মঞ্চে উপস্থিতসকল শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি এবং বিপুল সংখ্যায় আগত আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আজ আমি খুবইআনন্দিত! ভারতীয় জনতা পার্টি যখন ২০১৬-র সাধারণ নির্বাচনের আগে আমাকে নির্বাচনীনেতৃত্বের দায়িত্ব দিয়েছিল, আমি সবার আগে রায়গড় দুর্গ-এ এসেছিলাম। ছত্রপতির সমাধিরসামনে এসে বসেছিলাম। এই বীর পরাক্রমী মহাপুরুষ, যাঁর সুশাসন সর্বজনবিদিত, যিনি সংগ্রামীজীবন কাটালেও অনেক সঙ্কটের মধ্যেও যোগ্যতা এবং ক্ষমতার ভিত্তিতে ভারতের প্রশাসনিকইতিহাসের নতুন অধ্যায় লিখে গেছেন। বিশ্ব ইতিহাসে এহেন ব্যক্তিত্ব বিরল। ঐতিহাসিক ওনাট্যকর্মীদের দৃষ্টিতে আমরা যে ছত্রপতি শিবাজীকে জানি, তিনি তলোয়ার উঁচিয়ে ঘোড়ারপিঠে বসে যুদ্ধে যাচ্ছেন। কিন্তু ছত্রপতি শিবাজীর ব্যক্তিত্ব বহুমাত্রিক ছিল। আমরাযদি শুধু রাবণ বধ দিয়ে ভগবান রামচন্দ্রকে বিচার করি, শুধু কংস বধ দিয়ে শ্রীকৃষ্ণকেবিচার করি, মহাত্মা গান্ধীকে যদি শুধু ব্রিটিশ বিতাড়নে নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে বিচারকরি, তা হলে আমরা এই মহাপুরুষদের সার্বিকভাবে বুঝতে পারব না। রাবণ বধ ভগবানরামচন্দ্রের জীবনের অনেক মাত্রার একটি মাত্রা। কিন্তু তাছাড়াও এত মাত্রা রয়েছে, যাআজও ভারতীয় জীবনকে প্রভাবিত করে, প্রেরণা যোগায়। শ্রীকৃষ্ণের জীবনও শুধু কংস বধ নয়,যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে তাঁর দেওয়া উপদেশ শ্রীমদ্ভাগবত গীতা রূপে শত শত বছর ধরেভারতবাসীকে প্রেরণা যোগাচ্ছে। মহাত্মা গান্ধী স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করা ছাড়াও সমাজে নানা কুসংস্কারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন।প্রত্যেক মানুষের অন্তরে সুস্থ চেতনাসঞ্চার এবং আত্মসম্মান জাগ্রত করার চেষ্টাকরেছেন। ছত্রপতি শিবাজীও তেমনই ঘোড়া-তলোয়ার যুদ্ধ-লড়াই এবং বিজয়ে সীমাবদ্ধ ছিলেননা। তিনি পরাক্রমী বীর ছিলেন ঠিকই, পাশাপাশি শ্রীরামচন্দ্র যেমন সাধারণ মানুষকেএকত্রিত করে বানর সেনা গড়ে তুলেছিলেন, শিবাজী মহারাজও তেমনই ছোট ছোট পাহাড়ীগ্রামের যুবকদের একত্রিত করে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেন এবং যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতকরেন। এভাবে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ একটি বড় সংগঠন শাস্ত্রের কৌশল রচনা করেছিলেন।তখনকার তুলনায় অনেক উন্নতমানের জল সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। আজও কারিগরি এবংজল ব্যবস্থাপনার ছাত্রছাত্রীরা আদর্শ জল সরবরাহ পরিকাঠামো কেমন হওয়া উচিৎ, সেসম্পর্কে জানতে শিবাজী মহারাজের জল সরবরাহ ব্যবস্থা থেকে প্রেরণা নিতে পারেন।ছত্রপতি শিবাজীর মুদ্রা নীতি থেকেও আমাদের শিক্ষা নিতে হয়। মুদ্রা নির্মাণে তখনবিদেশিদের কাছে তুলনায় উন্নত প্রযুক্তি থাকলেও শিবাজী মহারাজ তাদের নিয়োগ না করেনিজস্ব মুদ্রা নির্মাণ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর দূরদৃষ্টি দিয়ে তিনি বুঝতেপেরেছিলেন যে, মুদ্রার ওপর কেউ অধিকার বাড়ালে শাসন ব্যবস্থাকে পরাভূত করতে সময়লাগবে না।
