকে ধোকা দিয়েছে। সম্প্রতি আমি লাদাখের একজন প্রাক্তন সৈনিকের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তিনি সারা জীবন সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন, কিন্তু আমরা সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি পাকা ঘর পেয়েছেন। তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়েছেন প্রায় ৩০-৪০ বছর আগে।

বন্ধুগণ,

সৈনিক পরিবারগুলি আমাদের সংবেদনশীলতাকে খুব ভালোভাবে বোঝে। এটা আমাদেরই সরকার, যে সরকার চার দশক অপেক্ষার পর ‘ওয়ান র‍্যাঙ্ক, ওয়ান পেনশন’ চালু করেছে। আমাদের প্রাক্তন সৈনিকদের এরিয়ারের টাকা দিয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের হিমাচল প্রদেশের প্রত্যেক পরিবার উপকৃত হয়েছে।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশে অনেক দশক ধরে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি চলেছে। নিজের নিজের ভোটব্যাঙ্ক তৈরি করার রাজনীতি দেশের অনেক ক্ষতি করেছে। আমরা ভোটব্যাঙ্ক তৈরি করার জন্য কাজ করি না। আমরা নতুন ভারত তৈরি করার জন্য কাজ করছি। যখন উদ্দেশ্য হয় রাষ্ট্রকে নবনির্মাণ করা, যখন লক্ষ্য হয় আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলা, যখন ইচ্ছা থাকে ১৩০ কোটি দেশবাসীর সেবার, আর তাঁদের কল্যাণ করার তখন ভোটব্যাঙ্ক তৈরি করার প্রয়োজন হয় না। তখন প্রত্যেক দেশবাসীর বিশ্বাস জয় করতে হয়। সেজন্য আমরা ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস অউর সবকা প্রয়াস’-এর ভাবনা নিয়েই এগিয়ে চলেছি। চলার পথে এটাই লক্ষ্য রেখেছি যাতে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে সবাই উপকৃত হন। প্রত্যেক গরীব মানুষ যেন উপকৃত হন। কোনও গরীব মানুষ যেন বাদ না পড়েন। এখন এটাই আমাদের সরকারের ভাবনা আর এই মনোভাব নিয়েই আমরা কাজ করে চলেছি। আমরা গরীব মানুষের কাছে ১০০ শতাংশ সুবিধা, ১০০ শতাংশ লাভ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা ১০০ শতাংশ গরীব মানুষের কাছে এই সমস্ত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছি। আমরা সুবিধাভোগীদের স্যাচুরেশনে পৌঁছে দেওয়ার শপথ নিয়েছি। ১০০ শতাংশ ক্ষমতায়ন যদি করা যায়, তাহলে দেশ থেকে সমস্ত বৈষম্য দূর হয়ে যাবে, সমস্ত সুপারিশ বন্ধ হয়ে যাবে, কাউকে আর নতুন করে তুষ্টিকরণ করতে হবে না। ১০০ শতাংশ ক্ষমতায়নের মানে হল প্রত্যেক গরীব মানুষের জন্য সরকারি প্রকল্পের সম্পূর্ণ সুবিধা। আমি এটা জেনে খুব খুশি হয়েছি যে আমাদের জয়রামজির নেতৃত্বে হিমাচল প্রদেশ রাজ্য সরকারও এই লক্ষ্যে খুব ভালো কাজ করছে। প্রত্যেক বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্পের ক্ষেত্রেও হিমাচল প্রদেশ ৯০ শতাংশ বাড়িতে সাফল্যের সঙ্গে জল পৌঁছে দিয়েছে। কিন্নৌর, লাহৌল, স্পিতি, চম্বা, আমিরপুর-এর মতো জেলাগুলিতে ইতিমধ্যেই ১০০ শতাংশ কভারেজের সাফল্যের কথা আমি জানতে পেরেছি।

