গতকাল আমি মাগঙ্গার কাছে ছিলাম। আজ মা নর্মদার পাশে আছি। গতকাল বেনারসে ছিলাম, আজ ভারুচ-এ।বেনারস ভারতের প্রাগৈতিহাসিক শহর। আর ভারুচ গুজরাটের প্রাচীন শহর।
ভাই ও বোনেরা,
সবার আগে আমি শ্রদ্ধেয়শ্রী নীতিন গড়করি, তাঁর পুরো টিম এবং গুজরাট সরকারকে অন্তর থেকে অনেক অনেকঅভিনন্দন জানাই। বাইরের কেউ বুঝবেন না, এই সেতু নির্মাণের গুরুত্ব কত অপরিসীম। এইসেতু না থাকার কষ্ট ভারুচবাসী অনন্তকাল ধরে ভোগ করে আসছেন। অসুস্থ রোগীকে নিয়েঘন্টার পর ঘন্টা সময় ধরে অ্যাম্বুলেন্স যাত্রার মতো ভয়ানক অভিজ্ঞতা তাঁরা ভুগেছেনযুগ যুগ ধরে। আর এ কেবল ভারুচ এঙ্কলেশ্বরের সমস্যা সমাধান করবে না, দেশের পশ্চিমপ্রান্তের সঙ্গে গোটা দেশের সংযোগকে গতি প্রদান করবে।
আমি যতদিনমুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, এই সেতু নির্মাণের খাতিরে লড়াই চালিয়ে গেছি। কিন্তু যখন সুযোগপেয়েছি, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নর্মদার তটে ভারতেরদীর্ঘতম এ ধরণের প্রযুক্তিসম্পন্ন সেতুটি নির্মাণ করিয়েছি।
নীতিনজি যেপ্রত্যয়ে একাজ হাতে নিয়েছিলেন, নিয়মিত তদারকি করেছেন, তাঁর দপ্তরের গোটা টিম এইপরিমাণসাধনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তারই ফলস্বরূপ আমি আমি এই সেতু উদ্বোধনকরতে পারছি।
গতকাল আমিউত্তর প্রদেশে ছিলাম। ঐ রাজ্যের নানাপ্রান্তে নির্বাচনী সভায় গিয়েছি, যেখানেইগিয়েছি, সেখানকার মানুষ আমাকে কিছু স্মারক দেখাতে নিয়ে গেছেন। কেমন স্মারক? কেউদেখান, ঐ যে দূর থেকে স্তম্ভটি দেখা যাচ্ছে, ১৫ বছর আগে ওখানে একটি সেতুরভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ঐ একটি স্তম্ভই গড়ে উঠেছে, আর কাজএগোয়নি। কাশীতেও ১৩ বছর পুরনো একটি নির্মাণ অর্ধসমাপ্ত হয়ে রয়েছে। আমি বলি,কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রত্যর্পণ করে দিক, তা হলে আমরা দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে পারব।দেশের অনেক রাজ্যেই এখন এমনি ১০ বছর, ১২ বছর, ১৫ বছর পুরনো অসম্পূর্ণ নির্মাণেরছড়াছড়ি। কিন্তু গুজরাটে আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সময় থেকেই নির্ধারিত সময়েরমধ্যে কাজ শেষ করার সংস্কৃতি চালু করেছিলাম। সেই সংস্কৃতি এখন সারা ভারতে চালুকরার চেষ্টা চালাচ্ছি।
ভাই ও বোনেরা,
আজ আমার দাহেজ ঘুরে আসার সৌভাগ্য হয়েছে। কেউ কল্পনাও করতে পারবেন না যে, দাহেজ কেবলভরুচের অলঙ্কার নয়, দাহেজ গোটা ভারতের অলঙ্কার। এই প্রকল্পে পূর্ণ বিকাশ ঘটলে এতেপ্রায় ৮ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আপনারা ভাবুন, এই অঞ্চলে এত মানুষেরকর্মসংস্থান হলে অঞ্চলটির কত উন্নতি হবে। আপনারা ভালভাবেই জানেন যে, আমি বারবার দাহেজদেখতে এসেছি। এর আনখশির উন্নয়নের বিবরণ সম্পর্কে আমি অবহিত। আমার চোখের সামনে গড়েউঠেছে এই প্রকল্প। আজ এই প্রকল্প সম্পূর্ণতার পথে পা রেখেছে। পি সি পি আর , দাহেজ , ওপাল এই প্রকল্পগুলি ভাই ও বোনেরা দেশের আর্থিক উন্নয়নকে একটি নতুন শক্তিপ্রদান করবে। ভরুচের মাটিতে গড়ে ওঠা এই প্রকল্পের সম্পূর্ণতার জন্য আপনাদেরশুভেচ্ছা জানাই।
