ভারতমাতার জয়,
ভারতমাতার জয়,
‘ধরতী আবা ভগবান’ বীরসা মুণ্ডার জয়,
‘ধরতী আবা ভগবান’ বীরসা মুণ্ডার জয়,
ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণন জি, মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন জি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় আমার সহকর্মী অর্জুন মুন্ডা জি, অন্নপূর্ণা দেবী জি, আমাদের সকলের অগ্রজ পথপ্রদর্শক শ্রী কারিয়া মুন্ডা জি, আমার পরম বন্ধু বাবু লাল মারান্ডি জি, অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং ঝাড়খণ্ডের মানুষ, আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যরা।
আপনাদের সবাইকে জোহার! আজকের দিনটি অত্যন্ত সৌভাগ্যের দিন। আমি কিছুক্ষণ আগেই প্রভু বিরসা মুণ্ডার জন্মস্থান উলিহাতু থেকে ফিরে এসেছি। তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথেও আমার অত্যন্ত আনন্দঘন দেখাসাক্ষাৎ হয়েছে আর সেই পবিত্র মাটি আমার কপালে মাখানোর পরম সৌভাগ্য হয়েছে। আমি ভগবান বিরসা মুন্ডা মেমোরিয়াল পার্ক এবং ফ্রিডম ফাইটার মিউজিয়াম দেখার সুযোগও পেয়েছি। দু’বছর আগে, আজকের দিনে, এই জাদুঘরটি দেশকে উৎসর্গ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আজ আদিবাসী গর্ব দিবস উপলক্ষ্যে সমস্ত দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই, আমার শুভেচ্ছা জানাই, আর একথাও জানি যে, দেশের কয়েকশো স্থানে সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিরাও আজ ঝাড়খণ্ডের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করছেন। অটলজীর প্রচেষ্টায় এই রাজ্যটি গঠিত হয়েছিল। দেশবাসী, বিশেষ করে ঝাড়খণ্ডবাসী সম্প্রতি ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে নির্মীয়মান বিভিন্ন প্রকল্প উপহার পেয়েছে। আজ ঝাড়খণ্ডে রেলের পরিকাঠামো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের অংশ হিসাবে অনেক রেল প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে ঝাড়খণ্ড ইতিমধ্যেই দেশের ১০০% বিদ্যুতায়িত রেলপথ সম্পন্ন রাজ্যে পরিণত হয়েছে। আমি আপনাদের সকলকে, আমার পরিবারের সদস্য সমস্ত ঝাড়খণ্ডবাসীকে, এই প্রকল্পগুলির জন্য অভিনন্দন জানাই।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যগণ,
জনজাতীয় গর্ব ও সংগ্রামের প্রতীক ভগবান বিরসা মুণ্ডার গাথা প্রত্যেক দেশবাসীকে অনুপ্রেরণা জোগায়, ঋদ্ধ করে। ঝাড়খণ্ডের কোণায় কোণায় এমন সব মহান ব্যক্তিত্ব, তাঁদের অদম্য সাহস এবং অক্লান্ত প্রচেষ্টার জন্য মানুষের মনে অমর হয়ে আছেন। তিলকা মাঁঝি, সিধু কানহু, চাঁদ ভৈরব, ফুলো ঝাঁও, নীলাম্বর, পীতাম্বর, জতরা তানা ভগত এবং অ্যালবার্ট এক্কার মতো অনেক নায়ক এই ভূমির গর্ব বাড়িয়েছেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসের দিকে তাকালে বোঝা যায়, দেশের এমন কোনো প্রান্ত ছিল না যেখানে আমাদের জনজাতীয় যোদ্ধারা ব্রিটিশের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াননি। মনগড় ধামে গোবিন্দ গুরুর অবদানকে কে ভুলতে পারে? মধ্যপ্রদেশের তাঁতিয়া ভীল, ভীম নায়ক, ছত্তিশগড়ের শহীদ বীর নারায়ণ সিং, বীর গুন্ডাধুর, মণিপুরের রানি গাইদিংলিউ... তেলেঙ্গানার বীর রামজি গোন্ড, অন্ধ্রপ্রদেশের আলুরি সীতারাম রাজু; এই আদিবাসী নেতা-নেতৃরা দেশের আদিবাসীদের স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। গোন্ড প্রদেশের রানি দুর্গাবতী একজন এমন ব্যক্তিত্ব যাঁর কাছে দেশ এখনও ঋণী। এটা দেশের দুর্ভাগ্য যে স্বাধীনতার পরও এমন বীর - বীরাঙ্গনাদের যথাযোগ্য মর্যাদা জ্ঞাপন করা হয়নি। আমি সন্তুষ্ট যে অমৃত মহোৎসবের সময়, স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষ্যে, আমরা এমন বীর – বীরাঙ্গনাদের, এমন সাহসী মহিলাদের স্মরণ করেছি এবং তাঁদের স্মৃতিচিহ্নগুলি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।
