বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,
ভারত এবং বাংলাদেশের মাননীয় বিদেশ মন্ত্রী,
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় মমতা ব্যানার্জী,
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব,
কিছুদিন আগে কাঠমান্ডুর বিমস্টেক শিখর সম্মেলনের সময় মাননীয় শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তার আগে গত মে মাসে শান্তিনিকেতনে এবং এপ্রিল মাসে লন্ডনে কমনওয়েল্থ শীর্ষ সম্মেলনের সময় আমাদের দেখা হয়েছিল।
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ আরেকবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আপনার সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্য হল।
আমি আগেও কয়েকবার বলেছি যে, প্রতিবেশী দেশগুলির শীর্ষ নেতৃত্বের পরস্পরের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা উচিৎ। যখন খুশি কথাবার্তা এবং যখন খুশি পারস্পরিক সফরের আয়োজন করা উচিৎ। এই সমস্ত বিষয়ে আমাদের কোন প্রোটোকলের বাধা-নিষেধ থাকা উচিৎ নয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহোদয়ার সঙ্গে আমার এই নৈকট্য স্পষ্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে। অনেকবার সাক্ষাৎ ছাড়াও এটি আমাদের চতুর্থ ভিডিও কনফারেন্স আর অদূর ভবিষ্যতেই আরেকটি ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে।
এই ভিডিও কনফারেন্সগুলির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল যে উভয় দেশের সহযোগিতায় নির্মিত প্রকল্পগুলির শুভ উদ্বোধন কোন ভিআইপি সফরের অপেক্ষা করেনি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা যখনই পারস্পরিক যোগাযোগের কথা বলি, তখন আমার সবসময়ই আপনাদের দেশের সঙ্গে ১৯৬৫ পূর্ববর্তী যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করার কথা মনে পড়ে। আমার জন্য এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে বিগত কয়েক বছরে আমরা সেই লক্ষ্যে নিয়মিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাচ্ছি।
আজ আমরা পারস্পরিক বিদ্যুৎ সংযোগ বৃদ্ধি এবং রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুটি প্রকল্প শুরু করলাম।
আমি যখন ২০১৫ সালে বাংলাদেশ গিয়েছিলাম, তখন বাংলাদেশে ৫০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেজন্য, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে ট্রান্সমিশন লিঙ্ক চালু করার কাজ শুরু হয়েছিল। এই কাজ সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে অভিনন্দন জানাই।
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার ফলে এখন ভারত থেকে বাংলাদেশে ১.১৬ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। আমি মনে করি, মেগাওয়াট থেকে গিগাওয়াট-এর এই পরিমাণগত উল্লম্ফন আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের সোনালী অধ্যায়ের প্রতীক।
রেলের ক্ষেত্রেও আমাদের যোগাযোগ নিয়মিত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলস্বরূপ, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতার মূল লক্ষ্য।
আখাউড়া-আগরতলা রেল যোগাযোগের কাজ সম্পূর্ণ হলে আমাদের আন্তঃসীমান্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা একটি নতুন মাত্রা পাবে। এই প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য আমি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবকে অভিনন্দন জানাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য স্থির করেছেন – ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্য অর্থনীতির দেশ এবং ২০৪১-এর মধ্যে উন্নত অর্থনীতির দেশ করে গড়ে তোলা; তাঁর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমাদের সহযোগিতার সুযোগ দেওয়ায় আমরা গর্ববোধ করছি।
আমি বিশ্বাস করি যে, আমরা যতই পারস্পরিক সম্পর্ক নিবিড় করে তুলতে পারব, উভয় দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারব, ততই আমরা উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির নতুন আকাশ স্পর্শ করতে পারব।
এই কর্মযজ্ঞে সহযোগিতার জন্য এবং আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
ধন্যবাদ।