আজ সারাপৃথিবীতে সামুদ্রিক সুরক্ষা একটি বড় বিষয়। সকল সমুদ্র তটবর্তী দেশই এই সামুদ্রিকসুরক্ষা নিয়ে সতর্ক। যে কোনও দেশের নিরাপত্তা সুদৃঢ় করতে আর বাণিজ্যিক নিরাপত্তাসুনিশ্চিত করতে সামুদ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।শিবাজী মহারাজ সেজন্য নিজের নৌ-বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। তাছাড়া, যে কোনও সামুদ্রিকআক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করতে তিনি সিন্ধু দুর্গ সমেত বেশ কিছু সমুদ্র তটবর্তীদুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। এই দুর্গগুলি আজ একেকটা বড় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়েউঠতে পারে। এখন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে যাঁরা ভারত ভ্রমণে আসেন, তাঁরা সকলেইতাজমহল দেখেন। প্রত্যেক যুগে নানা দেশে এ ধরনের নানা স্থাপত্যকর্ম গড়ে উঠেছে, যাযুগ যুগ ধরে সেসব দেশের পরিচয়জ্ঞাপক হয়ে উঠেছে, পর্যটনের আকর্ষণবিন্দু হয়েছে।দুর্গগুলি নির্মাণের ক্ষেত্রে স্থাপত্যের পাশাপাশি নিরাপত্তা বিজ্ঞানকেওসুনির্দিষ্টভাবে অনুসরণ করা হয়। কোন্ সময়ে কি ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণকরা হয়েছিল তা দুর্গগুলি সম্পর্কে পর্যটকদের আগ্রহ বৃদ্ধি করে। আজ গোটা বিশ্বেপর্যটন শিল্প দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। গোটা বিশ্বে আজ ট্রিলিয়নস্ অফ ট্রিলিয়নডলারের পর্যটন ব্যবসা চলছে। ভারত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলির নিরিখে বিশ্বেরপ্রাচীনতম দেশগুলির অন্যতম হওয়ায় এই প্রত্নতত্ত্ব ভারতীয় পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণক্ষেত্র। ছত্রপতি শিবাজী নির্মিত দুর্গগুলি আমরা যদি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করি,তা হলে এগুলি বিশ্ব পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। ভারতীয়বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে আমরা বলতে পারি যে, আপনারা ছাত্রদের অভিযান পর্যটনের জন্যউৎসাহ দিয়ে থাকেন, ছত্রপতি শিবাজী নির্মিত দুর্গগুলিতে ছাত্রছাত্রীরা ঘোড়ায় চড়েঅভিযান চালাতে পারে। আমি ভারত সরকারের এএসআই বিভাগকে বলব যে, আমরা ছত্রপতি শিবাজীমহারাজ নির্মিত দুর্গগুলি দিয়ে শুরু করছি না কেন? সারা দেশেই আমরা এরকম টিলায় চড়ারপর্যটনের পরিবেশ গড়ে তুলতে পারি।
ভাই ও বোনেরা,আমি অত্যন্ত আনন্দিত, মহারাষ্ট্র সরকার আর মহারাষ্ট্রের জনগণের কাছ কৃতজ্ঞ, আজআমাকে শিবস্মারকের জলপূজা ও ভূমিপূজার সুযোগ দিয়েছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে,মহারাষ্ট্রের ফড়নবিস সরকারের এই প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়িত হবে।এই কাজ নিশ্চিতভাবে সারা দেশকে গর্বিত করবে। বিশ্ববাসীর সামনে আমরা বুকফুলিয়ে বলতেপারব যে, বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তি সংক্রান্ত ভবন আমাদের দেশে রয়েছে। যেমহাপুরুষ জনসাধারণের সুখের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেই ছত্রপতি শিবাজীমহারাজকে প্রণাম জানানোর সুযোগ আমি পেয়েছি।
ভাই ও বোনেরা, আমাদেরদেশে নানারকম রাজনীতি হয়। বৈচিত্র্যময় নানা পথ অনুসরণ করা হয় । কিন্তু আজ ৭০বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের স্বীকার করতে হবে যে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেএকমাত্র উন্নয়নের পথ বেছে নিলে আজ ভারতে যে সব সমস্যা শিকড় ছড়িয়েছে, সেগুলির শিকড়গজাতেই পারতো না।