আমি অভিনন্দনজানাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। কারণ, যখন বাসপোর্টের কল্পনা করা হয়েছিল, তখন আমিইএই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, আমি ভাবতাম, কেমন সরকারের নেতৃত্ব করছি, যেখানেএকজন ধনী ব্যক্তি বিমানবন্দরে গিয়ে বিমানে চড়ার আগে সবরকমের সুবিধা পান, শীতলবাতাস, ঠান্ডা পানীয় জল, যেমন খেতে চান তেমনি খাবার; আমার দেশের গরিব মানুষেরও কিএসব কিছু পাবার অধিকার নেই? উড়োজাহাজে চড়লে যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়, বাসে চড়লেসেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে না কেন? এই ভাবনা থেকেই বাসপোর্টের কল্পনা।
পরিণাম স্বরূপবরোদায় সবার আগে পিপিপি মডেলে এমনই একটি বাসপোর্ট গড়ে তোলা হ’ল, যার ভিডিও ইউটিউবেবিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখে অবাক হয়ে গেল, এরকমও বাসস্ট্যান্ড হয়! গরিব থেকে গরিবতমমানুষ বাসযাত্রা করেন। এই গরিব মানুষদের হাতে থাকে ঝোলা, তাঁরা বিড়ি খেয়েযেখানে-সেখানে ফেলেন। আজ আপনি বরোদায় গিয়ে দেখুন, ঝকঝকে তকতকে বাসস্ট্যান্ড, সেইমডেলেই নতুন বাসপোর্ট গড়ে উঠেছে আমেদাবাদে। এভাবে ইতিমধ্যেই গুজরাটে চারটিবাসপোর্ট গড়ে উঠেছে। আপনারা শুনলে খুশি হবেন যে, রাজ্য সরকার এখন আপনাদের ভরুচেওএমনই সুন্দর একটি বাসপোর্ট গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আপনারা কল্পনাকরুন, ভারুচ থেকে সর্দার সরোবর বাঁধ পর্যন্ত প্রায় ১০০-১৫০ কিলোমিটার পথ আর পাশেইজলে টইটুম্বুর খাল। এই দৃশ্য কত আনন্দদায়ক হবে। এই গোটা এলাকার মাটির নীচে জলস্তরউপরে উঠে আসবে।
আমি যখনমুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন আমাদের রমেশ এখানকার বিধায়ক ছিলেন। তখন তাঁর সঙ্গে এইবিষয় নিয়ে অনেক কথা হয়েছে।
এখন আমি চোখেরসামনে যে ভবিষ্যতের দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি, বিশ্বের উচ্চতম সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলেরমর্মর মূর্তি গড়ে উঠবে, স্ট্যাচু অফ ইউনিটি। এই মূর্তি দেখতে সারা পৃথিবী থেকেপর্যটক আসবেন। আমাদের নীতিনজির বিভাগ কেউড়িয়া করিন পর্যন্ত উন্নত মানের পথ তৈরিকরে দিচ্ছেন। আরেকটি বিষয়ে আমি নীতিনজিকে অনুরোধ করেছি যে, ভাড়ভূজে বিয়ার উৎপাদনশুরু হলে নর্মদার জলে টইটুম্বুর থাকলে পর্যটকদের এখান থেকে ছোট ছোট স্টিমারে করেসর্দার সরোবর বাঁধ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায় কি?
