প্রধানমন্ত্রী মোদী পুলওয়ামার জঙ্গি হামলায় শহীদ সিআরপিএফ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন
পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার সঙ্গে যুক্ত ষড়যন্ত্রকারীদের কাউকে ছাড়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী মোদী
সন্ত্রাসবাদের ভীতি তখনই দুর করা যাবে যখন এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গোটা বিশ্ব একত্রিত হবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী

সবার আগে আমি পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী আক্রমণে শহীদ জওয়ানদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই। তাঁরা দেশের সেবা করতে গিয়ে নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। এই দুঃখের সময়ে তাঁদের পরিবারবর্গের প্রতি আমার এবং সমস্ত ভারতবাসীর সমবেদনা জানাই।

 

এই আক্রমণের ফলে জনগণের যত আক্রোশ, রাগ তা আমি খুব ভালোভাবেই অনুভব করছি। এই সময় দেশ যা প্রত্যাশা করে, কিছু করে দেখাতে চায়, তাতে এটাই স্বাভাবিক। আমরা দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলিকে এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছি। আমাদের সৈনিকদের শৌর্য এবং তাঁদের বীরত্বের ওপর সরকারের সম্পূর্ণ ভরসা আছে। আমি বিশ্বাস করি, দেশভক্ত মানুষেরা যেখানে যে খবর পাবেন, তা আমাদের বিভিন্ন সংস্থার কাছে পৌঁছে দেবেন যাতে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই আরও তীব্র হতে পারে।

আমি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি এবং তাদের নেতাদের বলতে চাই যে, আপনারা অনেক বড় ভুল করেছেন। তার জন্য আপনাদের অনেক বড় মূল্য দিতে হবে। আমি দেশকে আশ্বস্ত করতে চাই যে এই আক্রমণের পেছনে যে শক্তিই থাকুক না কেন, তাদেরকে অবশ্যই সাজা দেওয়া হবে। যাঁরা আমাদের সমালোচনা করছেন, আমি তাঁদের ভাবনাকেও সম্মান করি। তাঁদের ভাবনাকে বুঝি। আর সেজন্য মনে করি যে তাঁদের সমালোচনার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।

কিন্তু আমার সমস্ত বন্ধুদের অনুরোধ জানাই যে সময় অত্যন্ত সংবেদনশীল। আপনি সরকারের পক্ষে থাকুন কিংবা বিপক্ষে, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে পরস্পরের প্রতি দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানাচ্ছি। আমরা যদি সংঘবদ্ধভাবে এই আক্রমণের মোকাবিলা করি, তাহলে সারা পৃথিবীতে এই বার্তা যাবে যে ভারতবাসী এই আক্রমণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। কারণ, আমরা যে কোন লড়াই জেতার জন্যই লড়ি।

 

গোটা বিশ্ববাসীর কাছে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া আমাদের প্রতিবেশী দেশ যদি মনে করে তারা যে কুকর্ম করছে, যেভাবে ষড়যন্ত্র রচিত হচ্ছে, তা ভারতে অস্থিরতা সৃষ্টিতে সফল হবে, তাহলে তারা চিরদিনের জন্য স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিন। তারা কখনই এটা করতে পারবেন না।

এই সময় আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভীষণরকম আর্থিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তারা ভারতে এই ধরণের অস্থিরতা সৃষ্টি করে নিজেদের জনগণের লক্ষ্যকে সেদিকে ঘোরাতে চায়। কিন্তু তাদের এই উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। সময় এটা প্রমাণ করে দিয়েছে যে তারা যেভাবেই চেষ্টা করুক না কেন, ভারত নিজের মতো উন্নতির পথে এগিয়ে গেছে।

 

