Quoteপ্রধানমন্ত্রী ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ -এর ঐতিহ্যকে প্রসারিত করতে এবং আধ্যাত্মিক অঙ্গীকার হিসেবে ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ –এর মন্ত্রকে প্রচার করার জন্য আচার্যের প্রশংসা করেন
Quoteপ্রকৃত আত্ম-উপলব্ধি কোনো প্রকার আসক্তির অনুপস্থিতিতেই সম্ভব
Quoteভারত কখনই সরকারের মাধ্যমে সবকিছু করার প্রবণতা দেখায়নি, এখানে সরকার, সমাজ এবং আধ্যাত্মিক কর্তৃপক্ষ সর্বদা সমান ভূমিকা পালন করেছে

নমস্কার!

আজকের এই কর্মসূচি উপলক্ষে উপস্থিত আচার্য শ্রী মহাশ্রমণজি, অন্যান্য মুনিগণ, পূজনীয় সাধ্বী মহোদয়াগণ, এবং সকল শ্রদ্ধাবান ব্যক্তিবর্গ। আমাদের এই ভারত হাজার হাজার বছরের সন্ন্যাসীদের, ঋষিদের, মুনিদের, আচার্যদের এক মহান পরম্পরার ভূমি। সময়ের অভিঘাতে যত প্রকার সমস্যাই আসুক না কেন, এই পরম্পরা কিন্তু তেমনভাবেই অবিরাম অবিচল ভাবে এগিয়ে চলেছে। আমাদের দেশে এই পারম্পরিক যাত্রার ঐতিহ্যে ধনী হয়েই অনেকে আচার্য হয়ে উঠেছেন, যাঁরা আমাদের ‘চরৈবেতি চরৈবেতি’র বা এগিয়ে চলো, এগিয়ে চলোর মন্ত্র দিয়েছেন। আমাদের দেশে তাঁরাই আচার্য হয়েছেন যাঁরা এই ‘চরৈবেতি, চরৈবেতি’র মন্ত্রকে নিজেদের জীবনে যাপন করেছেন, উদযাপন করেছেন। মুণি ভিখাঁ বা আচার্য ভিক্ষু প্রতিষ্ঠিত শ্বেতাম্বর তেরাপন্থ তো এই ‘চরৈবেতি চরৈবেতি’র সততঃ গতিশীলতার, নিরন্তর প্রবাহমানতার এই মহান পরম্পরাকে বরাবরই নতুন উচ্চতা প্রদান করে এসেছে। আচার্য ভিক্ষু ও তাঁর অনুসরণকারীরা নিজেদের জীবনে শিথিলতা ত্যাগ করাকেই আধ্যাত্মিক সঙ্কল্পে পরিণত করেছিলেন, বাস্তবায়িত করেছিলেন।

আধুনিক সময়ে, শ্রদ্ধেয় আচার্য তুলসী এবং আচার্য মহাপ্রজ্ঞজির সময় থেকে যে সময় শুরু হয়েছে, সেই সময়ে, এই মহান পরম্পরা আজ আচার্য মহাশ্রমণজি রূপে আমাদের সকলের সামনে প্রকট হয়ে রয়েছে। আচার্য মহাশ্রমণজি গত সাত বছরে ১৮ হাজার কিলোমিটার পদযাত্রা সম্পূর্ণ করেছেন। এই পদযাত্রার মাধ্যমে তিনি বিশ্বের তিনটি দেশ সফর করেছেন। এই পদযাত্রার মাধ্যমে আচার্য শ্রী মহাশ্রমণজি আমাদের ভারতীয় দর্শনের ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ ভাবনাটিকে আরও সম্প্রসারিত করেছেন, অসংখ্য মানুষের মনে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এই পদযাত্রার মাধ্যমে একটি বিশেষ ভাবনা নিয়ে, অসাধারণ প্রেরণা সঞ্চারের মাধ্যমে তিনি আমাদের দেশের ২০টি রাজ্যকে যুক্ত করেছেন। তিনি সবাইকে বলেছেন, যেখানে অহিংসা, সেখানেই একতা। যেখানে একতা, সেখানেই অখণ্ডতা। যেখানে অখণ্ডতা, সেখানেই শ্রেষ্ঠত্ব। আমি মনে করি তিনি আমাদের ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এই মন্ত্রকে দেশের মানুষের মনে একটি আধ্যাত্মিক সঙ্কল্প রূপে সম্প্রসারিত করার মহান ব্রত পালন করেছেন। আমি এই মহাযাত্রা সম্পূর্ণ করার শুভলগ্নে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধেয় আচার্য মহাশ্রমণজিকে এবং তাঁর সমস্ত মাননীয় অনুসরণকারীদের অত্যন্ত শ্রদ্ধা সহকারে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

