নমস্কার!
জয় মা অন্নপূর্ণা!
জয় জয় মা অন্নপূর্ণা!
গুজরাটের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র ভাই প্যাটেল আর সংসদে আমার সঙ্গী এবং গুজরাট ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতি শ্রী সি আর পাটিল, অন্নুপূর্ণা ধাম ট্রাস্টের অধ্যক্ষ, সংসদে আমার সঙ্গী শ্রী নরহরি আমিন, অন্যান্য উপস্থিত পদাধিকারীগণ, জনপ্রতিনিধিগণ, সমাজের বরিষ্ঠ নাগরিকগণ, শ্রদ্ধেয় ভাই ও বোনেরা!
মা অন্নুপূর্ণার এই পবিত্র ভূমিতে আস্থা, আধ্যাত্ম এবং নানা সামাজিক গুরুদায়িত্ব পালনের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বড় বড় অনুষ্ঠানগুলির সঙ্গে আমাকে যুক্ত করার ফলে আমি প্রায়ই এখানে উপস্থিত থাকার সুযোগ পাই। মন্দিরের ভূমি পুজো হয়েছে, মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, ছাত্রাবাসের ভূমি পুজো হয়েছে আর আজ উদ্বোধন হচ্ছে। মায়ের আশীর্বাদে প্রত্যেকবারই কোনও না কোনভাবে আমার আপনাদের মধ্যে থাকার সৌভাগ্য হয়েছে। আজ শ্রী অন্নপূর্ণা ধাম ট্রাস্ট, অডালজ কুমার হস্টেল এবং এডুকেশন কমপ্লেক্সের উদ্বোধনের পাশাপাশি জন-সহায়ক ট্রাস্ট হীরামণি আরোগ্য ধামের ভূমি পুজোও হয়েছে। শিক্ষা, পুষ্টি এবং আরোগ্যের ক্ষেত্রে সমাজের জন্য কিছু করার স্বভাব বরাবরই গুজরাটবাসীর মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। যার যত শক্তি, যতটা ক্ষমতা, প্রত্যেকেই নিজের মতো করে সমাজের জন্য কিছু না কিছু দায়িত্ব পালন করে থাকেন, আর এক্ষেত্রে আমাদের পাটিদার সমাজও কখনও পিছিয়ে থাকে না। প্রার্থনা করি, আপনারা সবাই যেন এই সেবাযজ্ঞে মা অন্নপূর্ণার আশীর্বাদে আরও সামর্থ্যবান হয়ে ওঠেন, যেন আরও বেশি সমর্পিতপ্রাণ হন এবং আরও সেবার উচ্চতা অর্জন করতে থাকেন! মা অন্নপূর্ণা আপনাদেরকে যেন এমনই আশীর্বাদ দেন। এই সাফল্যের জন্য আমার পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন, অনেক অনেক শুভকামনাও।
বন্ধুগণ, সমৃদ্ধি এবং ধনধান্যের দেবী মা অন্নপূর্ণার প্রতি চিরকালই আমাদের গুজরাটবাসীর অগাধ আস্থা রয়েছে। পাটিদার সমাজ তো সরাসরি ধরিত্রী মাতার সঙ্গে যুক্ত। মায়ের প্রতি এই অগাধ শ্রদ্ধার কারণেই কয়েক মাস আগে আমি কানাডা থেকে অন্নপূর্ণ মায়ের মূর্তি কাশীতে ফিরিয়ে এনেছি। মায়ের এই মূর্তিকে অনেক দশক আগে কাশী থেকে চুরি করে বিদেশে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। ভারতের সংস্কৃতির এরকম কয়েক ডজন প্রতীককে বিগত ৭-৮ বছর ধরে বিদেশ থেকে ফেরত আনা হয়েছে।
বন্ধুগণ, আমাদের সংস্কৃতিতে, আমাদের পরম্পরায় সর্বদাই ভোজন, আরোগ্য এবং শিক্ষার ওপর খুব জোর দেওয়া হয়েছে। আজ আপনারা এই তিনটি বিষয়কেই মা অন্নুপূর্ণা ধামে সম্প্রসারিত করেছেন। এই যে নতুন সুবিধাগুলি এখানে বিকশিত হল, এখানে যে আরোগ্য ধাম গড়ে উঠতে চলেছে, এতে গুজরাটের সাধারণ মানুষও অনেক লাভবান হবেন, বিশেষ করে বৃক্কের চিকিৎসায় সুবিধা হবে। অনেক মানুষ একসঙ্গে ডায়ালিসিস করাতে পারবেন আর ২৪ ঘন্টা রক্ত সরবরাহের সুবিধায় অনেক রোগীর খুব বড় উপকার হবে, সেবা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন রাজ্যে জেলা হাসপাতালগুলিতে বিনামূল্যে ডায়ালিসিসের সুবিধা চালু করেছে। এই অভিযান আপনাদের এই প্রচেষ্টাকে আরও শক্তি যোগাতে চলেছে। এই সকল মানবিক প্রচেষ্টার জন্য, এহেন সেবাভাবের জন্য, সমর্পণ ভাবের জন্য আপনারা সকলেই প্রশংসার পাত্র।
