ভারতমাতা কি জয়, 

 
সর্দার সাহেব অমর রহে অমর রহে, 

বিশাল সংখ্যায় আগত ভারতমাতার আদরের সন্তান, আমার সকল তরুণ সঙ্গীরা আজ ৩১অক্টোবর সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জন্মজয়ন্তী। আজ ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীশ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীরও পুণ্যতিথি। আজ সারা দেশ সর্দার সাহেবের জন্মজয়ন্তীউপলক্ষে সেই মহাপুরুষকে সম্মান জানাচ্ছে যিনি দেশের স্বাধীনতার জন্য তাঁর জীবনউৎসর্গ করেছেন। এই মহাপুরুষ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সংকট মুহূর্তে টুকরো টুকরো হয়েযাওয়া থেকে দেশকে রক্ষা করতে আপ্রাণ সংঘর্ষ করে নিজের বাক্‌কুশলতা এবং দৃঢ়চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে কয়েকশো দেশীয় রাজরাজড়া শাসিত রাজ্যগুলিকে একঐক্যবদ্ধ ভারতে অন্তর্ভুক্ত করতে সফল হয়েছিলেন। ইংরেজরা চেয়েছিল, তারা দেশ ভাগ করেচলে যাওয়ার পর ভারত টুকরো টুকরো হয়ে যাক। ছোট ছোট রাজ্যে বিভাজিত হোক। কিন্তুসর্দার প্যাটেলের সংকল্প এবং দূরদৃষ্টি তাদের সেই ইচ্ছাকে সফল হতে দেয়নি। তিনিসাম-দান-দন্ড-ভেদ সমস্ত প্রকার নীতি, কূটনীতি, রণনীতি প্রয়োগ করে খুব কম সময়েরমধ্যেই দেশকে ঐক্যসূত্রে গেঁথে নিতে সফল হয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তাঁকেভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে যেভাবে পরিচিত করানো উচিৎ ছিল, তা করা হয়নি। এভাবেইতিহাসের পাতায় এই মহাপুরুষের নাম মুছে দেওয়ার কিংবা তাঁর ব্যক্তিত্বকে ছোট করেদেখানোর প্রয়াস জারি ছিল। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী যে, সর্দার সাহেব এমন মানুষ ছিলেন,যাঁকে প্রশাসন স্বীকৃতি দিল কি দিল না, কোনও রাজনৈতিক দল তাঁর গুরুত্বকে স্বীকারকরুক বা না করুক, দেশের নবীন প্রজন্মের মনে তিনি এতটা জায়গা দখল করে আছেন যে,তাঁরা তাঁকে ভুলতে রাজি নন। একথা মাথায় রেখেই সর্দার প্যাটেলের জন্মজয়ন্তীকে বিশেষরূপে পালন করে ঐ মহাপুরুষের শ্রেষ্ঠ কাজগুলিকে যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরেমানুষ মনে রাখেন - এই ভাবনা থেকেই আমরা এই একতার জন্য অভিযান চালু করেছি। আমিঅত্যন্ত আনন্দিত যে, দেশের নবীন প্রজন্মের মানুষ বিপুল সংখ্যায় এই অনুষ্ঠানেঅংশগ্রহণ করছেন। 

  

একবার আমাদের দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্রবাবু বলেছিলেন ......তাঁর সেই বক্তব্য আমাদের সকলকে চিন্তা করতে বাধ্য করে, ...... তিনি বলেছিলেন, “আজআমরা ভারত নামক যে দেশের কথা বলি, মানসপটে যে মানচিত্র ভেসে ওঠে, তা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের রাষ্ট্রনায়ক সুলভ ব্যক্তিত্ব এবং প্রশাসনিক কুশলতার কারণেই সম্ভবহয়েছে। ...... এতদসত্ত্বেও আমরা অতিদ্রুত সর্দার সাহেবকে ভুলে বসে আছি”। দেশেরপ্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র বাবুই প্রথম সর্দার সাহেবকে বিস্মৃত হওয়ার জন্য নিজেরকষ্টের কথা ব্যক্ত করেছিলেন। আজ যখন ৩১ অক্টোবর তারিখে সর্দার সাহেবের জন্মদিনেআমরা সারা দেশে একতার জন্য দৌড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জন্মজয়ন্তী পালন করছি, তখনরাজেন্দ্র বাবুর আত্মা যেখানেই থাকুন না কেন খুশি হবেন। কিছু লোক নিহিত স্বার্থেরকারণে সর্দার সাহেবকে বিস্মৃত করে তোলার প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু সর্দার সাহেবএদেশের আত্মায় নিজের স্থান করে নিয়েছেন। আজকের যুবসম্প্রদায় তাঁদের উৎসাহ ওউদ্দীপনা নিয়ে বিপুল সংখ্যায় এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আমাদেরকে নতুনভাবে প্রেরণাযোগাচ্ছে।

ভারত বৈচিত্র্যময় দেশ। আর বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যই হ’ল আমাদের দেশের প্রধানবৈশিষ্ট্য। এই কথা আমরা গোড়া থেকে বলে আসছি। এই মন্ত্রই দেশের আকাশে-বাতাসেগুঞ্জরিত হতে থাকে। এই বৈচিত্র্যকে সম্মান না জানালে, এই বৈচিত্র্য নিয়ে আমাদেরঅন্তরে গর্ব না থাকলে আমাদের বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের সামর্থ্যকে আমরা রাষ্ট্রনির্মাণে ততটা ফলপ্রসূ করে তুলতে পারব না। প্রত্যেক ভারতবাসী এ নিয়ে গর্ব করতেপারেন যে, পৃথিবীর সমস্ত ধর্ম, পন্থা, পরম্পরা এবং আচার-ব্যবহারকে কোনও নাকোনওভাবে ভারত নিজের মধ্যে ধারণ করেছে। অনেক ভাষা, অনেক পরিধান, নানা রকমখাদ্যাভাস, বহু ধর্ম, বহু সম্প্রদায় থাকা সত্ত্বেও দেশের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকা,দেশের জন্য সৎ থাকা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। আজ বিশ্বের অনেক দেশে একই ধর্ম,পন্থা কিংবা পরম্পরায় লালিত-পালিত মানুষেরা পরস্পরের মধ্যে বিবদমান। পরস্পরকেমৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য তারা উদগ্রীব। এই একবিংশ শতাব্দীতে নিজের ধর্মেরপ্রতি অন্ধ আনুগত্য থেকে সেই ধর্মের প্রভাব বৃদ্ধি করতে বিশ্বকে হিংসার গহ্বরেঠেলে দিতে চায় কিছু মানুষ। এই সময়ে ভারত গর্বের সঙ্গে বলতে পারে যে, আমরা সেই দেশ,যারা বিশ্বের প্রত্যেক ধর্ম, পরম্পরা ও পন্থাকে ধারণ করেও একতার সূত্রে গাঁথা।এটাই আমাদের ঐতিহ্য, এতাই আমাদের শক্তি, এটাই আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথ। আরআমাদের দায়িত্ব হ’ল, ভাই আর বোনের ভালোবাসাকে যেমন কেউ কমাতে পারে না, কারণ, তাঁরাপরস্পরের জন্য যে কোনও রকম ত্যাগ করতে প্রস্তুত। তবুও তাঁরা ধুমধাম রাখি-বন্ধনপালন করে। এভাবে প্রতি বছর আমাদের দেশে ভাই-বোনের সম্পর্ক পুনর্নবীকৃত হয়। তেমনইদেশের ঐক্য, দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সামর্থ্যবান হওয়া সত্ত্বেও আমাদের তাকেবারবার পুনর্নবীকৃত করানোর প্রয়োজন রয়েছে। বার বার ঐক্যের মন্ত্র স্মরণ করানোরপ্রয়োজন রয়েছে, বার বার ঐক্যের জন্য বেঁচে থাকার সংকল্প গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।  

  

বিশাল দেশ, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনা সঠিকভাবেসঞ্চারিত হয় না। সেজন্য ভারতের মতো বৈচিত্র্যময় দেশে প্রতিটি মুহূর্ত ঐক্যমন্ত্রের গুঞ্জরণ বজায় রাখার প্রয়োজন রয়েছে, প্রতি মুহূর্তের ঐক্যের পথ অন্বেষণ ওঐক্যকে মজবুত করার নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার ভারতের মতো দেশে অনিবার্য। আমাদেরদেশ এক ও অখন্ড থাকবে। সর্দার সাহেব আমাদের যে দেশ দিয়ে গিয়েছেন, তার একতা ওঅখন্ডতা অক্ষুণ্ণ রাখার দেশের ১২৫ কোটি মানুষের দায়িত্ব। প্রতি বছর তাঁর জন্মজয়ন্তীতে আমাদের উচিৎ তাঁর পুণ্য স্মরণে তাঁর কৃতিত্বের কথা বারংবার উচ্চারণ করা,কিভাবে তিনি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন – যাতে প্রজন্ম থেক প্রজন্মান্তরে এই বার্তাপৌঁছে যায়। আর আট বছর পর সর্দার সাহেবের সার্ধশতবর্ষ পালিত হবে। তাঁর সার্ধশতবর্ষেআমরা দেশের সামনে ঐক্যের কোন্‌ উদাহরণ তুলে ধরব - এই মনোভাবকে প্রত্যেক নাগরিকেরঅন্তরে আমাদের প্রোথিত করে দিতে হবে। সেই সংকল্প নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। 

২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে। ভগৎ সিং, শুকদেব,রাজগুরু, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী, সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলদেরনেতৃত্বে অসংখ্য দেশপ্রেমী, লক্ষ লক্ষ স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রাণ দিয়েছেন, যৌবনেরঅধিকাংশ সময় তাঁরা কারান্তরালে কাটিয়েছেন। তাঁরা যেরকম স্বাধীন দেশ দেখতেচেয়েছিলেন, সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে আমাদের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে কাজে লেগে পড়তেহবে, যাতে ২০২২ সালের মধ্যে আমরা তাঁদের স্বপ্নের নতুন ভারত গড়ে তুলতে পারি। প্রত্যেকভারতবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের ভালোর জন্য, দেশের কল্যাণের জন্য, দেশের গরিমাবৃদ্ধির জন্য বীর স্বাধীনতা সংগ্রামী সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জন্মজয়ন্তীতেসংকল্প গ্রহণ করে প্রত্যেককেই নিজেকে নতুন ভারত বাস্তবায়নের অভিযানে যুক্ত করতেহবে। এটাই সময়ের চাহিদা। 

  

আপনারা আজ এখানে বিপুল সংখ্যায় এসেছেন। এই প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গেদেশের সকল প্রান্তের যুবক-যুবতীরা এই অনুষ্ঠানে শরিক হয়েছেন। রাষ্ট্রীয় একতা দিবসেআপনাদের সকলকে শপথ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাই। আমি সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলেরপুণ্যস্মৃতিতে আপনাদের সামনে যে শপথবাক্য প্রস্তুত করব আপনারা সবাই ডান হাত সামনেবাড়িয়ে আমার সঙ্গে সেই শপথবাক্যগুলি উচ্চারণ করবেন। ‘আমি সত্য-নিষ্ঠার সঙ্গে শপথনিচ্ছি যে, আমি দেশের একতা, অখন্ডতা আর নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য নিজেকে সমর্পণকরব আর আমার দেশবাসীর মধ্যে এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করব। আমি এই শপথদেশের একতার ভাবনা থেকে গ্রহণ করছি। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের দূরদর্শিতা ওকর্মকুশলতার মাধ্যমে যে ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল, আমি নিজের দেশেরআন্তরিক সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য নিজেকে সমর্পণ করার সংকল্প গ্রহণ করছি।  
  

ভারতমাতা কি জয়। 

ভারতমাতা কি জয়। 

ভারতমাতা কি জয়। 
 
অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...

Prime Minister Shri Narendra Modi paid homage today to Mahatma Gandhi at his statue in the historic Promenade Gardens in Georgetown, Guyana. He recalled Bapu’s eternal values of peace and non-violence which continue to guide humanity. The statue was installed in commemoration of Gandhiji’s 100th birth anniversary in 1969.

Prime Minister also paid floral tribute at the Arya Samaj monument located close by. This monument was unveiled in 2011 in commemoration of 100 years of the Arya Samaj movement in Guyana.