এ ধরনেরসমস্যাগুলির একমাত্র সমাধান হল উন্নয়ন। উন্নয়নেই রয়েছে দেশের নবীন প্রজন্মেরযুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা। দেশের গরিবদের অধিকার প্রদানের সামর্থ্য উন্নয়নেই রয়েছে। দেশেরমধ্যবিত্তদের মনবাসনা পূরণ করতে যে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে উন্নয়নই তাকে সম্ভব করেতুলতে পারে। সম্মান নিয়ে বাঁচার জন্য উন্নয়নই একমাত্র পথ।
ভাই ও বোনেরা,আপনারা যেদিন থেকে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি উন্নয়নকে কেন্দ্র করে সকল পদক্ষেপগ্রহণ করছি। আর সেই উন্নয়ন হবে সুদূরপ্রসারী, যা দরিদ্র মানুষের জীবনে পরিবর্তনআনতে সক্ষম, যা আপনাদের মনবাসনা পূরণ করার সামর্থ্য যোগাবে, সাধারণ মানুষেরক্ষমতায়ন হবে। আর সেজন্যই আমাদের সকল প্রকল্পের কেন্দ্রে রয়েছে দরিদ্র মানুষেরকল্যাণ। আমরা সরকারে আসার পর একটি রিপোর্টের মাধ্যমে জানতে পারি, ছোট ছোটকারখানাগুলি থেকে অবসর গ্রহণের পর মানুষ কত টাকা পেনশন পান! আমি সেই রিপোর্ট দেখেঅবাক হয়ে যাই, কেউ কেউ মাসে মাত্র ৭ টাকা পেনশন পান, কেউ ৫১ টাকা আবার কেউ ৮০টাকা। এখন সেই ৭ টাকার পেনশন নিতে একজন ৮০ বছর বয়স্ক মানুষ অটোরিকশায় চেপে ডাকঘরপর্যন্ত কেন যাবেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, যাঁরা এরকম অযৌক্তিক পেণশন পান, তাঁদেরআত্মসম্মানের কথা মাথায় রেখে আমরা ন্যূনতম পেনশন মাসিক ১০০০ টাকা করে দিই। আমাদেরদেশে এরকম পেনশনভোগীর সংখ্যা ৩৫ লক্ষেরও বেশি। কাজেই বুঝতে পারছেন, এই একটিসিদ্ধান্তে রাজকোষ থেকে প্রতি মাসে বাড়তি খরচ হয় কয়েকশো কোটি টাকা। তা সত্ত্বেওআমরা এই বয়স্ক মানুষদের শেশ জীবনের কথা মাথায় রেখে এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপনিয়েছি। দেশের গরিব মানুষ যাতে সস্তায় ওষুধ কিনতে পারেন, তা নিশ্চিত করার জন্যআমরা জেনেরিক মেডিসিন সরবরাহে জোর দিই। সারা দেশে এ ধরনের ওষুধ যাতে পাওয়া যায়,সেজন্য সরকারি দাতব্য চিকিৎসালয় ছাড়াও ন্যায্য মূল্যে ওষুধ কেনার দোকান যাতে থাকেতা সুনিশ্চিত করা হয়। দেশের গরিব মায়েরা কাঠের উনুন জ্বালিয়ে রান্না করতেনপ্রতিদিন। প্রায় ৪০০ সিগারেটের ধোঁয়ার সমান ক্ষতিকর ধোঁয়া যাঁদের ফুসফুসে প্রবেশকরত, সেই সব মা ও তাঁদের সন্তানদের ধোঁয়ামুক্ত জীবন প্রদানের জন্য আমরা ইতিমধ্যেইকোটি কোটি গরিব পরিবারে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।আগামী তিন বছরের মধ্যে দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসকারী ৫ কোটি পরিবারে এই গ্যাসসিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া হবে। স্বাধীনতার পর ৭০ বছর পেরিয়ে গেছে তবুও দেশের ১৮ হাজারগ্রামের মানুষ এখনও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় অষ্টাদশ শতাব্দীর জীবনযাপন করছেন। আমরা১০০০ দিনের মধ্যে এই ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছনোর দায়িত্ব নিয়েছি। এর মধ্যেঅর্ধেকের বেশি গ্রামে ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পেরেছি, বাকি গ্রামগুলিতেবিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। আপনারা নিশ্চিত থাকুন, নির্ধারিতসময়ের মধ্যেই বাকি গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেব।
ভাই ও বোনেরা,কে বলে এই দেশে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়! আমি বিশ্বাস করি, ১২৫ কোটি ভারতবাসীরসামর্থ্যকে যথাযথভাবে ব্যবহার করলে এদেশে পরিবর্তন আনা সম্ভব । আর লিখে রাখুন,এদেশে পরিবর্তন আসবেই। দেশ অবশ্যই এগিয়ে যাবে। বিশ্বের সামনে মাথা উঁচু করেদাঁড়িয়ে থাকবে। গত তিন বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আপনারা ভাবতেও পারবেন না, যতগুলিপ্রকল্প গত তিন বছরে শুরু হয়েছে সেগুলি রূপায়িত হলেই দেশের চেহারা বদলে যাবে। আজএই মঞ্চ থেকে যে তিনটি প্রকল্পের শুভারম্ভ হচ্ছে, সেগুলির পেছনে ১ লক্ষ ৬ হাজারকোটি টাকা খরচ হবে। মুম্বাই-এর ইতিহাসে এটি অত্যন্ত বড় ঘটনা। আমরা কাজে করে দেখাই।
ভাই ও বোনেরা,আজ মুম্বাই এসেছি, এই মঞ্চ থেকে গোটা মহারাষ্ট্রের জনসাধারণকে আমি মাথা নত করেপ্রণাম জানাই, অভিনন্দন জানাই। আমাদের দেশে নির্বাচনে জয়কে ভাল কাজের প্রমাণহিসাবে মানা হয়। কেউ নির্বাচনে হেরে গেলে মনে করা হয়, তাঁর সিদ্ধান্তগুলি ভুল ছিল।আমরা যেদিন থেকে সরকারে এসেছি, সেদিন থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছি।একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েছি। কিন্তু গত ৮ নভেম্বর রাত ৮টায় আমরা সবচেয়ে বড় অভিযানশুরু করেছি। নকল নোট এবং কালো টাকা দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিউগল বাজিয়েছি। ১২৫কোটি ভারতবাসী শত কষ্ট সত্ত্বেও এক মুহূর্তের জন্যও আমার সঙ্গ ছাড়েননি। তাঁদেরকেভড়কানোর অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল, তাঁদের ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য নানা গুজব ছড়িয়েবাজার গরম করা হয়েছে। কিন্তু যাঁদের সেই বাবুরা মূর্খ ভাবেন, অশিক্ষিত ভাবেন সেইমানুষগুলি নিজের সহজাত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে দেশের ভালোর জন্য যে সিদ্ধান্ত নেওয়াহয়েছে তা সমর্থন দিয়েছেন। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে সাধারণ মানুষ আমাদেরপক্ষে ভোট দিয়ে এই সিদ্ধান্তকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এর মাধ্যমে গোটা ভারতে বার্তাগিয়েছে যে, সত্য কাদের পক্ষে, আর দেশ কোন পথে যেতে চায়!
ভাই ও বোনেরা,আমি গোয়াতে বলেছিলাম যে, এই লড়াই সাধারণ নয়। ৭০ বছর ধরে যাঁরা দুধের সর খাচ্ছেন,তাঁরা তো চেষ্টা করবেনই যাতে আমাদের এই অভিযান সফল না হয়। সেজন্য তাঁরা সমস্তশক্তি দিয়ে নানা উপায়ে আমাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকবেন। বাস্তবেও তাই হয়েছে। কেউইচেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। কিন্তু আমি নিশ্চিত যে, ১২৫ কোটি ভারতবাসীর সংকল্পেরসঙ্গে ৭০ বছর ধরে দুধের সর খেতে থাকা হাতে গোনা কিছু মানুষ জয়লাভ করতে পারবেন না।