National Education Policy will give a new direction to 21st century India: PM Modi
Energetic youth are the engines of development of a country; Their development should begin from their childhood. NEP-2020 lays a lot of emphasis on this: PM
It is necessary to develop a greater learning spirit, scientific and logical thinking, mathematical thinking and scientific temperament among youngsters: PM

নমস্কার!

আমার মন্ত্রিসভার সহযোগী দেশের শিক্ষামন্ত্রী শ্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্কজি, শ্রী সঞ্জয় ধোতরেজি, জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া রচনাকারী সমিতির অধ্যক্ষ ডঃ কস্তুরিরঙ্গনজি, তাঁর টিমের সম্মানিত সদস্যগণ, এই বিশেষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজ্য থেকে আগত বিদ্বান, অধ্যাপক ও শিক্ষকগণ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, আজ আমরা সকলে একটি এমন মুহূর্তের অংশ হয়ে উঠেছি যা আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণের ভিত্তি স্থাপন করছে। এটি এমন একটি মুহূর্ত যাতে নতুন যুগ নির্মাণের বীজ বপন হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষানীতি। একবিংশ শতাব্দীর ভারতকে নতুন লক্ষ্য প্রদান করবে।

বন্ধুগণ,

বিগত তিন দশকে বিশ্বের প্রতিটি ক্ষেত্র বদলে গেছে। প্রত্যেক ব্যবস্থা বদলে গেছে। এই তিন দশকে আমাদের জীবনের হয়তো এমন কোন দিক নেই যা আগের মতো। কিন্তু সেই পথ, যে পথে চলে সমাজ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যায়, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা তা এখনও পুরনো গিরিপথ ধরেই এগিয়ে যাচ্ছিল। পুরনো শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা ততটাই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল, যতটা আপনাদের শ্রেণীকক্ষে ব্ল্যাকবোর্ড নষ্ট হয়ে গেলে বদলানোর প্রয়োজন পড়ে। যেমন প্রত্যেক স্কুলে পিন-আপ নোটিশ বোর্ড থাকে। সেখানে সমস্ত জরুরি কাগজ, স্কুলের জরুরি আদেশ, বাচ্চাদের আঁকা ছবি ইত্যাদি আপনারা লাগিয়ে রাখেন। এই বোর্ডগুলি কিছুদিন পরপরই ভরে যায়। নতুন ক্লাসের নতুন বাচ্চাদের আঁকা নতুন ছবি লাগানোর জন্য সেই পিন-আপ বোর্ডগুলিকে বদলাতেই হয়।

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিও নতুন ভারতের নতুন আশা-আকাঙ্ক্ষার নতুন প্রয়োজন পূর্তির শক্তিশালী মাধ্যম। এর পেছনে রয়েছে গত ৪-৫ বছরের কঠিন পরিশ্রম। প্রত্যেক ক্ষেত্র, প্রত্যেক বিষয়, প্রত্যেক ভাষার মানুষেরা এই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি তৈরি করার জন্য দিন-রাত কাজ করেছেন। কিন্তু এই কাজ আজও সম্পূর্ণ হয়নি। আসলে এখন তো আসল কাজ শুরু হল। এখন আমাদের জাতীয় শিক্ষানীতিকে কার্যকরী পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত করতে হবে। আর এই কাজ আমরা সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে করব। আমি জানি, জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণার পর আপনাদের মধ্যে অনেকে মনেই অনেক প্রশ্ন উঠেছে। এই শিক্ষানীতি আবার কি? এটা কিভাবে আলাদা? এতে স্কুল এবং কলেজের ব্যবস্থাপনায় কি পরিবর্তন আসবে? এই শিক্ষানীতিতে একজন শিক্ষকের জন্য কি রাখা আছে? একজন ছাত্র কিভাবে উপকৃত হবে? আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, একে সাফল্যের সঙ্গে বাস্তবায়িত করতে হলে কি কি করতে হবে, কেমনভাবে করতে হবে? এই প্রশ্নগুলি অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত এবং অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আর সেজন্যই আমরা সবাই এখানে এই কর্মসূচিতে একত্রিত হয়েছি যাতে পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি, ভবিষ্যতের পথ গড়ে তুলতে পারি। আমাকে বলা হয়েছে যে, গতকালও সারাদিন ধরে আপনারা সবাই এই বিষয়গুলি নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে আলাপ-আলোচনা, ভাবনা-চিন্তা করেছেন।

