নেটওয়ার্ক ১৮-র গ্রুপ এডিটর-ইন-চিফ রাহুল যোশী মহোদয়,
দেশ-বিদেশ থেকে সমাগত অতিথিবৃন্দ,
এখানে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমের বন্ধু,
ভদ্র মহিলা ও ভদ্র মহোদয়গণ,
সবার আগে আপনাদের সবাইকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই, আমাকে ‘উদীয়মান ভারত’ শিখরসম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।
বন্ধুগণ, আমরা যখন ‘উদীয়মান’ বলি, তখন প্রথমেই ‘অন্ধকার থেকে আলোর পথেযাওয়ার কথা মনে পড়ে। আমরা যেখানে ছিলাম, যে পরিস্থিতিতে ছিলাম, তা থেকে এগিয়েযেতে, উন্নততর ভবিষ্যতের দিকে যাওয়ার মনোভাব জেগে ওঠে।
এই ‘উদয়’ হওয়া শব্দের বিস্তার দেশের প্রেক্ষিতে অনেক ব্যাপক হয়ে পড়ে।প্রশ্ন এই যে ‘উদীয়মান ভারত’ কী? কেবল অর্থ ব্যবস্থা শক্তিশালী হলেই ‘উদীয়মানভারত’ বলব? সেনসেক্সের রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধিকে ‘উদীয়মান ভারত’ বলব? নাকি বিদেশিবিনিয়োগে বৃদ্ধি পেলে ‘উদীয়মান’ বলব?
বন্ধুগণ, আমার কাছে ‘উদীয়মান ভারত’ শব্দবন্ধের মানে হ’ল দেশের ১২৫ কোটিনাগরিকের আত্মাভিমানের উদয়, দেশের আত্মগৌরবের উদয়। যখন এই ১২৫ কোটি মানুষেরইচ্ছাশক্তি সমবেত হয়, তাঁদের সংকল্প এক হয়, তখন অনেক অসাধ্য সাধ্য হয়, অসম্ভবওসম্ভব হয়।
এই সমবেত ইচ্ছাশক্তি-ই আজ নতুন ভারতের সংকল্পসাধনে এক হয়ে কাজ করছে।
ভাই ও বোনেরা, অনেক দেশের সরকার উন্নয়ন ও পরিবর্তনে নেতৃত্ব দেয় আরনাগরিকরা সরকারকে অনুসরণ করেন। কিন্তু বিগত চার বছরে ভারতে এই পদ্ধতি বদলে গিয়েছে।এখন দেশের নাগরিকরা নেতৃত্ব দিচ্ছে, আর সরকার তাঁদের অনুসরণ করছে।
আপনারা নিজেরাই দেখেছেন, কত কম সময়ের মধ্যে স্বচ্ছ ভারত মিশন একটি গণআন্দোলনেরূপান্তরিত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমও এতে অংশীদারের ভূমিকা পালন করেছে।
কালো টাকা আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশের নাগরিকরা ডিজিটাল লেনদেনকেএকটি শক্তিশালী অস্ত্রে পরিণত করেছে। ভারত আজ ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে দ্রুততমউন্নয়নশীল বাজারের মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপ যেভাবে জনসমর্থন পাচ্ছে, তা এইসাক্ষ্য দেয় যে, জনগণ দেশকে সমস্ত খারাপ অভ্যাস, রীতিনীতি ও কুসংস্কার থেকে মুক্তিদিতে কোমর বেঁধেছে।
আমাদের রাজনৈতিক বিরোধিরা যাই বলুন না কেন, এই প্রেরণা সম্বল করেই সরকার এতবড় বড় পদক্ষেপ নিতে পেরেছে আর সেগুলিকে বাস্তবায়িত করে দেখিয়েছে। যে সিদ্ধান্তগুলিসম্পররেকে কয়েক দশক আগেই প্রস্তাব রাখা হয়েছিল, কিন্তু সেগুলি ফাইল চাপা পড়েছিলআমরা সেগুলিকে লালফিতের ফাঁস মুক্ত করি। যে আইনগুলি কয়েক দশক আগেই প্রণীত হয়েছে,কিন্তু দুর্নীতিতন্ত্রের চাপে বাস্তবায়িত হয়নি, বর্তমান সরকার সেসব জনহিতকরসিদ্ধান্ত এবং দুর্নীতি বিরোধী আইনকে বাস্তবায়িত করেছি।
বন্ধুগণ, ভারতে যে মৌলিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা নাগরিকদের সক্রিয়তারকারণেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই ইচ্ছাশক্তি-ই দেশে ভারসাম্যহীনতা দূর করছে।
ভাই ও বোনেরা, দেশের উদয় হোক কিংবা কোনও সমাজ কিংবা ব্যক্তির, সাম্যভাব নাথাকলে কোনও সংকল্প সিদ্ধান্ত হতে পারে না। সেজন্য আমাদের সরকার আপ্রাণ চেষ্টাচালাচ্ছে, যাতে জাতীয় স্তরে এই ভারসাম্যহীনতা ও অসাম্য দূর হয়। এর পরিণাম কী হতেপারে, তা আমি নেটওয়ার্ক ১৮-র দর্শকদের একটি ভিডিও-র মাধ্যমে অনুভব করতে চাই।
