কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ইয়েদুরাপ্পাজী, ডিআরডিও-র চেয়ারম্যান ডঃ জি সতীশ রেড্ডিজী, ডিআরডিও-র অন্যান্য শীর্ষ স্থানীয় আধিকারিকবৃন্দ, অ্যাপেক্স কমিটির সদস্যবৃন্দ, নবীন বৈজ্ঞানিক ও পরীক্ষাগার নির্দেশকবৃন্দ।
বন্ধুগণ, আপনাদের সবাইকে সবার আগে নতুন বছরেরর অনেক অনেক শুভেচ্ছা। হ্যাপি নিউ ইয়ার। কাকতালীয়ভাবে কিছুক্ষণ আগে তুমকুরে কৃষকদের একটি কর্মসূচিতে ছিলাম। আর এখন এখানে দেশের সেনাবাহিনী এবং বিজ্ঞানী ও অনুসন্ধানকারী বন্ধুদের মাঝে এসে উপস্থিত হয়েছি। আর আগামীকাল আমাকে বিজ্ঞান কংগ্রেসে যেতে হবে। কর্ণাটকে আমার এবারের সফর ২০২০ সালের প্রথম সফরটিকে ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় বিজ্ঞান এবং জয় অনুসন্ধান’ – এর ভাবনার প্রতি সমর্পিত বলা যায়। এটা আমাদের প্রত্যেকের জন্য গর্বের বিষয় যে, অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এস্টাব্লিসমেন্ট – এর প্রেক্ষাগৃহে এই অনুষ্ঠানটি হচ্ছে, যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় ডঃ এপিজে আব্দুল কালাম ডিআরডিও-র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বন্ধুগণ, এই দশক নিউ ইন্ডিয়া রূপে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ২০২০ সালটি শুধু একটি নতুন বছর নয়, একটি নতুন দশক রূপে আমাদের সামনে এসেছে। এই দশক এটা ঠিক করবে যে, আগামী বছরগুলিতে ভারতের শক্তি কেমন হবে, বিশ্বে আমাদের স্থান কোথায় হবে। এই দশক সম্পূর্ণ রূপে দেশের নবীন স্বপ্ন বাস্তবায়নের, আমাদের নবীন উদ্ভাবনকারীদের দশক। বিশেষভাবে, সেই উদ্ভাবনকারীরা যাঁরা একবিংশ শতাব্দীতেই জন্মগ্রহণ করেছেন কিংবা একবিংশ শতাব্দীতে যৌবনপ্রাপ্ত হয়েছেন। যখন আমি আপনাদের অনুরোধ করেছিলাম যে, ডিআরডিও-কে ‘রিথিঙ্ক’ আর নিজেকে ‘রিসেপ’ করতে হবে। একবিংশ শতাব্দীর সমস্যাগুলির মোকাবিলায় নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে কাজ করতে হবে। এর পেছনে আমার যে ভাবনা, এর মানে এই নয় যে, যাঁর বয়স ৩৬ হয়ে গেছে, তিনি বেকার হয়ে গেছেন। আমার বক্তব্য হ’ল যাঁরা ৬০ বছর, ৫০ বছর বা ৫৫ বছর ধরে তপস্যা করে একটা জায়গায় পৌঁছেছেন, তাঁদের ওপর ৩৫ বছরেরও কম বয়সী কাউকে বসিয়ে দিলে বিশ্ববাসী একটি নতুন ভারত দেখতে পাবে। এই পুরনো মানুষদের সাহায্য ছাড়া নতুনদের উপরে উঠে আসা সম্ভবই নয়। সেজন্য একটি সমাহার অত্যন্ত প্রয়োজন। এই ভাবনার পেছনে আমার একটি অভিজ্ঞতার কথা বলবো। আমি রাজনৈতিক জীবনে অনেক দেরীতে এসেছি। আগে আমি দলের সংগঠনের কাজ করতাম। গুজরাটে নির্বাচনে প্রথম আমি দলীয় সংগঠকের কাজ করেছি। তখন ৯০ জন কর্মকর্তা আমার ব্যবস্থাপনার সহায়ক ছিলেন। আমি স্বেচ্ছাসেবক রূপে দু-তিন মাস ধরে কাজ করছিলাম। কিন্তু খবরের কাগজের সংবাদদাতারা খুঁজে বের করেছিল যে, এই ৯০ জনের টিমটির গড় বয়স ছিল ২৩। আর এই ২৩ – এর গড় বয়স নিয়েই আমি প্রথমবার নির্বাচনে জয়লাভ করেছি। যুবসম্প্রদায়ের অপার প্রাণশক্তি থাকে। আপনি যত ভালো কবাডি খেলোয়াড় হন না কেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য থাকুক না কেন, ৬০-৭০ বছর বয়সে আপনি শুধু খেলাটাই দেখতে যাবেন আর ১৮-২০ বছর বয়সী নবীন খেলোয়াড়রা যেভাবে কসরত করবে, একে অপরকে তুলে আছাড় মারবে, দেখে মনে হবে এই বুঝি পড়লো ব্যথা পেল ইত্যাদি। নবীন মন ও অভিজ্ঞ মনের মধ্যে একটা পার্থক্য থাকে। সেজন্য বিশ্বে ডিআরডিও-কে প্রতিস্পর্ধী করে তুলতে গেলে এই নবীন – প্রবীণের যথাযথ সমাহারের মাধ্যমে মানসিক পরিবর্তন আনতে হবে। কখনও কখনও একটি বড় মহীরূহের নীচে ছোট ছোট গাছের চারা অঙ্কুরিত হতে পারে না। সেজন্য মহীরূহকে দায়ী করা যায় না। কিন্তু সেই চারাগুলিকে খোলা জায়গায় বড় হতে দিলে একদিন বটবৃক্ষও তাঁদের নিয়ে গর্ব করবে যে, এই গাছগুলিও কি সুন্দর বড় হয়ে উঠছে। এই ভাবনা থেকেই এই পাঁচটি গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে। আমি চাই যে, নবীন বিজ্ঞানীরা ভুল করুন, পরীক্ষাগারের বাজেট নিঃশেষ করে দিন। একজন বিজ্ঞানী সারা জীবন উৎসর্গ করে দেয়, বরবাদ করে দেয় – তবেই দেশ কিছু পায়। আপনারা জীবন উৎসর্গ করছেন, আর সরকারের রাজকোষ কাজে লাগাতে পারবেন না!
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, উন্নত প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এই পাঁচটি পরীক্ষাগার স্থাপন করার পরামর্শ এত দ্রুত বাস্তবায়িত হয়েছে। আজ বেঙ্গালুরু, কলকাতা, চেন্নাই, হায়দরাবাদ এবং মুম্বাইয়ে একসঙ্গে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে শুরু করেছে। আমি বিশ্বাস করি যে, এই নবীন বিজ্ঞানী পরীক্ষাগারগুলি নবীন বৈজ্ঞানিকদের ভাবনা এবং প্রয়োগকে নতুন নতুন সাফল্য এনে দেবে। এগুলি ডিআরডিও – ওয়াই নামে পরিচিত হবে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই এগুলি ডিআরডিও – হোয়াই – এ পরিণত হবে। এই প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে এত প্রশ্ন উঠবে যে, উন্নত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমাদের জাতীয় প্রচেষ্টার স্বরূপ নির্ধারিত হবে। এই পরীক্ষাগারগুলি দেশের আসন্ন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়নের স্বরূপ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
আমি নবীন বৈজ্ঞানিকদের বলবো, এই পরীক্ষাগারগুলিকে আপনারা শুধুই প্রযুক্তি পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহার করবেন না, এগুলি আপনাদের মেজাজ ও ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেবে। আপনাদের সবসময় মনে রাখতে হবে যে, আপনাদের প্রচেষ্টা ও নিরন্তর অভ্যাসই ভারতকে সাফল্যের পথে নিয়ে যাবে। শুধু ইতিবাচকতা এবং উদ্দেশ্য-সাধন আপনাদের প্রেরণার উৎস হয়ে উঠুন। মনে রাখতে হবে, ১৩০ কোটি জনগণের জীবন নিরাপদ ও সহজ করে তোলার দায়িত্ব আপনাদের কাঁধে ন্যস্ত।
বন্ধুরা, আজকের এই কর্মসূচি একটি সূত্রপাত মাত্র। আপনাদের সামনে শুধু আগামী একটি বছর নয়, আগামী দশক রয়েছে। এই এক দশকে ডিআরডিও-র মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী রোডম্যাপ কী হবে, তা অত্যন্ত ভাবনাচিন্তার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে। আমি আরেকটি পরামর্শ দিতে চাই। এই পাঁচটি পরীক্ষাগার, ৩৫ বছর এর কমবয়সী বিজ্ঞানীদের পরীক্ষাগার হলেও ভবিষ্যতে যার বয়স ৩৬ হয়ে যাবে, তাকে এখান থেকে চলে যেতে হবে না। তাঁরা যখন ৩৬-৪৫ বছর বয়সী হবেন, কিংবা ৫৫বছর বয়সী হবেন, তখনও কাজ করে যেতে পারবেন। কিন্তু আপনাদের নতুন পাঁচটি ৩৫ বছর বয়সের কম বয়সী নবীন বিজ্ঞানীদের পরীক্ষাগার তৈরি করে দিয়ে যেতে হবে। তাঁরা যখন আবার ৩৫ বছর বয়স পেরিয়ে যাবেন, তাঁদেরকেও নতুন ৫টি করে পরীক্ষাগার গড়ে দিয়ে যেতে হবে। আর এই শৃঙ্খলা চলতে থাকবে, না হলে এই পরীক্ষাগারে কারও বয়স ৩২ হলেই ভাবতে থাকবেন যে, আর মাত্র তিন বছরে কি করবো, আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যাবে! সেজন্য আমি আপনাদের এই আশ্বাস দিচ্ছি যে, যত দিন পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রমে নতুন নতুন উদ্ভাবন করে যেতে পারবেন, ততদিন এই পরীক্ষাগারের আপনি অঙ্গ হয়ে থাকবেন। ৬০ বছর হয়ে গেলেও থাকবেন। শুধু একটাই শর্ত ৩৫ পার করলে আরও ৫টি স্থাপন করতে হবে। লক্ষ্য রাখবেন, আপনাদের প্রতিটি কর্মসূচি যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শুরু হয়।
আমি ডিআরডিও-কে সেই উচ্চতায় দেখতে চাই যে, যেখান থেকে এই প্রতিষ্ঠান ভারতীয় বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানগুলির লক্ষ্য নির্ধারণ করে। শুধু তাই নয়, গোটা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। আমার এসব কথা বলার কারণ হ’ল – ডিআরডিও-র ইতিহাস, এর প্রদর্শন এবং আপনাদের প্রতি দেশবাসীর ভরসা।
বন্ধুগণ, আজ দেশের উন্নত মেধার বৈজ্ঞানিকরা ডিআরডিও-তে কর্মরত। ডিআরডিও-র সাফল্য অসাধারণ। এখন আমি যে প্রদর্শনী দেখলাম, এই সাফল্যগুলির পাশাপাশি, আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও প্রকল্পগুলি সম্পর্কেও জানতে পারলাম যে, আপনাদের নবীন কর্মীরা আমাকে এই জটিল বিষয়গুলি এত সরল ভাষায় বোঝালেন, যেন আমিও হাতে-কলমে করতে পারবো। স্কুলে যখন পড়তাম, তখন এগুলির কিছুই বুঝতাম না। আজ আপনারা বুঝিয়ে দিয়েছেন। আপনারা ভারতের মিশাইল কর্মসূচিকে বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট কর্মসূচিগুলির অন্যতম করে তুলেছেন। গত বছর মহাকাশ এবং আকাশ সীমা সুরক্ষা ক্ষেত্রেও ভারতের সামর্থ্য নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ‘A set’ নামক অত্যাধুনিক মহাকাশ প্রযুক্তির সফল পরীক্ষা নিশ্চিতভাবেই একবিংশ শতাব্দীতে ভারতের সামর্থ্যকে সংজ্ঞায়িত করবে।
আপনাদের সকলের চেষ্টায় আজ ভারত বিশ্বের হাতে গোণা কয়েকটি দেশের অন্যতম হয়ে উঠেছে; যে দেশের কাছে বিমান থেকে শুরু করে বিমান পরিবাহী বিমান পর্যন্ত সবকিছু নির্মাণের ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু এটাই কি যথেষ্ট? না। বন্ধুগণ, ছেলেমেয়রা যখন ভালো কাজ করে, তখন বাবা-মার প্রত্যাশা বেড়ে যায়। ৫টি করলে বলে ৭টি করো। ৭টি করলে বলে ১০টি করো। আর যারা করে না, তাদের প্রতি কোনও প্রত্যাশাই থাকে না। আপনাদের সমস্যা এটাই।
আপনাদের সাফল্যই আপনাদের প্রতি দেশবাসীর প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে। রামচরিত মানসে বলা হয়েছে –
কবন জো কাম কঠিন জগ মাহীঁ।
জো নহিঁ হোই তাতো তুমহ্ পাহীঁ।।
অর্থাৎ, পৃথিবীতে এমন কোনও কাজ নেই, যা আপনি করতে পারেন না। আপনাদের জন্য কোনও কিছুই কঠিন নয়। রামচরিত মানস যখন লেখা হয়েছিল, তখন যেন জানা ছিল যে, ডিআরডিও হবে।আমি ডিআরডিও-র বন্ধুদের রামচরিত মানসের এই পদ্য থেকে প্রেরণা নিয়ে কাজ করতে বলবো। আপনাদের ক্ষমতা অসীম, আপনারা অনেক কিছু করতে পারেন। নিজেদের দক্ষতার পরিধি বিস্তার করুন, নিজেদের যোগ্যতা মানের ডানা বিস্তার করে আকাশে একচ্ছত্র রাজত্ব করার সাহস দেখান। এটাই সুযোগ এবং আমি আপনাদের সঙ্গে আছি।
দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে বলছি যে, সরকার সম্পূর্ণরূপে আপনাদের সঙ্গে দেশের বৈজ্ঞানিকদের পাশে উদ্ভাবকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার জন্য প্রস্তুত। আপনারা জানেন যে, আগামী দিনে আকাশ ও সমুদ্রের পাশাপাশি, সাইবার এবং মহাকাশ ক্ষেত্রও স্ট্র্যাটেজিক ডায়নামিক্সকে নির্ধারিত করবে। পাশাপাশি, ইন্টেলিজেন্ট মেশিন ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে। এক্ষেত্রে ভারত কারও থেকে পিছিয়ে থাকতে পারে না। আমাদের নাগরিকদের সুরক্ষা আমাদের সীমা সুরক্ষা এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য ভবিষ্যতের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা জরুরি এবং উদ্ভাবনও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, নতুন ভারতের প্রয়োজনীয়তা এবং আকাঙ্খা পূরণে আপনারা নিরন্তর চেষ্টা করে যাবেন। আপনাদের পরিধি যেন শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে। ডিআরডিও-র মতো প্রতিষ্ঠান বিশ্বে মানবতাকে অনেক কিছু দিতে পারে। বিশ্ব নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আজ বিশ্বে অনেক দেশ রয়েছে, যাদের সীমান্ত আক্রমণের কোনও ভয় নেই। চারপাশের সকল দেশই মিত্র দেশ। এই রকম দেশকেও আজ বন্দুক হাতে নিতে হয়েছে। কারণ, তাদের দেশও সন্ত্রাসবাদে করালগ্রাসে আক্রান্ত।
ডিআরডিও এ ধরনের দেশগুলির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় সাহায্য করতে পারে। আমি এরকম অনেক ছোট ছোট দেশের নেতাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে জানতে পেরেছি তাদের ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তার কথা। সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও এই ভয়ানক বিপদের হাত থেকে তাদের দেশবাসীকে রক্ষা করতে আপনাদের নতুন কিছু ভাবতে হবে। আমরা এ ধরনের ছোট ছোট দেশগুলিকে অভয় দান করলে তা মানবতার সপক্ষে বড় কাজ হবে। বিশ্ব মঞ্চে ভারতের ভূমিকা আরও সুদৃঢ় হবে।
বন্ধুগণ, প্রতিরক্ষা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারতকে আত্মনির্ভর করে তুলতে ডিআরডিও-কে নতুন নতুন উদ্ভাবনের আলো দেখাতে হবে। দেশে একটি স্পন্দনশীল প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র গড়ে তুলতে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’কে শক্তিশালী করতে ডিআরডিও-র উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেজন্য আমাদের নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে, যাতে নক্শা থেকে শুরু করে প্রযুক্তির বিকাশ পর্যন্ত সমস্ত ধাপে আমরা আত্মনির্ভর হই। আমাদের একটি সংহতি এবং উদ্ভাবন-কেন্দ্রিক বাস্তু ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
বন্ধুগণ, আজ ভারত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নতুন নতুন সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। বিশ্বে দ্রুত পরিবর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে, প্রযুক্তির নিরন্তর উন্নতির প্রেক্ষিতে ভারত শুধুই পুরনো ব্যবস্থার ভরসায় থাকতে পারে না। আমরা উনবিংশ শতাব্দীর ব্যবস্থা নিয়ে একবিংশ শতাব্দী পার করতে পারবো না। এই সপ্তাহেই ভারত সরকার চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ পদ সৃষ্টি করে সেই পদে যোগ্যতম সেনানায়ককে নিযুক্ত করেছি। এই চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ নিজেই অনেক পরিবর্তন আনবেন। তাঁর সঙ্গে ডিআরডিও-র প্রত্যক্ষ যোগাযোগ থাকবে। বছরের গোড়াতেই এটা অনুভব করা গেছে যে, ভারতে তিনটি সেনাবাহিনীর মধ্যে উন্নত সংহতির জন্য, যৌথতা এবং সংহত শক্তির জন্য এ ধরনের পদ প্রয়োজন। এই পদ সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের সরকার দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছে।
বন্ধুগণ, আমাদের পরিবর্তনের এই ধারার সঙ্গে নিজেদের নিরন্তর শক্তিশালী করে যেতে হবে। এটাই দেশের প্রত্যাশা আর নবীন বিজ্ঞানী পরীক্ষাগার স্থাপনের পেছনে এই দূরদৃষ্টি কাজ করছে। আজ আপনারা ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগত স্পর্ধা মোকাবিলা করার জন্য ডিআরডিও কর্মসংস্কৃতিতেও নতুন প্রাণশক্তির সঞ্চার করবেন। এই কামনা রেখেই আপনাদের সবাইকে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
আপনাকে এবং আপনাদের পরিবারের সবাইকে আরেকবার নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।