অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সুভাষ চন্দ্র বোস আপদা প্রবন্ধন পুরস্কার জয়ীদের অভিনন্দন জানান
“তুরস্ক এবং সিরিয়ায় সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ভারতীয় উদ্ধারকারী দলের কাজের বিশ্বজুড়ে যে প্রশংসা হয়েছে তাতে প্রত্যেক ভারতীয় গর্বিত”
“বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি এবং মানবশক্তির যে প্রসার ভারত ঘটিয়েছে তাতে দেশ উপকৃত”
“আবাসন এবং শহর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি মাফিক স্থানীয় মডেল গড়ে তোলার প্রয়োজন। এখন সময়ের প্রয়োজন হল নতুন প্রযুক্তির নিরিখে স্থানীয় প্রযুক্তি এবং উপাদান সমূহকে সমৃদ্ধ করে তোলা”
“বিপর্যয় ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে নির্ণয় এবং সংস্কার সাধন দুটি মৌল উপাদান”
“স্থানীয় অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে স্থানীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলার মন্ত্রই সাফল্য এনে দিতে পারে”
“গৃহ, পয়ঃপ্রণালী, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনা কতখানি শক্তিশালী এবং জল ধরে রাখার পরিকাঠামো যথাযথ কী না তা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তা সহায়ক ভূমিকা নিতে পারে”
“ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের দিকে তাকিয়ে কৃত্রিম মেধা, ফাইভ জি এবং ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি)র ব্যবহারকেও কাজে লাগানো যেতে পারে”
“ঐতিহ্যগত ধারা ও প্রযুক্তি আমাদের শক্তি এবং এই শক্তি নিয়েই বিপর্যয় নিরোধক শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হব যা কেবলমাত্র ভারতের জন্যই নয়, সারা বিশ্বের উপকার সাধন করবে”

প্রথমেই আমি বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত সকলকে অভিনন্দন জানাই। নিজের জীবনকে বাজি রেখে যেভাবে আপনারা অন্যের জীবন বাঁচান এবং দুর্দান্ত সব কাজ করেন – তা প্রশংসার যোগ্য। সম্প্রতি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভারতীয় দলের উদ্ধার কাজ সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে, যা প্রতিটি ভারতবাসীর কাছে গর্বের বিষয়। যেভাবে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের জন্য ভারত তার মানবসম্পদ এবং কারিগরি দক্ষতাকে বৃদ্ধি করেছে, তার ফলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত উদ্যোগকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। দেশ জুড়ে একটি স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা গড়ে তুলতে হবে। আর তাই এই কাজের জন্য একটি বিশেষ পুরস্কার এবার ঘোষিত হয়েছে। আজ নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আপদা প্রবন্ধন পুরস্কার দুটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। ওডিশা রাজ্য বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড় ও সুনামির মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যে অসাধারণ কাজ করেছে তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা হ’ল। একইভাবে, দাবানল নিয়ন্ত্রণ করে সমগ্র এলাকা রক্ষা করার জন্য মিজোরামের লুঙ্গাই দমকল কেন্দ্রকেও পুরস্কৃত করা হ’ল। এই দুটি সংস্থার সকল বন্ধুকে অনেক অনেক অভিনন্দন।

