Quoteগ্রামীণ ভারত প্রকাশ্য শৌচমুক্ত হয়েছে #Gandhi150 #SwachhBharat
Quote২০২২ সালের মধ্যে আমাদের দেশকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকমুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী #Gandhi150 #SwachhBharat
Quoteগান্ধীজির ভিশনে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা একটি সুস্থ, সমৃদ্ধ এবং মজবুত নতুন ভারত গড়ছি: প্রধানমন্ত্রী

গুজরাটের রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রতজী, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রূপাণীজী, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের অন���যান্য সহযোগী বন্ধু, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং মালে সরকারের প্রতিনিধিগণ, বিশ্বের ভিন্ন ভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দ, দেশের নানা প্রান্ত থেকে সমাগত হাজার হাজার স্বচ্ছাগ্রহী, আমার পঞ্চায়েত প্রধান বন্ধুগণ এবং ভাই ও বোনেরা,

আমি আজ নিজের বক্তব্য শুরু করার আগে সবরমতীর এই পারে উপস্থিত সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধানদের মাধ্যমে দেশের সকল পঞ্চায়েত প্রধান, পুরসভা এবং পৌর সংস্থাগুলির সমস্ত সঞ্চালক বন্ধু ও বোনেদের সাদর প্রণাম জানাই। কারণ, যে সমর্পণ ভাব ও পরিশ্রমের মাধ্যমে, ত্যাগের ভাবনা নিয়ে বিগত পাঁচ বছর ধরে আপনারা পূজনীয় বাপুর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছেন – তা অভূতপূর্ব।

সবরমতীর এই পবিত্র তীর থেকে রাষ্ট্রপিতা মহাত্মা গান্ধী এবং সারল্য ও সদাচারের প্রতি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীকে প্রণাম জানাই, তাঁদের চরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করি।

|

বন্ধুগণ, পূজনীয় বাপুজীর সার্ধশত জন্ম জয়ন্তীর পবিত্র অনুষ্ঠান, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের এত বড় সাফল্য, শক্তির আরাধনার নবরাত্র চলছে, চারদিকে গরবার গুঞ্জরণ; এত অদ্ভূত সংযোগ খুব কমই দেখা যায়। আজ সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যে পঞ্চায়েত প্রধান ভাই ও বোনেরা এখানে এসেছেন, আপনারা কি গরবার অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ পেয়েছেন? গরবা দেখতে গিয়েছিলেন?

বাপুজীর সার্ধশত জন্ম জয়ন্তী তো সারা পৃথিবী পালন করছে। কিছুদিন আগে রাষ্ট্রসংঘ ডাকটিকিট প্রকাশ করে এই বিশেষ উদযাপনকে স্মরণীয় করে তুলছে। আজ এখানেও বিশেষ ডাকটিকিট ও মুদ্রা প্রকাশ করা হয়েছে। আমি আজ বাপুজীর জন্মস্থান, প্রেরণা-স্থল তথা সংকল্প-স্থল থেকে সমগ্র বিশ্বকে শুভেচ্ছা জানাই।

ভাই ও বোনেরা, এখানে আসার আগে আমি সবরমতী আশ্রম গিয়েছিলাম, নিজের জীবনে আমার অনেকবার সেখানে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। প্রত্যেকবারই আমি পূজনীয় বাপুজীর সান্নিধ্য অনুভব করেছি, কিন্তু আজ আমি সেখানে নতুন প্রাণশক্তি পেয়েছি। সবরমতী আশ্রমেই তিনি স্বচ্ছাগ্রহ ও সত্যাগ্রহকে ব্যাপক রূপ দিয়েছিলেন। এই সবরমতীর তীরেই মহাত্মা গান্ধীজী সত্যকে প্রয়োগ করেছেন।