বন্ধুগণ,

আমার মনে আছে, ২০১৪ সালের আগে যখন আমি আপনাদের মধ্যে আসতাম, তখন বলতাম যে ভারত বিশ্ববাসীর সঙ্গে চোখ নামিয়ে নয়, চোখে চোখ মিলিয়ে কথা বলবে। আজ ভারত অসহায় হয়ে কারোর দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ায় না, আর যখন কোনও অসহায়তার কারণে কারও বন্ধুত্বের হাত আমাদের দিকে এগিয়ে আসে, তখন এমনভাবে সেই হাত ধরে যাতে তাদেরকে প্রকৃত অর্থেই সাহায্য করা যায়, প্রকৃত বন্ধুর মতো সাড়া দেয়। করোনা মহামারীর সময়েও আমরা ১৫০টিরও বেশি দেশে জীবনদায়ী ওষুধ পাঠিয়েছি, আর টিকা আসার পর তাদের প্রয়োজন অনুসারে টিকা পাঠিয়েছি, আর এক্ষেত্রে হিমাচল প্রদেশের ফার্মা হাব বদ্দী-রও অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। ভারত প্রমাণ করেছে যে, আমাদের কাছে সম্ভাবনাও আছে আর আমরা ওষুধ ও টিকা নির্মাণে দক্ষ। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিও এখন স্বীকার করে নিয়েছে যে ভারতে দারিদ্র্য হ্রাস পাচ্ছে। জনগণের জন্য সুবিধা বাড়ছে, পরিষেবা বাড়ছে। সেজন্য এখন ভারত শুধুই নিজের নাগরিকদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার কথা ভাবে না, বরং তাঁদের নতুন নতুন আকাঙ্ক্ষাগুলিকেও পূরণ করার কথা ভাবে। একবিংশ শতাব্দীর শক্তিশালী ভারত গড়ে তোলার জন্য, আমাদের আগামী প্রজন্মের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে। একটি এমন ভারত গড়ে তুলতে হবে যার পরিচয় অভাব দিয়ে নয়, আধুনিকতার মাধ্যমে হবে। একটি এমন ভারত যেখানে স্থানীয় নির্মাণকারীরা স্থানীয় চাহিদা তো পূরণ করবেনই, পাশাপাশি বিশ্ব বাজারেও নিজেদের পণ্য বিক্রি করবেন। একটি এমন ভারত যা আত্মনির্ভর হবে, যা তার লোকাল পণ্যের জন্য ভোকাল হবে। এমন ভারত যা তার স্থানীয় পণ্য নিয়ে গর্বিত হবে।

আমাদের হিমাচল প্রদেশ তো হস্তশিল্প, এখানকার বাস্তুকলার জন্যও বিখ্যাত। চম্বার মেটাল ওয়ার্ক, সোলানের পাইন আর্ট, কাংড়ার মিনিয়েচার পেইন্টিংস শিল্পীরা দেশ তথা বিশ্বের নানা স্থান থেকে আসা পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তাঁদের শিল্প নৈপূণ্য দেখে পর্যটকরা পাগল হয়ে যায়। এহেন পণ্য যাতে দেশের প্রত্যেক কোণায় কোণায় পৌঁছয়, যাতে আন্তর্জাতিক বাজারগুলির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, তা সুনিশ্চিত করার কাজ আমরা করছি।

এমনিতে ভাই ও বোনেরা, হিমাচলের স্থানীয় পণ্যের চমক তো এখন কাশীর বাবা বিশ্বনাথ মন্দির পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। কুল্লু-তে নির্মিত আমাদের মা ও বোনেদের হাতেবোনা কুল্লু-র পুহুলেঁ বা বিশেষ শীতবস্ত্র এখন শীতকালে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পূজারীগণ এবং নিরাপত্তা কর্মীদের শীত নিবারণে কাজে লাগছে, তাঁদেরকে উষ্ণতা যোগাচ্ছে। বেনারসের সাংসদ হিসেবে এই উপহারের জন্য আমি হিমাচল প্রদেশের জনগণের কাছে বিশেষ কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করছি।

