PM flags off seven initiatives of Brahma Kumaris
“We are witnessing the emergence of an India whose thinking and approach are innovative and whose decisions are progressive”
“Today we are creating a system in which there is no place for discrimination, we are building a society that stands firmly on the foundation of equality and social justice”
“When the world was in deep darkness and caught in the old thinking about women, India used to worship women as Maatru Shakti and Goddess.
“Amrit Kaal is not for dreaming while sleeping, but for deliberate fulfilling of our resolutions. The coming 25 years are the period of utmost hard work, sacrifice, and ‘tapasya’. This period of 25 years is for getting back what our society has lost in hundreds of years of slavery”
“All of us have to light a lamp in the heart of every citizen of the country - the lamp of duty. Together, we will take the country forward on the path of duty, then the evils prevailing in the society will be removed and the country will reach new heights”
“Today, when we are celebrating the Azadi ka Amrit Mahotsav, it is also our responsibility that the world should know India properly”

নমস্কার, ওম শান্তি!

অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে উপস্থিত লোকসভার অধ্যক্ষ  শ্রী ওম বিড়লাজি, রাজস্থানের রাজ্যপাল শ্রী কলরাজ মিশ্রাজি, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় শ্রী অশোক গেহলতজি, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেলজি, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য শ্রী কিষাণ রেড্ডিজি, শ্রী ভূপিন্দর যাদবজি, শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়ালজি, শ্রী পুরুষোত্তম রুপালাজি এবং শ্রী কৈলাশ চৌধুরিজি, রাজস্থান বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শ্রী গুলাব চন্দ্র কাটারিয়াজি, ব্রহ্মকুমারীজ-এর একজিকিউটিভ সেক্রেটারি রাজযোগী মৃত্যুঞ্জয়জি, রাজযোগিনী ভগিনী মোহিনীজি, ভগিনী চন্দ্রিকাজি, ব্রহ্মকুমারীদের অন্যান্য সকল ভগিনীরা, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ আর এখানে উপস্থিত সমস্ত সাধক-সাধিকাবৃন্দ,

কিছু জায়গা এমনও হয় যার একটি নিজস্ব ভিন্ন চেতনা থাকে, প্রাণশক্তির একটা স্বতন্ত্র প্রবাহ থাকে। এই প্রাণশক্তি সেই মহান ব্যক্তিত্বদের হয় যাঁদের তপস্যায় অরণ্য, পর্বত, পাহাড়ও জাগ্রত হয়ে ওঠে। অসংখ্য মানবিক প্রেরণার কেন্দ্র হয়ে ওঠে। দাদা লেখরাজ আর তাঁর মতো অনেক সিদ্ধ ব্যক্তিত্বের কারণে মাউন্ট আবু-র আভাও নিরন্তর ক্রমবর্ধমান।

আজ এই পবিত্র স্থান থেকে ব্রহ্মকুমারী সংস্থার উদ্যোগে ‘আজাদি কে অমৃত মহোৎসব সে স্বর্ণিম ভারত কি ওর’ নামক একটি অনেক বড় অভিযান শুরু হচ্ছে। এই কর্মসূচিতে সোনালী ভারতের ভাবনা রয়েছে, সাধনাও রয়েছে। এতে দেশের জন্য প্রেরণা  রয়েছে, ব্রহ্মকুমারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টাও রয়েছে।

আমি দেশের বিভিন্ন সঙ্কল্পের পাশাপাশি, দেশের স্বপ্নগুলির সঙ্গে ক্রমাগত যুক্ত থাকার জন্য ব্রহ্মকুমারী পরিবারকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আজ এই কর্মসূচিতে দাদি জানকি, রাজযোগিনী দাদি হৃদয়মোহিনীজি সশরীরে আমাদের মধ্যে উপস্থিত নেই। আমার ওপর তাঁর অনেক আশীর্বাদ বর্ষিত হয়েছিল। আজকের এই অনুষ্ঠানে আমি আবার তাঁর সেই আশীর্বাদও অনুভব করছি।