ভাই ও বোনেরা, আজ সবরমতীর এই প্রেরণা-স্থল স্বচ্ছাগ্রহের একটি বড় সাফল্যের সাক্ষী হয়ে থাকছে। এটা আমাদের সকলের জন্য আনন্দ ও গর্বের অনুষ্ঠান। সবরমতী রিভার ফ্রন্টে এই কর্মসূচির আয়োজন আমার দ্বিগুণ আনন্দের বিষয়।

বন্ধুগণ, আজ গ্রামীণ ভারত, দেশের সমস্ত গ্রামবাসী নিজেদের সম্পূর্ণ রূপে উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত ঘোষণা করেছে। সারা দেশে যে স্বচ্ছ ভারত অভিযান চলছে, স্বেচ্ছায়, স্ব-প্রেরণা এবং গণঅংশীদারিত্বই এর মূল শক্তি ও সাফল্যের চাবিকাঠি। আমি প্রত্যেক দেশবাসীকে, বিশেষ করে গ্রামবাসীদের, আমাদের পঞ্চায়েত প্রধানদের, সমস্ত স্বচ্ছাগ্রহীদের আজ অনেক অনেক আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আজ এখানে যে স্বচ্ছাগ্রহীরা ‘স্বচ্ছ ভারত পুরস্কার’ জিতেছেন, তাঁদেরকেও অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুগণ, আজ আমার সত্যি সত্যি মনে হচ্ছিল যে, ইতিহাস নিজেই নিজেকে পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। যেভাবে দেশের স্বাধীনতার জন্য বাপুর এক আহ্বানে লক্ষ লক্ষ ভারতবাসী সত্যাগ্রহের পথে নেমে পড়েছিলেন, তেমনভাবে গত কয়েক বছর ধরে সারা দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষ স্বচ্ছাগ্রহের ক্ষেত্রে খোলা মনে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করেছেন। পাঁচ বছর আগে স্বাধীনতা দিবসে আমি যখন লালকেল্লার প্রকার থেকে স্বচ্ছ ভারতের আহ্বান জানিয়েছিলাম, তখন আমার সম্বল ছিল শুধু জনগণের প্রতি বিশ্বাস এবং বাপুর অমর বার্তা।

বাপুজী বলতেন যে, আপনি দুনিয়ায় যে পরিবর্তন আনতে চান, তা আগে নিজের মধ্যে আনতে হবে। এই মন্ত্রকে অনুসরণ করে আমরা সকলে ঝাড়ু হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছি। বয়স যাই হোক, সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিক অবস্থা নির্বিশেষে প্রত্যেকে পরিচ্ছন্নতা, গরিমা ও সম্মানের এই কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেছেন।

কোথাও কোনও কণে বিয়ের শর্ত রাখছেন – শৌচালয় চাই, আবার কোথাও শৌচালয়কে ইজ্জত ঘরের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। যে শৌচালয় নিয়ে কথা বলা এক সময় অস্বস্তির বিষয় ছিল, সেই শৌচালয় আজ দেশে ভাবনার গুরুত্বপূর্ণ অ���শ হয়ে উঠেছে। বলিউড থেকে শুরু করে খেলার মাঠ পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতার এই বিরাট অভিযান প্রত্যেককে জুড়েছে, প্রেরণা ও উৎসাহ যুগিয়েছে।

বন্ধুগণ, আজ আমাদের অতুলনীয় সাফল্য দেখে বিশ্ববাসী আশ্চর্যচকিত। আজ সারা পৃথিবী আমাদের এই সাফল্যের জন্য পুরস্কৃত করছে এবং সম্মান জানাচ্ছে। ৬০ মাসে ৬০ কোটির বেশি জনগণকে শৌচালয় পরিষেবায় যুক্ত করা, ১১ কোটিরও বেশি শৌচালয় নির্মাণ – এসব তথ্য জেনে বিশ্ববাসী অবাক। কিন্তু আমার জন্য কোনও পরিসংখ্যান, কোনও প্রশংসা যে কোনও সম্মানের থেকে বেশি আনন্দের বিষয় হ’ল – আজ মেয়েরা দুশ্চিন্তা মুক্ত হয়ে স্কুলে যাচ্ছে, কোটি কোটি মা ও বোন এক অসহনীয় দৈনন্দিন সমস্যা থেকে মুক্ত হয়েছে। আমি খুশি যে, এই অভিযান লক্ষ লক্ষ নির্দোষের জীবন নানা কঠিন রোগের কবল থেকে রক্ষা করছে, পরিচ্ছন্নতার ফলে গরিব মানুষের চিকিৎসার খরচ এখন হ্রাস পেয়েছে।