শিক্ষকরা নিজেরা নিজেদের মতো করে শিক্ষাসামগ্রী তৈরি করবেন। বাচ্চারা নিজেদের পুতুল মিউজিয়াম বানাবে, অভিভাবকদের যুক্ত করার জন্য স্কুলে স্কুলে গড়ে উঠবে কমিউনিটি লাইব্রেরী। সেখানে ছবি সহ বহুভাষী অভিধান থাকা উচিৎ। স্কুলের মধ্যেই যেন কিচেন গার্ডেন থাকে। এরকম কতো বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। অনেক নতুন নতুন ভাবনা উঠে এসেছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়িত করার জন্য এই অভিযানে আমাদের প্রধান শিক্ষক এবং অন্যান্য শিক্ষকরা পূর্ণ উৎসাহ নিয়ে অংশগ্রহণ করছেন।

কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন সম্পর্কে সারা দেশের শিক্ষকদের কাছ থেকে MyGov পোর্টালে পরামর্শ চেয়েছিল। এক সপ্তাহের মধ্যেই ১৫ লক্ষেরও বেশি পরামর্শ এসেছে। এই পরামর্শগুলি জাতীয় শিক্ষানীতিকে আরও বেশি কার্যকরী পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত করতে অনেক সাহায্য করবে। এই বিষয়ে আরও বেশি সচেতনতা তৈরি করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রক অনেক ধরনের কর্মসূচি চালু করেছে।

বন্ধুগণ,

উন্নয়নকে গতিশীল করতে সে দেশের যুব প্রজন্ম এবং যুব প্রাণশক্তির বড় ভূমিকা থাকে। কিন্তু সেই যুব প্রজন্মের মানসিক গঠন ছোটবেলা থেকেই শুরু হয়ে যায়। শৈশব কেমন হবে, তার ওপর ভবিষ্যতের অনেক কিছু নির্ভর করে। ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা, তারা যে আবহে বড় হচ্ছে সেটাই অনেকটা ঠিক করে যে ভবিষ্যতে একজন ব্যক্তি হিসেবে সে কেমন হবে। তার ব্যক্তিত্ব কেমন হবে। সেজন্য জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিশুদের শিক্ষার ওপর অনেক বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। প্রাক-বিদ্যালয় শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশুরা প্রথমবার মা-বাবার যত্ন এবং বাড়ির সহজ পরিবেশ থেকে বাইরে বেরোনো শুরু করে। কিছুক্ষণ হলেও বাড়ি থেকে দূরে থাকে। এটাই সেই প্রথম পর্যায় যখন শিশুরা  নিজেদের স্নায়ুগুলি ব্যবহার করতে শুরু করে এবং নিজেদের দক্ষতাগুলি খুব ভালোভাবে বুঝতে শুরু করে। তাদের জন্য এমন স্কুল ও এমন শিক্ষকের প্রয়োজন রয়েছে যারা শিশুদের ‘ফান লার্নিং, প্লেফুল লার্নিং, অ্যাক্টিভিটি বেসড লার্নিং, ডিসকভারি বেসড লার্নিং-এর পরিবেশ দেবে।