বন্ধুগণ,
ঝাড়খণ্ডে এলে আমি বারবার পুরনো স্মৃতি তাজা করার সুযোগ পাই। দরিদ্রদের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারের সবচাইতে বড় প্রকল্প আয়ুষ্মান যোজনা ঝাড়খণ্ড থেকেই শুরু হয়েছিল। মাত্র কয়েক বছর আগে আমি খুঁটিতে জেলা আদালতের উদ্বোধন করেছিলাম যা সৌরবিদ্যুতে চলে। আজ এখান থেকে, ঝাড়খণ্ডের এই পুণ্যভূমি থেকে একটি নয়, দুটি ঐতিহাসিক অভিযান শুরু হতে চলেছে।আমি নিশ্চিত যে, এই বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা সরকারের লক্ষ্য পূরণের জন্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠবে। পিএম জনজাতি আদিবাসী ন্যায় মহা অভিযান, বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা জনজাতিগুলিকে, যাঁদেরকে আমরা এখন পর্যন্ত আদিমতম জনজাতি হিসেবে জানি; তাঁদেরকে রক্ষা করবে, তাঁদের ক্ষমতায়ন করবে। এই দুটি আভিযানই অমৃতকালে ভারতের উন্নয়ন যাত্রায় নতুন শক্তি যোগাবে।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যগণ,
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আমি গুজরাট রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। খুব কাছে থেকে দেশবাসীর আশা-আকাঙ্খা জানার ও বোঝার সুযোগ পেয়েছি। আমার সেসব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে আমি আজ আপনাদের সামনে একটি অমৃত মন্ত্র পেশ করছি। আর এই অমৃত মন্ত্র আমি ভগবান বিরসা মুণ্ডার পবিত্র ভূমি থেকে পেশ করছি। আগামী ২৫ বছরে যদি আমরা একটি উন্নত ভারতের একটি মহান ও অনিন্দ্যসুন্দর ইমারত গড়ে তুলতে চাই, তাহলে আমাদের চারটি অমৃত স্তম্ভকে আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং ক্রমাগত শক্তিশালী করে যেতে হবে। এখন, আমাদের সরকার গত ১০ বছরে যা করেছে তার থেকেও বেশি শক্তি নিয়ে, আমাদের এই চারটি অমৃত স্তম্ভ গড়ার কাজে আমাদের সমস্ত শক্তি লাগাতে হবে। আজ আমি আপনাদের উন্নত ভারতের এই চারটি অমৃত স্তম্ভ সম্পর্কে বলতে চাই। এই চারটি অমৃত স্তম্ভ কী কী? প্রথম অমৃত স্তম্ভ – আমাদের ভারতের নারী, আমাদের মা ও বোন, আমাদের নারী শক্তি। অমৃতের দ্বিতীয় স্তম্ভ হল - আমাদের ভারতীয় কৃষক ভাই ও বোনেরা এবং কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত ব্যবসাগুলি, তা পশুপালন হোক কিংবা মাছের চাষ, এগুলিই আমাদের খাদ্য সরবরাহের উৎস। তৃতীয় অমৃত স্তম্ভ – ভারতের যুবসমাজ, আমাদের দেশের যুবশক্তি, যাঁরা আসলে দেশের সবচাইতে বড় শক্তি যা আগামী ২৫ বছরে দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। এবং চতুর্থ অমৃত স্তম্ভ – ভারতের মধ্যবিত্ত, নব্য মধ্যবিত্ত এবং ভারতের আমার দরিদ্র ভাই ও বোনেরা। এই চারটি স্তম্ভকে আমরা যত শক্তিশালী করব, উন্নত ভারতের ইমারত তত দৃঢ় হবে, তত দ্রুত উচ্চতায় বাড়বে। আমি সন্তুষ্ট যে গত ১০ বছরে এই চারটি অমৃত স্তম্ভকে শক্তিশালী করার জন্য যে পরিমাণ কাজ করা হয়েছে তা আগে কখনও হয়নি।