১৩০ কোটি ভারতবাসী এ ধরণের প্রতিটি ষড়যন্ত্র ও আক্রমণের যথাযোগ্য জবাব দেবে। অনেক বড় দেশ অনেক কঠিন শব্দ প্রয়োগ করে এই সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের নিন্দা করেছে এবং ভারতের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করেছে। আমি সেই সমস্ত দেশের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই এবং সবাইকে আহ্বান জানাই যে আসুন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মানবতাবাদী সমস্ত শক্তিকে একত্রিত করে অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করি।

 

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যখন সমস্ত দেশ একমত, এক স্বর এবং এক লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে তখন সন্ত্রাসবাদ বেশিক্ষণ টিকতে পারবে না।

 

বন্ধুগণ, পুলওয়ামা আক্রমণের পর আমাদের সকলের মন ভারাক্রান্ত। এই আক্রোশ ভরা মন নিয়ে দেশবাসী এই আক্রমণের মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ থাকবে। আমাদের বীর শহীদদের আত্মবলিদানকে আমরা বৃথা যেতে দেব না। যাঁরা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন, তাঁদের জীবনে দুটিই লক্ষ্য ছিল – প্রথমটি হল দেশের সুরক্ষা, আর দ্বিতীয় হল দেশের সমৃদ্ধি। এই বীর শহীদদের আত্মাকে প্রণাম জানিয়ে, তাঁদের আশীর্বাদ নিয়ে আমি আরেকবার আপনাদের আশ্বস্ত করছি, যে স্বপ্ন নিয়ে তাঁরা আত্মাহুতি দিয়েছেন, সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য আমরা জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত সমর্পণ করব। সমৃদ্ধির পথে আমরা আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাব। সেই লক্ষ্য নিয়েই আজ আমি এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ধারণা এবং নক্‌শাকে বাস্তবায়িত করার জন্য প্রত্যেক ইঞ্জিনিয়ার এবং কারিগরদের কৃতজ্ঞতা জানাই। চেন্নাইয়ের কারখানায় নির্মিত এই ট্রেনটি দিল্লি থেকে কাশী পর্যন্ত প্রথমবার যাত্রা করবে। এটাই ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর সত্যিকারের শক্তি, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের শক্তি।

বন্ধুগণ, বিগত সাড়ে চার বছরে আমরা ভারতীয় রেলকে অত্যন্ত সততা ও পরিশ্রমের সঙ্গে পরিবর্তিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সেই চেষ্টার একটি ঝলক হল এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। বিগত বছরগুলিতে রেল ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র মাধ্যমে নির্মাণ ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করেছে। দেশে রেল কোচ কারখানাগুলির আধুনিকীকরণ ও ডিজেল ইঞ্জিনগুলির ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনে রূপান্তরণের জন্য নতুন নতুন কারখানা চালু করা হয়েছে।

 

আপনাদের হয়তো মনে আছে, শুরুতে যখন রেলের টিকিট সংরক্ষণ ব্যবস্থা অনলাইনে করা হয়েছিল, তখন কি অবস্থা ছিল। এক মিনিটে ২ হাজারেরও বেশি টিকিট বুক করা যেত না। কিন্তু আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে রেলের ওয়েবসাইট অনেক বেশি ব্যবহারকারী-বান্ধব হয়ে উঠেছে এবং ১ মিনিটে ২০ হাজারেরও বেশি টিকিট বুক হতে পারে। আগে পরিস্থিতি এমন ছিল যে, কোন রেল প্রকল্প মঞ্জুর হতে ন্যূনতম দু’বছর লেগে যেত। এখন দেশে একটি রেল প্রকল্প মঞ্জুর হতে ৩-৪ মাস কিংবা বড়জোর ছ’মাস হয়। সেজন্য, রেলের সমস্ত কাজ ত্বরান্বিত হচ্ছে। গোটা দেশে ব্রডগেজ লাইনে প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিংগুলি পুরোপুরি তুলে দেওয়া হয়েছে।