বন্ধুগণ,

যখন সঙ্কল্পের সঙ্গে সাধনা যুক্ত হয়, যখন সকল মানবের সঙ্গে আমাদের মমভাব যুক্ত হয়, নিজস্ব, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাগুলির জন্য ‘ইন্দ ন মম’ এই ভাব জেগে উঠতে শুরু করে, তখন বুঝতে পারবেন যে, আমাদের সঙ্কল্পগুলির মাধ্যমে একটি নতুন কালখণ্ড জন্ম নিতে চলেছে। একটি নতুন সকাল আসতে চলেছে। সেবা এবং ত্যাগের এই অমৃতভাব আজ অমৃত মহোৎসবে নতুন ভারতের জন্য উঠে আসছে।

এই ত্যাগ এবং কর্তব্যভাব দিয়ে কোটি কোটি দেশবাসী আজ সোনালী ভারতের ভিত্তি স্থাপন করছেন।

আমাদের এবং দেশের স্বপ্নগুলি ভিন্ন ভিন্ন নয়। আমাদের নিজস্ব আর রাষ্ট্রীয় সফলতাগুলি ভিন্ন ভিন্ন নয়। রাষ্ট্রের প্রগতির মধ্যেই নিহিত রয়েছে আমাদের প্রগতি। আমাদের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের অস্তিত্ব আর রাষ্ট্রের মাধ্যমেই আমাদের অস্তিত্ব - এই ভাব, এই বোধ নতুন ভারতের নির্মাণে আমাদের ভারতবাসীর সবচাইতে বড় শক্তি হয়ে উঠছে।

আজ দেশ যা কিছু করছে এতে সকলের প্রচেষ্টা একসঙ্গে সামিল রয়েছে। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ অউর সবকা প্রয়াস’ – এটা এখন গোটা দেশের মূলমন্ত্র হয়ে উঠছে, যা সাম্য এবং সামাজিক ন্যায়ের ভিত্তিতে মজবুতভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে। আমরা একটি ভারতকে জেগে উঠতে দেখছি, যার ভাবনা এবং দৃষ্টিভঙ্গি নতুন, যার সিদ্ধান্তগুলি অত্যন্ত প্রগতিশীল।

বন্ধুগণ,

ভারতের সবচাইতে বড় শক্তি হল, সময় যেমনই আসুক না কেন, যত অন্ধকারে তিমিরাচ্ছন্ন হয়ে পড়ুক না কেন, ভারত তার মূল স্বভাব বজায় রাখে। আমাদের অনেক যুগের ইতিহাস এর সাক্ষী। বিশ্ব যখন গভীর অন্ধকারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, মহিলাদের নিয়ে পুরনো ভাবনায় আকীর্ণ ছিল, তখন ভারত মাতৃশক্তির পুজো করত, নারীজাতিকে দেবী রূপে মান্য করত। আমাদের দেশে গার্গী, মৈত্রেয়ী, অনুসূয়া, অরুন্ধতী এবং মদালসা-র মতো বিদূষীরা সমাজকে জ্ঞানদান করতেন। অনেক সমস্যাকীর্ণ মধ্য যুগেও এই দেশে পন্নাধায় এবং মীরাবাঈ-এর মতো মহান নারীরা আবির্ভূত হয়েছিলেন আর অমৃত মহোৎসবে দেশ যে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে স্মরণ করছে, সেই স্বাধীনতা সংগ্রামেও অসংখ্য মহিলা আত্মবলিদান করেছেন। চিত্তুরের রানি চেনাম্মা, বাংলার মাতঙ্গিনী হাজরা, ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ, বীরাঙ্গণা ঝলকারিবাঈ থেকে শুরু করে সামাজিক ক্ষেত্রে অহল্যাবাঈ হোলকার এবং সাবিত্রীবাঈ ফুলে-র মতো এই মহিলারা ভারতের প্রকৃত পরিচয়কে তুলে ধরেছেন।