গুজরাটের সাধারণ মানুষের কাছে যখন আমি আসি, তখন মনে হয় যে একটু প্রাণখুলে গুজরাটিতে কথা বলে নিই! অনেক বছর ধরে আপনাদের মধ্যে আছি। এক প্রকার বলতে গেলে আমার মনে শিক্ষার প্রসার সব আপনারাই করেছেন, আর যে শিষ্টাচার দিয়েছেন, যে শিক্ষা দিয়েছেন, তা নিয়ে আমাকে যে দেশের দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, তা যথাসাধ্য পালন করার কাজেই আমি সব সময় ডুবে থাকি। এর পরিণামস্বরূপ, নরহরির অনুরোধ থাকা সত্ত্বেও আমি আজ শারীরিকভাবে আসতে পারিনি। যদি আমি শারীরিকভাবে আসতাম তাহলে আমার অনেক পুরনো বন্ধু ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হত। সকলের সঙ্গে মিশে আনন্দ পেতাম। কিন্তু এখন প্রযুক্তির মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে, কথাও হবে – এই সুযোগ আমি ছাড়তে পারিনি। সেজন্য এখান থেকেই আপনাদের সবাইকে দর্শন করছি, আপনাদের সবাইকে বন্দনা করছি।
আমাদের নরহরি ভাই-এর মধ্যে অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তিনি আমার পুরনো বন্ধু। নরহরি ভাই-এর বিশেষত্ব হল যে তিনি সার্বজনিক জীবনে সেই আন্দোলনের গর্ভ থেকে জন্ম নিয়েছেন। তিনি নব নির্মাণ আন্দোলন থেকে জন্ম নিয়েছেন। তিনি যে সেই নবনির্মাণ আন্দোলন থেকে জন্ম নিয়েছেন, আর জীবের সৃষ্টিশীল প্রবৃত্তিতে মিশে গেছেন - এটা বাস্তবেই অত্যন্ত সন্তুষ্টির বিষয়, অত্যন্ত আনন্দের কথা। নরহরি ভাই নবনির্মাণ আন্দোলনের ফসল এমন এক ব্যক্তিত্ব, যিনি রাজনীতিতে থেকেও এ ধরনের সৃষ্টিশীল কাজ করেন, আর আমি মনে করি এসবের অত্যন্ত গুরুত্ব রয়েছে। এই সৃষ্টিশীলতা ঘনশ্যাম ভাইজিকেও আরও সক্রিয় করে রেখেছে এবং তিনিও এর প্রতি সমর্পিতপ্রাণ। অন্যভাবে বলা যেতে পারে, তাঁদের পরিবারের শিষ্টাচার এমনই যে সব সময়েই তাঁদের মাথায় সমাজের জন্য কিছু না কিছু ভালো করার চিন্তা খেলতে থাকে, আর এজন্য তিনি এবং তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও এখন থেকে নরহরি ভাই-এর একটি নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলছেন, সেজন্য তাঁদেরকেও আমার অনেক অনেক শুভকামনা।
আমাদের গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীজি যেমন শক্ত, তেমনই নরম। গুজরাটকে তিনি এত সুন্দর নেতৃত্ব দিচ্ছেন যে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী দিনগুলিতে গুজরাটকে নতুন উচ্চতা প্রদানের জন্য, তিনি ও তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার আধুনিক বিচারধারা এবং মৌলিক কার্যগুলির সম্পাদনে বাস্তবে ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে। আজ তিনি যত কথা বলেছেন, এখানে আমার অনুমান অনুসারে সবাই এবং বিশেষ করে স্বামী নারায়ণ সম্প্রদায়ের ভাই ও বোনেরা শুনেছেন। আমি তাঁদের সবাইকে অনুরোধ জানাই যে যেখানেই আমাদের হরিভক্তরা রয়েছেন, সেখানে প্রাকৃতিক চাষ করার জন্য আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। এই ধরিত্রী মাতাকে বাঁচানোর জন্য আমাদের যতটা সম্ভব চেষ্টা করা উচিৎ। আপনারা দেখবেন ৩-৪ বছরের মধ্যেই প্রাকৃতিক চাষের ফলে এমন ফসল পাবেন, ধরিত্রী মাতার শক্তি এত বাড়বে যে আমরা সবাই ক্রমাগত পল্লবিত, পুষ্পিত হতে থাকব, আর তার জন্য আমাদের সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