২০১৪ সালে আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন সারা দেশে ৮,৩০০-রও বেশি প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিং ছিল। সেজন্য নিয়মিত দুর্ঘটনা হত। এখন ব্রডগেজ লাইনে প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিংগুলি পুরোপুরি তুলে দেওয়ার ফলে দুর্ঘটনার হার অনেক কমেছে।

 

দেশে রেললাইন বিছানোর কাজ এবং বৈদ্যুতিকীকরণের গতি দ্বিগুণ হয়েছে। সর্বাধিক ব্যস্ত রেলপথগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে সেগুলি থেকে ঐতিহ্যবাহী ট্রেনগুলিকে তুলে নিয়ে নতুন পথে পরিচালিত করা হচ্ছে। বিদ্যুৎচালিত ট্রেন বৃদ্ধির ফলে বায়ুদূষণ হ্রাস পেয়েছে এবং ডিজেলের খরচও বেঁচেছে। ট্রেনের গতিও বেড়েছে।

 

রেলকে আধুনিক করে তোলার এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে অনেক নতুন কর্মসংস্থানও হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে যে, ২০১৪ থেকে এখন পর্যন্ত রেলে নতুন দেড় লক্ষ কর্মচারী নিয়োগ হয়েছে। এখন যে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে, সেটি সম্পূর্ণ হলে এই সংখ্যা ২ লক্ষে দাঁড়াবে।

দেশে রেললাইন বিছানোর কাজ এবং বৈদ্যুতিকীকরণের গতি দ্বিগুণ হয়েছে। সর্বাধিক ব্যস্ত রেলপথগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে সেগুলি থেকে ঐতিহ্যবাহী ট্রেনগুলিকে তুলে নিয়ে নতুন পথে পরিচালিত করা হচ্ছে। বিদ্যুৎচালিত ট্রেন বৃদ্ধির ফলে বায়ুদূষণ হ্রাস পেয়েছে এবং ডিজেলের খরচও বেঁচেছে। ট্রেনের গতিও বেড়েছে।

 

রেলকে আধুনিক করে তোলার এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে অনেক নতুন কর্মসংস্থানও হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে যে, ২০১৪ থেকে এখন পর্যন্ত রেলে নতুন দেড় লক্ষ কর্মচারী নিয়োগ হয়েছে। এখন যে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে, সেটি সম্পূর্ণ হলে এই সংখ্যা ২ লক্ষে দাঁড়াবে।

বন্ধুগণ, আমি এই দাবি কখনই করি না যে আমরা এত অল্প সময়ে ভারতীয় রেলের সবকিছু বদলে দিতে পেরেছি। আরও অনেক কিছু করার রয়েছে। একথা অবশ্যই বলতে পারি যে ভারতীয় রেলকে বিশ্বের আধুনিকতম রেল পরিষেবাগুলির সমকক্ষ করে তোলার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে চলেছি এবং আপনাদেরকে আশ্বস্ত করতে পারি যে এই উন্নয়নযাত্রা আরও গতিসম্পন্ন হবে, আরও শক্তিশালী হবে। জল, স্থল ও আকাশপথে ভারতের পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ – সমস্ত অংশে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ মন্ত্র নিয়ে আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাব। এই উন্নয়নের মাধ্যমেই আমরা দেশের জন্য আত্মবলিদানকারী শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাব। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রকারী সকল অপরাধীদের কঠোরতম সাজা দেব। আত্মবলিদানকারী প্রত্যেক শহীদের প্রতিটি রক্তবিন্দুর মূল্য তাদের পরিশোধ করতে হবে। এই বিশ্বাস নিয়ে আমি আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি। এই শহীদদের স্মৃতিতে আমার সঙ্গে বলুন –

 

বন্দে মাতরম – বন্দে মাতরম

বন্দে মাতরম – বন্দে মাতরম

বন্দে মাতরম – বন্দে মাতরম

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 নভেম্বর 2024
November 21, 2024

PM Modi's International Accolades: A Reflection of India's Growing Influence on the World Stage