আজ দেশ লক্ষ লক্ষ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পাশাপাশি স্বাধীনতার লড়াইয়ে নারীশক্তির এই অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে, আর তাঁদের স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। সেজন্য আজ দেশের সৈনিক স্কুলগুলিতে মেয়েদের পড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে। এখন দেশের যে কোনও মেয়ে দেশ রক্ষার জন্য যোগ্যতার পরীক্ষা দিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগদান করে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারেন। মহিলাদের জীবন এবং কেরিয়ার উভয়ই যেন একসঙ্গে চলে, তা সুনিশ্চিত করতে মাতৃত্ব অবকাশ বৃদ্ধির মতো অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দেশের গণতন্ত্রেও মহিলাদের অংশীদারিত্ব ক্রমে বাড়ছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে আমরা দেখেছি, কিভাবে সারা দেশে পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি মহিলা ভোট দিয়েছেন। আজ দেশের সরকারের অনেক বড় বড় দায়িত্ব মহিলা মন্ত্রীরাই সামলাচ্ছেন। সবচাইতে গর্বের কথা যে এখন সমাজের এই পরিবর্তনের নেতৃত্ব মহিলারা নিজেরাই নিচ্ছেন। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় যে ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ অভিযানের সাফল্য থেকে শুরু করে অনেক বছর পর দেশে স্ত্রী-পুরুষের অনুপাতও উন্নত হয়েছে। এই পরিবর্তন স্পষ্ট সঙ্কেত দিচ্ছে যে নতুন ভারত কেমন হবে, নতুন ভারত কতটা সামর্থ্যশালী হবে।

বন্ধুগণ,

আপনারা সবাই জানেন যে আমাদের ঋষি-মুনিরা উপনিষদে ‘তমসো মা জ্যোতির্গময়, মৃত্যোর্মা অমৃতং গময়ঃ!’ –এর প্রার্থনা করেছেন। অর্থাৎ,তাঁরা প্রার্থনা করেছেন, ‘হে ঈশ্বর,  আমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখাও, মৃত্যু থেকে অমরতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখাও’। অমৃত এবং অমরত্বের পথ ছাড়া জ্ঞানের পথ প্রকাশিত হয় না। সেজন্য অমৃতকালের এই সময়ে আমাদের জ্ঞান, অনুসন্ধিৎসা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনের সময়। আমাদের এমন একটা ভারত তৈরি করতে হবে যার শেকড় প্রাচীন পরম্পরাগুলি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, আর যার বিস্তার আধুনিকতার আকাশে অনন্তগামী হবে। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, নিজস্ব সভ্যতা, নিজস্ব সংস্কারগুলিকে জীবন্ত রাখতে হবে। আমাদের আধ্যাত্মিকতাকে, আমাদের বিবিধতাকে সংরক্ষিত এবং সংবর্ধিত করতে হবে, আর পাশাপাশি প্রযুক্তি, পরিকাঠামো, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ব্যবস্থাপনাকে ক্রমাগত আধুনিক করে তুলতে হবে।

দেশের এই প্রচেষ্টায় আপনাদের সকলের, ব্রহ্মকুমারীজ-এর মতো আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠানগুলিরও বড় ভূমিকা রয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আপনারা আধ্যাত্মের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কৃষির মতো অনেক ক্ষেত্রে বেশ কিছু বড় বড় উদ্যোগ নিয়েছেন, সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে দেখাচ্ছেন। আজ আপনারা যে অভিযান শুরু করেছেন, সেই অভিযানকেই আপনারা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। অমৃত মহোৎসবের জন্য আপনারা বেশ কিছু লক্ষ্যমাত্রাও স্থির করেছেন। আপনাদের এই প্রচেষ্টা দেশকে অবশ্যই একটি নতুন প্রাণশক্তি দেবে, নতুন শক্তি জোগাবে।

