PM Modi attends Convocation of Sher-e-Kashmir University of Agricultural Sciences and Technology: PM Modi
There is a need to bring about a new culture in the agriculture sector by embracing technology: PM Modi
Policies and decisions of the Union Government are aimed at increasing the income of farmers: PM Modi
Farmers would benefit when traditional agricultural approach would be combined with latest techniques: PM Modi

এখানে উপস্থিত সকল মাননীয় বিদ্বজ্জন এবং আমার প্রিয় নবীন বন্ধুরা।

বন্ধুগণ, জম্মু ও কাশ্মীরের জন্যে আজকের এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ সকাল থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন অঞ্চল সফরের সৌভাগ্য হয়েছে। লে-লাদাখের উঁচু উঁচু পাহাড় থেকে রওনা হয়ে, কাশ্মীর উপত্যকায় কাজ সেরে এখন জম্মুর তরাই, এই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে এখানে পৌঁছতে দেড় ঘন্টা দেরী হয়ে গেল। লে’র সঙ্গে অবশিষ্ট ভারতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী জোজিলা সুড়ঙ্গ, বান্দীপোরার কিশনগঙ্গা প্রকল্প কিম্বা চিনাব নদীতে নির্মীয়মান জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, জম্মুতে পাকাল দুল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কাজ সেরে ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারিনি বলে আপনাদের সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। জম্মুর দিগন্ত বিস্তৃত কৃষি ক্ষেত্র থেকে শুরু করে কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ উদ্যান ক্ষেত্র এবং লে-লাদাখের প্রাকৃতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি আমি সর্বদাই অনুভব করেছি। আমি যখনই এই রাজ্যে আসি, আমার বিশ্বাস আরও শক্তিশালী হয় যে এই রাজ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার সামর্থ্য রাখে। এই রাজ্যের পরিশ্রমী মানুষ ও প্রতিভাবান যুবসম্প্রদায়ের সার্থক প্রচেষ্টায় আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার পথে সাফল্য অর্জন করছি।

বন্ধুগণ, প্রায় ২০ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক ছাত্রছাত্রী কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন।

আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমবর্তন উৎসব। এই উপলক্ষে আমার আপনাদের সবার মাঝে আসার সৌভাগ্য হয়েছে। আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আমি আনন্দিত যে, আজ এখানে জম্মুর বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রছাত্রীও এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ পাচ্ছে। আজ এই মঞ্চ থেকে ৪০০-রও বেশি ছাত্রছাত্রীকে ডিগ্রি, মেডেল এবং শংসাপত্র প্রদান করা হয়েছে। এগুলি সব আপনাদের পরিশ্রমের পরিণাম। এই প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশ হয়ে আপনারা এই সাফল্য পেয়েছেন। আমি আপনাদের সবাইকে, বিশেষ করে, আজ যেসব মেয়েরা কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন তাঁদেরকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

আজ দেশে খেলাধূলা, শিক্ষা; সর্বক্ষেত্রে মেয়েরা অসাধারণ সাফল্য পাচ্ছেন। আমার সামনেই যাঁরা বসে রয়েছেন, তাঁদের চোখে আমি চমক দেখতে পাচ্ছি, আত্মবিশ্বাস পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই চমক ভবিষ্যতের স্বপ্ন এবং চ্যালেঞ্জগুলিকে মোকাবিলা করার প্রতিস্পর্ধার চমক।

বন্ধুগণ, আপনাদের হাতে যে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে, তা নেহাতই একটি ডিগ্রি নয়, এগুলি দেশের কৃষকদের আশাস্বরূপ। এগুলিতে নিহিত রয়েছে তাঁদের আশা-আকাঙ্খা। হ্যাঁ, দেশের অন্নদাতারা আজ আপনাদের মতো মেধাবী সন্তানসন্ততিদের দিকে অনেক আশা নিয়ে তাকিয়ে আছেন।

সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তি দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। আর সেই পরিবর্তমান প্রযুক্তি সকল ব্যবস্থাকে আনখশির বদলে দিচ্ছে। সেজন্য আজ আপনাদের মাঝে আসার এই সৌভাগ্যকে আমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি।