বন্ধুগণ,

বিগত আট বছরের প্রচেষ্টার যে ফল আমরা পেয়েছি, তা আমাদের মনের বিশ্বাসকে পোক্ত করেছে, আমরা আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছি যে আমাদের ভারতবাসীদের সামর্থ্যের সামনে কোনও লক্ষ্যই অসম্ভব নয়! আজ ভারত বিশ্বের সর্বাধিক দ্রুতগতিতে বিকাশশীল অর্থ ব্যবস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম। আজ ভারতে রেকর্ড পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে। পাশাপাশি আজ ভারত রেকর্ড পরিমাণ পণ্য রপ্তানিও করছে। আট বছর আগে স্টার্ট-আপ-এর ক্ষেত্রে আমরা কোথাও ছিলাম না। আজ আমরা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ ইকো-সিস্টেমে পরিণত হয়েছি। মনোযোগ দিয়ে শুনুন, তৃতীয় বৃহত্তম! আমাদের যুবক-যুবতীরা প্রায় প্রত্যেক সপ্তাহে একটি করে হাজার হাজার কোটি টাকার কোম্পানি গড়ে তুলছেন। আগামী ২৫ বছরের বিরাট সঙ্কল্প থেকে সিদ্ধির জন্য দেশ নতুন অর্থ ব্যবস্থার, নতুন পরিকাঠামো নির্মাণও দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা পরস্পরকে সাপোর্ট করে এরকম মাল্টি-মডেল কানেক্টিভিটি গড়ে তোলাকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। এবারের বাজেটে আমরা যে ‘পর্বতমালা যোজনা’ ঘোষণা করেছি তা হিমাচল প্রদেশের মতো পাহাড়ি রাজ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। শুধু তাই নয়, আমরা ‘ভাইব্র্যান্ট বর্ডার ভিলেজ’ নামক যে প্রকল্প বাজেটে রেখেছি, তার কারণে দেশের সীমান্ত এলাকার যে গ্রামগুলি রয়েছে, সেই গ্রামগুলিকে ‘ভাইব্র্যান্ট’ বা স্পন্দিত গ্রামে পরিণত করার জন্য, সেই গ্রামগুলিকে পর্যটন গন্তব্য করে তোলার জন্য, সেই গ্রামগুলিতে ‘অ্যাক্টিভিটি সেন্টার’ গড়ে তোলার জন্য আমরা কাজ করছি। সীমান্তের লাগোয়া গ্রামগুলির উন্নয়ন সুনিশ্চিত করতে ভারত সরকার একটি বিশেষ প্রকল্প রচনা করেছে। এই ‘ভাইব্র্যান্ট বর্ডার ভিলেজ’ প্রকল্পের মাধ্যমে আমার হিমাচল প্রদেশের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি স্বাভাবিকভাবেই উপকৃতও হতে চলেছে।

বন্ধুগণ,

আজ আমরা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ডিজিটাল পরিকাঠামো নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা সারা দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবার আধুনিকীকরণের কাজ করছি। আয়ুষ্মান ভারত হেলথ ইনফ্রাস্ট্রাকচার মিশনের মাধ্যমে জেলা এবং ব্লক স্তরে ক্রিটিকাল হেলথ কেয়ার পরিষেবাগুলিও আমরা গড়ে তুলছি। প্রত্যেক জেলায় কম করে একটি মেডিকেল কলেজ যাতে থাকে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে চলেছি। শুধু তাই নয়, গরীব মায়ের ছেলে-মেয়েরাও যেন এখন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা তাঁদের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন আনছি। আগে এমন পরিস্থিতি ছিল যখন তাঁদের বিদ্যালয় শিক্ষা যদি ইংরেজি মাধ্যমে না হত তাহলে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন অসম্পূর্ণ থেকে যেত। এখন আমরা ঠিক করেছি যে মেডিকেল এবং টেকনিক্যাল এডুকেশনকে আমরা মাতৃভাষায় প্রদানের জন্য পাঠ্যবই ও অন্যান্য ব্যবস্থাকে প্রোমোট করব যাতে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম পরিবারের ছেলে-মেয়েরাও, গ্রামের ছেলে-মেয়েরাও ডাক্তার হতে পারে আর সেজন্য তাদের ইংরেজির দাস হয়ে থাকার প্রয়োজন হবে না।

