দেশের প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী মাননীয় লালকৃষ্ণ আডবানী মহোদয়, দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মাননীয় রাজনাথ সিং মহোদয়, আমার মন্ত্রিসভার অন্যান্য সহযোগীবৃন্দ, আমার সংসদের সহকর্মীগণ ও পুলিশ বাহিনীর সম্মানিত আধিকারিকবৃন্দ, ‘হট স্প্রিং ইন্সিডেন্ট’ – এর সাক্ষী বীরেরা, উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্যগণ, অন্যান্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ এবং আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা। আমাদের সকলের জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যখন শৌর্যকে প্রণাম জানাতেই হয়। গর্বে আমাদের বুক ভরে ওঠে। কিন্তু পাশাপাশি, মনের ভেতর সমবেদনার জোয়ারও অনুভব করি। আমার জন্য বর্তমান মুহূর্তটিও তেমনই।
দেশের নিরাপত্তায় সমর্পিত প্রত্যেক ব্যক্তিকে, এখানে উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্যদের আমি পুলিশ স্মৃতি দিবস উপলক্ষে সাদর প্রণাম জানাই। আজকের দিনে আমরা সেই সাহসী পুলিশ বীরদের স্মরণ করব, যাঁরা লাদাখের তুষারাচ্ছাদিত অঞ্চলে দেশের প্রথম প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর নিরাপত্তা রক্ষা করতে গিয়ে নিজেদের জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করেছেন। স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত নিজেদের কর্তব্য সম্পন্ন করতে গিয়ে যাঁরাই নিজের জীবন, যৌবন সর্বস্ব উৎসর্গ করেছেন, দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও আধা সামরিক বাহিনীর সেই পুলিশ বীর-বীরাঙ্গনাদের প্রত্যেককে আমি শত শত প্রণাম জানাই। যেসব শহীদদের পরিবারের সদস্যরা এখানে আছেন, আর যাঁরা আসতে পারেননি, তাঁদের সকলকেও আমি নত মস্তকে প্রণাম জানাই। কারণ, আপনারাও দেশের জন্য এত বড় ত্যাগ করেছেন।
বন্ধুগণ, এটা আমার সৌভাগ্য যে, সেবা ও সমর্পনের অমরগাঁথা সৃষ্টিকারী এই বীর-বীরাঙ্গনাদের স্মৃতিতে গড়ে তোলা রাষ্ট্রীয় পুলিশ স্মারক জাতির প্রতি উৎসর্গ করার সৌভাগ্য হয়েছে। এই স্মারকের ‘সেন্ট্রাল স্ট্রাকচার’ প্রত্যেক পুলিশের সামর্থ্য, শৌর্য এবং সেবা ভাবের প্রতীক। আধারশিলার নীচ দিয়ে প্রবাহিত জলপ্রবাহ আমাদের সমাজে নিরন্তর প্রবাহিত সদ্ভাবনার প্রতীক। এর ‘দ্য ওয়াল অফ ভেলৌর’ – এ সেই ৩৪ হাজার ৮৪৪ জন পুলিশ কর্মীর নাম খোদিত হয়েছে, যাঁরা দেশের নানা প্রান্তে ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যে নানা সমস্যার মোকাবিলা করতে গিয়ে আত্মোৎসর্গ করেছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এই স্মারকের নব-নির্মিত প্রদর্শনশালায় সজ্জিত প্রতিটি বস্তু আগামীদিনে প্রত্যেক দেশবাসীকে বিশেষ করে আমাদের যুবসম্প্রদায়কে, আমাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিজেদের পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য পরিবেশন করে প্রেরণা যুগিয়ে যাবে। আপনারা সবাই শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা-তুষারপাত- যে কোনও উৎসব অনুষ্ঠানের সময় দিন রাত অবিরাম অতন্দ্র প্রহরা কিংবা নিজের কাজে অটল থাকেন। এই স্মারক দেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মনে আপনাদের কর্তব্য-নিষ্ঠার গাথা যেন এভাবেই সঞ্চারিত হয়।
বন্ধুগণ, দেশে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার আবহ সৃষ্টিকারী অনেক ষড়যন্ত্রকে আপনারা নস্যাৎ করে দিয়েছেন। অনেক ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সাধারণ মানুষ জানতেই পারেন না। কিন্তু আপনারা নিজেদের প্রাণ হাতে নিয়ে সেগুলির মোকাবিলা করেন, সেসব বীরত্বের জন্য সার্বজনিকভাবে আপনারা কখনও প্রশংসিত হন না। দেশে আপনাদের এই কর্তব্য-নিষ্ঠা ও সেবাভাবের জন্যই শান্তিতে অতিবাহিত দেশের মানুষের প্রতিটি মুহূর্ত শান্তিপূর্ণভাবে কাটানো সম্ভব হচ্ছে ।
বন্ধুগণ, আজ আমাদের জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে সংগ্রামরত প্রত্যেক আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান ও পুলিশদের কথা মনে রাখতে হবে। দেশের নকশাল প্রভাবিত জেলাগুলিতে যে জওয়ানরা অতন্দ্র প্রহরায় রয়েছেন, তাঁরাও অসাধারণ কাজ করছেন। আপনাদের প্রচেষ্টায় আজ দেশে নকশাল প্রভাবিত জেলার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। সেসব অঞ্চলের অধিকাংশ যুবক-যুবতী এখন দেশের মূল ধারার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির বিরুদ্ধেও আপনাদের লড়াই শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠেছে। উত্তর-পূর্ব ভারত তথা দেশের উন্নয়নে আপনাদের এই অবদান অনস্বীকার্য।
বুন্ধুগণ, আজ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় ত্রাণ ও অনুসন্ধান কার্যে যুক্ত বীর জওয়ানদের কথাও মনে রাখতে হবে। যেমন – গত বছর আপনারা বিভিন্ন বিপর্যয় এনডিআরএফ কিংবা এসডিআরএফ ব্যাচ পরা পোশাকে জওয়ানদের বিপর্যয়গ্রস্ত মানুষকে রক্ষার জন্য আপ্রাণ লড়াই করতে দেখেছি। তাঁদের সাহস, সমর্পন এবং সেবাকে কখনও ভুলবেন না। অনেকে তো জানেনই না যে, বড় কোনও বাড়ি ধ্বসে গেলে, নৌকাডুবি হলে, আগুন লাগলে, রেল দুর্ঘটনা হলে – ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে কারা সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়েন?
দেশের প্রত্যেক রাজ্যের প্রত্যেক পুলিশ স্টেশনে মোতায়েন, দেশের প্রতিটি সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব যাঁরা প্রতিনিয়ত পালন করে যাচ্ছেন, পাশাপাশি বিপর্যয়ের সময়ে ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে যাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েন, তাঁদের সকলকে আজ অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ, এই রাষ্ট্রীয় পুলিশ স্মারক নিয়ে আমি গর্বিত। কিন্তু আমার প্রশ্ন – এই স্মারক গড়ে তুলতে স্বাধীনতার পর ৭০ বছর কেন লেগে গেল? যে ‘হট স্প্রিং ইন্সিডেন্ট’ – এর দিনটিকে পুলিশ স্মৃতি দিবস উপলক্ষে পালন করা হয়, সেটিও তো ৬০ বছর আগের ঘটনা। তা হলে এত বছরের অপেক্ষা কেন?
বন্ধুগণ, দেশের জন্য শহীদ বীর পুলিশদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই স্মারক গড়ে তোলার ভাবনাকে ২৫-২৬ বছর আগেই সরকার মঞ্জুর করেছিল। কিন্তু একে বাস্তবায়িত করার প্রথম চেষ্টা করেছিল অটল বিহারী বাজপেয়ী নেতৃত্বাধীন সরকার। ২০০২ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মাননীয় আডবানীজি এর শিলান্যাসও করেছিলেন। আজ আডবানীজি এখানে স্বয়ং উপস্থিত। নিজের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে দেখে যেমন গর্ববোধ করছেন, তেমনই এটাও ভালোভাবেই জানেন যে, তাঁর দ্বারা শিলান্যাসের পরও কিভাবে এই স্মারক নির্মাণের কাজ আর এগোয়নি।
আমি স্বীকার করি যে, আইনি প্রতিবন্ধকতার কারণে কয়েক বছর কাজ থেমে ছিল। কিন্তু পূর্ববর্তী সরকার যদি চাইতো, তা হলে এই স্মারক অনেক বছর আগেই তৈরি হয়ে যেত।
২০১৪ সালে আমরা আবার ক্ষমতায় এসে এর জন্য বাজেট বরাদ্দ করেছি এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আজ এই স্মারক দেশবাসীর উদ্দেশে সমর্পন করতে পারছি। হয়তো ভালো কাজের জন্যই ঈশ্বর আমাকে বেছে নিয়েছেন, আমাকে তাঁর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্যসম্পাদন করার সংস্কৃতি আজ বিকশিত হয়েছে, আর এটাই আমাদের কাজ করার পদ্ধতি।
আপনাদের হয়তো মনে আছে যে, গত বছর দিল্লিতে আম্বেদকর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার উৎসর্গ করেছিলাম। সেটির উদ্যোগও প্রথম ১৯৯২ সালে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পর দুই দশক সেটিকে ফাইল চাপা রাখা হয়। আমরা ক্ষমতায় এসে সেই ফাইল খুঁজে বের করি, শিলান্যাস করি আর গত বছর জাতির উদ্দেশে উৎসর্গও করে দিই। তেমনই ২৬ আলিপুর রোডে বাবাসাহেব আম্বেদকরের স্মৃতিতে গড়ে তোলা ন্যাশনাল মেমোরিয়ালের কাজ অটলজির সময়েই শুরু হয়েছিল। তারপর থেমে গিয়েছিল। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর শিলান্যাস করেছি এবং এ বছর এপ্রিলে সেটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আজকের এই সুদৃশ্য স্মারক উদ্বোধনেরও সৌভাগ্য আমার হ’ল।
বন্ধুগণ, কখনও আমার মনে কিছু প্রশ্ন জাগে, দেশের জন্য যাঁরা সর্বস্ব ত্যাগ করেন, সেই বীরদের প্রতি, তাঁদের আত্মোৎসর্গের প্রতি পূর্ববর্তী সরকারগুলির এত ঔদাসিন্যের কারণ কী? এই ঔদাসিন্য তো আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অনুরূপ নয়। আমাদের ঐতিহ্য তো খালি পেটেও দেশের সম্মান রক্ষায় সবকিছু উৎসর্গ করে দেওয়া। আমি গর্বিত যে, বিগত চার বছরে আমরা সেই ঐতিহ্যকে পুনঃস্থাপিত করার ক্ষেত্রে সফল হয়েছি।
আজ রাষ্ট্রীয় পুলিশ মেমোরিয়ালের উদ্বোধন সেই ঐতিহ্যেরই অংশ। আজ থেকে ঠিক ১০ দিন পর ৩১ অক্টোবর আমার গুজরাটের কেউড়িয়া-তে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের একটি গগণচুম্বী মূর্তির আবরণ উন্মোচনের সৌভাগ্য হবে। বিশ্বের সর্বোচ্চ ঐ মূর্তিটি দেশের প্রতি সর্দার সাহেবের অবদানের প্রতীক হয়ে উঠবে।
বন্ধুগণ, আমার মতে, এই স্মারক যেন নিছকই একটি পর্যটন স্থল না হয়ে ওঠে – সেটা দেখতে হবে। এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে এটি আগামীদিনে প্রত্যেক দেশবাসীকে বিশেষ করে আমাদের যুবসম্প্রদায়কে, আমাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিজেদের পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য পরিবেশন করে প্রেরণা যুগিয়ে যায়। আমি মনে করি, এই বীরদের কথা দেশের প্রত্যেক গ্রামের প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রদর্শন করা উচিৎ। সেজন্য আজকের এই অনুষ্ঠানকে আমি আপনাদের মাঝে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক বলে ঘোষণা করতে চাই।
বন্ধুগণ, দেশের যে কোনও বিপদে আজ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় ত্রাণ ও অনুসন্ধান কার্যে সবার আগে আধা সামরিক বাহিনীর পুলিশরাই পৌঁছয়। তাঁদের ছাড়া এনডিআরএফ – এর কথা ভাবাই যায় না। বড় কোনও বাড়ি ধ্বসে গেলে, নৌকাডুবি হলে, আগুন লাগলে, রেল দুর্ঘটনা কিংবা অন্য যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাঁরা নিজের নিজের ব্যাটেলিয়নে ফিরে যান। এই বিপর্যয় মোকাবিলায় অন্যের জীবন রক্ষাকারী এহেন পরাক্রমী সেবা পরায়ণ বীরদের জন্য আজ আমি একটি সম্মান ঘোষণা করছি। প্রতি বছর ভারতমাতার এহেন বীর সন্তানদের নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিবস ২৩ জানুয়ারিতে তাঁরই নামাঙ্কিত এই সম্মান প্রদান করা হবে। অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলা, ইংরেজদের ভারত ছাড়তে বাধ্য করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালনকারী নেতাজীর নামে এই সম্মান দেশের গৌরব বৃদ্ধি করবে। আজই নেতাজী স্থাপিত আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫ বছর পূর্ণ হ’ল।
ভাই ও বোনেরা, শৌর্য, পরাক্রম এবং আত্মবলিদানে বৈভবশালী আমাদের পরাক্রমী অতীতের পাশাপাশি বর্তমান ও ভবিষ্যতের সমস্যাগুলির দিকেও আপনাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাই। আজ প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে সম্পূর্ণ রূপে বদলে দিয়েছে। এর ফলে, অপরাধের প্রকৃতিও বদলে গেছে। গুজব এবং সাইবার ক্রাইম এখন দেশ ও সরকারের সামনে একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে অন্যান্য এজেন্সির সাহায্য না নিয়ে পুলিশকে প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের মেল-বন্ধনে নিজেদের মতো করে কাজ গুছিয়ে নিতে হচ্ছে।
বন্ধুগণ, এই লক্ষ্যে সারা দেশে অনেক সার্থক প্রচেষ্টার কথা আমরা জানি। অনেক রাজ্যে পুলিশ এমনকি সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা অনলাইনে এফআইআর-পরিষেবা প্রদান করছে। ট্রাফিক সম্পর্কিত নানা অভিযোগও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মোকাবিলা করছে। এগুলি অত্যন্ত প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। এগুলিকে আমাদের সেই স্তরে নিয়ে যেতে হবে যাতে সামান্য অভিযোগে ছোটখাট বিষয় যাচাই করার জন্যে কাউকে থানায় না নিয়ে যেতে হয়!
বন্ধুগণ, আপনারা সবাই জানেন যে গতবছরই সরকার পুলিশ-ব্যবস্থায় সংস্কারের জন্য বড় উদ্যোগ নিয়েছে। ‘পুলিশ বল আধুনিকীকরণ প্রকল্প’’ বা এমপিএফ-এর মাধ্যমে সরকার ২০১৯-২০ সালের মধ্যে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা দেশে পুলিশ পরিকাঠামো প্রযুক্তি উন্নয়ন কিম্বা প্রশিক্ষণ খাতে ব্যয় করবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পুলিশের গতি ও ক্ষিপ্রতা বৃদ্ধির জন্যে আধুনিক অস্ত্র, বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জাম, যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ স্টেশনগুলিকে একটি সুসংহত ব্যবস্থায় এনে ন্যাশনাল ডেটাবেস অফ ক্রাইম এবং ক্রিমিনাল রেকর্ড সংরক্ষণের প্রকল্প নিয়েও কাজ হচ্ছে। এই ডেটাবেসকে বিচার ব্যবস্থার অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেমন, ফরেনসিক ল্যাবরেটরি ও আদালতের সঙ্গেও যুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে।
আমাদের আইন ব্যবস্থা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে সরকার প্রত্যেক রাজ্যের প্রতিটি শহরে স্মার্ট প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে চায়। কিন্তু প্রযুক্তি সবসময় মানবিক সংবেদনশীলতার অভাবকে পূরণ করতে পারে না। সেজন্য পুলিশের প্রত্যেক সদস্যের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখবেন, আপনারা দেশের সবচেয়ে দুর্বল দলিত, পীড়িত, শোষিত মানুষের প্রথম রক্ষাকর্তা। প্রথম বন্ধু, যাঁদেরকে কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষ সবার আগে মনে করেন। কাজেই আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি আপনাদের দায়িত্ব সংবেদনশীলতার সঙ্গে সাধারণ মানুষের দুঃখ বোঝা এবং তাঁদের চোখের জল মোছাও। থানায় পৌঁছনো প্রত্যেক পীড়িত ও শোষিত ব্যক্তিকে এক গ্লাস ঠান্ডা জল খাওয়ালে, মনোযোগ দিয়ে তাঁদের কথা শুনলে পুলিশের সঙ্গে সমাজের বন্ধন আরও শক্তিশালী হবে। এই বন্ধন যখন শক্তিশালী হবে, তখন সহযোগিতা ও গণঅংশীদারিত্বের ব্যবস্থাও আরও শক্তিশালী হবে। এতে আপনারা অপরাধ নিরাময়ের ক্ষেত্রে জনগণের পক্ষ থেকে অনেক বেশি সাহায্য পাবেন – এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। অবশেষে, আমি আরেকবার পুলিশ স্মৃতি দিবস উপলক্ষে এই আধুনিক রাষ্ট্রীয় পুলিশ স্মারক জাতির উদ্দেশে সমর্পন করে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আমি দেশের প্রত্যেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের অনুরোধ জানাবো যে, তাঁরাও যেন বিশেষ কর্মসূচি গড়ে তুলে এখানে আসেন এবং এই শহীদ পুলিশ কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান।
এই দীর্ঘ তালিকায় আপনাদের রাজ্যের যে বীরদের নাম রয়েছে, তাঁদেরকে বিশেষভাবে সম্মান জানান। রাজ্যের উচ্চ আধিকারিকদের নিয়ে এখানে আসুন। দেশের সমস্ত পুলিশ কর্মীদের সেবা ও সমর্পনকে প্রণাম জানিয়ে আর আমার এই পুলিশ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যদের আগামী উৎসবের দিনগুলির জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি। আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।