নবীন বন্ধুগণ, প্রযুক্তি যেরকম কাজের ধারা বদলে দিচ্ছে, কর্মসংস্থানের নতুন নতুন পদ্ধতি বিকশিত হচ্ছে, তেমনই কৃষির ক্ষেত্রেও নতুন সংস্কৃতি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নতুন প্রযুক্তিকে আমরা যত বেশি পারম্পরিক পদ্ধতির ক্ষেত্রে সফলভাবে ব্যবহার করতে পারব, তত বেশি কৃষকদের লাভ হবে। এই দূরদৃষ্টি নিয়েই কেন্দ্রীয় সরকার কৃষির সঙ্গে যুক্ত আধুনিক পদ্ধতিগুলিকে প্রোৎসাহিত করছে।

দেশে এখন পর্যন্ত ১২ কোটিরও বেশি মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরের কৃষকরা ১১ লক্ষেরও বেশি কার্ড পেয়েছেন। এই কার্ডের মাধ্যমে কৃষকরা জানতে পারছেন যে, তাঁদের ক্ষেতে কি ধরণের সার প্রয়োগ করবেন, আর কী কী প্রয়োজন রয়েছে!

ইউরিয়ায় ১০০ শতাংশ নিম কোটিং-এর দ্বারাও কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন, এতে ফলন তো বেড়েছেই, হেক্টর প্রতি ইউরিয়ার প্রয়োজনও কমেছে।

সেচের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে প্রত্যেক বিন্দু জলের ব্যবহার নিশ্চিত করতে ক্ষুদ্র ও স্প্রিঙ্কলার সেচকে প্রোৎসাহিত করা হয়েছে। প্রতি বিন্দুতে অধিক শস্য উৎপাদনই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।

বিগত চার বছরে ২৪ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি জমিতে ক্ষুদ্র ও স্প্রিঙ্কলার সেচের আওতায় আনা গেছে। দু’দিন আগেই ক্যাবিনেট বৈঠকে ক্ষুদ্র সেচ বাবদ ৫ হাজার কোটি টাকার ফান্ড ঘোষণা করা হয়েছে এবং স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই সমস্ত নীতি ও সিদ্ধান্ত কৃষকের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে। আপনারা সকলে এমনই অনেক প্রচেষ্টা থেকে নির্মীয়মান ব্যবস্থারই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে পরিগণিত হবেন। এখান থেকে পাশ করার পর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের দেশে কৃষিকে লাভজনক পেশায় পরিণত করার ক্ষেত্রে আপনার সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন বলে আমার বিশ্বাস। কৃষি থেকে পশুপালন এবং সংশ্লিষ্ট পেশাগুলিকে নতুন প্রযুক্তি-বান্ধব করে তোলার দায়িত্ব আমাদের নবীন প্রজন্মের কাঁধে রয়েছে।

এখানে আসার আগে আপনাদের বিবিধ প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে পেরে আমার আশা অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনাদের প্রতি প্রত্যাশাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকদের আয় বৃদ্ধির জন্য আপনারা ও আপনাদের এই বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের চাষের ক্ষেতে যে মডেল গড়ে তুলেছে, সে সম্পর্কে আমাকে জানানো হয়েছে। আপনাদের এই ইন্টিগ্রেটেড ফার্মিং সিস্টেম মডেল বা সংক্ষেপে আইএফএস মডেলে শস্য, ফল, সব্জি, গবাদি পশু, মৎস্যচাষ ও মুরগী পালন, কম্পোস্ট সার উৎপাদন, মাশরুম চাষ, বায়োগ্যাস এবং ক্ষেতের আলে মূল্যবান কাষ্ঠ উৎপাদনকারী বৃক্ষ রোপণের ধারণা সংহত হয়েছে। এতে কৃষকদের মাসিক গড় আয় সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি বাৎসরিক রোজগার দ্বিগুণ করবে।

আপনাদের এই কৃষকের সাম্বাৎসরিক আয় সুনিশ্চিত করার মডেল আমার খুব ভালো লেগেছে। পরিবেশ-বান্ধব শক্তি উৎপাদন কৃষি ক্ষেত্রে বর্জ্য মুক্তি, পরিচ্ছন্ন গ্রাম, পারম্পরিক চাষ থেকে কৃষকের যে আয় হয়, তার চেয়ে অধিক আয় আপনাদের এই মডেল সুনিশ্চিত করে। আমি চাই যে, এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশকে মাথায় রেখে গড়ে তোলা এই মডেল সম্পর্কে জম্মু ও সন্নিহিত অঞ্চলগুলিতে অধিক প্রচারিত ও প্রসারিত করা হোক।