আমি জানি, আপনারা ভাবছেন এই করোনার সঙ্কট সময়ে এইসব কিছু কেমনভাবে সম্ভব হবে। এর জবাব ভাবনা থেকে বেশি দৃষ্টিভঙ্গির নিরিখে দিতে হবে। আরে এমন করোনার পরিস্থিতি তো সারা জীবন থাকবে না। বাচ্চারা যেভাবে যেভাবে নতুন নতুন কক্ষে উত্তীর্ণ হবে, তাদের আরও আরও শেখার ভাবনা বিকশিত হবে, শিশুদের মন, তাদের মস্তিষ্ক বৈজ্ঞানিক এবং যুক্তিসম্মত পদ্ধতিতে ভাবতে শুরু করবে, তাদের মনে গাণিতিক চিন্তাভাবনা ও বিজ্ঞান-সম্মত মেজাজ গড়ে উঠবে, এটাই আসল প্রয়োজন। আর গাণিতিক ভাবনার মানে শুধু এটাই নয়, যে শিশুরা গণিতের সমস্যাগুলিকে সমাধান করবে। এই ভাবনা আসলে একটি নতুন পদ্ধতিতে ভাবার উপায়। তাদেরকে আমাদের এই পদ্ধতি শেখাতে হবে। প্রতিটি বিষয়কে, জীবনের প্রতিটি মাত্রাকে গাণিতিক এবং যুক্তিনিষ্ঠভাবে বোঝার দৃষ্টিকোণ তৈরি হবে যাতে মস্তিষ্ক ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করতে পারে। এই দৃষ্টিকোণ মন এবং মস্তিষ্কের বিকাশে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, আর এজন্যই জাতীয় শিক্ষানীতিতে এর পদ্ধতিগত দিকটির ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আপনাদের মধ্যে অনেকে অনেক প্রধান শিক্ষক এটা ভাবছেন যে আমরা তো আগে থেকেই নিজেদের স্কুলে এভাবেই শিক্ষাদান করে আসছি।  কিন্তু অনেক স্কুল তো এমনও আছে যেখানে এমনভাবে শিক্ষা দেওয়া হয় না। সারা দেশে একটা সমতা আনা তো অত্যন্ত জরুরি, তাই না? আজকে আপনাদের সঙ্গে এত বিস্তারিতভাবে এত খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে কথা বলার উদ্দেশ্য এটাই।

বন্ধুগণ,

জাতীয় শিক্ষানীতিতে পুরনো ১০+২-র জায়গায় ৫+৩+৩+৪ – এই ব্যবস্থা অনেক ভাবনা-চিন্তা করে করা হয়েছে। এতে আর্লি চাইল্ডহুড কেয়ার এবং শিক্ষাকে একটি বুনিয়াদি রূপে, একটি ভিত্তি রূপে সামিল করা হয়েছে। আজ আমরা যদি দেখি প্রাক-বিদ্যালয় পঠনপাঠনকে প্লেফুল এডুকেশন রূপে শহরের বেসরকারি বিদ্যালয়গুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। সেটি এখন গ্রামে গ্রামে পৌঁছবে। গরীবদের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছবে। ধনী, গরীব, গ্রাম, শহর প্রত্যেক জায়গার শিশুরা এই পরিষেবা পাবে। বুনিয়াদি শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া এই নীতির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে বুনিয়াদি সাক্ষরতা ও গাণিতিক সক্ষমতাকে উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি জাতীয় মিশন হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রারম্ভিক ভাষার জ্ঞান, সংখ্যার জ্ঞান, বাচ্চাদের সাধারণ লেখা পড়তে পারা এবং বুঝতে পারার ক্ষমতা গড়ে তোলা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শিশুরা ভবিষ্যতে শেখার জন্য পড়বে। সেজন্য প্রয়োজন শুরুতেই পড়ার জন্য শেখা। শেখার জন্য পড়া থেকে পড়ার জন্য শেখার এই উন্নয়ন যাত্রাকে বুনিয়াদি সাক্ষরতা এবং গাণিতিক সক্ষমতার মাধ্যমে বাস্তবায়িত করা হবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের এটা সুনিশ্চিত করতে হবে, যে শিশুই তৃতীয় শ্রেণী পাশ করবে, সে যাতে এক মিনিটে ৩০-৩৫টি শব্দ সহজভাবে পড়তে পারে। এটাকে আপনাদের ভাষায় ‘ওরাল রিডিং ফ্লুয়েন্সি’ বলা হয়। যে শিশুকে আমরা এই গড়গড় করে পড়তে পারার মান পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারব, সেরকম তৈরি করতে পারব, শেখাতে পারব, ভবিষ্যতে সেই ছাত্রছাত্রীরই বাকি বিষয়গুলির বিষয়বস্তু বোঝা সহজ হবে। আমি এক্ষেত্রে আপনাদের একটি পরামর্শ দিই। এই যে ছোট ছোট শিশুরা তাদের সঙ্গে শ্রেণীকক্ষে আরও ২৫-২০ জন এমন বন্ধুবান্ধব থাকবে। আপনারা তাদেরকে বলুন, চল ভাই তুমি ক’জনের নাম জানো, তুমি বলো। তারপর জিজ্ঞাসা করুন কত দ্রুত সবার নাম বলতে পারো। তারপর বলুন, তুমি দ্রুত ওদের নাম বলো এবং তাদেরকে সেখানে দাঁড় করিয়ে দাও। আপনারা দেখবেন কতো ধরনের মেধা উন্নয়ন শুরু হয়ে যাবে আর তাদের আত্মপ্রত্যয় বেড়ে যাবে। পরবর্তী সময়ে লিখিত রূপে বন্ধুদের নাম লিখতে বলবেন। চলো তুমি ক’জনের নাম লিখতে পারো। চাইলে ফটো দেখিয়ে নাম লিখতে বলতে পারেন। সামনে যাদের দেখছে সেই বন্ধুদের ছবিতে দেখে চিনতে শেখা। এটাকেই শেখার প্রক্রিয়া বলে। এর মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণীতে ছাত্রছাত্রীদের ওপর থেকে বোঝা কমবে। শিক্ষকদেরও বোঝা কমবে।