বন্ধুগণ, উজ্জ্বলা যোজনা শুধু রান্নাঘর নয়, কোটি কোটি পরিবারের জীবন বদলেদিচ্ছে। এই প্রকল্প আমাদের সামাজিক ব্যবস্থায় একটি বড় ভারসাম্যহীনতার অবসানঘটাচ্ছে।
বন্ধুগণ, এখানে আসার আগে আজ সারাদিন আমি মণিপুরে ছিলাম। বিজ্ঞান কংগ্রেসেরউদ্বোধন, তারপর ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস, আজ সেখানে উত্তর-পূর্ব ভারতেরজন্য অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটাআমার ২৮ বা ২৯তম উত্তর-পূর্ব ভারত সফর।
আপনারা ভাবুন, এমনটি কেন? কেন আমাদের সরকার উত্তর-পূর্ব ভারত তথা সমগ্রপূর্ব ভারতের উন্নয়নে জোর দিচ্ছে? যাঁরা ভাবছেন, আমরা ভোটের জন্য এরকম করছি, তাঁরাশুধু দেশের মাটি থেকে নয়, মানুষের মন থেকেও দূরে সরে গেছে!
বন্ধুগণ, পূর্ব ভারতের আবেগময় সংহতি আর জনসংখ্যাগত বৈচিত্র্যকে মাথায় রাখাঅত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
সেজন্য আমাদের সরকার ‘পুবের জন্য কাজ’ করার মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আরযখন আমি পূর্বের জন্য কাজ করার কথা বলি, তার বিস্তার শুধু উত্তর-পূর্ব ভারত নয়,গোটা উত্তর প্রদেশ, বিহার, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও এই উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিরসঙ্গে থাকে। দেশের এই পূর্বভাগ উন্নয়নের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছ। এর একটি বড় কারণ ছিল,এই অঞ্চলের উন্নয়ন নিয়ে উদাসীনতা। এই অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত শত শত প্রকল্প হয়শুরুই হয়নি, কিংবা দশকের পর দশক সময়কার ধরে ঝুলে আছে। আমাদের সরকার এইভারসাম্যহীনতা দূর করতে বছরে রপর বছর ধরে ঝুলে থাকা প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণ করার কাজশুরু করেছে। আপনারা শুনে অবাক হবেন যে, আসামে গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস ক্র্যাকারপ্রকল্পটি ৩১ বছর ধরে ঝুলে ছিল। আমরা সরকারে দায়িত্ব নিয়ে সেই কাজ আবার শুরুকরেছি।
তেমনই দ্রুততার সঙ্গে উত্তর প্রদেশের গোরখপুর, বিহারের বরৌনি আর ঝাড়খন্ডেরসিন্ধ্রিতে অনেক বছর ধরে বন্ধ থাকা সার কারখানাগুলি খোলার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
জগদীশপুর থেকে হলদিয়া পর্যন্ত যে পাইপ লাইনবিছানো হচ্ছে, তা থেকে এইকারখানাগুলিতে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এই পাইপ লাইন পূর্ব ভারতের প্রধান শহরগুলিতেগ্যাস পাইপ লাইন-ভিত্তিক সম্পূর্ণ বাস্তু ব্যবস্থা বিকশিত হবে।
আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টা ও তদারকিতে ওড়িশার পারাদ্বীপ তৈল শোধনাগারের কাজেগতি এসেছে আর অদূর ভবিষ্যতেই পারাদ্বীপ একটি উন্নয়নের দ্বীপ হয়ে উঠবে। এমনইদ্রুৎতার সঙ্গে আমাদের সরকার আসাম এবং অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে দূরত্ব কমাতে দীর্ঘকয়েক দশক ধরে নির্মীয়মান ঢোলা সদিয়া সেতুর কাজ সম্পূর্ণ করেছে।
সড়ক ও রেলপথ উন্নয়নের মাধ্যমে পূর্ব ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নেরপরিকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি জলপথ উন্নয়নের কাজকেও আমরা উৎসাহ যোগাছি। বেনারস আরহলদিয়ার মাঝে জলপথ উন্নয়ন এই অঞ্চলের শিল্পাঞ্চলগুলির মধ্যে পণ্য পরিবহণেরক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
দ্রুত যাতায়াতের প্রয়োজন মেটাতে পূর্ব ভারতের ১২টি নতুন বিমানবন্দর গড়েতোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ৬টি বিমানবন্দর হবে উত্তর-পূর্ব ভারতে। সম্প্রতি আপনারাদেখেছেন যে, সিকিমে প্রথমবার বাণিজ্যিক বিমান অবতরণ করছে।
যখন দেশে নতুন নতুন অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস খোলারসুযোগ পেলাম, আমরা এক্ষেত্রেও পূর্ব ভারতকেই অগ্রাধিকার দিয়েছি। আমরা সরকারেরদায়িত্ব নিয়ে মহাত্মা গান্ধীজির কর্মভূমি পূর্ব চম্পারণ-মোতিহারিতে একটি কেন্দ্রীয়বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছি।
বন্ধুগণ, এই সরকারের শুরু করা বেশ কিছু প্রকল্পে এই এলাকাগুলি লক্ষ লক্ষমানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
‘দিল্লি অনেক দূরে’ ধারনা থেকে বেরিয়ে এসে আমরা দিল্লিকে পূর্ব ভারতেরদরজায় এনে দাঁড় করিয়েছি। আমরা ‘সবার সঙ্গে – সকলের উন্নয়ন’ মন্ত্র নিয়ে দেশেরপ্রত্যেক ভৌগোলিক অঞ্চলের উন্নতিকে উন্নয়নের মুখ্যধারার অংশ করে নিয়েছি।
বন্ধুগণ, আমি আপনাদেরকে একটি মানচিত্র দেখাতে চাই! এই মানচিত্র সাক্ষ্য দেয়যে, কিভাবে দেশে বিগত চার বছরে একটি বড় ভারসাম্যহীনতা দূর হয়েছে আর উত্তর-পূর্বভারতের গ্রামগুলি আলোকিত হয়েছে!
আমি প্রায়ই বলি যে, দেশ স্বাধীন হওয়ার সাত দশক পরও এমন ১৮ হাজার গ্রামেবিদ্যুৎ ছিল না! আপনারা শুনে অবাক হবেন যে, সেগুলির মধ্যে ১৩ হাজার গ্রামেই ছিলপূর্ব ভারতে। আর এই ১৩ হাজারের মধ্যে ৫ হাজার গ্রাম ছিল উত্তর-পূর্ব ভারতে।ইতিমধ্যেই এই গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ‘সৌভাগ্য যোজনা’রসূত্রপাত করেছে। এই বাবদ সরকার ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ করছে।
পূর্ব ভারতের জনগণের জীবনে এই বিদ্যুতের আলো তাঁদের বিচ্ছিন্নতা থেকেঐক্যের পথে নিয়ে আসছে। এই পথই ‘উদীয়মান ভারত’-এর ঔজ্জ্বল্যকে আরও প্রখর করবে।
বন্ধুগণ, কর্পোরেট জগতে একটি লোকোক্তি খুবই প্রচলিত আছে, ‘যা তুমি পরিমাপকরতে পারো না, তার তুমি ব্যবস্থাপনাও করতে পারো না’! আমরা এই মন্ত্রকে শুধুনিজেদের কর্মপদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত করিনি, একে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছি, ব্যবস্থাপনারজন্যই পরিমাপ করও আর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গণআন্দোলন গড়ে তোলো।
যখন গণআন্দোলন গড়ে ওঠে, ব্যাপক স্তরে সরকার ও জনতার মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়েওঠে, তখন তার ফলও ভালো হয়, দীর্ঘস্থায়ী হয়। আমি আপনাদের দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবারউদাহরণ দেব। আমরা স্বাস্থ্য ক্ষেত্রকে বহুমুখী পদ্ধতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে চারটিস্তম্ভ-নির্ভর উন্নয়নের কাজ করছি।
প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য
সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবা
সরবরাহ ক্ষেত্রের উদ্যোগ
ব্রত হিসাবে উদ্যোগ রূপায়ণ
আমরা এই চারটি বিষয়ে একসঙ্গে জোর দিয়েছি। দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রেকেবল স্বাস্থ্য মন্ত্রক একা কাজ করলে তা থেকে শুধুই ‘বায়ুগহ্বর’ তৈরি হয়, কিন্তুসমাধান হয় না। আমাদের প্রচেষ্টা হ’ল – ফাঁকাআওয়াজ নয়, কেবল সমাধান ।
জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই অভিযানে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পাশাপাশি এই বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য মন্ত্রক যেমন – স্বচ্ছতা মন্ত্রক, আয়ুষ মন্ত্রক, রাসায়নিক ও সার মন্ত্রক, উপভোক্তা মন্ত্রকএবং মহিলা ও শিশু বিকাশ মন্ত্রককেও সঙ্গে রেখেছি । এভাবে আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়েনির্ধারিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করছি।
আমরা যদি প্রথম স্তম্ভ অর্থাৎ প্রতিরোধমূলকস্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলি, এটা হ’ল সবচেয়ে সস্তা ও সহজ।
আমরা সবাই জানি যে, সুস্থ জীবনের জন্য সবার আগেপ্রয়োজন পরিচ্ছন্নতা। তাই, এদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা পানীয় জল ও স্বচ্ছতা মন্ত্রককেসক্রিয় করেছি। এর পরিণাম দেখুন, ২০১৪ সালে গোটা ভারতে ৬.৫ কোটিবাড়িতে শৌচালয় ছিল, কিন্তু এখন ১৩ কোটি বাড়িতেই শৌচালয় – অর্থাৎ দ্বিগুণ বৃদ্ধিপেয়েছে ।
আজ দেশের স্বাস্থ্যবিধির আওতা ৩৮ শতাংশ থেকেবেড়ে প্রায় ৮০ শতাংশে পৌঁছে গেছে। এই বৃদ্ধিও দ্বিগুণেরও বেশি। পরিচ্ছন্নতাঅভিযানের পাশাপাশি দেশের প্রতিটি বাড়িতে এই বার্তাও পৌঁছে গেছে যে, অপরিচ্ছন্নতারোগ-শোককে আমন্ত্রণ জানায়। আর পরিচ্ছন্নতা অসুস্থতাকে তাড়ায়। প্রতিরোধমূলকস্বাস্থ্য পরিষেবা হিসাবে যোগাভ্যাস নতুনভাবে নিজের পরিচয় স্থাপন করেছে। আয়ুষমন্ত্রকের সক্রিয়তার ফলে যোগ আজ সারা পৃথিবীতে একটি গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
এবারের বাজেটে আমরা ওয়েলনেস সেন্টার স্থাপনেরঘোষণা করেছি। কেন্দ্রীয় সরকার দেশের প্রত্যেক বড় পঞ্চায়েতগুলিতে হেলথ্ ওয়েলনেসসেন্টার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আমরা টিকাকরণ প্রকল্পে বিশেষ জোর দিয়েছি। আমরাসরকারে আসার আগে দেশে টিকাকরণের বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ১ শতাংশ। আজ সেই হার বৃদ্ধিপেয়েছে ৬.৭ শতাংশ হয়েছে।
বন্ধুগণ, প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরিষেবারপাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিষেবাকে সুলভ করে তোলাও জরুরি। স্বাস্থ্য পরিষেবাকে মানুষেরকাছে এবং সুলভ করে তোলার জন্য আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি।
আমরা রাসায়নিক ও সার মন্ত্রককে সক্রিয় করে সারাদেশে ৩ হাজারেরও বেশি জনঔষধি কেন্দ্র খুলেছি, যেখানে গরিব মানুষেরা ৮০০-রও বেশিওষুধ কম দামে পাবেন।
দরিদ্র হৃদরোগীদের কম দামে স্টেন্টপ্রতিস্থাপনের জন্য আমরা উপভোক্তা মন্ত্রককে সক্রিয় করেছি। ফলে, আজ হার্টস্টেন্টের মূল্য ৮৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি কৃত্রিম হাঁটু প্রতিস্থাপনেরমূল্যকেও নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। ফলে এর দামও ৫০-৭০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
এবারের বাজেটে আমরা একটি বড় প্রকল্প ঘোষণাকরেছি, তা হ’ল আয়ুষ্মান ভারত। এইপ্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম ব্যক্তি উপকৃত হবেন। প্রায় ১০ কোটিপরিবার অর্থাৎ প্রায় ৪৫-৫০ কোটি নাগরিকের চিকিৎসার চিন্তা দূর হবে। তাঁদের পরিবারেকেউ অসুস্থ হলে বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ কেন্দ্রীয় সরকার ও বিমাকোম্পানিগুলি বহন করবে।
বন্ধুগণ, স্বাস্থ্য পরিষেবায় তৃতীয় বড় স্তম্ভহ’ল ‘সরবরাহ ক্ষেত্রের উদ্যোগ’। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট সকল প্রয়োজনীয় পরিষেবাসুনিশ্চিত করার জন্য আমাদের সরকার লাগাতার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে,গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। এই সমস্যা দূর করতে আমাদের সরকার মেডিকেলকলেজগুলিতে আসন সংখ্যা বাড়িয়েছে।
বন্ধুগণ, ২০১৪ সালে যখন আমরা সরকারের দায়িত্বনিয়েছি, তখন মেডিকেল কলেজগুলিতে ৫২ হাজার আন্ডার গ্র্যাজুয়েট আর ৩০ হাজার পোস্টগ্র্যাজুয়েটের আসন ছিল। এখন দেশে ৮৫ হাজারেরও বেশি আন্ডার গ্র্যাজুয়েট এবং ৪৬হাজারেরও বেশি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট আসন রয়েছে। এছাড়া, সারা দেশে নতুন অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউটঅফ মেডিকেল সায়েন্স এবং আয়ুর্বেদ বিজ্ঞান সংস্থান স্থাপন করা হচ্ছে। পাশাপাশি,প্রতি তিনটি সংসদীয় ক্ষেত্রের মধ্যে ন্যূনতম একটি মেডিকেল কলেজ নির্মাণের প্রকল্পগ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রচেষ্টাগুলি দ্বারা আমাদের যুব সম্প্রদায় ও দেশের গরিবজনসাধারণ উপকৃত হবেন। নার্সিং এবং প্যারা মেডিকেল ক্ষেত্রে জনসম্পদ বৃদ্ধিরউদ্দেশ্যে কাজ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন পেশার মানুষ যত বেশি বৃদ্ধিপাবে, স্বাস্থ্য পরিষেবাও তত সুলভ ও মানুষের নাগালের মধ্যে পৌঁছবে।
ভাই ও বোনেরা, স্বাস্থ্য পরিষেবা চতুর্থ ওগুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হ’ল ‘ব্রত হিসাবে উদ্যোগ রূপায়ণ’। কিছু সমস্যা এমন হয় যে,যেগুলির সমাধানে মিশন ধাঁচে কাজ করার প্রয়োজন হয়।
দেশে মা ও বোনেদের স্বাস্থ্যের উন্নতি, তাঁদেরকেরোগমুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে আমরা মহিলা ও শিশু বিকাশ মন্ত্রককে সক্রিয় করেছি। এরমাধ্যমে আজ বেশ কিছু কর্মসূচি চালু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযান এবংপ্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনার মাধ্যমে মা ও শিশুর যথাযথ পুষ্টি সুনিশ্চিত করাহচ্ছে। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসে রাষ্ট্রীয় পোষণ অভিযানের সূচনা করাহয়েছে। এটি জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবান করে তুলতে সবচেয়ে নতুন ও বড় পদক্ষেপ। শিশু ওমায়েদের সঠিক পুষ্টি সুনিশ্চিত হলে, তাদের সুস্বাস্থ্যও সুনিশ্চিত হবে।
আমি মনে করি যে, কোনও আকারের জামা-ই সবার গায়েলাগে না। প্রত্যেক ক্ষেত্রের ইউনিক ডেভেলপমেন্ট মডেল বিকাশের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেআমাদের সরকার। বন্ধুগণ, আপনাদের একটি ভিডিও দেখিয়ে সারা দেশের মানুষের আনন্দেরঅংশীদার করে তুলতে চাই।
আপনারা এই ছবিতে যে আনন্দোজ্জ্বল চেহারাগুলিদেখেছেন, সেগুলি আমার জন্য উদীয়মান ভারত। এই পরিবর্তন কিভাবে এসেছে?
আপনাদের হয়তো মনে আছে যে, ছয় বছর আগে জুলাই মাসেগ্রিড বসে যাওয়ায় সারা দেশ অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল। আসলে যা হয়েছিল, তা একটিব্যবস্থা, একটি শাসনতন্ত্রের ব্রেকডাউন ছিল। ‘সিলোস’-এর এমনই পরিস্থিতি ছিল যে একসময়ে শক্তি মন্ত্রক জানত না যে, কয়লা মন্ত্রকের রোড ম্যাপ কি! নতুন ওপুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রকের সঙ্গে শক্তি মন্ত্রকের কোনও সমন্বয় ছিল না।
আমরা এই সিলোস ভেঙ্গে সমাধানের উদ্দেশ্যে শক্তিক্ষেত্রে সারা দেশে ব্যাপকভাবে বহুমুখী কাজ করছি। আজ ভারতের শক্তি সুরক্ষাকেসর্বশ্রেষ্ঠ সমাধান করার জন্য শক্তি মন্ত্রক, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক ওকয়লা মন্ত্রক একটি একক রূপে কাজ করছে।
কয়লা থেকে আমাদের শক্তি সুরক্ষা আসে। তেমনইপুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি আমাদের আগামী প্রজন্মের উন্নততর ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্যদীর্ঘস্থায়ী শক্তি প্রদান করতে পারে। এর ফলেই আমরা শক্তি স্বল্পতা থেকে শক্তিপ্রাচুর্যের পথে নেটওয়ার্ক ফেইলিয়োর থেকে নেট এক্সপোর্টার হয়ে ওঠার পথে এগিয়েচলেছি। সরকারের প্রচেষ্টায় ‘এক দেশ, এক গ্রিড’-এর স্বপ্নও বাস্তবায়িত হয়েছে।
বন্ধুগণ, পরাজয়, হতাশা, নিরাশার পরিবেশ কখনোদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে না। আপনারাও দেখেছেন যে, বিগত চার বছরে দেশের মানুষেরমনে দেশ পরিচালনকারী ব্যবস্থাগুলি কিভাবে সাহসী হয়ে উঠেছে, কিভাবে ভরসা প্রদানকরেছে। যে পরিবর্তন মানুষ নিজেদের সামনে দেখতে পাচ্ছেন, নিজেদের জীবনে অনুভবকরছেন, তার মাধ্যমে প্রত্যেক ভারতবাসীর মানে আস্থা জন্মেছে যে, একবিংশ শতাব্দীরভারত নিজেদের দুর্বলতাকে জয় করে সকল বন্ধন ছিঁড়ে এগিয়ে যেতে পারে, ‘এক ভারত,শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর স্বপ্নেক বাস্তবায়িত করতে পারে। মানুষের এই প্রবল আস্থাই উদীয়মানভারতের মূল ভিত্তি।
ভাই ও বোনেরা, এর জন্য আজ গোটা বিশ্ব ভারতের এইউদয়কে সম্মান জানাচ্ছে। বিগত সরকারের ১০ বছরের শাসনকালে যতগুলি দেশের রাষ্ট্রপতি ওপ্রধানমন্ত্রী ভারতে এসেছেন আর বিগত চার বছরে যতজন এসেছেন, তার তুলনা করলেই এবিষয়ে আমার আর কিছু বলার প্রয়োজন হবে না। আগের সরকারের আমলে এক বছরে পৃথিবীরযতগুলি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ভারতে এসেছেন, এখন তার প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যকরাষ্ট্রপ্রধান প্রতি বছর ভারতে আসেন।
উদীয়মান ভারতের এই ছবি নিয়ে আপনারা সবাই সর্বকরতে পারেন।
বন্ধুগণ, ভারত শুধু নিজের নয়, গোটা বিশ্বেরউন্নয়নকে এক নতুন মাত্রা প্রদান করেছে। ভারত আজ সারা পৃথিবীতে সৌর বিপ্লবেরনেতৃত্ব দিচ্ছে। আপনারা দেখেছেন, কিভাবে পাঁচদিন আগে আমরা আন্তর্জাতিক সৌর জোটসম্মেলনের আয়োজন শুরু করেছি। এই সম্মেলনে যে দিল্লি সৌর নীতি প্রণীত হয়েছে, সেটিকেবাস্তবায়িত করতে বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশ সহমত হয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের মতো বিষয়নিয়ে ভারতের এই প্রচেষ্টা একবিংশ শতাব্দীতে সমগ্র মানবতার সুরক্ষায় সবচেয়ে বড়পদক্ষেপের অন্যতম।
বন্ধুগণ, বিগত চার বছরে যেভাবে আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে ভারতের প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে, তার জন্য একটি সুচিন্তিত রণনীতির মাধ্যমেনিরন্তর কাজ করা হচ্ছে। ভারত বিশ্বকে বার্তা দিয়েছে শান্তি, উন্নয়ন ও দীর্ঘস্থায়িউন্নয়নের।
ভারতে বড় বড় সংঘ যেমন – রাষ্ট্রসংঘ কিংবা জি-২০এমন সব বিষয় উত্থাপন করেছে, যা গোটা বিশ্বকে প্রভাবিত করেছে। সন্ত্রাসবাদ শুধুএকটা দেশ কিংবা একটি ক্ষেত্রের সমস্যা নয়, বিশ্বের প্রত্যেক দেশের জন্য এটি একটিপ্রতিস্পর্ধা হয়ে উঠেছে – এই মতবাদ ভারত আন্তর্জাতিক মঞ্চগুলিতে স্থাপন করতেপেরেছে।
বিভিন্ন দেশে কালো টাকার প্রবাহ এবং দুর্নীতিকিভাবে বিশ্বের উন্নয়নের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কার্যকরী অর্থনৈতিক প্রশাসনের জন্যসমস্যা সৃষ্টি করেছে, এই বিষয়টি ভারতই সবচেয়ে জোর দিয়ে তুলে ধরতে পেরেছে।
বন্ধুগণ, এটা ভারতেরই আত্মবিশ্বাস যে, এখানেগোটা বিশ্ব ২০৩০ সালের মধ্যে যক্ষ্মা নিবারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে,সেখানে আমরা তার পাঁচ বছর আগেই অর্থাৎ ২০২৫ সালের মধ্যেই এই রোগ থেকে মুক্তিপাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি।
ভাই ও বোনেরা, বিশ্বের জন্য আজ ‘উদীয়মান ভারত’শুধু দুটি শব্দ নয়, এই দুটি শব্দ ১২৫ কোটি ভারতবাসীর সেই শক্তির প্রতীক, যাকে আজগোটা বিশ্ব প্রণাম জানাচ্ছে। এই কারণেই যে সংস্থাগুলির সদস্য লাভের জন্য ভারতবছরের পর বছর প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল, তা এখন বাস্তবায়নের পথে।
মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল ডিজাইন-এ সামিল হওয়ার পর ভারত ‘ওয়াসেনারঅ্যারেঞ্জমেন্ট’ এবং অস্ট্রেলিয়া গ্রুপেরও সদস্য হয়েছে। ইন্টার ন্যাশনালট্রাইব্যুনাল ফর দ্য ল অফ দ্য সী-র নির্বাচনে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইমঅর্গানাইজেশনের নির্বাচনে, ইউনাইটেড নেশনস্ ইকনোমিক সোশ্যাল কাউন্সিল-এরনির্বাচনে ভারত জয়লাভ করেছে। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস-এ ভারত যেভাবে জয়পেয়েছে, তা নিয়ে সারা পৃথিবীতে আলোচনা হয়েছে।
বন্ধুগণ, ভারতের এই ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ফলে ইয়েমেনে যখন সঙ্কট উপস্থিতহয়, ভারত নিজের নাগরিকদের নিরাপদে উদ্ধারের পর বিশ্বের অন্যান্য দেশও তাদেরনাগরিকদের উদ্ধারের জন্য ভারতের কাছে আবেদন জানায়। আপনারা শুনে গর্বিত হবেন যে, ঐসঙ্কটের দিনে ভারত ৪৮টি দেশের নাগরিকদের সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করেছিল।
কূটনীতিতে মানবিক মূল্যবোধকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করি আমরা। আমাদের এইনীতি থেকে বিশ্ববাসী অনুভব করেছে যে, ভারত শুধুই নিজের জন্য নয়, বিশ্বের উপকারেরজন্য কাজ করে। আমাদের ‘সকলের সঙ্গে সকলের উন্নয়ন’-এর মন্ত্র দেশের সীমায় আবদ্ধথাকেনি।
আজ আমরা শুধু আয়ুষ্মান ভারত নয়, আয়ুস্মান বিশ্বের জন্যেও কাজ করছি। যোগ এবংআয়ুর্বেদকে নিয়ে সারা পৃথিবীতে যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাও উদীয়মান ভারত-এরইপ্রতিবিম্ব।
বন্ধুগণ, অর্থব্যবস্থা নিয়ে যদি কথা বলি, তা হলে বিগত ৩-৪ বছরে ভারত নিজেরপাশাপাশি সারা পৃথিবীকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির শক্তি প্রদান করেছে। যেদেশ বিশ্বেরজিডিপি’র ৩ শতাংশ মাত্র, সেই দেশই আজ বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ৭ গুণ বেশিঅবদান রাখছে।
যত বৃহৎ অর্থনীতির সূচক রয়েছে – মুদ্রাস্ফীতি, চলতি খাতে ঘাটতি, রাজস্বঘাটতি, মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি, সুদের হার, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আসা,সকল ক্ষেত্রেই ভারত ভালো অবদান রেখেছে।
আজ বিশ্বের সর্বত্র ভারতকে নিয়ে যে আশা ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তারফলে সমস্ত রেটিং এজেন্সিগুলি ভারত’কে রেটিং-এ আগের তুলনায় উচ্চ স্থানে দেখাচ্ছে।
Ø আজ বিশ্বেরতিনটি সর্বোচ্চ সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক গন্তব্যগুলির একটি হচ্ছে ভারত।
Ø প্রত্যক্ষবিদেশি বিনিয়োগ আস্থা সূচকে ভারতকে বিশ্বের দুটি সর্বোচ্চ সম্ভাবনাময় মার্কেটপারফর্মারের মধ্যে একটি বলে মনে করা হচ্ছে।
Ø আঙ্কটাড-এরবিশ্ব বিনিয়োগ রিপোর্টেও ভারতকে বিশ্বের পছন্দের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগেরগন্তব্য হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
Ø বিশ্বব্যাঙ্কের ইজ অফ ডুইং বিজনেস-এর র্যাঙ্কিং-এও আমরা প্রথম তিন বছরেই ৪২ ধাপ উন্নতিকরেছি।
Ø ২০১৭-১৮সালে তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতে উন্নয়নের হার ৭.২ শতাংশ। অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা বলছেনযে, এই উন্নয়নের হার আরও বৃদ্ধি পাবে।
বন্ধুগণ,২০১৪ সালের আগে দেশের কর ব্যবস্থার পরিচয় ছিল বিনিয়োগকারীদের জন্য অ-বন্ধুত্বসুলভ,অনিশ্চিত ও অস্বচ্ছ। এখন সেই পরিস্থিতি পরিবর্তিত হচ্ছে। অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা করচালু হওয়ার পর ভারত ইতিমধ্যেই বিশ্বে বৃহত্তম অর্থনৈতিক বাজারগুলির মধ্যে অন্যতমহয়ে উঠেছে।
বন্ধুগণ,আমাদের সরকার গরিব, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের আশা-আকাঙ্খা পূরণে সার্বিকদৃষ্টিকোণ থেকে কাজ করছে।
Ø এবারেরবাজেটে আমরা শিক্ষা ক্ষেত্রে পুনরুজ্জীবনযোগ্য পরিকাঠামো এবং ব্যবস্থা বা ‘রাইস’নামক একটি নতুন প্রকল্প শুরু করার কথা ঘোষণা করেছি। এর মাধ্যমে আমাদের সরকার আগামীচার বছরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সংস্কারের জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করতেযাচ্ছে।
Ø সরকার দেশে২০টি বিশ্বমানের ইনস্টিটিউট অফ এমিনেন্স গড়ে তোলার কাজ হাতে নিয়েছে। উচ্চ শিক্ষারসঙ্গে যুক্ত বেসরকারি ও সরকারি ইনস্টিটিউটগুলির সঙ্গে মিলে আমরা কাজ করছি। এইমিশনের মাধ্যমে ১০টি সরকারি ইনস্টিটিউটকে ১০হাজার কোটি টাকা আর্থিক সাহায্যও দেওয়াহবে।
Ø এভাবে দেশেরনবীন প্রজন্মের স্ব-রোজগার এবং বিশেষ করে ক্ষুদ্র অতিক্ষুদ্র এবং মাঝারি ক্ষেত্রেকর্মরত শিল্পোদ্যোগীদের উৎসাহ দিতে আমরা স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া, স্টার্ট আপ ইন্ডিয়াএবং স্কিল ইন্ডিয়া মিশনের মতো কর্মসূচি চালু করেছি।
Ø বিশেষ করে,প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা নবীন প্রজন্ম ও মহিলাদের ক্ষমতায়নে বড় মাধ্যম হয়েউঠছে। যখন থেকে এই প্রকল্প শুরু হয়েছে, তখন থেকে অদ্যাবধি ১১ কোটিরও বেশি ঋণমঞ্জুর করেছে আমাদের সরকার। ইতিমধ্যেই বিনা গ্যারান্টিতে ৫ লক্ষ কোটি টাকার ঋণপ্রদান করা হয়েছে। এ বছরের বাজেটেও আমরা ৩ লক্ষ কোটি টাকার মুদ্রা ঋণ দেওয়ারসিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এই সকল প্রচেষ্টাগুলিকে যদি একটি ফুলের তোড়া হিসাবেদেখি, তা হলে এই তোড়াটি মূলত মধ্যবিত্ত এবং শহুরে নবীন প্রজন্মের মানুষদেরআশা-আকাঙ্খা পূর্ণ করা এবং কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগের তোড়া।
আমি আশা করি, উন্নয়নের মুখ্য ধারার পেছনে থেকে যাওয়া যেকোনও ব্যক্তি কিংবা ক্ষেত্র যদি তীব্রগতিতে এগিয়ে আসেন, তাঁদের শক্তি এবং উৎপাদিতফসল কিংবা পণ্যের প্রতি সুবিধা করা হবে। তবেই উদীয়মান ভারতের ধারনা আরও শক্তিশালীহবে।
অবশেষে, আমি উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে ২০২২ সালের মধ্যেদেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার সংকল্পসিদ্ধির যাত্রা সম্পর্কে মনে করাতে চাই।আপনাদের গ্রুপ কি কোনও সংকল্প গ্রহণ করেছে? কোনও রোড ম্যাপ তৈরি করেছে? আপনারা কিভেবেছেন যে, ২০২২ সালের মধ্যে নতুন ভারতের স্বপ্ন সফল করতে আমরা এভাবে অবদান রাখব?
আমি অত্যন্ত আনন্দিত হব যদি আপনাদের গ্রুপ কোনও চ্যালেঞ্জনিয়ে নিজেদের সংকল্পকে নিজেদের চ্যানেলে ‘প্রোমোট’ করেন এবং তার ‘ফলো-আপ’ও দেখাতেথাকেন।
বন্ধুগণ, ১২৫ কোটি ভারতবাসী ঈশ্বরের প্রতিরূপ। দেশেরপ্রতিটি সংস্থা প্রত্যেক একককে দেশের কল্যাণে, রাষ্ট্র নির্মাণের স্বার্থে উন্নয়নযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সংকল্পবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
আপনাদের যে সংকল্পই থাকুক, তা সিদ্ধির জন্য আমার পক্ষথেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
আরেকবার আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Read Full Presentation Here