বন্ধুগণ, সরকার চায় না যে কৃষকরা শুধু একটা ফসলের ওপর নির্ভরশীল থাকুন। অতিরিক্ত রোজগারের যত উপায় রয়েছে, সেগুলিকে আমরা কৃষকদের সামনে তুলে ধরছি এবং তাঁদেরকে প্রোৎসাহিত করছি। ভবিষ্যতে কৃষি ক্ষেত্রে এই নতুন উপায়গুলি কৃষকদের উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক ও অনিবার্য হয়ে উঠবে বলে আমার বিশ্বাস।

সবুজ ও শ্বেত বিপ্লবের পাশাপাশি আমরা যত বেশি জৈব বিপ্লব, জলবিপ্লব, নীল বিপ্লব এবং মিষ্টি বিপ্লবকে গুরুত্ব দেব, ততই কৃষকদের আয় বৃদ্ধি হবে। আমাদের এ বছরের বাজেটে সরকার তাই এই বিষয়গুলিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। ডেয়ারিকে অগ্রাধিকার দিতে আগেই একটি স্বতন্ত্র ফান্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে, কিন্তু এবার মৎস্যচাষ ও পশুপালনের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা নতুন বরাদ্দ করা হয়েছে। অর্থাৎ কৃষি ও পশুপালনের জন্য আর্থিক সাহায্য পাওয়া সহজ হবে। তা ছাড়া, কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা আগে শুধুই চাষের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ ছিল, এখন সেই সুবিধা মৎস্যচাষ ও পশুপালনের জন্যও পাওয়া যাবে।

কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য সম্প্রতি একটি বড় প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে। কৃষি সংশ্লিষ্ট ১১টি প্রকল্পকে সবুজ বিপ্লব, কৃষি উন্নতি প্রকল্পে সামিল করা হয়েছে। এর জন্য ৩৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে।

বন্ধুগণ, বর্জ্য থেকে সম্পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সরকার জোর দিচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমরা এক্ষেত্রে আমরা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছি।

এ বছরের বাজেটে সরকার গোবর্ধন যোজনাও ঘোষণা করেছে। এই প্রকল্প গ্রামীণ পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্রামের জৈব বর্জ্য থেকে কৃষক ও পশুপালনদের রোজগার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। শুধু যে বাই-প্রোডাক্ট থেকেই সম্পদ সৃষ্টি হতে পারে, তা নয়। গ্রামের মুখ্য ফসলও ভিন্নভাবে ব্যবহার করলে অনেক ক্ষেত্রে কৃষকদের আমদানি বৃদ্ধি হতে পারে। নারকেলের ছোবড়া, নারকেলের খোলা, বাঁশের বর্জ্য, ফসল কাটার পর ক্ষেতে থেকে যাওয়া কাটা গুড়িগুলিও কৃষকের আমদানি বৃদ্ধি করতে পারে।

আমরা আইন সংশোধন করে বাঁশের চাষকে লাভজনক করে তোলার পথ প্রশস্ত করেছি। আগে বাঁশকে গাছ হিসাবে গণ্য করা হ’ত। বর্তমান আইনে একে বিজ্ঞানসম্মতভাবে ঘাস হিসাবে গণ্য করা হয়। অথচ আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, প্রতি বছর আমাদের দেশে ১৫ হাজার কোটি টাকার বাঁশ আমরা করা হ’ত। এর পেছনে কোনও যুক্তি নেই।

বন্ধুগণ, আমাকে বলা হয়েছে যে, এখানে আপনারা ফসলের ১২টি বৈচিত্র্য উদ্ভাবন করেছেন। আপনাদের উৎপাদিত রণবীর বাসমতি সারা দেশে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু আজ চাষের ক্ষেত্রে যত ধরণের চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা বীজের গুণাবলী থেকে অনেক বেশি। এই সমস্যাগুলি আবহাওয়া পরিবর্তন ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রেও অনুঘটক হিসাবে কাজ করছে। আমাদের কৃষক, কৃষি বৈজ্ঞানিকদের পরিশ্রম এবং সরকারের সঠিক নীতির প্রভাবে গত বছর আমাদের দেশের কৃষকরা রেকর্ড পরিমাণ ফসল উৎপাদন করেছেন। গম, ধান এবং ডাল উৎপাদনে পুরনো সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। তিল ও কার্পাসের উৎপাদনও অনেক বেড়েছে। কিন্তু আপনারা যদি বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান দেখেন, তা হলে বুঝতে পারবেন যে, ফসল উৎপাদনে একটি অনিশ্চয়তার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, আর এর সব থেকে বড় কারণ হল, আমাদের কৃষিতে বর্ষানির্ভরতা। আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাবে যেখানে একদিকে বিশ্ব উষ্ণায়ন পরিলক্ষিত হচ্ছে, তেমনই অনেক ক্ষেত্রে বৃষ্টি কমে যাচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রে এই দুটির প্রভাবে ধান চাষ ও বাগিচা চাষ প্রভাবিত হচ্ছে। উভয়ের জন্যই যথেষ্ট পরিমাণ জল চাই। জম্মু ও কাশ্মীরে হিমবাহগুলি এই প্রয়োজন মেটায়। কিন্তু যেভাবে বিশ্ব উষ্ণায়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে, তেমনই দ্রুততায় হিমবাহগুলিও গলে যাচ্ছে। ফলস্বরূপ কিছু অঞ্চলে মাটি ঊষর হয়ে উঠছে আর কিছু অঞ্চলে অতিবৃষ্টিতে তীব্র বন্যার বিপদ ধেয়ে আসছে।