মানুষ জন্মদিনপালনের জন্য গোয়ায় বেড়াতে যান, সেখানে ছোট ছোট স্টিমার নিয়ে সমুদ্রে চলে যান।সর্দার সরোবর বাঁধে শুরুতে সুরতের মানুষেরা জন্মদিন পালন করতে যাবেন, ভরুচেরমানুষতো যাবেনই।
ভাই ও বোনেরা,একটা নতুন কিছু গড়ে তুলে অনেক পরিবর্তন আনা যায়। আমাদের লক্ষ্য যদি স্থির থাকে, উদ্দেশ্যযদি পরিষ্কার হয়, আর নীতি যদি যথাযথ হয়, তা হলে সাফল্যের পথে কোনও বাধা থাকতে পারেনা। সাফল্য আসবেই।
আজ আমি গুজরাটেএসেছি, নীতিনজিও এসেছেন। আমি ঘোষণা করলেও আজকের এই সাফল্যের কৃতিত্ব সম্পূর্ণইনীতিনজি এবং তাঁর বিভাগের। তাঁরা গুজরাটের আটটি রাজ্য সড়ককে জাতীয় মহাসড়কেরূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই সিদ্ধান্তবাস্তবায়িত করতে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারেরশুধু একটি দপ্তর থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। আপনারা কল্পনা করতেপারেন, এই সিদ্ধান্ত গুজরাটের পরিকাঠামো উন্নয়নে কত বড় উল্লম্ফন। এই পথের দৈর্ঘ্যহবে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঊনা, ধারী, বগসরা, অমরেলি, বাবরা, জসদন, চটিলারাজ্য সড়ক জাতীয় মহাসড়ক হবে। তেমনই, নাগেসরী, খামবা, চলালা, অমরেলি রাজ্য সড়কও জাতীয়মহাসড়ক হবে। পোরবন্দর, ভানওয়ড়, জাম-যোধপুর, তালাবার রাজ্য সড়ক জাতীয় মহাসড়ক হবে।আনন্দ, কঠওয়াল, কপরবঞ্চ, পায়র, ধনসুরা, মোঢ়াসা রাজ্য সড়ক জাতীয় মহাসড়ক হবে। এরমাধ্যমে রাজ্যের উপজাতি অঞ্চল উপকৃত হবে। লখপত এবং কচ্ছ-এর উন্নয়ন করতে হবে,ধৌলাবিরার উন্নয়ন করতে হবে, পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
লখপত, গঢূলী,হাজিপুর, খাওড়া, ধৈলাবিরা, মৌয়ানা, সাংকলপুর – এসব সীমান্তবর্তী অঞ্চলের উন্নয়নসুনিশ্চিত করতে পারলে, সীমান্ত সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি কচ্ছ-এ পর্যটনবিকশিত হবে।
ধৌলাবিরার মানসসংস্কৃতি অত্যন্ত প্রাচীন। আর এখানে পাঁচ হাজার বছর পুরনো শহর রয়েছে। এটিকেকেন্দ্র করে পর্যটন গড়ে উঠলে গুজরাট লাভবান হবে।
খাম্বালিয়া,অড়ওয়ানা, পোরবন্দর, চিতৌঢ়া, রাপর, ধৌলাবিরা, খাম্বালিয়া, বাণবড়, রাণাওয়াঅঞ্চলগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন হলে কত হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। নতুননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করার ফলে নবীন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যে জোরে মোটর সাইকেলবা গাড়ি চালিয়ে অকালমৃত্যুর কবলে পরেন, তা থেকে বাঁচানো যাবে।
