Swami Vivekananda said that only rituals will not connect an individual to divinity. He said Jan Seva is Prabhu Seva: PM
More than being in search of a Guru, Swami Vivekananda was in search of truth: PM Modi
Swami Vivekananda had given the concept of 'One Asia.' He said that the solutions to the world's problems would come from Asia: PM
There is no life without creativity. Let our creativity strengthen our nation and fulfil the aspirations of our people: PM
India is changing. India's standing at the global stage is rising and this is due to Jan Shakti: PM

আমাকে বলা হয়েছে যে, এখানে স্থান সংকুলান না হওয়ায়আরেকটি কক্ষেও অনেক ছাত্র বসে আছেন, তাঁদেরকেও আমি সাদর অভিনন্দন জানাই।  

আজ ১১ সেপ্টেম্বর। এই বিশ্ব ২০০১ সালের আগে জানতো না যে৯/১১’র গুরুত্বটা কী? দোষ বিশ্বের নয় – দোষ আমাদের ছিল যে আমরাই তাদের ভুলিয়েদিয়েছিলাম – আমরা যদি না ভোলাতাম, তা হলে হয়তো একবিংশ শতাব্দীতে ভয়ানক ৯/১১ হ’তনা। সোয়া’শ বছর আগে এক ৯/১১ ছিল যে – যেদিন এই দেশের এক নবযুবক – কল্পনা করুন,প্রায় আপনাদেরই বয়সী ৫০৭ বছর বড় হ’তে পারে। প্রায় আপনাদেরই বয়সী এক গেরুয়াবস্ত্রধারী – বিশ্ববাসী যে পোশাক চিনতেন না। বিশ্ব যাকে গুলাম ভারতের প্রতিনিধিরূপে দেখছিল। কিন্তু তাঁর আত্মবিশ্বাসে সেই শক্তি ছিল যে, দাসত্বের ছায়া তাঁর না চিন্তনেছিল, না ব্যবহারে ছিল, না তাঁর বাণীতে ছিল। কোন্‌ সে ঐতিহ্য তিনি নিজের অন্তরেঅঙ্কুরিত করেছিলেন যে, হাজার বছরের দাসত্ব সত্ত্বেও তাঁর অন্তরে সেই লাভা টগবগকরছিল, সেই বিশ্বাস উপচে পড়ছিল যে বিশ্বকে দেওয়ার মতো সামর্থ্য এই ভূমিতে রয়েছে,এখানকার দর্শনে আছে, এখানকার জীবনশৈলীতে আছে। এ এক অসমান্য ঘটনা। 

আমরা যদি ভাবি যে, আমাদের চারপাশে একটি ঋণাত্মক প্রবাহরয়েছে – যা আমাদের চিন্তার বিপরীতে প্রবহমান – চারপাশে শোরগোল আর তখন আমাদের নিজেরকথা বলতে কেমন লাগে! চারবার ভাবি, না জানি কেউ ভুল মানে বের করবে না তো~! এমন চাপসৃষ্টি হয়! ঐ মহাপুরুষের এমন কোন্‌ শক্তি ছিল যে তিনি এই চাপকে কোনোদিন অনুভব করেনি! ভেতরের আগুন – মনের উদ্দীপনা – অন্তরের আত্মবিশ্বাস এই ভূমির শক্তিকে ভালোভাবেহৃদয়ঙ্গম করা ব্যক্তিই বিশ্বকে সামর্থ্য প্রদান করতে, সঠিক পথ দেখাতে –সমস্যাসমূহের সমাধানের পথ দেখাতে সফল প্রয়াস করেন। বিশ্ববাসী জানতেন না যে,সম্বোধনে ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টলম্যান’ ছাড়া আর কোনও শব্দ হতে পারে। আর যখন‘ব্রাদার্স অ্যান্ড সিস্টার্স অফ আমেরিকা’ – এই দুটি শব্দ শোনেন কয়েক মিনিট ধরেকরতালির আওয়াজ শোনা যায়। ঐ দুটি শব্দে তিনি ভারতের সেই শক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়েদেন ।  সেটাএকটা  ৯/১১ ছিল। যে ব্যক্তি নিজের তপস্যায় ভারতভূমি পদযাত্রায়অতিক্রম করে ভারতমাতাকে নিজের মনে উজ্জীবিত করেছিলেন। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্বথেকে পশ্চিম – প্রত্যেক ভাষাকে প্রতিটি কথ্য ভাষাকে আয়ত্ত করেছিলেন। এক প্রকারভারতমাতার জাদু তপস্যাকে যিনি নিজের অন্তরে আবিষ্কার করেছিলেন – তেমনই সেইমহাপুরুষ কয়েক  মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বকেআপন করে নিতে পেরেছিলেন। গোটা বিশ্বকে নিজের অন্তরে সমাহিত করেন। হাজার হাজার বছরধরে বিকশিত হওয়া ভিন্ন ভিন্ন মানব সংস্কৃতিকে তিনি অন্তরে ধারণ করে বিশ্বকেআপনত্বের পরিচয় দেন। বিশ্বকে জয় করে নেন। সেই ৯/১১ আমার জন্য বিশ্ব বিজয়ী দিবস।বিশ্ব বিজয়ী দিবস ছিল আর একবিংশ শতাব্দীর গোড়ায় যে ৯/১১ যা মানবতার বিনাশের পথ,সংহারের পথ – সেই আমেরিকার মাটিতে। এক ৯/১১’তে প্রেম আর আত্মীয়তার বার্তা দেওয়া হয়– সেই আমেরিকার মাটিতে সেই বার্তাকে ভুলে যাওয়ার পরিণাম হ’ল – মানবসভ্যতা সংহারেরপথ তার এক বিকৃত রূপ বিশ্বকে ঝাঁকিয়ে দিয়েছিল। সেই ৯/১১’র আক্রমণের পরই বিশ্ববুঝতে পারে যে ভারত থেকে নির্গত বার্তা ৯/১১’কে কিভাবে ইতিহাসে স্থান দেয় আর বিনাশএবং বিকৃতির পথে ধাবমান এই ৯/১১ বিশ্বের ইতিহাসকে কিভাবে কালিমালিপ্ত করে! আরসেজন্য আজ যখন ৯/১১ তারিখ – বিবেকানন্দজি’কে ভিন্ন রূপে বোঝার প্রয়োজনীয়তা আমিঅনুভব করি।

বিবেকানন্দের দুটি রূপ – আপনারা যদি নিবিড়ভাবে দেখেন, তাহলে অনুভব করবেন। বিশ্বে যেখানে গেছেন – যেখানে কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেবিশ্বাসের সঙ্গে বড় গৌরবের সঙ্গে ভারতের মহিমাকীর্তন, ভারতের মহান পরম্পরাগুলিরমহিমা, ভারতের মহান পরম্পরাগুলির মহিমাকীর্তন, ভারতের মহান দর্শনের মহিমাকীর্তন ওতার ব্যাখ্যায় তিনি কখনো ক্লান্ত হতেন না । বিবেকানন্দের আর দ্বিতীয় রূপছিল , যখন দেশের মধ্যে কথা বলতেন, তখন আমাদের কুসংস্কারগুলিরকঠোর সমালোচনা করতেন। আমাদের ভেতরের দুর্বলতাগুলিকে কুঠারাঘাত করতেন আর যে ভাষাপ্রয়োগ করতেন, সে ভাষার প্রয়োগ যদি আজ আমরা করি, তা হলে হয়তো মানুষ আশ্চর্য হয়েভাববেন যে, এরকম কেন বলছেন! তিনি সমাজের প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতেন।সেই সময় কল্পনা করুন, যখন আচার-নিষ্ঠার গুরুত্ব বেশি ছিল – পূজাপাঠ-পরম্পরা –এগুলিই সহজ সমাজ জীবনের প্রকৃতি ছিল। তেমন সময়ে ৩০ বছর বয়সী এক যুবক – তেমনপরিবেশে দাঁড়িয়ে যদি বলেন যে, পূজাপাঠ, পূজার্চনা মন্দিরে বসে থাকলে কোনওভগবান-টগবান পাওয়া যাবে না। জনসেবাই প্রকৃত ঈশ্বরের সেবা – যাও জনসাধারণ গরিবমানুষের সেবা করো – তবেই ঈশ্বর পাবে ...... কত বড় শক্তি!

যে মানুষ বিশ্ববাসীর কাছে গিয়ে ভারতের গুণগান করেছেন,তিনিই দেশে থাকলে দেশের ভেতরে সমস্ত কুসংস্কারকে কুঠারঘাত করতেন। তিনি গুরু পরম্পরামানতেন কিন্তু নিজের জীবনে কখনো গুরু খুঁজতে বেরোননি। এটা শেখা এবং বোঝার বিষয়।তিনি গুরু খুঁজতে বেরোন নি। তিনি সত্যের খোঁজে ছিলেন। মহাত্মা গান্ধীও আজীবনসত্যের খোঁজে ছিলেন। তিনিও সত্যের খোঁজে ছিলেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থা কঠিন ছিল। রামকৃষ্ণদেব তাঁকে মা কালীর কাছে পাঠালেন।যা, তোর যা চাই, মা কালীর কাছে চা! তারপর প্রশ্ন করেন, কী চেয়েছিস? তিনি বলেন,চাইনি! কোন্‌ ধাতুতে তৈরি মানুষ যে সাক্ষাৎ কালীর সামনে দাঁড়িয়েও হাত পাততে তৈরিছিলেন না! মনের মধ্যে কোন্‌ সে কাঠিন্য, কোন্‌ সে শক্তি ছিল, যা তাঁর মধ্যেসামর্থ্য জন্ম দিয়েছিল? সেজন্য বর্তমান সমাজে যা কিছু খারাপ, আমরা কি সমাজেরঅন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ব না? আমরা স্বীকার করে নেব? আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়েবিবেকানন্দ যখন ‘ব্রাদার্স অ্যান্ড সিস্টার্স অফ আমেরিকা’ বলেন – আমরাও নেচে উঠি।কিন্তু আমার দেশের নবীনদের বিশেষভাবে বলতে চাইবো – আমরা কি দেশের মহিলাদের সম্মানকরি? আমরা কি কন্যাসন্তানদের সমাদর করি? যাঁরা করেন, তাঁদের আমি ১০০ বার প্রণামজানাই। কিন্তু যাঁরা তাঁদের মধ্যে মানুষ দেখতে পান না, মানব দেখতে পান না। এঁরাওযে ঈশ্বরের সৃষ্টি – আমাদেরই সমকক্ষ! এই ভাব যদি মনে না থাকে, তা হলে স্বামীবিবেকানন্দের সেই সম্বোধন ‘ব্রাদার্স অ্যান্ড সিস্টার্স অফ আমেরিকা’ শুনে আমাদেরকরতালি বাজানোর অধিকার নেই। ৫০ বার আমাদের ভাবতে হবে।

আমরা কখনো ভেবেছি যে, বিবেকানন্দ বলতেন, ‘জনসেবাই প্রভুরসেবা’! এখন দেখুন, একজন মানুষ ৩০ বছর বয়সে গোটা বিশ্বের মন জয় করে ফেরেন, সেইপরাধীন ভারতে দু’জন মানুষ – যাঁরা ভারতে একটি নতুন চেতনা ও উদ্দীপনা জাগিয়েতুলেছিলেন। দুটি ঘটনা – যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন আর যখনস্বামী বিবেকানন্দ ৯/১১’র ভাষণ নিয়ে দেশে-বিদেশে আলোচনা শুরু হয়। পরাধীন ভারতে সেইসময়ে একটি নতুন চেতনা – এই দুটি ঘটনা গোটা ভারত’কে জাগ্রত করেছিল। আর দু’জনই ছিলেনবাংলার সন্তান। কত গর্ব হয়, যখন বহির্বিশ্বে গিয়ে বলি আমার দেশের রবীন্দ্রনাথঠাকুর শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত লিখেছেন, ভারতের জাতীয় সঙ্গীত লিখেছেন, বাংলাদেশেরজাতীয় সঙ্গীতও লিখেছেন। আমরা কি আমাদের এই ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করি, আমরাঅন্তঃসারশূন্য নই। আজ ভারত বিশ্বের মধ্যে একটি নবীন দেশ।



আশি কোটি মানুষ এদেশে সেই বয়সের রয়েছেন, বিবেকানন্দজি যেবয়সে শিকাগো ভাষণ দিয়েছিলেন – তার থেকেও কম বয়সী। এদেশে ৬৫ শতাংশ জনসংখ্যা বিশ্বেডংকা বাজানো বিবেকানন্দের বয়সের থেকেও কম বয়সী ৬৫ শতাংশ জনসংখ্যা যে দেশে রয়েছে,সেই দেশে বিবেকানন্দ থেকে বড় প্রেরণা কী হতে পারে! আর সেজন্য বিবেকানন্দ কেমন কাজকরেছেন – তা স্রেফ উপদেশের যোগ্য থাকেনি। তিনি ‘আইডিয়াস’কে ‘আইডিয়ালিজম’-এ কনভার্টকরেন আর ‘আইডিয়ালিজম’ এবং ‘আইডিয়াজ’-এর সমন্বয় ঘটিয়ে ‘ইন্সটিটিউশনাল ফ্রেমওয়ার্ক’বানান। আজ থেকে প্রায় ১২০ বছর আগে এই মহাপুরুষ রামকৃষ্ণ মিশন-এর জন্ম দেন।বিবেকানন্দ মিশন গড়েননি। রামকৃষ্ণ মিশন গড়েছেন। ক্ষুদ্র দৃষ্টান্ত কিন্তুবুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। আর তিনি রামকৃষ্ণ মিশনকে যে ভাব নিয়ে গড়ে তোলেন –আজ ১২০ বছর পরও কোনও ‘ডাইলিউশন’ কিংবা কোনও ‘ডাইভারশন’ আসেনি। এমন একটি সংস্থারকেমন মজবুত ভিত গড়েছিলেন তিনি! ‘ফাউন্ডেশন’ কত ‘স্ট্রং’ ছিল! ‘ভিশন’ কত ‘ক্লিয়ার’ছিল। ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ কত না ‘স্ট্রং’ ছিল। ভারত সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয় নিয়ে কতগভীর অনুভূতি থাকলে তবেই একটি সংস্থা ১২০ বছর পরেও সেই আন্দোলনের মনোভাব নিয়ে আজওএগিয়ে চলেছে। 

আমার সৌভাগ্য যে আমিও সেই মহান পরম্পরায় কিছুদিন আচমনকরার সুযোগ পেয়েছি। যখন বিবেকানন্দজির ৯/১১’র ভাষণের শতবর্ষ পালিত হচ্ছিল, সেদিনআমার শিকাগো যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। সেই সভাঘরে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল আর শতাব্দীসমারোহে সামিল হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। আমি কল্পনা করতে পারি, সে কেমন ভাববিশ্ব ছিল!কেমন সেই ভাব মুহূর্ত ছিল! আর আজ ১২৫ বছর সমারোহ পালন করা হচ্ছে। 

বিশ্ব কি কখনও ভেবেছে যে, কোনও বক্তৃতার ১২৫ বর্ষপূর্তিপালিত হবে। কয়েক মুহূর্তের একটি ভাষণ – সেই শব্দগুলি ১২৫ বছর পরও জীবিত থাকবে,জাগ্রত থাকবে, আর জাগরণ তৈরি করার সামর্থ্য রাখবে! যা নিজেই আমাদের জন্য একটি মহানঐতিহ্য রূপে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করে। 

আমি এখানে এসে দৃপ্তকন্ঠে বন্দেমাতরম, বন্দেমাতরম শুনছিলাম।গায়ের রোম কাঁটা দিয়ে উঠল ।  মনের মধ্যে ভারত ভক্তির একটি ভাব সহজভাবেই জেগে ওঠে।কিন্তু এই সভার শ্রোতাদের নয় , গোটা ভারত’কে জিজ্ঞেস করছি,আমাদের কি বন্দেমাতরম উচ্চারণের অধিকার আছে? আমি জানি যে, আমার এই কথায় অনেকে আহতহবেন। আমি জানি যে, ৫০ বার ভেবে নিন, আমাদের কি বন্দেমাতরম উচ্চারণের অধিকার আছে?আমরা কি পান চিবিয়ে থুতু ফেলে ভারতমাতার শরীর নোংরা করি, আর তারপর বন্দেমাতরম বলি?এদেশে বন্দেমাতরম বলার অধিকার সর্বাগ্রে রয়েছে সেই সাফাই কর্মীদের, ভারতমাতারসাচ্চা সন্তানদের যারা সাফাই করেন। আর সেজন্য – আর সেজন্য আমাদের অবশ্যই ভাবা উচিৎযে, এই আমাদের ভারতমাতা সুজলাং সুফলাং ভারতমাতা। আমরা পরিষ্কার করি কি করি না,নোংরা করার অধিকার আমাদের নেই। গঙ্গার প্রতি শ্রদ্ধা আছে – গঙ্গায় ডুব দিলে পাপধুয়ে যাবে। প্রত্যেক নবীনের মনের ইচ্ছা যে, তাঁর মা-বাবাকে একবার গঙ্গাস্নান করাবেন।কিন্তু আমরা কি গঙ্গাকে নোংরা করা থেকে নিজেদের নিরত রাখতে পারি? আজ বিবেকানন্দজিথাকলে আমাদের বকতেন কি বকতেন না? আমাদের কিছু বলতেন কি বলতেন না? আর সেজন্য কখনোআমাদের মনে হয় যে, আমরা সুস্থ আছি কারণ আমাদের অনেক ডাক্তার রয়েছেন – কারণ, অনেকদক্ষ ডাক্তার রয়েছেন। না মশাই, আমরা সেজন্য সুস্থ নেই। দক্ষ ডাক্তার থাকলেই সুস্থথাকা যায় না। 

আমরা সুস্থ আছি কারণ আমাদের সাফাইকর্মীরা নিয়মিত সাফাইকরছেন। ডাক্তারদের থেকেও বেশি করে মনে যদি তাঁদের প্রতি সম্মান থাকে, তবেই বন্দেমাতরমবলে আনন্দ পাবেন। আর সেজন্যই আমার মনে আছে যে, একবার আমি বলেছিলাম, প্রথমে শৌচালয়তারপর দেবালয়। অনেকেই তখন আমার চুল ছিঁড়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু আজ আমি আনন্দিত যেদেশে এমন মেয়েরা আছে, যারা শৌচালয় না থাকলে ঐ বাড়ির বউ হবে না বলে ঠিক করেছেন।আমরা হাজার হাজার বছর ধরে টিকে আছি, তার কারণ কি? আমরা সময়োপযোগী মহাপুরুষদের জন্মদিই, যাঁরা আমাদের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব প্রদান করেন আর সেটাইআমাদের শক্তি। আর সেজন্য আমরা স্বামী বিবেকানন্দকে স্মরণ করি, তখন সেই ৯/১১ গুচ্ছশব্দের ভাণ্ডার ছিল না। এক তপস্বীর বাণী ছিল, তপোবাণী ছিল। সেই বাণী তাঁর মুখনিসৃতহতেই বিশ্বকে অভিভূত করে দিত। না হলে ভারত’কে তখন সাপ-সাঁপুড়ের দেশ-জাদু টোনারদেশ-একাদশীতে কী খাবেন আর পূর্ণিমাতে কী খাবেন না – এরকম দেশ এটাই বিশ্ব জানত!বিবেকানন্দ বিশ্বের সামনে বলে দেন, আমাদের ঐতিহ্য কোনও কিচেনের পরম্পরা নয়। কবে কীখাব, কী খাব না – এটা আমাদের সাংস্কৃতিক পরম্পরা নয় – এগুলি আমাদের ব্যবস্থার অঙ্গ– আমাদের সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা আলাদা। আত্মবৎ সর্ভভূতেষু – এটা আমাদের দর্শন। অহম্‌ব্রহ্মাস্মি – সাধারণ কথা নয়! গুণতম্‌ বিশ্ব মারয়ম – এই আর্য শব্দ যে আমরা গোটাবিশ্বকে সুসংস্কৃত করব – তার মানে কোনও জাতি পরিবর্তন ধর্ম পরিবর্তনের জন্য নয়, আরসেজন্যই যে মহান ঐতিহ্যের উপজ আমরা সেই পরম্পরায় লালিত মানুষেরা এই মাটিরই উপজ।

 

শত শত বছরের তপস্যা থেকে পাওয়া সংস্কারগুলি এদেশেরপ্রত্যেক মানুষ এর মধ্যে মূল্য সংযোজন করে গেছেন। এই সেই দেশ, যেখানে ভিখারিরওজ্ঞানের ভাণ্ডার। সেজন্য তাঁরা এসে বলেন, যিনি দেবেন তাঁর কল্যাণ হোক, যিনি দেবেননা – তাঁরও কল্যাণ হোক। আর সেজন্য স্বামী বিবেকানন্দের সাফল্যের মূল ভিত্তি ছিল,তাঁর অন্তরের আত্মসম্মান আর আত্মগৌরব ভাব। এই আত্ম মানে কোনও ব্যক্তি নয়, যে দেশেরতিনি প্রতিনিধিত্ব করছেন, তার মহান ঐতিহ্যকে তিনি আত্মগৌরব – আত্মসম্মান রূপেপ্রস্তুত করেছিলেন। আমরা কী বলি সেটা কি আমরা কখনো ভেবে দেখি? কোনও ভালো জায়গায়যদি আমরা যাই, সুন্দর প্রাকৃতিক বাতাবরণ – পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন – খুব ভালো লাগলেমুখ দিয়ে প্রথম কি কথা বের হয় ...... মনেই হচ্ছে না যে ভারতে আছি ...... আমরা বলিকি না? বলুন, এরকম হয় কি না? যদি অন্তর থেকে আত্মসম্মান ও আত্মগৌরব নিয়ে লালিতহতাম, তা হলে এই ভাব আসতো না! গর্ব হ’ত! যাই হোক না কেন – আমাদের দেশে এটাও আছে!এমনই!

বিবেকানন্দ – আমি সত্যি বলছি বন্ধুগণ আজকের প্রেক্ষিতেবিবেকানন্দজিকে দেখলে ...... অনেকেই হয়তো ভাবছেন, আমি যখন বলি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ তখন অনেকেই – যা বলিসবকিছুর বিরোধিতা করেন। অনেকে বলেন, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নয় ‘মেইড ইন ইন্ডিয়া’ চাই।এমনও বলেন, বড় বড় মানুষেরা নানা কিছু বের করে বলেন। কিন্তু যাঁরা জানেন না যে,বিবেকানন্দজি আর জামশেদজি টাটার মধ্যে কী কথা হয়েছিল, যদি সেই বার্তালাপ জানেন –বিবেকানন্দ আর জামশেদজি টাটার মধ্যে যে পত্রালাপ হয়েছিল, তা যদি কেউ পড়ে থাকেন, তাহলে জানেন – তখন দেশ পরাধীন ছিল। তখনও বিবেকানন্দ ৩০ বছর বয়সী নবযুবক জামশেদজিটাকার মতো ব্যক্তিকে বলছেন যে, ভারতে শিল্প স্থাপন করুন না! ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ চালুকরুন। আর স্বয়ং জামশেদজি টাটা লিখেছেন, স্বয়ং বলেছেন যে, বিবেকানন্দের সেই অনুরোধআমার জন্য প্রেরণা স্বরূপ। সেজন্য এই ভারতে, ভারতীয় শিল্প গড়ে তুলতে শুরু করেছি।

আপনারা অবাক হবেন যে, আমাদের দেশে প্রথম কৃষি বিপ্লবেরভাবনাও বিবেকানন্দরই চিন্তাপ্রসূত। ভারতে কিভাবে কৃষি বিপ্লব শুরু করা যায়, আরডক্টর সেন – যাঁকে প্রথম কৃষি বিপ্লবের কর্ণধার মনে করা হয়। তিনি যে প্রতিষ্ঠানগড়েছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠানের নাম বিবেকানন্দ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউশনরেখেছিলেন। অর্থাৎ, ভারতে কৃষিকে আধুনিক করে তুলতে হবে বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে– ঐ বয়সেই বিবেকানন্দের মনে এমন ভাবনার উদয় হয়েছিল।

আজযা নিয়ে আলোচনা হয় যে আমাদের নবযুবকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, এসব করে। আজ ৯/১১পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্ম শতবার্ষিকীর সঙ্গেও যুক্ত আবার যে মহাপুরুষমহাত্মা গান্ধীর আদর্শ রূপায়ন করে দেখিয়েছেন, সেই আচার্য বিনোবা ভাবেরও জন্মদিন।আর আজ যখন আমি এই কথাগুলি বলছি, তখন দীনদয়ালজীর বিচারধারা যিনি দেখেছেন, শুনেছেনবা পড়েছেন। এই ভাবনা আধুনিক প্রেক্ষিতে প্রগতিকরণ, অন্ত্যোদয়। জন সেবাই প্রভুসেবা, একথাও বিবেকানন্দ বলতেন। আচার্য বিনোবা ভাবের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন দাদাধর্মাধিকারী... গান্ধীজী যেসব কথা ভাবতেন, যা যা বলতেন, সেগুলি ব্যক্ত করার কাজনিজের জীবন দিয়ে করে গেছেন বিনোবাজী। আর বিনোবাজী যা যা ভাবতেন, তাঁকে শব্দে রচনাকরার কাজ দাদা ধর্মাজীর চিন্তনে দেখা যায়। দাদা ধর্মাধিকারী একটি বইতে লিখেছেন,দারুন মজার কথা লিখেছেন। এক যুবক তাঁর কাছে এসেছিল চাকরির জন্য, কোনও একজন পরিচিতইতাঁকে পাঠিয়েছিল। সে ভাবছিল, ধর্মাধিকারীজী যদি কাউকে সুপারিশ করে দেন, কিছুসাহায্য করেন, তাহলে একটা কাজ ঠিক হয়ে যাবে। দাদা ধর্মাধিকারীজী লিখেছেন যে, তিনিতাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কি পারো। সে জবাবে বলল যে আমি গ্র্যাজুয়েট। দ্বিতীয়বারতিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি কি পারো। সে আবার বলল, আমি গ্র্যাজুয়েট। সে বুঝতেইপারছে না দাদা ধর্মাধিকারী ঠিক কি জানতে চাইছেন। তৃতীয় বার তিনি জিজ্ঞাসা করলেন,ভাই তুমি কি কি কাজ পারো, আমি গ্র্যাজুয়েট একথা বলো না। ধর্মাধিকারী জানতে চাইলেন,তুমি টাইপ করতে জানো? সে বলল – না।রান্না করতে পারো? সে বলল – না।আসবাবপত্র বানাতে পারো? জবাব এল – না।চা-নাস্তা বানাতে পারো? বলল – না,এসব আমি পারি না। আমি তো গ্র্যাজুয়েট। এখন দেখুন, বিবেকানন্দজী কি বলেছেন।বিবেকানন্দর প্রতিটি কথার nature আমাদের মগজকে বেশ জোড়ে নাড়িয়ে দিয়ে যেতেপারে। উনি এমন ভাষাতেই কথা বলেন। উনি খুব মজা করে বলেছেন, ‘ Education isnot the amount of information that we put into your brain and runs ride thatundigested all your life’. জ্ঞানের খনি এমন ভাবে ভরে দেয় যেসেগুলি undigested থেকে যায়। It behaveassimilated five ideas and made than your life and character you have moreeducation than any man who has got by heart whole library. অর্থাৎ, সবার হৃদয়ে আর মগজে হয়তোগোটা লাইব্রেরিটাই ভরা আছে, কিন্তু পাঁচটিনীতি নিয়ে আমি জয় করেছি। ... বলার উদ্দেশ্য হল, উনি Knowledge আর skill কে আলাদা করেছেন। আজ গোটা বিশ্বের হাতে Certificate আছে, যার অর্থ তোমার দখলে কিছু সদগুণ আছে, তাঁরগুরুত্বও আছে। এই সরকার কেবল Skill Development করে সেই বিচারধারাকে আগে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

আমাদের দেশে দক্ষতাউন্নয়ন কোনওনতুন বিষয় নয়। আগে আমাদের নানা ডিপার্টমেন্টে ছড়িয়ে ছিল। তাঁর কোনও মালিক ছিল না । যারযেমন মর্জি, সেই দিশায় চলতো। আমরা এসে এই সব কর্মমুখী দক্ষতার বিষয়গুলিকে এক জায়গায়এনেছি। আলাদা মন্ত্রক বানিয়েছি।আলাদা বিভাগ বানিয়েছি । এদের মূল নজরে আছে দক্ষতা উন্নয়ন , যাতে দেশের তরুণ প্রজন্মকে তৈরি করে দেওয়া যায় , যাতেতাঁদের কারও উপর নির্ভর না করতে হয় । আমার দেশের নবীণ প্রজন্মকে চাকরি অন্বেষণকারী হলে চলবে না , কর্মসৃষ্টিকারী হতে হবে । আমার দেশের তরুণ প্রজন্মকে হাত পাতার দল হলে চলবে না , প্রদানকারী হতে হবে । আর তাই , আজ স্বামীবিবেকানন্দর মতাদর্শকে স্মরণ করছি । আর সেই সঙ্গে উদ্ভাবনের পর, অনুসন্ধানের পর পুরানো বাতিলহয়ে যাওয়া সামগ্রীকে বর্জন করার জন্য আওয়াজ তুলুন । কত ভাল জিনিষই হোক , যত পছন্দই লাগুক না কেন , তাকে ত্যাগ করার জন্য আহ্বানজানান ।

সমাজ জীবনে তখনই প্রগতি হতে পারে যখন নতুন কিছু হবে , নতুন কিছু প্রাণবন্ত হবে । তাহলেই আমরা এরসুফ ল পাব । আর , তার জন্য আমাদেরদেশের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে সেই সাহস চাই , সেই আত্মপ্রত্যয় চাই ,যেখানে উদ্ভাবন কম হবে আর ইচ্ছাশক্তি থাকবে । কিছু মানুষের ভয় হয় , ভাই আমি করতে গিয়ে যদি ব্যর্থ হয়ে যাই ! পৃথিবীতে এমনকোনও মানুষ দেখেছেন না কি যিনি ব্যর্থতা ছাড়া সফল হয়েছেন । কখনও কখনও তো সাফল্যের রাস্তা ব্যর্থতা ইতৈরি করে দেয়। তাই ব্যর্থতা থেকে ঘাবড়ে গেলে জীবনকেপাওয়া যাবে না বন্ধু! যিনি নদীর ধারে দাঁড়িয়ে থাকেন, তিনি কখনও ডোবেন না। যিনি জলেলাফ দিয়ে পড়েন, তিনি ডুবেও যান আবার ডুবতে ডুবতে সাঁতার দিতে শিখে ফেলেন। অনেকেইনদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে ঢেউ গুনে জীবন কাটিয় দেন। যারা সেইসব ঢেউকে পার করার ক্ষমতারাখেন, পুকুরে - ন দী তে সমুদ্রে ঝাপ দিয়ে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার হিম্মত রাখেন, স্বামীবিবেকানন্দ এমন যুবকদের জন্য প্রতীক্ষা করেন। এমন তরুণদের জন্য তিনি অপেক্ষায়থাকেন।

ভারত আজ স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ড আপইন্ডিয়া, মুদ্রা যোজনায় এখন ব্যাঙ্কগ্যারান্টি না থাকলেও ঋণ পাওয়া যা চ্ছে । আমি চাইবো, আমার দেশের নওজোয়ানআমার দেশের সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য নতুন উদ্ভাবন নতুন পণ্য নিয়ে আসবেনআর মানুষের কাছে সেগুলি নিয়ে যাবেন। ভারত এক বিরাট বড় বাজার। আমার দেশ তরুণপ্রজন্মের বুদ্ধি আর সামর্থ্যের নজির দেখার অপেক্ষায় আছে। আর বিবেকানন্দ। যিনি জ্ঞান আর দক্ষতা কে পৃথক করেছিলেন, আজ সময়ের দাবি সেইভাবেই আমরা দক্ষতার গুরুত্ব বাড়াতে থাকি। রাতারাতি এ-কাজ হবে না – বাড়িয়ে যেতে হবে। দেখবেন, ফলাফলঅন্যরকম হবে। উদ্ভাবন আমরা... আমাদের নীতি আয়োগ দ্বারা অটল ‘ ইনোভেশন মিশন অ্যাপ’ চালু করেছি। এর সঙ্গে অটল টিঙ্কারিং ল্যাবস্‌ দেশের ছোটো ছোটো বাচ্চারা, যারা এই রকমের উদ্ভাবনে আগ্রহী, তাদের উৎসাহ দিতে একপরিপূর্ণ আন্দোলন চলছে। নীরবপ্রগতি কিন্তু হচ্ছে । আর,খুব প্রতিভাবান বাচ্চারা নতুন নতুন জিনিষ বানিয়ে আনে। আমি... রাষ্ট্রপতি ভবনেপ্রণবদা যখন ছিলেন, তখন সারা দেশ থেকে এমন শিশুদের তিনি একবার আমন্ত্রণজনিয়েছিলেন। ১২ থেকে ১৫ জন বাচ্চা এসেছিল। তারা নিজেদের উদ্ভাবিত জিনিষগুলিএনেছিল। প্রণব দা আমাকে এই বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আমিগিয়েছিলাম আলাপ করতে। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ১২ থেকে ১৫টি শিশু ছিল, তাঁদেরঅর্ধেকের বেশি নিজস্ব উদ্ভাবন নিয়ে এসেছিল, এরা অষ্ট ম, নব ম, দশম শ্রে ণী রছাত্র। আবর্জনাকে, বর্জ্য কে কিভাবে সম্পদেপরিণত করা যায় , কেমন করে কিছু সৃষ্টি করে তার প্রকল্প নিয়ে চ লে এসেছে । আর দেখুন , স্বচ্ছতা অভিযানের প্রভাব কতটা পড়েছে । তারা যে -সব জিনিসনিয়ে এসেছিল , সেগুলি বলছিল , বাতিল পদার্থআর আবর্জনা দিয়ে কত কিছু তৈরি হতে পারে । আমার বলার তাৎপর্য হল এই যে , ভারতে প্রতিভার কোনও অভাব নেই । আর সেই বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে । আজ গোটা বিশ্বে বিদেশ নীতি নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয় । এই জোট ওই জোট , এই গোষ্ঠী ওই গোষ্ঠী , কোল্ড ওয়্যার এমন সব দারুণ দারুণশব্দ বাছা হয় । কখনও বিবেকানন্দর কথা কেউপড়েছেন ? তার বিদেশনীতি কি ছিল ? স্বামী বিবেকানন্দ সেই সময় বলেছিলেন , ১২০ বছর পরের বিশ্বেরছবিটা দেখতে পাচ্ছি । তিনি ‘এক এশিয়া’র কথা বলেছিলেন , ‘একএশিয়া’ র ধারণা দিয়েছিলেন আর একএশিয়ার ধারণা দিয়ে তিনি বলেছিলেন যে , বিশ্ব যখন সংকটের আবর্তে থাকবে , তখন পথ দেখানোরক্ষমতা যদি কারও থেকে থাকে, এক এশিয়া তে সেই ক্ষমতা থাকবে একটিসাংস্কৃতিক ঐতিহ্যসমৃদ্ধ দেশের । এক এশিয়া আজ বিশ্ব বলছেযে , একুশ শতকে এশিয়া রই । কেউ বলছে চিনে র , কেউ বলছে ভারতের । কিন্তু এতে কোনও মতভেদ নেই যে , সারা দুনিয়া বলছে যে , একুশ শতক এশিয়া রই শতাব্দী ।

১২৫ বছর আগে যে মহাপুরুষ এটা দেখতে পেয়েছিলেন , একএশিয়ার কল্পনা করেছিলেন আর বিশ্বের এই সম্পূর্ণ ছবিটার মধ্যে এক এশিয়ার ভূমিকা কি করে পালন করতেপারবে বুঝেছিলেন । সমস্যাগুলির সমাধান করার মূলগত শক্তি এই এক এশিয়ার মধ্যে কেন রয়েছে । এর হাজার বছরের ঐতিহ্য এর কাছে কেন আছে , এই দর্শ ন বিবেকানন্দর ছিল । আর সেই কারণেই আমাদের আধুনিক পরিসরে বিবেকানন্দকে দেখতে হবে । উনি স্বউদ্যোগকে উৎসাহ দেওয়ারকথা বলেছেন । তার প্রতিটি কথায় চেয়েছেন ভারত সামর্থ্যবান , শক্তিশালী হোক । তার ভিত্তি তাহলে একদিকে কৃষিবিপ্লব এর কথা বলছেন তো অন্য দিকে উদ্ভাবন এর কথা বলছেনআর তৃতীয় দিকে স্বউদ্যোগের কথা বলছেন । আর সমাজের ভেতরে যে ত্রুটি আছে , তার বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলছেন । অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে তিনি এত কথা বলেছেন , পাগলামি বলে বলতেন , এইঅস্পৃশ্যতা , উচু -নিচুর মনোভাবকে তিনি পাগলামিবলতেন । এই মহাপুরুষ এতটা সাড়া দিয়েছেন । আজ যখন দীনদয়ালজীর জন্ম শতবার্ষিকী পালন করছি , তখন ভাবছি ,তিনিও তো অন্ত্যোদয়ের কথা বলতেন ।

মহাত্মা গান্ধী বলতেন , যখনই কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হবে , সমাজের শেষ প্রান্তে যি নি বসে আছেন , তার ভাল হবে কি না , এইটুকুকেবল দেখে নেবেন । আপনার সিদ্ধান্ত সঠিক হবে ।

সম্প্রতি কিছু তরুণ একটা কর্মসূচি পালন করেছেন । সেই কর্মসূচী ছিল , অটলজির সময় যে গোল্ডেন চতুর্ভুজ বানানো হয়েছিল , সেই পথেসফরের কর্মসূচি । সাইকেল নিয়ে গিয়েছিল আর রিলে রেস করেছে । তার সম্ভবত ৬০০০ কিলোমিটার সাইকেলে রিলে রেস করতে করতে গিয়েছেন । তাদের মন্ত্র ছিল খুব ভালো, মন্ত্র ছিল followthe rule and India will Rule. আমরা ১২৫ কোটি দেশবাসী যদি এওটুকুই করে follow the rule, তাহলে বিবেকানন্দজীর যে স্বপ্ন ছিল – আমার ভারত বিশ্বেরগুরু হবে , নিজে থেকেই India will rule কিন্তু We must follow the rule । আর তারজন্য এমন ভাবনা নিয়ে আমরা আজ যখন বিবেকানন্দর শিকাগোভাষণের ১২৫ তম বার্ষিকী আর পণ্ডিত দীনদয়ালজীর জন্ম শতবার্ষিকী পালন করছি, আরসৌভাগ্যের বিষয় সেই দিনেই বিনোবা ভাবের জন্মদিন আর অন্যদিকে সেই ভয়ানক ৯/১১-রবার্ষিকী, যা সংহার করেছিল, বিনাশ করেছিল, বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদের মধ্যে টেনেনিয়েছিল। মানুষ মানুষের শত্রু হয়ে গেল। এই সময় আমরা যারা বসুধৈব কুটুম্বকমের ভাবনানিয়ে চলি, আমরা যারা প্রকৃতির মধ্যে পরমাত্মাকে দেখতে পাই, গাছপালার মধ্যেপরমাত্মাকে দেখতে পাই, নদীকে ও মা বিবেচনা করি এইআমরা, পুরো ব্রহ্মাণ্ডকেই একটি পরিবারমনে করার লোকজন সংকটের আবর্তে থাকা মানবতাকে সংকটের পাকে থাকা বিশ্বকে, আমরা তখনইকিছু দিতে পারব যখন আমরা নিজেদের কথায় গর্ব অনুভব করবো আর সময়ানুযায়ী পরিবর্তনকরবো। যা বেঠিক, সমাজের জন্য বিনাশকারী, তা নিজের সময়ে যতই স্বীকৃত হোক না কেন,যদি আজকের সময়ে তা না হয়, তবে তাকে নষ্ট করার জন্য ঘোষণা কর তে বেরিয়েপড়া উচিত।

কিন্তু আমার তরুণ বন্ধুরা, ২০২২ সালে... স্বামী বিবেকানন্দযে রামকৃষ্ণ মিশনের সূত্রপাতকরেছিলেন , তার ১২৫ বছর হবে । ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর হয়ে যাবে । আমরা কোনও সংকল্প নিতে পারি না কি ? আর সংকল্প …আমার জীবনব্রত হওয়া উচিত । এটা আমি করব আর আপনি দেখবেন , জীবনের আলাদা আনন্দ পাওয়া যাবে । কখনও কখনও আমাদের দেশে বিতর্ক হয়, যারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে র ছাত্র , বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি পদে যারা এখনবসে আছেন , তারা নির্বাচনে জেতা ছাত্রনেতা ,সবাই … .. ছাত্র রাজনীতি কোথায় শুরু হয়ে কোথায় পৌছেছে, সে টা চিন্তারবিষয় হয়ে গেছে। কিন্তু আমি কখনও কখনও দেখছি ছাত্র রাজনীতি করার লোকেরা যখননির্বাচনে লড়েন, তখন আমরা এই করবো, সেই করবো – এই সব বলেন। কিন্তু এখনও আমি কোনওছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের বলতে শুনিনি যে, আমরা ক্যাম্পাস পরিস্কাররাখবো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এটা । আপনি যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে র ক্যাম্পাসে ভোট হওয়ার পরের দিন যান , সেখানে কী পড়ে আছে দেখুন । কি হচ্ছে সেখানে … ফের বন্দেমাতরম … একুশ শতাব্দীকে ভারতের শতাব্দী বানানোরচিন্তা আছে ? ২০২২ -এ যদি স্বাধীনতার ৭৫ সালপালন করতে হয় , তা হ লে গান্ধিজীর স্বপ্নের ভারত , ভগৎ সিং , সুখদেব , রাজগুরুর স্বপ্নেরভারত , সুভাষবাবুর স্বপ্নের ভারত , বিবেকানন্দেরস্বপ্নের ভারতের জন্য আমাদের কি কোনও দায়িত্ব নেই ? আর তাই ,ওই ম্যানেজমেন্টের লোকেরা পড়ায়না , everybody is somebody, nobody হলেন যিনি ম্যানেজমেন্টের ছাত্র, সেসম্ভবত পড়েছে , কিন্তুঅবশেষে কিছুই নেই আর তাই জরুরি হল , আমি এটা করবো , এটা আমারদায়িত্ব । আপনি দেখবেন , ভারতের পরিবর্তনের জন্য বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না । যদি ১২৫ কোটি ভারতবাসী এক পা এগোয় , তাহলে ভারত ১২৫ পা এগিয়ে যা বে ।

আমি দেখেছি কলেজে কারও ভাল লাগে , কারও খারাপ লাগে । কারও বিরোধিতা করেন না এমন লোক খুবকমই আছেন । কলেজে আলাদা আলাদা দিবস পালন করা হয় । আজ রোজ ডে । কিছু লোকদের ভাবনা এর বি রো ধী । এর মধ্যে এখানে বসে থেকে আমি এর বিরোধী নই । দেখুন , আমদের রোবটতৈরি করার কথা নয় । আমাদের সৃজনশীলতা চাই । আমাদের ভেতরের মানবমন, আমাদের সংবেদনা প্রকাশ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বর কোনও জায়গা নেই । কিন্তু কখনও কি আমরা ভেবেছি যে , একটা হরিয়া নার কলেজ আর সেখানে আজতামিল দিবস পালন করার সিদ্ধান্তহোক । পাঞ্জাবের ক লেজে কেরল দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হোক । সেখানকার দুটি গান গাইবো , দুটি গান শুনবো , তাদেরমতো জামাকাপড় পরে সেদিন কলেজে আসব । হাত দিয়ে ভাত খাওয়ার অভ্যাসকরবো । কলেজে একটা মালায়ালম ফিল্ম দেখবো , তামিল ফিল্ম দেখবো , সেখানথেকে কিছু যুবক কে ডে কে বলবো – ভাই তোমাদেরতামিলনাড়ুর প্রত্যন্ত গ্রামে কি ধরণের খেলা খেল । এসো আমরা সেই খেলা খেলি । আমাকে বলুন , দিবস পালনের জন্য পালন করবো না । সেই দিবসসুফলদায়ক হবে কি হবে না । এক ভারত শ্রেষ্ঠভারত হবে কি হবে না । আমাদের বৈচিত্র্য … আপনারা তো বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের প্রশ্নে অনেকশ্লোগান দেন , কিন্তু সেই বৈচিত্র্য নিয়ে গর্বের সঙ্গে জীবনধারণেরচেষ্টা করেন কি ? যতক্ষণ আমাদের ভারতের প্রতিটি রাজ্যের প্রতিআমাদের গর্বের মনোভাব তৈরি না হবে , প্রত্যেক ভাষার প্রতি গর্বেরভাব জন্ম না নেবে … … আমার মনে আছে, এখুনি আমার তামিল বিশ্ববিদ্যালয়ের, তামিলনাড়ুর যুবক আমার সামনে এসে প ড়লে আমি তাকে ‘ বণ্ণক্কম ’ বলতেই সে দারুণ খুশি হয়ে গেল। একেবারে তার মনকে ছুয়ে গেল,এটা তার নিজস্ব ভাষা। আমাদের কি কখনও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য একটা পরিবেশ তৈরিকরার মত দিবস পালন করার ইচ্ছে হয় না! আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিখ গুরুদেরনামে দিবস পালনের ইচ্ছেহয় না ? মনে হয় না , শিখগুরুরা কত ত্যাগ , তপস্যা , আত্মদান করে ছেন সেগুলি দেখি তো একবার । শুধুই ভাংড়ায় আটকে থাকবেন না কি ! পরোটা আর ভাংড়া – পাঞ্জাবএতে অনেক আগে । আর তাই , আমরা কিছু করতে চাইলে দেখব সৃজনশীলতা ছাড়া জীবনে কিছুই নেই । আমরা রোবট তৈরি হতে পারব না । আমাদের ভিতরের মানবসত্ত্বা র সর্বদাই মাথা চাড়া দেওয়া উচিত । তাই সেটাই করুন যাতে দেশের শক্তি বাড়ে , সামর্থ্য বাড়ে আর দেশের যা দরকার তা যেন পাওয়াযায় । যতদিন আমরা এর থেকে দূরে থাকব , ধীরে ধীরে আমরাই সঙ্কুচিত হয়ে যাব ।

বিবেকানন্দ কূপমণ্ডু ক তা নিয়ে এক বিরাটকথা বলতেন । কুয়োয় পড়া একটি ব্যাঙের গল্প বলতেন । আমরা তেমন হতে পারবো না । আমরা তো জ ড় জগ ৎ -এর লোক , পুরো বিশ্বকে নিজেদের ভেতর সমাহিত করার ভাবনাআমাদের । সেই আমরাই যদি একটি কোটরে বন্ধ হয়ে যাই , তাহলে কেউ আমাদের কথা ভাবতেও আসবে না । উপনিষদ থেকে উপগ্রহ পর্যন্ত আমাদের যাত্রা । বিশ্বের প্রত্যেকটি চিন্তা ধারা , যদি সেটি আমাদের পক্ষে অনুকূল হয় , মানবতারজন্য মঙ্গলদায়ক হয় , সেটি স্বীকার করতে আমরা কখনও সঙ্কোচ করিনি । আর আমরা ভয়ভীতও নই , যে কেউ আসবে আর আমাদের পদদলিত করে যাবে । না মশাই , যারা আসবে ,আমরা তাদের হজম করে ফেলব , এই ভাবনাতেই আমরা আছি । তাকে আপন করে নেব, তাঁর মনোভাব আত্মিকরণ করে এগিয়ে যাব।তবেই তো ভারত বিশ্বকে কিছু দেবার মতো সামর্থ্যবান হবে । তখন আমরা সংরক্ষণমূলকস্বভাব নিয়ে নিজেদের কাজ চালাতাম। আমাদের নিজেদের অন্তরে এতটা সামর্থ্য থাকা উচিৎযে বাইরের বিষয় নিয়ে আমরা সমস্যায় পড়ব, এমন ভাবার প্রয়োজন নেই বন্ধুগণ। আমি তো আজবিশ্বের যেখানেই যাই, অনুভব করি যে, ভারতের প্রতিভাকে বিশ্বের দেখার দৃষ্টিতেপরিবর্তন এসেছে। এই শক্তি রাজনৈতিক শক্তিরকারণে নয়, জনশক্তির কারণে। এই ১২৫ কোটি দেশবাসীর শক্তির কারণে। কিন্তু আমরা যদিনিজেদের খারাপ সময়টাকে সৎরঞ্জির নীচে লুকিয়ে রাখতে থাকি, তা হলে দুর্গন্ধ ও পচনছাড়া আর কিছুই হবে না। আমাদের এই খারাপগুলির বিরুদ্ধে লড়তে চাই । ভারত ’কে আধুনিক করে তুলতে আমাদের স্বপ্ন থাকা চাই । আমাদের দেশ কেন আধুনিক হবে না ? আমার দেশের নবীন প্রজন্ম কেন বিশ্বের নবীনপ্রজন্মের সমকক্ষ হবে না? তারা কেন সামর্থ্যবান হবে না। আর সেজন্য ...... আমিএকবার একজন মহাপুরুষের সান্নিধ্যে এসেছিলাম। অনেক বছর আগের কথা, তো তিনি কোথাওআমার ভাষণ পড়ে হয়তো তা নিয়ে কথা তোলেন। তখন আমি রাজনীতিতে ছিলাম না। তিনি আমাকেবলেন, দেখুন ভাই, আপনি কি জানেন যে আমাদের ভারতে একটি সমস্যা রয়েছে!

আমি বললাম, কী? তিনি বলেন, আমাদের দেশে পাঁচ হাজারবছর পুরনো অমুক কিছু ছিল, দু;হাজার বছর আগে তমুক কিছু ছিল ...... বুদ্ধের আমলে এমনছিল, রামের আমলে এমন ছিল। এ থেকে বাইরে বের হই না। তিনি বলেন, বিশ্ব আজ কোথায়পৌঁছে গেছে, সেই ভিত্তিতে আপনাদের মূল্যায়ন করে। আমরা ভাগ্যবান যে, আমাদের এক মহান ঐতিহ্য রয়েছেকিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা তার গৌরবগান থেকে এগিয়ে যেতে তৈরি নই। গৌরবগানএগিয়ে যাওয়ার প্রেরণার জন্য চাই। গৌরবগান পিছিয়ে পড়ে থাকার জন্য নয়। আমাদের গৌরবগাথাথেকে এগিয়ে যেতে হবে আর যুবাবস্থা একটি পরিস্থিতির নাম নয় বন্ধুগণ, যুবাবস্থা একটিমনঃস্থিতির নাম। যাঁরা অতীতকালে হারিয়ে যান, তাঁদের যুবক বলে মানতে পারি না।কিন্তু অতীতের যা কিছু শ্রেষ্ঠ, তাকে নিয়ে যারা আগামীকালের জন্য ভাবতে পারেন,বুঝতে পারেন আর শুনতে পারেন, তারাই যুবাবস্থায় আছে । সেই নবীনতাকে অন্তরে ধারণ করেকিভাবে এগিয়ে যাবেন , সেই সংকল্প নিয়েআপনাদের এই ভাবনার সঙ্গে আজ দীনদয়াল উপাধ্যায়’কে আমি আজ প্রণাম জানাই, স্বামীবিবেকানন্দকে প্রণাম জানাই, শ্রদ্ধেয় বিনোবা ভাবে’কে প্রণাম জানাই আর আপনারা সবাই অর্থাৎআমার দেশবাসী নবীনদের অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Cabinet approves minimum support price for Copra for the 2025 season

Media Coverage

Cabinet approves minimum support price for Copra for the 2025 season
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 ডিসেম্বর 2024
December 21, 2024

Inclusive Progress: Bridging Development, Infrastructure, and Opportunity under the leadership of PM Modi