বন্ধুগণ, এখানে আসার আগে আমি যখন আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে পড়ছিলাম, তখন আপনাদের ‘ফসল’ প্রকল্প সম্পর্কেও জানতে পেরেছি। এর মাধ্যমে আপনারা চাষের ঋতুর আগেই ফলন এবং সারা বছরে উষ্ণতার তারতম্য সম্পর্কে অনুমান করতে পারছেন। কিন্তু আমাদেরকে এই পর্যায় থেকে এগিয়ে যেতে হবে। নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নতুন রণনীতির প্রয়োজন। এই রণনীতি ফসলের ক্ষেত্রেও প্রয়োজন আবার প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও প্রয়োজন। আমাদের সেই ফসলের চাষকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যেগুলি অপেক্ষাকৃত কম জল ব্যবহার হয়। এছাড়া, কৃষি উৎপাদনে কিভাবে মূল্য সংযোজন করা যায়, সে সম্পর্কে আপনাদের নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে।

আমি আপনাদের ‘সি বাকথর্ন’-এর উদাহরণ দিতে চাই। আপনারা সবাই হয়তো এ সম্পর্কে জানেন। লাদাখ অঞ্চলে মাইনাস ৪০ থেকে প্লাস ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেটে তারতম্যে জীবিত থাকা ও বংশ বৃদ্ধি করার ক্ষমতাসম্পন্ন এই গুল্মগুলির ঔষধি গুণাবলী সম্পর্কে অষ্টম শতাব্দীর তিব্বতি সাহিত্যে পাওয়া যায়। দেশ-বিদেশের অনেক আধুনিক গবেষনায়ও এই ‘সি বাকথর্ন’কে অত্যন্ত মূল্যবান বলে মেনে নেওয়া হয়েছে। রক্তচাপের সমস্যা, জ্বর, টিউমার, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে পাথর, আলসার এবং সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে ‘সি বাকথর্ন’ থেকে উৎপাদিত ওষুধগুলি লাভদায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে।

একটি গবেষণা অনুযায়ী, এখন বিশ্বে যে সামান্য পরিমাণ ‘সি বাকথর্ন’-এর চাষ হয়, তার দ্বারাই সমগ্র মানবজাতির ভিটামিন সি-র প্রয়োজন পূর্তি সম্ভব। আজ বৈজ্ঞানিক মূল্য সংযোজনের ফলে এই গুল্মটির উপযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন ভেষজ চা, জ্যাম, বিভিন্ন ধরণের ভেষজ তেল, ক্রিম এবং হেলথ ড্রিঙ্কের এর ব্যবহার বাড়ছে। অতি উচ্চতাসম্পন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে নিয়োজিত সীমান্তরক্ষী ও সৈনিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর ব্যবহার বাড়ছে। এই গুল্ম থেকে অনেক রকম অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে।

