আজ যারা নিজেদের কথা শুনিয়ে দেশবাসীকে প্রেরণা জোগালেন, সেই সাতজন সম্মানিত ব্যক্তিকে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাব, কারণ, তাঁরা সময় বের করে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা আমাদের সবাইকে শুনিয়েছেন। তাঁরা ফিটনেসের ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের সাফল্য ও অভিজ্ঞতার কথা যেভাবে বর্ণনা করেছেন, তা নিশ্চিতভাবেই দেশের প্রত্যেক প্রজন্মের জন্য অনেক বেশি লাভদায়ক হবে বলে আমার মনে হয়। আজকের এই আলোচনা সভাটি প্রত্যেক বয়সের মানুষের জন্য, ভিন্ন ভিন্ন রুচির মানুষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হবে। ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে আমি সমস্ত দেশবাসীর সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। এক বছরের মধ্যে এই ফিটনেস মুভমেন্ট, ‘মুভমেন্ট অফ পিপল'-এ পরিণত হয়েছে। আর, এটি 'মুভমেন্ট অফ পজিটিভিটি'ও হয়ে উঠেছে। দেশে স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস নিয়ে নিরন্তর সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সক্রিয়তাও বাড়ছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে যোগ, আসন, ব্যায়াম, হাঁটা, দৌড়নো, সাঁতার কাটা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, স্বাস্থ্যকর জীবনশৈলী – এখন এগুলি আমাদের প্রাকৃতিক অনুভবের বিষয় হয়ে উঠেছে।

বন্ধুগণ,

ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট তার প্রথম বছরটি এমন কঠিন সময়ে সম্পূর্ণ করেছে যার মধ্যে প্রায় ছয় মাস আমাদের অনেক বাধ্যবাধকতার মধ্য দিয়ে চলতে হয়েছে। কিন্তু ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট তার ইতিবাচক প্রভাব এবং প্রাসঙ্গিকতাকে এই করোনা সঙ্কটকালে সফল করে দেখিয়েছে। সত্যি সত্যি ফিট থাকা ততটা কঠিন কাজ নয়, যতটা কিছু মানুষের মনে হয়। সামান্য নিয়ম মেনে চললে, আর সামান্য পরিশ্রম করলেই আপনারা সব সময় সুস্থ থাকতে পারেন। 'ফিটনেসের ডোজ, আধা ঘন্টা রোজ' – এই মন্ত্রে সকলের স্বাস্থ্য, সকলের সুখ লুকিয়ে রয়েছে। তারপর আপনারা যোগাভ্যাস করুন কিংবা ব্যাডমিন্টন খেলুন কিংবা টেনিস খেলুন, কিংবা ফুটবল কিংবা ক্যারাটে কিংবা কবাডি – যেটাই আপনাদের পছন্দ কমপক্ষে প্রতিদিন ৩০ মিনিট ধরে করুন। সম্প্রতি আমরা দেখেছি কেন্দ্রীয় সরকারের যুব মন্ত্রক এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রক মিলেমিশে একটি ফিটনেস প্রোটোকলও জারি করেছে।

বন্ধুগণ,

আজ সারা পৃথিবীতে ফিটনেস নিয়ে সচেতনতা গড়ে উঠেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) 'গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজি অন ডায়েট, ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি অ্যান্ড হেলথ' নামক নির্দেশিকা জারি করেছে। শরীর চর্চা নিয়ে গ্লোবাল রেকমেনডেশনও  জারি করেছে। আজ বিশ্বের অনেক দেশ ফিটনেস নিয়ে নতুন নতুন লক্ষ্য রেখেছে, আর সেগুলির বাস্তবায়নে তারা বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের কাজ করে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ব্রিটেন, আমেরিকা – এরকম অনেক দেশে এই সময় বেশ তোড়জোড় করে ফিটনেস অভিযান চলছে। আর, তাঁদের অধিকাংশ নাগরিককে এই ফিটনেস অভিযানের সঙ্গে যুক্ত করা, প্রতিদিন শরীরচর্চা করা, একটি নিয়মমাফিক শরীরচর্চার রুটিনের সঙ্গে যুক্ত করা – এভাবে কাজ চলছে।  

বন্ধুগণ, আমাদের আয়ুর্বিজ্ঞান শাস্ত্রে বলা হয়েছে,

 

সর্ব প্রাণী ভৃতাম নিত্যম।

আয়ুঃ য়ুক্তিম অপেক্ষতে।।

দৈবে পুরুষা কারে চ।

স্থিতম হি অস্য বলা বলম।।

 

অর্থাৎ, সংসারে শ্রম, সাফল্য, ভাগ্য – সবকিছু আরোগ্যের ওপর, স্বাস্থ্যের ওপরই নির্ভর করে। স্বাস্থ্য থাকলে তবেই ভাগ্য সঙ্গ দেয়, তবেই সাফল্য আসে। যখন আমরা নিয়মিত রূপে ব্যায়াম করি, নিজেদের ফিট এবং শক্তিশালী করে তুলি, তখনই আমাদের মনে একটি ভাবনা জেগে ওঠে যে হ্যাঁ, আমরা নিজেরাই নিজেদের নির্মাতা। একটি আত্মবিশ্বাস জেগে ওঠে। ব্যক্তির এই আত্মবিশ্বাসই তাঁকে জীবনের ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য এনে দেয়। একথা পরিবার, সমাজ এবং দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। একটি পরিবার যদি একসঙ্গে খেলাধূলা করে, তাহলে একসঙ্গে তাঁরা ফিট থাকে, সুস্থ থাকে। ‘আ ফ্যামিলি দ্যাট প্লে-জ টুগেদার, স্টে-জ টুগেদার!’

মহামারীর সময় অনেক পরিবার এভাবে অনেক প্রয়োগের মাধ্যমে নানাভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখেছে, একসঙ্গে খেলাধূলা, একসঙ্গে যোগাসন, প্রাণায়াম ও অন্যান্য শরীরচর্চা করেছে। সবাই মিলে একসঙ্গে ঘেমেছে। এ থেকে অভিজ্ঞতা হয়েছে এরকম যে, প্রত্যেকের শারীরিক সুস্থতা বেড়েছে, আর তার সঙ্গে একটি বাই-প্রোডাক্ট হিসেবে 'ইমোশনাল বন্ডিং, বেটার আন্ডারস্ট্যান্ডিং এবং মিউচ্যুয়াল কো-অপারেশন'-এর মতো অনেক নতুন বিষয় ক্রমে পরিবারের শক্তি হয়ে উঠেছে এবং অত্যন্ত সহজেই তা হয়ে গেছে। সাধারণত এটা দেখা যায়, যে কোনও ভালো অভ্যাস আমরা মা-বাবা-র কাছ থেকেই শিখি। কিন্তু ফিটনেসের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটা উল্টোভাবে হচ্ছে। এখন নবীনরাই উদ্যোগ নিচ্ছে, আর বাবা-মাকেও শরীরচর্চা করতে, খেলাধূলা করতে উৎসাহ জোগাচ্ছে।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের একটি প্রবাদ আছে, ‘মন চাঙ্গা তো কাঠৌতি মে গঙ্গা' – অর্থাৎ, মন ভালো থাকলে কাঠের পাত্রেও গঙ্গাকে অনুভব করা যায়। এই বার্তা আধ্যাত্মিকভাবে এবং সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই, কিন্তু এর গভীর গুঢ় অর্থ আমাদের সমাজ জীবনের জন্যও অত্যন্ত জরুরি। এই প্রবাদের একটা অন্য মানে হল, আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, সুস্বাস্থ্যের অন্যতম উপাদান হল সুস্থ মন। এর উল্টোটাও ততটাই সত্য। আমাদের মন যখন ভালো থাকে, সুস্থ থাকে, তখন শরীরও সুস্থ থাকে। আর সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে যে মনকে সুস্থ রাখার একটি দৃষ্টিভঙ্গি হল মনকে বিস্তারিত করা। মন সঙ্কুচিত হলে সেটা সম্ভব নয়। মন প্রসারিত হলে তবেই একজন ব্যক্তি এগিয়ে গিয়ে তাঁর পরিবার, সমাজ এবং দেশের জন্য নিজেকে প্রসারিত করতে পারেন, তাঁদের জন্য কাজ করতে পারেন। এভাবে কাজ করলে একটা ভিন্ন আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে। মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠার জন্য এটি এক ধরনের জড়িবুটির মতো কাজ করে। সেজন্য স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, “শক্তিই জীবনদুর্বলতাই মৃত্যু। প্রসারতাই জীবনসঙ্কোচনই মৃত্যু।”

 

জনগণের কাছ থেকে, সমাজের কাছ থেকে দেশের সঙ্গে যুক্ত হওয়া এবং জুড়ে থাকার বিভিন্ন পদ্ধতি, বিভিন্ন মাধ্যমের অভাব নেই। এর অনেক সুযোগও রয়েছে। আর নিজেকে প্রেরিত করার জন্য আমাদের চারপাশে এমন অনেক উদাহরণ পেয়ে যাব। আজ যে সাতজন সম্মানিত ব্যক্তির বক্তব্য আমরা শুনলাম, তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে বড় প্রেরণা আর কী হতে পারে? আমাদেরকে শুধু নিজেদের রুচি এবং ঝোঁক অনুযায়ী কিছু বিষয় বেছে নিতে হবে, আর সেগুলি নিয়মিত চর্চা করতে হবে, করে যেতে হবে। আমি দেশবাসীকে অনুরোধ করব, প্রত্যেক প্রজন্মের সম্মানিত ব্যক্তিদের অনুরোধ করব, আপনারা ঠিক করুন, কিভাবে অন্যদের সাহায্য করবেন, সমাজকে কী দেবেন, নিজের সময়, নিজের জ্ঞান, নিজের দক্ষতা, শারীরিক সাহায্য – যা খুশি দিন, কিন্তু অবশ্যই দিন।

 

বন্ধুগণ, আমার দৃঢ় বিশ্বাস দেশবাসী ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টের সঙ্গে আরও বেশি করে যুক্ত হবেন এবং আমরা সবাই মিলে অনেক অনেক মানুষকে যুক্ত করে যাব। এই ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট আসলে একটি হিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট। এজন্য ইন্ডিয়া যত ফিট হবে, ততটাই ইন্ডিয়া হিট হবে। এক্ষেত্রে আপনাদের সকলের প্রচেষ্টা বরাবরের মতোই দেশকে অনেক সাহায্য করবে।

 

আমি আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই, আর, অন্তর থেকে আপনাদের সকলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অনুরোধ করছি, আজ আপনারা ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টকে একটি নতুন শক্তি জোগান, নতুন সঙ্কল্প নিয়ে এগিয়ে আসুন। ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট ব্যক্তি-সমষ্টির একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ শৃঙ্খল হয়ে উঠুক, সিম্ফনি হয়ে উঠুক। এই ভাবনা নিয়ে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi visits the Indian Arrival Monument
November 21, 2024

Prime Minister visited the Indian Arrival monument at Monument Gardens in Georgetown today. He was accompanied by PM of Guyana Brig (Retd) Mark Phillips. An ensemble of Tassa Drums welcomed Prime Minister as he paid floral tribute at the Arrival Monument. Paying homage at the monument, Prime Minister recalled the struggle and sacrifices of Indian diaspora and their pivotal contribution to preserving and promoting Indian culture and tradition in Guyana. He planted a Bel Patra sapling at the monument.

The monument is a replica of the first ship which arrived in Guyana in 1838 bringing indentured migrants from India. It was gifted by India to the people of Guyana in 1991.