গুজরাট দেশের উন্নয়নের জন্য সব সময়েই কাজ করে চলেছে। আমার মনে পড়ে, যখন আমি গুজরাটে কাজ করতাম, তখন আমার নেতৃত্বাধীন সরকার ও দলের একটাই মন্ত্র ছিল যে, ভারতের বিকাশের জন্য গুজরাটের উন্নয়ন। আমরা গুজরাটের উন্নয়নের জন্য এমন এমন মাপদণ্ড নির্ধারণ করতাম যে এগুলি সম্পাদন করতে অনেক পরিশ্রম করতে হত। যে গুজরাটের সমৃদ্ধ পরম্পরা রয়েছে, সেই সমৃদ্ধ পরম্পরাকে ভূপেন্দ্র ভাই-এর নেতৃত্বে আমরা সবাই মিলে যেন এগিয়ে নিয়ে যাই। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ থেকে দু’-চারদিন আগে আমাকে কেউ একজন ভিডিও পাঠিয়েছিলেন যা দেখে আমি বুঝতে পেরেছি যে ভূপেন্দ্র ভাই মা অম্বাজির এক প্রকার কায়াকল্প করছেন, পুনর্নিমাণ করছেন। কারণ, অম্বাজিকে নিয়ে আমার মনেও বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। সেজন্য আমার আরও আনন্দ হয়েছে আর গব্বরকে তিনি যেভাবে নতুন কলেবরে ধারণ করেছেন, ভূপেন্দ্র ভাই তাঁর চিন্তাভাবনাকে আরও সাকার করছেন। যেভাবে মা অম্বাজির স্থানে বিকাশ হচ্ছে, যেভাবে স্ট্যাচু অফ ইউনিটির মাধ্যমে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল সাহেবকে গুজরাট এত বড় শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছে, এর ফলে গোটা বিশ্বে সর্দার সাহেবের নাম আজ সবার ওপরে। স্বাধীনতার এত বছর কেটে যাওয়ার পরে হলেও অবশেষে আমাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। এভাবেই আমার মনে আছে, আর আমার দৃঢ় ধারণা যে অম্বাজিতে যখন ছিলাম, তখন একান্ন শক্তিপীঠের কল্পনা করেছিলাম। আজ যদি কেউ অম্বানি দর্শনে আসেন, তার মূল স্বরূপ এবং তার মূল রচনা পরিদর্শন করতে, জানতে যে কোনও ভক্ত এগিয়ে আসেন, তাহলে তিনি একান্ন শক্তিপীঠ দর্শন করার সুযোগ পাবেন। আজ ভূপেন্দ্র ভাই এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা ও মর্যাদার সঙ্গে এটা জনগণের সামনে উদ্বোধন করিয়েছেন। আজ গব্বরকেও মা অম্বাজির স্থানের গুরুত্ব বুঝিয়ে, আর নিজে সেখানে গিয়ে মা গব্বরের দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন। সেজন্য উত্তর গুজরাটে পর্যটন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন আমি দেখছি যে নড়া বেট-এ যেভাবে ভারতের শেষ প্রান্তিক গ্রামগুলিতেও এই সমাজ সেবা করা হয়েছে, তা অতুলনীয়।
ভূপেন্দ্র ভাই-এর নেতৃত্বে গোটা উত্তর গুজরাটেও পর্যটনের সম্ভাবনা যেভাবে অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকলকে নিজের নিজের দায়িত্ব পালন করতে হবে। যখন এরকম সমস্ত জায়গার উন্নয়ন হচ্ছে, তখন আমাদের পরিচ্ছন্নতার দিকে সম্পূর্ণ লক্ষ্য রাখতে হবে, আর আমরা যখন আরোগ্যের কাজ হাতে নিয়েছি, তখন পরিচ্ছন্নতাকে এর মূল অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। এর মূলে রয়েছে পুষ্টি, আর মা অন্নপূর্ণা যেখানে বিরাজমান, সেখানে আমাদের গুজরাটে অপুষ্টি কিভাবে থাকতে পারে? অপুষ্টির ক্ষেত্রে পুষ্টির অভাব সম্পর্কে বা পুষ্টি সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞানতাই আসল কারণ, আর এই অজ্ঞানতার ফলেই আমরা বুঝতে পারি না যে শরীরের কী কী জিনিসের প্রয়োজন, কী খাওয়া উচিৎ, কোন বয়সে কী খাওয়া উচিৎ! শিশুরা মায়ের দুধ থেকে যে শক্তি পায়, আমাদের অজ্ঞানতার কারণে যদি আমরা তা থেকে বিমুখ থাকি, তাহলে সেই শিশুকে আমরা কখনও শক্তিশালী করে তুলতে পারব না। তাহলে প্রত্যেকের পুষ্টির মৌলিক উপাদানগুলি কোথা থেকে কিভাবে আসবে সেটা সবাইকে জানতে হবে। যখন আমরা মা অন্নপূর্ণার সান্নিধ্যে বসে আছি, যখন আমরা তাঁর কথা স্মরণ করব, তাঁর পুজো করব, তখন আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে এই ডাইনিং হল ৬০০ লোকের খাওয়ার ব্যবস্থা করবে। পাশাপাশি, আমি আজ নরহরিজিকে আরও একটি নতুন কাজের দায়িত্ব দিচ্ছি। এখানে, এই ডাইনিং হলে একটি ভিডিও প্লেয়ার রাখুন। আমাদের ডাইনিং হল-এ যখন খাওয়ার সময় সবাই স্ক্রিনে ভিডিও দেখবেন, যে ভিডিওতে শুধু এটাই দেখানো হবে যে আমাদের কী খাওয়া উচিৎ আর কী খাওয়া উচিৎ না। কী খেলে শরীরে লাভ হবে, কোন কোন উপাদান শরীরের জন্য প্রয়োজন – এই সবকিছু ভিডিওর মাধ্যমে দেখানো হবে। যাতে খাওয়ার সময় তাঁদের মনে পড়ে যে মায়ের প্রসাদের পাশাপাশি আমাদের এই জ্ঞান সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে, আর বাড়িতে গিয়ে তা মেনে চলতে হবে। আজকাল তো সব জায়গাতেই বড় সংখ্যায় এগুলি সম্পর্কে সচেতন মানুষদের সংখ্যা বেড়েছে।
তাহলে দেখবেন, আপনাদের এই নতুন ধরনের ডাইনিং হল বিখ্যাত হয়ে যাবে, আর সংবাদমাধ্যমেও আপনাদের কথা বলবে। যখন আপনাদের এই ভিডিও দেখানো হবে, যখন তাঁরা আপনাদের ডাইনিং হল দেখতে আসবেন, তখন আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমি আজ নরহরি ভাইকে যতগুলি পরামর্শ দিয়েছি সবই সুফলদায়ক হবে। তিনি আজ পর্যন্ত আমার কোনও পরামর্শকে অনাদর করেননি। সেজন্য এই পরামর্শ তিনি অবশ্যই মনে রাখবেন। আমাদের এখানে শাস্ত্রে একটি ভালো কথা বলা হয়েছে, আর দেখুন, আমাদের পূর্বজরা কত ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করে গেছেন। সেখানে বলা হয়েছে –
“দেয়ং ভৈষজম আর্তস্ব, পরিশ্রান্তস্ব চ আসনম।
ত্রিষি তস্যাশ্চ পানী য়ঃ, সুধী তস্যাশ্চ ভোজনম।।”
এর অর্থ হল, পীড়িতকে ওষুধ, ক্লান্ত মানুষকে আসন, তৃষ্ণার্ত মানুষকে জল আর ক্ষুধার্তকে ভোজন দেওয়া উচিৎ। এটা আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে। এই কাজকে মা অন্নপূর্ণার সান্নিধ্যে যে কাজের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি ইতিমধ্যেই শুরু হতে গেছে, আর এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। আপনারা এবং সমস্ত বন্ধুরা আমার কথাকে শিরোধার্য করে অত্যন্ত পরিশ্রমের সঙ্গে দায়িত্ব সম্পাদন করেছেন, কাজ পুরো করেছেন। এতে আমার উৎসাহ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, আর আরও দুটি কাজের কথা বলার ইচ্ছাও জেগেছে। ভোজন হল আরোগ্যের সবচাইতে প্রথম সিঁড়ি। সেজন্য আমরা গোটা দেশে পুষ্টি অভিযান শুরু করে দিয়েছি। আমি আজও বলছি, খাদ্যের অভাবে অপুষ্টি হয় এমনটা নয়। খাবার সম্পর্কে অজ্ঞানতার কারণেই অপুষ্টির সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।
আজ আপনারা জানেন যে বিগত তিন বছর ধরে, প্রায় দুই থেকে আড়াই বছর ধরে, যখন থেকে করোনা এসেছে, তখন থেকে গুজরাটের গরীব মানুষেরা যাতে খালি পেটে না থাকেন, সেদিকে লক্ষ্য রাখাটাই আমাদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারা ভারতের জন্যই এটা একটা চ্যালেঞ্জ। গরীবের বাড়িতে সন্ধ্যার সময় উনুন জ্বলবে না, এমন পরিস্থিতি যেন না আসে তা আমরা সুনিশ্চিত করতে চাইছিলাম। কারণ এটা মেনে নেওয়া যায় না। সেজন্যই সারা পৃথিবী আশ্চর্য হয়ে গেছে যখন তারা দেখছে যে এই চরম বিপর্যয়ের সময়ে, কিভাবে দুই থেকে আড়াই বছর ধরে ভারত সরকার ৮০ কোটিরও বেশি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দিয়ে গেছে। এটা বিশ্ববাসীর জন্য একটি আশ্চর্যের বিষয়। গোটা বিশ্বে যে রকম উথাল-পাতাল চলছিল, যে অদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, বারবার রোগের উত্থান এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে পতনের ফলে কেউ কোনও জিনিস চাহিদা মতো পাচ্ছিল না। যেসব দেশ থেকে আমরা বিভিন্ন পেট্রোলিয়মাজাত সামগ্রী আমদানি করতাম, তেল আমদানি করতাম, সার আমদানি করতাম, সেই সমস্ত দরজা বন্ধ হয়ে গেছে।
যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে সবাই নিজের নিজের সম্পদ সামলে বসে আছে। এক্ষেত্রে সারা পৃথিবীতে একটি নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, প্রত্যেকের খাদ্যভাণ্ডারে টান পড়েছে। গতকাল আমি যখন আমেরিকার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করছিলাম, তখন তিনিও বলছিলেন যে, ‘আমাদের দেশে যদি ডব্লিউটিও কিছু অনুদান দেয়, তাহলে কিছুটা স্বস্তি পাই’। ভারতে যে অন্ন ভাণ্ডার রয়েছে তা যদি বাইরে পাঠানো যেত তাহলে আমরা আগামীকালই তা পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিতাম। কারণ আমরা পৃথিবীর সব মানুষের পেটে অন্ন যোগাতে চাই।অন্নপূর্ণা মায়ের আশীর্বাদে আমাদের দেশের কৃষকরা ভারতমাতার সন্তানদের অন্ন সংস্থান যেমন করেন, তেমনই বিশ্ববাসীর কথা ভেবে উদ্বৃত্ত উৎপাদনেরও প্রস্তুতি নিয়েছেন। কারণ, বিশ্বের অনেক দেশের মানুষও আমাদের দেশে উৎপাদিত অন্নের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এখন পরিবর্তিত বিশ্বের নিয়ম মেনে চলতে হবে। সেজন্য আমরা জানি না, কবে ডব্লিউটিও এই নিয়মে সংস্কার আনবে। তাহলেই আমরা ভারতের বাইরে যাঁদের অন্নের প্রয়োজন, তাঁদের মুখে অন্ন যোগাতে পারব।
আপনারা দেখুন, আরোগ্যের ক্ষেত্রে গুজরাটের শক্তি কতটা! গোটা বিশ্বে যত দ্রুতগতিতে আমরা করোনার টিকা পৌঁছে দেওয়ার অভিযান চালিয়েছি তা অভূতপূর্ব। আমি আজ গুজরাটের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র ভাইকেও গুজরাটে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে টিকাকরণ সম্পন্ন করার জন্য অভিনন্দন জানাব। খুব ভালোভাবে এই কাজ গুজরাটে সম্পন্ন হয়েছে, আর এভাবে গুজরাট সরকার গুজরাটবাসীকে রক্ষা করেছে। এত বড় কাজ করার জন্য আমি ভূপেন্দ্র ভাই এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাচ্ছি। এখন তো শিশুদের জন্যও আমরা টিকাকরণের ছাড়পত্র দিয়েছি। আমাদের পাটিদার ভাইদের তো ঘন ঘন বিদেশ যেতে হয়, হীরের ব্যবসার জন্য যেতে হয়। গুজরাটের সাধারণ মানুষকেও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য রাজ্যের বাইরে এমনকি, দেশের বাইরে যেতে হয়। এঁদের মধ্যে কেউ যদি বাইরে যান, তাঁকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন যে আপনি ‘প্রিকশান ডোজ’ নিয়েছেন কি না, তখন তাঁকে আর মুখ লুকোতে হবে না। আমরা এমন সুবিধা তৈরি করে দিয়েছি যে এখন যে কোনও হাসপাতালে গিয়ে সাধারণ মানুষ টিকা নিতে পারেন, আর দ্রুত বেরিয়ে আসতে পারেন। দুশ্চিন্তার কোনও কারণই নেই। সেজন্য যেমন প্রয়োজন তেমনভাবে এই অভিযান সম্পন্ন করার জন্য আমরা প্রায় সব ধরনের প্রচেষ্টা জারি রেখেছি, আর এখন যে সময় চলছে, এই ক্ষেত্রে আমি সমাজের সমস্ত শ্রেণীর মানুষকে অনুরোধ জানাব যে আপনাদের ছেলে-মেয়েদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য উৎসাহ যোগানোকেই অগ্রাধিকার দিন, আর এই দক্ষতা উন্নয়ন পুরনো দিনের মতো হবে না। বর্তমান সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে। আজকের দিনে সাইকেল রিপেয়ারিং-এর দক্ষতা উন্নয়ন করে তেমন লাভ হবে না।
এখন পৃথিবী বদলে গেছে। যখন ‘ইন্ডাস্ট্রি ৪.০’ চলছে, তখন দক্ষতা উন্নয়নও ‘ইন্ডাস্ট্রি ৪.০’ অনুসারেই হওয়া উচিৎ। এখন গুজরাটকে ‘ইন্ডাস্ট্রি ৪.০’-র দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বড় লাফ দিতে হবে আর গুজরাটকে এক্ষেত্রে ভারতের নেতৃত্ব দিতে হবে। গুজরাটের শিল্প জগতের অগ্রণী যত পেশাদার রয়েছেন, যত এন্টারপ্রাইজের লোকেরা রয়েছেন, তাঁদের সহজ প্রভাবে গুজরাট এগিয়ে চলেছে। অতীতেও গুজরাট এরকম সাফল্য অর্জন করে দেখিয়েছে। আমি আপনাদেরকে একটি উদাহরণ দিতে চাই। আমাদের পূর্বজরা গুজরাটে একটি ফার্মাসি কলেজ চালু করেছিলেন। সেই কলেজের বয়স এখন ৫০-৬০ বছর হয়ে গেছে। সেই সময় নগরের শেঠ ও মহাজনেরা উদ্যোগ নিয়ে গুজরাটে ভারতের প্রথম ফার্মাসি কলেজ চালু করেছিলেন। তাঁদের এই উদ্যোগের ফলে আজ ফার্মাসি ক্ষেত্রে গুজরাট ভারতে নেতৃত্ব দিচ্ছে, আর গুজরাটের ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলির নাম গোটা বিশ্বে গুঞ্জরিত হচ্ছে। গরীবদের সস্তায় ওষুধ বিতরণের চিন্তাও আমাদের এই সমাজের সহজাত সেবামূলক ভাবনার কারণেই জন্ম নিয়েছে। ৫০-৬০ বছর আগে একটি ফার্মাসি কলেজ তৈরি হয়েছিল, আর তার কারণে যত ছাত্রছাত্রী শিক্ষিত হয়েছে, যে আবহ গড়ে উঠেছে, যে ইকো-সিস্টেম তৈরি হয়েছে, তার ফলেই আজ ফার্মাসি শিল্পে গুজরাট বিশ্বে মাথা উঁচু করে কৃতিত্বের পরিচয় দিচ্ছে।
এভাবে ‘ইন্ডাস্ট্রি ৪.০’ আধুনিক এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটিয়ে আমাদের নবীনদের দক্ষতা উন্নয়নে অগ্রণী করে তুলতে পারলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস এক্ষেত্রেও গুজরাট দেশের মধ্যে নেতৃত্ব দেবে। গুজরাটের এই সামর্থ্য রয়েছে। গুজরাট যে কোনও কাজ অত্যন্ত সহজভাবে করতে পারে। এই লক্ষ্যে আমরা যত এগিয়ে যাব, ততই লাভবান হব। আজ যখন আরোগ্য নিয়ে আলোচনা চলছে, আমরা জানি যে যখন আমাকে আপনারা শাসনের দায়িত্ব দিয়েছেন, তখন আমার সামনে অনেক বড় সমস্যা ছিল। কিডনির রোগী ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ডায়ালিসিস করার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল, আর মানুষ বাড়ি থেকে বেরোলেই ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ভাড়া দিতে হত। দূরবর্তী কোনও বড় হাসপাতালে যেতে গেলে এর থেকে কম খরচে যাওয়া যেত না। যাঁদের প্রতি সপ্তাহে ডায়ালিসিস করানোর প্রয়োজন, তাঁরা হয়তো দু’মাস পর পর করানোর সুযোগ পেতেন। এর ফলে তাঁদের অসুস্থতা বৃদ্ধি পেত। অনেক চিন্তাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে যেত, এবং অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার ফলে অনেকের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু হত। অনেক পরিবার অকালে অনেক প্রিয়জনদের হারাত। এই সমস্যা থেকে দেশবাসীকে রক্ষার জন্য আমরা একটি অভিযান শুরু করি। ভারতের সর্বত্র বিনামূল্যে ডায়ালিসিসের সুবিধা চালু করার চেষ্টা করি, যাতে যাঁর যখন ডায়ালিসিস চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তখনই যেন তিনি ডায়ালিসিস করাতে পারেন। আমরা চিন্তাভাবনা করে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যেতে থাকি, আর আজ অনেকটাই সাফল্য পেয়েছি। এ ধরনের রোগীরা আজ বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারছেন। আমরা এক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য পেয়েছি। এই নিয়ে আলোচনা তেমন একটা হয় না। সংবাদমাধ্যমও তেমন কিছু লেখে না।
আমি তো খবরের কাগজে এ বিষয়ে তেমন কাউকে লিখতে দেখিনি। কারণ, বাকি সব লেখা থেকে তাঁরা ফুরসৎই পান না। কিন্তু আমি মনে করি আমরা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছি, আর এর ফলে দেশের মধ্যবিত্ত এবং গরীব মানুষেরা সবচাইতে বেশি লাভবান হয়েছেন। আমাদের জন ঔষধি কেন্দ্রগুলি চালু করার অভিযানও তেমনই আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। যদি কেউ বাড়িতে মধুমেহ রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে তাঁর পরিবারকে প্রতি মাসে ওষুধের পেছনে কয়েক হাজার টাকা খরচ করতে হয়। যদি মধ্যবিত্ত পরিবারের ওপর এ ধরনের খরচের বোঝা চাপে তাহলে তারা খুবই সমস্যার সম্মুখীন হন। কেমন করে চিকিৎসা করবেন, কেমন করে সংসার চালাবেন। আমরা জন ঔষধি কেন্দ্র চালু করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের এই দুশ্চিন্তার অবসান ঘটিয়েছি। আমরা জন ঔষধি কেন্দ্রগুলিতে ওষুধ সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনরকম আপোস করিনি। যে ওষুধ বাজারে ১০০ টাকায় পাওয়া যায়, সেই ওষুধই এখন জন ঔষধি কেন্দ্রে ১০ টাকা, ১২ টাকা বা ১৫ টাকায় পাওয়া যায়। আমরা এই জন ঔষধি কেন্দ্রগুলির সম্পর্কে মানুষকে যত সচেতন করতে পারব, এগুলি সম্পর্কে যত প্রচার করব, আমাদের মধ্যবিত্ত মানুষ, আমাদের নিম্নবিত্ত মানুষকে যত বেশি জন ঔষধি কেন্দ্র থেকে ওষুধ কেনার কথা জানাতে পারব, ততই দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষেরা উপকৃত হবেন, তাঁদের পরিবারে অনেক সাশ্রয় হবে, গরীবরা অনেক সাহায্য পাবেন। অনেক সময় এরকম হয় যে গরীবরা অসুখ হলেও ওষুধ খান না, কারণ তাঁরা খরচ সামলাতে পারেন না। সেজন্য অনেক সমস্যার সম্মুখীন হন। জন ঔষধি কেন্দ্রগুলি চালু হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষও এখন প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে পারছেন, নিজের চিকিৎসা করাতে পারছেন। এই সমস্ত কিছু আমাদের সুচিন্তিত ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলেই সম্ভব হয়েছে।
পরিচ্ছন্নতা অভিযান থেকে শুরু করে সারা দেশে বিনামূল্যে ডায়ালিসিস প্রক্রিয়া চালু করা, অপুষ্টির বিরুদ্ধে অভিযান আর জন ঔষধির মাধ্যমে সস্তা ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার কাজ – এই সবকিছু নিয়ে আমরা ভেবেছি। এখন তো আমরা হৃদরোগের মতো চিকিৎসার ক্ষেত্রেও স্টেন্টের দাম কমানোর জন্যও অভিযান শুরু করেছি। হাঁটু অপারেশনের খরচ কমানোর জন্যও অভিযান শুরু করেছি। এরকম অনেক কাজ আমরা করছি যাতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা না হয়, আর সবচাইতে বড় আমরা যেটা করতে পেরেছি সেটা হল আয়ুষ্মান ভারত যোজনা। আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মাধ্যমে ভারতের সাধারণ মানুষদের কাছে সুলভে চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। প্রতি বছর তাঁদের পরিবারকে ওষুধ ও চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ সরকার বহন করছে। আমি দেখেছি যে অনেক রোগীর ক্ষেত্রে বিশেষ করে, আমার মা ও বোনেরা যদি কঠিন রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে আগে নিজের ছেলে-মেয়েদেরকে বলতেনই না। কষ্ট সহ্য করে যেতেন। তাঁরা ভাবতেন যে রোগের কথা বললে বাচ্চারা কষ্ট পাবে। সেজন্য তাঁরা সমস্ত যন্ত্রণা মুখ বুজে সহ্য করতেন।
যখন অবস্থা আরও কঠিন হত এবং শল্য চিকিৎসা করার মতো পরিস্থিতি এসে যেত, তখন আমার মা ও বোনেরা বলতেন যে আমি নিজের পরিবারকে ঋণগ্রস্থ করতে চাই না। এমনিতেই আমি আর কতদিন বাঁচতাম, আর মেয়ে হয়ে জন্মেছি, জীবনে তো যন্ত্রণা সহ্য করতেই হত! - এই ছিল আমাদের মা ও বোনেদের ভাবনা। এই সময়ে দাঁড়িয়ে এমন মায়েদের জন্য কারা ভাববে? যেখানে মা অম্বার ধাম রয়েছে, মা কালীর ধাম রয়েছে, যেখানে মা খোড়িয়ার রয়েছেন, মা উমিয়া রয়েছেন, যেখানে মা অন্নপূর্ণা রয়েছেন, সেখানে মায়েদের জন্য ভাবার কেউ নেই? এটা ভাবাই যায় না। আমরা ঠিক করি যে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্যের মাধ্যমে আয়ুষ্মান ভারত যোজনা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ, দেশের ভালো হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসার খরচ, চিকিৎসার দায়িত্ব সরকার বহন করবে। সেজন্য কারোর যদি শল্য চিকিৎসা করাতে হয়, কারোর যদি বৃক্কের চিকিৎসা করাতে হয়, সমস্ত খরচ সরকার বহন করবে। শুধু তাই নয়, কোনও ব্যক্তির বাড়ি যদি আমেদাবাদে হয়, আর তিনি যদি মুম্বাইয়ে গিয়ে অসুস্থ হন আর সেখানে চিকিৎসা করান, তাঁর সমস্ত চিকিৎসার দায়িত্বও সরকার বহন করবে। তাঁকে যদি শল্য চিকিৎসা করাতে হয়, ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসা হয়, শুধু তাই নয়, আমেদাবাদের মানুষেরা মুম্বাই বা অন্য কোনও শহরে গিয়েও যদি এই চিকিৎসা করান, হায়দরাবাদে গিয়ে চিকিৎসা করান, তবুও তার খরচ সরকার বহন করবে। একভাবে বলা যায়, আরোগ্যের জন্য, চিকিৎসার জন্য যত সুরক্ষা কবচ ধারণ করা সম্ভব, আরোগ্য সুনিশ্চিত করার জন্য যত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব, সমস্ত পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি এবং সেগুলিকে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করছি। গুজরাটের বৈশিষ্ট্য হল, এই সমস্ত ক্ষেত্রে গুজরাট যেমন নেতৃত্ব দেয়, তেমনই সর্বদাই সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে পছন্দ করে।
আমাদের এখানে যখনই কোনও বিপর্যয় আসে আর ফুড প্যাকেট পৌঁছে দিতে হয় তখন সরকারকে খুব একটা দুশ্চিন্তা করতে হয় না। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে স্বামী নারায়ণ সংস্থাকে একটি ফোন করে দিলে, সন্তরাম সংস্থাকে একটি ফোন করে দিলে, দ্রুত তাঁরাই নিজেদের উদ্যোগে গুজরাটের যে কোনও স্থানে ফুড প্যাকেট পৌঁছে দেন। কাউকে খালি পেটে থাকতে হয় না। এই সবকিছু মা অন্নপূর্ণার আশীর্বাদে হয়। এই প্রয়োজন গুজরাটের প্রয়োজন আর এর ভিত্তিতেই আমরা গুজরাটের উন্নয়নকে, গুজরাটের প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে চলেছি। শিক্ষার জন্য, শিক্ষণের জন্য, আরোগ্যের জন্য অনেক ভালো ব্যবস্থা এই রাজ্যে রয়েছে আর আমরা আধ্যাত্মের ক্ষেত্রেও ঈশ্বরে সমর্পিতপ্রাণ হয়ে তাঁর কথা ভেবে চলেছি। আমরা আজ ত্রিবেণী পেয়েছি, আর যখন ত্রিবেণী পেয়েছি তখন আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ!