প্রধানমন্ত্রী স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ১ হাজার কোটি টাকা হস্তান্তর করলেন, এতে প্রায় ১৬ লক্ষ মহিলা সদস্য লাভবান হবেন
প্রধানমন্ত্রী বিজনেস করেসপনডেন্ট – সখীদের প্রথম মাসের ভাতা এবং মুখ্যমন্ত্রী কন্যা সুমঙ্গল কর্মসূচির ১ লক্ষেরও বেশি সুফলভোগীকে অর্থ হস্তান্তর করেছেন
প্রধানমন্ত্রী ২০০টিরও বেশি পরিপূরক পৌষ্টিক খাবার উৎপাদন ইউনিটের শিলান্যাস করেছেন
মুখ্যমন্ত্রী কন্যা সুমঙ্গল যোজনার মতো কর্মসূচিগুলি গ্রামের দরিদ্র মানুষ ও বালিকাদের কাছে আস্থার বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে
উত্তর প্রদেশের মহিলাদের জন্য ডবল ইঞ্জিন সরকার সুরক্ষা, মর্যাদা ও সম্মান সুনিশ্চিত করেছে, যা অতুলনীয়; উত্তর প্রদেশের মহিলারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা আর আগের পরিস্থিতি কখনই ফিরতে দেবেন না
মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠুক, আমি এটাই কামনা করি; এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি আসলে ন্যাশনাল হেল্প গ্রুপ
কন্যারা লেখাপড়ার জন্য সময় ও সমান সুযোগ-সুবিধা চেয়েছে; তাই কন্যাদের বিবাহের বয়স ২১ বছর করতে আইনি প্রয়াস গ্রহণ করা হচ্ছে; কন্যাদের স্বার্থেই দেশ এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে
মাফিয়ারাজ ও অরাজ

ভারতমাতার জয়,

ভারতমাতার জয়,

আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত উত্তরপ্রদেশের প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ এবং কর্মযোগী মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথজি, প্রয়াগরাজের ভূমিপুত্র, রাজ্যের জনপ্রিয় নেতা উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যজি, আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যা সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতিজি, শ্রীমতী অনুপ্রিয়া প্যাটেলজি, উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সরকারের মন্ত্রী ডঃ মহেন্দ্র সিং-জি, শ্রী রাজেন্দ্র প্রতাপ সিং মোতিজি, শ্রী সিদ্ধার্থনাথ সিং-জি, শ্রী নন্দগোপাল গুপ্তা নন্দীজি, শ্রীমতী স্বাতী সিং-জি, শ্রীমতী গুলাবো দেবীজি, শ্রীমতী নীলিমা কাটিয়ারজি, সংসদে আমার সহযোগী ভগিনী শ্রীমতী রীতা বহুগুনাজি, শ্রীমতী হেমা মালিনীজি, শ্রীমতী কেশরীদেবী প্যাটেলজি, ডঃ সঙ্ঘমিত্রা মৌর্যজি, শ্রীমতী গীতা শাক্যজি, শ্রীমতী কান্তা কর্দমজি, শ্রীমতী সীমা দ্বিবেদীজি, ডঃ রমেশ চন্দ্র বিন্দজি, প্রয়াগরাজের মেয়র শ্রীমতী অভিলাষা গুপ্তাজি, জেলা পঞ্চায়েতের অধ্যক্ষ ডঃ ভি কে সিং-জি, উপস্থিত অন্যান্য বিধায়ক এবং জনপ্রতিনিধিগণ, উত্তরপ্রদেশের সামর্থ্য বৃদ্ধিকারী, এখানকার সামর্থ্যের প্রতীক আমার মা ও বোনেরা! আপনাদের সবাইকে আমার প্রণাম। মা গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর পবিত্র তীরে অবস্থিত প্রয়াগরাজের মাটিকে আমি নতমস্তকে প্রণাম জানাই। এটা সেই মাটি, যেখানে ধর্ম, জ্ঞান ও ন্যায়ের ত্রিবেণী ধারা প্রবহমান। তীর্থের মধ্যে শ্রেষ্ঠ তীর্থ প্রয়াগরাজে এলে সর্বদাই দেখবেন একটি অলৌকিক পবিত্রতা এবং প্রাণশক্তি অনুভূত হয়। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে আমি কুম্ভের এই পবিত্র মাটিতে এসে ছিলাম। তখন সঙ্গমে ডুব দিয়ে অলৌকিক আনন্দ অনুভব করেছিলাম। তীর্থরাজ প্রয়াগের এই পবিত্র ভূমিকে আমি হাতজোড় করে প্রণাম জানাই। আজ হিন্দি সাহিত্য জগতের সর্বমান্য আচার্য মহাবীর প্রসাদ দ্বিবেদীজির প্রয়াণ দিবস। প্রয়াগরাজ থেকে সাহিতের যে সরস্বতী প্রবাহিত হয়েছে দ্বিবেদীজি দীর্ঘ সময় ধরে তার সম্পাদক ছিলেন। আমি তাঁকে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি।