পাশাপাশি, প্রাথমিক গণিত যেমন গণনা করা, যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগ – এসবও বাচ্চারা খুব সহজেই বুঝে যাবে। এই সহজেই বোঝানোর ব্যাপারটা তখনই সম্ভব হবে যখন পড়ার বই এবং শ্রেণীকক্ষের চার দেওয়ালের বাইরে বেরিয়ে তারা বাস্তব দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত হবে, আমাদের জীবনের সঙ্গে, চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে যুক্ত হবে। চারপাশের সবকিছু থেকে, বাস্তব বিশ্ব থেকে বাচ্চারা কিভাবে শিখতে পারে তার একটা উদাহরণ আমরা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের একটি কাহিনীতে দেখতে পাই। আমরা পড়েছি, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরজি যখন আট বছর বয়সী ছিলেন, তখন পর্যন্ত তিনি ইংরেজি পড়তে পারতেন না। একবার তিনি যখেন তাঁর বাবার সঙ্গে কলকাতা যাচ্ছিলেন, তখন পথে যেতে যেতে রাস্তার পাশে ইংরেজিতে লেখা মাইলফলক দেখেছেন। তিনি তাঁর বাবাকে জিজ্ঞাসা করেন যে এটা কি লেখা? তখন তাঁর বাবা বলেন যে এতে কলকাতা কত দূর এটা বোঝানোর জন্য ইংরেজিতে গণনা লেখা আছে। এই উত্তর শুনেই বালক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মনে আরও জিজ্ঞাসা জন্মায়। তিনি প্রশ্ন করতে থাকেন আর তাঁর বাবা সেই মাইলফলকগুলিতে লেখা সংখ্যাগুলি বলতে থাকেন। আর, কলকাতা পৌঁছতে পৌঁছতে একদিনের মধ্যেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পূর্ণ ইংরেজি সংখ্যা শিখে যান। ১, ২, ৩, ৪, … ৭, ৮, ৯, ১০ – এটাই হল জিজ্ঞাসার পড়াশোনা, জিজ্ঞাসা থেকে শিক্ষা আর শিক্ষার শক্তি!