আপনাদের হয়তোমনে আছে আগে আমেদাবাদ, রাজকোট, বগোদরা সড়কে প্রতিদিন অনেক দুর্ঘটনা ঘটতো। কেশুভাইপ্যাটেল যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন আমাদের পার্টির অনেক প্রবীণ নেতাও এই পথেদুর্ঘটনায় মারা যান। আমি তখন রাজনীতিতে ছিলাম না। সেই আমেদাবাদ, রাজকোট মহাসড়ককেচার লেন করে দেওয়ার পর দুর্ঘটনা অনেক কমে গিয়েছিল।
জাতীয় সড়কের এইনেটওয়ার্ক বৃদ্ধির ফলে পথ নিরাপত্তার দৃষ্টিতে মানবতার দৃষ্টিকোণ থেকে গুজরাটেএকটি নতুন মডেল ব্যবস্থা গড়ে উঠছে। প্রশস্ত রাজপথ, পাশে হেলিপ্যাড, পথের পাশেযথাযথ দূরত্বে খাওয়া-দাওয়া ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা ইত্যাদি এই সড়ক ব্যবস্থাকে মডেলকরে তুলবে।
সাগরমালাপ্রকল্প, দেখুন, কেন্দ্রে এখন যে সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, আমরা বিচ্ছিন্নভাবে কোনওকিছু ভাবি না। আমরা প্রত্যেকটি সমস্যা শেকড় থেকে সমাধান করার কথা ভাবি, সেজন্যই এইসাগরমালা প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গুজরাট থেকে পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র উপকূলে এইসাগরমালা প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নত সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। এর সঙ্গে যুক্ত হবেভারতমালা প্রকল্প। এই পরিকাঠামো উন্নয়ন দেশের পর্যটন উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাপালন করবে। সাগরমালা আর ভারতমালা জলবন্দর, সড়ক উন্নয়নকে একটি নতুন শক্তি যোগাবে।সেজন্য শুধু জলবন্দর ক্ষেত্রে সাগরমালা প্রকল্পে ৮ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেকয়েক বছরের মধ্যে ভারতের সুদীর্ঘ তটবর্তী অঞ্চলগুলির চিত্র বদলে দেওয়া হবে। গুজরাটবিশেষভাবে লাভবান হবে। এ রাজ্যের বন্দরগুলি রেল ও সড়কপথে যুক্ত হবে।
আমরাপ্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা চালু করেছি। আপনারা শুনলে অবাক হবেন, আমাদেরদেশের সরকার আগে কিভাবে কাজ করতো! বাঁধ বানিয়ে দেওয়া হ’ল কিন্তু তার জল কোথা দিয়েযাবে, কিভাবে যাবে সেই প্রকল্প সুনিয়ন্ত্রিতভাবে গড়ে তোলা হয়নি। ২০ বছর আগে যেবাঁধ তৈরি হয়েছে, জলে ভরে রয়েছে কিন্তু যথাযথ খাল ব্যবস্থা না থাকায় ঐ অঞ্চলেরকৃষকরা তার দ্বারা লাভবান হচ্ছেন না। আমরা ভালভাবে খোঁজখবর নিয়ে প্রায় ২০ হাজারকোটি টাকা খরচ করে প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনার মাধ্যমে ‘ড্যাম টু ড্রিপ’অর্থাৎ ‘ড্রিপ্রিকেশন’ করতে বাঁধ থেকে ড্রিপ্রিকেশন পর্যন্ত খাল-এর শৃঙ্খল গড়েতোলার কাজ শুরু করেছি। সারা দেশে এভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা সকল প্রকল্পকে আমরা কাজেলাগাচ্ছি।
