QuoteToday women are excelling in every sphere: PM Modi
QuoteIt is important to recognise the talent of women and provide them with the right opportunities: PM Modi
QuoteSelf Help Groups have immensely benefitted people in rural areas, especially women: PM Modi
QuoteTo strengthen the network of Self Help Groups across the country, Government is helping them economically as well as by providing training: PM

নমস্কার।

 

আজ আমাকে আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য দূরদূরান্তের গ্রামগুলিতে কয়েক কোটি মায়েরা সমবেত হয়েছেন। এমন কে আছেন, যিনি এই সৌভাগ্য থেকে প্রাণশক্তি ও কাজ করার সাহস আহরণ করবেন না! হ্যাঁ, আপনাদের আশীর্বাদ ও ভালোবাসাই আমাকে সর্বদা দেশের জন্য কিছু না কিছু করার নতুন শক্তি যোগায়। আপনারা প্রত্যেকেই নিজস্ব সংকল্পে ঋদ্ধ এবং উদ্যমে সমর্পিত। আপনারা টিম হিসাবে কাজ করেন। আপনাদের মধ্যে অনেকেরই দারিদ্র্যের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সৌভাগ্য হয়নি। কিন্তু আমি মনে করি, বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আমার ভারতের গরিব মা ও বোনেদের কাছ থেকে এই ‘টিম স্পিরিট’ ও মিলেমিশে কাজ করার অভিজ্ঞতা, কাজ ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে কিভাবে সাফল্য পাওয়া যায়, তা নিয়ে গবেষণা করতে পারে।

 

আমরা যখন নারী ক্ষমতায়নের কথা বলি, তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হ’ল মহিলাদের অভ্যন্তরীণ শক্তি, যোগ্যতা এবং দক্ষতাকে চিহ্নিত করার সুযোগ ও পরিবেশ তৈরি করা। মহিলাদের কিছু শেখানোর প্রয়োজন পড়ে না। তাঁদের ভেতরে অনেক কিছু থাকে কিন্তু সেগুলি বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায় না। কিন্তু যেদিন আমাদের মা ও বোনেরা সুযোগ পেয়ে যান, তাঁরা চূড়ান্ত সাফল্য অর্জনের জন্য যে কোনও বাধা অতিক্রম করতে পারেন। মহিলা কি  না সামলান! কাকভোর থেকে রাত পর্যন্ত কত ধরণের কাজই তাঁদের করতে হয়! নিজের পরিবার, গ্রাম ও সামাজিক জীবনে পরিবর্তনের জন্য তাঁদের পক্ষে যতটা সম্ভব, তারচেয়ে বেশিই করেন। আমাদের দেশের মহিলাদের সামর্থ্য আছে, শক্তি আছে, লড়াই করার অদম্য সাহস আছে। আমার মতে, নারী ক্ষমতায়নের জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হ’ল আর্থিক স্বনির্ভরতা। একজন মহিলা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হলে, তাঁর ইতিবাচক ভূমিকা পরিবারটিকেও ইতিবাচক করে তোলে। সন্তানদেরও তিনি বলেন – এটা কর, এটা করবে না। স্বামীকেও যথাযথ পরামর্শ দিতে পারেন। মহিলাদের আর্থিক সামর্থ্য বৃদ্ধি পেলে সামাজিক জীবনের কুসংস্কার দূরীকরণেও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। তখন আর তাঁরা কুসংস্কারের সঙ্গে সমঝোতা করেন না। আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য না থাকলে অনেক সময়েই অনেক অন্যায়ের সামনে মাথা নত করতে হয়। কিন্তু আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা এনে দেয়। আজ দেশে যে কোনও ক্ষেত্রে মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। আমাদের মা ও বোনেদের উদ্যোগ ছাড়া পশুপালনের কথা কেউ কি কল্পনাও করতে পারেন? তাঁদের সক্রিয় অংশীদারিত্ব ছাড়া কৃষিকাজ কি চলতে পারে? অনেকেই হয়তো জানেন না, তাঁরা গ্রামে গেলে বুঝতে পারবেন যে মেয়েরা সারাদিন কত কাজ করেন। পশুপালন ও দুগ্ধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে মায়েরাই প্রায় ১০০ শতাংশ দায়িত্ব পালন করেন। পশুপালনে যথেষ্ট পরিশ্রম রয়েছে। সেজন্য দেশের গ্রামে গ্রামে আমাদের মায়েরা একত্রিত হয়ে কোনও উদ্যম নেন, সেই মিলিত উদ্যমের সাফল্যই আজ সারা দেশে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে।