১২৫ কোটির দেশ কখনই পরাজয় মেনে নেবেন না। কেউ ভেবেছিলেন, ব্যাঙ্ক আধিকারিকদেরফুসলে সব কালো টাকা সাদা করে নেবেন। আপনাদের ফাঁদে পড়ে আজ সেই ব্যাঙ্ককর্মচারীদেরও বারোটা বেজে গেছে। একের পর এক ব্যাঙ্ক কর্মচারী ধরা পড়েছেন। আমি দেশবাসীদেরবলতে চাই যে, আমি যা বলেছিলাম ৫০ দিন এই কষ্ট থাকবে। আর দেশের ভবিষ্যতের কথা ভেবেআপনারা সেই কষ্ট সহ্য করেছেন। আমি দৃঢ় নিশ্চিত, আর হাতে গোনা কয়েকদিন বাকি রয়েছে,আপনারা এই কটা দিনও হাসিমুখে আমাদের সঙ্গ দেবেন। তারপর থেকে সাধারণ মানুষের কষ্টধীরে ধীরে কমতে থাকবে আর বেইমানদের কষ্ট বাড়তে থাকবে। বেইমানদের উদ্দেশ্য করে বলতেচাই, এখনও সময় আছে, দেশের আইনকে স্বীকার করে নিয়ে নিয়ম মেনে চলুন। আর প্রত্যেকনাগরিকের মতো আপনারাও সুখে জীবনযাপন করুন। আমি আপনাদের আহ্বান করছি, এই সরকারকারোরই সর্বনাশ চায় না। কিন্তু গরিব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। যারা এরবিরোধিতা করবে, তাদেরকে দেশের মানুষ ক্ষমা করবেন না। যদি কেউ ভাবেন, আগের মতোরাস্তা খুঁজে বেরিয়ে পড়তে পারবেন, তাহলে বলব, এটা আপনাদের ভ্রম। এখন নতুন সরকারক্ষমতায় এসেছে। দেশের সাধারণ মানুষ ৩০ বছর পর একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারকে ক্ষমতায়এনেছেন। এই সরকার দুর্নীতি ও কালো টাকার শেষ দেখে ছাড়বে।
দেশের কল্যাণেরস্বার্থে, পরিচ্ছন্নতার স্বার্থে স্বচ্ছ ভারত অভিযান শুরু হয়েছে। এই পরিচ্ছন্নতাবলতে আমরা কেবল জঞ্জাল সাফাই বুঝি না। আমরা বুঝি দুর্নীতিমুক্ত পরিচ্ছন্ন প্রশাসন,পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন। বিশ্বাসের আবহ গড়ে উঠুক, সরকারের প্রত্যেকটি সিদ্ধান্তই দেশেরকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক, যে হাতে গোনা পাপীদের শায়েস্তা করতে দেশের আপামরমানুষ এত কষ্ট সহ্য করছেন, তাঁরা আমাকে ভয় নাও পেতে পারেন, কিন্তু এটা জেনে রাখুন,দেশের সরকার পাপীদের ভয় পায় না। ১২৫ কোটি দেশবাসীর ভাবনাকে আপনারা ছোট করে দেখবেননা, এতে আপনাদেরই ক্ষতি হবে। ১২৫ কোটি দেশবসীর মেজাজ এখন বদলে গেছে, তাঁরা আরঅন্যায় সহ্য করবেন না, তাঁরা আর দুর্নীতিকে মেনে নেবেন না, কালো টাকার বিরুদ্ধেলড়াইয়ে তাঁরা প্রত্যেকেই একেকজন সেনাপতি হয়ে উঠে আমাকে এই লড়াইয়ে সঙ্গ দিচ্ছেন। আরযখন মুম্বাইয়ের ভূমিতে মহারাষ্ট্রের মাটিতে ছত্রপতি শিবাজীর শিবস্মারক-এরভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হচ্ছে, সেই পূণ্যলগ্নে আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করছি, এইলড়াই ততদিন চলবে, যতদিন না দেশের সাধারণ মানুষ জয়লাভ করতে পারছেন।
আমি আরেকবারমহারাষ্ট্র সরকারকে এই উন্নয়নকর্মে সঙ্গ দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। শ্রীফড়নবিশের নেতৃত্বে এক দূরদৃষ্টি সম্পন্ন সরকার মহারাষ্ট্রের উন্নয়নকে এগিয়ে চলেছে।কৃষকের ফসলের ক্ষেতে পর্যাপ্ত সেচের জল পৌঁছ দেওয়া, শহরগুলিতে পরিকাঠামো নির্মাণ,নবীন প্রজন্মের মানুষদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে এই সরকার খুব ভাল কাজকরছে। মহারাষ্ট্রকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছে। সেজন্য শ্রী ফড়নবিশেরনেতৃত্বে এই সরকারের গোটা টিমকে আমি অন্তর থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আমারসঙ্গে বলুন, ছত্রপতি শিবাজী মহারাজকি (জয়)...... ছত্রপতি শিবাজী মহারাজকি (জয়)......ছত্রপতি শিবাজী মহারাজকি (জয়)...... ছত্রপতি শিবাজী মহারাজকি (জয়) ......
অনেক অনেক ধন্যবাদ।