আজ দেশ কৃষকদের সমৃদ্ধ এবং আত্মনির্ভর করে তুলতে জৈব চাষ এবং প্রাকৃতিক চাষকে সফল করে তোলার লক্ষ্যে অনেক চেষ্টা করছে। খাদ্য, পানীয়, আহারের শুদ্ধতা নিয়ে আমাদের ব্রহ্মকুমারী বোনেরাও ক্রমাগত সমাজকে সচেতন করে যাচ্ছেন। কিন্তু উৎকৃষ্ট আহারের জন্য উৎকৃষ্ট ফসল উৎপাদনও প্রয়োজনীয়। সেজন্য ব্রহ্মকুমারীজ ন্যাচারাল ফার্মিং-কে প্রোমোট করতে এবং প্রাকৃতিক কৃষিকে উৎসাহ যোগাতে একটি বড় প্রেরণাশক্তি হয়ে উঠতে পারে। কিছু গ্রামের মানুষকে প্রেরণা জুগিয়ে এমন সব মডেল তৈরি করা যেতে পারে, যা অন্যদেরকে প্রেরণা জোগাবে।

এভাবেই ক্লিন এনার্জি এবং পরিবেশ রক্ষায় ভারতের বিবিধ উদ্যোগের দিকে গোটা বিশ্ব তাকিয়ে আছে, গোটা বিশ্বের অনেক প্রত্যাশা। আজ দেশে ক্লিন এনার্জির অনেক বিকল্প বিকশিত হচ্ছে। এ বিষয়েও জন-জাগরণের জন্য অনেক বড় অভিযানের প্রয়োজন রয়েছে। ব্রহ্মকুমারীজ দেশে সৌরশক্তি উৎপাদন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সকলের সামনে একটি উজ্জ্বল উদাহরণ রেখেছে। দীর্ঘকাল ধরে তাঁরা নিজেদের আশ্রমের রান্নাঘরে সৌর জ্বালানি দিয়েই রান্না করে যাচ্ছেন। তাই, দেশের মানুষ যাতে বেশি করে সৌরশক্তি ব্যবহার করেন তা সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও আপনাদের সহযোগিতা খুব কাজে লাগবে। এভাবে আপনারা সবাই মিলে আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকেও আরও অনেক গতি প্রদান করতে পারেন। আমাদের ‘ভোকাল ফর লোকাল’ মন্ত্রকে গুরুত্ব দিয়ে, স্থানীয় পণ্যগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই অভিযানকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।

বন্ধুগণ,

অমৃতকালের এই সময় শুয়ে থেকে স্বপ্ন দেখার নয়, এই সময় জাগ্রত অবস্থায় নিজেদের সঙ্কল্প বাস্তবায়নের। আগামী ২৫ বছর আমাদের সকলের পরিশ্রমের পরাকাষ্ঠা, ত্যাগ, তপস্যার ২৫ বছর হতে চলেছে। কয়েক শত বছরের দাসত্বকালে আমাদের সমাজ যা হারিয়েছে, এই ২৫ বছরের কালখণ্ডে আমাদের সেই সবকিছুকে আবার ফিরে পেতে হবে। সেজন্য স্বাধীনতার এই অমৃত মহোৎসবে আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যতকে কেন্দ্র করেই স্থির করতে হবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের সমাজের একটা অদ্ভূত সামর্থ্য আছে। এটি এমন একটি সমাজ যেখানে চির পুরাতনের কদর আছে, আর নিত্যনতুনের আবাহনের  ব্যবস্থা আছে। যদিও কেউ একথা অস্বীকার করতে পারবেন না যে সময়ের সঙ্গে কিছু কুসংস্কার, কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ব্যক্তির মধ্যে যেমন, সমাজের মধ্যেও তেমনই এবং দেশের মধ্যেও তেমনই প্রভাব বিস্তার করে। কিন্তু যাঁরা সচেতন থাকেন, সেই মানুষেরা এই ত্রুটি-বিচ্যুতি, কুসংস্কারগুলিকে বুঝতে পারেন, চিহ্নিত করতে পারেন। তাঁরাই এই ‘কু’ থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে সফল হন। এমন মানুষেরাই নিজেদের জীবনে প্রতিটি লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন। আমাদের সমাজের বৈশিষ্ট্য হল যে এতে বিশালতাও রয়েছে, বিবিধতাও রয়েছে, আর হাজার হাজার বছরের যাত্রার অভিজ্ঞতাও রয়েছে। সেজন্য আমাদের সমাজের পরিবর্তিত প্রতিটি যুগের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার একটি স্বতন্ত্র শক্তি রয়েছে, একটি আভ্যন্তরীণ শক্তি রয়েছে।