বন্ধুগণ,
আজকাল সব জায়গায়, ভারতের সাম্প্রতিক সাফল্যগুলি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমাদের সরকারের ৫ বছরে ১৩ কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমা থেকে বেরিয়ে এসেছে।তাহলে গত কয়েক বছরে এমন কী ঘটেছে যে তৃণমূল স্তরে এত বড় পরিবর্তন দেখা গেছে? ২০১৪ সালে, যেদিন আপনারা সবাই আমাদের দিল্লির সিংহাসনে বসিয়েছিলেন এবং সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেদিন থেকে আমাদের সেবার মেয়াদ শুরু হয়েছিল। আমরা সেবা করতে এসেছি। আর আমি যদি সেই সেবাকালের কথা বলি, সেই সময়ে আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের আগে ভারতের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী মৌলিক পরিষেবাগুলি থেকে বঞ্চিত ছিল। দেশের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষ তাঁদের জীবনে কখনও কোনও আশাব্যঞ্জক পরিবর্তনের আশাটাই ছেড়ে দিয়েছিল। আর সরকারগুলোর মনোভাবও এমন ছিল যে, তাঁরা নিজেদেরকে জনগণের পিতা-মাতা মনে করতেন। আমরা কিন্তু আপনাদের সেবক হিসেবে কাজ শুরু করেছি, পিতা-মাতা হওয়ার মনোভাব নিয়ে নয়, আপনাদের সেবকের মনোভাব নিয়ে। আমরা বঞ্চিতদের অগ্রাধিকার দিতে শুরু করেছি। যাদেরকে সবচাইতে দূরের বলে বলে মনে করা হতো, সরকার খোদ তাঁদের কাছে গেছে। যাঁরা যুগ যুগ ধরে অবহেলিত, আমাদের সরকার তাঁদের জন্য সম্বল ও সঙ্গী হয়ে উঠেছে। আমলাতন্ত্র একই রয়েছে, মানুষ একই আছে, ফাইল একই আছে, নিয়ম-কানুন একই আছে, কিন্তু চিন্তা বদলেছে। আর যখন চিন্তা বদলায়, ফলাফলও পাল্টে যায়। ২০১৪ সালের আগে, দেশের গ্রামগুলিতে স্যানিটেশনের কভারেজ ৪০ শতাংশের কম ছিল। আজ আমরা শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করছি। আমাদের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে মাত্র ৫০-৫৫ শতাংশ বাড়িতে এলপিজি রান্নার গ্যাস সংযোগ ছিল। আজ প্রায় শতভাগ বাড়ির মহিলারা রান্নার ধোঁয়ামুক্ত হয়েছেন। এর আগে দেশের মাত্র ৫৫ শতাংশ শিশু জীবন রক্ষাকারী টিকা নিতে পেরেছিল, অর্ধেক শিশুই বাদ পড়েছিল। আজ প্রায় ১০০ শতাংশ শিশুকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। স্বাধীনতার পর সাত দশকে দেশের গ্রামীণ পরিবারের মাত্র ১৭ শতাংশ নলের মাধ্যমে পানীয় জলের পরিষেবা পেতেন, এমনকি ২০ শতাংশও নয়। জলজীবন মিশন চালু হওয়ার ফলে আজ সেই পরিষেবাও ৭০ শতাংশে পৌঁছেছে।
আর বন্ধুগণ,
সে সময় সমাজে কারা এই পরিষেবাগুলি পেতেন, জানেন কি? যারা এই প্রাথমিক দুধের সর পেতেন, তাঁরা কারা ছিলেন? তাঁরা সবাই প্রভাবশালী পরিবারের মানুষ ছিলেন। স্বচ্ছল মানুষ, যাদের সরকারে প্রবেশাধিকার ও স্বীকৃতি ছিল, তাঁরা সহজেই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতেন আর সরকারেরও এমনই মনোভাব ছিল, তাঁদেরকেই বেশি দিতেন। কিন্তু সমাজে যারা পিছিয়ে ছিল, যারা মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত; তাঁদের দিকে নজর দেওয়ার কেউ ছিল না। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই তাঁদের জীবন কাটছিল। মোদি সমাজের বঞ্চিতদের পরিষেবা প্রদানকে নিজের অগ্রাধিকারে পরিণত করেছে। কারণ তাঁরাই সেই মানুষ, যাঁদের মাঝে আমি বেঁচে আছি, আমি কখনও এমন সব পরিবারের রুটি খেয়েছি, কখনও সমাজের প্রান্তিকতম ব্যক্তির নুন খেয়েছি, সেই ঋণ পরিশোধ করতে আজ আমি প্রভু বিরসা মুণ্ডার এই মাটিতে এসেছি। .