বন্ধুগণ,

আমাদের এই শ্বেতাম্বর জৈন ধর্মের তেরা পন্থের আচার্যদের কাছ থেকে আমি সর্বদাই একটি বিশেষ আনুকূল্য, বিশেষ ভালোবাসা পেয়ে এসেছি। শ্রদ্ধেয় আচার্য তুলসীজি, তাঁর পট্টধর শ্রদ্ধেয় আচার্য মহাপ্রজ্ঞজি আর এখন শ্রদ্ধেয় আচার্য মহাশ্রমণজি – এই সকলের কাছে আমি বিশেষ স্নেহের পাত্র হয়ে ওঠার সৌভাগ্য লাভ করেছি। এই আনুকূল্যের ফলে আমি দীর্ঘকাল ধরে তেরাপন্থের সমস্ত উৎসব ও অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে থাকার সৌভাগ্য পেয়ে এসেছি। তাঁদের এই অপার স্নেহের কারণেই আমি একদিন আপনাদের মতো মহান আচার্যদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে হৃদয় থেকে উচ্চারণ করেছিলাম যে “ইয়ে তেরা পন্থ হ্যায়, ইয়ে মেরা পন্থ হ্যায়”, অর্থাৎ এই তেরা ধর্মীয় সম্প্রদায়ই আমার সম্প্রদায়।

ভাই ও বোনেরা,

আমি যখন শ্রদ্ধেয় আচার্য মহাশ্রমণজির এই পদযাত্রার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিবেদন ও ফটো দেখতাম, ভিডিও দেখতাম, তখন আমার মনে সর্বদাই একটি সুখকর সংযোগ জেগে উঠতো। মনে পড়তো, আপনারা এই পদযাত্রা ২০১৪ সালে দিল্লির লালকেল্লা থেকে শুরু করেছিলেন। সেই বছর দেশও একটি নতুন যাত্রা শুরু করেছিল, আর আমি এই লালকেল্লার প্রাকার থেকে উচ্চারণ করেছিলাম যে, - এটি নতুন ভারতের নতুন যাত্রা! আমাদের এই যাত্রায় দেশকেও সেই সঙ্কল্পে আমরা বলীয়ান করে তুলতে চাইছি – সেটি হল, জনসেবা, জনকল্যাণ এর সংকল্প! আজ আপনারা দেশের ২০টি রাজ্যের কোটি কোটি দেশবাসীর সঙ্গে দেখা করে, পরিবর্তনের এই মহাযজ্ঞে তাঁদের অংশীদারিত্বের শপথবাক্য পাঠ করিয়ে, দিল্লিতে এসেছেন। তাঁদের মনে সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রাণশক্তি জাগিয়ে এসেছেন।  আমার দৃঢ় বিশ্বাস এবং সম্পূর্ণ ভরসা রয়েছে যে আপনারা দেশের কোণায় কোণায়, প্রত্যেক ব্যক্তির মনে জেগে ওঠা, নতুন ভারতের এই নতুন যাত্রার প্রাণশক্তিকে অনুভব করেছেন। হয়তো আপনারা সেই প্রাণশক্তিকে সাক্ষাৎ প্রত্যক্ষও করেছেন। আমার অনুরোধ যে পরিবর্তিত ভারতের এই অভিজ্ঞতা, এই অনুভবের কথা আপনারা বেশি করে দেশবাসীকে বলুন; তাহলে তাঁরা আরও বেশি করে এ থেকে প্রেরণা পাবেন।

বন্ধুগণ,

শ্রদ্ধেয় আচার্য শ্রী মহাশ্রমণজি তাঁর নেতৃত্বে আয়োজিত এই পদযাত্রায় ‘সদ্ভাবনা, নৈতিকতা এবং নেশামুক্তি’কে একটি সঙ্কল্প রূপে সমাজের সামনে পেশ করেছেন। আমাকে বলা হয়েছে যে এই অভিযানের সময় লক্ষ লক্ষ মানুষ নেশামুক্তির মতো সঙ্কল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এটা এই ধরনের একটি অনেক বড় অভিযান। আধ্যাত্মিক দৃষ্টি থেকে দেখলে তো আমাদের ‘স্ব’-এর সঙ্গে তখনই সাক্ষাৎকার সম্ভব হয়, যখন আমরা সকল বিলাস-ব্যসন থেকে মুক্ত হতে পারি। এই বিলাস-ব্যসন, এই নেশা তো লোভ, লালসা এবং স্বার্থেরও নেশা হতে পারে। যখন ‘স্ব’ বা নিজের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎকার হয়, তখনই ‘স্বয়ং’-এর মধ্যে আমরা ‘সর্বম’কে দেখতে পাই। ‘স্বয়ং’-এর সঙ্গে এই ‘সর্বম’-এর দর্শন হলে তবেই আমরা সকল জাগতিক স্বার্থের ওপরে উঠে পরমার্থের জন্য নিজেদের কর্তব্যের বোধকে অনুভব করি।

বন্ধুগণ,

আজ স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে দেশও ‘স্ব’ থেকে ওপরে উঠে সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য কর্তব্যের আবাহন করছে। আজ দেশ ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস অউর সবকা প্রয়াস’-এর সঙ্কল্প নিয়ে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছে। সরকারই সবার জন্য সবকিছু করবে, প্রশাসনই সবকিছু সামলাবে, সরকারই সবকিছু চালাবে – এই বিষয়টা কখনও ভারতীয় দর্শনে ছিল না। এটা ভারতীয় দর্শনের প্রকৃতিতেও ছিল না। আমাদের দেশে রাজসত্ত্বা, সমাজসত্ত্বা, আধ্যাত্মত্ত্বা – সকলের সমান ভূমিকা ছিল। আমাদের দেশেও ‘কর্তব্যই ধর্ম’ – এই দর্শনই সর্বোপরি ছিল। এই মুহূর্তে আমার আচার্য তুলসীজির একটি কথা মনে পড়ছে। তিনি প্রায়ই বলতেন – “আমি সবার আগে মানুষ, তারপর আমি একজন ধার্মিক ব্যক্তি, তারপর আমি একজন সাধনা করতে থাকা জৈন মুনি। তারপর আমি এই তেরা পন্থের একজন আচার্য।” কর্তব্যের পথে চলার সময় আজ দেশের সরকারও তার সঙ্কল্পগুলিতে এই ভাব, এই দর্শনের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে।

বন্ধুগণ,

আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ একটি নতুন ভারতের স্বপ্ন নিয়ে আমাদের ভারত অতুলনীয় সামগ্রিকতার শক্তি অর্জন করে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে। আজ আমাদের আধ্যাত্মিক শক্তিগুলি, আজ আমাদের দেশের সমস্ত আচার্য, মহন্ত, সাধু ও সন্ন্যাসীরা সবাই মিলে ভারতের ভবিষ্যতকে নতুন পথ দেখাচ্ছেন। আমার বিনম্র প্রার্থনা, আপনারা দেশের এই প্রত্যাশাগুলিকে, দেশের এই প্রচেষ্টাগুলিকে প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এক একজন সক্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠুন। স্বাধীনতার অমৃতকালে দেশ যে সঙ্কল্পগুলিকে সম্বল করে এগিয়ে চলেছে, তা সে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার বিষয় হোক, অপুষ্টি নিরসনের জন্য অভিযান হোক কিংবা গরীব মানুষের কল্যাণের জন্য নানা প্রচেষ্টাই হোক – এই সকল সঙ্কল্প সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে আপনাদের অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এবং সম্পূর্ণ ভরসা আছে যে আপনাদের, সাধু ও সন্ন্যাসীদের আশীর্বাদ দেশের এই প্রচেষ্টাগুলিকে আরও বেশি কার্যকর করে তুলবে, আরও বেশি সফল করে তুলবে। এই ভাবনা নিয়ে উপস্থিত সমস্ত সাধু ও সন্ন্যাসীদের চরণে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানিয়ে বন্দনা করে, আপনাদের সবাইকে আন্তরিকভাবে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

Explore More
প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী

জনপ্রিয় ভাষণ

প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
Operation Sindoor: A fitting blow to Pakistan, the global epicentre of terror

Media Coverage

Operation Sindoor: A fitting blow to Pakistan, the global epicentre of terror
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister hails the efforts of forces to eliminate the menace of Maoism
May 21, 2025

The Prime Minister Narendra Modi hailed the efforts of forces, reaffirming Government’s commitment to eliminate the menace of Maoism and ensuring a life of peace and progress for our people.

Responding to a post by Union Minister, Shri Amit Shah on X, Shri Modi said:

“Proud of our forces for this remarkable success. Our Government is committed to eliminating the menace of Maoism and ensuring a life of peace and progress for our people.”