এই অধিবেশনের মূল ভাবনা ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় পর্যায়ে বিপর্যয় মোকাবিলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা’। এই বিষয়টিতে ভারত বহু আগে থেকেই পরিচিত। প্রাচীন যুগে আমাদের দেশে এই বিষয় নিয়ে কাজ হয়েছে। আজও আমরা দেখতে পাই, প্রাচীন যুগে বিভিন্ন শহরে কুঁয়ো, জলাধার, স্থানীয় স্থাপত্যকলা বিপর্যয় মোকাবিলার সহায়ক। ভারতে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা সর্বদাই স্থানীয় চাহিদা অনুসারে গড়ে তোলা হয়। বিপর্যয় মোকাবিলায় যে কৌশল অবলম্বন করা হয়, তাও স্থানীয় পর্যায়ের চাহিদা বিবেচনা করেই প্রস্তুত করা হয়। এখন কচ্ছ অঞ্চলের বাসিন্দারা যে বাড়িতে থাকেন, তাকে ভুঙ্গা বলা হয়। মাটির তৈরির এই বাড়িগুলির উপর কচ্ছের ভূমিকম্পের কোনও প্রভাব পড়েনি। অথচ, বর্তমান শতাব্দীর শুরুতে হওয়া সেই ভয়াবহ ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলই ছিল কচ্ছ। সেই সময় খুব অল্প কিছু ক্ষতি হয়েছিল। সেই বাড়ি তৈরির প্রযুক্তিকে বর্তমান যুগে কাজে লাগানোর সময় এসেছে। যখন আমরা স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন নির্মাণের উপাদান বা প্রযুক্তিকে সফলভাবে কাজে লাগাতে পারবো, তখনই বিপর্যয় মোকাবিলা আরও সহজভাবে করা সম্ভব হবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের অতীতের জীবনশৈলী ছিল খুব সাধারণ। সেই সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা প্রবল বৃষ্টি, বন্যা ও খরার মতো বিপর্যয়গুলিকে মোকাবিলা করতে পারি। আর তাই, স্বাভাবিকভাবেই সরকার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য যে ত্রাণ কাজ চালানো হয়, তাকে কৃষি দপ্তরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। ভূমিকম্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রাপ্ত সম্পদের সাহায্যে করা হয়। এখন পৃথিবী ক্রমশ হাতের মুঠোয় চলে আসছে। নির্মাণ শিল্পে ব্যবহৃত বিভিন্ন কৌশল একে-অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছে। আবার, বিপর্যয়ের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতীতে একজন বৈদ্যরাজই গ্রামের সকলের চিকিৎসা করতেন এবং গ্রামের মানুষ সুস্থভাবেই জীবনযাপন করতেন। কিন্তু, বর্তমানে প্রতিটি অসুখের জন্য আলাদা-আলাদা চিকিৎসক রয়েছেন। তাই একইভাবে বিভিন্ন বিপর্যয় মোকাবিলা করতেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উদাহরণ-স্বরূপ বলা যেতে পারে, গত কয়েকশো বছর ধরে যে অঞ্চলগুলি বন্যার সমস্যায় জর্জরিত, সেখানে নির্মাণ কাজ বন্যার কথা ভেবেই করা প্রয়োজন। নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই প্রযুক্তিগুলি এবং ব্যবহৃত উপাদানের পর্যালোচনা প্রয়োজন।

বন্ধুগণ,

বিপর্যয় ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য শনাক্তকরণ ও সংস্কার আবশ্যক। কোনও বিপর্যয়ের সম্ভাবনা থাকলে সেই বিপর্যয়ের ধরণ সম্পর্কে আগে থেকেই শনাক্ত করতে হবে। আমাদের এমন একটি ব্যবস্থার সংস্কারের প্রয়োজন, যাতে বিপর্যয় হ্রাস করা যায়। এর জন্য দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। কোনও শর্টকাট ব্যবস্থা নিলে চলবে না। আমরা যদি ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়টি বিবেচনা করি, তা হলে দেখবো, হঠাৎ করে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের ফলে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাতেন। ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে বহুবার ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে। কিন্তু, এখন সময় বদলেছে তাই কৌশলও বদলেছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতির পরিবর্তন ঘটানোর ফলে আজ যখন কোনও ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে, তখন প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি যথেষ্ট কম হয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে আমরা প্রতিহত করতে পারবো না, কিন্তু এই বিপর্যয়ের ফলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়, তার পরিমাণ যাতে কম হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এই কারণে আমাদের আগে থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

বন্ধুগণ,

আমি এ প্রসঙ্গে আপনাদের বলতে চাই যে, আগে দেশের কী পরিস্থিতি ছিল আর আজ তা কতটা বদলেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশক পরও প্রাকৃতিক বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কোনও আইন ছিল না। ২০০১ সালে কচ্ছের ভূমিকম্পের পর দেশের মধ্যে গুজরাটই ছিল প্রথম রাজ্য, যেখানে গুজরাট রাজ্য বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। সেই আইনের উপর ভিত্তি করে ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আইন বলবৎ করে। এরপরই জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলা হয়।

বন্ধুগণ,

আমাদের স্থানীয় প্রশাসনেও বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা প্রশাসনকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় আঘাত হানলে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য শহরাঞ্চলের প্রশাসনের পক্ষে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থাপনা সম্ভব নয়। আমাদের স্থানীয় পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এমন কিছু পরিকল্পনা করতে হবে, যাতে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা যায়। নতুন নতুন পরিকাঠামো প্রকল্পগুলি এবং নির্মাণ কাজের সময় নতুন নিয়মাবলী গড়ে তুলতে হবে, যাতে বিপর্যয়কে সহজেই মোকাবিলা করা যায়। এর জন্য সম্পূর্ণ ব্যবস্থারই সংস্কারের প্রয়োজন। আর তাই, আমাদের দুটি স্তরে কাজ করতে হবে। প্রথম পর্যায়ে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা স্থানীয় মানুষেরা বিপর্যয় মোকাবিলায় যাতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন, তা নিশ্চিত করবেন। আমরা দেখেছি যে, কিভাবে স্থানীয় স্তরে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ভারত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছে। ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, আগুন সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে যে বিপদগুলি ঘটতে পারে, সে বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য নিরলস উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এই কাজে প্রয়োজনীয় নিয়মাবলী তৈরি করা এবং নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে জানাতে হবে। আমাদের যুব বন্ধু বা যুব মন্ডল, সখী মন্ডল এবং গ্রামের অন্যান্য গোষ্ঠীকে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আপদা মিত্র, জাতীয় সমর শিক্ষার্থী বাহিনী, এনএসএস, অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের দক্ষতাকে কাজে লাগানোর জন্য একটি তথ্য ভান্ডার গড়ে তুলতে হবে। কম্যুনিটি সেন্টারে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ব্যবস্থা থাকা দরকার। আমার অভিজ্ঞতা বলে, এই ধরনের তথ্য ভান্ডার খুবই ফলপ্রসূ হয়। গুজরাটের খেড়া জেলায় একটি নদীতে ৫-৭ বছর অন্তর বন্যা হয়। কোনও এক সময়ে সেখানে বছরে পাঁচবার বন্যা হ’ত। বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এই বিপর্যয়কে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি গ্রামের মানুষের কাছে মোবাইল ফোন রয়েছে। কিন্তু, সেই সময় স্থানীয় ভাষায় মেসেজ পাঠানোর ব্যবস্থা ছিল না। তাই আমরা রোমান হরফে গুজরাটি ভাষায় মানুষের কাছে বন্যার পূর্বাভাষ সংক্রান্ত বার্তা প্রেরণ করতাম। আমার আজও স্পষ্ট মনে আছে, পাঁচবার বন্যার পর একটি প্রাণীও মারা যায়নি, মানুষ তো দূরের কথা। আসলে যথাযথ সময়ে বার্তা পাঠানোর ফলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। আমরা যদি সঠিক সময়ে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারি, তা হলে প্রাণহানির সম্ভাবনা থেকে রেহাই পাব। দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা এমন এক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি, যেখানে প্রত্যেক বাড়ি ও প্রতিটি রাস্তার উপর নজরদারি চালানো সম্ভব। কোন বাড়িটি? সেই বাড়ি কতটা পুরনো? কোন রাস্তার ধারে বাড়িটি? সেখানে নিকাশি ব্যবস্থা কি রকম? বিদ্যুৎ এবং জল সংক্রান্ত পরিকাঠামো কি রকম? দিন কয়েক আগেই আমি দাবদাহ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটি বৈঠক করেছিলাম। সম্প্রতি দুটি হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা অত্যন্ত মর্মান্তিক। রোগীরা অসহায় হয়ে পড়েছিলেন, এখন হাসপাতালগুলির পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা বড়সড় দুর্ঘটনা এড়াতে পারি। আমি মনে করি, যথাযথ তথ্য পেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবো। ফলস্বরূপ, প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়াও যাবে।

বন্ধুগণ,

ইদানিংকালে আমরা দেখতে পাচ্ছি, শহরাঞ্চলে ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় অগ্নিকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। গরম বাড়লেই হাসপাতাল, কারখানা, হোটেল বা বহুতল ভবনগুলিতে অগ্নিকান্ডের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি সহ অন্যান্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। আমাদের সার্বিকভাবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কাজ করতে হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গাড়ি নিয়ে পৌঁছনো বেশ সমস্যার বিষয়। তাই সেখানে আগুন নেভানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমাদের দমকল কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। বিভিন্ন শিল্প সংস্থায় আগুন নেভানোর জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের ব্যবস্থাও করতে হবে।