মা ও বোনেরা,

হাজার হাজার বছর ধরে প্রয়াগরাজ আমাদের মাতৃশক্তির প্রতীক। মা গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গমের ধরিত্রী। আজ এই তীর্থ নগরী নারী শক্তির এক অদ্ভূত সঙ্গমের সাক্ষী হয়ে উঠেছে। আমাদের সকলের সৌভাগ্য যে আপনারা সকলে এখানে আমাদেরকে নিজেদের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ দিতে এসেছেন।

মা ও বোনেরা,

আমি এই মঞ্চে আসার আগে ‘ব্যাঙ্কিং সখী’দের সঙ্গে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যুক্ত বোনেদের সঙ্গে এবং ‘কন্যা সুমঙ্গলা যোজনা’র সুবিধাভোগী কন্যাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এমন সব কথা শুনেছি, এত আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ কথা যে আমার খুব ভালো লেগেছে। মা ও বোনেরা, আমাদের শাস্ত্রে বলা হয় – “প্রত্যক্ষে কিম্ প্রমাণম”।

অর্থাৎ, যা প্রত্যক্ষ, যা সামনে আছে, তাকে প্রমাণিত করার জন্য কোনও প্রমাণের প্রয়োজন হয় না। উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের জন্য মহিলাদের ক্ষমতায়নের যে কাজ হয়েছে তা গোটা দেশ দেখছে। একটু আগেই এখানে আমার ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা সুমঙ্গলা যোজনা’র ১ লক্ষেরও বেশি সুবিধাভোগী কন্যাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা হস্তান্তর করার সৌভাগ্য হয়েছে। এই প্রকল্প গ্রামের গরীব কন্যাদের জন্য ভরসার একটা বড় মাধ্যম হয়ে উঠছে। উত্তরপ্রদেশ যে ‘ব্যাঙ্ক সখী’ অভিযান শুরু করেছে, সেটিও মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগের পাশাপাশি তাঁদের জীবনেও অনেক পরিবর্তন আনছে। সরকারের ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্প থেকে যে অর্থ সরাসরি প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যায়, সেই টাকা তোলার জন্য এখন ব্যাঙ্কে যেতে হয় না। ‘ব্যাঙ্ক সখী’দের সাহায্যে সেই টাকা গ্রামের বাড়িতে বসেই পাওয়া যায়। অর্থাৎ, ‘ব্যাঙ্ক সখী’রা ব্যাঙ্কগুলিকে গ্রাম পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। যাঁরা ভাবছেন যে এটা তো একটা সামান্য কাজ, তাঁদেরকে আমি বলতে চাই, ‘ব্যাঙ্ক সখী’দের কাজ অনেক বড়। উত্তরপ্রদেশের এই ‘ব্যাঙ্ক সখী’দের ওপরই প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। হ্যাঁ, উত্তরপ্রদেশের গ্রামে গ্রামে বসবাসকারী আমার এই বোন ও মেয়েরা এখন ৭৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেন করছেন। তাঁদের মাধ্যমে গ্রামের মানুষ যত বেশি লেনদেন করবেন, তাঁদের আয়ও তত বাড়বে। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত অধিকাংশ ‘ব্যাঙ্ক সখী’ বোনেদের নিজেদেরই কোনও ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট ছিল না। কিন্তু আজ এই মহিলাদের হাতে ব্যাঙ্কিং এবং ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং-এর শক্তি এসে গিয়েছে। সেজন্য দেশবাসী দেখছে, ইউপি-তে কিভাবে কাজ হচ্ছে আর সেজন্যই আমি বলছিলাম – “প্রত্যক্ষে কিম্ প্রমাণ”।