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যরা,
সাধারণতঃ সরকারগুলোর মনোভাব এমনই থাকে; যে লক্ষ্যগুলি সহজে অর্জন করা যায়, সেই লক্ষ্যগুলিই আগে অর্জন করতে হবে। কিন্তু আমরা অন্য কৌশল নিয়ে কাজ করেছি। আমি জ্ঞানী-গুণীদের বলব এই বিষয়ে পড়াশোনা করুন, আপনাদের মনে থাকবে স্বাধীনতার এত দশক পরেও ১৮ হাজার গ্রাম বাকি ছিল যেগুলিতে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। সেসব গ্রামের মানুষ অষ্টাদশ শতাব্দীর মতো বেঁচে থাকতে, অন্ধকারে রাতের পর রাত কাটাতে বাধ্য ছিলেন। আমি বিশ্বাস করি, তাঁদেরকে অন্ধকারে দিনাতিপাত করার জন্য ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, কারণ সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার অনেক অসুবিধা ছিল।কিন্তু যা কঠিন, তাকেই তো অগ্রাধিকার দিয়ে করা উচিত। প্রত্যেকেই মাখনের উপর একটি রেখা আঁকেন, কিন্তু পাথরের উপরও তো রেখা আঁকতে হবে। আর আমি লালকেল্লার প্রাকার থেকে দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, এক হাজার দিনের মধ্যে এই ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেবো। এই কঠিন সংকল্প আমি প্রকাশ্যে নিয়েছিলাম এবং আজ মাথা নত করে বলতে চাইছি যে আপনাদের এই প্রধান সেবক সেই কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করেছে।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশে ১১০টিরও বেশি জেলা ছিল যেগুলি উন্নয়নের প্রতিটি মাপকাঠিতে অনেক পিছিয়ে ছিল। পুরনো সরকারগুলো এই জেলাগুলোকে পশ্চাৎপদ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আর আগের সরকারগুলো এগুলিকে সহজভাবেই চিহ্নিত করেছে, এগুলি এমনই পিছিয়ে থাকা, পশ্চাৎপদ, এগুলির আর কিছু হতে পারে না এবং এমনভাবে চিহ্নিত করে দিয়ে সরকার ঘুমিয়ে থেকেছে। কয়েক দশক ধরে এসব জেলায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সুযোগ-সুবিধার করুণ অবস্থা ছিল।আর কাকতালীয়ভাবে, এই পিছিয়ে পড়া জেলাগুলিতেই আমার দেশের আদিবাসী পরিবারের সবচাইতে বেশি সংখ্যক মানুষের বসবাস। যখন অফিসারদের শাস্তিমূলক পোস্টিং পাঠাতে হতো, তখন তাঁদেরকে এসব জেলাতেই পাঠানো হতো। এ যেন ক্লান্ত, পরাজিত ও ব্যর্থ ব্যক্তিকে বলতে থাকা যে, বন্ধু তুমি সেখানে যাও, এখানে তোমার কোনও কাজ নেই।এখন সেই হতাশ ব্যক্তি গিয়েই বা সেই জেলার জন্য কী করবেন? এই ১১০ টিরও বেশি জেলাকে তাদের ভাগ্যের উপর ছেড়ে রেখে, ভারত কখনই উন্নতি করতে পারত না। তাই এই সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিতদের অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি অনুসরণ করে আমাদের সরকার এই জেলাগুলোকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা হিসেবে ঘোষণা করেছে। আমরা রাজ্য সরকারকে আস্থায় নিয়ে এসব জেলায় সবচাইতে সক্ষম ও প্রতিশ্রুতিবান কর্মকর্তা নিয়োগের ওপর জোর দিয়েছি। গোড়া থেকেই এসব জেলায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তাঘাট ইত্যাদি উন্নয়নের কাজ শুরু করে আমরা ক্রমে সাফল্যের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছি। এখানে ঝাড়খণ্ডেও, আমাদের খুঁটিসহ এরকম অনেক জেলা সেই তালিকায় রয়েছে। এখন উচ্চাকাঙ্খী জেলা অভিযানের এই সাফল্য থেকে শিক্ষা নিয়ে এই উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ আজ উচ্চাকাঙ্ক্ষী ব্লক কর্মসূচির মাধ্যমে প্রসারিত হচ্ছে।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যরা,