আমাদের সমাজের সবচাইতে বড় শক্তি হল, সমাজের ভিতর থেকেই বিভিন্ন সময়ে সেই সমাজকে শুধরে দেওয়ার মতো সমাজ সংস্কারকরা উঠে দাঁড়িয়েছেন আর তাঁরাই সমাজে পরিব্যপ্ত কুসংস্কারের ওপর কুঠারাঘাত করেছেন। আমরা এটাও দেখেছি যে সমাজ সংস্কারের প্রারম্ভিক বছরগুলিতে প্রায়ই এরকম মহান ব্যক্তিদের অসংখ্য মানুষের বিরোধের সম্মুখীন হতে হয়। অনেক তিরস্কার সহ্য করতে হয়। কিন্তু এই সিদ্ধ মানুষেরা এই বিরোধিতা ও তিরস্কারে ঘাবড়ে গিয়ে সমাজ সংস্কারের কাজ থেকে নিজেদের নিবৃত করেন না। তাঁরা অটল থাকেন। সময়ের সঙ্গে সমাজও একসময় তাঁদেরকে চিনতে পারে, তাঁদেরকে মান-সম্মান দেয় এবং তাঁদের শিক্ষাকে গ্রহণ করে।

সেজন্য বন্ধুগণ,

প্রত্যেক যুগের কালখণ্ডের মূল্যবোধের ভিত্তিতে সমাজকে সচেতন রাখা, সমাজকে দোষমুক্ত রাখা, এটা অত্যন্ত অনিবার্য এবং ক্রমাগত করে যেতে থাকা একটি প্রক্রিয়া। সেই সময়ের যে প্রজন্ম, তাঁদেরকেও সমানভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। ব্যক্তিগতভাবে আমরা সবাই, সংগঠন হিসেবেও ব্রহ্মকুমারীজ-এর মতো লক্ষ লক্ষ সংগঠন সারা দেশে এই কাজ করছে। কিন্তু আমাদের এটাও মানতে হবে যে স্বাধীনতার পর ৭৫ বছরে আমাদের সমাজে, আমাদের রাষ্ট্রে একটি দোষ ক্রমে সকলের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করছে। এই দোষটি হল, নিজেদের কর্তব্যগুলি থেকে বিমুখ হওয়া, নিজেদের কর্তব্যগুলিকে সর্বোপরি না রাখা। বিগত ৭৫ বছরে আমরা শুধুই অধিকারগুলির কথা বলে আসছি, অধিকারগুলির জন্য লড়াই করেছি, অধিকারগুলির জন্য সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুঝেছি, অনেক সময় ব্যয় করেছি। এই অধিকার নিয়ে লড়াই অনেক ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয়। কিছুটা সময়ের জন্য, কোনও এক পরিস্থিতিতে এটা সঠিক হতে পারে, কিন্তু নিজেদের কর্তব্যগুলিকে সম্পূর্ণরূপে ভুলে যাওয়া – এই বিষয়টি ভারতকে দুর্বল করে তুলতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে।

কর্তব্যগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি বলেই স্বাধীন ভারত তার অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট করেছে। এই ৭৫ বছরে কর্তব্যগুলিকে দূরে রাখার ফলেই যে ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছে, শুধুই অধিকার নিয়ে কথা বলার ফলে সমাজে যে অসম্পূর্ণতা থেকে গেছে, তা সম্পূর্ণ করতে আমাদের সবাইকে মিলেমিশে আগামী ২৫ বছরে কর্তব্যের সাধনার মাধ্যমেই তা পূরণ করতে হবে।