মা ও বোনেরা,

উত্তরপ্রদেশ সরকার ‘টেক হোম রেশন’ এবং গর্ভবতী মহিলা, প্রসূতি মা ও শিশুদের জন্য ‘পোষণ অভিযান’-এর দায়িত্বও মহিলাদের ওপরই অর্পণ করেছে। এই পুষ্টিবর্ধক রেশন দিয়ে তৈরি খাদ্য এখন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে মিলে মহিলারা নিজেরাই তৈরি করবেন। এটাও অনেক বড় কাজ। বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ। যে ২০২টি পুষ্টিযুক্ত আহার উৎপাদন ইউনিটের আজ শিলান্যাস হয়েছে, সেগুলির মাধ্যমে এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মহিলাদের রোজগার যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই গ্রামের কৃষকদেরও অনেক লাভ হবে। গ্রামের মহিলারা তাঁদের কারখানায় পুষ্টিযুক্ত খাদ্য উৎপাদনের জন্য শস্য ও শাকসব্জি গ্রাম থেকেই কিনবেন। এটাই তো ক্ষমতায়নের সেই প্রচেষ্টা যা উত্তরপ্রদেশের মহিলাদের জীবনে পরিবর্তন আনতে শুরু করেছে। সরকার ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে যে সাহায্য করছে তার একটি কিস্তি হিসেবে আজ আমার ১ হাজার কোটি টাকা হস্তান্তর করার সৌভাগ্য হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের ধারা এখন আর কেউ আটকাতে পারবে না। উত্তরপ্রদেশের মহিলারা, মা, বোন ও মেয়েরা ঠিক করেছেন, এখন তাঁরা আগের সরকারগুলির আমল আর ফিরে আসতে দেবেন না। ডবল ইঞ্জিনের সরকার উত্তরপ্রদেশের মহিলাদের যে সুরক্ষা দিয়েছে, সম্মান দিয়েছে, গরিমা বৃদ্ধি করেছে, তা অভূতপূর্ব।

ভাই ও বোনেরা,

মা, বোন ও মেয়েদের স্বাস্থ্য ও জীবনশৈলী অনেক প্রজন্মকে প্রভাবিত করে। তাঁদের জীবন অনেক প্রজন্ম নির্মাণকারী জীবন। তাই একটি মেয়ের সামর্থ্য আর শিক্ষা, তাঁর দক্ষতা শুধু পরিবারেই নয়, সমাজের ও দেশের লক্ষ্যও নির্ধারণ করে। সেজন্য ২০১৪ সালে যখনই আমরা ভারতমাতার অনেক বড় স্বপ্ন, বড় আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি, তখন সবার আগে দেশের মেয়েদের বিশ্বাসকে নতুন প্রাণশক্তি যোগানোর চেষ্টা শুরু করেছি। সেজন্য আমরা কন্যাসন্তানের জন্ম থেকে শুরু করে জীবনচক্রের প্রত্যেক অবস্থায় মহিলাদের ক্ষমতায়নের স্বার্থে অনেক প্রকল্প তৈরি করেছি, অনেক অভিযান চালিয়েছি।