বন্ধুগণ,

দেশে এইমস-এর মতো উন্নত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলির পরিধি দেশের দূরদুরান্তের রাজ্যগুলি পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। বিলাসপুরে নির্মীয়মান এইমস এর প্রত্যক্ষ প্রমাণ। এখন হিমাচল প্রদেশের রাজ্যবাসীদেরকে আর চিকিৎসার জন্য চণ্ডীগড় কিংবা দিল্লি যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।

বন্ধুগণ,

এই সকল প্রচেষ্টা হিমাচল প্রদেশের উন্নয়নকেও গতি প্রদানের ক্ষেত্রে সক্রিয় রয়েছে। যখন অর্থনীতি শক্তিশালী হয়, অর্থ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা মজবুত হয়, স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত হয়, তখন এইসব উপাদান যে কোনও এলাকার পর্যটনকেও সম্প্রসারিত করে। দূরদুরান্তের যে গ্রামগুলি রয়েছে, ভারতের দূরদুরান্তে যে প্রান্তিক এলাকাগুলি রয়েছে, তা সে পাহাড়ি এলাকা হোক কিংবা অরণ্য সঙ্কুল এলাকা। যেমন হিমাচল প্রদেশের দূরদুরান্তের গ্রামগুলি, সেখানে এই ড্রোন পরিষেবার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের অনেক উপকার হবে।

ভাই ও বোনেরা,

বিগত আট বছরে স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তির জন্য অর্থাৎ, ২০৪৭-এর জন্য শক্তিশালী ভিত্তি প্রস্তুত করা হয়েছে। এই অমৃতকালে সাফল্যের জন্য একটাই মন্ত্র – ‘সবকা প্রয়াস’ বা সকলের প্রচেষ্টা। সবাইকে যুক্ত হতে হবে, সবাইকে একজোট হতে হবে, আর সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে – এই মনোভাব নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। কত শতাব্দী পর, আর কত প্রজন্মের পর এই সৌভাগ্য আমরা পেয়েছি। আপনাদের মতো আমাদের বর্তমান প্রজন্মও পেয়েছে। সেজন্য আসুন, আমরা সঙ্কল্প নিই যে আমরা সবাই ‘হাম সবকা প্রয়াস’-এর মাধ্যমে এই আহ্বানে আমাদের সক্রিয় অংশীদারিত্ব পালন করব। নিজেদের প্রত্যেক কর্তব্য পালন করব।

এই বিশ্বাস নিয়ে আজ হিমাচল প্রদেশবাসী আমাদেরকে যে আশীর্বাদ দিয়েছে, আর দেশের প্রত্যেক ব্লকে আজ এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা বসে রয়েছেন, আজ গোটা ভারত সিমলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, কোটি কোটি মানুষ আজ যুক্ত হয়েছেন আর আজ আমি সিমলার মাটি থেকে সেই কোটি কোটি দেশবাসীর সঙ্গে কথা বলছি। আমি সেই কোটি কোটি দেশবাসীকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাচ্ছি, আর প্রার্থনা করছি যাতে আপনাদের আশীর্বাদ আমাদের ওপর বজায় থাকে, আমরা যেন আরও দ্রুতগতিতে, আরও অনেক কাজ করতে থাকি, দিন-রাত কাজ করতে থাকি, প্রাণপনে কাজ করতে থাকি। এই ভাবনা নিয়ে এগিয়ে, আপনাদের সকলের আশীর্বাদে বলীয়ান হয়ে, আরও একবার আপনাদের সবাইকে অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাই। আমার সঙ্গে জোর গলায় বলুন –

ভারতমাতার জয়!

ভারতমাতার জয়!

ভারতমাতার জয়!

অনেক অনেক ধন্যবাদ!

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Job opportunities for women surge by 48% in 2025: Report

Media Coverage

Job opportunities for women surge by 48% in 2025: Report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
The World This Week On India
March 05, 2025

India is seeing a week of intense engagement with global partners while making headway in important domestic sectors. The European Commission leadership visited India, trade discussions with Latin America moved forward, and international businesses expanded their presence in the country. Meanwhile, India’s logistics, healthcare, and aviation sectors are undergoing changes that could have lasting economic effects.

|

India and the European Union: Deepening Ties Amid Global Trade Shifts

European Commission President Ursula von der Leyen, along with 21 members of the College of Commissioners, visited India this week. The visit shows the EU's intent to strengthen its relationship with India, especially in light of potential global trade realignments. Both parties are eager to finalize a free trade agreement by the end of the year, aiming to improve cooperation in trade, technology, and defense.

Salil Gupte on India's Robust Talent Pool

President of Boeing India Salil Gupte, has praised the country's strong talent base, emphasizing its role in the aerospace giant's growth. In a recent interview, Gupte noted that India's skilled workforce has been instrumental in scaling Boeing's operations, reinforcing the company's commitment to "Make in India" initiatives.

Transforming Logistics: The Role of Open Networks

India's logistics industry is undergoing a transformation, driven by the integration of physical and digital infrastructure. Open networks are increasing efficiency, reducing costs, and boosting GDP growth. As businesses embrace digitization, the streamlined movement of goods is creating a more connected and competitive marketplace, benefiting both enterprises and consumers alike.

Daikin's Expansion: Replicating India's Success in Africa

Japanese air conditioner manufacturer Daikin Industries plans to replicate its successful Indian business model in Africa. Aiming to become the leading player in the African market, Daikin's strategy reflects the scalability of business models proven in India and their applicability in other emerging markets.

Merck's Commitment: Doubling Workforce in India

Global pharmaceutical company Merck has announced plans to double its workforce in India, focusing on integrating healthcare expertise with technological advancements. This expansion is expected to significantly impact patient care and reflects India's growing importance in the global healthcare and technology sectors.

India: Emerging Hub for Clinical Trials

India is on the verge of becoming a global hub for clinical trials, with the market estimated to reach $1.51 billion by 2025. Factors such as a diverse population and cost-effective research capabilities are attracting global pharmaceutical companies to conduct trials in India, strengthening the country's position in the global healthcare landscape.

Strengthening Ties with Latin America

Under its policy of "strategic autonomy," India is expanding its presence in Latin America. Countries in the region have welcomed this push, leading to diversified trade and stronger bilateral relations. This move is part of India's effort to build economic partnerships beyond its traditional allies.

Bengaluru's New Cargo Terminal: Boosting Domestic Logistics

India's largest domestic cargo terminal has been launched at Bengaluru International Airport. This facility is set to improve the efficiency of domestic air cargo operations, supporting the growing logistics sector and contributing to economic growth. Spanning over 7 acres, the DCT features a peak handling capacity of approximately 360,000 metric tons, with a potential to expand to 400,000 metric tons.

Preserving History: Donation of a Century-Old Saudi Royal Letter

An Indian family has donated a century-old letter written by King Abdulaziz, the founder of Saudi Arabia, to a scholar named Ghulam Rasul Meher. This act reflects the deep-rooted people-to-people ties between India and Saudi Arabia and the role of citizens to preserve shared heritage.

India’s economic, diplomatic, and industrial engagements are moving at a steady pace. Discussions with the EU on trade, expansions by global firms, and structural developments in logistics and healthcare all point to a country positioning itself for long-term gains.