দেশকে আধুনিককরে তুলতে হবে। বিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তি নিয়ে আমরা একবিংশ শতাব্দীর সমস্যাগুলিরসমাধান করতে পারব না। ভাই ও বোনেরা, সেই দিন এসে গেছে, আজ ভারত উন্নত বিশ্বেরসঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে প্রস্তুত। আমরা নিজেদের ঘরে কোন্দল করে সময় নষ্ট করতেচাই না। দেশকে বিশ্বমানে পৌঁছে দিতে চাই। সেজন্য দেশে হাইওয়ের পাশাপাশি আইওয়ে অর্থাৎ‘ইনফরমেশন ওয়েস’ গড়ে তুলছি। গোটা দেশকে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মাধ্যমেসংযুক্ত করার কাজ অনেকটাই এগিয়ে গেছে। অনেকেই এর কৃতিত্ব নিতে চান। আমি বলি,কৃতিত্ব নিন কিন্তু পাশাপাশি কাজটা করুন।
ভাই ও বোনেরা,একথা সত্যি যে এই অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের প্রকল্প আমাদের পূর্ববর্তী সরকারইগ্রহণ করেছিল। সেই প্রকল্প অনুযায়ী, আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেই ১ লক্ষ ২৫ হাজারগ্রামে এই নেটওয়ার্ক সংযোগ হওয়ার কথা ছিল। আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর খোঁজ নিয়েজানলাম যে, কেবলমাত্র ৫৯টি গ্রামেই তারা লাগাতে পেরেছিল।
আমরা সরকারেএসে সিদ্ধান্ত নিলাম যে দেশের আড়াই লক্ষ পঞ্চায়েতে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কবিছিয়ে দেব। ইতিমধ্যেই আমরা ৬৮ হাজার গ্রামে এই কাজ সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। সাধারণমানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছা থাকলেই কাজ করা যায়। সাধারণ মানুষ দলমত নির্বিশেষেসাহায্য করেন। দেশ এগিয়ে যায়।
গ্যাসের পাইপলাইন, অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক পানীয় জলের ব্যবস্থা – এগুলির সুসম্পাদনেরমাধ্যমে আমরা স্বপ্ন দেখেছি ২০২২ সালে দেশ যখন স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপনকরবে, তখন দেশের মানুষ এই সমস্ত সুবিধা পাবেন। ২০২২ সালের মধ্যে ভারতের দরিদ্রথেকে দরিদ্রতম ব্যক্তিকে আমরা যাতে নিজস্ব ঘর দিতে পারি, সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজকরছি। এর জন্য এত বাড়ি বানাতে হবে যা কল্পনা করা যায় না। বিশ্বের অনেক ছোট ছোট দেশদ্রুত উন্নতি করছে। তেমনই, অনেক ছোট দেশের মোট জনসংখ্যার থেকে বেশি মানুষের বাড়িআমাদের নির্মাণ করতে হবে । ভাই ও বোনেরা, আমরা এই স্বপ্ন সাকার করেই ছাড়ব।
ভাই ও বোনেরা,আপনারা কি জানেন আমাদের দেশের কতগুলি দ্বীপ রয়েছে? যেমন আমাদের রাজ্যে রয়েছে আলিয়াবেট কিংবা বেইট দ্বারকা। এই ধরনের দ্বীপ কতগুলি রয়েছে? আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরএই প্রশ্নের জবাবে দেশের কোন দপ্তর বলে ৯০০টি, অন্য কোন দপ্তর বলে ৮০০, ৬০০ কিংবা১,০০০। আমি অবাক! সঠিক সংখ্যাটি কেউ বলতে পারছে না? বুঝতে পারলাম যে তারা কোনবৈজ্ঞানিকভাবে কাজ করেনি। আমরা টিম গড়ে তুলি, তারা উপগ্রহ প্রযুক্তির মাধ্যমেহিসেব করে দেখে ভারতে মোট ১,৩০০-রও বেশি দ্বীপ রয়েছে। এর মধ্যে এমন কিছু দ্বীপরয়েছে যেগুলির আকার সিঙ্গাপুর থেকে বড়। তার মানে আমরা যদি এই দ্বীপগুলির যথাযথউন্নয়ন করতে পারি, কত বৈচিত্র্যময় পর্যটন উন্নয়ন সাধিত হতে পারে। একথা মাথায় রেখেকেন্দ্রীয় সরকার প্রাথমিকভাবে এগুলির মধ্যে ২০০টিকে বেছে নিয়ে সেগুলি উন্নয়নেরএকটি মডেল তৈরি করে। এগুলি বাস্তবায়িত হলে অন্ততপক্ষে আমাদের দেশের পর্যটকদেরসিঙ্গাপুর যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। সব আমাদের দেশেই পাওয়া যাবে। আমাদের দেশ যথেষ্টসামর্থ ও শক্তি রাখে। সেজন্য ভাই ও বোনেরা, রেলপথ আর নীতিনজির নেতৃত্বে সড়ক পথউন্নয়নের মাধ্যমে দেশে যে সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়ন যজ্ঞ শুরু হয়েছে, তা দেশকেঅদূর ভবিষ্যতেই নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। আমরা সরকারে আসার আগে দিনে দু’কিলোমিটারকরে পথ নির্মিত হত। নীতিনজি এসে এমন ধাক্কা লাগান যে এখন গড়ে প্রতিদিন ২২কিলোমিটার পথ নির্মাণ হয়। ১১ গুণ কাজ হচ্ছে। একইরকমভাবে রেলের গেজ রূপান্তরের কাজওদ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রথম বছরে ১,৫০০ কিলোমিটার রূপান্তর সম্পন্ন হয়েছে।
এত বড় দেশ।সবাই রেল সংযোগ চায়। আমরা কাজের গতি আরও বাড়ালাম এবং পরের বছর আমরা এ কাজ দ্বিগুণকরতে পারলাম। ৩ হাজার কিলোমিটার রূপান্তর সম্ভব হল। আপনারা বাস পোর্টের কাজদেখেছেন। এটা নিয়ে আমি রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাঁদেরকেবলেছি আমাদের রেল স্টেশনগুলি মৃতপ্রায়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মান থেকে উঠিয়ে একবিংশশতাব্দীর আধুনিকতা মানে রূপান্তরিত করতে হবে।
রেল বিভাগ কাজশুরু করে দিয়েছে। দেশের ৫০০টি রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণ শুরু হয়েছে। গুজরাটেরক্ষেত্রে সুরাট এবং গান্ধীনগর দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। আগামীদিনে সবক’টি রেল স্টেশনেবহুতল নির্মিত হবে। নিচ দিয়ে রেল যাবে, আর ওপরে শপিং মল থাকবে। সিনেমা হলও গড়েউঠতে পারে। এছাড়া থাকবে নানা ধরনের বিনোদন কেন্দ্র, ফুড কোর্ট ইত্যাদি। ভাই ওবোনেরা, দূরদৃষ্টি থাকতে হয়। স্বপ্ন থাকতে হয়। সঙ্কল্প থাকতে হয়। সামর্থও থাকতেহয়। তাহলেই সিদ্ধি নিজে থেকে আসবে। আমরা এভাবেই এগিয়ে চলেছি।
আমি ভরুচেরপ্রিয় ভাই ও বোনেদের অভিনন্দন জানাই। আজ মা নর্মদার তটে এত বড় সব প্রকল্পেরউদ্বোধন হচ্ছে। আপনারা সকলে আমার সঙ্গে জোর দিয়ে বলুন, আমি বলব – নর্মদে, আপনারামুষ্টিবদ্ধ হাত ওপরে তুলে বলবেন – সর্বদে।
নর্মদে – সর্বদে
নর্মদে – সর্বদে
নর্মদে – সর্বদে
নর্মদে – সর্বদে
নর্মদে – সর্বদে
আপনাদের অনেকঅনেক ধন্যবাদ।