বন্ধুগণ,

কন্যাসন্তান যেন গর্ভাবস্থাতেই মারা না যায়, তারা যেন এই মাটিতে ভূমিষ্ট হয় তা সুনিশ্চিত করতে আমরা ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ অভিযানের মাধ্যমে সমাজের চেতনাকে জাগানোর চেষ্টা করেছি। আজ এর পরিণাম হল, দেশের অনেক রাজ্যে মেয়েদের আনুপাতিক সংখ্যা অনেক বেড়েছে। প্রসবের পরে থেকেই মায়েরা যেন দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে তাঁদের সন্তানদের প্রাথমিক দেখাশোনা করতে পারেন, মায়ের দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করতে পারেন সেদিকে লক্ষ্য রেখে মহিলাদের ছয় মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে।

গর্ভাবস্থায় গরীব পরিবারের মায়েদের স্বাস্থ্য অনেক দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে। সেজন্য আমরা গর্ভবতী মহিলাদের টিকাকরণ, হাসপাতালে প্রসব আর গর্ভাবস্থায় পুষ্টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। ‘প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা’র মাধ্যমে গর্ভাবস্থার সময় মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার টাকা করে জমা করা হয় যাতে তাঁরা যথাযথভাবে খাওয়াদাওয়া করতে পারেন। এখনও পর্যন্ত ২ কোটিরও বেশি বোনেদের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

বন্ধুগণ,

মেয়েরা যাতে ঠিকভাবে লেখাপড়া করতে পারে, পড়া অসম্পূর্ণ রেখেই যেন স্কুল না ছাড়তে হয়, তা সুনিশ্চিত করতে আমরা ক্রমাগত কাজ করে গিয়েছি। স্কুলগুলিতে মেয়েদের জন্য স্বতন্ত্র শৌচাগার নির্মাণ থেকে শুরু করে দরিদ্র কন্যাদের জন্য বিনামূল্যে স্যানিটারি প্যাড বিতরণ – এ ধরনের কোনও কাজে আমাদের সরকার পিছিয়ে নেই। ‘সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা’র মাধ্যমে দেশে প্রায় ২.৫ কোটি শিশুকন্যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এই টাকা তাঁরা বড় হলে তাঁদের স্বপ্ন পূরণের জন্য। সেজন্য এই টাকার ওপর সুদের হারও বেশি রাখা হয়েছে। স্কুল-কলেজের পর পেশায় যোগদান থেকে শুরু করে ঘর-গৃহস্থালি পর্যন্ত প্রত্যেক পদক্ষেপে মহিলাদের সুবিধা এবং স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’-এর মাধ্যমে কোটি কোটি শৌচালয় গড়ে ওঠায়, ‘উজ্জ্বলা যোজনা’র মাধ্যমে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম বোনেদের বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ, বাড়িতে বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল বোনেদের জীবনে সুবিধা বাড়িয়েছে আর তাঁদের গরিমাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বন্ধুগণ,

‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনা’র মাধ্যমেও আমার বোনেরাই সবচাইতে বেশি লাভবান হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে শিশুর জন্ম এবং অন্যান্য চিকিৎসা, আগে অর্থের অভাবে বোনেদের জীবন সঙ্কটগ্রস্ত থাকত। এখন ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পাওয়ায় তাঁদের মাথা থেকে সে চিন্তা দূর হয়ে গেছে। মা ও বোনেরা, ভারতীয় সমাজে সর্বদাই মা ও বোনেদের সবার ওপরে রাখা হয়েছে। কিন্তু আজ একটি সত্যের দিকে আমি আপনাদের সকলের, গোটা দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। অনেক শতাব্দী ধরে, অনেক দশক ধরে আমাদের দেশের পরম্পরা ছিল যে বাড়ি এবং বাড়ির সমস্ত সম্পত্তিতে কেবলই পুরুষদের অধিকার। বাড়ি কার নামে হত? পুরুষদের নামে। চাষের খেত কার নামে? পুরুষদের নামে। চাকরি, দোকানের ওপর কার অধিকার? পুরুষদের অধিকার। কিন্তু এখন আমাদের সরকার ও তার প্রকল্পগুলিতে এই অসাম্য দূর করা হচ্ছে। ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ এর সবচাইতে বড় উদাহরণ। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে যে বাড়ি দেওয়া হচ্ছে তা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মহিলাদের নামেই দেওয়া হচ্ছে। আমি যদি উত্তরপ্রদেশের কথা বলি, তাহলে এই রাজ্যে ইতিমধ্যেই ৩০ লক্ষেরও বেশি বাড়ি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ লক্ষ বাড়ি নথিভুক্তিকরণের সময় মহিলাদের মালিকানা দেওয়া হয়েছে। আপনারা আন্দাজ করতে পারেন! প্রথমবার উত্তরপ্রদেশে ২৫ লক্ষ মহিলার নামে তাঁদের বাড়ি নথিভুক্ত হয়েছে। যে বাড়িগুলিতে অনেক প্রজন্ম ধরে কোনও মহিলার নামে কোনও সম্পত্তি ছিল না, আজ সেখানেও তাঁদের নামে সম্পত্তি হচ্ছে। এটাকেই বলে মহিলাদের ক্ষমতায়ন, প্রকৃত সশক্তিকরণ। এটাই হল প্রকৃত উন্নয়ন।

মা ও বোনেরা,

আমি আজ আপনাদের আরও একটি প্রকল্প সম্পর্কে বলতে চাই। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রকল্প আছে যার নাম হল ‘স্বামীত্ব যোজনা’। এই ‘স্বামীত্ব যোজনা’র মাধ্যমে সারা দেশের গ্রামগুলির বাড়ি ও জমিকে ড্রোনের মাধ্যমে ছবি তুলে, বাড়ির মালিকদের সম্পত্তির মালিকানার কাগজ বা পরচা দেওয়া হচ্ছে। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই পরচা বিতরণের ক্ষেত্রেও মহিলাদেরকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আগামী কয়েক বছরে উত্তরপ্রদেশের গ্রামগুলিতে যোগীজির সরকার প্রত্যেক বাড়ির মানচিত্রায়ন করিয়ে এমনই পরচা দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ করবে। তারপর যে বাড়িগুলি তৈরি হবে সেগুলির কাগজেও বাড়ির মহিলাদের নাম থাকবে, বাড়ির মায়ের নাম থাকবে।

বন্ধুগণ,

কর্মসংস্থানের জন্য, পরিবারের রোজগার বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে প্রকল্পগুলি চালু করেছে, সেগুলিতেও মহিলাদের সমান অংশীদার করে তোলা হচ্ছে। ‘মুদ্রা যোজনা’ আজ গ্রামে গ্রামে গরীব পরিবারগুলির থেকেও নতুন নতুন মহিলা উদ্যোগীদের উৎসাহ যোগানো হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পাওয়া মোট ঋণের প্রায় ৭০ শতাংশ মহিলাদের দেওয়া হচ্ছে। ‘দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা’র মাধ্যমেও সারা দেশে মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং গ্রামীণ সংগঠনগুলির সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির বোনদেরও আমি আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের চ্যাম্পিয়ন সহযোগী বলে মনে করি। এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি আসলে রাষ্ট্র সহায়তা গোষ্ঠী। সেজন্য ‘রাষ্ট্রীয় আজীবিকা মিশন’-এর মাধ্যমে ২০১৪-র আগের পাঁচ বছরে যত সাহায্য করা হয়েছে, বিগত সাত বছরে তা প্রায় ১৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রত্যেক স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে আগে যেখানে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোনও গ্যারান্টি ছাড়া ঋণ দেওয়া হত, এখন এই সীমা দ্বিগুণ বাড়িয়ে ২০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।

মা ও বোনেরা,

শহর হোক কিংবা গ্রাম, মহিলাদের জন্য আমাদের সরকার প্রত্যেক ছোট, বড় সমস্যার কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। করোনার এই সঙ্কটকালে আপনাদের প্রত্যেকের বাড়িতে যাতে উনুন জ্বলতে থাকে তা সুনিশ্চিত করতে আমাদের সরকার বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে এবং এখনও সেই ব্যবস্থা চালু রেখেছে। মহিলারা যাতে রাতের শিফটেও কাজ করতে পারেন তা সুনিশ্চিত করতে আমাদের সরকার আইন সংশোধন করেছে। খনিতে মহিলাদের কাজ করার ক্ষেত্রে যে বাধা-নিষেধ ছিল, সেগুলিও আমাদের সরকার দূর করেছে। সারা দেশের সৈনিক স্কুলগুলির দরজা মেয়েদের জন্য উন্মুক্ত করার কাজ আমাদের সরকারই করেছে। ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের দ্রুত শুনানীর জন্য আমাদের সরকার সারা দেশে ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০০ ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্ট স্থাপন করেছে। মুসলমান বোনেদের অত্যাচার থেকে বাঁচানোর জন্য আমাদের সরকারই তিন তালাকের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করেছে।

বন্ধুগণ,

কোনও বৈষম্য ও পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই আমাদের ডবল ইঞ্জিনের সরকার কন্যা-সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুগম করার জন্য ক্রমাগত কাজ করে চলেছে। কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকার এরকম আরেকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগে ছেলেদের জন্য বিবাহের ন্যূনতম বয়স ছিল ২১ বছর আর মেয়েদের জন্য ছিল ১৮ বছর। আমাদের দেশের মেয়েরাও চাইছিলেন যাতে তাঁরা লেখাপড়ার জন্য, এগিয়ে যাওয়ার জন্য আরও সময় পান, সমান সুযোগ পান। সেজন্য মেয়েদের বিবাহের ন্যূনতম বয়সও বাড়িয়ে এখন ২১ বছর করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সরকার এই সিদ্ধান্ত মেয়েদের জন্য নিচ্ছে। এতে কাদের সমস্যা হচ্ছে এটা সবাই দেখছে!

ভাই ও বোনেরা,

পাঁচ বছর আগে উত্তরপ্রদেশের সড়কগুলিতে মাফিয়া রাজ ছিল। উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতায় গুন্ডা রাজ চলত। এর সবচাইতে বড় ভুক্তভোগী কারা ছিলেন? আমার উত্তরপ্রদেশের বোন ও মেয়েরা। তাঁদের পথে বেরোনোও মুশকিল ছিল। স্কুলে, কলেজে যেতে সমস্যা হত। আপনারা কিছু বলতে পারতেন না, কারণ, থানায় গেলে অপরাধী ধর্ষকদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা ফোন চলে আসত। যোগীজি এই গুন্ডাদের সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন। আজ উত্তরপ্রদেশে নিরাপত্তাও আছে, মেয়েদের অধিকারও আছে। আজ উত্তরপ্রদেশে সম্ভাবনাও আছে, ব্যবসা-বাণিজ্যও আছে। আমার পূর্ণ বিশ্বাস, আমাদের ওপর যখন মা ও বোনেদের আশীর্বাদ রয়েছে, তখন নতুন উত্তরপ্রদেশকে কেউ আর অন্ধকারে ঠেলে দিতে পারবে না। ভাই ও বোনেরা, এগিয়ে আসুন! প্রয়াগরাজের পূণ্যভূমিতে এই সঙ্কল্প নিয়ে, আমাদের উত্তরপ্রদেশ এগিয়ে যাক। আমাদের উত্তরপ্রদেশ নতুন উচ্চতা স্পর্শ করবে। আপনাদের মতো সমস্ত মা ও বোনেদের আশীর্বাদের জন্য, আপনাদের সমর্থনের জন্য এমন উত্তরপ্রদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আপনাদের সহযোগিতার জন্য আমি আরও একবার আপনাদের সবাইকে সাদর প্রণাম জানাই। হৃদয় থেকে আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আমার সঙ্গে সকলে বলুন – ভারতমাতার জয়, ভারতমাতার জয়, ভারতমাতার জয়। অনেক অনেক ধন্যবাদ!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Double engine govt becoming symbol of good governance, says PM Modi

Media Coverage

Double engine govt becoming symbol of good governance, says PM Modi
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 17 ডিসেম্বর 2024
December 17, 2024

Unstoppable Progress: India Continues to Grow Across Diverse Sectors with the Modi Government