 

ভারত সরকার দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা,

 

রাষ্ট্রীয় গ্রামীণ আজীবিকা মিশনের মাধ্যমে দেশের গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং শ্রমিকদের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে তোলা হচ্ছে। আমি দেখেছি যে, একদম লেখাপড়া জানেন না, সেরকম মহিলাদেরও যদি জিজ্ঞেস করা হয়, তাঁরা সহজেই ‘সেলফ হেল্প গ্রুপ’ – এই ইংরাজিটি বলতে পারেন। এর মানে এই শব্দবন্ধটি জনমানসে কতটা গভীরে পৌঁছেছে – তা কল্পনা করা যায়। ‘স্বনির্ভর গোষ্ঠী’ বললে বরং অনেকে বুঝতেই পারেন না। এই গোষ্ঠীগুলি দেশের গ্রামে গ্রামে দরিদ্র মহিলাদের সচেতন করছে, তাঁদের আর্থিক উন্নতির ভিত্তি স্থাপন করছে, সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁদের ক্ষমতায়ন করছে। দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা, রাষ্ট্রীয় গ্রামীণ আজীবিকা মিশনের মাধ্যমে সারা দেশে আড়াই লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতে কোটি কোটি গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে এবং সফলও হয়েছে। তাঁদের স্থায়ী উপার্জনে সুযোগ তৈরি করেছে। দেশের প্রত্যেকটি রাজ্য এই প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে। সেজন্য আমি প্রত্যেক রাজ্য ও সেখানকার আধিকারিকদের অভিনন্দন জানাতে চাই। তাঁরা এই প্রকল্পগুলিকে লক্ষ-কোটি মহিলাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাঁদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে, আমি জেলাস্তরের আধিকারিকদের অনুরোধ করব যে, আপনাদের জেলায় এই ধরণের কাজে যে আবেগপূর্ণ বাস্তব কাহিনী রয়েছে, সেগুলি সংগ্রহ করুন এবং সেগুলি লিখে সংকলন প্রকাশ করুন। সরকারি নথির মতো লিখবেন না। সহজভাবে লিখবেন, তা হলে দেখবেন, তাঁরা ও তাঁদের পরিবারের মানুষজন কত আনন্দ পাবেন। অন্যরাও জানতে পারবেন যে, কেমন অসাধারণ কাজ তাঁরা করেছেন। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, ইতিমধ্যেই দেশের প্রায় ৫ কোটি মহিলা সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে প্রায় ৪৫ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে তুলেছেন। এভাবে এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি দেশে ৫ কোটি পরিবারের কর্মসংস্থান করেছে। অনেকের ক্ষেত্রে এটি পরিবারের বিকল্প আয়ের সুযোগ গড়ে তুলেছে। এ ব্যাপারে আমি আপনাদের কিছু পরিসংখ্যান দিতে চাই।

আমরা সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার আগে সারা দেশে ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ৫ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে উঠেছিল। এগুলির মাধ্যমে মাত্র ৫০-৫২ লক্ষ পরিবার যুক্ত হয়েছিল। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৪-১৮ সালের মধ্যে এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ায় ২০ লক্ষেরও বেশি নতুন স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে আর ২ কোটি ২৫ লক্ষেরও বেশি পরিবার এই গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ আগের তুলনায় চার গুণ বেশি পরিবার উপকৃত হয়েছে। এটা প্রমাণ করে যে, বর্তমান সরকারের গতি, জনকল্যাণের স্বার্থে আমাদের দায়বদ্ধতা এবং মায়েদের ক্ষমতায়নকে আমরা কতটা অগ্রাধিকার দিয়েছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব মহিলাদের গোষ্ঠীকে দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ প্রদান থেকে শুরু করে অর্থের ব্যবস্থা করা এবং তাঁদের উৎপাদিত পণ্যে বাজারজাত করা।

 

আমি আগেই বলেছি, আজ এই ভিডিও ব্রিজে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি একজন করে সদস্য আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। আমি দেশের আর্থিক উন্নয়নে অংশগ্রহণকারী, পরিবারের আর্থিক সমৃদ্ধি এবং নতুন নতুন পদ্ধতিতে অর্থ সাশ্রয়কারী, দলবদ্ধভাবে কর্মরত, প্রথগত শিক্ষা না থাকা সত্ত্বেও এরকম সাফল্যের অধিকারীনী সকল মা ও বোনেদের কথা শোনার জন্য অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।

 

দেখুন, তাঁদের সকলের জীবনে কত পরিবর্তন এসেছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি কত বড় ভূমিকা পালন করছে, আমরা তার জলজ্যান্ত উদাহরণ দেখতে পেলাম। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির নেটওয়ার্ক সারা দেশে বিস্তৃত এবং ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্র ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সরকার তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথকে সহজ করতে গরিব মহিলাদের গোষ্ঠীকে দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ প্রদান থেকে শুরু করে অর্থের ব্যবস্থা করা এবং তাঁদের উৎপাদিত পণ্যে বাজারজাত করার ক্ষেত্রে সাহায্য করছে।

 

স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে মহিলা কৃষক ও কৃষি ক্ষেত্র নিয়ে একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এই ‘মহিলা কিষাণ সশক্তিকরণ পরিযোজনা’-এর মাধ্যমে সারা দেশে ৩৩ লক্ষেরও বেশি মহিলা কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ২৫ হাজারেরও বেশি ‘কম্যুনিটি লিভলিহুড রিসোর্স পার্সন’ নির্বাচন করা হয়েছে, যাঁরা গ্রামস্তরে ২৪X৭ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন। আজ যে কোনও ক্ষেত্রে, বিশেষ করে, কৃষিতে মূল্য সংযোজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হইয়ে উঠেছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আজ দেশের কৃষকরা এই মূল্য সংযোজনের গুরুত্ব বুঝতে শুরু করেছেন এবং এর মাধ্যমে উপকৃতও হচ্ছেন। অনেক রাজ্যে কিছু বিশেষ উৎপাদন যেমন – ভুট্টা, আম, ফুলের চাষ ও নানা ডেয়ারিজাত পণ্যের জন্য মূল্য সংযোজন শৃঙ্খলা চালু হয়েছে। এগুলির জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি থেকে ২ লক্ষ সদস্যকে সাহায্য করা হয়েছে। এখনই আমরা বিহারের পাটলিপুত্র অঞ্চলের অমৃতাদেবীর কথা শুনে জানতে পেরেছি যে, কিভাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর সেখানকার গরিব মহিলাদের জীবনে পরিবর্তন এসেছে, তাঁদের পরিবারগুলি কিভাবে উপকৃত হয়েছে। আমি আপনাদের বিহারেরই আরও কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি। বিহারে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির আড়াই লক্ষেরও বেশি সদস্য উন্নত পদ্ধতিতে ধান উৎপাদনের প্রশিক্ষণ নিয়ে উপকৃত হয়েছেন। এভাবে আরও ২ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য নতুন পদ্ধতিতে শাকসব্জির চাষ করে উপকৃত হয়েছেন। এছাড়া, বিহারের লাক্ষ্মা দিয়ে চুড়ি নির্মাণকারীদের জন্য ‘ক্লাস্টার’ স্থাপন করা হয়েছে এবং উৎপাদক গোষ্ঠী গড়ে তোলা হয়েছে। আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি যে, বিহারের লাক্ষ্মা নির্মিত চুড়ির ডিজাইন দেশে-বিদেশে প্রসিদ্ধ। একটু আগেই ছত্তিশগড়ের মীনা মাঝি বলছিলেন যে, কিভাবে ইঁট বানিয়ে তাঁরা নিজেদের জীবনের মান বৃদ্ধি করেছেন। ছত্তিশগড়ে ইঁট বানানোর অনেকগুলি ইউনিট স্থাপিত হয়েছে আর প্রায় ২ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই ইঁট নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আমরা শুনে অবাক হয়েছি যে, এদের বার্ষিক লাভ কয়েক কোটি টাকা। এভাবে ছত্তিশগড়ের ২২টি জেলায় ১২২টি ‘বিহান বাজার আউটলেট’ গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি দ্বারা নির্মিত ২০০টি পণ্য বিক্রি করা হয়।

 

ছত্তিশগড় নিয়ে আমার একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আপনাদের বলতে চাই। আপনারা হয়তো টিভিতে দেখেছেন যে, কিছুদিন আগে আমি ছত্তিশগড়ে গিয়েছিলাম। সেখানে একটি মহিলা চালিত ই-রিক্‌শায় সফর করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। ছত্তিশগড়ের ঐ অঞ্চল আগে নকশালবাদ ও মাওবাদে আক্রান্ত ছিল। সেখানে আসা-যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু সরকারের চেষ্টায় আজ সেখানে রাস্তাও নির্মিত হয়েছে আর ই-রিক্‌শাও চালু হয়েছে। দেশে এরকম অনেক দুর্গম গ্রামাঞ্চলে যাতায়াতের কোনও বন্দোবস্ত নেই। এই কর্মসূচির মাধ্যমে সেসব অঞ্চলে গ্রামীণ পরিবারগুলিকে বাহন কেনার জন্য অর্থের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে যাতায়াত সহজ হওয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট গ্রামীণ পরিবারগুলির আয় বৃদ্ধিরও সুযোগ তৈরি হয়েছে।

 

একটু আগেই আমরা রেবতী এবং বন্দনার কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেছি যে, কিভাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন তাঁদের জীবনে পরিবর্তন এনেছে। দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনার মাধ্যমে গ্রামীণ যুবক-যুবতীদের দক্ষতা নির্মাণকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কর্মসংস্থান এবং স্বরোজগারের জন্য তাঁদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে, যাতে দেশেরত যুবসম্প্রদায় নিজেদের আশা-আকাঙ্খা পূরণে এগিয়ে যেতে পারে। এভাবে নবীন প্রজন্মের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। দেশের প্রত্যেক জেলায় ‘গ্রামীণ স্বরোজগার প্রশিক্ষণ সংস্থান’ স্থাপন করা হয়েছে, যাতে যুবসম্প্রদায় তাঁদের বাড়ির কাছেই প্রশিক্ষণের সুবিধা পান। ঐ কেন্দ্রগুলিতে গ্রামীণ যুবক-যুবতীদের অর্থ উপার্জনক্ষম করে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ বছরের মে মাস পর্যন্ত দেশে প্রায় ৬০০ ‘গ্রামীণ স্বরোজগার প্রশিক্ষণ সংস্থান’ কাজ করছে।এগুলির মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ২৮ লক্ষ যুবক-যুবতী প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৯-২০ লক্ষ যুবক-যুবতীদের ইতিমধ্যেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটু আগেই আমরা মধ্যপ্রদেশের সুধা বাঘেলের কথা শুনেছি। তিনি সেনাটারি ন্যাপকিন প্যাকেজিং-এর কাজ করেন। মধ্যপ্রদেশে সেনেটারি প্যাড ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছে – এটি ৩৫টি জেলায় কাজ করছে। এই কাজে যুক্ত রয়েছেন সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য। মধ্যপ্রদেশের আরেকটি উদাহরণ আমি দিতে চাই। সেখানে প্রায় ৫০০টি আজীবিকা ফ্রেস স্টোর খোলা হয়েছিল। সেগুলিতে বছরের ১ টনেরও বেশি আজীবিকা মশলা বিক্রি হয়। মধ্যপ্রদেশে ‘আজীবিকা’ একটি নতুন ব্র্যান্ড হিসাবে জনপ্রিয় হয়েছে। একটু আগেই আমরা রেখাদেবীর কথা শুনে জানতে পেরেছি, কিভাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের একটি প্রয়োগ সফল হয়েছে। গ্রাম ও দূরদূরান্তের অঞ্চলগুলিতে ব্যাঙ্কিং বা আর্থিক লেনদেন পরিষেবা পৌঁছে দিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ‘ব্যাঙ্ক মিত্র’ এবং ‘ব্যাঙ্ক সখী’ রূপে নিযুক্ত হয়েছেন। আজ প্রায় ২ হাজারটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী সারা দেশে ব্যাঙ্ক মিত্র অথবা ব্যাঙ্ক সখী রূপে ব্যাঙ্কিং সহায়তার কাজ করছে। আমাকে বলা হয়েছে যে, এর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

 

দেখুন, কম্যুনিটি রিসোর্স পার্সনরা কিভাবে কাজ করেন, তা আপনারা খুব ভালোভাবেই জানেন। যাঁরা দক্ষতার সঙ্গে স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালনা করেন, তেমন মহিলারাই নতুন নতুন গ্রামে গিয়ে মহিলাদের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাঁদের গোষ্ঠীর কাজে যোগদানের প্রেরণা যোগান। ইতিমধ্যে সারা দেশে ২ লক্ষ কম্যুনিটি রিসোর্স পার্সন এই কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সদস্য সংখ্যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দীনদয়াল উপাধ্যায় যোজনার মাধ্যমে সরকারি অনুদান ছাড়াও ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যথাসময়ে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেলে ব্যবসা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। আরেকটি কথা শুনলে আপনারা খুব খুশি হবেন যে, এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলির যথাসময়ে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ অত্যন্ত সন্তোষজনক।

 

আমি দেখেছি যে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি কখনই দেরীতে ঋণ পরিশোধ করে না। ব্যাঙ্কগুলি যত ঋণ দিয়েছে, তার ৯৯ শতাংশই পরিশোধ হয়ে গেছে। এটাই আমাদের গরিব পরিবারগুলির সংস্কার। এটাই এদেশের গরিবদের অন্তরের ঐশ্বর্য। একটু আগেই লক্ষ্মীদেবীর কথা শুনছিলাম। কিভাবে তিনি আরও ৩০ জন মহিলাকে নিয়ে পাঁপড় বানিয়ে ও বিক্রি করে লাভের মুখ দেখেছে। এখানে আমি আপনাদের বলতে চাই যে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির উৎপাদিত পণ্য যাতে সঠিক মূল্যে বিক্রি হয়, আজ সরকার সেদিকে গুরুত্ব সহকারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তাঁদের উৎপাদিত পণ্যেরর জন্য বাজারের ব্যবস্থা করেছে, প্রতি বছর প্রত্যেক রাজ্যে ২টি করে সরস মেলা আয়োজনের মাধ্যমে। ফলে প্রতি বছর স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। গোষ্ঠীগুলির বার্ষিক আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে জিইএম বা ই-মার্কেটের সঙ্গে যুক্ত করে স্বচ্ছ ব্যবস্থা গড়ে তুলে সরকার ডিজিটাল মাধ্যমে পণ্যের বেচাকেনাকে উৎসাহিত করছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করে সরকারি দপ্তরগুলির জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনা হচ্ছে। সেজন্য আপনারা যাঁরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যুক্ত, সেইসব বোনেদের আমি অনুরোধ জানাব যে, আপনারা এই জিইএম পোর্টালের সঙ্গে নিজেদের গোষ্ঠীকে নথিভুক্ত করুন, যাতে আপনারাও সরকারি নিয়ম মেনে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য সরকারি দপ্তরগুলিতে বিক্রি করতে পারেন।

 

যাঁরা মেষ প্রতিপালক এবং উল বিক্রি করেন, তাঁদের জনয আমার একটি পরামর্শ রয়েছে। আমি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন একটি পরীক্ষা করে দেখেছিলাম – আমরা যখন সেলুনে যাই, তখন নাপিত এক ধরণের মেশিন দিয়ে চুল ও দাড়ি ছেঁটে দেন। কাঁচির তুলনায় অনেক কম সময়ে সমান দৈর্ঘ্যের চুল কিংবা দাড়ি কাটতে এই মেশিনগুলি অত্যন্ত উপযোগী। আমি গুজরাটের মেষপালকদের বলি, উল কাটার সময়েন কাঁচির বদলে চুল কাটার মেশিন ব্যবহার করে দেখুন। কাঁচির তুলনায় ঐ ট্রিমার মেশিনে উল কাটলে তুলনামূলক কম অপচয় হবে ও উলের দৈর্ঘ্যও বেশি হবে। আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, এর ফলে মেষপালকদের পরিশ্রম যেমন কমে যায়, তেমনই ভেড়াগুলির কষ্ট লাঘব হয়। আর লম্বা ও উৎকৃষ্ট উল বাজারে সরবরাহ হতে থাকে। আপনাদের মধ্যে যে বোনেরা মেষপালকের কাজ করেন, তাঁরা এই ট্রিমার মেশিনে উল কাটার প্রশিক্ষণ নিলে উপকৃত হবেন। আপনাদের রোজগারও বাড়বে। আমি প্রথম কাশ্মীরের কূপওয়াড়া জেলার মেষপালকদের এরকম ট্রিমার মেশিন দিয়ে উল কাটতে দেখেছিলাম। এতে ভেড়ার কষ্ট লাঘব হওয়ায় দুগ্ধ উৎপাদনও বেড়েছে।

 

আপনাদের অভিজ্ঞতা সিঞ্চিত এই কাহিনীগুলি যাঁরাই শুনবেন, আমার মনে হয়, তাঁরা যদি খোলা মনে শোনেন, আপনাদের অভিজ্ঞতাগুলি যদি তাঁদের ভাবনার খোরাক যোগায় – তা হলে উপকৃত হবেন। আমাদের দেশের মা-বোনেদের সামর্থ্য কত, সামান্য সাহায্য পেলেই তাঁরা কিভাবে নিজস্ব দুনিয়া গড়ে তুলতে পারেন। কত সুন্দরভাবে তাঁরা মিলেমিশে কাজ করতে পারেন, কত ভালো নেতৃত্ব দিতে পারেন। এক নতুন ভারতের ভিত্তি স্থাপনের জন্য তাঁরা কত পরিশ্রম করছেন। আমি মনে করি, আমরা যাঁরা শুনছি প্রত্যেকের জন্যই এই বোনেদের প্রত্যেকের কাহিনী অনেক প্রেরণা যোগাবে। ফলে, দেশে কাজ করার উৎসাহ বাড়বে। আমাদের দেশের প্রত্যেক মহিলা নতুন কিছু করার পথ খুঁজে পাবেন, উৎসাহ পাবেন। দেশে নিরাশা সৃষ্টিকারীদের সংখ্যা কম নয়। তাঁদের কথায় কান না দিয়ে যা কিছু ভালো বলে মনে হয়, সেপথেই চলুন। যাঁরা পরিশ্রম করেন, তাঁদেরই পুজো করুন। আপনারা প্রত্যেকে নিজের পায়ে দাঁড়ালে, নিজের উন্নতির পাশাপাশি পরিবারেরও উন্নতি হবে। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখবে, কঠিন জীবনযাপন থেকে তাঁদের মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে আপনারা নিরাশার বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি সঞ্চয় করুন। তবেই আপনারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। আমি এই বোনেদের কথা শুনে প্রেরণা পাই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আজকের এই কর্মসূচি আপনাদেরও তেমনই প্রেরণা যুগিয়েছে। আজকের প্রত্যেক বক্তা কিভাবে নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে পথ খুঁজে নিয়ে নিজের পরিশ্রম ও সাহস দিয়ে পরিস্থিতিকে নিজেদের অনুকূলে এনেছেন, তা থেকে আমরা প্রত্যেকেই শিক্ষা নিতে পারি। এর কৃতিত্ব আরও কারও নয়, এর কৃতিত্ব সম্পূর্ণ আপনাদের। আপনারাই পরস্পরের প্রেরণা হয়ে উঠুন। যে বোনেরা আরও কিছু বলতে চেয়েছিলেন, অথবা যাঁরা বলতেই পারেননি আমি তাঁদের কথাও শুনতে চাই। আমি চাই যে, আপনারা আমাকে বলবেন। আপনাদের কাছ থেকে নতুন যা কিছু শিখেছি, তা আমি আমার ‘মন কি বাত’-এও বলব, যাতে গোটা দেশ আপনাদের কথা থেকে প্রেরণা পেতে পারে। যাঁদের কান্নাকাটি করার স্বভাব তাঁরা করতেই থাকবেন। কিন্তু যাঁরা ভালো কাজ করেন, তাঁরা অন্যদেরও প্রেরণা যোগান। আমরা কাজ করার দলে। আমি আপনাদের বিনীত অনুরোধ জানাই যে …….. আমি জানি ইতিমধ্যেই আপনারা মোবাইল ফোন ব্যবহারে সিদ্ধ হস্ত হয়ে উঠেছেন। আপনারা নিজেদের মোবাইল ফোনে নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ ডাউনলোড করে নিজেদের গ্রুপ ফটো আপলোড করুন। যাঁরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারেন না, তাঁরা পঞ্চায়েতে চালু হওয়া কমনসার্ভিস সেন্টারে গিয়ে এই কাজ করতে পারেন। আপনারা নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ-এ আপনাদের গোষ্ঠীর বোনেদের সাক্ষাৎকার রেকর্ড করে আপলোড করে দিন। কী কাজ করেছেন এবং কীভাবে করেছেন। কী কী সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন এবং কীভাবে সাফল্য পেয়েছেন! আমি আপনাদের আপলোড করা প্রত্যেকটি সাক্ষাৎকার দেখব, পড়ব এবং শুনব। সুযোগ পেলেই আপনাদের আপলোড করা সাক্ষাৎকারগুলি থেকে নির্বাচিত কিছু অংশ ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গোটা বিশ্বকে বলব। আপনারা নিজেদের জন্য যেটা করেছেন, তা দেশের কোটি কোটি বোনেদের নতুন সাহস ও শক্তি যোগাবে। আমি জানি যে, ইতিমধ্যেই দেশে ৩ লক্ষ গ্রামে স্থাপিত কমনসার্ভিস সেন্টারগুলি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর এখন তো আমাদের মেয়েরাই কমনসার্ভিস সেন্টারগুলি পরিচালনা করছেন। সেখানে গিয়ে আপনারা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের সাফল্যগাথা অবশ্যই আমাকে পাঠান, যাতে গোটা দেশ এবং বিশ্ব সেগুলি দেখতে পায়, কিভাবে আমাদের দূরদূরান্তে গ্রামে বসবাসকারী মা ও বোনেরা অসাধারণ সব কাজ করছেন, কেমন নতুন নতুন পদ্ধতি খুঁজে বের করছেন! আজ আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়ে খুব ভালো লাগল। আপনারা এত বিপুল সংখ্যায় আমাকে আশীর্বাদ দিয়েছেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

 

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
How PM Modi’s Vision Is Propelling India Into Global Big League Of Defence, Space & Tech

Media Coverage

How PM Modi’s Vision Is Propelling India Into Global Big League Of Defence, Space & Tech
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi's telephonic conversation with PM Mette Frederiksen of Denmark
April 15, 2025
QuoteThe leaders discussed various aspects of bilateral relations as well global developments
QuoteThe leaders looked forward to their meeting in Norway on the sidelines of the forthcoming India-Nordic Summit

Prime Minister Shri Narendra Modi and Prime Minister of Denmark H.E. Ms. Mette Frederiksen had a telephonic conversation today. Both leaders discussed various aspects of bilateral relations as well as global developments.

Recalling high-level exchanges between both countries ever since the launch of the Green Strategic Partnership in 2020, the leaders noted the expansion of the Green Strategic Partnership in various fields which have created favorable conditions for Danish investments in India to contribute to green transition. The leaders also discussed regional and global issues of mutual interest.

Prime Minister Narendra Modi said that he was looking forward to the 3rd India- Nordic Summit scheduled to be held later this year in Norway, and his meeting with Prime Minister Frederiksen at that time.