ব্রহ্মকুমারীজদের মতো সংস্থাগুলি আগামী ২৫ বছরে একটি মন্ত্র রচনা করে ভারতের প্রত্যেক নাগরিককে কর্তব্যের জন্য সচেতন করে তুলে অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারে। ব্রহ্মকুমারীজ এবং আপনাদের মতো অন্য সমস্ত সামাজিক সংস্থাগুলির প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা এই একটি মন্ত্র রচনার কাজ অবশ্যই করবেন। সেই মন্ত্র হল, দেশের নাগরিকদের মনে কর্তব্য ভাবনার প্রসার। আপনারা সবাই নিজেদের শক্তি এবং সময় প্রত্যেক মানুষের মনে কর্তব্যবোধ জাগ্রত করার জন্য অবশ্যই নিয়োজিত করুন আর ব্রহ্মকুমারীজ-এর মতো সংস্থাগুলি যেভাবে দশকের পর দশক ধরে কর্তব্যের পথে এগিয়ে চলেছে, তারাই এই কাজ ভালোভাবে করতে পারে। আপনারাই সেই মানুষ যাঁরা কর্তব্যের খাতিরে নিজেদের গড়ে তুলেছেন, নিয়মিত কাজ করেন এবং নিয়মিত কর্তব্য পালন করছেন। সেজন্য যে ভাবনা নিয়ে আপনারা নিজেদের সংস্থায় কাজ করেন, সেই কর্তব্য ভাবনার প্রসার যেন সমাজের মধ্যে হয়, দেশের মধ্যে হয়, দেশের জনগণের মধ্যে হয় তা সুনিশ্চিত করুন এটাই স্বাধীনতার এই অমৃত মহোৎসবে আপনাদের পক্ষ থেকে দেশের জন্য সবচাইতে বড় উপহার হবে।

আপনারা সকলেই হয়তো একটি কাহিনী শুনেছেন। একটি কামরায় অন্ধকার ছিল। তখন সেই অন্ধকার দূর করার জন্য মানুষ নিজের মতো করে, নিজস্ব পদ্ধতিতে নানা রকম চেষ্টা করছিল। কেউ একরকম করছিলেন, তো কেউ অন্যরকম। কিন্তু যখন একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি একটি ছোট্ট প্রদীপ জ্বালিয়ে দিলেন, তখন অন্ধকার এক নিমেষে দূর হয়ে গেল। কর্তব্যের শক্তি এমনই। এমনই শক্তি ছোট ছোট প্রচেষ্টারও। আমাদের সবাইকে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের হৃদয়ে একটি প্রদীপ জ্বালাতে হবে - কর্তব্যের প্রদীপ জ্বালাতে হবে।

আমরা সবাইকে মিলেমিশে দেশকে কর্তব্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যাব। তাহলেই সমাজের পরিব্যপ্ত দোষগুলিও দূরীভূত হবে আর দেশও নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে। যাঁরা ভারতভূমিকে ভালোবাসেন, যাঁরা ভারতভূমিকে মা বলে মনে করেন, সেরকম প্রত্যেকেই দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাইবেন। কোটি কোটি জনগণের জীবনে আনন্দ আনতে চাইবেন। সেজন্য আমাদের প্রত্যেককেই কর্তব্য করার প্রবণতায় জোর দিতে হবে।

বন্ধুগণ,

আজকের এই কর্মসূচিতে আমি আরও একটি বিষয় আপনাদেরকে বলতে চাই। আপনাদের সবাই সাক্ষী যে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ছবিকে খারাপভাবে দেখানোর নানা রকম প্রচেষ্টা চলতে থাকে। আন্তর্জাতিক স্তরে এরকম অনেক চেষ্টাই চলে। আমরা শুধু একথা বলে এড়িয়ে যেতে পারি না যে এর পেছনে শুধুই রাজনীতি আছে। রাজনীতির নাম দিয়ে আমরা একে ছোট করে দেখতে পারি না কারণ এতে আমাদের দেশের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। যখন আমরা স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছি, তখন আমাদের ওপর এই দায়িত্বও বর্তায় যে বিশ্ব যাতে ভারতকে সঠিকভাবে জানে সেটা সুনিশ্চিত করা।