|

আমি আনন্দিত যে, এই অভিযানের ফলে গ্রামাঞ্চলে ও জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে অনেক নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ গড়ে উঠেছে। আগে আমরা ‘রাজমিস্ত্রী’ জানতাম, এখন বোনেরা গৃহ নির্মাণের কাজ শিখে ‘রানীমিস্ত্রী’ হিসাবে সুনাম কুড়াচ্ছেন।

ভাই ও বোনেরা, স্বচ্ছ ভারত অভিযান যেমন জীবন রক্ষার ভূমিকা পালন করছে, তেমনই জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের কাজও করছে। ইউনিসেফের একটি অনুমান অনুসারে বিগত পাঁচ বছরে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের মাধ্যমে ভারতের অর্থ ব্যবস্থায় ২০ লক্ষ কোটী টাকারও বেশি ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে ভারতে ৭৫ লক্ষেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ কর্মসংস্থান হয়েছে গ্রামের ভাই ও বোনেদের।

শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের শিক্ষার মান, উৎপাদনশীলতা এবং শিল্পের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর ফলে, দেশের কন্যা ও ভগিনীদের নিরাপত্তা এবং ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও অদ্ভূত পরিবর্তন এসেছে। গ্রাম, গরিব এবং মহিলাদের স্বাবলম্বন ও ক্ষমতায়নকে উৎসাহ প্রদানকারী এমন মডেলই পূজনীয় মহাত্মা গান্ধী চাইতেন। এটাই মহাত্মা গান্ধীজীর স্বরাজের মূল ভাবনা ছিল। এই ভাবনাকে ছড়িয়ে দিতে তিনি নিজের জীবন সমর্পণ করেছেন।

বন্ধুগণ, এখন প্রশ্ন হ’ল – আমরা যা অর্জন করেছি, তা কি যথেষ্ট?

এর উত্তর সোজা ও স্পষ্ট। আজ আমরা যা অর্জন করেছি, তা সাফল্যের একটি পর্যায় মাত্র। স্বচ্ছ ভারতের জন্য আমাদের সফর নিরন্তর জারি রয়েছে। আমরা অসংখ্য শৌচালয় নির্মাণ করেছি, শৌচালয় ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলতে মানুষকে উৎসাহ যুগিয়েছি। এখন আমাদের দেশের একটা বড় অংশের অভ্যাসে পরিণত হওয়া এই পরিবর্তনকে স্থায়ী করে তুলতে হবে। সরকার, স্থানীয় প্রশাসন ও গ্রাম পঞ্চায়েত যেন আমাদের শৌচালয়ের যথোচিত ব্যবহার সম্পর্কে সুনিশ্চিত করে। যাঁরা এখনও এর ব্যবহার এড়িয়ে যাচ্ছেন, তাঁদেরকেও এই পরিষেবার সুফলভোগী করে তুলতে হবে।

ভাই ও বোনেরা, সম্প্রতি সরকার যে ‘জল জীবন’ আন্দোলন শুরু করেছে, তা থেকেই সাহায্য পাওয়া যাবে। নিজের বাড়ি, গ্রাম ও কলোনীতে আমরা জল সংরক্ষণ ও জল পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার ব্যাপারে যে যতটা উদ্যোগ নিতে পারি, তা নিতে হবে। আমরা তা করতে পারলে, শৌচাগারের নিয়মিত ও স্থায়ী ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অনেক সাহায্য হবে। সরকার ‘জল জীবন মিশন’ বাবদ সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা খরচের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু দেশবাসীর সক্রিয় অংশীদারিত্ব ছাড়া এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পূর্ণ করা অসম্ভব।