আমাদের দেশে কয়েক দশক ধরে সামাজিক ন্যায়বিচার ও ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা প্রচুর গান গাওয়া হয় এবং প্রচুর ভাষণ দেওয়া হয়। প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষতা তখনই আসে যখন দেশের যে কোনও নাগরিকের প্রতি বৈষম্যের সমস্ত সম্ভাবনা দূর হয়। সামাজিক ন্যায়বিচার তখনই সুনিশ্চিত হয় যখন সবাই সমানভাবে এবং একই চেতনায় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পায়। দুর্ভাগ্যবশত, আজও অনেক রাজ্যে অনেক দরিদ্র মানুষ আছেন যাঁদের কাছে এই প্রকল্পগুলি সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। অনেক দরিদ্র মানুষ আছেন যারা প্রকল্পগুলির সুবিধা পেতে দৌড়ঝাপ করতে পারছেন না। আর কতদিন আমরা তাদের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেব? এই যন্ত্রণা থেকে, এই পীড়া থেকে, এই অনুভূতি থেকেই এই প্রকল্পের ভাবনা গড়ে উঠেছে। আর এই চিন্তা নিয়েই আজ থেকে শুরু হচ্ছে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা। এই অভিযান আজ, ১৫ নভেম্বর, ভগবান বিরসা মুণ্ডার জন্মবার্ষিকী থেকে শুরু হবে এবং আগামী বছরের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এই অভিযানে, সরকার মিশন মোডে দেশের প্রতিটি গ্রামে যাবে, প্রত্যেক দরিদ্র, প্রত্যেক বঞ্চিত ব্যক্তিকে সরকারি প্রকল্পের সুবিধাভোগী করা হবে, যতটা তাঁর প্রাপ্য। এই পরিকল্পনা যাতে তাঁদের কাছে পৌঁছায় তার ব্যবস্থা করা হবে। আর আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, আমার কিছু সংবাদ মাধ্যমের বন্ধু হয়তো জানেন না।২০১৮ সালেও আমি একটি নতুন ধরনের পরীক্ষা করেছিলাম। তখন কেন্দ্রীয় সরকার এমনই একটি গ্রাম স্বরাজ অভিযান শুরু করেছিল। আর কেন্দ্রীয় সরকারের এক হাজার অফিসারকে গ্রামে পাঠানো হয়েছিল। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে এক হাজার কর্মকর্তাকে সরিয়ে গ্রামে বসানো হয়েছিল। এই অভিযানেও আমরা সাতটি বড় প্রকল্প নিয়ে প্রতিটি গ্রামে গিয়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করি যে সেই গ্রাম স্বরাজ অভিযানের মতো, আমাদের বিকাশ ভারত সংকল্প যাত্রায়ও প্রতিটি গ্রামে গিয়ে, এমন প্রতিটি যোগ্য ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করে এই পরিকল্পনাকে সফল করার শপথ গ্রহণ করাতে হবে। আর ভগবান বিরসার ভূমি থেকে যখন শুরু হয়েছে, তখন সাফল্য নিশ্চিতভাবেই আসবে। আমি সেই দিনের দিকে তাকিয়ে আছি, যেদিন প্রত্যেক গরিব মানুষের কাছে বিনামূল্যে রেশন নেওয়ার জন্য একটি রেশন কার্ড থাকবে। যখন প্রত্যেক গরিব মানুষের কাছে উজ্জ্বলার গ্যাস সংযোগ থাকবে। আমি সেই দিনের দিকে তাকিয়ে আছি, যখন প্রত্যেক গ্রিবের বাড়িতে সৌভাগ্য যোজনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকবে, কলের জল থাকবে। আমি সেই দিন দেখতে পাচ্ছি যেদিন প্রত্যেক দরিদ্রের কাছে একটি আয়ুষ্মান কার্ড থাকবে যার মাধ্যমে বিনামূল্যে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা করানো যাবে। যখন প্রত্যেক গরীবের নিজস্ব স্থায়ী ঘর হবে। আমি সেই দিনের দিকে তাকিয়ে আছি, যেদিন প্রত্যেক কৃষক কেন্দ্রীয় সরকারের পেনশন প্রকল্পে যোগ দেবেন, যখন প্রত্যেক শ্রমিক পেনশন প্রকল্পের সুবিধাভোগী হবেন, যখন প্রত্যেক যোগ্য যুবক মুদ্রা যোজনার সুবিধা নিতে সক্ষম হবেন, এবং একজন উদ্যোক্তা হওয়ার দিকে পা বাড়াবে। বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা একভাবে দেশের দরিদ্রদের কাছে, দেশের মা-বোনদের কাছে, দেশের যুবকদের কাছে এবং দেশের কৃষকদের কাছে মোদীর গ্যারান্টি। আর মোদি যখন গ্যারান্টি দেয়, সেই গ্যারান্টি কী জানেন? মোদির গ্যারান্টি মানে গ্যারান্টি পূরণের গ্যারান্টিও।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যরা,
একটি উন্নত ভারতের সংকল্পের অন্যতম প্রধান ভিত্তি হল ‘প্রধানমন্ত্রী জনমন’ - অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী জনজাতি আদিবাসী ন্যায় মহা অভিযান। সামাজিক ন্যায়বিচার একটি সাধারণ-মামুলি আলোচনার বিষয়, মোদি সাহসের সঙ্গে আদিবাসী ন্যায়বিচার অভিযানে নেমেছে। স্বাধীনতার পর বহু দশক ধরে আদিবাসী সমাজ ক্রমাগত উপেক্ষিত ছিল। আমাদের অটলজির নেতৃত্বাধীন সরকারই প্রথম আদিবাসী সমাজের জন্য আলাদা মন্ত্রক তৈরি করেছিল এবং আলাদা বাজেট তৈরি করেছিল। আমাদের সরকারের আমলে আদিবাসী কল্যাণের বাজেট আগের তুলনায় এখন ৬ গুণ বেড়েছে। পিএম জনমন, এই প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে - পিএম জনমন। পিএম জনমন অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী জনজাতি আদিবাসী ন্যায় মহা অভিযান, এর অধীনে আমাদের সরকার এখন সেই আদিবাসী ভাই-বোনদের কাছে পৌঁছাবে যাঁদের কাছে কখনও কেউ পৌঁছায়নি। এরা হলেন সেই আদিবাসী গোষ্ঠীগুলি, আমরা আগেই বলেছি যে তাঁরা আদিম উপজাতি, যাঁদের অধিকাংশই এখনও বনে বাস করতে বাধ্য। রেলগাড়ি দেখার কথা ভুলে যান, রেলের আওয়াজও তাঁরা কখনও শোনেননি। আমাদের সরকার দেশের ২২ হাজারেরও বেশি গ্রামে বসবাসকারী এমন ৭৫টি আদিবাসী সম্প্রদায়, আদিম উপজাতিকে চিহ্নিত করেছে। পিছিয়ে পড়া মানুষের মধ্যে যেমন চরম পশ্চাৎপদ রয়েছে, তেমনি এই আদিবাসীরাও আদিবাসীদের মধ্যে সবচাইতে পিছিয়ে রয়েছেন। দেশে তাঁদের সংখ্যা লক্ষাধিক। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও এই সব থেকে পিছিয়ে পড়া আদিবাসীরা মৌলিক সুযোগ-সুবিধা পান নি। এই আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা কখনও স্থায়ী বাড়ি পান নি। বহু প্রজন্ম ধরে তাঁদের সন্তানেরা স্কুলও দেখেনি। এই সমাজের মানুষের দক্ষতা উন্নয়নে কোনও নজর দেওয়া হয়নি। তাই, এখন ভারত সরকার বিশেষ অভিযান চালিয়ে এই উপজাতিদের কাছে পৌঁছতে চলেছে। আগের সরকারগুলো পরিসংখ্যান যোগ করার কাজ করেছে,এই প্রক্রিয়ায় যাঁরা তাঁদের কাছে পৌছেছেন, যাঁরা শীর্ষে পৌঁছেছেন, তাঁদের দিয়ে কাজ করানো হয়েছে, কিন্তু আমি শুধু পরিসংখ্যান যোগ করে বসে থাকতে চাই না, আমি জীবনকে উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করতে চাই, অনেক জীবনকে সংযুক্ত করতে চাই, প্রত্যেক জীবনকে জীবন দিয়ে পূর্ণ করতে হবে, প্রত্যেক জীবনকে নতুন আবেগে ভরিয়ে তুলতে হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে, আজ আমি এই মহান অভিযান শুরু করছি - প্রধানমন্ত্রী জনমন, আমরা ‘জনগণ মন…’ গান গাই। এই মহা অভিযানে কেন্দ্রীয় সরকার ২৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
এই মহান অভিযানের জন্য আমি বিশেষ করে সম্মানিত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু জির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই। আমরা একটু আগেই তাঁর ভিডিও বার্তাও শুনেছি। যখন তিনি এখানে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল ছিলেন এবং তার আগে ওড়িশাতেও, তিনি একজন মন্ত্রী এবং সমাজকর্মী হিসাবে কাজ করেছেন। তাই তিনি এমন চরম প্রান্তবাসী জনজাতীয় গোষ্ঠীগুলোকে এগিয়ে আনার জন্য দিনরাত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরেও, তিনি এই পশ্চাৎপদ বিরল জনজাতি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সম্মানের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তাঁদের সমস্যাগুলি বুঝতে চেয়েছেন এবং সেগুলির সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। আমি আত্মবিশ্বাসী যে তিনি আমাদের যে নির্দেশনা দিয়েছেন, যে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন তাতে আমরা অবশ্যই এই প্রধানমন্ত্রী জনমন, প্রধানমন্ত্রী উপজাতি ন্যায়বিচার মহা অভিযানে সফল হব।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যরা,
আমাদের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু জিও নারী নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের একটি অনুপ্রেরণামূলক প্রতীক। বিগত বছরগুলিতে ভারত যেভাবে সারা বিশ্বকে নারী শক্তির বিকাশের পথ দেখিয়েছে তা নজিরবিহীন। এই বছরগুলি মা, বোন এবং কন্যাদের জন্য সুবিধা, নিরাপত্তা, সম্মান, স্বাস্থ্য এবং আত্মকর্মসংস্থানের বছর ছিল। আমাদের ঝাড়খণ্ডের এই মেয়েরা খেলাধুলায় যেভাবে দেশের নাম উজ্জ্বল করছে, তাতে মন আনন্দে ভরে যায়। আমাদের সরকার নারীদের জীবনের প্রতিটি স্তরের কথা মাথায় রেখে তাঁদের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করেছে। ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও; প্রকল্প মেয়েদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি করেছে এবং স্কুলে ছাত্রীদের ভর্তিও বেড়েছে। সরকারি স্কুলে ছাত্রীদের জন্য আলাদা শৌচাগার নির্মাণের ফলে স্কুল ছাড়ার বাধ্যবাধকতা কমেছে। পিএম আবাস যোজনার আওতায় বোনেরা কোটি কোটি বাড়ির মালিক হয়েছেন, বোনদের নামে বাড়ি নথিভুক্ত করা হয়েছে, প্রথমবারের মতো কোনও সম্পত্তি তাঁদের নামে নথিভুক্ত করা হয়েছে। সৈনিক স্কুল, ডিফেন্স একাডেমি প্রথমবারের মতো কন্যা ভর্তির জন্য খোলা হয়েছে। মুদ্রা যোজনার আওতায় যারা গ্যারান্টি ছাড়াই ঋণ পাচ্ছেন তাঁদের প্রায় ৭০ শতাংশই আমার দেশের মহিলা, আমার কন্যা। মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও আজ সরকার থেকে রেকর্ড পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আর লাখপতি দিদির অভিযান, আমার কথা শুনে কারও কারও মাথা ঘোরায়। আমার স্বপ্ন দুই কোটি নারীকে লাখপতি দিদি, দুই কোটি লাখপতি নারীতে পরিণত করা। দেখুন, স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালনাকারী দুই কোটি মহিলা অদূর ভবিষ্যতেই কোটিপতি হতে চলেছেন। মাত্র কয়েক মাস আগে, আমাদের সরকার বিধানসভা এবং লোকসভায় মহিলাদের সংরক্ষণের জন্য নারীশক্তি বন্দন আইনও গ্রহণ করেছে। আজ পবিত্র ভাইদুজ বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। এই পবিত্র দিনে আপনাদের এই ভাই দেশের সকল বোনদেরকে গ্যারান্টি দিচ্ছে যে, আপনার ভাই তার বোনেদের উন্নয়নের পথে আসা প্রতিটি বাধা দূর করে যাবে, আপনার ভাই আপনাদের কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে কঠোর পরিশ্রম করে যাবে। নারীশক্তির অমৃত স্তম্ভ একটি উন্নত ভারত গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যরা,
কেন্দ্রীয় সরকার একটি উন্নত ভারতের যাত্রায় প্রত্যেক ব্যক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মাত্র দুই মাস আগে আমরা প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনাও শুরু করেছি। যারা ঐতিহ্যবাহী দক্ষতার জন্য পরিচিত তাঁদেরকে এগিয়ে আনার চেষ্টা করেছে সরকার। সে কুমোর হোক, কামার হোক, ছুতোর হোক, স্বর্ণকার হোক, মালা কারিগর হোক, রাজমিস্ত্রি হোক, ছুতোর হোক, ধোপা হোক, সেলাই করুক, জুতা কারিগর হোক, এরা আমাদের বন্ধু, এরা আমাদের বিশ্বকর্মা বন্ধু, এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন বিশ্বকর্মা বন্ধুরা। তাঁরা আধুনিক প্রশিক্ষণ পাবে, এবং প্রশিক্ষণের সময় তারা অর্থ পাবে। তাঁরা ভাল ও নতুন সরঞ্জাম, নতুন নতুন প্রযুক্তি পাবেন এবং এর জন্য ব্যয় করা হবে ১৩ হাজার কোটি টাকা।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যরা,
আজ দেশের কৃষকদের পিএম কিষাণ সম্মান নিধির ১৫ তম কিস্তির টাকা পাঠানো হয়েছে। এখন দেশের কোটি কোটি কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো মোট টাকার পরিমাণ ২ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আপনারা যারা এখানে বসে আছেন তাঁরা অবশ্যই তাঁদের মোবাইলে একটি বার্তা পেয়েছেন যে আপনার অ্যাকাউন্টে ২,০০০ টাকা জমা হয়েছে। কোনও কাট কোম্পানি নেই, কোনও মধ্যস্বত্বভোগী নেই, আপনার সঙ্গে সরাসরি মোদীর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এরা সেই একই কৃষক যাঁদের কথা আগে কেউ ভাবেনি। এখন সরকার এই কৃষকদের চাহিদার প্রতি খেয়াল রাখছে। আমাদের সরকারই গবাদি পশুপালক এবং জেলেদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের পরিষেবা দিয়ে তাঁদের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণ সুনিশ্চিত করেছে। আমাদের সরকার পশুদের বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। করোনার পরে, হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে আপনাদের বিনামূল্যে প্রতিষেধক টিকা দেওয়া