আজ এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি এই গুল্মটির উদাহরণ এজন্যই তুলে ধরছি যে, ভবিষ্যতে দেশের যে অঞ্চলই আপনাদের কর্মক্ষেত্র হয়ে উঠুক না কেন, আপনারা এই ধরণের অনেক ভেষজ গুণসম্পন্ন বৃক্ষ-গুল্ম পাবেন। নিজেদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে যদি একজন কৃষির ছাত্র থেকে বৈজ্ঞানিক হয়ে উঠতে পারেন, তা হলে মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে নিজের মতো মডেল গড়ে তুলে কৃষি বিপ্লবের নেতৃত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে পারবেন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হ’ল কৃষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ। আগামীদিনে এটি কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে চলেছে। আমাদের দেশের কয়েকটি অঞ্চলে সীমিত স্তরে কৃষকরা এর প্রয়োগ শুরু করেছেন। যেমন – ঔষধ উৎপাদন এবং কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ড্রোনের মতো প্রযুক্তির ব্যবহার ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হইয়ে উঠছে। এছাড়া, মৃত্তিকা মানচিত্রকরণ এবং কম্যুনিটি প্রাইসিং-এর ক্ষেত্রেও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামীদিনে ব্লক চেইন প্রযুক্তিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই পদ্ধতিতে সরবরাহ শৃঙ্খলায় রিয়েল টাইম তদারকি সম্ভব হবে। ফলে কৃষিতে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আসবে। সবচেয়ে বড় কথা দালালদের অসৎ উপায়ে নিয়ন্ত্রিত হবে এবং ফলনে লোকসানও নিয়ন্ত্রিত হবে।

বন্ধুগণ, আমরা এটাও ভালোভাবেই জানি যে, কৃষকের বিনিয়োগ বৃদ্ধির একটি বড় কারণ নিকৃষ্টমানের বীজ, সার এবং ওষুধ। ব্লক চেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সমস্যার মোকাবিলা সম্ভব। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে কৃষক অবধি পৌঁছতে যে কোনও পর্যায়ে ফলনের উৎকর্ষ পরীক্ষা সহজেই করা সম্ভব হতে পারে।

একটি সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক তৈরি হবে, যার মধ্যে কৃষকের প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটগুলি, বিতরক, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি এবং উপভোক্তার একটি শৃঙ্খলা গড়ে উঠবে। এই সবার মাঝে নিয়ম এবং শর্ত-ভিত্তিক স্মার্ট চুক্তি নির্ভর এই প্রযুক্তি উন্নয়ন সম্ভব। এই গোটা শৃঙ্খলার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি তদারকির সুবিধা পাবে বলে এতে দুর্নীতির সম্ভাবনা হ্রাস পাবে।

এছাড়া, পরিস্থিতি অনুসারে ফসলের পরিবর্তিত মূল্য নির্ধারণের ফলে কৃষকের সম্ভাব্য লোকসান হ্রাসের ক্ষেত্রেও প্রযুক্তি সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। এই শৃঙ্খলার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি পরস্পরের মাধ্যমে ‘রিয়েল টাইম’ তথ্যাবলী জানতে পারবেন এবং পারস্পরিক শর্ত-ভিত্তিক প্রত্যেক স্তরে মূল্য নির্ধারণ করা যেতে পারে।

বন্ধুগণ, সরকার আগেই ই-ন্যামের মতো প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশের বাজারগুলিকে যুক্ত করার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে ২২ হাজার গ্রামীণ বাজার এবং পাইকারি হাটগুলিকে বিশ্ব বাজারের সঙ্গে যুক্ত করার প্রচেষ্টা জারি রয়েছে। সরকার কৃষক উৎপাদক সংগঠন বা এফপিও গঠনে প্রোৎসাহন দিচ্ছে। কৃষকরা নিজের এলাকায় ছোট ছোট সংগঠন গড়ে তুলে গ্রামীণ হাট এবং বড় বাজারগুলিকে সহজেই পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করতে পারে।

এখন ব্লক চেনের মতো প্রযুক্তি আমাদের এই প্রচেষ্টাগুলিকে আরও বেশি লাভদায়ক করে তুলবে। বন্ধুগণ, আপনাদের এমন কিছু মডেল বিকশিত করার কথা ভাবতে হবে, যা স্থানীয় প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি আধুনিক ও ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি-বান্ধব হয়।

কৃষি ক্ষেত্রে নতুন স্টার্ট আপ কোম্পানিগুলি কিভাবে আকর্ষিত হবে, নতুন উদ্ভাবনের দিকেই আপনাদের চিন্তাকে কেন্দ্রীভূত করুন। আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে স্থানীয় কৃষকদের সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে আপনাদের প্রচেষ্টা যেন কার্যকরী হয়। আমাকে বলা হয়েছে যে, আপনারা সবাই নিজেদের বিদ্যায়তনিক শিক্ষাকালেই গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিজেরা জৈব চাষের সঙ্গে যুক্ত থেকে অনেক কাজ করেছেন।

জৈব চাষের অনুকূল ফসলের বৈচিত্র্য নিয়েও আপনারা গবেষণা করছেন। প্রত্যেক স্তরে এই ধরণের ভিন্নভিন্ন প্রচেষ্টায় কৃষকদের জীবনে সৌভাগ্য আনতে আপনাদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