এ ধরনের সংস্থাগুলি, যাদের আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বিশ্বের বেশ কিছু দেশে উজ্জ্বল উপস্থিতি রয়েছে, তাঁদের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ, তাঁরা যেন অন্যান্য দেশের মানুষের কাছেও ভারতের সঠিক চিত্র তুলে ধরে। ভারত সম্পর্কে যেসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলির সত্যতা সম্পর্কে সেখানকার মানুষ যেন জানতে পারেন। তাঁদেরকে সঠিক তথ্য দিয়ে সচেতন করাও আমাদের সকলের দায়িত্ব। ব্রহ্মকুমারীজ-এর মতো সংস্থাগুলি এই কাজটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আরও একটি প্রচেষ্টা করতে পারে। যেখানে যেখানে, যে দেশগুলিতে আপনাদের শাখা রয়েছে, সেখানে আপনারা এই চেষ্টা করতে পারেন যে প্রত্যেক শাখা থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে ৫০০ জন ভারত দর্শনে আসবেন। ভারতকে জানার জন্য আসবেন আর এই ৫০০ জনের মধ্যেই প্রত্যেককেই যে প্রবাসী ভারতীয় হতে হবে এমন কোনও কথা নেই। এটা দেখবেন যে তাঁদের মধ্যে অনেকেই যেন সে দেশের নাগরিক হন। আমি ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের কথা বলছি না। আপনারা দেখবেন, যদি ভারতীয় বংশোদ্ভূত নয় এরকম বেশি বেশি মানুষকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভারতে আনতে পারেন, তাঁরা আমাদের দেশকে দেখেন, এখানকার প্রতিটি বিষয়কে বোঝেন, তাহলে তাঁরা অজান্তেই ভারতের যা কিছু ভালো, সেগুলিকে নিজেদের সঙ্গে করে তাঁদের দেশে নিয়ে যাবেন। আপনাদের এই ধরনের প্রচেষ্টায় অনেক পার্থক্য সৃষ্টি হতে পারে।

বন্ধুগণ,

পরমার্থ সঞ্চয় করার ইচ্ছা তো প্রত্যেকের মনেই থাকে। কিন্তু আমাদের একটা কথা ভুললে চলবে না যে পরমার্থ এবং অর্থ যখন একসঙ্গে মেশে, তখনই সফল জীবন, সফল সমাজ এবং সফল রাষ্ট্র নির্মাণ সহজ হয়ে ওঠে। অর্থ এবং পরমার্থের এই সামঞ্জস্যের দায়িত্ব সর্বদাই ভারতের আধ্যাত্মিক সত্ত্বার কাছে ছিল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সম্পূর্ণ ভরসা রয়েছে যে ভারতের আধ্যাত্মিক সত্ত্বা আপনাদের মতো সমস্ত ভগিনীরা এই দায়িত্ব ও সম্পূর্ণ পরিপক্কতা সহকারে পালন করবেন। আপনাদের এই প্রচেষ্টা দেশের অন্যান্য সংস্থা, অন্যান্য সংগঠনকেও স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য প্রেরণা যোগাবে। অমৃত মহোৎসবের আসল শক্তি হল দেশের প্রত্যেক মানুষের মন, দেশের মানুষের সমর্পণ। আপনাদের প্রচেষ্টায় ভারত আগামী দিনগুলিতে আরও দ্রুতগতিতে সোনার ভারত গড়ার দিকে এগিয়ে যাবে।

এই বিশ্বাস নিয়ে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ!

ওম শান্তি!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
India’s organic food products export reaches $448 Mn, set to surpass last year’s figures

Media Coverage

India’s organic food products export reaches $448 Mn, set to surpass last year’s figures
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister lauds the passing of amendments proposed to Oilfields (Regulation and Development) Act 1948
December 03, 2024

The Prime Minister Shri Narendra Modi lauded the passing of amendments proposed to Oilfields (Regulation and Development) Act 1948 in Rajya Sabha today. He remarked that it was an important legislation which will boost energy security and also contribute to a prosperous India.

Responding to a post on X by Union Minister Shri Hardeep Singh Puri, Shri Modi wrote:

“This is an important legislation which will boost energy security and also contribute to a prosperous India.”