বন্ধুগণ, পরিচ্ছন্নতা, পরিবেশ সুরক্ষা এবং জীব সুরক্ষা – এই তিনটি বিষয় মহাত্মা গান্ধীর অত্যন্ত প্রিয় ছিল। কিন্তু এই তিনটি ক্ষেত্রেই বড় বিপদ ডেকে আনে প্লাস্টিক। সেজন্য আমরা ২০২২ সালের মধ্যে দেশ সিঙ্গল ইয়ুজ প্লাস্টিক থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হতে চাই। বিগত তিন সপ্তাহে ‘স্বচ্ছতাই সেবা’ কর্মসূচির মাধ্যমে গোটা দেশে এই আন্দোলনকে অনেক গতি প্রদান করা গেছে। আমাকে বলা হয়েছে যে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সারা দেশে প্লাস্টিক ক্যারি ব্যাগের ব্যবহার দ্রুতগতিতে হ্রাস পাচ্ছে।

আমি জানতে পেরেছি যে, আজ সারা দেশের কোটি কোটি মানুষ সিঙ্গল ইয়ুজ প্লাস্টিক ব্যবহার না করার সংকল্প গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ, যে প্লাস্টিক আমরা একবার ব্যবহার করে ফেলে দিই, তেমন প্লাস্টিক থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। এতে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি, আমাদের শহরগুলির বড় বড় সড়ক ও পয়ঃপ্রণালী অবরুদ্ধ হওয়ার সমস্যার সমাধান হবে এবং আমাদের পশুধন ও সামুদ্রিক জীবন নিরাপদ থাকবে।

ভাই ও বোনেরা, আমি আরেকবার বলছি, আমাদের এই আন্দোলনের মূলে রয়েছে জনগণের আচার-ব্যবহারে পরিবর্তন আনা। এই পরিবর্তন আগে নিজের মধ্যে আনতে হবে, তারপর অন্যকে সচেতন করতে হবে। এই শিক্ষা আমরা মহাত্মা গান্ধীজী এবং লাল বাহাদুর শাস্ত্রীজীর থেকে পেয়েছি।

দেশ যখন ভয়ানক খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হয়েছিল, শাস্ত্রীজী তখন দেশবাসীকে নিজেদের খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু এর সূচনা তিনি নিজের পরিবার থেকে করেছিলেন। পরিচ্ছন্নতার এই অভিযানেও আমাদের জন্য এটাই একমাত্র রাস্তা। তবেই আমরা সঠিক গন্তব্যে পৌঁছতে পারবো।

ভাই ও বোনেরা, আজ গোটা বিশ্ব আমাদের এই স্বচ্ছ ভারত অভিযানের মডেল থেকে শিখতে চায়, একে গ্রহণ করতে চায়। কিছুদিন আগেই যখন ভারতকে আমেরিকায় ‘গ্লোবাল গোল কিপার অ্যাওয়ার্ড’ এর মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়েছে, তখন ভারতের এই সাফল্য সম্পর্কে সারা পৃথিবী জেনেছে।

আমি র���ষ্ট্রসংঘেও একথা বলেছি যে, ভারত অন্যান্য দেশের সঙ্গে নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে সর্বদাই প্রস্তুত। আজ নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং মালে সরকারের প্রতিনিধিরা আমাদের মধ্যে রয়েছেন। ভারত অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আপনাদের দিকে পরিচ্ছন্নতা এবং শৌচালয় সংক্রান্ত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

বন্ধুগণ, মহাত্মা গান্ধীজী সত্য, অহিংসা, সত্যাগ্রহ এবং স্বাবলম্বনের ভাবনায় দেশকে পথ দেখিয়েছেন। আজ আমরা সেই পথেই এগিয়ে গিয়ে পরিচ্ছন্ন, সুস্থ, সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী নতুন ভারত নির্মাণের কাজে ব্রতী হয়েছি। পূজনীয় বাপুজী পরিচ্ছন্নতাকে সর্বোপরি মানতেন। সত্যিকরের সাধক হিসাবে দেশের গ্রামাঞ্চল আজ তাঁকে স্বচ্ছ ভারতের কার্যাঞ্জলি প্রদান করছে। গান্ধীজী স্বাস্থ্যকে সত্যিকারের সম্পদ বলে মানতেন আর চাইতেন যে, দেশের প্রত্যেক ব্যক্তি সুস্থ ও সবল হয়ে উঠুক। আমরা যোগ দিবস, আয়ুষ্মান ভারত এবং ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টের মাধ্যমে দেশে এই ভাবনার ফলিত প্রয়োগ করার প্রচেষ্টা চালিয়েছি। গান্ধীজী বসুধৈব কুটুম্বকমে বিশ্বাস রাখতেন। এখন ভারত নিজেদের নতুন নতুন প্রকল্প আর পরিবেশের জন্য দায়বদ্ধতার মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে অনেক সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তি যোগাচ্ছে। বাপুজীর স্বপ্ন ছিল আত্মনির্ভর ও আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ভারত গঠন। আজ আমরা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’, স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’র মতো অভিযানগুলির মাধ্যমে এই স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছি।

|

গান্ধীজীর সংকল্প ছিল একটি এমন ভারত যেখানে প্রত্যেক গ্রাম হবে স্বাবলম্বী। আমরা রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বরাজ প্রকল্পের মাধ্যমে এই সংকল্পকে সিদ্ধির পথে নিয়ে যাচ্ছি।

গান্ধীজী সমাজের প্রান্তিকতম ব্যক্তিটির কথা ভেবে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলতেন। আমরা আজ উজ্জ্বলা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, জন ধন যোজনা, সৌভাগ্য যোজনা এবং স্বচ্ছ ভারত অভিযানের মতো কর্মসূচির মাধ্যমে এই মন্ত্রকে আমাদের ব্যবস্থার অঙ্গ করে তুলেছি।

পূজনীয় বাপুজী প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের জীবনকে সহজ করে তোলার কথা বলতেন। আমরা আধার, প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, ভীম অ্যাপ, ডিজি লকার – এর মাধ্যমে দেশবাসীর জীবনকে সহজ করে তোলার চেষ্টা করছি।

বন্ধুগণ, মহাত্মা গান্ধী বলতেন, আমরা ভারতের উত্থান চাই, যাতে সারা বিশ্ব এর দ্বারা উপকৃত হয়। তিনি স্পষ্টভাবে বিশ্বাস করতেন যে, রাষ্ট্রবাদী না হলে আন্তর্জাতিকতাবাদী হওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ, আমাদের আগে নিজেদের সমস্যাগুলির সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। তবেই আমরা গোটা বিশ্বকে সাহায্য করতে পারবো। এই রাষ্ট্রবাদের ভাবনা নিয়েই আজ ভারত এগিয়ে চলেছে।

বাপুজীর স্বপ্নের ভারত – নতুন ভারত এখন নির্মাণের পথে। ��াপুজীর স্বপ্নের ভারত হবে পরিচ্ছন্ন, যেখানে পরিবেশ সুরক্ষিত, প্রত্যেক ব্যক্তি সুস্থ, প্রত্যেক মা ও শিশুর পুষ্টি সুনিশ্চিত, প্রত্যেক নাগরিক নিরাপদ অনুভব করবেন – এমন বৈষম্যহীন সদ্ভাবনাপূর্ণ ভারত; বাপুজীর স্বপ্নের ভারত – ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ অউর সবকা বিসওয়াস’ – এই আদর্শ নিয়েই গড়ে উঠছে। বাপুজীর রাষ্ট্রবাদে এই তত্ত্ব গোটা বিশ্বের আদর্শ প্রমাণিত হবে এবং প্রেরণার উৎস হয়ে উঠবে।

আসুন, রাষ্ট্রপিতার মূল্যবোধকে জীবনে প্রতিস্থাপিত করতে মানবতার স্বার্থে প্রত্যেক ভারতবাসী রাষ্ট্রবাদের প্রত্যেক সংকল্পকে বাস্তবায়িত করার সংকল্প গ্রহণ করি। আমি আজ দেশবাসীর কাছে ‘এক ব্যক্তি, এক সংকল্প’ – এই ভাবনার অনুরোধ জানাই। প্রত্যেকেই দেশের স্বার্থে এমন কোনও সংকল্প গ্রহণ করুন, যার মাধ্যমে দেশের মঙ্গল হবে। আপনাদের সকলকে আমার অনুরোধ, একটি সংকল্প গ্রহণ করুন এবং নিজের কর্তব্য সম্পর্কে ভাবুন, দেশের প্রতি আপনাদের দায়িত্ব সম্পর্কে ভাবুন।

কর্তব্য পথে এগিয়ে গেলে ১৩০ কোটি মানুষের প্রচেষ্টা, ১৩০ কোটি সংকল্পের শক্তি নিয়ে এই দেশ কী না করতে পারে! আজ থেকে শুরু করে আগামী এক বছর ধরে আমাদের এই লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যেতে হবে। এক বছর কাজ করলে এটাই আমাদের জীবনকে দিশা দেখাবে, এটাই আমাদের জীবনশৈলীতে পরিণত হবে, এটাই কৃতজ্ঞ দেশবাসীর পক্ষ থেকে বাপুর প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধাঞ্জলি হবে।

এই অনুরোধ এবং এবং এই বক্তব্যের মাধ্যমে আমি আরেকটি কথা বলতে চাই যে, এই সাফল্য কোনও সরকারের সাফল্য নয়, কোনও প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য নয়, কোনও মুখ্যমন্ত্রীর সাফল্য নয়, এই সাফল্য ১৩০ কোটি জনগণের কঠিন পরিশ্রমের ফসল। সমাজের গুরুজনেরা বিভিন্ন সময়ে যেভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন, সঠিকভাবে পথ দেখিয়েছেন, তার ফলেই এই সাফল্য এসেছে। আর আমি দেখেছি যে, বিগত পাঁচ বছর ধরে সমস্ত সংবাদ মাধ্যম প্রতিনিয়ত এই বিষয়গুলিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে। দেশে একটি সদর্থক কাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে সংবাদ মাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

যাঁরা এভাবে প্রতিনিয়ত কাজ করে গেছেন, তাঁদের সবাইকে, ১৩০ কোটি দেশবাসীকে আজ সাদর প্রণাম জানাই, ধন্যবাদ জানাই এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি।

এই কয়েকটি কথা বলে আজ আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি। আমার সঙ্গে আপনারা সবাই বলুন, আমি বলবো – মহাত্মা গান্ধী! আর আপনারা দু-হাত তুলে বলবেন – অমর রহে অমর রহে।

মহাত্মা গান্ধী – অমর রহে

মহাত্মা গান্ধী – অমর রহে

মহাত্মা গান্ধী – অমর রহে

আরেকবার গোটা দেশকে একটি বড় সংকল্প বাস্তবায়নের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আমার সঙ্গে বলুন –

ভারতমাতার জয়

ভারতমাতার জয়

ভারতমাতার জয়

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী

জনপ্রিয় ভাষণ

প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটেছে: মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
Digital leap for NRIs: Indian govt launches OCI portal to enhance user experience

Media Coverage

Digital leap for NRIs: Indian govt launches OCI portal to enhance user experience
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister lauds the new OCI Portal
May 19, 2025

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has lauded the new OCI Portal. "With enhanced features and improved functionality, the new OCI Portal marks a major step forward in boosting citizen friendly digital governance", Shri Modi stated.

Responding to Shri Amit Shah, Minister of Home Affairs of India, the Prime Minister posted on X;

"With enhanced features and improved functionality, the new OCI Portal marks a major step forward in boosting citizen friendly digital governance."