জম্মু ও কাশ্মীরের কৃষক ও বাগিচা চাষীদের গত চার বছরে কেন্দ্রীয় সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করেছে এবং এর মধ্যে ১৫০ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই তাঁরা হাতে পেয়েছেন। লে এবং কারগিলে হিমঘর নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া, সৌর বিশুষ্ককরণ সেটআপ গড়ে তোলার জন্য ২০ কোটি টাকা ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, বীজ থেকে শুরু করে বাজার পর্যন্ত প্রত্যেক স্তরে কৃষকদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে সরকারি প্রকল্পগুলি অত্যন্ত কার্যকরি ভূমিকা পালন করছে। আমি নিশ্চিত যে, আগামী ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির আগেই আপনাদের মধ্যে অনেকেই বৈজ্ঞানিক হিসাবে সাফল্য অর্জন করবেন। বন্ধুগণ, আমি চাই যে, আগামী ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও নিজেদের জন্য কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করুক। তেমনই বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে আপনাদের লক্ষ্য থাকুক যে কিভাবে শুধু দেশ নয়, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ২০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নিজেদের স্থান সুনিশ্চিত করতে পারেন।

এভাবে এখানকার ছাত্র প্রতি হেক্টর কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, যত বেশি সম্ভব কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত করে তোলা যায়, সেক্ষেত্রে আপনারা সংকল্প গ্রহণ করতে পারেন। আমরা যতই প্রযুক্তি নেতৃত্বাধীন স্বরোজগার নির্ভরতার দিকে এগিয়ে যাব, ততই উৎকৃষ্ট মানবসম্পদ গড়ে তোলাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।

আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের এ ধরণের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এক্ষেত্রে অনেক বেশি। এক্ষেত্রে আমি ৫টি ‘টি’ ট্রেনিং, ট্যালেন্ট, টেকনলজি, এবং ট্রাবল ফ্রি দৃষ্টিকোণকে অধিক গুরুত্ব দিই। এই পাঁচটি ‘টি’ দেশের কৃষি ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আপনারা সংকল্প গ্রহণের সময়ে এই কথাগুলি মনে রাখবেন।

বন্ধুগণ, আজ আপনারা এখানে একটি ক্লোজ ক্লাসরুম পরিবেশ থেকে বেরোনোর ছাড়পত্র পাচ্ছেন। আমি আপনাদের শুভেচ্ছা জানাই। বাইরের বৃহত্তর ক্লাসরুম আপনাদের অপেক্ষায় রয়েছে। এখানে শিক্ষার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনার জীবনের একটি পর্যায়কে সম্পূর্ণ করেছেন। আসল জীবনের ব্যবহারিক শিক্ষা এখন শুরু হতে যাচ্ছে। সেজন্য আপনাদের ছাত্রসুলভ মনকে সর্বদা জীবিত রাখতে হবে। ভেতরের ছাত্রটিকে কখনও মরতে দেবেন না। তা হলেই আপনারা দেশের কৃষকদের জন্য নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে উন্নততর মডেল বিকশিত করতে পারবেন।

আপনারা সংকল্প গ্রহণ করুন এবং নিজের স্বপ্ন ও মাতা-পিতার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করুন। রাষ্ট্রনির্মাণে আপনাদের সক্রিয় অবদান থাকুক এই শুভেচ্ছা জানিয়েই আমি নিজের কথা সম্পূর্ণ করছি আর সকল কৃতি বন্ধুদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তাঁদের পরিবারের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Snacks, Laughter And More, PM Modi's Candid Moments With Indian Workers In Kuwait

Media Coverage

Snacks, Laughter And More, PM Modi's Candid Moments With Indian Workers In Kuwait
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to attend Christmas Celebrations hosted by the Catholic Bishops' Conference of India
December 22, 2024
PM to interact with prominent leaders from the Christian community including Cardinals and Bishops
First such instance that a Prime Minister will attend such a programme at the Headquarters of the Catholic Church in India

Prime Minister Shri Narendra Modi will attend the Christmas Celebrations hosted by the Catholic Bishops' Conference of India (CBCI) at the CBCI Centre premises, New Delhi at 6:30 PM on 23rd December.

Prime Minister will interact with key leaders from the Christian community, including Cardinals, Bishops and prominent lay leaders of the Church.

This is the first time a Prime Minister will attend such a programme at the Headquarters of the Catholic Church in India.

Catholic Bishops' Conference of India (CBCI) was established in 1944 and is the body which works closest with all the Catholics across India.