বন্ধুগণ,

বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার এইসব উদ্যোগের মাঝে দক্ষতার আধুনিকীকরণের প্রয়োজন। স্থানীয় পর্যায়ে অত্যাধুনিক সরঞ্জামেরও ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন – বনাঞ্চলে প্রাপ্ত বর্জ্য পদার্থকে জৈব জ্বালানীতে পরিণত করা সম্ভব। আমরা কি আমাদের মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে এ ধরনের সরঞ্জাম দিতে পারি? তাঁরা বন থেকে এই বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ করলে দাবানলের সম্ভাবনা হ্রাস পাবে। পাশাপাশি, তাঁদের আয়ও বৃদ্ধি পাবে। অগ্নিকান্ড ও গ্যাস লিকের মতো সমস্যা কারখানা ও হাসপাতালে দেখা যায়। সংশ্লিষ্ট সংস্থায় সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে বিশেষ বাহিনী গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমাদের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা বৃদ্ধি করতে হবে। ৫-জি, কৃত্রিম মেধা এবং আইওটি-র মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কিভাবে ব্যবহার করা যায়, সর্বাঙ্গীন আলোচনার মধ্য দিয়ে এ বিষয়ে একটি রূপরেখা চূড়ান্ত করা প্রয়োজন। ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে ড্রোন প্রযুক্তিকে কিভাবে কাজে লাগানো যাবে? বিপর্যয়ের সময় আমরা কী সেই ধরনের যন্ত্রপাতিগুলির কথা ভাবতে পারি, যেগুলি ধ্বংস স্তুপের নীচে আটকে থাকা মানুষের সম্পর্কে যথাযথ তথ্য দিতে পারে? আমাদের এ বিষয়ে উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করা উচিৎ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন প্রযুক্তির সাহায্যে নতুন নতুন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলছে। আমাদেরও ভালো উদ্যোগগুলিকে গ্রহণ করে কাজে লাগাতে হবে।

বন্ধুগণ,

ইদানিংকালে আমরা দেখতে পাচ্ছি, শহরাঞ্চলে ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় অগ্নিকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। গরম বাড়লেই হাসপাতাল, কারখানা, হোটেল বা বহুতল ভবনগুলিতে অগ্নিকান্ডের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি সহ অন্যান্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। আমাদের সার্বিকভাবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কাজ করতে হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গাড়ি নিয়ে পৌঁছনো বেশ সমস্যার বিষয়। তাই সেখানে আগুন নেভানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমাদের দমকল কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। বিভিন্ন শিল্প সংস্থায় আগুন নেভানোর জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের ব্যবস্থাও করতে হবে।

বন্ধুগণ,

বিশ্ব জুড়ে যে কোনও বিপর্যয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ভারত সক্রিয় হয়েছে। আজ ১০০টিরও বেশি দেশ ভারতের নেতৃত্বে কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়ে তুলেছে। প্রাচীন রীতি-নীতি ও প্রযুক্তি হ’ল আমাদের শক্তি। এর সাহায্যে আমরা শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বের জন্য একটি আদর্শ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারি। আমি নিশ্চিত যে, দু’দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনে বিভিন্ন পরামর্শ ও সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে, যা আমাদের আগামী দিনে সাহায্য করবে। আমি মনে করি, বর্ষার আগে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার এটি উপযুক্ত সময়। যে ব্যবস্থাপনাকে আমরা প্রথমে রাজ্যগুলির কাছে পাঠানো। তারপর সেখান থেকে মহানগর ও ছোট ছোট শহরে। এগুলি আমরা যদি এখনই শুরু করতে পারি, তা হলে সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানো যাবে। যখনই কোনও কিছুর প্রয়োজন হবে, তখন সেইমতো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে এবং যে কোনও ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা যাবে। এই সম্মেলনের সাফল্য কামনা করি।

ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
India’s organic food products export reaches $448 Mn, set to surpass last year’s figures

Media Coverage

India’s organic food products export reaches $448 Mn, set to surpass last year’s figures
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister lauds the passing of amendments proposed to Oilfields (Regulation and Development) Act 1948
December 03, 2024

The Prime Minister Shri Narendra Modi lauded the passing of amendments proposed to Oilfields (Regulation and Development) Act 1948 in Rajya Sabha today. He remarked that it was an important legislation which will boost energy security and also contribute to a prosperous India.

Responding to a post on X by Union Minister Shri Hardeep Singh Puri, Shri Modi wrote:

“This is an important legislation which will boost energy security and also contribute to a prosperous India.”