হয়েছিল। আপনাদের পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, এখন ১৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে, পশুদেরও বিনামূল্যে নানা রোগ প্রতিরোধক টিকা দেওয়া হচ্ছে, আপনারাও এই পরিষেবার সুবিধা নিন। মাছ চাষের প্রচারের জন্য, আমি এখানে এসেছি এবং এখানে এক-দেড় লক্ষ টাকা মূল্যের মাছ দেখানো হয়েছে, যেগুলির মাধ্যমে মুক্তো তৈরি করা হচ্ছে। এই মাছের চাষের জন্য সরকারের মৎস্য সম্পদ যোজনার আওতায় আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আজ দেশে ১০ হাজার নতুন কৃষক উৎপাদন সঙ্ঘ – খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা বা এফপিও গঠিত হচ্ছে। ফলে কৃষকদের খরচ কমেছে এবং বাজারে পৌঁছনো আরও সহজ হয়েছে। আমাদের সরকারের প্রচেষ্টায় এ বছর ইন্টারন্যাশানাল মিলেটস ইয়ার বা আন্তর্জাতিক মোটাদানার শস্য বর্ষ পালিত হচ্ছে। এই মোটাদানার শস্যকে ‘শ্রীঅন্ন’ হিসেবে পরিচয় তৈরি করা আর বিদেশের বাজারে রপ্তানি করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে আমাদের আদিবাসী ভাই-বোনেরাও উপকৃত হবেন।
বন্ধুগণ,
সরকারের এই সর্বাত্মক প্রচেষ্টার কারণে, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যেও নকশালবাদীদের হিংস্রতা হ্রাস পেয়েছে। এক-দুই বছরের মধ্যে ঝাড়খণ্ড রাজ্য প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এটি ঝাড়খণ্ডের জন্য একটি অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক সময়। এই মাইলফলকটিতে, ঝাড়খণ্ডে ২৫টি প্রকল্পের সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করা যেতে পারে। আমি ঝাড়খণ্ড সরকারকেও অনুরোধ করব, আমি ঝাড়খণ্ডের সমস্ত নেতাকে ২৫ বছরের লক্ষ্য নির্ধারণ করে একটি বিশাল অভিযান চালানোর জন্য অনুরোধ করব। আমি নিশ্চিত যে, এই অভিযান রাজ্যের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে একটি নতুন গতি দেবে এবং জনগণের জীবনকেও সহজ ও সুন্দর করে তুলবে। আমাদের সরকার শিক্ষার প্রসার এবং তরুণদের কাজের সুযোগ গড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আজ দেশে আধুনিক জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণীত হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা তাদের মাতৃভাষায় মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। গত ৯ বছরে সারাদেশে গড়ে উঠেছে তিন শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং গড়ে উঠেছে সাড়ে ৫ হাজারের বেশি নতুন কলেজ। ডিজিটাল ইন্ডিয়া অভিযান তরুণদের নতুন সুযোগ দিয়েছে। প্রতিটি গ্রামে কমন সার্ভিস সেন্টারে হাজার হাজার যুবক - যুবতির কর্মসংস্থান হয়েছে। এক লক্ষেরও বেশি স্টার্ট-আপ সহ ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প- বাস্তুব্যবস্থা গড়ে উঠেছে৷ আজ, রাঁচির আইআইএম ক্যাম্পাস এবং ধানবাদের আইআইটি-আইএসএম-এ নতুন হোস্টেলও উদ্বোধন করা হয়েছে।
বন্ধুগণ,
অমৃতকালের চারটি অমৃত স্তম্ভ, আমাদের নারী শক্তি, আমাদের যুবশক্তি, আমাদের কৃষি শক্তি এবং আমাদের দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক শক্তি, অবশ্যই ভারতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং ভারতকে একটি উন্নত ভারতে পরিণত করবে। আমি আবারও আপনাদের সকলকে এই প্রকল্প এবং এই জাতি গঠন অভিযানের জন্য আমন্ত্রণ জানাই এবং আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। আমার সঙ্গে সবাই জয়ধ্বনি করুন!
আমি বলব, ভগবান বিরসা মুন্ডা – আপনারা বলবেন, অমর রহে, অমর রহে!
ভগবান বিরসা মুন্ডা - অমর রহে, অমর রহে!
ভগবান বিরসা মুন্ডা - অমর রহে, অমর রহে!
দুই হাত উপরে তুলে পূর্ণশক্তি দিয়ে বলুন, ভগবান বিরসা মুন্ডা- অমর রহে, অমর রহে!
ভগবান বিরসা মুন্ডা - অমর রহে, অমর রহে!
ভগবান বিরসা মুন্ডা - অমর রহে, অমর রহে!
ভগবান বিরসা মুন্ডা - অমর রহে, অমর রহে!
আপনাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ.