ভারত মাতার জয় !
ভারত মাতার জয় !
ত্রিপুরার রাজ্যপাল শ্রী সত্যদেব আর্যজি, ত্রিপুরার তরুণ ও পরিশ্রমী মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব দেবজি, ত্রিপুরার উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী জিষ্ণু দেববর্মাজি, আমার মন্ত্রীসভার সহকর্মী বোন প্রতিমা ভৌমিকজি ও শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াজি, রাজ্য সরকারের মন্ত্রী শ্রী এন সি দেববর্মাজি, শ্রী রতনলাল নাথজি, শ্রী প্রাণজিত সিংহ রায়জি এবং শ্রী মনোজ কান্তি দেবজি, অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা ও এখানে উপস্থিত বিপুল সংখ্যক আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা !
আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা, নতুন বছর ২০২২ উপলক্ষ্যে আপনাদের সবাইকে অভিনন্দন !
বছরের শুরুতে মা ত্রিপুরা সুন্দরীর আর্শিবাদে ত্রিপুরা আজ তিনটি উপহার পেতে চলেছে। প্রথম উপহার হলো যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, দ্বিতীয় উপহার হল ‘মিশন ১০০, বিদ্যাজ্যোতি স্কুল’ আর তৃতীয় উপহার হলো ‘ত্রিপুরা গ্রাম সমৃদ্ধি যোজনা’। আজ এখানে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন ও শিলান্যাস হয়েছে। এই তিনটি উপহারের জন্য আপনাদের সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই !
বন্ধুগণ,
একবিংশ শতকের ভারত সকলকে একসঙ্গে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে, সকলের উন্নয়ন নিশ্চিত হবে এবং এক্ষেত্রে প্রত্যেকের উদ্যোগ থাকবে। কিছু রাজ্য যদি পিছিয়ে থাকে, কিছু রাজ্যের মানুষ যদি ন্যূনতম পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন তাহলে দেশের উন্নয়নে এ ধরণের অসাম্য কখনোই ভালো হতে পারেনা। এর আগে ত্রিপুরার মানুষ সেটিই দেখে এসেছেন। তাদের এই অভিজ্ঞতা কয়েক দশকের। আগে এখানে দুর্নীতির চাকা ঘোরা বন্ধ হতোনা আর উন্নয়নের গাড়ির ব্রেক সবসময় দেওয়া থাকতো। এর আগের সরকারের ত্রিপুরার উন্নয়নের বিষয়ে কোনো পরিকল্পনাও ছিলনা, ইচ্ছেও ছিলনা। ত্রিপুরা দারিদ্র ও অনুন্নয়নের সঙ্গে বসবাস করতো। এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য আমি ত্রিপুরার মানুষকে হীরা মডেলের কথা বলেছিলাম। এইচ অর্থাৎ হাইওয়ে (মহাসড়ক), আই অর্থাৎ ইন্টারনেট সংযোগ, আর অর্থাৎ রেলওয়ে এবং এ অর্থাৎ এয়ারওয়েজ (বিমান যোগাযোগ)। আজ হীরা মডেলের ওপর ভিত্তি করে ত্রিপুরার উন্নয়ন হচ্ছে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসার ঘটছে। এখানে আসার আগে আমি মহারাজা বীর বিক্রম বিমান বন্দরের নব নির্মিত টার্মিনাল ভবন সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেখছিলাম। ত্রিপুরার সংস্কৃতি, রাজ্যের ঐতিহ্য, স্থাপত্য এ সবকিছুর স্বাদ প্রতিটি পর্যটক এই বিমান বন্দরে পাবেন। ত্রিপুরার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, উনোকোটি পাহাড়ে আদিবাসীদের শিল্পকলা অথবা পাথরের ভাষ্কর্য সবকিছুর আনন্দই এই বিমান বন্দরে আপনি পাবেন। মহারাজা বীর বিক্রম বিমান বন্দরে নতুন সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলার ফলে এর ক্ষমতা তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন এখানে প্রায় ১ ডজন বিমান থাকতে পারবে। এর ফলে শুধুমাত্র ত্রিপুরা নয়, সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারতে বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। যখন অন্তর্দেশীয় কার্গো টার্মিনাল এবং হিমঘরের কাজ শেষ হবে তখন সমস্ত উত্তর পূর্বাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও উন্নয়ন নতুন গতি পাবে। আমাদের মহারাজা বীর বিক্রমজি শিক্ষা ও স্থাপত্যে ত্রিপুরাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। আজ তিনি ত্রিপুরার উন্নয়ন এবং এর জন্য সকলের উদ্যোগ দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হবেন।
বন্ধুগণ,
আজ ত্রিপুরার যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসার ঘটানোর পাশাপাশি উত্তরপূর্বের জন্য উন্নয়নমূলক কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। সড়ক, রেল, বিমান অথবা জলপথ পরিবহণ- প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে আমাদের সরকার প্রচুর বিনিয়োগ করেছে, যা আগে কখনও হয়নি। এখন ত্রিপুরা এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন হাব হয়ে উঠছে। একটি ফ্রেড করিডর গড়ে তোলা হয়েছে। প্রচুর রাস্তা ও রেল প্রকল্প এবং আন্তর্জাতিক জলপথ বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছে। এর ফলে এই অঞ্চলের সংস্কার ত্বরান্বিত হচ্ছে।
আমাদের সরকার আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে উদ্যোগী হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
যখন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয় তখন কাজের অগ্রগতি দ্বিগুণ গতিতে হয়। আর এ কারণে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের কোনো বিকল্প নেই। ডাবল ইঞ্জিন সরকারের অর্থ হলো সম্পদের যথাযথ ব্যবহার, ডাবল ইঞ্জিন সরকারের অর্থ হলো সম্পূর্ণ সংবেদনশীলতা, ডাবল ইঞ্জিন সরকারের অর্থ হলো মানুষের দক্ষতার বিকাশ ঘটানো, ডাবল ইঞ্জিন সরকারের অর্থ হলো পরিষেবা দেওয়া ও একনিষ্ঠভাবে কাজ করা। ডাবল ইঞ্জিন সরকারের অর্থ হলো বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন। একটি ডাবল ইঞ্জিন সরকার সমৃদ্ধির দিকে যথাযথভাবে এগিয়ে চলে। আজ এখানে যে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা গ্রাম সমৃদ্ধি যোজনার সূচনা হতে চলেছে সেটি আসলে এগুলিরই উদাহরণ। এই প্রকল্পে প্রত্যেক বাড়িতে নলবাহিত জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হবে, প্রত্যেক দরিদ্র মানুষ তার মাথার ওপর পাকা ছাদ পাবেন। কিছু আগে আমি কয়েকজন সুবিধাভোগীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। এই প্রকল্পগুলির বিষয়ে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে আমি জানার চেষ্টা করছিলাম। আমি একটি মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি যে একটি বাড়ি পাবে। এ পর্যন্ত শুধু তার বাড়ির মেঝের কাজ শেষ হয়েছে, দেওয়াল এখনও গাঁথা হয়নি। কিন্তু এতেই সে এতো খুশি যে তার চোখ দিয়ে অবিরত জল গড়াচ্ছে। এই সরকার সাধারণ মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্য একনিষ্ঠভাবে কাজ করে চলেছে।
প্রতিটি যোগ্য পরিবার আজ আযুষ্মান যোজনা কার্ড পেয়েছে। আমি এমন একটি পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি যেখানে মা ও তার ছোট ছেলেটি ক্যান্সারে আক্রান্ত। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের জন্য এই মা ও ছেলেটির জীবন স্থিতিশীল তহবিলের সাহায্যে রক্ষা পাবে। যখন প্রত্যেক দরিদ্র মানুষ বিমার আওতায় আসেন, যখন প্রতিটি শিশু লেখাপড়া করার সুযোগ পায়, যখন প্রতিটি কৃষক কিষাণ ক্রেডিট কার্ড পান, প্রত্যেক গ্রামে ভালো রাস্তা তৈরি করা হয় তখন দরিদ্র মানুষের আস্থা বেড়ে যায়। দরিদ্র মানুষের জীবন আরও সহজ হয়। আমার দেশের প্রতিটি নাগরিকের ক্ষমতায়ণ হয়। আমার দরিদ্র নাগরিকরা ক্ষমতাশালী হয়ে উঠে। এই আস্থা সমৃদ্ধির ভিত রচনা করে। আর তাই আমি লালকেল্লার প্রকার থেকে বলেছিলাম আমাদের প্রত্যেক সুবিধাভোগীর কাছে প্রকল্পগুলি নিয়ে পৌঁছাতে হবে যাতে প্রত্যেক প্রকল্পের সর্বোচ্চ সুবিধা সবাই পেতে পারেন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে ত্রিপুরা এই লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। এ বছর ত্রিপুরার রাজ্যের মর্যাদা পাওয়ার ৫০ বছর পূর্তি। এটি ত্রিপুরার জন্য বিশাল একটি বিষয়। ত্রিপুরা ইতিমধ্যেই গ্রামাঞ্চলে এবং দরিদ্র মানুষদের জন্য নানা কল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশের প্রথম সারিতে রয়েছে। গ্রাম সমৃদ্ধি যোজনা ত্রিপুরার এই রেকর্ডকে আরও সমৃদ্ধ করবে। প্রত্যেক গ্রামের প্রতিটি দরিদ্র পরিবার যাতে ২০টির বেশি সুযোগ-সুবিধা পান সেটি নিশ্চিত করা হবে। কোনো গ্রাম নির্ধারিত সময়ের আগে যদি তার ১০০ শতাংশ লক্ষমাত্রা পূরণ করে সেক্ষেত্রে সেই গ্রামকে উৎসাহভাতা হিসেবে কয়েক লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। এই ধারণাটি আমার খুব ভালো লেগেছে। কারণ এর মাধ্যমে উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা হবে।
বন্ধুগণ,
ত্রিপুরা সরকার আজ দরিদ্র মানুষদের দুঃখ-দুর্দশা বুঝতে পারছে। তারা দরিদ্র মানুষদের জন্য সংবেদনশীল। আমাদের সংবাদ মাধ্যমের বন্ধুরাতো এই বিষয়গুলি নিয়ে খুব একটা আলোচনা করেন না। তাই আজ আমি আপনাদের কাছে একটি ঘটনা তুলে ধরবো। ত্রিপুরায় যখন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)-এর কাজ শুরু হয়েছিল সেই সময় কাঁচা বাড়ির সংজ্ঞা নিয়ে একটি সরকারি নিয়ম সমস্যার সৃষ্টি করেছিল। আগের সরকারের নিয়ম ছিল কোনো বাড়ির ছাদে যদি লোহার শিট থাকে তাহলে সেই বাড়িটি কাঁচা বাড়ি বলে বিবেচিত হবেনা। তাই বাড়িটির ভগ্নদশা হলেও বা তার দেওয়াল মাটি দিয়ে বানালেও বাড়িটিকে কাঁচা বাড়ি বলে বিবেচনা করা হবেনা। তার কারণ ওই বাড়ির ছাদে লোহার শিট রয়েছে। এরফলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা থেকে ত্রিপুরার গ্রামাঞ্চলের হাজার হাজার পরিবার বঞ্চিত হচ্ছিল। আমার সহকর্মী বিপ্লব দেবজির উদ্যোগকে আমি প্রশংসা করি। তিনি প্রথম এই বিষয়টি আমার সামনে উপস্থাপিত করেন। প্রমাণ সহ তিনি কেন্দ্রের কাছে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরেন। এটি জানার পর কেন্দ্র নিয়মের পরিবর্তন ঘটায় এবং কাঁচা বাড়ির সংজ্ঞা বদলে ফেলে। এরফলে ত্রিপুরার ১ লক্ষ ৮০ হাজারের বেশি দরিদ্র পরিবার পাকা বাড়ি পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। এ পর্যন্ত ত্রিপুরায় ৫০ হাজারের বেশি বন্ধু পাকা বাড়ি পেয়েছেন। সম্প্রতি দেড় লক্ষ পরিবার যাতে তাদের পাকা বাড়ি বানাতে পারেন তারজন্য প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছেন। এবারে আপনারা ভেবে দেখুন কিভাবে আগে সরকার চলতো আর এখন আমাদের ডাবল ইঞ্জিন সরকার কেমন করে কাজ করছে।
ভাই ও বোনেরা,
যেকোন অঞ্চলের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সম্পদের পাশাপাশি সেখানকার নাগরিকদের দক্ষতা ও ক্ষমতার বিষয়গুলিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। বলাই বাহুল্য নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি যা সারা দেশে কার্যকর হতে চলেছে সেই নীতি একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যুব সম্প্রদায়কে সাহায্য করবে। এখানে স্থানীয় ভাষায় লেখাপড়ার ওপর সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আর এখন ত্রিপুরার ছাত্রছাত্রীরা ‘মিশন ১০০ বিদ্যাজ্যোতি’ অভিযানের সুবিধা পাবেন। স্কুলগুলিতে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা হবে। এরফলে শিক্ষা আরও ব্যয়সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য হয়ে উঠবে। অটল টিঙ্কারিং ল্যাব, আইসিটি ল্যাব এবং কারিগরী পরীক্ষাগার স্কুলগুলিতে গড়ে তোলা হবে। এরফলে ত্রিপুরার যুব সম্প্রদায় উদ্ভাবন, স্টার্টআপ ও ইউনিকর্নের সাহায্যে আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে সামিল হবেন।
বন্ধুগণ,
করোনার কঠিন সময়েও আমাদের যুবক-যুবতীরা যাতে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হন সেটি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল থেকে দেশজুড়ে ১৫-১৮ বছর বয়সী সকলের জন্য বিনামূল্যে টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, কোনো উদ্বেগ ছাড়াই যাতে পরীক্ষায় বসতে পারে তারজন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ত্রিপুরায় টিকাকরণ অভিযান দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। রাজ্যের ৮০ শতাংশ মানুষ টিকার প্রথম ডোজ এবং ৬৫ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ পেয়ে গেছেন। আমি নিশ্চিত ১৫-১৮ বছর বয়সী সকলে দ্রুত টিকা নেবে।
বন্ধুগণ,
আজ ডাবল ইঞ্জিন সরকার গ্রাম ও শহরাঞ্চলের জন্য সম্পূর্ণ স্থিতিশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করছে। কৃষি থেকে বনজ সম্পদ প্রতিটি ক্ষেত্রে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি আমাদের অঙ্গীকার পূরণে সাহায্য করছে। বনজ সম্পদের জন্য ক্ষুদ্র চাষি, মহিলা ও আমাদের আদিবাসী ভাই-বোনেরা নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা সংগঠিতভাবে বৃহৎ কর্মশক্তিতে পরিণত হয়েছেন। ত্রিপুরায় ‘মূলী ব্যাম্বু কুকিজ’ প্যাকেট করে বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রথমবারের মতো ত্রিপুরায় এই গৃহীত উদ্যোগের কৃতিত্ব আমাদের মা ও বোনেদের। তাঁরা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বিকল্পের সন্ধান দিতে ত্রিপুরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এখানে তৈরি বাঁশের ঝাঁটা, বাঁশের বোতলের দেশজুড়ে বিপুল বাজার গড়ে উঠেছে। এরফলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। বাঁশজাত পদার্থ উৎপাদনের মধ্য দিয়ে অনেকে স্বনির্ভর হয়ে উঠছেন। বাঁশ সংক্রান্ত আইনের সংস্কার ঘটানোর ফলে ত্রিপুরা তার সুফল পাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
জৈব চাষের ক্ষেত্রেও ত্রিপুরা প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। আনারস, সুগন্ধী চাল, আদা, হলুদ, লঙ্কা- সব কিছুরই দেশে এবং বিদেশে বিশাল বাজার রয়েছে। আজ ত্রিপুরার ক্ষুদ্র চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য আগরতলা থেকে কিষাণ রেলের মাধ্যমে দিল্লী সহ দেশের বিভিন্ন শহরে কম খরচে, কম সময়ে পাঠাতে পারছেন। মহারাজা বীর বিক্রম বিমান বন্দরে যে কার্গো সেন্টারটি গড়ে তোলা হবে তার সাহায্যে জৈব চাষে উৎপাদিত ফসল খুব সহজেই বিদেশের বাজারে পৌঁছে যাবে।
বন্ধুগণ,
ত্রিপুরা যাতে উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানের ভূমিকা পালন করতে পারে আমাদের সেটি নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সাধারণ মানুষ, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যিনি বসবাস করেন তারা সকলে যাতে দেশের আর্থিক উন্নয়নের অংশীদার হয়ে উঠেন সেটি নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। এইভাবে প্রত্যেকের ক্ষমতায়ণ হবে এবং সকলে আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে। এই সিদ্ধান্তগুলি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা দ্বিগুণ প্রত্যয়ে আমাদের কাজ চালিয়ে যাবো। আপনাদের ভালোবাসা, আপনাদের স্নেহ এবং আপনাদের আস্থা আমাদের সবথেকে বড় সম্পদ। আজ বিমান বন্দরে আসার সময় আমি প্রত্যেকের গলায় উৎসাহের আওয়াজ শুনতে পেয়েছি। আমি আপনাদের এই ভালোবাসা নিয়ে ফিরো যাবো আর আমি নিশ্চিত ডাবল ইঞ্জিনের শক্তি উন্নয়নের কাজকে দ্বিগুণ গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ত্রিপুরার মানুষের ভালোবাসা ও স্নেহ ভবিষ্যতেও আমাদের ওপর বর্ষিত হবে বলে আমি আশাবাদী। আরও একবার আপনাদের সকলকে এই উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির জন্য অভিনন্দন জানাই। আপনাদের পরিবারের সমৃদ্ধি ও আপনাদের রাজ্যের সার্বিক বিকাশের জন্য আমি মা ত্রিপুরা সুন্দরীর কাছে প্রার্থনা জানাই। সকলকে ধন্যবাদ! জোতাউনো হামবাই।
ভারত মাতার জয়!