বন্ধুগণ,

যখন শিক্ষাকে চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া যায়, তখন তার প্রভাব ছাত্রছাত্রীদের সারা জীবনের ওপর পড়ে। আর পরোক্ষভাবে গোটা সমাজের ওপর পড়ে। যেভাবে জাপানে গেলে দেখবেন, সেখানে সিনরিন ইয়োকু-র প্রচলন রয়েছে। সিনরিন-এর মানে হল অরণ্য বা জঙ্গল, আর ইয়োকু-র মানে হল স্নান করা। অর্থাৎ, অরণ্যে স্নান। সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের অরণ্যে নিয়ে গিয়ে যেখানে অনেক গাছপালা আছে সেরকম জায়গায় প্রকৃতিকে স্বাভাবিক রূপে অনুভব করার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। সেখানে তারা গাছপালা চিনবে, নানারকম ফুল দেখবে, বিভিন্ন পশুর আওয়াজ শুনবে, পাখির কল-কাকলি শুনবে, স্পর্শ, স্বাদ এবং ঘ্রাণ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে সবকিছুকে অনুভব করবে, এভাবে বাচ্চাদের প্রকৃতি এবং পরিবেশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। তাদের সংহত রূপে মানসিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার সুযোগও তৈরি করে দেওয়া হয়। বাচ্চারা এটি খুব উপভোগ করে আর একসঙ্গে তারা কতকিছু শিখে যায়। আমার মনে পড়ে, যখন আমি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন  একটি কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। আমরা সমস্ত স্কুলে খবর পাঠিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম সমস্ত স্কুলের বাচ্চাদের তাদের গ্রামে সবথেকে বড় এবং পুরনো গাছ কোনটা সেটা খুঁজে বের করতে। তখন রার সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে নিজের গ্রামে কিংবা শহরের পার্শ্ববর্তী গ্রামে গিয়ে পুরনো গাছ খুঁজতে হয়েছিল। শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করতে হয়েছিল। আর সকলের সম্মতিতে সেই পুরনো গাছটি নিয়ে পরবর্তীকালে বাচ্চারা স্কুলে ফিরে কবিতা লিখেছে, গান লিখেছে, প্রবন্ধ লিখেছে, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা দিয়ে বলেছে এই গাছের গুরুত্ব কতটা। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় তাদের অনেক গাছ দেখতে হয়েছে, অনেক গাছ দেখে তবেই সবথেকে পুরনো গাছ খুঁজতে হয়েছে। এই প্রকৃতি পাঠের মাধ্যমে তারা অনেক কিছু শিখেছে এবং তাদের মনে আরও কিছু শেখার আগ্রহ জন্মেছে দেখে আমরা বুঝতে পারি যে এই প্রয়োগ অত্যন্ত সফল হয়েছে। একদিকে শিশুরা পরিবেশ সম্পর্কে জানতে পেরেছে, পাশাপাশি তাদের নিজের গ্রাম সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে। আমাদের এভাবে সহজ এবং নতুন নতুন পদ্ধতিতে শেখানোর কথা ভাবতে হবে। আমাদের এই প্রয়োগ ‘নিউ এজ লার্নিং’-এর মূলমন্ত্র হওয়া উচিৎ। ‘এনগেজ, এক্সপ্লোর, এক্সপিরিয়েন্স, এক্সপ্রেস এবং এক্সেল’ অর্থাৎ, ছাত্রছাত্রীদের নিজস্ব রুচি অনুসারে তাদের গতিবিধিতে বিভিন্ন ঘটনায়, বিভিন্ন প্রকল্পে জুড়ে দিতে বা এনগেজ করতে হবে। সেটিকে তারা নিজেদের মতো করে এক্সপ্লোর বা আবিষ্কার করবে। তাদের এই গতিবিধিকে, ঘটনাগুলিকে, প্রকল্পের বিভিন্ন দৃষ্টিকোণকে, তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা বা এক্সপিরিয়েন্সের মাধ্যমে শিখবে। সেটি তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হতে পারে অথবা সম্মিলিত অভিজ্ঞতা হতে পারে। তারপর শিশুরা সৃষ্টিশীল পদ্ধতিতে তাদের অভিজ্ঞতাকে এক্সপ্রেস বা প্রকাশ করতে শিখবে। এই সবকিছু মিলিয়েই অবশেষে তাদের প্রতিভার বিচ্ছুরণ বা এক্সেল করার পথ গড়ে ওঠে। এখন যেমন আমরা বাচ্চাদের কোনও পাহাড়ে, কোনও ঐতিহাসিক স্থানে, কোনও ফসলের খেতে কিংবা কোনও নিরাপদ অন্ন উৎপাদন কারখানায় নিয়ে যেতে পারি। এখন দেখুন, আপনারা শ্রেণীকক্ষে রেলের ইঞ্জিন সম্পর্কে যতই পড়ান, বাসের কথা যতই পড়ান তাতে ছেলে-মেয়েরা যত তাড়াতাড়ি শিখবে, তার থেকে অনেক দ্রুত শেখাতে পারবেন যদি আপনারা তাদেরকে গ্রামের পাশের রেল স্টেশনে নিয়ে যান। বাচ্চাদেরকে চোখের সামনে দেখান যে রেলে ইঞ্জিন কেমন হয়। তাদেরকে নিকটবর্তী বাস স্ট্যান্ডে নিয়ে গিয়ে কোনও বাসে চড়িয়ে দেখান যে কেমন হয় বাস। তারা হাতে-কলমে শিখতে শুরু করবে। আমি জানি, অনেক প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষকমশাই ভাবছেন যে আমাদের স্কুল-কলেজে তো আমরা এটা করেই থাকি। আমি স্বীকার করছি, অনেক শিক্ষক অত্যন্ত উদ্ভাবক হন এবং তাঁরা আপ্রাণ খেটে যান। কিন্তু সবাই এমন হন না। সব স্কুল-কলেজে এমন হয় না। আর সেজন্যই অনেক ছাত্রছাত্রী ফলিত জ্ঞান থেকে দূরে থেকে যায়। আমরা এই ভালো দিকগুলিকে যত বেশি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নিয়ে যাব, তখন আমাদের বন্ধু শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এ থেকে শেখার সুযোগ পাবেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিজ্ঞতা যত বেশি হবে,  তাঁদের কাছে শুনে শুনে ছাত্রছাত্রীরা লাভবান হবে।

বন্ধুগণ,

আমদের দেশের প্রত্যেক ক্ষেত্রে কিছু নিজস্ব বৈচিত্র্য রয়েছে। কোনও না কোনও ঐতিহ্যশালী চিত্রকলা, কারিগরি, কোনও বিশেষ পণ্যের কারণে সেই জায়গাগুলি বিখ্যাত হয়ে যায়। যেমন, বিহারের ভাগলপুরের শাড়ি, সেখানকার সিল্ক সারা দেশে বিখ্যাত। ছাত্রছাত্রীরা সেই শাড়ি তৈরির কারখানায় গিয়ে হাত চরকা দেখা আসবে। কিভাবে কাপড় তৈরি হয়। নিজের চোখে দেখে এবং শিল্পীদের কাছে শুনে শিখতে পারবে। আপনারা আগেই শ্রেণীকক্ষ থেকে তাদের মধ্যে কে কোন প্রশ্ন করবে সেটা শিখিয়ে নিয়ে যাবেন। তারপর তাদেরকে বলবেন যে তুমি যে প্রশ্ন করেছ সেটার কি জবাব পেয়েছ সেটা খাতায় লিখে আমাকে দেখাও। এটাই তো প্রকৃত শিক্ষা। যখন তারা সঠিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে যেমন, আপনারা সুতো কোথা থেকে আনেন, সুতোর রং কিভাবে হয়, শাড়ি কেমন করে চমকায়। বাচ্চাদের মুখ থেকে এই প্রশ্নগুলি শুনলে কারখানার শিল্পীরাও খুশি মনে জবাব দেবেন আর বাচ্চারা অনেক কিছু শিখতে পারবেন। আপনারা স্কুলেও এরকম দক্ষ লোকেদের আমন্ত্রণ জানিয়ে আনতে পারেন। তাঁরা আপনাদের স্কুলে তাঁদের পণ্যের প্রদর্শনী বা কর্মশালা চালু করতে পারে। মনে করুন গ্রামে যাঁরা মাটির বাসন তৈরি করেন, একদিন তাঁদের ডেকে আনলেন। স্কুলের বাচ্চারা দেখবে, প্রশ্ন করবে এবং কত ভালোভাবে শিখে নেবে। এভাবে ছাত্রছাত্রীদের জিজ্ঞাসা বৃদ্ধি পাবে। জ্ঞানও বাড়বে। শেখার প্রতি আগ্রহও বাড়বে। এরকম অনেক পেশার মানুষদের পণ্য উৎপাদনে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করতে হয়। কিন্তু আমরা তাদের গুরুত্ব দিই না। অনেকে তো তাঁদেরকে আমাদের থেকে ছোট বা নিচু শ্রেণীর বলে ভাবি। ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের কাছ থেকে দেখলে তাঁদের প্রতি ছাত্রছাত্রীদের মনে একটি আবেগের সম্পর্ক তৈরি হবে। তাঁদের দক্ষতা বুঝবে। তাঁদেরকে সম্মান করতে শিখবে।

এখনও তো হতে পারে, বড় হয়ে এই শিশুদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ এই শিল্পোদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হবে। কেউ হয়তো এই ধরনের উদ্যোগের বড় মালিক হয়ে যাবে। বড় শিল্পপতি হবে। বাচ্চাদের মনে সংবেদনশীলতা জাগ্রত করার দায়িত্ব আপনাদের। অনেকেই অটো রিকশায় স্কুলে আসে। তাদেরকে কি কখনও জিজ্ঞাসা করেছেন, তুমি যে অটো রিকশায় করে আসো সেটি যিনি চালান সেই কাকুর নাম কি? তোমাকে রোজ যিনি নিয়ে আসেন তাঁর বাড়ি কোথায়? তোমরা কি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছ যে তিনি কখনও জন্মদিন পালন করেছেন? কোনদিন কি তাঁর বাড়িতে গিয়েছ? তিনি কি তোমার বাবা-মায়ের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেন? তেমনই যারা রিকশায় আসে তাদেরকে বলবেন আগামীকাল তোমার রিকশাচালক কাকুর কাছ থেকে ১০টি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে আসবে। তারপর ক্লাসে এসে বলবে তোমার রিক্সাওয়ালা কেমন মানুষ, তাঁর বাড়ি কোন গ্রামে। যদি এই গ্রামেরই মানুষ হন তাহলে তিনি কোথা থেকে এসেছেন। এভাবে বাচ্চাদের মনে তাদের আশপাশের সমস্ত পেশার মানুষদের প্রতি সংবেদনা গড়ে উঠবে। না হলে সেই বাচ্চারা জানেই না, তারা ভাবে আমার বাবা টাকা দেয়, সেজন্য অটো রিকশাওয়ালা আমাকে নিয়ে আসে। তাদের মনে কখনও এই ভাব জেগে ওঠে না যে অটো রিকশাওয়ালা কাকু আমার জীবন তৈরি করে দিচ্ছে। যখন তারা ভাববে যে আমার জীবন তৈরি করার ক্ষেত্রে এই কাকুরও কিছু ভূমিকা রয়েছে, তখনই শিশুর মনে তার প্রতি কিছু সংবেদনা তৈরি হবে।

তেমনই তারা যদি অন্যান্য পেশা বেছে নেয়, যেমন কোন শিশু যদি বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ারও হয়, তখনও তার মাথায় থাকবে যে অমুক পেশার মানুষদের জীবনকে সহজ করার জন্য কিছু উদ্ভাবন করা যায় কিনা। সেজন্যই অভিজ্ঞতার পাশাপাশি, শিশুদের মনে এই সংবেদনা গড়ে তুলতে তাদেরকে কখনও হাসপাতালে, কখনও ফায়ার স্টেশনে বা অন্যকোন জায়গায় বেড়াতে নিয়ে গিয়ে শিক্ষায় বৈচিত্র্য আনতে পারেন। হাসপাতালে গেলে বাচ্চারা বুঝতে পারবে ডাক্তাররা কেমন হয়, ডেন্টিস্ট কি করে, চোখের হাসপাতাল কেমন হয়, তারা বিভিন্ন সরঞ্জাম দেখবে, দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করানোর মেশিন দেখবে, তাদের মনে জিজ্ঞাসা তৈরি হবে, তারা শিখবে।

বন্ধুগণ,

জাতীয় শিক্ষানীতিকে এভাবে রচনা করা হয়েছে যাতে পাঠক্রমের বোঝা কম করা যায়। আর বুনিয়াদি বিষয়গুলির ওপর বেশি লক্ষ্য দেওয়া যায়। শিক্ষাকে সংহত এবং ‘ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি, ফান-বেসড এবং কমপ্লিট এক্সপিরিয়েন্স’ করে তোলার জন্য একটি ‘ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক’ গড়ে তোলা হবে। এটাও নিশ্চিত করা হয়েছে যে ২০২২ সালে আমরা যখন স্বাধীনতার ৭৫তম বছর পালন করব, তখন আমাদের ছাত্রছাত্রীরা এই নতুন কারিকুলাম নিয়েই নতুন ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়াবে। এটাও দূরদর্শী, ভবিষ্যতের জন্য তৈরি এবং বিজ্ঞান-ভিত্তিক পাঠক্রম হবে। এর জন্য সকলের পরামর্শ নেওয়া হবে। আর সকলের পরামর্শ এবং আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে এর মধ্যে যুক্ত করা হবে।

বন্ধুগণ,

ভবিষ্যতের বিশ্ব আমাদের আজকের বিশ্ব থেকে অনেকটাই আলাদা হতে চলেছে। আমরা এর প্রয়োজনগুলি এখন থেকেই দেখতে পারি, অনুভব করতে পারি। এক্ষেত্রে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের একবিংশ শতাব্দীর দক্ষতাকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এই একবিংশ শতাব্দীর দক্ষতা কেমন হবে? এটি হবে পাঁচটি ‘সি’ – ‘ক্রিটিকাল থিঙ্কিং, ক্রিয়েটিভিটি, কোলাবরেশন, কিউরিওসিটি এবং কমিউনিকেশন’। আমাদের ছাত্রছাত্রীরা তাদের উন্নত ভবিষ্যৎ এবং ভবিষ্যতের বিজ্ঞানের উন্নতিকে যাতে বোঝে সেই লক্ষ্যে ভাবুন। এগুলি আজকের সময়ের চাহিদা। এগুলি অত্যন্ত জরুরি। সেজন্য ছাত্রছাত্রীদের গোড়া থেকেই ‘কোডিং’ শেখাতে হবে, কৃত্রিম বুদ্ধিম

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Indian Toy Sector Sees 239% Rise In Exports In FY23 Over FY15: Study

Media Coverage

Indian Toy Sector Sees 239% Rise In Exports In FY23 Over FY15: Study
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi highlights extensive work done in boosting metro connectivity, strengthening urban transport
January 05, 2025

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has highlighted the remarkable progress in expanding Metro connectivity across India and its pivotal role in transforming urban transport and improving the ‘Ease of Living’ for millions of citizens.

MyGov posted on X threads about India’s Metro revolution on which PM Modi replied and said;

“Over the last decade, extensive work has been done in boosting metro connectivity, thus strengthening urban transport and enhancing ‘Ease of Living.’ #MetroRevolutionInIndia”